ইবাদতে তাওহীদ এর বিবরণ

ইবাদতে তাওহীদ এর বিবরণ

ইবাদতে তাওহীদ (توحيد فى العبادة) -এর বিবরণ

আল্লাহ ছাড়া আর কারো ইবাদত করা বৈধ নয়। অন্য কেউ ইবাদতের উপযুক্তও নয়। এ কারণেই যুগে যুগে যত নবী-রাসূল এ পৃথিবীতে এসেছেন, তাঁরা সকলেই এক আল্লাহর ইবাদতের প্রতিই মানুষকে আহ্বান করেছেন। সকল নবী-রাসূল তাঁদের সম্প্রদায়কে এ বাণীই প্রচার করেছেন-قَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوْا اللهَ مَا لَكُمْ مِنْ اِلهٍ غَيْرَه

অর্থাৎ-হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, যিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন উপাস্য নেই।   [সূরা আ’রাফঃ আয়াত-৭৩, তরজমা- কান্‌যুল ঈমান]

ক্বোরআন মজীদে আরো এরশাদ হয়েছে-فَمَنْ کاَنَ یَرْجُوْا لِقَآءَ رَبِّہٖ فَلْیَعْمَلْ عَمَلاً صَالِحًا وَلاَ یُشْرِکْ بِعَبَادِۃِ رَبِّہٖ اَحَدً

অর্থাৎ-সুতরাং যার আপন রবের সাথে সাক্ষাৎ করার আশা আছে, তার উচিৎ যেনো সে সৎকর্ম করে এবং সে যেনো আপন রবের ইবাদতে অন্য কাউকে শরীক না করে।[সূরা কাহ্‌ফ, আয়াত-১১০, তরজমা- কান্‌যুল ঈমান]

তাওহীদের গুরুত্ব ও ফযীলত

তাওহীদ তথা আল্লাহ্‌র একত্ববাদ হল ইসলামের প্রধান মূলমন্ত্র। একত্ববাদে বিশ্বাস ছাড়া কোন আমলই আল্লাহ্‌র দরবারে গ্রহণযোগ্য নয়। এ কারণেই তাওহীদে বিশ্বাস ও স্বীকৃতিকে হাদীস শরীফে ইসলামের প্রধান রুক্‌ন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হুযূর সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-

بُنِیَ الْاِسْلاَمُ عَلٰی خَمْسٍ شَہَادَۃِ اَنْ لَآ اِلٰہَ اِلاَّ اللّٰہُ وَاَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُہٗ وَرَسُوْلُہٗ وَاِقَامِ الصَّلاَۃِ وَاِیْتَاءِ الزَّکٰوۃِ وَالْحَجِّ وَصَوْمِ رَمَضَانَ

অর্থাৎ-ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি বিষয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত: ১. এ মর্মে সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই এবং হযরত মুহাম্মদ মোস্তাফা সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল, ২. নামায কায়েম করা, ৩. যাকাত প্রদান করা, ৪. হজ্জ করা ও ৫. রমযানের রোযা রাখা। [সহীহ বোখারী শরীফ, কিতাবুল ঈমান]

অপর এক হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-

مَنْ شَہِدَ اَنْ لاّآ اِلٰہَ اِلاَّ اللّٰہُ وَاَنَّ مُحَمَّدً ارَّسُوْلُ اللّٰہِ حَرَّمَ اللّٰہُ عَلَیْہِ النَّارَ

অর্থাৎ-যদি কোন ব্যক্তি এ মর্মে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং হযরত মুহাম্মদ মোস্তাফা সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রসূল, তবে আল্লাহ তা’আলা তার উপর দোযখের আগুনকে হারাম করে দেবেন।  [মিশকাতুল মাসাবীহ, পৃষ্ঠা-১৫]

আরেক হাদীস শরীফে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-

مَفَاتِیْحُ الْجَنَّۃِ شَہَادَۃُ اَنْ لاّآ اِلٰہَ اِلاَّ اللّٰہُ

অর্থাৎ-বেহেশ্‌তের চাবিগুচ্ছ হচ্ছে- এমর্মে সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বূদ নেই। [মিশকাতুল মাসাবীহঃ পৃষ্ঠা-১৫]

হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যদি আসমান ও যমীন এবং এ দু’এর মধ্যস্থিত সমুদয় বস্তুকে এনে এক পাল্লায় রাখায় হয় আর  لاَ اله الا اللهএর সাক্ষ্যকে অপর পাল্লায় রাখা হয় তবে لا اله الا الله -কলেমার পাল্লা ভারী হবে। [তাবরানী শরীফঃ পৃষ্ঠা- ৩৮৫]

হযরত যায়দ ইবনে আরক্বাম রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যদি কেউ আল্লাহর সাথে শির্‌ক করে মারা যায়, সে জাহান্নামে দাখিল হবে। আর কেউ যদি আল্লাহর সাথে শির্‌ক না করে (মু’মিন অবস্থায়) মারা যায়, সে জান্নাতে দাখিল হবে। [মিশকাত শরীফঃ পৃষ্ঠা- ১৫]

[গাউসিয়া তরবিয়াতী নেসাব, পৃ.১৫-১৬]