শির্‌ক তিন ধরনের

শির্‌ক তিন ধরনের

= শির্‌ক তিন ধরনের =

১. শির্‌ক ফিয্‌যাত (আল্লাহ্‌র মহান সত্তায় শির্‌ক করা)

২. শির্‌ক ফিস্‌ সিফাত (আল্লাহ্‌র গুণাবলীতে শির্‌ক করা) এবং

৩. শির্‌ক ফিল ইবাদত (ইবাদতে আল্লাহ্‌র শরীক স্থির করা)।

এর সারসংক্ষেপ হচ্ছে- শির্‌ক তিন প্রকারের হয়ে থাকেঃ

এক. আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে চিরজীবী ও চিরস্থায়ী সত্তা বলে সাব্যস্ত করা।

দুই. আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাউকে প্রকৃত স্রষ্টা বলে বিশ্বাস করা ও মুখে বলা।

তিন. আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করা অথবা ‘ইবাদতের উপযোগী বলে বিশ্বাস করা।

আবার এসব কথার সারসংক্ষেপ হচ্ছে-চিরজীবী অর্থাৎ নিজের সত্তা ও গুণাবলীতে স্বয়ংসম্পূর্ণ, সার্বভৌম, সত্তাগতভাবে কারো মুখাপেক্ষী নন এমন মহান সত্তা হলেন একমাত্র আল্লাহ তা’আলা। অন্য কেউ নয়। আর শুধু তিনিই ইবাদতের উপযোগী। সুতরাং যদি কেউ কাউকে ণয়ার সত্তা কিংবা গুণাবলীতে সত্তাগতভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও অমুখাপেক্ষী বলে বিশ্বাস করে কিংবা ইবাদতের উপযোগী সাব্যস্ত করে সে মুশ্‌রিক।  তাছাড়া, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে ‘ক্বাদীম’ অর্থাৎ তাকে তাঁর সত্তায় অন্য কারো অমুখাপেক্ষী বলে মানে সে মুশ্‌রিক (অংশীবাদী)।

যেমন আমাদের দেশের আর্যরা (হিন্দুরা), যারা আল্লাহ ব্যতীত আত্মা এবং মূল পদার্থকেও ‘ক্বাদীম’ (অবিনশ্বর, অমুখাপেক্ষী) এবং চিরজীবী, চিরস্থায়ী বলে বিশ্বাস করে। তারা ওইগুলোর সত্তাকে স্রষ্টা ও অমুখাপেক্ষী বলে বিশ্বাস করে, তাই তারা মুশরিক। অনুরূপ কেউ যদি কারো গুণাবলীকে তার সত্তাগত এবং ওই গুণাবলীতে তাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ, সার্বভৌম, সাধিষ্ঠ ও অমুখাপেক্ষী বলে বিশ্বাস করে সেও মুশরিক। চাই ওই গুণ বা বৈশিষ্ট্য জ্ঞান হোক, ক্ষমতা হোক, জীবন হোক, শ্রবণশক্তি কিংবা দৃষ্টিশক্তি হোক। উদাহরণ স্বরূপ, নক্ষত্রপূজারীদের ধারণা হচ্ছে- এ বিশ্বের পরিবর্তনগুলো নক্ষত্রগুলোর প্রভাবেই হয়ে থাকে। আর নক্ষত্রগুলোও ওই প্রভাব বিস্তারে সত্তাগতভাবে কারো মুখাপেক্ষী নয় বরং স্বয়ংসম্পূর্ণ। (না‘ঊযু বিল্লাহ্) এ আক্বীদা বা বিশ্বাসও শির্‌ক। এমনি বিশ্বাসে বিশ্বাসীরাও মুশরিক। অনুরূপ, যদি কেউ (আল্লাহ ব্যতীত অন্য) কারো ইবাদত করে, যাকে হিন্দুরা ‘পূজা’ বলে, ফার্সীতে বলে ‘পরস্তিশ’, সেও মুশরিক। যেমন মূর্তি-প্রতিমার পূজারীরা মূর্তির পূজা করে থাকে, আর সেগুলোকে পূজার উপযোগী মনে করে। তাই তারাও মুশরিক।

