মহিমান্বিত রমযান মাস ও রোযার বৈশিষ্ট্যাবলী

মহিমান্বিত রমযান মাস ও রোযার বৈশিষ্ট্যাবলী

মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস আলকাদেরী

রমযান ও রোযার অসংখ্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নিন্মে ক্বোরআন-সুন্নাহ্র আলোকে কতিপয় বৈশিষ্ট্য পাঠক সমীপে তুলে ধরছি। আল্লাহ্ তা‘আলা তাওফিক দাতা ও সাহায্যকারী।

রমযান মাসের চারটি নাম
হযরত সালমান ফার্সী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, ‘‘রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসের সর্বশেষ দিবসে মাহে রমযানকে উপলক্ষে করে একটি ভাষণ প্রদান করেন। যে ভাষণে রমযান মাসের তিনটি নাম এসেছে যথা- ১. شهر الصبر অর্থাৎ রমযান মাস ধৈর্যের মাস। এবং এ ধৈর্যের ফল হলো জান্নাত। ২. شهر المواساة অর্থাৎ রমযান মাস সমতার মাস। অর্থাৎ ধনী তার গরীব প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজন সহ মুসলিম ভাই-বোনকে নিজের সাধ্য অনুসারে সাহায্য করবেন। ৩. রিযিক প্রশস্ততার মাস অর্থাৎ এমন মাস যার মধ্যে মুমিনদের রিযিক আল্লাহ্ তা‘আলা বাড়িয়ে দেন। ৪. شهر رمضان (রমযান মাস) এ নামটি পবিত্র ক্বোরআনুল করীমে এসেছে।

রমযান মাসের প্রতিটি মুহূর্ত ইবাদত
রমযান মাস ব্যতীত অপর মাসে নির্দিষ্ট দিনে কিংবা রাতে কিংবা নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষ ইবাদত হয়। যেমন ১০ মুর্হরম, ১২ রবিউল আউয়াল, ১১ রবিউস্ সানী, ০১ রজব, ২৭ রজব, ১৫ শাবান, ০১ শাওয়াল, ৮, ৯, ১০, ১১ ও ১২ জ্বিলহজ্ব। তবে মাহে রমানের প্রতিদিন, প্রতিরাত ও প্রতিটা মুহূর্ত ইবাদতে গণ্য হয়। সাহরী খাওয়া ইবাদত, রোযা ইবাদত, ইফতার গ্রহণ ইবাদত, ইফতারের পর তারাবীহ্ নামায ইবাদত, তারাবীহ্-এর নামায পড়ে সাহরীর জন্য অপেক্ষা ও ইবাদত। হাদীসে পাকে এসেছে-
نوم الصائم عبادة، وصمته تسبيح، ودعاؤه مستجاب، وعمله مضاعف دعائه مستجاب وذنبه مغفور-
‘‘রোযাদারের নিদ্রা ইবাদত, রোযাদারের নীরব থাকা তাসবীহ্ পাঠের সওয়াব, রোযাদারের ইবাদতে বহুগণ সওয়াব, রোযাদারের দোআ কবুল এবং রোযাদারের গুনাহ্ মাফ। [শুয়াবুল ঈমান]

রমযান মাসে উম্মতে মুহাম্মদীকে পাঁচটি বিশেষ নি’মাত দেয়া হয়েছে
ক. যখন রমযানের প্রথম রাত হয়, আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের প্রতি দৃষ্টি দান করেন। যার প্রতি আল্লাহ্র দৃষ্টি পড়ে তাকে তিনি শাস্তি দেবেন না।
খ. যখন সন্ধ্যা হয়, তখন তাদের মুখ থেকে যে দুর্গন্ধ বের হয়, তা আল্লাহ্র নিকট মেশক আম্বরের চেয়ে উত্তম।
গ. ফেরেশতাগণ দিনে-রাতে তাদের গুনাহ্ মাফ চান।
ঘ. আল্লাহ্ তা‘আলা বেহেশতকে আদেশ দেন, তুমি আমার রোযাদার বান্দাদের জন্য প্রস্তুত ও সুসজ্জিত হও। তারা দুনিয়ার কষ্টের আরাম করার জন্য আমার ঘর ও সম্মানের নিকটবর্তী হবে।
ঙ. যখন রমযানের শেষ রাত হবে তাদের সকলকে ক্ষমা করে দেয়া হবে। কওমের একজন লোক প্রশ্ন করলেন তা কী লাইলাতুল ক্বদর? তিনি বলেন, না, তুমি কী শ্রমিকদের প্রতি লক্ষ্য করনি, তারা কাজ করতে থাকে, যখন তারা তাদের কাজ থেকে অবসর গ্রহণ করে, তখন তাদের পারিশ্রমিক পরিপূর্ণরূপে দেয়া হয়। অর্থাৎ রমযানের সর্বশেষ রজনীতে সকল উম্মতে মুহাম্মদীকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। [শুয়াবুল ঈমান, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩০৩]

