মীলাদুন্নবীর উপর লিখিত সর্ব প্রথম স্বতন্ত্র কিতাব

মীলাদুন্নবীর উপর লিখিত সর্ব প্রথম স্বতন্ত্র কিতাব

মীলাদুন্নবীর উপর লিখিত সর্ব প্রথম স্বতন্ত্র কিতাব===

ক্বোরআন ও হাদীসের আলোকে সহীহ্ রেওয়ায়তের মাধ্যমে মীলাদ ও ক্বিয়ামের উপর প্রথম স্বতন্ত্র কিতাব রচনা করেন আল্লামা আবুল খাত্তাব ওমর ইবনে দাহ্ইয়া আলায়হির রাহমাহ্। তিনি মরক্কোর অধিবাসী এবং পর্যটক। তাঁর লিখিত কিতাবের নাম ‘আত-তানভীর ফী মাওলিদিল বাশীরিন নাযীর’। রচনাকাল ৬০৪ হিজরী।

ইবনে দাহ্ইয়া সম্পর্কে ইবনে খাল্লেকান লিখেছেন- 

اِبْنُ دَحْیَۃَ کَانَ مِنْ اَعْیَانِ الْعُلَمَآءِ وَمَشَاہِیْرِ الْفُضَلاَءِ قَدِمَ مِنَ الْمَغْرِبِ فَدَخَلَ الشَّامَ وَالْعِرَاقَ وَاجْتَازَ بِاِرْبِلَ سَنَۃَ اَرْبَعٍ وَّ سِتِّمِاءَۃٍ فَوَجَدَ مَلِکَہَا الْمُعَظَّمَ مُظَفَّرَ الدِّیْنِ بْنَ زَیْنِ الدِّیْنِ یَعْتَنِیْ بِالْمَوْلِدِ النَّبَوِیِّ فَعَمِلَ لَہٗ کِتَابَ التَّنْوِیْرِ فِیْ مَوْلِدِ الْبَشِیْرِ النَّذِیْرِ وَقَرَأَہٗ عَلَیْہِ بِنَفْسِہٖ فَاَجَازَہٗ بِاَلْفِ دِیْنَارٍ قَالَ وَقَدْ سَمِعْنَاہُ عَلَی السُّلْطَانِ فِیْ سِتَّۃِ مَجَالِسَ فِیْ سَنَۃِ خَمْسٍ وَّعِِشْرِیْنَ وَسِتِّمِأَۃٍ (اَلنِّعْمَۃُ الْکُبْرٰی عَلَی الْعَالَمِ (صَفْحَہ ۷۶ ‘ فَتَاوٰی الْعَلاَّمَۃِ جَلاَلِ الدِّیْنِ السُّیُوْطِی)

অর্থাৎ ইবনে খাল্লেকান বলেন- ইবনে দাহ্ইয়া ছিলেন সে যুগের বিখ্যাত আলিমগণ ও প্রসিদ্ধ গুণীজনদের মধ্যে অন্যতম। তিনি মরক্কো হতে আগমন করে পর্যটনের উদ্দেশ্যে সিরিয়া ও ইরাকে প্রবেশ করেন এবং ৬০৪হিজরী সনে ইরাকের ইরবিল শহরে আগমন করেন। তিনি তথাকার সম্মানিত শাসক ও বাদশাহ্ মোযাফ্ফর উদ্দীন ইবনে যয়নুদ্দীনকে মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম অনুষ্ঠান পালন করতে দেখতে পান। তিনি বাদশাহ্কে  ‘আত্-তানভীর ফী মাওলিদিল বাশীরিন নাযীর’ নামক একখানা গন্থ মীলাদ শরীফের উপর রচনা করে উপহার দেন। তিনি নিজে গ্রন্থখানা পাঠ করে বাদশাহকে শুনান। বাদশাহ্ প্রীত হয়ে তাঁকে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা পুরস্কার দেন। ইবনে খাল্লেকান বলেন, ‘‘আমি ৬২৫ হিজরীতে উক্ত গ্রন্থখানা ছয়টি মিলাদ মাহফিলে বাদশাহর উপস্থিতিতে পাঠ করতে নিজে শুনেছি।’’

[আন নি’মাতুল কোবরা ‘আলাল আলম’: পৃষ্ঠা ৭৬: আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূত্বীর ফাতাওয়ার সূত্রে বর্ণিত]

ইবনে কাসীর আল্লামা ইবনে দাহ্ইয়ার হাদীস, ইতিহাস ও আরবী সাহিত্যে গভীর জ্ঞানের প্রশংসা করেছেন তাঁর ‘আল-বেদায়া ওয়ান নেহায়া’ গ্রন্থে।

