ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে হায়াতুন্নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র অনুপম মর্যাদা

ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে হায়াতুন্নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র অনুপম মর্যাদা

ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে হায়াতুন্নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র অনুপম মর্যাদা

মুহাম্মদ এরফান উল্লাহ

মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে উত্তরাধিকারীগণ বণ্টন করে থাকে; কিন্তু মহানবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাধারণ মানুষের মত মৃত নন। তাঁর ওফাত ও অসাধারণ। এ কারণেই তাঁর জন্য অতুলনীয় বিধান উত্তরাধিকার আইনে রয়েছে। মূলত ইসলামের বিধানের সাথে ইসলামি উত্তরাধিকার আইনের এই ব্যতিক্রমী বিধানের আলোকেও মহানবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমরা হায়াতুন্নবি বলতে পারি। কারণ তিনি ইন্তিক্বাল করেও জীবিত। তাঁর ইন্তেকালের পর তাঁর রেখে যাওয়া সম্পত্তি ইসলামি উত্তরাধিকার আইনের (ইলমুল ফারাইদ্ব) সাধারণ নিয়ম মতে বণ্টন করা হয় নাই। তাঁর সাথে কিংবা তাঁর ইন্তেকালের সাথে অন্য কোন মানুষ কিংবা অন্য কোন মানুষের ইন্তেকালের তুলনা হয় না। আলোচ্য নিবন্ধে এই বিয়টিকে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। এই নিবন্ধে যেসব বিষয়ের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে তা হলো- ইসলাম ও ইসলামি আইন, ইসলামি উত্তরাধিকার আইন, ইসলামে হায়াতুন্নবির ধারণা, ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে হায়াতুন্নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর অনুপম মর্যাদা ইত্যাদি।

(১)
ইসলাম ও ইসলামি আইন
আল্লাহর মনোনীত একমাত্র দীন হলো ইসলাম । ইসলামই শ্রেষ্ঠ ধর্ম । এই ইসলামের মূল স্তম্ভ ৫ (পাঁচ) টি: কলেমা/ঈমান, সালাত (নামায), সাওম (রোজা), হজ্জ ও যাকাত । ইসলাম হচ্ছে- কুরআন, যা সৃষ্টিকর্তা ‘আল্লাহর’ পক্ষ হতে জিব্রাইল আলাইহিস সালাম-এর মাধ্যমে ইসলামের নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের (৫৭০-৬৩২ খ্রি.) নিকট দীর্ঘ তেইশ বছরে (৬১০-৬৩২ খ্রি.) বিভিন্ন সময়ে প্রেরণ করা হয়েছে (এমন এক কিতাব/গ্রন্থ যা হুবহু আল্লাহর বাণী) এবং শেষ নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রদত্ত শিক্ষা- পদ্ধতি ও জীবনাদর্শ (যা সুন্নাহ বা হাদিস নামে লিপিবদ্ধ রয়েছে) দ্বারা পরিচালিত। ইসলাম ধর্মের অনুসারীদেরকে মুসলিম বা মুসলমান বলা হয় এবং তাঁরা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেষ নবি (খাতামুন নবিয়্যিন) বলে বিশ্বাস করেন। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত সর্বশেষ ও চূড়ান্ত রাসূল (পয়গম্বর), তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ নবি, যিনি তাঁর পূর্বের নবিগণের সত্যায়নকারী। তাঁকে মুসলমানরা নিজের প্রাণের চেয়েও বেশি ভালবাসেন। তিনি ইরশাদ করেন, ”তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা, তার সন্তান ও সব মানুষের চেয়ে বেশী প্রিয় হই (বুখারী শরীফ, হাদিস নং ১৩, ১৪) । মূলত ইসলাম বলতে যাঁরা এক আল্লাহ, তাঁর প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং নবির সাহাবায়ে কেরামদের অনুসারী, যাঁরা ইসলামি জাহানের প্রথম চার খলিফা যথাক্রমে (১) হযরত আবু বকর সিদ্দিক ইবন ওসমান ওরফে আবু কোহাফা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু (৫৭৩ খ্রি.-৬৩৪ খ্রি./১৩হি. শাসনকাল ৬৩২-৬৩৪খ্রি.), (২) হযরত ওমর ফারুক ইবন খাত্তাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু (৫৮৩ খ্রি.-৬৪৪ খ্রি./২৩হি. শাসনকাল ৬৩৪- ৬৪৪খ্রি.), (৩) হযরত ওসমান গনি যুন্ নুরাইন ইবন আফ্ফান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু (৫৭৩/৫৭৫ খ্রি.-৬৫৬ খ্রি./৩৫হি.শাসনকাল ৬৪৪- ৬৫৬খ্রি./২৪-৩৫ হি.) এবং (৪) হযরত আলি ইবন আবি তালিব রাদ্বিআল্লাহু আনহু (৬০০খ্রি.-৬৬১ খ্রি. শাসনকাল ৬৫৬- ৬৬১খ্রি./৪০ হি.) কে প্রকৃত খলিফা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়, যাঁদেরকে আমরা সুন্নি বলে থাকি। সুন্নি মুসলিমরা ইসলাম অনুসারীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সম্প্রদায়। সুন্নিরা আরো পরিচিত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত (হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঐতিহ্যের ও সম্প্রদায়ের লোক) বা সংক্ষেপে ‘আহলুস্ সুন্নাহ’। সুন্নি শব্দের উৎপত্তি সুন্নাহ শব্দ থেকে যাদ্বারা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, কর্ম ও সম্মতিকে বুঝায়, যেখানে তাঁর সাহাবিগণের বাণী, কর্ম ও সম্মতিও অর্ন্তভুক্ত । সুন্নিরা ইসলামের সেই অংশকে প্রতিনিধিত্ব করে, যাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নির্বাচিত হওয়া খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে মেনে নিয়েছিলেন এবং সুন্নি চতুর্থ খলিফা হযরত আলি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর (৬০০খ্রি.-৬৬১ খ্রি. শাসনকাল ৬৫৬- ৬৬১খ্রি.) আমলে প্রখ্যাত সাহাবী ও তৎকালীন সিরিয়ার শাসক উমাইয়া নেতা হযরত আমীরে মুয়াবিয়া ইবন আবু সুফিয়ান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর (৬০৬-৬৮০ খ্রি. শাসনকাল ৬৬১-৬৮০ খ্রি.) সঙ্গে সিফ্ফিনের যুদ্ধ (৬৫৭ খ্রি.) তৎপরবর্তীতে জানুয়ারি, ৬৫৯ খ্রিস্টাব্দে সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যবর্তী স্থান ’দুমাতুল জন্দল’ নামক স্থানে সালিসি বৈঠকের পর উভয় সাহাবির প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ করেন। অন্যদিকে যাঁরা এই উভয় সাহাবির প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করে, তাদেরকে হযরত আলি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ভাষায় ’খারেজি’ বলা হয়। উমাইয়া বংশের বাদশাহ্ ইয়াজিদ ইবন মুয়াবিয়া (৬৪৭-৬৮৩ খ্রি. শাসনকাল ৬৮০-৬৮৩ খ্রি.)’