হুযূর-ই আকরাম পবিত্রকারী, কিতাব, হিকমত এবং অজানা বিষয়াদির শিক্ষাদাতা

হুযূর-ই আকরাম পবিত্রকারী, কিতাব, হিকমত এবং অজানা বিষয়াদির শিক্ষাদাতা

মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান

হুযূর-ই আকরাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম পবিত্রকারী, কিতাব, হিকমত এবং অজানা বিষয়াদির শিক্ষাদাতা
আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ ফরমান-
كَمَاۤ اَرْسَلْنَا فِیْكُمْ رَسُوْلًا مِّنْكُمْ یَتْلُوْا عَلَیْكُمْ اٰیٰتِنَا وَ یُزَكِّیْكُمْ وَ یُعَلِّمُكُمُ الْكِتٰبَ وَ الْحِكْمَةَ وَ یُعَلِّمُكُمْ مَّا لَمْ تَكُوْنُوْا تَعْلَمُوْنَ (১৫১(
তরজমা: যেমন আমি তোমাদের মধ্যে প্রেরণ করেছি একজন রাসূল তোমাদের মধ্য থেকে, যিনি তোমাদের উপর আমার আয়াতগুলো তিলাওয়াত করেন, তোমাদেরকে পবিত্র করেন এবং কিতাব ও পরিপক্ক জ্ঞান শিক্ষা দেন। আর তোমাদেরকে ওই শিক্ষা দান করেন যার জ্ঞান তোমাদের ছিলোনা। [সূরা বাক্বারা: আয়াত-১৫১, কানযুল ঈমান]

পূর্ববর্তী আয়াতগুলোতে ক্বেবলা পরিবর্তনের বিস্তারিত বিষয়াদি বিশদভাবে এরশাদ হয়েছে- কা’বা ক্বেবলা হওয়া তোমাদের জন্য মহা পুরষ্কার। আর এ আয়াতে হুযূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শুভাগমনের উল্লেখ রয়েছে, যা তদপেক্ষাও বড় নি’মাত। মোটকথা, পূর্ববর্তী আয়াতগুলোতে ওই কা’বার উল্লেখ রয়েছে, যা নামাযের ক্বেবলা আর এখানে ওই মাহবূবের উল্লেখ রয়েছে, যিনি ঈমানের ক্বেবলা। অর্থাৎ মাথার ক্বেবলার পর হৃদয়ের ক্বেবলার উল্লেখ করা হয়েছে, বস্তুতঃ এ আয়াতের প্রতিটি কলেমা (শব্দ) হুযূর-ই আকরাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সুস্পষ্ট প্রশংসাই। যেমন-
كما (কামা-) এরশাদ করে আল্লাহ্ তা‘আলা একথা এরশাদ করেছেন যে, তিনি তোমাদেরকে কা’বার দিকে ফিরিয়েছেন। এটা তাঁর প্রথম ইহসান নয়। তিনি আমাদেরকে ইতোপূর্বে ওই শানদার নবী দান করেছেন, যাঁর গুণাবলী নিম্নরূপঃ
اَرْسَلْنَا (আমি প্রেরণ করেছি) এরশাদ করেছেন। এ সম্পর্কে দু’টি বিষয় স্মরণ রাখার যোগ্যঃ এক. اَرْسَلْنَا (আরসালনা-) অতীতকাল বাচক ক্রিয়া এরশাদ হয়েছে। এ’তে এদিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, ‘হে মুসলমানগণ! আমি তোমাদেরকে কলেমা, নামায, কা’বা, ইসলামী আক্বাইদ এবং আমলসমূহ পরে দিয়েছি। সর্বপ্রথম যেই নি’মাত তোমাদেরকে দিয়েছি, তা হলো আমার মাহবূব সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শুভাগমন।