রমযান মাসে একটি রাত রয়েছে তা হাজার মাস হতে উত্তম
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসের সর্বশেষ দিবসে মাহে রমযানকে উপলক্ষ করে ঘোষণা দেন-
ياايها الناس قد اظلّكم شهر عظيم شهر مبارك شهرفيه ليلة خير من الف شهر-
‘‘হে মানবমণ্ডলী! তোমাদের মাঝে একটি মহান মাস আগমন করেছে। একটি বরকত মণ্ডিত মাস, এমন একটি মাস যার মধ্যে এমন একটি রাত আছে, যা এক হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।’’ [মিশকাতুল মসাবীহ্]
আল্লাহ্ তা‘আলা রমযান মাসে যে রাত লুকায়িত রেখেছেন- যা এক হাজার মাসের চেয়েও উত্তম- সে রাতের নাম হলো লায়তুল ক্বদর। এ রাতটি রমযান মাসের শেষের দশ রাতের বেজোড় রাতে লুকায়িত রেখেছেন। অর্থাৎ ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ তারিখের রাত। যে ব্যক্তি এ পাঁচটি রাতে লায়লাতুল ক্বদরকে বিশ্বাস ও সওয়াবের আশা করে ইবাদত করবেন, আল্লাহ্ তাকে লায়লাতুল ক্বদর দান করবেন। তার অতীত জীবনের পাপ মোচন হয়ে যাবে। এবং এক রাতের ইবাদতের সওয়াব এক হাজার মাস তথা ৮৩ বছর ৪ মাসের ইবাদতের সওয়াবের চেয়ে অনেক বেশী সওয়াব আল্লাহ্ তার আমল নামায় দান করবেন।

নফল ইবাদতে ফরযের সাওয়াব এবং ফরয ইবাদতে সত্তরগুণ সওয়াব বেশী
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি রমযান মাসে একটি নফল ইবাদত করে, সে যেন অপর মাসের একটি ফরয ইবাদত করলো। এবং যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরয আদায় করে, সে যেন অপর মাসের সত্তরটি ফরয আদায় করল।’’ [মিশকাতুল মসাবীহ্]

রমযান মাসের রোযাদারকে ইফতার করালে বিশেষ তিনটি ফযিলত
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন,‘‘যে ব্যক্তি রোযাদারকে ইফতার করাবে, ১. ইফতার করানোটা তার গুনাহ্ সমূহ মাফের মাধ্যম হবে। ২. জাহান্নাম হতে মুক্ত হওয়ার মাধ্যম হবে। ৩. যাকে ইফতার করানো হবে তার রোযার সমান সওয়াব ইফতার যিনি করাবেন তাকে দান করা হবে। তবে রোযাদারের রোযার সওয়াব কমবে না। এরপর আল্লাহ্র হাবীব বলেন, যে ব্যক্তি স্বীয় তাওফিক অনুযায়ী দুধের শরবত দ্বারা কিংবা একটি খেজুর দ্বারা কিংবা পানির শরবত দ্বারা রোযাদারকে ইফতার করাবে তাকে উপরিউক্ত তিনটি নেয়ামত দান করবেন।[শুয়াবুল ঈমান ও মিশকাতুল মসাবীহ্]

রোযাদারকে পরিতৃপ্ত করে ইফতার করানোর ফযিলত
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন,‘‘যে ব্যক্তি রোযাদারকে পরিতৃপ্ত করে ইফতার করাবে, আল্লাহ্ তাকে আমার হাওযে কাওসার হতে পানি পান করাবেন। ফলে বেহেশতে প্রবেশ পর্যন্ত সে আর পিপাসার্ত হবে না।’’ [শুয়াবুল ঈমান ও মিশকাত শরীফ]

রমযান মাসে শ্রমিকের কাজ হালকা করার ফযিলত
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি রমযান মাসে অধীনস্থ ব্যক্তি তথা দাস-দাসী, শ্রমিকের শ্রম হালকা ও লাঘব করে দেয়, আল্লাহ্ তার গুনাহ মাফ করে দেবেন এবং তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করবেন।’’ রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন, জমিনে যারা আছে, তাদের প্রতি তোমরা অনুগ্রহ কর, আসমানে যিনি আছেন, তিনি তোমাদেরকে দয়া করবেন।