র সঙ্গে হাশেমী বংশের সূর্য ইমাম হোসাইন ইবন আলি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর (৬২৬-৬৮০ খ্রি./৪-৬১ হি.) পরিবারের মধ্যে সত্য- মিথ্যার দ্বন্দ্বে কারবালার যুদ্ধের (৬৮০ খ্রি./৬১ হি.) পর যাঁরা সুন্নি চার খলিফার মধ্যে কেবল হযরত আলিকে মান্য করে এবং খিলাফত আহলে বায়তের মধ্যে সীমাবদ্ধ বলে মত পোষণ করে, তারা শিয়া । আর সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম যাঁরা ইমাম হাসান ইবন আলি রাদ্বিআল্লাহু আনহুর (৬২৫-৬৭০ খ্রি.) খেলাফতসহ হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে মুসলিম শাসক বলে স্বীকৃতি দেন, তাঁরাই সুন্নি। পরবর্তীতে সাহাবায়ে কেরামের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত শরয়ী মাযহাব ও সুফি তরিকতের অনুসারীদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা ইসলামের মূল ধারাই সুন্নি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থায় (খিলাফত) নির্বাচন বা ‘শূরা’ সুন্নি ইসলামের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। অধিকাংশ সুন্নি আইনজ্ঞ নিজেদের পরিচয় দিতে চান সেই সুন্নি মুসলিম হিসেবে, যাদের মূল গ্রথিত আছে সুন্নি আইনের চারটি ঘরানার (মাযহাবে হানাফি, মালিকি, শাফেয়ি ও হাম্বলি) যে কোনো একটিতে। মুসলিম আইন কুরআন, সুন্নাহ বা হাদিস ভিত্তিক। কুরআন ও সুন্নাহ ছাড়াও ইজমা (একই যুগে মুত্তাকী মুজতাহিদ/সৎ গবেষকগণের ঐকমত্য) ও কিয়াস (কুরআন, সুন্নাহ্ ও ইজমার হুকুমের সাথে সাদৃশ্যের ভিত্তিতে অনুমান বা সমন্বয়) এই আইনের প্রধান উৎস হিসেবে স্বীকৃত। মুসলিম আইনকে ব্যক্তিগত আইন (Personal law) বলা হয়, যা মুসলমানদের জন্য প্রযোজ্য। তবে আধুনিক মুসলিম আইন শরীয়াহ ভিত্তিক আইন (Traditional Muslim Law) এবং বিধিবদ্ধ আইন (Statutory Muslim Law) এর সমন্বয়ে গঠিত। ইসলামি শরীয়াতের বিধান মোতাবেক মানুষের যাবতীয় কাজ দুভাগে বিভক্ত। যথা: (১) শরীয়াতসম্মত: ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত, নফল, মুস্তাহাব এবং মুবাহ। আর (২) শরীয়াত পরিপন্থী: হারাম ও মাকরুহ ।

(২)
ইসলামি উত্তরাধিকার আইন
ইসলামি আইন বা মুসলিম ব্যক্তিগত আইনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইসলামি উত্তরাধিকার আইন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও উত্তরাধিকার আইন শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। হযরত আহমদ ইবনে আমর ইবনে সারহ (র.) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন: প্রকৃত জ্ঞান তিন প্রকার, এগুলো ছাড়া আর সবই বাহুল্য। যথা: (১) আল কুরআনের মুহকাম আয়াত (যার হুকুম মানসুখ বা রহিত হয় নি), (২) সহিহ বা সঠিক হাদিস এবং (৩) ইনসাফের সাথে পরিত্যক্ত সম্পত্তি বণ্টনের জ্ঞান (আবু দাঊদ শরীফ, হাদিস নং ২৮৭৫) । মহাগ্রন্থ আল কুরআনে বলা হয়েছে পিতা-মাতা এবং আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষের অংশ আছে এবং পিতা-মাতা এবং আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীরও অংশ আছে, সেটা অল্পই হোক অথবা বেশিই হোক, এক নির্ধারিত অংশ । হযরত মূসা ইবন ইসমাইল (র.) ইবন আব্বাস (রা.) সূত্রে নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মীরাস তার হকদারকে পৌঁছিয়ে দাও, এর পর যা অবশিষ্ট থাকে, তা নিকটতম পুরুষের জন্য (বুখারী শরীফ, হাদিস নং ৬২৭৬) । অনুরূপ হাদিস বর্ণিত হয়েছে মুসলিম শরীফে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সম্পদ অংশীদারদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী বণ্টন কর। তারপর যে অংশ অবশিষ্ট থাকে তা নিকটতম পুরুষের প্রাপ্য (মুসলিম শরীফ, হাদিস নং ৩৯৯৬, ৩৯৯৮) । মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে যারা কোনভাবেই সম্পত্তি হতে বঞ্চিত হয় না তাদের সংখ্যা ০৬ (ছয়) জন, যাদের মধ্যে নারী রয়েছে ০৩ (তিন) জন: মাতা, কন্যা ও স্ত্রী। বিপরীতে ০৩ (তিন) জন পুরুষ হলেন: পিতা, পুত্র ও স্বামী। সুন্নি ও শিয়া আইনে কুরআনি অংশীদার হিসেবে ০৯ (নয়) জনকে নিয়ে কোন প্রকার মতানৈক্য নেই। তারা হলেন: পিতা, মাতা, স্বামী, স্ত্রী, কন্যা, সহোদর বোন, বৈপিত্রেয় ভাই, বৈপিত্রেয় বোন ও বৈমাত্রেয় বোন। সুন্নি আইনে এই ০৯ (নয়) জনসহ আরও ০৩ (তিন) জনকে কুরআনি অংশীদার হিসেবে স্বীকার করা হয়। এই ০৩ (তিন) জন হলেন: পিতার পিতা, পিতার মাতা ও পুত্রের কন্যা। সুন্নি মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে যারা কুরআনি অংশীদার বা যাবিল ফুরুজ হিসেবে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে অংশীদার হতে পারেন তাদের সংখ্যা ১২ (বার) জন, যাদের মধ্যে নারী রয়েছে ০৮ (আট) জন: মাতা, কন্যা, স্ত্রী, সহোদর বোন, বৈপিত্রেয় বোন, বৈমাত্রেয় বোন, পুত্রের কন্যা ও পিতার মাতা। বাকি ০৪ (চার) জন পুরুষ হলেন: পিতা, পুত্র, স্বামী ও পিতার পিতা। পুত্র ও কন্যা একত্রে সম্পত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে একপুত্রের অংশ দুই কন্যার সমপরিমাণ বা এক কন্যার অংশের দ্বিগুণ হিসেবে একপুত্র পেয়ে থাকে। অর্থাৎ পুত্রের সম্পত্তি পাওয়ার ভিত্তি হলো কন্যার অংশ। অন্যক্ষেত্রে বা পুত্রের অনুপস্থিতিতে এক কন্যা অর্ধেক (অর্ধাংশ) কিন্তু একাধিক কন্যা দুই তৃতীয়াংশ সম্পত্তি পেয়ে থাকে। সহোদর বোনের অংশ, কন্যার অংশ ইত্যাদি নির্দিষ্ট করা থাকলেও ভাই ও পুত্রের অংশ নির্দিষ্ট করা নাই। মৃত ব্যক্তির সন্তানাদির উপস্থিতিতে পিতা-মাতার অংশ প্রত্যেকের জন্য এক ষষ্ঠাংশ এবং বৈপিত্রেয় ভাই-বোনের প্রত্যেকের অংশ এক ষষ্ঠাংশ। আর যদি বৈপিত্রেয় ভাই-বোনের সংখ্যা একের অধিক হয়, তাহলে তারা সকলে এক তৃতীয়াংশ সমানভাবে ভাগ করে নিবে। এই পরিস্থিতিতে মাতা-পিতা কিংবা বৈপিত্রেয় ভাই-বোনের সকলের অংশ সমান বা উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে নারী ও পুরুষ সমান অংশই পেয়ে থাকে। আর মৃত ব্যক্তির সন্তানাদি না থাকলে মাতা-পিতা উত্তরাধিকারী হলে মৃত ব্যক্তির মাতার জন্য এক তৃতীয়াংশ। মৃত ব্যক্তির সন্তানাদির অনুপস্থিতিতে স্ত্রীর অংশ এক চতুর্থাংশ আর সন্তানাদির উপস্থিতিতে স্ত্রীর অংশ সম্পত্তির এক অষ্টমাংশ । মাতা-পিতাহীন ও নিঃসন্তান অবস্থায় কোন ব্যক্তি মারা