হযরত আলী মুরতাদ্বা কাররামাল্লাহু তা‘আলা ওয়াজহাহুল কারীম অনেক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন

হযরত আলী মুরতাদ্বা কাররামাল্লাহু তা‘আলা ওয়াজহাহুল কারীম অনেক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন

হিজরী সালের পঞ্চম মাস মাহে জমাদিউল উলা। ইসলামের ইতিহাসের অতি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবহুল এ মাস। ইসলামের চতুর্থ খলীফা হযরত আলী কাররামাল্লাহু তা‘আলা ওয়াজহাহু এ মাসের ৮ তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন। হযরত আলী মুরতাদ্বা কাররামাল্লাহু তা‘আলা ওয়াজহাহুল কারীম ওই মহান সত্তা, যিনি অনেক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিলেন। তিনি একাধারে শেরে খোদা, রসূল-ই আকরামের জামাতা, হায়দার-ই কাররার, সাহেবে যুল ফিকার, হযরত ফাতিমা যাহরার স্বামী, হযরত হাসান ও হযরত হোসাঈন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমার পিতা, অনন্য দানশীলতা ও অস্বাভাবিক বীরত্বের অধিকারী, ইবাদত ও রিয়াযতে অসাধারণ, প্রসিদ্ধ ভাষালঙ্কার সমৃদ্ধ, জ্ঞান ও সহনশীলতায় অদ্বিতীয়, অত্যন্ত হৃদয়স্পর্শী বাগ্মিতার অধিকারী, খায়বার বিজেতা ইত্যাদি। দুনিয়া তাঁকে ‘মাযহারুল আজাইব ও গরাইব’ (অসংখ্য আশ্চর্যজনক ও বিরল বিষয়ের প্রকাশস্থল) বলে স্মরণ করে। অল্প বয়স্কদের মধ্যে তিনি প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন। বিশ্ববাসীকে তিনি অনেক ফলপ্রসূ ও অব্যর্থ দিক-নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। এ মাসের ১৫ তারিখে সংঘটিত হয়েছিলো ঐতিহাসিক উষ্ট্রের যুদ্ধ। তারপর সিফ্ফীনের যুদ্ধ ও খারেজী বিদ্রোহ দমন করে ইসলামী রাষ্ট্রে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনেন। মহান ওলী হযরত নাজমুদ্দীন কুবরা এবং সুলতান ইব্রাহীম ইবনে আদহামের ওফাত শরীফও এ মাসের যথাক্রমে ১০ম ও ২৬তম তারিখে সংঘটিত হয়েছিলো, যাঁদের আদর্শ জীবন ও বিশ্বে হিদায়ত ও রিয়াযত-মুজাহাদার আধার।

অতি সম্প্রতি দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় পাঠ্যপুস্তক থেকে মানবিক মূল্যবোধ, নৈতিক শিক্ষা ও ইসলামী ভাবধারা মূলক অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রবন্ধ, কবিতা বাদ দেয়া হয়েছে মর্মে গুরুতর সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি-অনুষ্ঠিত একটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িকতা দুষ্ট প্রশ্ন প্রণয়নের প্রমাণ পেয়েছে এবং এসব প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সাথে নেপথ্যে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের এ দেশে এহেন ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। বর্তমান সমাজের সর্বস্তরে নৈতিক অবক্ষয় দিনদিন বেড়ে চলছে এতে করে সুষ্ঠু বিবেকবান মানুষ উদ্বীগ্ন। জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার নতুন প্রজন্মকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পাঠ্য পুস্তকগুলোতে নৈতিক শিক্ষা সম্বলিত ইসলামী ভাবধারামূলক রচনা বেশি বেশি সংযুক্ত করা বড় প্রয়োজন। পাঠ্য পুস্তকের সিলেবাস থেকে ইসলাম ধর্ম বিষয়ক মুসলিম সংস্কৃতি সমৃদ্ধ কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ক্রমে বাদ দেয়ার মতো ঘটনা কোনভাবেই মেনে নেয় যায়না। এতে করে অন্তশার শূন্য সর্বনাশের দিকে ধাবিত হবে আগামী প্রজন্ম। পাঠ্য বইয়ের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য পুস্তক বোর্ড। এ প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তকের প্রণয়ন, প্রকাশনা ও বিতরণের দায়িত্ব পালন করে থাকে। এ পাঠ্যগুলো মাদ্রাসার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে একই ধরণের পাঠ্যপুস্তক পড়া বাধ্যতামূলক। আমরা সরকারের প্রতি বিনীত আবেদন জানাবো এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এবং বিশেষজ্ঞ আলেম ওলামাদের সম্পৃক্ত করণের মাধ্যমে পাঠ্য বইয়ে ইসলামী ভাবধারা মূলক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করণের ব্যবস্থা নেবেন।

মাসিক তরজুমানের এ সংখ্যায় আত্মার প্রশান্তি লাভের পন্থা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পার্থিব উপকারিতা, ইসলামী বক্তার যোগ্যতা ও বক্তব্যের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ লেখা ও মানবিক উৎকর্ষ সাধনের পথ নির্দেশনায় বিবিধ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচিত হয়েছে। বর্তমান সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ের উপর কোরআন হাদিসের আলোকে দিক নির্দেশনামূলক মূল্যবান লেখা দিয়ে মাসিক তরজুমানকে আরো সমৃদ্ধ করণে আমরা নবীন লেখকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আসুন আমরা প্রত্যেকে মুসলিম উম্মাহকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের পথে- মতে চলতে যার যার স্থান থেকে ভূমিকা পালন করি। মাসিক তরজুমানকে আরো সমৃদ্ধ করণে বরাবরের মতো সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

Share:

Leave Your Comment