আক্বিদা (বিশ্বাস)
আক্বীদা
ইসলামের বুনিয়াদ ৫টিঃ ১. ঈমান, ২. নামায, ৩. যাকাত, ৪. হজ্ব ও ৫. রমজানের রোযা। হযরত ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ ফরমান-
بُنِیَ الْاِسْلَامُ عَلٰی خَمْسٍ شَھَادَۃ اَنْ لَآٓ اِلٰہَ اِلَّا اللّٰہُ وَاَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُہٗ وَرَسُوْلُہٗ
(وَاِقَامِ الصَّلٰوۃِ وَاِیْتَاءِ الزَّکٰوۃِ وَالْحَجّ وَ صَوْمِ رَمَضَانَ (مُتَّفَقٌ عَلَیْہِ
অর্থাৎঃ ইসলামের বুনিয়াদ পাঁচটির উপর প্রতিষ্ঠিতঃ এ মর্মে সাক্ষ্য দওয়া যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রিয় বান্দা ও রসূল, নামায প্রতিষ্ঠা করা, যাকাত প্রদান করা, হজ্ব করা ও রমযান মাসের রোযা পালন করা। [বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত শরীফ পৃষ্ঠা ১২]
ইসলামের এ পঞ্চ বুনিয়াদ সম্পর্কে বুঝার জন্য, যদি ইসলামকে একটা তাঁবু কল্পনা করা হয়, তবে তাঁবু স্থির থাকার জন্য পাঁচটি খুঁটি থাকা আবশ্যক। তন্মধ্যে চারটি চার কোণায় এবং মধ্যভাগে একটি। উল্লেখ্য, ওই মধ্যভাগের খুঁটি বা স্তম্ভটি হচ্ছে প্রধানতম। সেটা ছাড়া তাঁবুর অস্তিত্বই কল্পনা করা যায়না। আর চার কোণার চারটির মধ্যে কোন একটির অনুপস্থিতি ঘটলে কিংবা নষ্ট হয়ে গেলেও তাঁবু নষ্ট হয়ে যায়। সুতরাং ঈমান হচ্ছে- তাঁবুর মধ্যবর্তী খুঁটির মতই। বিশুদ্ধ ঈমান ছাড়া কারো মধ্যে ইসলাম থাকার কল্পনা করাও অনর্থক। অন্য ভাষায় ঈমান তথা আক্বীদার বিশুদ্ধিই কোন মুসলমানের অন্যান্য আমল আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হবার পূর্বশর্ত। আর বাকী চারটি স্তম্ভ- নামায, যাকাত, হজ্ব ও রোযা ওই ইসলামরূপী তাঁবুর চারটা স্তম্ভ স্বরূপ। বিশুদ্ধ ঈমানের সাথে সাথে এ চারটি বুনিয়াদী আমল না করলেও কারো ইসলাম পূর্ণাঙ্গ হয়না। এ কারণে হুযূর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ ফরমায়েছেন-
اَلصَّلٰوۃُ عِمَادُ الدِّیْن فَمَنْ اَقَامَھَا فَقَدْ اَقَامَ الدِّیْنَ وَمَنْ تَرَکَھَا فَقَدْ ھَدَمَ الدِّیْنَ
অর্থাৎ নামায হচ্ছে দ্বীন ইসলামের স্তম্ভ। সুতরাং যে নামায কায়েম রেখেছে সে দ্বীনকে কায়েম রেখেছে। আর যে নামায বর্জন করেছে সে দ্বীনকে ধ্বংস করেছে। সুতরাং বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, যতক্ষণ পর্যন্ত ঈমান বা আক্বীদা বিশুদ্ধ হয়না ততক্ষণ পর্যন্ত কোন মুসলমানের কোন আমল বা ইবাদত-বন্দেগী কবুল হয়না। এখানে প্রশ্ন জাগে বিশুদ্ধ আক্বীদা বলতে কি বুঝায়? এর জবাব হচ্ছে একমাত্র ‘আহলে সুন্নাত ওয়া জামা’আত’-এর আক্বীদা (সুন্নী মতাদর্শ) হচ্ছে ওই একমাত্র কাঙ্খিত আক্বীদা। কারণ, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম আপন উম্মতকে সতর্ক করে এরশাদ করেছেন, ‘‘বনী ইস্রাঈল বাহাত্তর ফির্কায় বিভক্ত ছিল। অবিলম্বে আমার উম্মত বিভক্ত হবে তিয়াত্তর ফির্কা বা দলে’’। তাদের মধ্যে ৭২ ফির্কা বা দল হচ্ছে জাহান্নামী একটি মাত্র দল ব্যতীত। আর ওই নাজাতপ্রাপ্ত সত্যদল হচ্ছে সুন্নী জামা’আত। [হাদীস শরীফ এবং এর ব্যাখ্যাগ্রন্থাদি ও আক্বাঈদ বিষয়ক কিতাবাদি দ্রষ্টব্য]