এ বিষয় এভাবেও বুঝানো যায় যে, হুযূর-ই আকরাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইসলামরূপী বৃক্ষের শিখড়। আর অন্যসব বিষয় আক্বাইদ ও আ’মাল ওই বৃক্ষের শাখা- প্রশাখা। সর্বপ্রথম শিখড় প্রতিষ্ঠিত হয়, শাখা- প্রশাখা পরে প্রকাশ পায়। আবার শাখা-প্রশাখার অবস্থা এমন হয় যে, সেগুলো যতক্ষণ পর্যন্ত শিখড়ের সাথে সম্পৃক্ত থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত সেগুলো সবুজ-সজীব থাকে, ফুল ও ফলে ভর্তি থাকে; কিন্তু শিখড় থেকে পৃথক হবার সাথে সাথে সেগুলো একেবারে অকেজো হয়ে যায়; বরং আগুনের ইন্ধন হয়ে যাবার উপযোগী হয়ে যায়; অনুরূপ, মহামহিম রব সর্বপ্রথম নবী-ই আকরামকে নুবূয়ত দান করেছেন। আর দীর্ঘ এগার বছর যাবৎ কোন ইসলামী আক্বীদার বিশদ বর্ণনা কিংবা আমল প্রেরণ করেননি। এগার বছর পর মি’রাজে ডেকে নিয়ে নামায দান করেছেন। আর হিজরতের পর অন্যান্য বিধান দিয়েছেন। এ এগার বছরের সময়সীমার মধ্যে যেসব মুসলমানই মৃত্যুবরণ করেছেন, তাঁরা অবশ্যই জান্নাতী ছিলেন। এর উদাহরণও হাজারো পাওয়া যাবে। কিন্তু ওইসব লোক আমল ছাড়াই জান্নাতী হয়ে গেছেন। তবে এর উদাহরণ কোথাও পাওয়া যাবে না যে, কোন লোক হুযূর-ই আকরাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর দিক থেকে বিমুখ হয়ে নিছক আমল দ্বারা জান্নাতী হয়েছে। বস্তুতঃ যেসব ইবাদতের সম্পর্ক হুযূর-ই আকরাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সম্পৃক্ত সেগুলোতেই ক্ববূলিয়াত (আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্যতা)’র ফুল ফুটেছে এবং সাওয়াবের ফল প্রকাশ পেয়েছে; কিন্তু যেসব ইবাদতের সম্পর্ক হুযূর-ই আকরাম থেকে ছিন্ন হয়ে গেছে, সেগুলো নিষ্ফলই। ওই ধরনের আমলকারী জাহান্নামের উপযোগী হয়েছে। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে শয়তান-ইবলীস। এ জন্যই এ আয়াতে ‘আরসালনা-’ সাধারণ অতীতকালবাচক ক্রিয়া এরশাদ হয়েছে।

এ-ই ‘আরসালনা-’ সম্পর্কে দ্বিতীয় কথা হচ্ছে- মহান রব আমাদের দুনিয়ায় আসাকে خَلَقَ (সৃষ্টি করেছেন) দ্বারা বর্ণনা করেছেন; কিন্তু হুযূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শুভাগমনকে হয়তো اَرسَلْنَا (আরসালনা-) দ্বারা অথবা بعث (বা‘আসা) দ্বারা, অথবা جَآءَ (জা-আ) দ্বারা এরশাদ করেছেন। যেমন- اِذْ بَعَثَ فِيْهِمْ رَسُوْلاً (যেহেতু তিনি তাদের মধ্যে রসূল প্রেরণ করেছেন), قَدْ جَآءَكُمْ مِنَ اللهِ نُوْرٌ (নিশ্চয় তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে নূর এসেছে)। এ পার্থক্যের কারণ হচ্ছে- আমরা এখানে আসার পূর্বে ছিলাম না। মহান রব এরশাদ ফরমাচ্ছেন-هَلْ اَتى عَلَى الْاِنْسَانِ حِيْنٌ مِنَ الدَّهْرِ لَمْ يَكُنْ شَيْئًا مَّذْكُوْرًا তরজমা: নিশ্চয় মানুষের উপর এক সময় এমনও অতিবাহিত হয়েছে যে, কোথাও তার নাম পর্যন্ত ছিলোনা। [সূরা দাহর: আয়াত-১, কানযুল ঈমান]

