মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান

 

বিগত ১৯৮৬ ইংরেজীতে রাহনুমা-ই শরীয়ত ও তরীক্বত, মুর্শিদে বরহক, পেশওয়া-ই আহলে সুন্নাত হযরতুলহাজ্ব আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ হুযূর কেবলা রাহমাতুল্লাহি তাআলা আলায়হি হযরত শাহানশাহে বাগদাদ গাউসুস্ সাক্বালাঈন গাউসুল আযম শায়খ আবদুল ক্বাদির জীলানী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর অকৃত্রিম ভক্তবৃন্দ, বিশেষত সিলসিলা-ই আলিয়া ক্বাদেরিয়া সিরিকোটিয়ার অগণিত পীর-ভাই ও ভক্তবৃন্দের সংগঠিত রাখার জন্য এক মজবুত দ্বীনী সংগঠন হিসেবে ‘গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’-এর গোড়াপত্তন করেন। এ সংগঠন আজ তার অসংখ্য শাখা-পল্লবে সজীব হয়ে এক মহীরূহের রূপ ধারণ করেছে- আলহামদু লিল্লাহ্। এ সংস্থা আজ নিজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বহির্বিশ্বের বহু রাষ্ট্রেও বিস্তার লাভ করেছে। এ নিষ্কলুষ আধ্যাত্মিক সংগঠন আজ ধর্মীয় ও সামাজিক ক্ষেত্রে বহু কর্মসূচী সুচারুরূপে বাস্তবায়ন করে আসছে।

একটি মজবুত সংগঠন যেহেতু ব্যাপকাকারে কোন আদর্শ কিংবা যুগোপযোগী গুরুত্বপূর্ণ কাজ সহজে বাস্তবায়ন ও সম্পন্ন করতে পারে, সেহেতু গাউসিয়া কমিটির উপর অন্যান্য কর্মসূচীর সাথে সাথে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ বর্তানো হয়েছে। তা হচ্ছে ‘দাওরা-ই দাওয়াত-ই খায়র’ (পূন্যময় কাজের প্রতি আহ্বানের জন্য প্রদক্ষিণ করা)। বিগত ২০০৯ ইংরেজিতে হুযূর ক্বেবলার সুযোগ্য উত্তরসূরী পীরে ত্বরীক্বত, রওনকে আহলে সুন্নাত হযরতুল আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ সাহেব ক্বেবলা দামাত বরকাতুহুমুল আলিয়া বাংলাদেশ সফরকালে ‘আলমগীর খানক্বাহ্’ শরীফে এক ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে এ বরকতময় কর্মসূচী ঘোষণা করেছিলেন। আলহামদুলিল্লাহ্। তাঁরই নির্দেশিত নিয়মে গাউসিয়া কমিটি এ কর্মসূচী বাস্তবায়নের পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এবং সাফল্যের সাথে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

‘দাওয়াত-ই খায়র’-এর জন্য বের হওয়া ও প্রদক্ষিণ করার গুরুত্ব অপরিসীম। এটা আরবী ‘আমর বিল মা’রূফ নাহী আনিল মুন্কার’ (সৎকাজের নির্দেশ দান ও অসৎকাজে বাধা প্রদান’-এর প্রতিশব্দ। ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাকে মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছিয়ে দিয়ে তা হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়ার একটি অতীব বরকতময় পন্থা। পবিত্র ক্বোরআনে এর নির্দেশ বিভিন্নভাবে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বনবী হুযূর-ই আক্রাম বাস্তবে এ বরকতময় কাজটি নিজেও করেছেন, সাহাবা-ই কেরামের মাধ্যমেও করিয়েছেন এবং বহু হাদীস শরীফে বিশ্ব মুসলিমকে এ জন্য তাকীদ দিয়েছেন ও উৎসাহিত করেছেন। বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম জাতি হিসেবে মুসলমানদেরকে ঘোষণা করে তাদের অন্যতম প্রশংসিত কাজ ও বৈশিষ্ট্য নির্দ্ধারণ করেছেন তাঁদের সৎকাজের নির্দেশ ও অসৎকাজে বাধাদানকে। যেমন এরশাদ হয়েছে-

‘‘কুনতুম খায়রা উম্মাতিন উখ্রিজাত লিন্না-সি তা’মুরূ-না বিল মা’রূফি ওয়া তানহাউনা ‘আনিল মুনকারি।” (অর্থাৎ তোমরা হলে শ্রেষ্ঠতম ওইসব উম্মতের মধ্যে, যাদের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। মানবজাতির মধ্যে সৎকাজের নির্দেশ দিচ্ছো এবং মন্দ কাজে বাধা দিচ্ছো। ৩:১১০, কান্যুল ঈমান)