রমযান মাস তিন ভাগে বিভক্ত
রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসকে তিনভাগে ভাগ করে বলেন,
وهو شهر اوّله رحمة و اوسطه مغفرة واخره عتق من النار-
ওটা এমন একটি মাস যার ১. প্রথম ভাগ অর্থাৎ প্রথম দশদিন আল্লাহ্র পক্ষ হতে ব্যাপক রহমত নাযিল হওয়ার সময়। যদি কোন বান্দা এ মাসে রহমত অর্জন করতে না পারত, তাহলে সে রোযা রাখতে এবং রাতের বেলা ইবাদত তথা তারাবীহ্ এর নামাযা পড়তে পারত না। ২. মধ্যম ভাগ অর্থাৎ দ্বিতীয় দশ দিন অর্থাৎ ১১ রমযান হতে ২০ রমযান পর্যন্ত ক্ষমা পাওয়ার দিন। তবে যে ব্যক্তি প্রথম দশদিনে রহমত পাবে, সে দ্বিতীয় ১০ দিনে ক্ষমা প্রাপ্ত হবে। শেষের ভাগ তথা শেষের দশদিন জাহান্নাম হতে পরিপূর্ণরূপে মুক্তি পাওয়ার দিন। [মিশকাত]

‘‘রোযা আমার জন্য আমি এর প্রতিদান দেব’’ এর তিনটি ব্যাখ্যা
হাদীসে কুদসীর মধ্যে রয়েছে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, الصوم لى وانا اجزى به (রোযা আমার জন্য আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব) এর তিনটি ব্যাখ্যা মুহাদ্দেসীন কেরাম এবং মুফাস্সেরীন এজাম লিখেছেন, তা নিম্নরূপ-
ক. সকল ইবাদতের মধ্যে ‘রিয়া’ তথা মানুষকে দেখানো এবং মানুষকে শুনানোর সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু রোযার মধ্যে উপরিউক্ত দু’টি খারাপ বিষয়ের সম্ভাবনা নেই। বান্দা রোযা রাখেন একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলাকে দেখানোর ও শুনানোর জন্য। মানুষকে দেখানো ও শুনানোর জন্য নয়। তাই মানুষ রোযা রেখে দ্বি-প্রহরের সময় হলে তৃঞ্চায় রূহ বের হওয়ার উপক্রম হলেও এবং ক্ষুধায় নাড়িভূড়ি বের হওয়ার কাছাকাছি হলেও এক ফোটা পানি ও এক বিন্দু খাবার মুখে দেয় না। অথচ মানুষের অগোচরে পানাহার করতে পারে। তবে আল্লাহকে ভয় করে তা করে না। সে জন্য আল্লাহ্ বলেন- الصوم لى وانا اجزى به (রোযা আমার জন্য, আমিই এর প্রতিদান দেব)। অন্যান্য ইবাদতের সওয়াব দেবে ফেরেশতার মাধ্যমে, রোযার সওয়াব দেবেন আল্লাহ্ স্বীয় কুদরতের হাতে।
খ. রোযা ব্যতীত অপর ইবাদতের সওয়াব পাওনাদার নিয়ে নেবে। কিন্তু রোযার সওয়াব নিতে পারবে না। রোযার সওয়াব নিতে চাইলে, আল্লাহ্ বলবেন- الصوم لى (রোযা আমার জন্য।) তা কেউ নিতে পাবে না।
গ. এক রেওয়ায়াতে এসেছে- وانا اُجزى অর্থাৎ হামজার উপর পেশ এবং যা বর্ণের উপর যবর। যার অর্থ হলো আমি নিজেই রোযার প্রতিদান। অর্থাৎ সকল ইবাদতের প্রতিদান ও প্রতিফল জান্নাত। তবে রোযার প্রতিদান স্বয়ং খালেক ও মালিকে জান্নাত। অর্থাৎ রোযার বিনিময় স্বয়ং আল্লাহ্।
রমযানের প্রতি রাতে অসংখ্য বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। [মিশকাত শরীফ]
রমযান আসলে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক যুদ্ধবন্দীকে মুক্তি দিতেন এবং প্রত্যেক ভিক্ষুককে দান করতেন, রমযান মাসে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর দানের পরিমাণ অপর মাস থেকে বেড়ে যেত। [মিশকাত]
যে ব্যক্তি রমযানের রোযাকে ফরয বিশ্বাস করে এবং সাওয়াবের আশা করে পালন করবে আল্লাহ্ তা‘আলা তার জীবনের সগীরা গুনাহ্ মাফ করে দেন এবং কবীরা গুনাহ্ মাফের আশা করা যায়। [মিশকাত শরীফ]