উল্লেখ্য, পক্ষান্তরে, যেসব লোক আল্লাহর প্রদত্ত গুণাবলী তাঁর বান্দার জন্য সাব্যস্ত করে, আর ওই গুণ বা বৈশিষ্ট্যগুলোকে আল্লাহর দান মনে করে, তারা মুশরিক নয়। উদাহরণ স্বরূপ, কেউ মানুষকে ‘শ্রোতা’ ও ‘দ্রষ্টা’ (سمیع و بصیر)  বললো আর বিশ্বাস এটা রাখে যে, আল্লাহ তা’আলা তাঁকে শ্রুতি ও দৃষ্টি শক্তি দান করেছেন, তবে সে ফঁঞ্চমিন ঐ একত্ববাদী; মুশরিক নয়। মুশরিক তো তখনই হয়, যখন সে এ আক্বীদা বা বিশ্বাস রাখে যে, মানুষের জন্য শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি ‘যাতী’ (সত্তাগত, আল্লাহর দান নয়) আর সেও তাতে অন্য কারো মুখাপেক্ষী নয়। যেমন আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন- فَجَعَلْنَاہُ سَمِیْعًامبَصِیْرًا

অর্থাৎ ‘আমি (আল্লাহ) তাকে শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন করেছি।’ অথচ ক্বোরআন মজীদেই  سمیع و بصیر (শ্রোতা ও দ্রষ্টা) আল্লাহ তা’আলার গুণবাচক নাম হিসেবে এরশাদ হয়েছে। কিন্তু এতদ্‌সত্ত্বেও মানুষকে তিনিই ‘সামী’ ও ‘বাসীর’ (শ্রোতা ও দ্রষ্টা) বলে বিশেষিত করেছেন। এটা শির্ক নয়। কেননা, মানুষের জন্য যে শ্রবণ ও দৃষ্টি শক্তি সাব্যস্ত হয়েছে তা আল্লাহর দানের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং ঐআ ফৎথঁর অমুখাপেক্ষী হলো না। তাই এটা শির্কও হয়নি।

একথা অতিমাত্রায় হৃদয়ঙ্গম করে নিন যে, আল্লাহ্‌ ব্যতীত অন্য কারো জন্য কোন একটি অণু-পরমাণু পরিমাণের উপর ইখতিয়ার কিংবা জ্ঞানকে সত্তাগত ও সার্বভৌমভাবে সাব্যস্ত করা হয়, তবে শির্‌ক হবে; ‘আল্লাহর দান’ বলে মানলে শির্ক হবে না।