দুনিয়ায় এসে আমরা সবকিছু হয়েছি- মু’মিন, আলিম ও মুত্তাক্বী ইত্যাদি। এ কারণে আমাদের জন্য خَلَقَ (সৃষ্টি করেছেন) এরশাদ হয়েছে। خَلَقَ মানে অস্তিত্বহীনতা থেকে অস্তিত্বে আনা। যা কিছুই ছিলোনা তাকে সবকিছু করে দেয়া; কিন্তু সম্মানিত নবীগণ, বিশেষতঃ হুযূর-ই আকরাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম দুনিয়ায় তাশরীফ আনার পূর্বে সবকিছু ছিলেন, নবীও ছিলেন, আল্লাহর ইবাদতপরায়ণও ছিলেন। এ জন্য তাঁর তাশরীফ আনয়নকে اِرْسَال (ইরসাল বা প্রেরণ করো) বলা হয়েছে। প্রেরণ তাঁকেই করা হয়, যিনি নিজের নিকট মওজুদ থাকেন। আর পদ/পদবী তাঁকেই দেওয়া হয়, যিনি ওই পদ সামলানোর জন্য পূর্ব থেকে সব যোগ্যতার অধিকারী হন। প্রধানমন্ত্রীর পদে কাউকে সমাসীন করার পূর্বে তাঁকে শিক্ষা, দীক্ষা ইত্যাদিতে পূর্ণতা অর্জন করতে হয়, তাঁকে এর যোগ্যতাসম্পন্ন করে নিতে হয়। হুযূর-ই আকরাম এরশাদ করেন, আমি তখনও নবী ছিলাম যখন হযরত আদম আলায়হিস্ সালাম পানি ও মাটির মধ্যে ছিলেন।

তাছাড়া, পার্থক্য এও রয়েছে যে, আমরা দুনিয়াতে আমাদের কাজে এসেছি, কিন্তু হুযূর-ই আক্রাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম খোদায়ী কাজে তাশরীফ এনেছেন। সুতরাং আমাদের জন্য خَلَقَ আর হুযূর-ই আক্রামের জন্য اَرْسَلْنَا এরশাদ করাই যথাযথ।

فِيْكُمْ (তোমাদের মধ্যে)। এর মধ্যে তিনটি সম্ভাবনা রয়েছে- সম্বোধন হয়তো আরববাসীদের করা হয়েছে অথবা সমস্ত মুসলমানকে অথবা সকল মানুষকে। প্রথমাবস্থায় অর্থ দাঁড়ায় ‘হে আরব মরুভূমির বাসিন্দারা! তোমাদের তাক্বদীর (অদৃষ্ট) খুলে গেছে, তোমরা ধূলিকণাগুলোকে চমকানোর জন্য ওই গুপ্ত সূর্য তাশরীফ এনেছেন, যিনি তোমাদেরকে, তোমাদের খান্দানকে, তোমাদের দেশকে, তোমাদের ভাষাকে দুনিয়ায় আলোকিত করে দিয়েছেন, ফলে এখন থেকে সমগ্র দুনিয়া তোমাদের নিকট দৌঁড়ে আসবে। কিন্তু কোন ইবাদতের জন্য তোমাদেরকে কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। সুতরাং দেখে নাও হজ্জ্, ওমরাহ্, তাওয়াফ ও যিয়ারত ইত্যাদির জন্য সমগ্র দুনিয়া সেখানেই যাচ্ছে। যদি ওই অনুর্বর ভূ-খ-ে হুযূর-ই আক্রাম তাশরীফ না আনতেন, তবে দুনিয়া সেটার নামও জানতো না; বরং এ ভূ-খ-কে পানি ও ফসলবিহীন এজন্যই রাখা হয়েছে যেন এখানে যে-ই আসবে, সে হুযূর-ই আক্রামের খাতিরেই আসবে, কাজ-কারবার কিংবা বিনোদনের জন্য আসবে না।

আর যদি فِيْكُمْ (তোমাদের মধ্যে)-এর মধ্যে আম মুসলমানদেরকে সম্বোধন করা হয়, তবে মর্মার্থ দাঁড়াবে হে মুসলমানরা! তোমরা হলে ওই সৌভাগ্যবান লোক! যারা ওই রসূল পেয়েছো, যাঁর কদম শরীফের চর্তুপাশে সম্মানিত নবীগণ আলায়হিমুস্ সালাম আসার জন্য ব্যতিব্যস্ত থাকতেন। তাঁরই বরকতে তোমাদের দোষ-ত্রুটিগুলো অদৃশ্য হয়ে গেছে, ময়লা-আব্বর্জনাগুলো ধূয়ে গেছে, সমস্যাদির সমাধান হয়ে গেছে, ভাগ্য খুলে গেছে।