সমাজে যখন অন্যায়-অবিচার ও অধার্মিকতা এবং ধর্মীয় কাজে উদাসীনতা ও অবহেলা ছড়িয়ে পড়ে তখন ‘দাওয়াত-ই খায়র’ অপরিহার্য হয়ে পড়ে। তখন এ কাজটা সবাই বর্জন করলে আল্লাহর আযাব আম (ব্যাপক) হয়ে যায়। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক্ব রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে এরশাদ করতে শুনেছি, ‘‘মানুষ যখন মন্দ কাজ হতে দেখে, অতঃপর তা প্রতিরোধ করে না, তখন আল্লাহ্ অবিলম্বে ব্যাপকভাবে সবাইকে শাস্তি দেন।’’ তখন তাদের দো‘আ কবুল হয় না। যেমন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, ‘‘তোমরা সৎ কাজের নির্দেশ দাও, মন্দ কাজে বাধা দাও, এর পূর্বে যে, তোমরা দো‘আ করবে, কিন্তু তোমাদের দো‘আ কবুল হবে না। তোমরা আল্লাহর দরবারে চাইবে, কিন্তু তিনি তোমাদেরকে দেবেন না আর তোমরা তাঁর নিকট সাহায্য চাইবে, কিন্তু তিনি তোমাদেরকে সাহায্য করবেন না।’’ আল্লাহ্ তাদের উপর বরকত, মঙ্গল ও সাফল্যকে হারাম করে দেন।

হযরত ইয়ূশা’ ইবনে নূন আলায়হিস্ সালাম-এর নিকট আল্লাহ্ তা‘আলা ওহী নাবিল করলেন, ‘‘আমি তোমার সম্প্রদায়ের চল্লিশ হাজার নেক্কার এবং ষাট হাজার হকদার, মোট এক ল লোককে ধবংস করবো।’’ তিনি আরয করলেন, ‘‘হে আল্লাহ্! বদকাররা তো শাস্তিযোগ্য, নেক্কারদের অপরাধ কি?’’ আল্লাহ্ তা‘আলা বললেন, ‘‘তারা আমার প থেকে দায়িত্ব পালন করেনি বরং অসৎ লোকদের হিদায়ত কিংবা প্রতিহত না করে পার্থিব স্বার্থে পানাহার ও চলাফেরায় তাদের সঙ্গ দিয়েছে।’’ [তাম্বীহুল গাফেলীন]

আল্লাহ্ তা‘আলা নির্দেশ দিয়েছেন, ‘‘ক্বূ—আন্ফুসাকুম ওয়া আহলী-কুম নারা- ওয়াক্বূ-দুহান্না-সু ওয়াল হিজারাহ্।’’ (তোমরা দোযখ থেকে বাঁচাও নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে, যার ইন্ধন হচ্ছে মানুষ ও পাথর। ৬৬:৬, কান্যুল ঈমান) সুতরাং ইসলামের শিাগুলো যেমন নিজেকে শিা করতে হয়, নিজের পরিবার-পরিজনকেও শিা দিতে হয়। আল্লাহ্র কঠিন শাস্তি থেকে নিজেকে যেমন রা করতে হয়, তেমনি পরিবারের সদস্যদেরকেও রা করতে হয়। সেভাবে নিজের অধিনস্থদেরকেও হিদায়তের পথে রাখার দায়িত্ব প্রত্যেকের উপর বর্তায়। সহীহ্ বোখারী শরীফে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহর হাবীব এরশাদ করেছেন- তোমাদের মধ্যে প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। প্রত্যেকের উপর তার অধিনস্থদের দায়িত্ব বর্তায়। অনুরূপ পাড়া-প্রতিবেশী ও এলাকার লোকজনকে হিদায়তের দায়িত্ব ও প্রত্যেককে নিতে হয়। এ প্রসঙ্গে তাফসীর-ই নঈমীতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দোযখ থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে এভাবে- কাফিরকে ঈমানের দাওয়াত দেবে, ফাসিক্ব বা পাপাচারীকে তাক্বওয়ার দিকে ডাকবে, গাফিলদের জাগ্রত করবে, এ সম্পর্কে যাদের জ্ঞান নেই তাদেরকে শিা দেবে ইত্যাদি।