যে ব্যক্তি বিশ্বাস ও আশা করে তারাবীহ এর নামায, ক্বোরআন তেলাওয়াত, জিকির, তাওয়াফ, দুরূদ শরীফ পাঠ, তাহাজ্জুদের নামায ইত্যাদি ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে গোটা রাত কিংবা অধিকাংশ অথবা কিছু রাত জাগ্রত থাকে তার অতীত জীবনের ছোট গুনাহ্ মাফ হয়ে যায় এবং বড় গুনাহ্ মাফের আশা করা যায়। [মিশকাত শরীফ]
রমযান মাসে আসমানের দরজা সমূহ অর্থাৎ রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়। রমযানে তা বন্ধ হয় না। ফলে সারা মাস মুষলধারে বৃষ্টির মত সর্বদা রহমত বর্ষণ হয় এবং সর্বদা বান্দাহ হতে নেক আমল পাওয়া যায়। [মিশকাত শরীফ]
রমযান মাসে দোযখের দরজা সমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। অর্থাৎ এ সময়ে বান্দাহ্ গুনাহ্ হতে বিরত থাকে। ফলে যে গুনাহ্-এর কারণে দোযখে যেতে হয় সে গুনাহ্ যখন বান্দাহ্ থেকে সংঘটিত হয় না। ফলে দোযখের দরজা বন্ধ থাকে। [মিশকাত শরীফ]
রমযান মাস আসলে শায়তানদেরকে শিকল আবদ্ধ করা হয়। ফলে শয়তানের শায়তানী বন্ধ হয়। মু’মিনকে সে সহজে গুনাহে লিপ্ত করতে পারে না। হ্যাঁ অবশিষ্ট এগার মাস শয়তান বান্দাহকে পথভ্রষ্ট করে বিধায়- তার প্রভাব রমযান মাসেও অবশিষ্ট থাকার কারণে বান্দাহ্ গুনাহে লিপ্ত হয়। তবে যে বান্দা রমযানের রোযা ও পাঁচ ওয়াক্ত নামায সহ ইবাদতে লিপ্ত থাকে, সে শয়তানের প্রভাব মুক্ত হয়।
যখন রমযান আসে, তখন আল্লাহ্ তা‘আলা আরশের বাহক যে ফেরেশতাগণকে ইবাদত থেকে ছুটি প্রদান করে আদেশ দেন, যখনই রোযাদারগণ কোন দোআ করে, তখন তারা (ফেরেশতাগণ) যেন আমিন বলে। (আর আল্লাহ্ বলেন) আমি আমার নিজের উপর আবশ্যক করে নিয়েছি যে, আমি রমযানের রোযাদারগণের দোআ ফেরতে দেব না।
[শুয়াবুল ঈমান]
হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম রমযানের শেষের দশটি দিন এতেকাফ পালন করতেন। এবং তাঁর ওফাতের পর তাঁর বিবিগণ এতেকাফ পালন করেন। [শুয়াবুল ঈমান]
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি রমযান মাসে ১০ দিন এতেকাফ পালন করল, সে এতেকাফ দু’টি হজ্ব এবং দু’ ওমরার সমতুল্য।
[শুয়াবুল ঈমান]
যে ব্যক্তি রমযান মাসে মৃত্যু বরণ করে তার কবরে প্রশ্ন হয় না। [তাফসীরে নঈমী]
রমযান মাসের পানাহারের হিসাব নেই। [তাফসীরে রূহুল বয়ান]
রমযান মাসে ইফতারের সময় এবং সাহরীর সময় দোআ কবুল হয়।
হাদীসে পাকে এসেছে রোযাদারগণ কিয়ামত দিবসে তাদের কবর থেকে বের হবে। তাদের মুখ থেকে মেশ্ক আম্বরের চেয়ে অধিকতর সুগন্ধ বের হবে- তা দ্বারা তাদেরকে চেনা যাবে। তাদেরকে বলা হবে তোমরা খাও। অবশ্যই তোমরা ক্ষুধার্ত ছিলে- যখন পানাহার করে পরিতৃপ্ত হ্িচ্ছল অপর লোকেরা। ফলে তারা খেয়ে আরাম করবেন। অপর মানুষেরা হিসেবে মশগুল থাকবে। [খুতবাতু ইবনে নাবাতা]
সর্বোপরি রোযার মাধ্যমে বান্দাহ্ আল্লাহ্র গুণে গুণান্বিত হয়। আসুন আমরা রমযান মাসের ইবাদত ও রোযা পালন করে উপরিউক্ত নি’মাত ও বৈশিষ্ট্যাবলী অর্জন করি এবং আল্লাহ্ তা‘আলার প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হই। আমিন, বেহুরমতে সায়্যিদিল মুরসালীন।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া, চট্টগ্রাম।

 

 

 

Share:

Leave Your Comment