গেলে, কেবল এক বোন থাকলে অর্ধাংশ পাবে, কেবল এক ভাই থাকলে ভাই সম্পূর্ণ অংশ পাবে। এক্ষেত্রে ভাই-বোন উভয়ের উপস্থিতিতে এক পুরুষের অংশ দুই নারীর অংশের সমান হবে । সুন্নি আইনে কুরআনি অংশীদার ছাড়াও অবশিষ্টাংশভোগী (আসাবা) ও দূরবর্তী আত্মীয়গণ (যাবিল আরহাম) উত্তরাধিকার নিয়ম মতে বঞ্চিত না হলে সম্পত্তি পায়। কারণ যারা আত্মীয়, আল্লাহর বিধান মতে তারা পরস্পর বেশি হকদার । শিয়া আইনে অবশিষ্টাংশভোগী ও দূরবর্তী আত্মীয়গণকে আলাদাভাবে স্বীকার করা হয় না, বরং এই দুই শ্রেণির সমন্বয়ে অবশিষ্টাংশভোগী স্বীকার করা হয়, যা যাবিল ক্বোরবা হিসেবে রূপ লাভ করেছে। শিয়া আইনে মাতা-পিতা ও পুত্র-কন্যা বা নি¤œগামী সন্তান-সন্ততি হলো প্রথম শ্রেণির উত্তরাধিকারী, পিতার মাতা-পিতার পিতা, মাতার পিতা, মাতার মাতা উর্ধ্বগামী ও ভাই-বোন বা ভাই-বোনের নি¤œগামী সন্তান-সন্ততি হলো দ্বিতীয় শ্রেণির এবং চাচা-ফুফু বা তাদের নি¤œগামী সন্তানাদি ও মামা-খালা বা তাদের নি¤œগামী সন্তানাদি তৃতীয় শ্রেণির উত্তরাধিকারী । ১ম শ্রেণি কর্তৃক দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিদ্বয় বঞ্চিত হয়। প্রথম শ্রেণির অনুপস্থিতিতে ২য় শ্রেণি কর্তৃক তৃতীয় শ্রেণি বঞ্চিত হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির অনুপস্থিতিতে ৩য় শ্রেণি উত্তরাধিকারী হিসাবে সম্পত্তি পেয়ে থাকে। মানুষ ইন্তেকাল করলেই তাঁর সম্পত্তি স্বয়ংক্রিয় ভাবেই তাঁর উত্তরাধিকারীগণের উপর বর্তায় বা উত্তরাধিকারীগণ মালিক হয়ে যায়। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের সাথে সাথে তাঁর সম্মানিত উত্তরাধিকারীগণ তাঁর সম্পত্তির মালিক হন নি।
(৩)
ইসলামে হায়াতুন্নবির ধারণা
ইসলামে হায়াতুন্নবি বলতে বুঝায় আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম (নবি-রাসূলগণ) ইন্তেকালের পরও জীবিত, তাঁরা মহান আল্লাহর পক্ষ হতে রিযিকপ্রাপ্ত হন এবং তাঁদের এই জীবিত থাকা মহান আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত দ্বিতীয় পর্যায়ের বান্দা সত্যনিষ্ঠ (সিদ্দিকিন) ও তৃতীয় পর্যায়ের বান্দা শহিদগণের জীবিত থাকার মত নয়; বরং এই জীবিত থাকা অন্য কোন স্তরের অনুগ্রহ প্রাপ্ত বান্দার ন্যায়ও নয়। তবে বর্তমানে উম্মতে মোহাম্মদি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক হায়াতুন্নবি বা জিন্দা নবি (জীবিত নবি) বলতে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বোঝানো হয়ে থাকে। জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে । মহান আল্লাহ বলেন, ’আল্লাহই তোমাদের জীবন দান করেন, তোমাদের মৃত্যু ঘটান। অতপর তিনিই তোমাদেরকে কিয়ামত দিবসে একত্র করবেন, যাতে কোন সন্দেহ নাই ’। মানুষের সৃষ্টি, জন্ম, মৃত্যু ও মৃত্যুর পর জীবিত হওয়া বা কবরে জীবিত থাকা এসব বিষয় একান্তই মহান আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন বা এখতিয়ারের মধ্যে। আল্লাহই সৃষ্টিকে অস্তিত্বে আনয়ন করেন ও পরে তার পুনরাবর্তন ঘটান । তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান । তিনিই জীবিত করেন ও মৃত্যু ঘটান । তিনিই রাত্রিকালে মৃত্যু (ঘুম, যা এক প্রকার মৃত্যু) ঘটান । তিনিই প্রাণ হরণ করেন জীবসমূহের মৃত্যুর সময় এবং যাদের মৃত্যু আসে নাই তাদের প্রাণ নিদ্রার সময়। অতপর তিনি যার জন্য মৃত্যু সিদ্ধান্ত করেন তার প্রাণ তিনি রেখে দেন এবং অপরগুলি ফিরিয়ে দেন, এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য । মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার চক্ষু ঘুমায় তবে আমার অন্তর ঘুমায় না [বুখারী শরীফ, হাদিস নং ৩৩১৬, ৩৩১৭] তাই নবিগণ ইন্তেকাল করলেও তাঁদের ইন্তেকাল সাধারণ মানুষের ইন্তেকালের মত নয়। কারণ আল্লাহর নিকট মানুষের বিভিন্ন স্তর রয়েছে। তারা যা কিছু করেন তা আল্লাহই দেখেন । মহান আল্লাহ বলেন, ”আর কেহ আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য করলে সে নবি (নাবিয়িন), সত্যনিষ্ঠ (সিদ্দিকিন), শহিদ (শোহাদা) ও সৎকর্মপরায়ণ (ছোয়ালেহিন)- যাঁদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন, তাঁদের সঙ্গী হবে এবং তাঁরা কত উত্তম সঙ্গী ! নবিগণ (নাবিয়িন) হলেন প্রথম স্তরের অনুগ্রহপ্রাপ্ত বান্দা, সত্যনিষ্ঠ (সিদ্দিকিন) দ্বিতীয় স্তরের, শহিদ (শোহাদা) তৃতীয় স্তরের ও সৎকর্মপরায়ণ (ছোয়ালেহিন) চতুর্থ স্তরের বান্দা। এই চারটি স্তরের সবাই মহান আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত বান্দা। মহান আল্লাহ বলেন, ”আল্লাহর পথে যাঁরা নিহত হয় তাঁদেরকে তোমরা মৃত বলো না, বরং তাঁরা জীবিত, কিন্তু তোমরা উপলব্ধি করতে পার না। তাঁদেরকে মৃত মনে করা যাবে না, তাঁরা আল্লাহর পক্ষ হতে জীবিকাপ্রাপ্ত ।” অর্থাৎ মহান আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত তৃতীয় স্তরের বান্দা শহিদগণ (শোহাদা) আল্লাহর পথে নিহত হওয়া বা মৃত্যুর কারণে তাঁদেরকে মৃত মনে করা যাবে না, তাঁরা জীবিত মানুষের মত ইন্তেকালের পরেও আল্লাহর পক্ষ হতে জীবিকাপ্রাপ্ত। মহান আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত তৃতীয় স্তরের বান্দা শহিদগণ (শোহাদা) এই বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হলে প্রথম স্তরের ব্যক্তিগণ (সম্মানিত নবিগণ) সবচেয়ে বেশি মর্যাদার অধিকারী হবেন, এতে কোন সন্দেহ নেই। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, তাঁর আগে অনেক রাসূল গত হয়েছেন। তিনি ইন্তেকাল বা শহিদ হলেও তাঁর এই ইহজগৎ থেকে পর্দা করার কারণে তাঁকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন বা তাঁকে বাদ দেওয়া, তাঁর শিক্ষাকে ত্যাগ করা যাবে না । হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘‘আপনিও মরণশীল তারাও মরণশীল ”। এই আয়াত দ্বারা হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর বাস্তবতা স্বীকারের পক্ষে প্রমাণ পেশ করেন । এছাড়াও পবিত্র কুরআনের ১১০ নম্বর সূরা (সূরা নাসর) এর মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের সংবাদ আগাম দেওয়া হয়েছে । হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিজের ইন্তেকালের বিষয়টি যেমন জানতেন তেমনি তারঁ ইন্তেকালের পরে তাঁর পরিবার-পরিজনের মধ্যে সর্বপ্রথম তাঁর কন্যা হযরত ফাতিমা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা ইন্তেকাল করে তাঁর সঙ্গে কবর জগতে মিলিত হবেন এমন আগাম বার্তাও দিয়েছেন । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তেষট্টি বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন (বুখারী শরীফ, হাদিস নং ৩২৮৪, তিরমিযী শরীফ, হাদিস নং ৩৬২১, ৩৬৫২, ৩৬৫৩, ৩৬৫৪, ৪৩১৮, ৪৩১৯, ৪৩২০) । অনেকে তাঁর বয়স ষাট/পঁয়ষট্টি বছর হিসবেও বর্ণনা করেছেন । তিনি ইন্তেকাল করলেও জীবিত এবং অমর। তিনি আল্লাহর রাসূল, খাতামুন নবিয়্যিন বা শেষ নবি । আর নবিগণের মধ্যে আমাদের নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যান্য নবিগণ থেকে বিশেষ মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী, তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালিন, আশরাফুল আম্বিয়া, ইমামুল আম্বিয়া/ মুরসালিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ”আমি কিয়ামতের দিন আদম সন্তানের সরদার হব এবং আমিই প্রথম ব্যক্তি যার কবর প্রথমে উন্মুক্ত করে দেয়া হবে এবং আমিই প্রথম সুপারিশকারী ও প্রথম সুপারিশ গৃহীত ব্যক্তি” । হযরত আবু বকর ইবন আবু শায়বা (র.) — হযরত আওস ইবন আওস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ”তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে জুমুআর দিন সর্বোত্তম। এ দিনেই আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এ দিনেই শিঙ্গায় ফুৎকার দেওয়া হবে, এ দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে। কাজেই তোমরা এ দিনে আমার প্রতি অধিক দুরুদ ও সালাম পাঠ করবে। কেননা তোমাদের দুরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়”। জনৈক ব্যক্তি বললেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইকা ওয়াসাল্লাম! আমাদের দুরুদ আপনার কাছে কিভাবে পেশ করা হবে, অথচ আপনি তো মাটির সাথে মিশে যাবেন? তিনি বললেন: ”আল্লাহ তা’আলা নবিগণের দেহ ভক্ষণ করা যমীনের জন্য হারাম করে দিয়েছেন”। হযরত আমর ইবন সাওয়াদ মিসরী (র.) হযরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ”তোমরা জুমুআর দিনে আমার প্রতি অধিক দরুদ পাঠ করবে। কেননা তা আমার নিকট পৌঁছানো হয়, ফিরিশতাগণ তা পৌঁছিয়ে দেন। যে ব্যক্তি আমার প্রতি দুরুদ পাঠ করে, তা থেকে সে বিরত না হওয়া পর্যন্ত তা আমার নিকট পেশ হতে থাকে”। রাবী বলেন, আমি বললাম: ইন্তিকালের পরেও? তিনি বললেন: ”হ্যাঁ, ইন্তেকালের পরেও। আল্লাহ তা’আলা নবিগনের দেহ ভক্ষণ করা যমীনের জন্য হারাম করেছেন। আল্লাহর নবি জীবিত এবং তাঁকে রিযক দেওয়া হয়” (সুনানু ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৬৩৬-১৬৩৭) । নবি-রাসূলগণ ইন্তেকালের পরও কবরে/রওজায় জীবিত- এটা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকিদা বা দৃঢ় বিশ্বাস, যা কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করার সময় তাঁর বণ্টনযোগ্য সম্পত্তি রেখে যান, তাঁর কন্যা ও স্ত্রীগণ উত্তরাধিকারী হিসেবে ছিলেন- এ বিষয়ে কোন প্রকার মতানৈক্য নেই। তবে ইসলামি বিধানে তাঁর ইন্তেকাল ও তাঁর মর্যাদা সাধারণ মানুষের মত নয় বলেই তাঁর পরিত্যাক্ত সম্পত্তি তাঁর কন্যা ও স্ত্রীগণের মধ্যে বা অন্যান্য উত্তরাধিকারীগণের মধ্যে প্রচলিত ইসলামী উত্তরাধিকার আইনানুসারে বণ্টন করা হয় নি।

(৪)
ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে হায়াতুন্নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত বান্দা সত্যনিষ্ঠ (সিদ্দিকিন), শহিদ (শোহাদা) ও সৎকর্মপরায়ণ (ছোয়ালেহিন) বা সাধারণ মুসলমান যিনি ইন্তেকাল করেছেন, এইরূপ মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি তাঁর উত্তরাধিকারীগণের মধ্যে ইসলামি উত্তরাধিকার আইনের বিধান মতে বণ্টন করে দিতে হবে। মহান আল্লাহ তাঁর নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ধন-সম্পদ দান করেছেন, যেমন বলা হয়েছে: আল্লাহ ইয়াহুদিদের নিকট (বানু নাযিরের কাছ) হতে তাঁর রাসূলকে যে ‘ফাই’ (যুদ্ধ ব্যতীত প্রাপ্ত ধন সম্পদ) দিয়েছেন, তার জন্য তোমরা ঘোড়ায় কিংবা উটে চড়ে যুদ্ধ কর নাই। আল্লাহ তো যার উপর ইচ্ছা, তাঁর রাসূলদেরকে কর্তৃত্ব দান করেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান । মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি/মিরাস বণ্টনের কুরআন ও সুন্নাহর অকাট্য বিধান থাকা সত্ত্বেও এই ইসলামি উত্তরাধিকার আইনের বিধান হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা তাঁর ইন্তেকালে তাঁর সম্মানিত উত্তরাধিকারীগণের জন্য প্রযোজ্য নয়। কারণ তিনি নিজের বা তাঁর ইন্তেকালে তাঁর উত্তরাধিকারীগণের জন্য বিশেষ বিধানের কথা বলেছেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবন মুহাম্মদ (র.) হযরত আয়েশা (রা.) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উত্তরাধিকারিত্ব সম্পর্কে বর্র্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উত্তরাধিকারিত্ব চাওয়ার জন্য একদা হযরত ফাতিমা (রা.) ও হযরত আব্বাস (রা.) গেলেন হযরত আবূ বকর সিদ্দিক (রা.) এর নিকট। তাঁরা ঐ সময় ফাদাক ভূখণ্ডের এবং খায়বারের অংশ দাবী করেছিলেন। তখন উভয়ের প্রতি লক্ষ্য করে হযরত আবূ বকর সিদ্দিক (রা.) