সম্পাদকীয়: মাহে রমজানের পূর্বে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিরোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন

সম্পাদকীয়: মাহে রমজানের পূর্বে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিরোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন

আল্লাহ্ পাক বান্দার পাপরাশি ক্ষমার জন্য এমন কিছু ফজিলতপূর্ণ রজনী দিয়েছেন যে রাত সমূহে ইবাদতের মাধ্যমে বান্দা তার জীবনের সমস্ত গুনাহ্ হতে ক্ষমা লাভের সুযোগ পায়। ওই সমস্ত রাতে আল্লাহ্র অবারিত রহমত বর্ষিত হতে থাকে। আল্লাহর অশেষ অনুগ্রহ প্রাপ্তির বরকতময় রজনীর মধ্যে পবিত্র লাইলাতুল বরাত অন্যতম। আসন্ন লায়লাতুল বরাতে ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে আমাদের গুনাহ্ মাফের তৌফিক দান করুন এ কামনা করছি।
পবিত্র মাস শা’বান ও বিগত রজব এ দু’মাস মাহে রমজানুল মোবারকের প্রস্তুতির মাস। অসংখ্য রহমতের বারতা নিয়ে মুসলিম উম্মাহর দ্বারে সমাগত মাহে রমজান মোবারক। প্রিয়নবী হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম রজব মাস থেকে মাহে রমজানের ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। তাই আমাদেরও আসন্ন পবিত্র রমজান মাসকে ইবাদত-বন্দেগী, ক্বোরআন তিলাওয়াত, দান-সদকা ইত্যাদি পূণ্যময় কাজ করার দৃঢ় মানসিকতা গ্রহণ করতে হবে। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, রমযান মাস আসার পূর্ব থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। সরকারের পক্ষ হতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও এক শ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ীর অন্যায় কারসাজীর কাছে সরকার অসহায়। অতএব এসব অসৎ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট এর বিরুদ্ধে কঠোর আইনী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের দেশে দেখা যায় রমজান মাসকে কোন মুসলমান নারী-পুরুষ ঈদ উদ্যাপনের প্রস্তুতির মাস মনে করে ঈদ উদযাপনের দিকে অধিক মনোনিবেশ করার ফলে রমজান মোবারকের মূল্যবান সময়কে হেলা-ফেলায় নষ্ট করে দেয়। তাই রমজান মাস আসার পূর্বেই ওইসব জাগতিক কাজগুলো সেরে নিয়ে মাহে রমজানকে ইবাদতে ব্যয় করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এছাড়াও বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে গরীব দুঃস্থ মুসলিমদের রোজা পালনের সুবিধার্থে ধনাঢ্য সচ্ছল ব্যক্তিবর্গ নিজ নিজ প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন যারা অভাবী তাদের প্রতি সাহায্যের হাত প্রসারিত করলে তারা নিশ্চিন্ত ও প্রশান্ত মনে রোজা পালন করতে পারবেন। তাই এ ব্যাপারে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে।

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কবাসীর পাশে গাউসিয়া কমিটি
তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে উভয় দেশে মৃত্যুর সংখ্যা (২০ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত) ৪৫ হাজার ছড়িয়ে গেছে। গত ৬ ফেব্রেুয়ারি ওই ভূমিকম্পের ফলে হাজার হাজার ভবন ধ্বংস হয়ে দেশ দু’টির প্রায় লাখো মানুষ আহত ও বাস্তুচ্যুত হয়। ২ লাখ ৬৪ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ধসে পড়ায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৫,৮০০ ছাড়িয়ে গেছে। এমন বহু লোক ছিলেন কয়েকটি সুরম্য আট্টালিকার মালিক অথচ এক মিনিটের কম সময়ের মধ্যে সংঘটিত ভূমিকম্পে সব ধ্বংস হয়ে এখন তাঁবুতে বসবাস করছে! এ এক আল্লাহর অসীম কুদরতের নিদর্শন। এ লোক কয়েক মাসের ঘর ভাড়া দিতে পারছে না বলে ভবন মালিক তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলেন, দেখা গেছে ওই ভবন মালিক ও সে লোকটি আজ একই তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছে। ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত শহরে লোকজন প্রচন্ড শীতে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে- মহান রব্বুল আলামীন প্রাণঘাতী দুর্যোগে নিহত সকল মু’মিন-মুসলমানকে শাহাদাতের মকাম নসিব করুন এবং আহতদের আরোগ্য দান করুন, দয়াময় রবের দরবারে এ ফরিয়াদ জানাই-আমীন।

বাংলাদেশে অবস্থিত তার্কিস দুতাবাস এবং তুর্কি সহযোগিতা ও সমন্বয় এজেন্সি (টিকা) এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তুরস্কে স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে আহত মানুষের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ সরকার ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এশিয়ার বৃহত্তম দ্বীনি সংস্থা আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট’র সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনায় গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’র পক্ষ থেকে আনুমানিক পঁচিশ লক্ষ টাকার পণ্যসামগ্রী ঢাকাস্থ তুর্কি দুতাবাসে হস্তান্তর করেন গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’র নেতৃবৃন্দ। গাউসিয়া কমিটির পক্ষ হতে ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় সর্বপ্রকার সহযোগিতা নিয়ে তুর্কিবাসীদের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। প্রয়োজনে বাংলাদেশ থেকে অভিজ্ঞ মেডিকেল টীম তুরস্কে পাঠানোর ঘোষণাও দেন।
মার্চ মাস বাঙ্গালী জাতির জন্য অবিস্মরণীয় মাস। এ মাসে বাঙ্গালী জাতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতার চিরকাক্সিক্ষত স্বাদ লাভ করে। যাঁদের আত্ম-ত্যাগের মাধ্যমে স্বাধীন দেশের পতাকা পেয়েছি সে সকল শহীদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি এবং একটি শোষণমুক্ত অসাম্প্রদায়িক উন্নয়শীল রাষ্ট্র ব্যবস্থা অব্যাহত থাকুক এ কামনা করছি।

Share:

Leave Your Comment