মাহে রমজানে রোযা পালনের জন্য সেহেরী খাওয়া কি আবশ্যক?

মাহে রমজানে রোযা পালনের জন্য সেহেরী খাওয়া কি আবশ্যক?

 মুহাম্মদ সাকিব
টেক্সটাইল, বায়েজিদ, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: মাহে রমজানে রোযা পালনের জন্য সেহেরী খাওয়া কি আবশ্যক? রমজানের রোজার সেহেরী খাওয়ার গুরুত্ব কি? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হবো।
উত্তর: পবিত্র মাহে রমজানে রোযাদার সূর্যাস্তের পর রোযা ভঙ্গ করার উদ্দেশ্যে যে খাবার বা পানীয় গ্রহণ করে তাকে ইফতার বলে এবং শেষ রাতে সুবহে সাদিকের পূর্বে পবিত্র রোযা পালনের নিয়তে যা খায় তাকে সেহেরী বলে। রোযাদারের জন্য সেহেরী খাওয়া ও ইফতার করার মধ্যে অনেক ফজিলত ও বরকত রয়েছে। বিশেষ করে ফোকাহায়ে কেরামের দৃষ্টিতে সেহেরী খাওয়া ও ইফতার করা সুন্নাত। এ প্রসঙ্গে হাদিসে পাকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-تحسروا فان فى السحور بركة “তোমরা সেহেরী খাও, কেননা সাহরী খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে। [সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফ]
উক্ত হাদিসে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামা শেষ রাতে সকল রোযাদারকে সেহরী খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা সেহেরীর মধ্যে অনেক কল্যাণ ও বরকত নিহিত রয়েছে। এখানে বরকত বলার অনেক উদ্দেশ্য আছে যেমন সেহরী খেয়ে পরদিনের রোযায় শক্তি সঞ্চয় করা। অথবা সেহেরী খাওয়ার উদ্দেশ্য হলো ‘নবী-রাসূলদের সুন্নাত পালনের মাধ্যমে নিজেদের জন্য সাওয়াব বৃদ্ধি করা। কেননা সেহেরী খাওয়া পূর্ববর্তী নবী রাসূল গণের সুন্নাত। আর আল্লাহর প্রিয় নবী রাসূলগণের অনুসরনের মধ্যে অনেক কল্যাণ রয়েছে।
প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আমর ইবনুল আস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- আমাদের রোযা ও আহলে কিতাবদের (ইয়াহুদি-খ্রিস্টান) রোযার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহেরী খাওয়া। [সহীহ মুসলিম শরীফ]
অর্থাৎ আমরা রোযার উদ্দেশ্যে শেষ রাত্রে ও সুবহে সাদিকের পূর্বে সেহেরী গ্রহণ করি আর তারা সেহরী খায় না। আলোচ্য হাদিস সমূহ পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় যে, রোযা পালনে সেহেরী খাওয়ার গুরুত্ব অত্যধিক এবং তা অতি বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ। প্রিয়নবী রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম খেজুরকে মুমিনদের জন্য অতি উত্তম সেহেরী বলে ঘোষণা করেছেন। [আবু দাউদ শরিফ]
অর্থাৎ যারা সাহরী গ্রহণের জন্য অন্য খাদ্য দ্রব্য যদি না পায় কমপক্ষে খেজুর খেয়ে যেন সেহেরীর সুন্নাত ও ফজিলত গ্রহণ করে। তবে কোন রোযাদার যদি শেষ রাত্রে সেহেরী গ্রহণের সুযোগ না পায় এবং রোযার নিয়তে পরদিন রোযা পালন করে তার রোযা আদায় হয়ে যাবে। তবে অবহেলা বা ইচ্ছাকৃতভাবে যেন কোন রোযাদার সেহেরীর বরকত হতে বঞ্চিত না হয় সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। [মেশকাত শরীফ, মেরকাত শরীফ, সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফ]

Share:

Leave Your Comment