তাফসীরে রুহুল বয়ান ৯ম খণ্ড ৫৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে-

وَاَوَّلُ مَنْ اَحْدَثَہٗ مِنَ الْمُلُوْکِ صَاحِبُ اِرْبِلَ وَصَنَّفَ لَہٗ اِبْنُ دَحْیَۃَ رَحِمَہُ اللّٰہُ کِتَابًا فِی الْمَوْلِدِ سَمَّاہُ التَّنْوِیْرُ فِیْ مَوْلِدِ الْبَشِیْرِ النَّذِیْرِ فَاجَازَہٗ بِاَلْفِ دِیْنَارٍ وَقَدْ اِسْتَخْرَجَ لَہُ الْحَافِظُ بْنُ حَجَرٍ اَصْلاً مِنَ السُّنَّۃِ وَکَذَا الْحَافِظُ السُّیُوْطِیُّ رَدَّا عَلَی الْفَاکِہَانِیْ الْمَالِکِیِّ فِیْ قَوْلِہٖ اِنَّ عَمَلَ الْمَوْلِدِ بِدْعَۃٌ مَّذْمُوْمَۃٌ کَمَا فِیْ اِنْسَانِ الْعُیُوْنِ

অর্থাৎ আল্লামা ইসমাইল হক্বক্বী তাফসীরে রূহুল বয়ানে বলেন, বাদশাহগণের মধ্যে সর্বপ্রথম রাষ্ট্রীয়ভাবে মিলাদুন্নবী পালন করেন ইরবিলের বাদশাহ্ (মুযাফ্ফর উদ্দীন)। তাঁর উদ্দেশে মিলাদুন্নবীর কিতাব রচনা করেন ইবনে দাহ্ইয়া রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি। তিনি কিতাবটার নামকরণ করেন ‘আত-তানভীর ফী মাওলিদিল বাশীরিন নাযীর’। বাদশাহ তাঁকে এর বিনিময়ে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা পুরস্কার দেন। হাফেযুল হাদীস ইমাম ইবনে হাজর আসক্বালানী রহমাতুল্লাহি আলায়হি মীলাদুন্নবীর ভিত্তি সুন্নাহ্ হতে প্রমাণ করেছেন এবং অনুরূপ প্রমাণ পেশ করেছেন হাফেযুল হাদীস ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি। তাঁরা উভয়েই তাজুদ্দীন ফাকেহানী মালেকীর উক্তির খণ্ডন করেছেন। ফাকেহানীর উক্তি হলো- মীলাদুন্নবীর আমলটি নিকৃষ্ট বিদ্‘আত। আল্লামা নুরুদ্দীন আলী হালবী তাঁর ‘ইনসানুল ‘উয়ূন ফী সীরাতিল আমীনিল মা’মূন’- গ্রন্থে এরূপই লিখেছেন।                [রুহুল বয়ান ৯ম খণ্ড ৫৭ পৃ.]

বাদশাহ্ মুযাফ্ফর উদ্দীন কেমন ছিলেন?

ইরবিলের (ইরাক) বাদশাহ্, যিনি সর্বপ্রথম রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মীলাদুন্নবী উদ্যাপন করেছেন তিনি কেমন লোক ছিলেন? সাধারণ বাদশাহগণের ন্যায় ভোগ-বিলাসী, না দীনদার? এ সম্পর্কে আল্লামা সাইয়্যেদ আহমদ আবেদীন দামেস্কী (ওফাত-১৩২০ হিজরী) বলেনঃ

قَالَ اِبْنُ کَثِیْرٍ فِیْ تَارِیْخَہٖ کَانَ الْمَلِکُ الْمُظَفَّرُ یَعْمَلُ الْمَوْلِدَ الشَّرِیْفَ فِیْ رَبِیْعِ الْاَوَّلِ وَیَحْتَفِلُ فِیْہِ اِحْتِفَالاً ہَاءِلاً وَکَانَ شَہْمًا شُجَاعًا بَطِلاً عَاقِلاً وَطَالَتْ مُدَّتُہٗ فِی الْمُلْکِ اِلٰی اَنْ مَاتَ وَہُوَ مُحَاصِرُ الْفِرِنْجِ بِمَدِیْنَۃِ عَکَّۃَ ثَلاَثِیْنَ وَسِتَّمِأَۃٍ مَحْمُوْدُ السِّیْرَۃِ وَالسَّرِیْرَۃِ ۔(نَثْرُ الدُّرَرِ عَلٰی مَوْلِدِ اِبْنِ حَجَرٍ صَفْحَہ ۳۳۸)