স্মর্তব্য যে, আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর কোন নি’মাত দিয়ে مَنَّ (মান্না) এরশাদ করে খোঁটা দেন নি, হুযূর-ই আকরামের শুভাগমন ব্যতীত। তাঁকে প্রেরণ করে এরশাদ করেছেন- لَقَدْ مَنَّ اللهُ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ (নিশ্চয় নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা মু’মিনদের উপর ইহসান করেছেন।) এরও তিনটি কারণ সবিশেষ উল্লেখযোগ্যঃ এক. সমস্ত নি’মাত মৃত্যুবরণ করতেই আমাদের সঙ্গ ত্যাগ করে; কিন্তু হুযূর-ই আন্ওয়ার সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া, কবর ও হাশর, কোথাও আমাদেরকে ছেড়ে যান না। যেন সমস্ত নি’মাত ক্ষণস্থায়ী, আর হুযূর-ই আক্রাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মহামহিম রবের চিরস্থায়ী নি’মাত। দুই. দুনিয়ার সমস্ত নি’মাত যদি হুযূর-ই আক্রামের এরশাদ অনুসারে ব্যয় করা হয়, তবেই সেগুলো নি’মাত, অন্যথায় দুঃখের কারণ। হুযূর-ই আক্রাম যেমন নি’মাত তেমনি অন্য নি’মাতগুলোকে নি’মাতে পরিণতকারীও।

তিন. সমস্ত নি’মাত, এমনকি আমাদের হাত-পা ইত্যাদি মহান রবের দরবারে আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে; কিন্তু হুযূর-ই আকরাম আমাদেরকে পর্দার আড়ালে গোপনকারী। তিনি বলবেন, ‘‘হে খোদা! ভাল লোকেরা তোমার, মন্দ ও গুনাহ্গাররা আমার।’’ এ কারণেই এরশাদ হয়েছে- فِيْكُمْ (তোমাদের মধ্যে)।

আর যদি فِيْكُمْ -এর মধ্যে সমস্ত মানবজাতিকে সম্বোধন করা হয়, তবে অর্থ দাঁড়াবে- ‘‘হে মানব জাতি! আমি তোমাদের উপর মহা অনুগ্রহ করেছি। কারণ, তোমাদের দলে (জাতির মধ্যে) আমার হাবীবকে প্রেরণ করেছি, ফেরেশতাদের দলে প্রেরণ করিনি। ফলে তোমাদের সম্মান বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্মর্তব্য যে, মানুষ-ই ‘আশরাফুল মাখলূক্বাত’ (সৃষ্টির সেরা) সাব্যস্ত হয়েছে।

মহান রব এরশাদ ফরমান- لَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِى ادَمَ (নিশ্চয় আমি আদম সন্তানদেরকে সম্মানিত করেছি।) তাও এ জন্য নয় যে, মানুষ শক্তিতে অন্য সৃষ্টির তুলনায় অধিক শক্তিশালী; বরং মানুষ তো দুর্বল। আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ ফরমান- خُلِقَ الْاِنْسَانُ ضَعِيْفًا (মানুষকে দুর্বল করে সৃষ্টি করা হয়েছে।) আবার এ জন্যও না যে, মানুষের আমল অন্য সৃষ্টির তুলনায় বেশী কিংবা উত্তম। ফেরেশতারা তো অনাদিকাল থেকে মা’সূম (নিষ্পাপ)। আর মানুষ যখন খারাপ হয়ে যায়, তখন এমন সব গুনাহ্ করে বসে, যেগুলো শয়তানদের বাবা ইবলীসও কল্পনা করতে পারে না। এতদ্সত্ত্বেও মানুষ আশরাফুল মাখলূক্বাত (সৃষ্টিকুলের সেরা)। আল্লাহর খিলাফতের মুকুট তারই মাথায় শোভা পাচ্ছে। কেন? এ জন্য, শুধু এজন্য যে, সম্মানিত নবীগণ, বরং নবীকুল সরদার সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ওই জাতির মধ্যে তাশরীফ এনেছেন। সুতরাং দেখে নিন! যেসব লোক নবী-ই আক্রামের সাথে গোলামীর সম্পর্ক কায়েম করেনি, তারা কুকুর, শূকর থেকেও নিকৃষ্ট বলে মানা হয়। মহান রব কাফিরদের সম্পর্কে এরশাদ করেছেন- اُوْلئِكَ هُمْ شَرُّ الْبَرِيَّةِ (অর্থাৎ এসব লোক সমস্ত সৃষ্টি অপেক্ষা নিকৃষ্ট। এ সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে সমস্ত পশুও রয়েছে।

