সূরা কাহাফের প্রেক্ষাপটে আসহাবে কাহাফ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী।

সূরা কাহাফের প্রেক্ষাপটে আসহাবে কাহাফ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী।

 মুহাম্মদ গোলাম রাব্বানী
ফটিকছড়ি চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: সূরা কাহাফের প্রেক্ষাপটে আসহাবে কাহাফ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। তাদের সংখ্যা বা নামসমূহ জানিয়ে ধন্য করবেন।
উত্তর: আসহাবে কাহ্ফ অর্থ গুহায় অবস্থানকারী বা গুহার অধিবাসী। কুরআনে সূরা কাহ্ফে বর্ণিত ‘আসহাবে কাহ্ফ’ এর ঘটনা কখন সংগঠিত হয়েছিল, তারা কতজন ছিলেন এবং তাদের নাম কি? এ নিয়ে তাফসির বিশারদগণের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। তবে অধিকাংশ তাফসিরকারকদের ভাষ্যমতে এ ঘটনা আল্লাহর নবী হযরত ঈসা আলায়হিস্ সালামকে আসমানে তুলে নেয়ার অনেক কাল পর ‘আফসোস’ নামক শহরে সাধারণ মানুষ মূর্তিপূজায় লিপ্ত হলেও সাতজন বা আরো বেশী ব্যক্তি ঈমানের ওপর অটল থেকে যায়। সে যুগের বাদশাহ্ ছিলো জালিম শাসক ‘দাক্বইয়ানূস’। সে মু’মিনদের নির্বিচারে হত্যা করত। কুরআনের বর্ণনা মতে উক্ত সাত জন বা আরো বেশী ঈমানদার নিজেদের ঈমান রক্ষার জন্য কিছু নগদ টাকা/মুদ্রা এবং একটি কুকুরসহ ‘বানজালূস’ নামক পাহাড়ের ‘জায়রূম’ নামক গুহায় আত্মগোপন করলেন এবং সেখানে তারা ঘুমিয়ে পড়লে আল্লাহর কুদরতে তিন শত নয় বছর পর আল্লাহর ইচ্ছায় জাগ্রত হন। উক্ত গুহা সম্পর্কে অনেকের মন্তব্য হল- উক্ত গুহা রোম তথা বর্তমান ইতালিতে অবস্থিত। আর কেউ কেউ বলছেন যে, তা জর্ডানের রাজধানী আম্মানে অবস্থিত।
উল্লেখ্য যে, আম্মানে অবস্থিত আসহাবে কাহাফের ঐ বরকতম-িত স্থান অনেকেই যিয়ারত করেন। আমি আমার শিক্ষা গুরু শেরে মিল্লাত মুফতি ওবাইদুল হক নঈমী রহ., গাউসিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব পেয়ার মুহাম্মদ সাহেব প্রমুখ উক্ত স্থান জর্দান সফরে যিয়ারত করার সৌভাগ্য হয়েছিল। এদিকে জালিম বাদশাহ্ দাক্বইয়ানূস মারা যায় এবং ‘বায়দ্রূস’ নামক একজন নেক্কার মু’মিন বাদশাহ্ ক্ষমতাশীন হলেন। তিনি দীর্ঘ ষাট বছর সালতানাৎ তথা রাজত্ব পরিচালনা করেন। গ্রহণযোগ্য অভিমতানুসারে তাঁদের সংখ্যা ছিল ৭ জন। যথা- ১. ইয়ামলীখা, ২. মাকসালমীনা, ৩. মারতূনাস, ৪. বায়তুনাস, ৫. সারইয়ূনাস, ৬. যূ-নাওয়ানাস এবং ৭. কাশফীয তানূনাস আর কুকুরে নাম ছিল ক্বিতমীর।
তবে এদের সঠিক সংখ্যা আল্লাহ্ ও তাঁর প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এবং যাদেরকে আল্লাহ্ বিশেষ জ্ঞান (علم لدنى) দান করেছেন তারা ভালো জানেন। যেমন পবিত্র কুরআন শরীফে আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন-
قل ربى اعلم بعدتهم ما يعلمهم الا قليل ـ (الخـ…)
অর্থাৎ হে প্রিয় রসূল! আপনি বলুন আমার রব আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের সঠিক সংখ্যা জানেন, তবে অল্প কয়েকজন আল্লাহ্ প্রদত্ত জ্ঞানে জ্ঞানী তাদের সঠিক সংখ্যা জানেন। [সূরা কাহাফ, আয়াত-২২]
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন- ঐ অল্প সংখ্যক লোকের মধ্যে আমি একজন। [তাফসীরে খাযাইনুল ইরফান, সূরা কাহাফ, পৃ. ৪৭৪]

Share:

Leave Your Comment