অর্থাৎ ‘‘ইবনে কাসীর তাঁর ইতিহাস গ্রন্থে (আল-বেদায়া ওয়ান নেহায়া) উল্লেখ করেছেন- বাদশাহ্ মুযাফ্ফর উদ্দীন প্রতি রবিউল আউয়াল মাসে মীলাদুন্নবী পালন করতেন এবং এ মাসে তিনি বর্ণাঢ্য মাহফিলের আয়োজন করতেন। তিনি ছিলেন সুঠামদেহী, বীরপুরুষ, অতি বুদ্ধিমান এবং ন্যায়পরায়ণ। তাঁর রাজত্ব কাল ছিল দীর্ঘ। ৬৩০হিজরীতে যখন তিনি আক্কা নামক শহরে ইংরেজদের  অবরোধ করে রেখেছিলেন, তখন তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ছিলেন প্রশংসনীয় চরিত্র ও গুণের অধিকারী। [নাস্রুদ্ দুরার ‘আলা মাওলেদে ইবনে হাজর]

তাঁদের বিরুদ্ধে ওহাবীদের অপপ্রচার ও তার খণ্ডন

বাদশাহ্ মুযাফ্ফর উদ্দীন ও ইবনে দাহ্ইয়া- এ দু’জনের পরিচয় নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণনা করার প্রয়োজন হয়েছে এ জন্যে যে, মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম বিরোধীরা বাদশাহকে বলেছেন দুনিয়াদার ও ভোগ-বিলাসী এবং ইবনে দাহ্ইয়াকে বলেছেন দরবারী ফরমায়েশী আমলা। তাদের এ অপপ্রচারে বিশ্বাস করে সরলপ্রাণ মুসলমানগণ প্রতারিত হচ্ছে এবং মীলাদের উৎসমূলে ঘৃণার উদ্রেক করছে। ওহাবীদের মিথ্যা চক্রান্ত থেকে আল্লাহ্ আমাদের হেফাযত করুন! আ-মী-ন।

মীলাদুন্নবীর বৈধতার পক্ষে ফাত্ওয়া

ইবনে দাহ্ইয়ার পরে মিলাদুন্নবীর উপর অজস্র নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ রচিত হয়েছে। তন্মধ্যে আমরা নিচে কয়েকখানা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ও গ্রন্থকারের বক্তব্য সংক্ষেপে পাঠক সমাজের সামনে উপস্থাপন করার প্রয়াস পাবো। ফলে, আরো স্পষ্ট হবে মীলাদুন্নবী মাহফিলের বৈধতা এবং উন্মোচিত যাবে বিরোধীদের মুখোশ।

১. অতি প্রাচীন কিতাব ‘মিরআতুয্ যামান’-এর গ্রন্থকার সিবতু ইবনিল জাওযী-এর মন্তব্য।

وَقَالَ سِبْطُ اِبْنِ الْجَوْزِیِّ فِی مِرْأٰۃِ الزَّمَانِ حَکٰی لِیْ بَعْضُ مَنْ حَضَرَ سِمَاطَ الْمُظَفَّرِ فِیْ بَعْضِ الْمَوَالِیْدِ اَنَّہٗ عَدَّ فِیْہِ خَمْسَۃَ الٰاَفِ رَأْسِ غَنَمٍ شَوِیٍّ وَعَشَرَۃَ الٰاٰفِ دَجَاجَۃٍ وَمِأَۃَ اَلْفِ زَبَدِیَّۃٍ وَثَلاَثِیْنَ اَلْفَ صُحْنٍ حَلَوِیِّ وَکَانَ یَحْضُرُ عِنْدَہٗ فِی الْمَوْلِدِ اَعْیَانُ الْعُلَمَاءِ وَالصُّوْفِیَۃِ فَیُخْلَعُ عَلَیْہِمْ وَیُطْلَقُ لَہُمْ  (مِرْاٰۃُ الزَّمَانِ لِسِبْطِ اِبْنِ الْجَوْزِیِّ)

অর্থাৎ সিবতু ইবনিল জাওযী ‘মিরআতুয্ যামান’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, ‘বাদশাহ্ মুযাফ্ফর উদ্দীন কর্তৃক আয়োজিত কোন এক মীলাদ মাহফিলে যোগদানকারী জনৈক ব্যক্তি আমি ইবনুল জাওযীর কাছে এ বর্ণনা দিয়েছেন যে, তিনি উক্ত মাহফিলে পরিবেশনের উদ্দেশ্যে প্রস্তুতকৃত পাঁচ হাজার ভূনা ছাগলের মাথা, দশ হাজার মুরগী, এক লক্ষ পনির এবং ত্রিশ হাজার হালুয়ার পেয়ালা গণনা করেছেন। ওই মাহফিলে গণ্যমান্য ওলামা ও সুফীগণ শরীক হতেন। বাদশাহ ওই সব আলিম ও সুফীগণের সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করতেন এবং তাদেরকে বিভিন্ন উপঢৌকন-উপহার দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করতেন।