হযরত নূহ্ আলায়হিস্ সালাম-এর কিশ্তীতে বানর, গাধা ও কুকুরের জন্য স্থান ছিলো; কিন্তু কেনানের জন্য কোন জায়গা ছিলোনা। কারণ, সে কাফির ছিলো। ‘সূরা-ই জিন’-এর মধ্যে এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে এরশাদ করা হয়েছে। আর যেসব লোক ওই শাহানশাহে কাওনাঈন সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে গোলামীর সম্পর্ক মজবুতভাবে জুড়ে নিয়েছেন, তাঁদের মর্যাদা আরশ, কুরসী, লওহ, ক্বলম, ফেরেশ্তা ও জিন্ বরং সবার চেয়ে শ্রেষ্ঠ হয়ে গেছে। তাঁরা শ্রেষ্ঠতর সৃষ্টি হয়েছেন। মহান রব সালেহীন (নেক্কার লোকদের) সম্পর্কে এরশাদ করেছেন- اُولئِكَ هُمْ خَيْرُ الْبَرِيَّةِ (তারা হচ্ছে শ্রেষ্ঠতর সৃষ্টি)। তাও এজন্য বলেছেন যে, فِيْكُمْ رَسُوْلاً (তোমাদের মধ্যে রসূল রয়েছেন)। সম্মানিত সূফীগণের মতে রসূল-ই আকরাম দেহের মধ্যে প্রাণের মতো হয়ে তাশরীফ এনেছেন। رَسُوْلاً مِّنْكُمْ অর্থাৎ আল্লাহ্ তা‘আলা আপন হাবীব সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে অগণিত গুণ দান করেছেন। কিন্তু ওই গুণ গুলোর প্রকাশস্থল ভিন্ন ভিন্ন। হুযূর-ই আক্রাম আল্লাহ্ তা‘আলার বান্দাও, তাঁর রসূলও, নবীও, আল্লাহ্ তা‘আলার নূরও; কিন্তু যখনই তাঁর এখানে তাশরীফ আনয়নের কথা উল্লেখ করা হয়, তখন তাঁকে রসূল, নবী, আল্লাহর নূর, বোরহান ইত্যাদি শব্দ দ্বারা বিশেষিত করা হয়েছে। আর যখন মি’রাজে নিয়ে যাবার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তখন عَبْدُه (তাঁর খাস বান্দা) এরশাদ করা হয়েছে, কেননা, হুযূর-ই আক্রাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এখানে (দুনিয়ায়) রিসালতের মর্যাদায় তাশরীফ এনেছেন, আর ওখানে (আসমান বা ঊর্ধ্ব জগতে) আবদিয়াত (বান্দা হবার) শান সহকারে গিয়েছেন।