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেন: আমাদের কোন উত্তরাধিকারী হবে না, আমরা যা রেখে যাব তা সবই সদকা। এ মাল থেকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিবার ভোগ করবেন (বুখারী শরীফ, হাদিস নং ৬২৭০) । হযরত ইসমাইল (র.) হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আমার রেখে যাওয়া সম্পত্তি- দীনার বণ্টনযোগ্য নয়। আমার সহধর্মিণীগণের এবং আমার কর্মচারীবৃন্দের খরচ ব্যতীত যতটুকু থাকবে তা হবে সদাকাতুল্য (বুখারী শরীফ, হাদিস নং ৬২৭৩) । অনুরূপ হাদিস বর্ণিত হয়েছে হযরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসলামা (র.) নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহধর্মিণী হযরত আয়েশা (রা.) সূত্রে। নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পর তাঁর সহধর্মিণীগণ হযরত আবূ বকর সিদ্দিক (রা.) এর কাছে হযরত উসমান (রা.) কে পাঠানোর ইচ্ছা করলেন। তখন হযরত আয়েশা (রা.) বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি এরূপ বলেন নি, আমাদের কোন উত্তরাধিকারী নেই। আমরা যা রেখে যাই তা হবে সদাকাতুল্য (বুখারী শরীফ, হাদিস নং ৬২৭৪, তিরমিযী শরীফ, হাদিস নং ৪৩৩৯-৪৩৪৩) । ইন্তেকালের পরও মহানবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রওজায় জীবিত, এ জীবিত থাকা অন্য কোন সত্যনিষ্ঠ (সিদ্দিকিন), শহিদ (শোহাদা) ও সৎকর্মপরায়ণ (ছোয়ালেহিন)- গণের মত নয়। তাঁর পরে কোনো নবি আসবে না, তাঁর শিক্ষা বা শরীয়াত চলমান। তাই তাঁর ওফাত দিবস পালন করা হয় না, তাঁর পরিত্যক্ত সম্পত্তির মিরাস বণ্টনও নাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি কেউ আমাকে স্বপ্নে দেখে, তাহলে সে যথার্থই আমাকেই দেখেছে। কারণ শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না (তিরমিযী শরীফ, হাদিস নং ৪৩৪৫- ৪৩৪৯) । হযরত আলী ইবন মুহাম্মদ (র.) হযরত আব্দুল্লাহ (রা.) সূত্রে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখেন, সে তো আমাকে জাগ্রত অবস্থায় দেখল। কেননা শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না (সুনানু ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৯০০) । তারপরও কিছু মানুষ বা উম্মত নামের মুসলিম নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবিত থাকা (হায়াতুন্নবি হওয়া) অস্বীকার করে। কারণ মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্কপ্রিয় । আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই মৃত্যু ঘটান । ”মানুষের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যারা বলে ’আমরা আল্লাহ ও আখিরাত দিবসে ইমান এনেছি’, কিন্তু তারা মুমিন নয়” , তারা বলে, ’আমরা আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ইমান আনলাম এবং আমরা আনুগত্য স্বীকার করলাম’ কিন্তু এরপর তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়, বস্তুত তারা মুমিন নয় । আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সমক্ষে কোন বিষয়ে মুমিনগণকে অগ্রণী হতে নিষেধ করা হয়েছে । আর মানুষ জীবিত থাকতেই মৃতের মতো থাকতে পারে। যেমন- কুরআন ও সুন্নাহতে বলা হয়েছে, ”যে ব্যক্তি মৃত (আধ্যাত্মিকভাবে মৃত) ছিল যাকে আমি জীবিত করেছি ”, আর মানুষ যখন আল্লাহর স্মরণ (যিকর) হতে বিমুখ হয়, তখন তাকে পথভ্রষ্ট করার জন্য শয়তান তার সাথে লেগেই থাকে । হযরত মুহাম্মদ ইবন আলা (র) — আবূ মূসা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’যে ব্যক্তি তার রবের যিকর করে, আর যে ব্যক্তি যিকর করে না, তাদের দুজনের দৃষ্টান্ত হলো জীবিত ও মৃতের (বুখারী শরীফ, হাদিস নং-৫৯৬৫) । আল্লাহর নির্বাচিত বান্দাদেরকে শয়তান বিপথগামী করতে পারে না এবং তাঁদের উপর শয়তানের কোনো ক্ষমতাও নেই । তাই ইসলামি আইন বা ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকালের পরও আল্লাহর অনুগ্রহে বিশেষ মর্যাদায় জীবিত বা তিনি হায়াতুন্নবি- এ বিষয়ে বিতর্কের বা মতানৈক্যের সুযোগ নেই।
(৫)
ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে হায়াতুন্নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুপম মর্যাদা
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল । তাই রাসূলের আহ্বানকে আমরা আমাদের একে অপরের প্রতি আহ্বানের মত গণ্য করতে পারি না। মহান আল্লাহ বলেন, ’হে মুমিনগণ তোমরা নবীর কণ্ঠস্বরের উপর তোমাদের কণ্ঠস্বরকে উঁচু করিও না এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উচ্চস্বরে কথা বল তাঁর সঙ্গে সেভাবে কথা বলোনা, কারণ এতে তোমাদের কর্ম নিষ্ফল হয়ে যাবে তোমাদের অজ্ঞাতসারে ’। মহান আল্লাহ বলেন, নবি মু’মিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা ঘনিষ্টতর এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মাতা । ’মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নন। [আল কুরআন, ৩৩ সূরা আহযাব:৪০, পারা-২২] নবির স্ত্রীগণ অন্য নারীদের মত নন । রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পূর্বে এবং তাঁর সময়েও আরবে ’পোষ্যপুত্র’ বা পালকপুত্রের উত্তরাধিকার নামীয় তথাকথিত ধারণা বিদ্যমান ছিল কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেন্দ্র করে ইসলামে ’পোষ্যপুত্র’ বা পালকপুত্রের উত্তরাধিকার নামীয় তথাকথিত ধারণা মহান আল্লাহ চিরতরে বাতিল করে দিয়েছেন। ইয়াহইয়া ইবন বুকায়র (র.) নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহধর্মিণী হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবী হযরত আবূ হুযাইফা (রা.) এক আনসারী মহিলার আযাদকৃত গোলাম সালিমকে পালকপুত্র হিসাবে গ্রহণ করেন, যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়েদকে পালকপুত্র হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন এবং তিনি তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্রী হিন্দা বিনতে ওয়ালিদ ইবন ওতবার সাথে বিবাহ করিয়ে দেন। জাহিলিয়্যাতের আমলে কেউ কোন ব্যক্তিকে পালকপুত্র হিসাবে গ্রহণ করলে লোকেরা তাকে তাঁর (পালনকারীর) প্রতিই সম্বোধন করত, এবং সে তার পরিত্যক্ত সম্পদের উত্তরাধিকারী হত। অবশেষে আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করলেন, ’তোমরা তাদেরকে ডাক তাদের পিতৃপরিচয়ে’। এরপর (আবূ হুযাইফার স্ত্রী) সাহ্লা নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে হাদিসে বর্ণিত প্রকৃত ঘটনা বর্ণনা করলেন । মহান আল্লাহ বলেন, ”তোমাদের পোষ্য পুত্রদেরকে তিনি তোমাদের পুত্র করেন নাই, এগুলি তোমাদের মুখের কথা । মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নন। বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবি। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ ।” আর মহান আল্লাহই তাঁর প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খ্যাতিকে উচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন । ’মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নন’- এই আয়াত নাযিল হওয়ার পরে ’যায়দ ইবন মুহাম্মদ’ বলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে পোষ্যপুত্র করেছিলেন । হযরত যায়দ ইবন হারিসাহ (রা.) ছিলেন মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আযাদ করা একজন গোলাম। নব্যুয়ত প্রকাশের পূর্বে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে পোষ্যপুত্র করেছিলেন। তাঁকে ‘যায়েদ ইবন মুহাম্মদ’ বলে ডাকা হত। মহান আল্লাহ এই সম্বন্ধ বর্জন করার ইচ্ছা করলেন আর নাযিল করলেন: ‘তোমাদের পোষ্য পুত্রদেরকে তিনি তোমাদের পুত্র করেন নাই, এগুলি তোমাদের মুখের কথা’ । নবি বিদ্বেষীগণ মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক হযরত যায়েদ ইবন হারিসাহ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর পরিত্যাক্ত স্ত্রীকে (হযরত যয়নব বিনতে জাহশ রা.) বিবাহ করায় সমালোচনা করতে থাকেন। এই সমালোচনার জবাবে পিতা ও পিতৃতুল্য এক কথা নয় এটা বুঝানোর জন্য পালকপুত্রের ধারণা ইসলামে বাতিল করা হয়েছে। আর এভাবে মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেন্দ্র করেই বাতিল হলো পালকপুত্রের উত্তরাধিকার লাভের বিধানও। উল্লেখ্য যে, হযরত যয়নব বিনতে জাহশ (রা.) এর এই বিবাহে ওলিমা (বিবাহ উপলক্ষে বরপক্ষ কর্তৃক খাবারের ব্যবস্থা করা) সুন্নাত প্রথা চালু হয় এবং এই বিবাহের পরই পর্দার আয়াত নাযিল হয় । আমাদের দেশে প্রচলিত বিবাহ উপলক্ষে বেপর্দা প্রথা (পর্দা অনুসরণ না করা) এবং কন্যাপক্ষের নিকট খাবার দাবী করা (বরযাত্রা নামে কন্যাপক্ষের নিকট খেতে যাওয়া) কুরআন-সুন্নাহ বা হাদিসের সরাসরি লঙ্ঘন, যা সুন্নাতের বিপরীত। সকল মুসলমানের অবশ্যই পর্দা মানতে হবে এবং বিবাহ উপলক্ষে বরপক্ষ কর্তৃক কন্যাপক্ষের নিকট খাবার দাবী (বরযাত্রার নামে খাওয়ার ইত্যাদি) পরিত্যাগ করতে হবে। আর সম্ভব হলে বরের আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী সুন্নাতে রাসূলের অনুসরণে সাধ্যমত ওলিমার ব্যবস্থা করতে হবে।
(৬)
উপসংহার
ইসলামি উত্তরাধিকার আইনের ব্যতিক্রম নিয়ম যা কেবল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্যই প্রযোজ্য, যা হাদিস বা সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিত্যক্ত সম্পত্তি তার উত্তরাধিকারীগণের মধ্যে বণ্টন করা হয় নি। কারণ তারঁ ইন্তেকালের পরে জীবিত হওয়া বা জীবিত থাকা অন্য কোন সিদ্দিক, শহিদ বা সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তির জীবিত থাকার মত নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবিত, তাঁর কোন ওফাত দিবস তাঁর উম্মতগণ পালনও করেন না। ইলমুল ফারাইদ্বের বিধান মতে তাঁর ইন্তেকালে তরকা বা পরিত্যক্ত সম্পত্তি বণ্টনের সুযোগ তাঁর পবিত্র হাদিস দ্বারা বারিত। মহান আল্লাহ বলেন, ”যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করল বস্তুত সে আল্লাহর আনুগত্য করল ।” ”হে ইমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর এবং তার কথা শোনার পর তা থেকে বিমুখ হয়ো না ”। ”আর তিনি (নবি) মনগড়া কথা বলেন না, এতো ওহী যা তাঁর প্রতি প্রত্যাদেশ হয় ”। প্রচলিত হিন্দু আইনের ’পোষ্যপুত্র’ বা হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে পালক পুত্রের উত্তরাধিকারের ধারণা বা জাহিলিয়্যা যুগের পালকপুত্র/পালকপুত্রের উত্তরাধিকার লাভের সুযোগ ইত্যাদি ইসলাম ধর্মে স্বীকৃত নয়। কোন মুসলমানের পালক পুত্র বলতে কিছুই নেই। এইরূপ পালকপুত্র উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেন্দ্র করে রাসূলের সম্মানার্থে ইসলামে ’পোষ্যপুত্র’ বা পালকপুত্রের উত্তরাধিকার নামীয় তথাকথিত ধারণা মহান আল্লাহ চিরতরে বাতিল করে দিয়েছেন, যা পবিত্র কুরআন দ্বারা প্রমাণিত। আর আল কুরআন মানব জাতির জন্য উপদেশ, কুফরি ও গুনাহ ইত্যাদি অন্তরের রোগের আরোগ্য এবং মুমিনদের জন্য হিদায়াত ও রহমত । এই কিতাব পূর্ববর্তী কিতাবের সমর্থক, মুমিনদের জন্য পথপ্রদর্শক ও শুভ সংবাদ, এতে কোনো সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য পথ নির্দেশ । যাঁরা ইমান আনে ও আমল করে তাঁদের জন্যই রয়েছে পুরস্কার । আর সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর কেউ যদি রাসূল ও মুমিনদের পথ ব্যতীত ভ্রান্ত পথে চলতে চায় তবে আল্লাহ তাকে সেইদিকেই ফিরিয়ে দিবেন এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করবেন । মহান আল্লাহ অনুগ্রহ করে আমাদেরকে ইমানদার ও সৎকর্মপরায়নদের মধ্যে অর্ন্তভূক্ত করুন এবং আমরা যেন তাঁর অনুগ্রহপ্রাপ্ত বান্দাদের পথে আমাদের জীবনকে পরিচালিত করতে পারি , হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদের পাপ ক্ষমা কর, আমাদের মন্দ কাজগুলি দূরীভূত কর এবং আমাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের সহগামী করে মৃত্যু দিও ,

হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এবং ইমানে অগ্রণী আমাদের ভাইদেরকে ক্ষমা কর এবং মুমিনদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে বিদ্বেষ রাখিও না , আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান দান কর যারা হবে আমাদের জন্য চোখ জুড়ানো এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর । হে আকাশ ও জমিনের ¯্রষ্টা (আল্লাহ)! দুনিয়া ও আখিরাতে তুমিই আমার অভিভাবক/সহায়, আমাকে মুসলিম হিসাবে (ইমানের সাথে) মৃত্যু দিও, হে আমার প্রতিপালক! আমাকে জ্ঞান দান কর এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অর্ন্তভুক্ত কর , আমাদের নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর অগণিত রহমত, করুণা ও শান্তি বর্ষণ করুন এবং মহানবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাঁকে আপনি কাউছার দান করেছেন, তাঁর ওসিলায় আপনি আমাদের প্রর্থনা কবুল করুন। আমিন। শান্তি বর্ষিত হোক রাসূলদের প্রতি। আর সকল প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর প্রাপ্য ।

তথ্যসূত্র.