[মিরআতুয্ যামান- সিবতু ইবনিল জাওযী]

২. আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতীর সুযোগ্য শাগরিদ আল্লামা শাইখ মুহাম্মদ শামী ও আল্লামা আব্দুল বাক্বী কর্তৃক শরহে মাওয়াহিবের মন্তব্য

وَکَانَ یَصْرِفُ عَلَی الْمَوْلِدِ فِیْ کُلِّ سَنَۃٍ ثَلاَ ثَمِاءَۃِ اَلْفِ دِیْنَارٍ

অর্থাৎ বাদশাহ্ মুযাফ্ফর উদ্দীন প্রতি বছর মীলাদুন্নবী উপলক্ষে ত্রিশ হাজার স্বর্ণ মুদ্রা ব্যয় করতেন।

৩. আল্লামা শামস ইবনে জযরী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হির মন্তব্য

وَاَکْثَرُ النَّاسِ عِنَایَۃً بِذٰلِکَ اَہْلُ مِصْرَ وَالشَّامِ وَاَنَّہٗ شَاہَدَ الظَّاہِرَ بَرْقُوْقَ سُلْطَانَ مِصْرَ سَنَۃَ ۷۸۵ وَاُمَرَأٰءَ ہٗ بِقِلْعَۃِ مِصْرَ فِیْ لَیْلَۃِ الْمَوْلِدِ الْمَذْکُوْرَۃِ مِنْ کَثْرَۃِ الطَّعَامِ وَقِرَأَۃِ الْقُرْاٰنِ وَالْاِحْسَانِ لِلْفُقَرَاءِ وَالْقُرَّاءِ وَالْمَدَّاحِ مَا بَہَّرَہٗ وَاَنَّہٗ صَرَفَ عَلٰی ذٰلِکَ نَحْوَ عَشَرَۃِ اٰلاَفِ مِثْقَالٍ مِّنَ الذَّہَبِ . قَالَ غَیْرُہٗ (شَمْس) وَزَادَ ذٰلِکَ فِیْ زَمَنِ السُّلْطَانِ الظَّاہِرِ اَبِیْ سَعِیْدٍ جَقْمَقَ عَلٰی مَا ذُکِرَ بِکَثِیْرٍ وَکَانَ لِمُلُوْکِ الْاَنْدَلُسِ وَالْہِنْدِ مَا یُقَارِبُ ذٰلِکَ اَوْ یَزِیْدُ عَلَیْہِ
(اَلنِّعْمَۃُ الْکُبْرٰی)

অর্থাৎ আল্লামা শামস ইবনে জাযারী বলেন, ‘মীলাদুন্নবী মাহফিলে মিশর এবং সিরিয়াবাসীগণ অন্যান্য লোকদের তুলনায় অধিক দান খয়রাত করে থাকেন। তিনি (শামস) মিশরের সুলতান জাহের বারক্বূক্ব এবং তাঁর আমির-উমারাগণকে মিশরের দূর্গে মিলাদুন্নবীর রাতে প্রচুর খাদ্য বিতরণ, তিলাওয়াতে ক্বোরআন, ফক্বীর-মিসকীন, ক্বারী ও না’ত পরিবেশনকারীদের প্রতি প্রচূর দান-খয়রাত করতে প্রত্যক্ষ করেছেন। এক্ষেত্রে বাদশাহ্ দশ হাজার মিসক্বাল স্বর্ণ ব্যয় করতেন। অন্যান্য আলিমগণ বলেছেন, সুলতান জাহের আবূ সাঈদ জক্বমক্ব মীলাদুন্নবীতে উপরোক্ত বাদশাহর চেয়েও বেশী খরচ করতেন। স্পেন এবং হিন্দুস্তানের বাদশাহ্গণও এর কাছাকাছি কিংবা এর চেয়েও বেশী খরচ করতেন।’   [সূত্র. আন্ নি’মাতুল কোবরা]