আরো স্মর্তব্য যে, হুযূর-ই আকরামকে (رسول الله) ‘রসূলুল্লাহ্’ বলা হয়, وَكِيْلِ الله (ওয়াকীলুল্লাহ্) বলা হয় না, কেননা, ‘ওয়াকীল’ (উকিল) হল তিনি, যিনি অন্য লোকদের কাজ নিজের দায়িত্বে নিয়ে সম্পন্ন করেন। আর ওই কাজকে নিজের কাজ বলে উল্লেখ করেন। সুতরাং ক্রেতার উকিল বলেন, ‘‘আমি খরিদ করেছি।’’ তখন বেচাকেনার যাবতীয় দায়িত্ব তাঁর উপর বর্তায়। মূল্যমানও তিনি পরিশোধ করেন; কিন্তু ‘রসূল’ হন তিনি, যিনি অন্যজনের কাজ খোদ্ ওই অন্য লোকের দায়িত্বে সম্পন্ন করে দেন। রসনা মুবারক রসূলের হয়, শব্দাবলী হয় প্রেরকের। হুযূর-ই আকরাম আল্লাহর রসূল। হুযূর-ই আকরামের সব কথা ও কাজের যিম্মাদার হলেন মহান পরওয়ার্দিগার। বায়‘আত-ই রিদ্বওয়ানে বায়‘আত হুযূর-ই আকরামের হাত মুবারকেই হয়েছিলো; কিন্তু মহান রব এরশাদ ফরমাচ্ছেন, ‘‘আমার কুদ্রতের হাতে বায়‘আত সম্পন্ন হয়েছে। তাদের হাতের উপর আমার কুদরতের হাত রয়েছে। এজন্যই এরশাদ করেছেন- رَسُوْلاً (রসূলকে প্রেরণ করেছেন)। তারপর একথা বলেছেন- ‘কার রসূল?’ তাও এজন্য যে, যেভাবে খোদা তা‘আলার খোদায়ী শর্তহীন, অর্থাৎ প্রত্যেক উপস্থিত সৃষ্টির তিনি মা’বূদ ও মাসজূদ (উপাস্য ও সাজদার উপযোগী), প্রতিটি কণা তাঁর সামনে সাজদারত; প্রত্যেক সৃষ্টির রসূল হলেন হুযূর-ই আক্রাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম। হযরত খাদ্বির আলায়হিস্ সালাম হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে একথা বলতে পেরেছেন, ‘‘আপনি বনী ইস্রাঈলের রসূল, আপনার তাওরীতের বিধানাবলী আমার উপর বর্তায় না, আমার কোন কোন কাজ আপনার শরীয়তের বিপরীত হবে। এ কারণে আপনি আমার সাথে না থাকাই শ্রেয়।’’ আর হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামও জবাবে বলে দিলেন, ‘‘আমি আপনার রসূল হয়ে আসিনি, বরং আপনার শাগরিদ হয়েই এসেছি, কিছু শিখতে এসেছি; কিন্তু ওই হযরত খাদ্বির আলায়হিস্ সালাম ‘শরীয়ত-ই মুহাম্মদিয়া’র সামনে মাথা নত করেছেন। আর ওই শরীয়তের সমস্ত বিধান, যেগুলো তাঁর জন্য প্রযোজ্য হতে পারে তাঁর উপর জারী হয়েছে। বায়‘আত-ই রিদ্বওয়ানে সাহাবীগণের সাথে হযরত খাদ্বির আলায়হিস্ সালামও হুযূর-ই আকরামের হাত মুবারকে বায়‘আত গ্রহণ করেছেন। যেমনটি ‘আয়নী, ফাতহুল বারী, শরহে বোখারী, তাফসীর-ই রূহুল বয়ান ইত্যাদিতে বর্ণিত হয়েছে। ‘শানে হাবীবুর রহমান (উর্দু)তেও হাকীমুল উম্মত মুফতী আহমদ ইয়ার খান রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হিও লিখেছেন।

رَسُوْلاً -এর تنوين (দু’ যবর) تعظيم (মহত্ব বুঝানো)’র জন্য, যার অর্থ শানদার রসূল, কারণ, সব রসূল আপন আপন উম্মতের উপর রাজত্ব করেছেন; কিন্তু আমাদের মুনিব রসূলগণেরও রসূল। এতসব শান বা মর্যাদা সত্ত্বেও অবস্থা এ যে, তিনি مِنْكُمْ তোমাদের একজন। গরীব-মিসকীনদের সাথে তিনি এক সাথে বসে পানাহার করতেন, মিসকীনদের সাথে উঠাবসা করতেন। ক্বিয়ামতের প্রারম্ভে সমস্ত সৃষ্টি (মানুষ) তাঁকে তালাশ করবে; কিন্তু পাবে না; হযরত ঈসা আলায়হ্সি সালাম-এর পথ প্রদর্শন ব্যতীত। এ’তে তাঁর মহা মর্যাদার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। আর ক্বিয়ামতের শেষভাগে হুযূর-ই আকরাম আপন প্রতিটি গুনাহ্গার উম্মতকে তেমনিভাবে তালাশ করবেন, যেমন স্নেহশীল মা আপন গর্ভের একমাত্র সন্তানকে তালাশ করে থাকেন। এ’তে তাঁর বদান্যতার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। মোটকথা, رَسُوْلاً مِّنْكُمْ -এ দু’শব্দের সমন্বয়ে অনেক মজার ও সুক্ষ্ম বিষয় নিহিত রয়েছে।