আল কুরআন, ৩ সূরা আলে ইমরান:১৯, পারা-৩, ৫ সূরা মায়িদা:৩, পারা-৬
আল কুরআন, ৯ সূরা আত্ তাওবাহ:৩৩, পারা-১০, ৬১ সূরা আস সাফ্ফ:৯, পারা-২৮
ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবন ইসমাঈল বুখারি আল জূফী (র.): বুখারী শরীফ ১ম খ-, দশম সংস্করণ, নভেম্বর, ২০১১, বঙ্গানুবাদ প্রকাশক- ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭, বাংলাদেশ, (হাদিস নং-৭, পৃ.১৬), (খ) ইমাম আবূ ইসা আত তিরিমিযী (র.): তিরমিযী শরীফ ৫ম খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (২য় সংস্করণ, মার্চ, ২০০৭), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ২৬১০, পৃ. ৮২)।

(ক) প্রাগুক্ত (বুখারী শরীফ ১ম খ-, হাদিস নং-১৩ এবং ১৪, পৃ.১৯), (খ) ইমাম আবুল হুসায়ন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল কুশায়রী আন নিশাপূরী (র): মুসলিম শরীফ, ১ম খ- ইফাবা বংলা অনুবাদ (৫ম সংস্করণ, এপ্রিল, ২০১০), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৭৪, ৭৫, পৃ.১০৮-১০৯), (গ) ইমাম আবূ আবদির রাহমান আহমদ ইবন শুআয়ব আন নাসাঈ (র.): সুনানু নাসাঈ শরীফ ৪র্থ খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ, ২য় সংস্করণ, জুন, ২০০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ( হাদিস নং ৫০১২-৫০১৪, পৃ. ৪৭৯)।

যেমন উম্মতের সঠিক দল বা জান্নাতি দল সম্পর্কে মহানবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’আমিও আমার সাহাবীরা যার উপর প্রতিষ্ঠিত’। এই হাদিসটি হাসান-গরিব ও স্বখ্যাত [জামে তিরমিযি, হাদিস নং- ২৬৪১-২৬৪২, কিতাবুল ইমান]। ইমাম আবূ ঈসা মুহাম্মদ ইবন ঈসা আত তিরমিযী (র.): তিরমিযী শরীফ ৫ম খ-, (দ্বিতীয় সংস্করণ, মার্চ, ২০০৭), বঙ্গানুবাদ প্রকাশক: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭, বাংলাদেশ (হাদিস নং-২৬৪১-২৬৪২, পৃ. ১০৪-১০৫)।
. Online (available):https://www.anjumantrust.org/wp-content/uploads/2014/12/04.-Adv.-Muhammad-Erfan-Ullah.pdf
ড. মোহাম্মদ ইয়াকুব শরীফ, ফিক্হ শাস্ত্রের মৌলিক ও আনুষঙ্গিক উৎস: একটি পর্যালোচনা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্রিকা, ৫৫ বর্ষ, ২য় সংখ্যা (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০১৫), গবেষণা বিভাগ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, আগারগাঁও, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭, বাংলাদেশ (পৃ.১৩০-১৩১)।
ইমাম আবু দাঊদ (র.): আবু দাঊদ শরীফ ৪র্থ খ- (২য় সংস্করণ, আগস্ট, ২০০৬), অনুবাদক ড. আ.ফ.ম আবূ বকর সিদ্দীক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭, বাংলাদেশ (হাদিস নং ২৮৭৫, পৃ.১৩৩)
আল কুরআন, ৪ সূরা নিসা:৭, পারা-৪
ইমাম মুহাম্মদ ইবন ইসমাইল বুখারী (র.): বুখারী শরীফ ১০ম খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৬ষ্ঠ সংস্করণ, সেপ্টম্বর, ২০১০), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৬২৭৬, পৃ.১৮৮)।
ইমাম আবুল হোসায়ন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল কুশায়রী আন নিশাপূরী (র): মুসলিম শরীফ ৬ষ্ঠ খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৬ষ্ঠ সংস্করণ, ডিসেম্বর, ১৯৯৪), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৩৯৯৬, ৩৯৯৮, পৃ.৩-৪)।
আল কুরআন, ৪ সূরা নিসা:১১, ১২, পারা-৪
আল কুরআন, ৪ সূরা নিসা:১৭৬, পারা-৬
আল কুরআন, ৮ সূরা আনফাল:৭৫, পারা-১০
যেমন: মহান আল্লাহ বলেন, ”ওয়া আ’তাল মা’লা আ’লা- হুব্বিহি- যাবিল ক্বোরবা-” ’আল্লাহকে ভালবেসে নিকট আত্মীয়দের অর্থ দিয়ে সাহায্য করা’। [আল কুরআন, ২ সূরা বাকারা:১৭৭, পারা-২] কেননা সদাচার পেতে তারাই অধিক হকদার।
Syed Amir Ali, Muhammedan Law, Vol. II, 5th edition, reprinted1985

আল কুরআন, ৩ সূরা আলে ইমরান:১৮৫, পারা-৪
আল কুরআন, ৪৫ সূরা জাছিয়া:২৬, পারা-২৫
আল কুরআন, ১০ সূরা ইউনুস:৩৪, পারা-১১
আল কুরআন, ৩ সূরা আলে ইমরান:১৫৬, পারা-৪, ১০ সূরা ইউনুস:৫৬, পারা-১১, ১৬ সূরা নাহল:৭০, পারা-১৪
আল কুরআন, ৭ সূরা আরাফ:১৫৮, পারা-৯, ৫০ সূরা কাফ:৪৩, পারা-২৬
আল কুরআন, ৬ সূরা আন’আম:৬০, পারা-৭
আল কুরআন, ৩৯ সূরা যুমার:৪২, পারা-২৪
ইমাম মুহাম্মদ ইবন ইসমাইল বুখারী (র.): বুখারী শরীফ ৬ষ্ঠ খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৬ষ্ঠ সংস্করণ, মে, ২০১০), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৩৩১৬, ৩৩১৭, পৃ.২০১-২০২)।
আল কুরআন, ৩ সূরা আলে ইমরান:১৬৩, পারা-৪
আল কুরআন, ৪ সূরা নিসা:৬৯, পারা-৫
আল কুরআন, ২ সূরা বাকারা:১৫৪, পারা- ২, ৩ সূরা আলে ইমরান:১৬৯, পারা-৪
আল কুরআন, ৩ সূরা আলে ইমরান:১৪৪, পারা-৪
আল কুরআন ,৩৯ সূরা যূমার: ৩০, পারা- ২৩
(ক) ইমাম আবুল ফিদা ইসমাইল ইবনে কাছীর (র.): তাফছীরে ইবনে কাছীর ৯ম খ-, ইফাবা বঙ্গানুবাদ, ৩য় সংস্করণ, জুন, ২০১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (পৃ.৫৬২)। (খ) ইমাম মুহাম্মদ ইবন ইসমাইল বুখারী (র.): বুখারী শরীফ ৭ম খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৩য় সংস্করণ, জুন, ২০০৩), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং-৪১০৫, পৃ.২৪৪-২৪৫)।
(ক) ইমাম আবুল ফিদা ইসমাইল ইবনে কাছীর (র.): তাফছীরে ইবনে কাছীর একাদশ খ-, ইফাবা বঙ্গানুবাদ, ৩য় সংস্করণ, নভেম্বর, ২০১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (পৃ.৬১৭)। (খ) ইমাম মুহাম্মদ ইবন ইসমাইল বুখারী (র.): বুখারী শরীফ ৭ম খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৩য় সংস্করণ, জুন, ২০০৩), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং-৪০৮৭, পৃ.২৩৪)।
ইমাম মুহাম্মদ ইবন ইসমাইল বুখারী (র.): বুখারী শরীফ ৭ম খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৩য় সংস্করণ, জুন, ২০০৩), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং-৪০৯০, পৃ.২৩৬)।