সুতরাং এসব দায়িত্ব পালনের নিমিত্তই ‘গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’ প্রতি সপ্তাহে সুপরিকল্পিতভাবে ‘দাওয়াহ্-ই দাওয়াত-ই খায়রের ব্যবস্থা করেছে। এ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় বিষয়াদি শিা করে ওই পরিকল্পিত ও ফলপ্রসূ নিয়ম অনুসরণ করে ‘দাওয়াতে খায়র’ সম্পন্ন করার জন্য আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের প্রকাশনা বিভাগ প্রমাণ্য পুস্তক ‘গাউসিয়া তারবিয়াতী নেসাব’ প্রকাশ করেছে। প্রত্যেক ‘দাওয়াত-ই খায়র’-এর প্রারম্ভে পবিত্র ক্বোরআনের সহীহ্ তরজমা ও তাফসীর উপস্থাপনের জন্য ‘কান্যুল ঈমান ও খাযাইনুল ইরফান’ ও ‘কান্যুল ঈমান ও নূরুল ইরফান’-এর বঙ্গানুবাদ অবলম্বনের প্রস্তাব করা হয়েছে, হাদীস শরীফ থেকে বয়ান করার জন্য ‘মিরআত শরহে মিশকাত’ (বঙ্গানুবাদ) অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা অনুসরণের জন্য হুযূর ক্বেবলা আল্লামা সাবির শাহ্ মুদ্দাযিল্লুহুল আলীর উপরিউক্ত ভাষণের বঙ্গানুবাদ পাঠ-পর্যালোচনার পরামর্শ দিচ্ছি।

নিজে হিদায়ত গ্রহণের সাথে সাথে অন্যের নিকট হিদায়তের বাণী পৌঁছানো ও যে কোন নেক কাজের প্রশিণ দেওয়ার সাওয়াব অকল্পনীয়। প্রত্যেক নেক কাজ যেহেতু আমাদের আক্বা ও মাওলা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামই শিক্ষা দিয়েছেন এবং আল্লাহর কাজে ওই ইবাদতই কবুল হয়, যা নবী করীমের অনুকরণও আনুগত্যের মাধ্যমে করা হয়, সেহেতু ওই কাজ যিনি শিা করেন কিংবা যিনি নেক কাজের দাওয়াত পৌঁছান তিনিতো তার সাওয়াব পাবেনই, তদসঙ্গে যাঁদের মাধ্যমে ওই নেক্কাজ আমলকারী পর্যন্ত পৌঁছে থাকে তাঁদের নিকটও, এমন সর্বোচ্চে নবী করীম পর্যন্ত ওই কাজের সাওয়াব বহুগুণ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে পৌঁছে থাকে। নবী করীমের নিকট কারো পক্ষ থেকে সাওয়াব পৌঁছলে তা তার জন্য কত সৌভাগ্যের কারণ হবে তা সহজে অনুমান করা যায়।

এপ্রসঙ্গে ‘মাওয়াহিব-ই লাদুনিয়াহ্’ গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মুসলমান যে নেক কাজই করুক না কেন, তার এক সাওয়াব তো যে কাজটি করছে সে পাবে, দু’টি পাবেন তার মুর্শিদ, চারটি পাবেন তাঁর মুর্শিদের মুর্শিদ, আর আটটি পাবেন তাঁর মুর্শিদের মুর্শিদের মুর্শিদ। এভাবে যতো উপরে যাবেন, সাওয়াব বাড়তে থাকবে। এভাবে যখন এ সাওয়াব হুযূর-করীর হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর দরবার পর্যন্ত পৌঁছে, তখন তা অগণিত ও অসংখ্য হয়েই পৌঁছে।

এতো একজন বা এক উম্মতের নেক কাজ। এখন প্রতিদিন কত সংখ্যক উম্মত বা আমলকারী কত নেক কাজ করছে আর মুর্শিদগণের মাধ্যমে হুযূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে কত সাওয়াব পৌঁছছে তা’তো হিসাব-নিকাশেরও বাইরে। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে- مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَه مِثْلُ اَجْرٍ فَاعِلِه অর্থাৎ ‘‘যে ব্যক্তি নেক কাজের প্রতি পথ দেখান, তিনি ওই কাজ সম্পন্নকারীর মতো সাওয়াব পান।’’ [মিশকাত শরীফঃ কিতাবুল ইল্ম]

সমগ্র জাহানের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পথপ্রদর্শক তো হুযূর-ই করীম হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম। যে কেউই কোন প্রকার নেক কাজ করে অথবা ক্বিয়ামত পর্যন্ত করবে, সে তো হযূর-ই আক্রামের পথপ্রদর্শনের কারণেই করে ও করবে। এখন চিন্তা করুন, হুযূর-ই আক্রাম-এর সাওয়াব ও প্রতিদানের অবস্থা কি! আর মধ্যখানে পথ প্রদর্শকগণও কতগুণ বেশী সাওয়াব পাচ্ছেন।