يَتْلُوْ عَلَيْكُمْ ايَاتِنَا (তিনি তোমাদের উপর আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবেন)-এর মধ্যে নি¤œলিখিত পাঁচটি নি’মাতের উল্লেখ রয়েছে; যেগুলো আল্লাহর হাবীব সৃষ্টিকে দান করেছেনঃ
১. আয়াতগুলো পড়ে শুনানো, ২. সৃষ্টিকে পাক করা, ৩. ক্বোরআন শেখানো, ৪. হাদীস শরীফের তা’লীম দেওয়া এবং ৫. অজানা বিষয়গুলো বলে দেওয়া। উল্লেখ্য যে, ওইগুলোর মধ্যে প্রথমে তিলাওয়াতের কথা উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ ওই মাহবূব তোমাদের সম্মুখে আল্লাহর আয়াতগুলো তিলাওয়াত করেন। কারণ, আয়াতগুলোর তিলাওয়াত প্রত্যেক কাফির ও মু’মিনের উপর ফরয করা হয়েছে। পরবর্তী চারটি নি’মাত মুসলমানদেরকেই দেওয়া হয়েছে।
এরপর এরশাদ হচ্ছে- وَيُزَكِّيْكُمْ (এবং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করেন।) এ ক্রিয়াপদ تزكية (তাযকিয়াহ্) থেকে গৃহীত। এর অর্থ পবিত্র করা, সাফাঈ বর্ণনা করা এবং বৃদ্ধি করা। (সূত্র. তাফসীর-ই কবীর) অর্থাৎ তিনি তোমাদেরকে পাক করেন; কিংবা করবেন অথবা তোমাদের জন্য বৃদ্ধি করবেন। প্রথমোক্ত অর্থের ভিত্তিতে মাহাত্ম্য দাঁড়ায়, তোমাদেরকে নিছক তিলাওয়াত-ই ক্বোরআন কিংবা যাহেরী আমলগুলো পাক-সাফ করতে পারে না, বরং শুধু তাঁরই কৃপাদৃষ্টি পাক-সাফ করে। সাধারণ মানুষ তো আছেই, আমাদের ক্বেবলা কা’বা-ই মু‘আয্যামাহ্ও তাঁর হাত মুবারকের স্পর্শ ব্যতীত বোত-প্রতিমাগুলো থেকে পাক হতে পারেনি।

যদি ‘তাযকিয়াহ্’ মানে সাফা‘ঈ বর্ণনা করা হয়, তবে সেটার অর্থ হবে ওই মাহবূব সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম শুধু তোমাদের নয়; বরং পূর্ববর্তী নবী ও ওলীগণেরও সাফাঈ বর্ণনা করেছেন। দেখুন, ইহুদীগণ কুমারী হযরত মরিয়মের বিরুদ্ধে অপবাদ দিয়েছে, হযরত মসীহ্ ঈসা আলায়হিস্ সালাম-এর প্রতি দোষারোপ করেছে, হযরত সুলায়মান আলায়হিস্ সালামকে যাদুকর বলেছে। হুযূর-ই আক্রাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাঁদের সাফাঈ বর্ণনা করেছেন। ফলে ওই অপসমালোচনাকারীদের মুখ বাকহীন (বোবা) হয়ে গেছে। আর ওইসব হযরতের মহত্বের ঢঙ্কা বেজে উঠেছে।

অনুরূপ হুযূর-ই আক্রাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সাহাবা-ই কেরাম ও আহলে বায়ত-ই আত্বহারের মর্তবা ও ফযীলতসমূহ বর্ণনা করেছেন। ফলে রাফেযী ও খারেজীদের মুখে তালা লেগে গেছে। শুধু তা নয়, হযরত সিদ্দীক্ব ও হযরত ফারূক্বকে নিজের পাশে দাফন তথা শয়ন করিয়ে গোটা দুনিয়ার মাধ্যমে সালাম করিয়েছেন ও করাচ্ছেন। দুরূদ-ই ইব্রাহীমীতে নিজের সাথে সংযোজিত করে প্রত্যেক নামাযীর মাধ্যমে তাঁদের উপর দুরূদ শরীফ পড়িয়েছেন ও পড়াচ্ছেন। নিজের উম্মতদের ফযীলত বর্ণনা করে খোৎবা পড়িয়ে দিয়েছেন। অথবা এ আয়াতাংশের অর্থ এ যে, কাল ক্বিয়ামতে ওই মাহবূব সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ্ তা‘আলার মহান দরবারে তোমাদের সাফাঈ বর্ণনা করবেন।