বাস্তবিকপক্ষে, কাফির নজ্ঞৈভ প্রভাবাদিকে কারণাদির সাথে সম্পৃক্ত করে থাকে, আর ওইগুলোকে অমুখাপেক্ষী, সার্বভৌম ও সত্তাগতভাবে প্রভাব বিস্তারকারী বলে বিশ্বাস করে। যেমন- নক্ষত্র পূজারীরা আসমানের দেহাংশগুলোর প্রভাবাদিতে বিশ্বাসী। তারা ওইগুলোকে স্বয়ং স্বাধীনভাবে প্রভাব বিস্তারকারী মনে করে। কিন্তু মুসলমানগণ আসবাব বা উপদানগুলোকে ‘মাধ্যম’ মনে করে। তারা ওই মাধ্যমরূপী উপাদানগুলোর আড়ালে আল্লাহর মহা ক্বুদরতের অস্থিত্ব দেখতে পায়। প্রকৃত ক্ষমতা ও সত্তাগত ইখতিয়ার আল্লাহরই বলে বিশ্বাস করে। এ পার্থক্যটুকু যদি না থাকতো তবে তো মানুষ প্রতিটি কথায় মুশরিক হয়ে যেতো। তখন এমনি হতো-যদি বলি, ‘আমি দেখি’ তবে মুশরিক, যদি বলি, ‘আমি শুনছি’ তবে মুশরিক, যদি বলি, ‘আমি জীবিত’ তবেও মুশরিক, যদি বলি, ‘আমি মওজুদ আছি’ তবে মুশরিক, যদি বলি, ‘আমি সত্যবাদী’ তবুও মুশরিক। কোন কথাই শির্‌কশূন্য হতো না। খাদ্য শক্তি যুগিয়েছে, পানি তৃপ্ত-তুষ্ট করেছে, ঔষধ উপকারী, সর্দি (ঠাণ্ডা) ক্ষতিকর-এসব ক’টি কথাও শির্‌ক হয়ে যেতো। ঈমানের কোন পথই অবিশষ্ট থাকতো না। কিন্তু তেমনি নয়। শির্‌ক তখনই হবে, যখন কাউকে কোন গুণের ক্ষেত্রে সত্তাগতভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করে। পক্ষান্তরে, যদি কাউকে সত্তাগতভাবে স্বাধীন-সার্বভৌম মনে না করে, বরং আল্লাহ তা’আলার মুখাপেক্ষী বলে মনে করে, অর্থাৎ তাঁরই দানক্রমে এ বৈশিষ্ট্য অর্জিত বলে বিশ্বাস করে, যেমন-বলছে তো ‘আমি দেখছি’, কিন্তু বিশ্বাস করে-আমার দেখার মধ্যে আমি আল্লাহ তা’আলার মুখাপেক্ষী, তিনি দেখার ক্ষমতা দিলে দেখতে পাই, তাহলে নিঃসন্দেহে সে একত্ববাদী (মু’মিন); মুশরিক নয়। এমতাবস্থায় কেউ তাকে মুশরিক বললে বা লিখলে সে মুর্খ, বিবেকভ্রষ্ট ও বিপথগামী। কেননা, তখন তাকে মুশরিক বলার অর্থ এ হবে যে, আল্লাহ প্রদত্ত গুণে কাউকে গুনান্বিত মনে করাও শির্ক (না’ঊযু বিল্লাহ)। প্রকারান্তরে, সে বলতে চাচ্ছে যে, কারো প্রদত্ত দৃষ্টি এবং শ্রবণশক্তিও আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত; অন্য কারো মধ্যে তা আছে বললে শির্‌ক হবে। এটাতো সম্পূর্ণ বাতিল ও গোমরাহী। কেননা, আল্লাহ তা’আলার কোন গুণই কারো প্রদত্ত নয়। প্রতিটি গুণই তাঁর সত্ত্বাগত; উপার্জিত নয়। সুতরাং একথা সুস্পষ্ট হলো যে, আল্লাহ্‌ প্রদত্ত গুণাবলী কারো জন্য সাব্যস্ত করা মোটেই শির্ক হতে পারে না। কিন্তু এক শ্রেণীর মুসলমান নামধারী লোকও এখনো পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলার যাত ও সিফাত (সত্তা ও গুণাবলী) সম্পর্কে অজ্ঞ। তারা এতটুকু জানে না যে, আল্লাহ তা’আলার সমস্ত গুণও ‘যাতী’ (সত্তাগত); কারো থেকে অর্জিত নয়। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো জন্য তাঁরই প্রদত্ত গুণাবলী সাব্যস্ত করলে শির্‌ক অনিবার্য হতে পারে না। পবিত্র ক্বোরআনে আল্লাহ তা’আলা হযরত ঈসা আলায়হিস সালামের উক্তি উদ্ধৃত করেছেন-