‘শতরঞ্জ’ বা দাবার ছক আবিষ্কারক তাঁর আবিষ্কৃত ‘ছক’টা নিয়ে তাঁর দেশের বাদশার নিকট গেলেন। বাদশাহ্ এমন আবিষ্কার দেখে খুশী হলেন আর বললেন, ‘‘কিছু পুরস্কার চাও!’’ বললেন, ‘‘আমার আবিস্কৃত ছকটির খানা বা ঘরগুলো চাউল দিয়ে এভাবে ভর্তি করে দিন যেন প্রত্যেক আগের খানায় তার পেছনের খানার দ্বিগুণ হয়। অর্থাৎ প্রথম খানায় একটি চাউল হলে তার সম্মুখস্থ দ্বিতীয় খানায় দু’টি, তৃতীয় খানায় চারটি, চতুর্থ খানায় আটটি, পঞ্চম খানায় ষোলটি চাউল হবে। এভাবে সব খানা ভর্তি করে দিন! বাদশাহ্ এত সূক্ষ্ম হিসাব বুঝার চেষ্টাও করেন নি, বরং বললেন, ‘‘এ হিসাব কে করবে? তুমি গিয়ে আমার বাবুর্চি খানা থেকে দু’বস্তা চাউল নিয়ে যাও!’’ লোকটি আরয করলেন, হুযূর! আমাকে ওই হিসাবে দিন!’’ যখন হিসাব করা হলো, তখন দেখা গেলো সমগ্র ভূ-পৃষ্ঠেও এত পরিমাণ চাউল উৎপন্ন হয়নি, যতটুকু এ লোকটি তার হিসাবানুযায়ী চাচ্ছেন।

এর কারণ হচ্ছে- দাবার ছকে ৬৪টি খানা বা ঘর আছে। আর চাউলের হিসাবও যদি এভাবে করা হয়- আট চাউলে এক রত্তি, আট রত্তিতে এক মাশাহ্, বার মাশায় এক তোলা, আশি তোলায় এক সের, চল্লিশ সেরে এক মণ। এ হিসাবানুসারে মাত্র চব্বিশ খানা বা ঘরে এক মণ হয়। তারপর যখন প্রতিটি খানায় দ্বিগুণ করে হিসাব করা হলো, তখন শেষ পর্যন্ত এত পরিমাণ চাউল দাঁড়ালো যে, যদি ওই চাউলের মূল্যে স্বর্ণ দেয়া হয়, আর স্বর্ণ ও চাউলের হিসাবও এভাবে করা হয় যে, আগেরকার আমলের হিসাবানুযায়ী, চাউল এক টাকায় চার সের হয় এবং স্বর্ণ পঁচিশ টাকায় এক তোলা; তবে স্বর্ণ দাঁড়ায় উনিশ কোটি মণ, আর চাউলের হিসাব তো করাই সম্ভব হয় না।

এটা ছিলো চৌষট্টি খানার হিসাব, যা ওই যুগের বাদশাহ্ দিতে পারেন নি। কিন্তু আমাদের আক্বা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে উম্মতের আমল যখন পৌঁছে, তখন তাও দ্বিগুণ, চারগুণ, আটগুণ হয়ে বৃদ্ধি পায় এবং এত বেশী হয়ে যায় যে, তার হিসাব করা সম্ভবপর হয় না। উপরিউক্ত উদাহরণে পার্থিব বাদশাহ্ দাবার আবিষ্কারককে তার হিসাবানুসারে পুরস্কার দিতে পারেন নি; কিন্তু এখানে সাওয়াবের বেলায় হিসাব-যতোই বৃদ্ধি পাক না কেন, প্রতিদান দাতা তো স্বয়ং আল্লাহ্ তা‘আলা। তাঁর ধন-ভাণ্ডারে অভাব কিসের? তাতো অসীম। এ-ই হচ্ছে রসূলে পাকের সম্মান বা মান-মর্যাদা এবং সাওয়াবের একটা মাত্র দিক। আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ ফরমায়েছেন- وَاِنَّ لَكَ لَاَجْرًا غَيْرُ مَمْنُوْنٍ অর্থাৎ হে হাবীব! আপনার জন্য রয়েছে বন্ধ হয় না এমন সাওয়াব। এভাবে যিনি ভাল কাজের দাওয়াত পৌছান তাঁর এবং তিনি যেই মুর্শিদ বা ঊর্ধ্বতন পথপ্রদর্শকের নির্দেশে তা করবেন, তাঁর ও তাঁর ঊর্ধ্বতন পথ প্রদর্শকদের সাওয়াবেরও আন্দাজ করুন!

সুতরাং আসুন, দাওয়া-ই দাওয়াত-ই খায়র এ অংশ গ্রহণ করে এমন বরকতময় সুযোগ গ্রহণ করে নিজেদেরকে ধন্য করি।  আল্লাহ্ তাওফীক্ব দিন! আ-মী-ন!!