ঈমান বিল্লাহ : আল্লাহর উপর ঈমান

ঈমান বিল্লাহ : আল্লাহর উপর ঈমান

১. ঈমান বিল্লাহ : আল্লাহর উপর ঈমান

ঈমান বিল্লাহ বা আল্লাহর প্রতি ঈমানই হচ্ছে ঈমানের মৌলিক বস্তু। ঈমানের বাকী যত দিক বা বিভাগ আছে তা ওই এক মূলকাণ্ডের শাখা/প্রশাখা স্বরূপ।[শরহে আক্বিদা-ই তাহাভীয়াহ্‌]

ইসলামের যত মৌলিক বিধি-বিধান আছে তা এ উৎস থেকেই শক্তি সঞ্চয় করে থাকে। আল্লাহর প্রতি ঈমানের সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে لاَ اِلهَ الا اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ -এর উপর আন্তরিক বিশ্বাস এবং মৌখিক স্বীকৃতির মাধ্যমে সেটা প্রমাণ করা। আর এ কারণে হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে- مَنْ قَالَ لاَ اِلَهَ اِلاَّ اللهُ دَخَلَ الْجَنَّةَ  অর্থাৎ যে ব্যক্তি (আন্তরিক বিশ্বাসের সাথে) লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ (কলেমা) বলবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।[মিশ্‌কাত শরীফ]

২. ফিরিশ্‌তাদের প্রতি ঈমান

মহান আল্লাহর প্রতি ঈমানের পর ফিরিশ্‌তাদের প্রতি ঈমান আনা ফরয। ফিরিশ্‌তাগণ মহান আল্লাহর এক সম্মানিত বিশেষ সৃষ্টি। তাঁদেরকে আল্লাহ তা’আলা নূর দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। তাঁরা অত্যন্ত জ্যোতির্ময় সূক্ষ্মদেহের অধিকারী। তাঁদের নিজেদের আকৃতি আছে। তবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আকৃতি ধারণ করার ক্ষমতাও আল্লাহ তাঁদেরকে দিয়েছেন। তাঁরা পুরুষও নন, নারীও নন। তাঁদের কোন সন্তান-সন্ততিও নেই। তাঁরা অদৃশ্য, পানাহার ও নিদ্রামুক্ত। [শরহে ফিক্বহে আকবর] ফিরিশ্‌তাগণ সকলেই নিষ্পাপ। তাঁরা আল্লাহর নাফরমানী করেন না। যাঁকে যে কাজে নিযুক্ত করা হয় তিনি যথাযথভাবে সে দায়িত্ব পালন করেন। বিন্দুমাত্র নাফরমানীও করেন না।

ক্বোরআন মজীদে আল্লাহ তাজ্ঞআলা এরশাদ করেছেন-مَنْ كَانَ عَدُوًّا لِلهِ وَمَلاَئِكَتِه وَرَسُوْله وَجِبْرِيْلَ وَمِيْكَالَ فَاِنَّ اللهَ عَدُوٌّ لِلْكَافِرِيْنَ

তরজমাঃ যে কেউ শত্রু হয় আল্লাহর, তাঁর ফিরিশ্‌তাদের, তাঁর রসূলগণের, জিব্রাঈলের এবং মীকাঈলের, তবে আল্লাহ কাফিরদের শত্রু। [সূরা বাক্বারা, আয়াত-৯৮, তরজমা-কান্‌যুল ঈমান]

ফিরিশ্‌তাগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য

আল্লাহ তা‘আলা চারজন ফিরিশ্‌তাকে ফিরিশ্‌তাকুলের প্রধান বানিয়েছেন। তাঁরা হলেন-

এক. হযরত জিব্রাঈল আলায়হিস্‌ সালাম। তাঁর প্রধান কাজ হল আল্লাহ তা‘আলার বাণীসমূহ নবী ও রসূলগণের কাছে পৌঁছানো। তা ছাড়া আল্লাহ যখন যা নির্দেশ করেন তা কর্তব্যরত ফিরিশতা্‌গণের কাছে পৌঁছানো।

দুই. হযরত ইস্‌রাফীল আলায়হিস্‌ সালাম। তাঁর দায়িত্ব হলো ক্বিয়ামতের পূর্বক্ষণে আল্লাহর নির্দেশে সিঙ্গায় ফুৎকার দেওয়া। তিনি মোট দুঞ্চবার ফুৎকার দেবেন।

তিন. হযরত মীকাঈল আলায়হিস্‌ সালাম। তাঁর দায়িত্ব হলো সৃষ্টি জগতের জন্য বৃষ্টি-বাদল পরিচালনা করা এবং খাদ্যদ্রব্যের ব্যবস্থা করা।

চার. হযরত আয্‌রাঈল আলায়হিস্‌ সালাম। ক্বোরআন ও হাদীস শরীফে তাঁকে ‘মালাকুল মাওত’ বলা হয়েছে। তাঁর দায়িত্ব হলো রূহ কব্‌জ করা।

আল্লাহ তা’আলার অগণিত ফিরিশ্‌তার মধ্যে মুনকার ও নকীর অন্যতম। তাঁরা মানুষের মৃত্যুর পর কবরে সাওয়াল-জাওয়াবের দায়িত্ব পালন করেন।

উল্লেখ্য, অন্যান্য অগণিত ফিরিশ্‌তা আল্লাহর নির্দেশ পালন ও তাঁর ইবাদত বন্দেগীতে রত আছেন। [গাউসিয়া তরবিয়াতী নেসাব, পৃ.৪৪-৪৫]