কাজেই, এ ক্ষেত্রে সুন্নী আক্বীদা ও এর সঠিক আদর্শ অনুসারে আমল সম্পর্কে জানা, বুঝা ও আমল করার জন্য একমাত্র সহজ উপায় হচ্ছে খাঁটি সুন্নী মতাদর্শের মাদরাসা ও এ আদর্শের সঠিক পথ প্রদর্শক সহীহ মুর্শিদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যাওয়া। আওলাদে রসূল, পীরে কামেল, মুর্শেদে বরহক্ব, রাহনুমায়ে শরীয়ত ও তরীক্বত হযরতুল আল্লামা হাফেয ক্বারী সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরী হুযূর ক্বেবলা আল্লামা হাফেজ ক্বারী সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং তদীয় সুযোগ্য উত্তরসূরী হুযূর ক্বেবলা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ মুদ্দাযিল্লূহুল আলী’র অসাধারণ বেলায়তী প্রজ্ঞামণ্ডিত সিলসিলাহ্-ই আলিয়া ক্বাদেরিয়া সিরিকোটিয়া এবং তাঁদেরই যথাক্রমে প্রতিষ্ঠিত ও সুপরিচালিত আন্জুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়ার প্রত্যক্ষ পরিচালনাধীন প্রতিষ্ঠান, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া (চট্টগ্রাম) ও জামেয়া কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া আলিয়া (মোহাম্মদপুর, ঢাকা) ইত্যাদি মাদরাসা, গাউসিয়া কমিটি, আহলে সুন্নাত ওয়া জামা’আতের খাঁটি ও বিশুদ্ধ সুন্নী তরীক্বাহ বা সিলসিলাহ্ এবং দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
সুতরাং এ ফিত্না- ফ্যাসাদের গোলকধাঁধার যুগে এ বিশুদ্ধ তরীক্বাহ্ ও দ্বীনী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যাওয়াই আমরা মুক্তির সহজতম উপায় মনে করি ও তজ্জন্য পরামর্শ দিচ্ছি।
এখন, ইসলামী আক্বীদার কয়েকটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়ার প্রয়াস পেলাম। ইসলামের নির্দেশনা অনুসারে প্রতিটি মুসলমানকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোতে বিশুদ্ধভাবে বিশ্বাস রাখা অপরিহার্য:
আল্লাহ্ তা’আলা
মুসলমানদের সর্বপ্রথম বিশ্বাস করতে হয় আল্লাহ্ তাজ্ঞআলাকে। তিনি নিরাকার। এ বিশ্বজগৎ সৃষ্টি করেছেন তিনি। প্রতিপালনও করেন তিনি। আবার অবসানও ঘটবে তাঁর নির্দেশে। অসীম-অতুলনীয় শক্তির আধার তিনি। তাঁর তুল্য কেউ নেই। তিনি সকলের স্রষ্টা, আর সবই তাঁর সৃষ্টি। তিনি অনাদি, অনন্ত ও চির বিরাজিত। তাঁর মৃত্যু নেই, তাঁর নিদ্রা এবং তন্দ্রাও নেই। কেউ তাঁর জনক নয়, তিনিও কারো জনক নন। ভবিষ্যৎ, বর্তমান, গুপ্ত, প্রকাশ্য সবই তিনি জানেন। তিনিই সকলের একমাত্র উপাস্য। তিনি সম্পূর্ণ দোষ-ত্রুটিমুক্ত ও পবিত্র। তিনি সমস্ত ভালগুণের ধারক। আল্লাহ্র অস্তিত্ব, চিরস্থায়িত্ব, একত্ব ও সমস্তগুণে বিশ্বাস করা প্রকৃত মু’মিন-মুসলমানের মূল পরিচয়।
ফিরিশতা
ফিরিশতা আল্লাহ্ পাকের এক নূরানী সৃষ্টি। তাঁরা না পুরুষ। না স্ত্রী। তাঁরা পানাহার করেন না। তাঁরা জৈবিক চাহিদামুক্ত। তাঁরা বিভিন্ন আকৃতি ধারণে সক্ষম। দিবারাত্রি ফিরিশতাগণ আল্লাহর হুকুম তামিলে রত। তাঁদের সংখ্যা- দুনিয়ার মানব, জিন্ এবং অন্যান্য সব জীব-জন্তুর সম্মিলিত সংখ্যা অপেক্ষাও অধিক। এদের মধ্যে চারজন ফিরিশতা প্রধান। যথা-
১. হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস্ সালাম