৪. ইমাম আবু শামা কর্তৃক বাদশাহ্ মুযাফ্ফর উদ্দীনের মিলাদুন্নবী আয়োজনের প্রশংসা 

وَقَدْ اَکْثَرَ الْاِمَامُ اَبُوْ شَامَۃَ شَیْخُ الْاِمَامِ النَّوَوِیِّ الثَّنَآءَ عَلَی الْمَلِکِ الْمُظَفَّرِ بِمَا کَانَ یَفْعَلُہٗ مِنَ الْخَیْرَاتِ لَیْلَۃَ الْمَوْلِدِ الشَّرِیْفِ وَثَنَاءُ ہٰذَا الْاِمَامِ الْجَلِیْلِ عَلٰی ہٰذَا الْفِعْلِ الْجَمِیْلِ فِیْ ہٰذِہِ اللَّیْلَۃِ اَدَلُّ دَلِیْلٍ عَلٰی اَنَّ عَمََلَ الْمَوْلِدِ بِدْعَۃٌ حَسَنَۃٌ (اَلنِّعْمَۃُ الْکُبْرٰی)

অর্থাৎ আল্লামা ইবনে হাজর হায়তামী তাঁর ‘আন-নি’মাতুল কোবরা’ গ্রন্থে লিখেছেন, ইমাম আবু শামা, ইমাম নাওয়াভী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হির ওস্তাদ, মীলাদুন্নবীর রাতে বাদশাহ মুযাফ্ফর উদ্দীন কর্তৃক বিভিন্ন উত্তম কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য তাঁর প্রচুর প্রশংসা করেছেন। (তাঁর গ্রন্থের নাম ‘আল বাওয়াইস ‘আলা ইনকারিল বিদ‘ই ওয়াল হাওয়াদিস’) আর এ ইমামের মত লোকের প্রশংসাই এ মর্মে সবচেয়ে বড় দলীল যে, মীলাদুন্নবীর অনুষ্ঠান উত্তম বিদ্‘আত এর পর্যায়ভুক্ত, যা মুস্তাহাব। [আন্ নি’মাতুল কুব্রা]

৫. তাফসীরে রুহুল বয়ানঃ ৯ম খণ্ড ৫৭ পৃষ্ঠায় উল্লিখিত ফাত্ওয়া

قَالَ اِبْنُ الْجَوْزِیِّ مِنْ خَوَاصِّہٖ اَنَّہٗ اَمَانٌ فِیْ ذٰلِکَ الْعَامِ وَبُشْرٰی عَاجِلَۃٌ بِنَیْلِ الْبُغْیَۃِ وَالْمَرَامِ

অর্থাৎইবনে জাওযী বলেছেন, মীলাদুন্নবী অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য এ যে, ওই বছরের জন্য অনুষ্ঠানস্থলটি বিপদ-আপদ থেকে নিরপদে থাকবে এবং অনুষ্ঠানকারীর মাক্বসূদ শীঘ্র পূরণ হওয়ার ব্যাপারে শুভ সংবাদ বহন করে আনবে।

৬. ইমাম নূরুদ্দীন হালবী ও ইমাম বুরহানুদ্দীন ইবরাহীম হালবী হানাফীর ফাত্ওয়া

قَالَ عُمْدَۃُ الْمُحَقِّقِیْنَ نُوْرُ الدِّیْنِ عَلِیُّ اَلْحَلَبِیُّ فِیْ کِتَابِہٖ اِنْسَانِ الْعُیُوْنِ فِیْ سِیْرَۃِ الْاَمِیْنِ الْمَأْمُوْنِ ﷺ وَالْبُرْہَانُ اِبْرَاہِیْمُ الْحَلَبِیُّ فِیْ رُوْحِ السِّیَرِ بَعْدَ ذِکْرِ حَاصِلِ اَکْثَرِ مَا قَدَّمْنَاہُ وَاِسْتِحْسَانِ الْقِیَامِ عِنْدَ سَمَاعِ ذِکْرِ وَضْعِہٖ ﷺ مَا نَصَّہٗ۔ (جَوَاہِرُ الْبِحَارِ الْجِزْءُ الثَّالِثْ لِیُوْسُفَ النَّبْہَانِیْ)

অর্থাৎ মুহাক্বক্বিক ওলামার শিরোমণি নূরুদ্দীন আলী হালবী তাঁর গ্রন্থ ‘ইনসানুল উয়ূন ফি সীরাতিল আমীনিল মা’মুন’-এর মধ্যে এবং ইমাম বুরহান উদ্দীন ইবরাহীম হলবী ‘রুহুস্ সিয়ার’ গ্রন্থে উপরে বর্ণিত মীলাদুন্নবীর ফযীলত অধিকাংশ বর্ণনা করার পর আরও অতিরিক্ত লিখেছেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র বেলাদত শরীফের বর্ণনা শ্রবণ করে দাঁড়িয়ে ক্বিয়াম করা মুস্তাহ্সান বা উত্তম। তাঁরা এর সপক্ষে দলীলও পেশ করেছেন।              [সূত্র. জওয়াহিরুল বিহারঃ ৩য় খণ্ড ৩৩৯ পৃষ্ঠা]