اِنِّی قَدْ جِءْتُکُمْ بِاٰیَۃٍ مِّنْ رَّبِّکُمْ اَنِّیْ اَخْلُقُ لَکُمْ مِّنَ الطِّیْنِ کَہَیْءَۃِ الطَّیْرِ فَاَنْفُخُ فِیْہِ فَیَکُوْنُ طَیْرًا بِاِذْنِ اللّٰہِ وَاُبْرِءُ الْاَکْمَہَ وَالْاَبْرَصَ وَ اُحْیِ الْمَوْتٰی بِاِذْنِ اللّٰہِ وَاُنَبِّءُکُمْ بِمَا تَأکُلُوْنَ وَمَا تَدَّخِرُوْنَ فِیْ بُیُوْتِکُمْ اِنَّ فِیْ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لَّکُمْ اِنْ کُنْتُمْ مُؤْمِنِیْنَ

তরজমাঃ একথার ঘোষণা দিয়ে যে, ‘আমি তোমাদের নিকট একটা নিদর্শন নিয়ে এসেছি,  তোমাদের রবের পক্ষ থেকে যে, আমি তোমাদের জন্য মাটি দ্বারা পাখী সদৃশ আকৃতি গঠন করে থাকি, অতঃপর সেটার মধ্যে ফুৎকার করি। তখন সেটা তৎক্ষণাৎ পাখী হয়ে যায়- আল্লাহর নির্দেশে এবং আমি নিরাময় করি জন্মান্ধ ও সাদা দাগ সম্পন্ন (কুষ্ঠ রোগী)কে আর আমি মৃতকে  জীবিত করি আল্লাহর নির্দেশে এবং তোমাদেরকে বলে দিই যা তোমরা আহার করো আর যা নিজ নিজ ঘরে জমা করে রাখো। নিশ্চয় এসব কথার মধ্যে তোমাদের জন্য মহান নিদর্শন  রয়েছে যদি তোমরা ঈমান রাখো।

[পারা-৩, সূরা আ-লে ইমরান, আয়াত-৪৯, তরজমা- কান্‌যুল ঈমান,  বাংলা সংস্কারণ]

এ আয়াত শরীফে হযরত ঈসা ‘আলা নাবিয়্যিনা ওয়া ‘আলায়হিস্‌ সালাতু ওয়াত তাসলীমাত  ‘সৃষ্টি করা, অন্ধ ও কুষ্ঠরোগীকে আরোগ্য দান করা এবং মৃতকে জীবিত করা’র সম্পর্ক নিজের দিকে করেছেন। আর বলেছেন, তোমরা যা আহার করো এবং যা তোমরা ঘরে সঞ্চিত করে রাখছো তাও আমি জানি। আরো এরশাদ করেন, যদি তোমরা ঈমান রেখে থাকো তবে তাতে তোমাদের জন্য নিদর্শন রয়েছে। আয়াতে তাওহীদের পতাকাবাহী, আল্লাহ তাজ্ঞআলার রসূল হযরত ঈসা আলায়হিস্ সালাতু ওয়াসসালাম-এর উক্তি হিদায়তেরই নমুনা, যা ক্বোরআন পাক  উদ্ধৃত করেছে। সুস্পষ্ট ও নিশ্চিতভাবে বুঝা গেলো যে, সৃষ্টি করা, জীবিত করা ও রোগ থেকে আরোগ্য দেওয়ার সম্পর্ক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো দিকে রচনা করা যদি এ বিশ্বাসে হয়ে থাকে যে, এসব ক্ষমতা তিনি আল্লাহর নিকট থেকে অর্জন করেছেন, তবে মোটেই শির্‌ক নয়। মোট কথা, শির্‌ক হচ্ছে দু’জন মাঞ্চবূদ অথবা আরো বেশী সাব্যস্ত করা। যেমন- আল্লাহ তা’আলা  এরশাদ ফরমান-لاَ تَتَّخِذُوْا اِلٰہَیْنِ اثْنَیْنِ اِنَّمَا ہُوَ اِلٰہٌ وَّاحِدُ তরজমাঃ তোমরা দু’জন ইলাহ্‌ (উপাস্য) গ্রহণ করো না। নিশ্চয় তিনি এক ইলাহ। [পারা-১৪, সূরা নাহ্‌ল]