২. হযরত মীকাঈল আলাইহিস্ সালাম
৩. হযরত ইস্রাফীল আলাইহিস্ সালাম
৪. হযরত আয্রাঈল আলাইহিস্ সালাম
১. হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস্ সালাম- এর সম্মান ও মর্যাদা সর্বাপেক্ষা অধিক। তিনি আল্লাহর নির্দেশসমূহ নবী-রসূলগণের নিকট পৌঁছিয়ে দিতেন। আমাদের আক্বা ও মাওলা হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম আখেরী পয়গাম্বর। তাঁর পরে আর কোন নবী বা রসূল দুনিয়াতে আসেননি এবং আসবেনও না। সুতরাং তাঁর পরে জিব্রাঈল আলাইহিস্ সালাম আর আল্লাহর বিধান নিয়ে আগমন করেননি, করবেনও না। অতএব, এখন হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস্ সালাম আল্লাহর নির্দেশিত অন্যান্য কর্তব্য পালনে নিযুক্ত আছেন।
২. হযরত মীকাঈল আলাইহিস্ সালাম আল্লাহর হুকুমে মানুষের রুজি-রোযগার বন্টন করেন। বৃষ্টি, বাতাস, পানি প্রভৃতির পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণের ভারও তাঁর উপর ন্যাস্ত।
৩. হযরত ইস্রাফীল আলাইহিস্ সালাম প্রকাণ্ড এক শিঙ্গা মুখে নিয়ে আল্লাহ্র হুকুমের অপেক্ষা করছেন। যে মুহূর্তে আল্লাহ্ হুকুম করবেন, তখনই তিনি শিঙ্গায় ফুৎকার করবেন। ওই ফুৎকারেই ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে।
৪. হযরত আয্রাঈল আলাইহিস্ সালাম-এর উপর আল্লাহ্ তাজ্ঞআলা জীবজগতের জান কব্জের (মৃত্যু ঘটানোর) দায়িত্ব অর্পণ করেছেন। তিনি তাঁর অধীনস্থ ফিরিশতাগণসহ জীবজগতের জান কবজ করেন। এভাবে ক্বিয়ামত পর্যন্ত করতে থাকবেন। পরিশেষে এক পর্যায়ে আল্লাহর নির্দেশে তাঁর জানও তিনি নিজে হনন করবেন ।
আসমানী কিতাব
আল্লাহ্ রব্বুল আলামীন স্বীয় বান্দাগণকে সুপথে পরিচালিত করার জন্য নবী-রসূলগণের প্রতি বিধি-নিষেধ সম্বলিত যে গ্রন্থসমূহ অবতীর্ণ করেছেন সেই পবিত্র গ্রন্থগুলোই ধর্মগ্রন্থ বা আসমানী কিতাব অথবা সহীফা ও কিতাব নামে অভিহিত। এ সহীফা ও কিতাবসমূহের প্রতি আন্তরিক বিশ্বাস রাখা অপরিহার্য। রসূলগণের প্রতি এ জাতীয় বহু সহীফা ও গ্রন্থ অবতীর্ণ হয়েছে। এ গ্রন্থসমূহের মধ্যে ৪টি গ্রন্থ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য:
১. তাওরীতঃ হযরত মূসা আলাইহিস্ সালামঞ্চর উপর অবতীর্ণ হয়েছে।
২. যাবূরঃ হযরত দাঊদ আলাইহিস্ সালামঞ্চর উপর অবতীর্ণ হয়েছে।
৩. ইনজীলঃ হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালামঞ্চর উপর অবতীর্ণ হয়েছে।
৪. ক্বোরআনঃ এ মহান গ্রন্থটি সর্বশেষ নবী ও রসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে।
উল্লিখিত গ্রন্থ চতুষ্টয়ের মধ্যে ক্বোরআনই প্রধান ও সর্বোৎকৃষ্ট। উল্লেখ্য যে, এ কিতাবের মাধ্যমে পূর্ববর্তী অন্য সকল গ্রন্থের বিধিসমূহ মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে।
নবী ও রসূল