৭. আল্লামা ইবনে হাজর আসক্বালানী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হির ফাত্ওয়া

وَقَالَ الْحَافِظُ اِبْنُ حَجْرٍ فِیْ جَوَابِ سُؤَالٍ وَظَہَرَ لِیْ تَخْرِیْجُہٗ عَلٰی اَصْلٍ ثَابِتٍ وَہُوَ مَافِی الصَّحِیْحَیْنِ اَنَّ النَّبِیَّ ﷺ قَدِمَ الْمَدِیْنَۃَ فَوَجَدَ الْیَہُوْدَ یَصُوْمُوْنَ یَوْمَ عَاشُوْرَآءَ فَسَأَلَہُمْ فَقَالُوْا ہُوَ یَوْمٌ اَغْرَقَ اللّٰہُ فِیْہِ فِرْعَوْنَ وَنَجٰی مُوْسٰی وَنَحْنُ نَصُوْمُہٗ شُکْرًا . قَالَ فَیُسْتَفَادُ مِنْہُ فِعْلُ الشُّکْرِ عَلٰی مَا مَنَّ بِہٖ تَعَالٰی فِیْ یَوْمٍ مُّعَیَّنٍ . وَاَیُّ نِعْمَۃٍ اَعْظَمُ مِنْ بُرُوْزِ نَبِیِّ الرَّحْمَۃِ وَالشُّکْرُ یَحْصُلُ بِاَنْوَاعِ الْعِبَادَاتِ کَالسُّجُوْدِ وَالصِّیَامِ وَالصَّدَقَۃِ وَالتِّلاَوَۃِ .
(جَوَاہِرُ الْبِحَارِ : صَفْحہ ۳۳۹ ۳۴۰)

অর্থাৎ হাফেযুল হাদীস আল্লামা ইবনে হাজর আসক্বালানী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি জনৈক প্রশ্নকারীর জবাবে বলেন, ‘‘আমার মতে, মীলাদুন্নবী পালনের প্রথা সুন্নাতের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। ওটা হলো আশুরার রোযা। বোখারী ও মুসলিম শরীফের হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হিজরত করে মদীনা মুনাওয়ারায় এসে দেখতে পেলেন ইহুদীরা আশুরার দিনে রোযা পালন করছে। তিনি এর কারণ তাদের নিকট জানতে চাইলেন। তারা উত্তরে বললো, এ দিনে আল্লাহ্ তা‘আলা ফিরা‘আউনকে নদীতে ডুবিয়ে মেরেছেন এবং হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে মুক্তি দিয়েছেন। আমরা (ইহুদীরা) উক্ত নি’মাতের শুকরিয়া স্বরূপ এ দিনে রোযা পালন করে থাকি। আল্লামা ইবনে হাজর এ হাদীস বর্ণনা করে বলেন, এটা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, আল্লাহ্ তা‘আলা কর্তৃক কোন নি’মাত প্রদানের বিনিময়ে ওই নির্ধারিত দিবসে শুকরিয়া আদায় করা উত্তম। নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর আবির্ভাবের চেয়ে বড় নি’মাত আর কি হতে পারে? এ নি’মাত প্রাপ্তির শুকরিয়া আদায় হতে পারে বিভিন্ন এবাদতের মাধ্যমে। যেমন- নফল নামায, নফল রোযা, দান-খায়রাত, তিলাওয়াত ইত্যাদি।

[জাওয়াহিরুল বিহার: পৃ. ৩৩৯-৩৪০]

৮. আল্লামা ইবরাহীম হালবী কর্তৃক ইমাম ইবনে হাজর রহমাতুল্লাহি আলায়হির ফাত্ওয়ার উদ্ধৃতি

وَنَقَلَ الْبُرْہَانُ الْحَلَبِیُّ فِیْ رُوْحِ السِّیَرِ عَنِ الْحَافِظِ الْاِمَامِ اِبْنِ حَجَرٍ قَوْلَہٗ اِنَّ قَاصِدِی الْخَیْرِ وَاِظْہَارَ الْفَرَحِ وَالسُّرُوْرِ بِمَوْلِدِ النَّبِیِّ ﷺ وَالْمَحَبَّۃِ لَہٗ یَکْفِیْہِمْ اَنْ یَّجْمَعُوْا اَہْلَ الْخَیْرِ وَالصَّلاَحِ وَالْفُقَرَآءِ وَالْمَسَاکِیْنِ فَیُطْعِمُوْہُمْ وَیَتَصَدَّقُوْا عَلَیْہِمْ مُحَبَّۃً لَّہٗ ﷺ فَاِنْ اَرَادُوْا فَوْقَ ذٰلِکَ اَمَرُوْا مَنْ یُّنْشِدُ مِنَ الْمَدَآءِحِ النَّبَوِیَّۃِ وَالْاَشْعَارِ الْمُتَعَلِّقَۃِ بِالْحَثِّ عَلَی الْاَخْلاَقِ الْکَرِیْمَۃِ مِمَّا یُحَرِّکُ الْقُلُوْبَ اِلٰی فِعْلِ الْخَیْرَاتِ وَالْکَفِّ عَنِ الْبِدَعِ وَالسَّیِّأٰتِ

