শাজরা শরীফ পাঠ করার নিয়ম কি?

শাজরা শরীফ পাঠ করার নিয়ম কি?

মুহাম্মদ নাঈমুর রহমান-ছাত্র: এ.এস. রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়, পটিয়া, চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: শাজরা শরীফ পাঠ করার নিয়ম কি? পড়ার সময় মা, বাবা ও মুরব্বীদের নাম সংযোজন করে পাঠ করা যাবে কিনা? জানালে ধন্য হব।
 উত্তর: শাজরা শরীফ হলো খতমে গাউসিয়া ও গেয়ারভী শরীফ আদায়কালে সিলসিলায়ে আলিয়া কাদেরিয়ার মাশায়েখে হযরাতের নাম মোবারকের ওসিলা নিয়ে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মুনাজাত। যেখানে প্রিয়নবী রাসূলে মাকবূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র নাম মোবারক, আওলাদে রসূল, মাশায়েখ-হযরাত, ওলী-বুযুর্গদের নামের উসিলা নিয়ে উপস্থিত সকলেই মুনাজাত করেন। খতমে গাউসিয়া ও গেয়ারভী শরীফ এসব খতম যেহেতু সিলসিলায়ে কাদেরিয়ার মাশায়েখ হযরাত কর্তৃক প্রবর্তিত যা সুনির্দিষ্ট নিয়মে ও তরিকায় আদায়ের নির্দেশনা ও নিয়ম রয়েছে বিধায় নিয়ম ও নির্দেশনা মোতাবেক আদায় করা উচিৎ। তাই ‘মাআফ করদে আয় খোদায়ে দোজাঁহা মেরে গুনাহ্, সৈয়্যদ আহমাদ শাহ্ কুতুবুল আউলিয়াকে ওয়াস্তে’ এই পংক্তির স্থানে মা‘আফ করদে আয় খোদায়ে মা-বাপ মেরে গুনাহ্ এভাবে পড়া ঠিক নয়। সাজরা শরীফে যেভাবে আছে সেভাবে পড়বে। নিজ হতে কিছু বাড়িয়ে বা কমিয়ে পড়বে না। যাতে সাধারণ পীর-ভাই-বোনদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশংকা না হয় সুতরাং সাজরা শরীফে যেভাবে উল্লেখ রয়েছে, সেরূপ পাঠ করা বাঞ্ছনীয়। যাতে মাশায়েখ হযরাতের নিয়ম অনুসরণ করা হয়। সুতরাং এসব পূণ্যময় খতম আদায় করতে গিয়ে ঝাগড়া-বিবাদ করা ও ফেতনা সৃষ্টি করা নিন্দনীয় ও ফয়েজ-বরকত হতে বঞ্চিত হওয়ার নামান্তর।
প্রশ্ন: আছরের নামাযের সময় আমার এলাকার মসজিদে আজান দেওয়ার পূর্বে পার্শ্ববর্তী মসজিদের আজান শুনে ৪ রাকাত সুন্নাত আদায় করি। ১০ মিনিট পর এলাকার মসজিদে আজান দেয়। মসজিদের ইমাম সাহেব বলেন, পুনরায় সুন্নাত পড়তে হবে। এ বিষয়ে শরিয়তের হুকুম জানতে চাই।
 উত্তর: পঞ্জেগানা নামায আদায় ছহি-শুদ্ধ হওয়ার জন্য অন্যতম শর্ত হলো নামাযের ওয়াক্ত বা সময় হওয়া। অর্থাৎ যে ওয়াক্তের নামায আদায় করা হবে, সে নামাযের সময়, ওয়াক্ত হওয়া ফরয বা শর্ত। যেমন ফজরের নামায আদায়ের ওয়াক্ত, সময় হলো- সুবহে সাদিক হতে সূর্যোদয় পর্যন্ত, যোহরের সময় সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়ার পর থেকে শুরু হয়, আর যখন প্রতিটি বস্তুর ছায়া তার তার মূল ছায়া ব্যতীত দ্বিগুণ হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত জোহরের নামাযের সময় বিদ্যমান থাকে। আসরের সময় যোহরের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার সাথে সাথে শুরু হয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকে, সূর্যাস্তের পর হতে মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হয়ে নামাযের শাফাক (সাদা আভা) চলে যাওয়া/অদৃশ্য হওয়া পর্যন্ত মাগরিবের নামাযের সময় থাকে। শফাক বা সাদা আভা অদৃশ্য হওয়ার পর থেকে সুবহে সাদিক হওয়া পর্যন্ত এশার নামাযের ওয়াক্ত থাকে। সুতরাং এ সময়ে কেউ নামায আদায় করলে তার নামায আদায় হয়ে যাবে। আযান হোক বা না হোক, আযানের আওয়াজ শুনা যাক বা না যাক। মূলত জুমাসহ ফরয নামাযের জন্য আযান দেয়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা তথা ওয়াজিবের নিকটবর্তী। আর তাই নামাযের ওয়াক্ত শুরু হলে আযান দিতে হবে। ওয়াক্ত যদি হয়ে যায় আপনার আদায়কৃত সুন্নাত নামায শুদ্ধ হিসেবে গণ্য হবে। পুনরায় আদায় করতে হবে না।
[মুমিন কি নামায, দুররুল মুখতার, হিন্দিয়া, ইত্যাদি]

Share:

Leave Your Comment