আল্লাহ্ তাজ্ঞআলা স্বীয় ধর্ম ও বিধান মানব সমাজে প্রচার করার জন্য যাঁদেরকে যুগে যুগে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছিলেন তাঁরাই রসূল ও নবী, অন্য ভাষায় পয়গাম্বর নামে পরিচিত। নবী-রসূলগণের উপর ঈমান আনার ক্ষেত্রে তাঁদের মধ্যে কোন তফাৎ নেই, তফাৎ শুধু মর্যাদার মধ্যে। আল্লাহ্ তাজ্ঞআলা যাঁদের প্রতি ধর্মগ্রন্থ বা আসমানী কিতাব ও স্বতন্ত্র শরীয়ত নাযিল করেছেন তাঁরাই রসূল; আর যাঁদের প্রতি আসমানী কিতাব অবতীর্ণ হয়নি, তাঁরা নবী। নবীগণের সঠিক সংখ্যা বলা যায় না। তবে অনেকে বলেন যে, আল্লাহ্ তাজ্ঞআলা ১ লক্ষ ২৪ হাজার নবী প্রেরণ করেছেন। তন্মধ্যে ৩১৩ জন রসূল। দুনিয়ায় নবী ও রসূলগণের মধ্যে সর্বপ্রথম নবী হলেন হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম এবং সর্বশেষ আমাদের আক্বা ও মাওলা হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
উল্লেখ্য যে, আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথিবীতে চূড়ান্ত পর্যায়ে সবশেষে তাশরীফ আনলেও তিনি হলেন সর্বপ্রথম সৃষ্টি ও সমস্ত সৃষ্টির মূল। তিনি আল্লাহর নূর থেকে সৃষ্ট আর সমস্ত সৃষ্টি তাঁর নূর থেকে মহান আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন। তিনি তখনও নবী ছিলেন যখন হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম সৃষ্টির উপাদানগুলোতেই ছিলেন।[বিশুদ্ধ হাদীস শরীফ]
ইল্মে গায়্ব
ইল্মে গায়্ব (অদৃশ্যের জ্ঞান) দুই প্রকার: ১.যাতী ও ২.আত্বাঈ। (যথাক্রমে, সত্ত্বাগত ও দানগত।) সত্ত্বাগত অদৃশ্য জ্ঞান আল্লাহ্ পাকের জন্য খাস। আর তিনি যাঁকে চান অদৃশ্যের জ্ঞান দান করেন; এটাই হচ্ছে ইল্মে আত্বাঈ বা দানগত অদৃশ্যজ্ঞান। আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ্ পাক নিঃসন্দেহে ইল্মে গায়্ব দান করেছেন এবং অন্যান্য নবীগণকেও। [আল্-ক্বোরআন, ৪র্থ পারা, ৯ম রুকুজ্ঞ ও বিশুদ্ধ হাদীসসমূহ ইত্যাদি দ্রষ্টব্য]
এ ছাড়াও ক্বিয়ামত ইত্যাদি আরো বহু আক্বীদা সংশ্লিষ্ট বিষয় রয়েছে। পরিসরের স্বল্পতা হেতু এখানে উল্লেখ করা হল না।
ইসলামী শরীয়তের বিধান অনুযায়ী ঈমান বা বিশ্বাসের ঘোষণাকে সাধারণতঃ দুইটি ভাগে ভাগ করা যায়। একটি ‘সংক্ষিপ্ত’ অপরটি ‘বিস্তারিত’। সংক্ষিপ্তটিকে বলা হয় ‘ঈমানে মুজমাল’। তা এভাবে-
اٰمَنْتُ بِاللّٰہِ کَمَا ھُوَ بِاَسْمَآءِہٖ وَصِفَاتِہٖ وَقَبِلْتُ جَمِیْعَ اَحْکَامِہٖ وَاَرْکَانِہٖ
উচ্চারণঃ আ-মানতু বিল্লা-হি কামা- হুয়া বিআসমা-ইহী ওয়া সিফা-তিহী ওয়া ক্বাবিলতু জামীজ্ঞআ আহকা-মিহী ওয়া আরকা-নিহী।
অর্থাৎ আল্লাহর উপর তাঁর যাবতীয় নাম ও গুণ সহকারে ঈমান আনলাম তেমনিভাবে, যেমনটি তাঁর জন্য শোভা পায় এবং মেনে নিলাম তাঁর নির্দেশ ও বিধানগুলোকে।
বিস্তারিতটিকে বলা হয় ‘ঈমানে মুফাস্সাল’। তা নিম্নরূপ-
اٰمَنْتُ بِاللّٰہِ وَمَلٰٓئِکَتِہٖ وَ کُتُبِہٖ وَرُسُلِہٖ وَالْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَالْقَدْرِ خَیْرِہٖ وَشَرِّہٖ مِنَ اللّٰہِ تَعَالٰی وَالْبَعْثِ بَعْدَ المَوْتِ
উচ্চারণঃ আ-মানতু বিল্লা-হি ওয়া মালা-ইকাতিহী ওয়া কুতুবিহী ওয়া রুসুলিহী ওয়াল ইয়াওমিল আ-খিরি ওয়াল ক্বদরি খয়রিহী ওয়া শার্রিহী মিনাল্লা-হি তাজ্ঞআ-লা ওয়াল বাঞ্চসি বাঞ্চদাল মাওত।
অর্থাৎ আল্লাহ্, তাঁর ফিরিশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রসূলগণ, বিচার দিবস, অদৃষ্টের ভাল-মন্দ তাঁরই নিকট হতে এবং মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হওয়ার প্রতি আমি ঈমান আনলাম।