অর্থাৎ আল্লামা বুরহান উদ্দীন হালবী তাঁর ‘রূহুস সিয়ার’ গ্রন্থে হাফেয ইমাম ইবনে হাজর আসক্বালানীর মন্তব্য এভাবে উদ্ধৃত করেছেনঃ নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর জন্ম উপলক্ষে উত্তম কাজ, আনন্দ প্রকাশ ও তাঁর প্রতি মহব্বৎ প্রদর্শনের ইচ্ছা পোষণকারী ব্যক্তিদের পক্ষে এ কাজ করাই যথেষ্ট যে, নেক্কার বুযুর্গ ব্যক্তিবর্গ এবং ফকীর-মিসকীনদের একত্রিত করে নবী করীমের মহব্বতে তাঁদেরকে খানা খাওয়াবে এবং হাদিয়া দেবে। আরো অধিক কিছু করতে চাইলে নবীর প্রশংসাকারী গযল পাঠক ও শায়ের ডেকে এনে এমন সব না’ত ও কবিতা পরিবেশন করাবে, যা মানুষকে উত্তম চরিত্রের দিকে উদ্বুদ্ধ করে, মনকে ভাল কাজের দিকে আকর্ষণ করে এবং বিদ্‘আত ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।                  [জাওয়াহিরুল বিহার, পৃ. ৩৪০]

মীলাদ মাহফিলে ওয়ায ও না’ত পেশ করা উত্তম।

৯. ইমাম মুজতাহিদ আল্লামা বিরযাঞ্জীর ফাত্ওয়া

وَاسْتَحْسَنَ الْقِیَامَ عِنْدَ ذِکْرِ مَوْلِدِ الشَّرِیْفِ أَءِمَّۃٌ ذُوْ رِوَایَۃٍ وَّ رَوِیَّۃٍ فَطُوْبٰی لِمَنْ کَانَ تَعْظِیْمُہٗ ﷺ غَایَۃَ مَرَامِہٖ وَمَرْمَاہُ (مَوْلُوْدِ بِرْزَنْجِیْ)

অর্থাৎ হাদীস ও ফিক্বহ্ বিশারদ ইমামগণ নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর বেলাদত শরীফ (আবির্ভাব) বর্ণনাকালে পাঠক ও শ্রোতা সকলের জন্য, দাঁড়িয়ে যাওয়া বা ক্বিয়াম করাকে মোস্তহসান বলে ফাত্ওয়া দিয়েছেন। সুতরাং যাদের মকসুদ ও উদ্দেশ্য হচ্ছে নবী করীমের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা, তাঁদের জন্য এ ক্বিয়াম হচ্ছে শুভ সংবাদ বহনকারী।’’ [মাওলূদে বিরযঞ্জি]

আল্লামা বিরযঞ্জি আল্লামা ইবনে কাসিরেরও পূর্বের মুজতাহিদ ও ইমাম ছিলেন।

[আল বেদায়া ওয়ান্ নেহায়া]

১০. ইমাম নাওয়াভীর ওস্তাদ ইমাম আবূ শামা রহমাতুল্লাহি-এর ফাত্ওয়া

ইমাম আবু শামা  اَلْبَوَاعِثُ عَلٰی اِنْکَارِ الْبِدْعِ وَالْحَوَادِثِ গ্রন্থে লিখেছেনঃ

وَمِنْ اَحْسَنِ مَاابْتُدِعَ فِیْ زَمَانِنَا مَا یُفْعَلُ کُلَّ عَامٍ فِی الْیَوْمِ الْمُوَافِقِ لِیَوْمِ مَوْلِدِ النَّبِیِّ ﷺ مِنَ الْفَرَحِ وَالصَّدَقَاتِ وَفِعْلِ الْخَیْرَاتِ وَاِظْہَارِ الْفَرَحِ وَالسُّرُوْرِ فَاِنَّ ذٰلِکَ مَعَ مَافِیْہِ مِنَ الْاِحْسَانِِ اِلٰی الْفُقَرَآءِ مُشْعِرٌ لِمَحَبَّتِہٖ ﷺ وَتَعْظِیْمِہٖ فِیْ قَلْبِ فَاعِلِ ذٰلِکَ وَشُکْرِ اللّٰہِ عَلٰی مَا مَنَّ بِہٖ مِنْ اِیْجَادِہٖ ﷺ . وَفِیْہِ اِغَاظَۃٌ لِلْکَفَرَۃِ وَالْمُنَافِقِیْنَ . (جَوَاہِرُ الْبِحَارِ صَفْحَہ ۳۳۸)