আল্লাহ তা’আলার সত্তার গুণাবলী ও কার্যাদির গুণাবলীতে কাউকে তাঁর মতো সাব্যস্ত করা শির্‌ক; যেমন-শ্রুতিশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, কথা বলা, সৃষ্টি করা, রিয্‌ক দেওয়া, জীবিত করা, মৃত্যু ঘটানো, উপকার করা ও ক্ষতি করা। সুতরাং যে ব্যক্তি এ বিশ্বাস রাখে যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য উপাস্যও আছে, যে তার সত্তায় স্বাধিষ্ট (সার্বভৌম) অথবা গুণাবলীতে তাঁর মতো, অথবা কর্মে তাঁর শরীক, সৃষ্টি করে, রুজি দেয়, জীবিত রাখে, মৃত্যু ঘটায়, ক্ষতি করে, উপকার করে, এসব বিষয়ে সেও স্বাধীন, সার্বভৌম, সত্তাগতভাবে স্বাধিষ্ঠ, আল্লাহর অনুমতি ও দানের মুখাপেক্ষী নয়, তবে এমন আক্বীদা পোষণকারী নিশ্চিতভাবে মুশরিক; ঈমানের গণ্ডি থেকে খারিজ। তার পরিণাম হচ্ছে সে দোযখে স্থায়ী হবে, সর্বদা জাহান্নামে থাকবে। এটাকে ‘শির্‌ক-ই আকবর’ বলে। এটাই ‘তাওহীদ’ (আল্লাহর একত্ববাদ)-এর বিপরীত। এ ধরনের বিশ্বাস করলে ‘তাওহীদ’-এর দাবী বিনষ্ট হয়ে যায়। এরই প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন-اِنَّ اللّٰہَ لاَ یَغْفِرُ اَنْ یُّشْرَکَ بِہٖ وَیَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذٰلِکَ لِمَنْ یَّشَآءُ

তরজমাঃ নিশ্চয় আল্লাহ, তাঁর সাথে শরীক করা (তথা কুফর করা) হলে তা তিনি ক্ষমা করেন না; এবং এতদ্ব্যতীত যা আছে তা যাকে চান ক্ষমা করেন।

এ ধরনের শির্‌ককে ‘শির্‌ক-ই আকবর’ (বৃহত্তম শির্ক) বলে। আরো লক্ষ্যণীয় যে, যখন শর্তহীনভাবে, শরীয়তের বচনগুলোতে শির্‌ক বলা হয়, তখন বেশীর ভাগ এ অর্থই হয়ে থাকে। এতদ্ব্যতীত, আরেক প্রকারের শির্ক রয়েছে। সেটাকে ‘শির্‌কে আসগর’ (ছোটতর শির্ক) বলে।

আর তা হচ্ছে বান্দা যদি ইবাদতে নিষ্ঠা অবলম্বন না করে, নিরেট আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত না করে বরং রিয়াকারী (লোক দেখানোর মানসে কোন কাজ) করে। যেমন হাদীস শরীফে হুযূর সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন -اَلرِّیَآءُ شِرْکٌ خَفِیٌّ (রিয়া হচ্ছে গোপন শির্‌ক)। [আত্বইয়াবুল বয়ান, পৃঃ ১৮৪]

পবিত্র ক্বোরআন ও হাদীস শরীফে এ উভয় প্রকারের শিরকের ভয়াবহ পরিণতির কথা এরশাদ হয়েছে। আল্লামা শামসুদ্দীন মুহাম্মদ ওসমান আয্‌ যাহাবী রাহমাতুল্লাহি তা’আলা আলায়হি তাঁর প্রসিদ্ধ কিতাব ‘আল-কাবা-ইর’-এ এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তা এখানে সবিশেষ প্রনিধানযোগ্য তিনি লিখেছেন।

[গাউসিয়া তরবিয়াতী নেসাব, পৃ.২১-২৬]