আলোচ্য আয়াতে হুযূর-ই আকরামের তৃতীয় গুণ বর্ণনা করা হয়েছে- وَيُعَلِّمُكُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ (তিনি তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন)। تعليم মানে শেখানো, আর اعلام মানে বলে দেওয়া। এ মাহবূব আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম তোমাদেরকে বলে দিয়ে ক্ষান্ত হননা বরং শিক্ষা দেন। শেখানো হয় মুখে, কলম দ্বারাও এবং আমল দ্বারাও, সরাসরিও, মাধ্যম দ্বারা কিংবা পরোক্ষভাবেও। হুযূর-ই আক্রাম সাহাবা-ই কেরামকে প্রত্যক্ষভাবে ক্বোরআন ও হিকমত (বিধানাবলী) শিক্ষা দিয়েছেন। আর ক্বিয়ামত পর্যন্ত সমস্ত উম্মতকে পরোক্ষভাবে, মাধ্যম দ্বারা শিক্ষা দেন। কারণ, সমস্ত আলিম ও মাশাইখ হুযূর-ই আক্রামের মাদরাসা থেকে পড়ে ক্বোরআন হাদীসের শিক্ষা দেন এবং দিতে থাকবেন।

প্রকাশ থাকে যে, ক্বোরআনে নকশা এবং শব্দাবলীও রয়েছে, যেগুলোর স্থান হচ্ছে যথাক্রমে কাগজ ও রসনা; মর্মার্থ এবং বিধানাবলীও রয়েছে, যেগুলোর স্থান হচ্ছে মাথার মগজ। তাছাড়া আসরার বা রহস্যাবলীও রয়েছে, যেগুলোর স্থান হচ্ছে মানব-হৃদয়, নবী-ই আক্রাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এসব কিছুরই শিক্ষা দিয়েছেন। যেমন- হযরত আমীর মু‘আভিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু প্রমুখ ওহী লিখকগণকে কলম ধরার নিয়ম, ক্বোরআনের হরফগুলোর বৃত্ত ও কাঠামো এবং সেগুলো লিখনের নিয়মও শিক্ষা দিয়েছেন, সমস্ত সাহাবীকে তাজভীদের নিয়মাবলী, হরফগুলোর মাখরাজসমূহ, তিলাওয়াতের পদ্ধতি ও নিয়মাবলী শিক্ষা দিয়েছেন। ক্বোরআনের বিধান ও রহস্যাবলী বুঝিয়ে দিয়েছেন। মোটকথা, জ্ঞানের কোন দিকই বাদ দেননি, সবই শিখিয়েছেন।
আয়াতটির শেষাংশে এরশাদ করেছেন- وَيُعَلِّمُكُمْ مَالَمْ تَكُوْنُوْا تَعْلَمُوْنَ (ওই মাহবূব সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তোমাদেরকে ওইসব বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন, যেগুলো তোমরা জানতেনা)। এর তাফসীর বা ব্যাখ্যা এযে, ওই মাহবূব তোমাদেরকে শুধু মাসআলা-মাসাইল শিক্ষা দেন না; বরং আযাল (অনাদিকাল) থেকে আজ পর্যন্ত যত ঘটনা দুনিয়ায় ঘটেছে আর যা কিছু এখন থেকে কিয়ামত পর্যন্ত ঘটবে, ওই সবই তোমাদেরকে শিক্ষা দেন এবং বলে দেন। এর ব্যাখ্যা হচ্ছে ওই হাদীস শরীফ, যা বোখারী ও মুসলিম ইত্যাদি বর্ণনা করেছেন। একদিন হুযূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাযের পর মিম্বর শরীফের উপর দ-ায়মান হয়ে ওয়া’য করতে থাকেন। এভাবে যোহরের নামাযের সময় হয়ে গেলো। তারপর যোহরের নামায সম্পন্ন করলেন। তারপর আবার ওয়া’য শুরু করলেন। এভাবে মাগরিবের সময় হয়ে গেলো। এ ওয়া’যে তিনি সৃষ্টির শুরু থেকে আরম্ভ করে ক্বিয়ামত পর্যন্ত বরং জান্নাতীদের জান্নাতে এবং দোযখীদের দোযখে প্রবেশ করার সমস্ত অবস্থা তখন বর্ণনা করেছেন। এটা সম্ভব, এর অকাট্য নজীরও বিদ্যমান। হযরত দাঊদ আলায়হিস্ সালাম ঘোড়ার যীন ঠিক করে সেটার উপর উঠে বসার পূর্বে সমগ্র যাবূর কিতাব পড়তে পারতেন।

—০—

মহাপরিচালক-আনজুমান রিসার্চ সেন্টার, চট্টগ্রাম।

Share:

Leave Your Comment