অর্থাৎ আল্লামা আবু শামা রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন, আমাদের যুগে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর জন্ম দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর ১২ রবিউল আউয়াল তারিখে দান সদক্বা, বিভিন্ন নেকীর কাজ ও আনন্দ-উল্লাসের (জুলূস ও মাহফিলের মাধ্যমে) অনুষ্ঠানাদি করার যে সুন্দর ও উত্তম রেওয়াজ প্রচলিত হয়েছে, এগুলো উক্ত অনুষ্ঠানকারীর অন্তরে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি মহব্বত ও তা’যীমেরই প্রমাণবহ এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শুভ আবির্ভাবের মাধ্যমে আল্লাহর অশেষ ইহসানের প্রতি শোকর আদায়েরই ইঙ্গিতবহ কাজ। তদুপরি, এ মীলাদুন্নবীর অনুষ্ঠান কাফির ও মুনাফিক্বদের মনে প্রচণ্ড ক্রোধ ও ক্ষোভ সৃষ্টিকারীও বটে-।

[আল বাওয়া-ইস ‘আলা ইনকারিল বিদ‘ই ওয়াল হাওয়াদিস- আল্লামা আবূ শামা]

১১. সামসুদ্দীন ইবনে জাযারীর দ্বিতীয় ফাত্ওয়া

فَاِذَا کَانَ اَبُوْ لَہَبٍ اَلَّذِیْ اُنْزِلَ الْقُرْاٰنْ بِذَمِّہٖ جُوْزِیَ فِی النَّارِ اَیْ بِشَرْبَۃِ مَاءٍ بِرَأْسِ اِصَبَعِہٖ وَبِتَخْفِیْفِ الْعَذَابِ عَنْہُ فِیْ کُلِّ لَیْلَۃِ یَوْمِ الْاِثْنَیْنِ لِاِعْتَاقِہٖ ثُوَیْبَۃَ فَرِحًا لَمَّا بَشَّرَتْہٗ بِوِلاَدِتِہٖ ﷺ فَمَا حَالُ الْمُسْلِمِ الْمُوَحِّدِ مِنْ اُمَّتِہٖ ﷺ اَلَّذِیْ یَسُرُّ بِمَوْلِدِہٖ وَیَبْذُلُ مَا تَصِلُ اِلَیْہِ قُوَّتُہٗ لَعُمْرِیْ اِنَّمَا یَکُوْنُ جَزَاؤُہٗ مِنَ اللّٰہِ الْکَرِیْمِ اَنْ یُّدْخِلَہٗ بِفَضْلِہِ الْعَمِیْمِ جَنَّاتِ النَّعِیْمَ ۔(جَوَاہِرُ الْبِحَارِ صفحہ ۳۳۸)

অর্থাৎহাফেয আবুল খায়ের শামসুদ্দীন ইবনে জাযারী বলেন, যে আবূ লাহাবের বিরুদ্ধে ক্বোরআন মজীদ নাযিল হয়েছে, এমন ব্যক্তিকেও জাহান্নামে (কবরে) থাকা অবস্থায় কিছু পুরস্কৃত করা হচ্ছে এবং প্রতি সোমবারের রাত্রিতে তার কবরের আযাব হালকা করে দেয়া হচ্ছে। এর একটি মাত্র কারণ হচ্ছে- সে আপন দাসী সুয়াইবার নিকট নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শুভ জন্মের শুভ সংবাদ শুনে খুশী হয়ে তাকে আযাদ করে দিয়েছিলো। এমতাবস্থায় নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর একজন তৌহীদপন্থী উম্মতের অবস্থা কেমন হতে পারে, যিনি নবী করীমের জন্ম উপলক্ষে খুশী হন এবং সামর্থ্য অনুযায়ী খরচ করেন? আমি (সামস) নিজের জীবনের শপথ করে বলছি- দয়ালু আল্লাহর পক্ষ হতে তার একমাত্র পুরস্কার হচ্ছে- আল্লাহ্ তাঁর অনুগ্রহের মাধ্যমে এ বান্দাকে জান্নাতুন না‘ঈমে প্রবেশ করাবেন।

   [জাওয়াহিরুল বিহার, আল্লামা ইউসুফ নাবহানী, পৃ. ৩৩৮, সূত্র. নাসরুদ দুরার]