(ক) ইমাম মুহাম্মদ ইবন ইসমাইল বুখারী (র.): বুখারী শরীফ, ৬ষ্ঠ খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৬ষ্ঠ সংস্করণ, মে, ২০১০), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৩২৮৪, পৃ.১৮৭, হাদিস নং ৩৬২২, ৩৬২৩, পৃ.৪২২)। (খ) বুখারী শরীফ ৭ম খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৩য় সংস্করণ, জুন, ২০০৩), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং-৪১১৪, পৃ.২৪৮)। (গ) ইমাম আবূ ইসা আত তিরিমিযী (র.): তিরমিযী শরীফ ৬ষ্ঠ খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ জুন, ১৯৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৩৬২১, পৃ. ২৪৭), তিরিমিযী শরীফে বর্ণিত অনুরূপ হাদিস নং ৩৬৫২, ৩৬৫৩, ৩৬৫৪, পৃ.২৬৩, হাদিস নং ৪৩১৮, ৪৩১৯, ৪৩২০, পৃ.৫৪১ ।
ইমাম আবূ ইসা আত তিরিমিযী (র.): তিরমিযী শরীফ ৬ষ্ঠ খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (জুন, ১৯৯৭), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (যেমন ৬৫ বছর বলা হয়েছে, হাদিস নং ৪৩২১, ৪৩২২, আর ৬০ বছর বলা হয়েছে, হাদিস নং ৪৩২৩, পৃ. ৫৪২), তিরিমিযী শরীফে বর্ণিত অনুরূপ হাদিস, ৬০ বছর বলা হয়েছে যেমন হাদিস নং ৩৬২৩, পৃ.২৪৮, ৬৫ বছর বলা হয়েছে, হাদিস নং-৩৬২২, (পৃ.২৪৭) হাদিস নং ৩৬৫০, ৩৬৫১, পৃ.২৬২।
আল কুরআন, ৩৩ সূরা আহযাব :৪০, পারা-২২
ইমাম আবুল হুসায়ন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল কুশায়রী আন নিশাপূরী (র): মুসলিম শরীফ ৫ম খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৪র্থ সংস্করণ, জুন, ২০১০), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৫৭৪১, পৃ.২৭৮)।
ইমাম আবূ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবন ইয়াজীদ ইবন মাজাহ আল কাযবীনী (র.): সুনানু ইবনে মাজাহ ২য় খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (২য় সংস্করণ, ফেব্রুয়ারি, ২০০৬), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ১৬৩৬-১৬৩৭ পৃ. ৭৭-৭৮)।
(ক) আল কুরআন, ৫৯ সূরা হাশর:৬, পারা-২৮। (খ) ইমাম মুহাম্মদ ইবন ইসমাইল বুখারী (র.): বুখারী শরীফ ৬ষ্ঠ খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৩য় সংস্করণ, জুন, ২০০৩), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং-৩৭৪০, পৃ.৫২১-৫২৩)
ইমাম মুহাম্মদ ইবন ইসমাইল বুখারী (র.): বুখারী শরীফ ১০ম খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৬ষ্ঠ সংস্করণ, সেপ্টম্বর, ২০১০), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৬২৭০, পৃ.১৮৪)। অনুরূপ বর্ণিত বুখারী শরীফের হাদিস হলো হাদিস নং-৬২৭১, ৬২৭২ (পৃ. ১৮৪-১৮৬)। সদৃশ হাদিস, বুখারী শরীফ ৬ষ্ঠ খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৩য় সংস্করণ, জুন, ২০০৩), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং-৩৭৪১, পৃ.৫২৩-৫২৪)।
প্রাগুক্ত, (হাদিস নং ৬২৭৩, পৃ.১৮৭)।
(ক) ইমাম মুহাম্মদ ইবন ইসমাইল বুখারী (র.): বুখারী শরীফ ১০ম খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৬ষ্ঠ সংস্করণ, সেপ্টম্বর, ২০১০), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৬২৭৪, পৃ.১৮৭)। সদৃশ হাদিস, বুখারী শরীফ ৬ষ্ঠ খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৩য় সংস্করণ, জুন, ২০০৩), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং-৩৭৪০, পৃ.৫২২) (খ) ইমাম আবূ ইসা আত তিরিমিযী (র.): তিরমিযী শরীফ ৬ষ্ঠ খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (জুন, ১৯৯৭), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৪৩৩৯, ৪৩৪০, ৪৩৪১, ৪৩৪২, ৪৩৪৩, পৃ. ৫৫০-৫৫১)।
ইমাম আবূ ইসা আত তিরিমিযী (র.): তিরমিযী শরীফ ৬ষ্ঠ খ-, (জুন, ১৯৯৭), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৪৩৪৫, ৪৩৪৬, ৪৩৪৭, ৪৩৪৮, ৪৩৪৯ পৃ. ৫৫২-৫৫৪), অনুরূপ হাদিস বর্ণিত হয়েছে তিরমিযী শরীফ ৪র্থ খ-ে, ইফাবা বংলা অনুবাদ (জুন, ১৯৯২), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ২২৭৯ পৃ. ৫৮২)।
ইমাম আবূ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবন ইয়াজীদ ইবন মাজাহ আল কাযবীনী (র.): সুনানু ইবনে মাজাহ ৩য় খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (মার্চ, ২০০২), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৩৯০০ পৃ. ৪৩৭), অনুরূপ হাদিস বর্নিত হয়েছে সুনানু ইবনে মাজাহ ৩য় খ-ে, হাদিস নং ৩৯০১-৩৯০৫ পৃ. ৪৩৭-৪৩৮।
আল কুরআন, ১৮ সূরা কাহফ:৫৪, পারা-১৫
আল কুরআন, ১৬ সূরা নাহল: ৭০, পারা-১৪
আল কুরআন, ২ সূরা বাকারা:৮, পারা-১
আল কুরআন, ২৪ সূরা নূর:৪৭, পারা-১৮
আল কুরআন, ৪৯ সূরা হুজুরাত:১ পারা-২৬
আল কুরআন, ৬ সূরা আন’আম:১২২, পারা-৮
আল কুরআন, ৪৩ সূরা যুখরুফ :৩৬, পারা-২৫
ইমাম মুহাম্মদ ইবন ইসমাইল বুখারী (র.): বুখারী শরীফ ১০ম খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৬ষ্ঠ সংস্করণ, সেপ্টম্বর, ২০১০), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং-৫৯৬৫, পৃ.২৯)।
আল কুরআন, ১৫ সূরা হিজর:৩৯-৪২, পারা-১৪
আল কুরআন, ৭ সূরা আরাফ:১৫৮, পারা-৯, ৩৩ সূরা আহযাব:৪০, পারা- ২২, ৪৮ সূরা ফাতহ:২৯, পারা-২৬
আল কুরআন, ৪৯ সূরা হুজুরাত:২, পারা-২৬
আল কুরআন, ৩৩ সূরা আহযাব:৬, পারা-২১
আল কুরআন, ৩৩ সূরা আহযাব:৩২, পারা-২২
ইমাম মুহাম্মদ ইবন ইসমাইল বুখারী (র.): বুখারী শরীফ ৬ষ্ঠ খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (৩য় সংস্করণ, জুন, ২০০৩), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং-৩৭১০, পৃ.৪৯৯)
আল কুরআন, ৩৩ সূরা আহযাব:৪, পারা-২১
আল কুরআন, ৩৩ সূরা আহযাব:৪০, পারা-২২
আল কুরআন, ৯৪ সূরা ইনশিরাহ:৪, পারা-৩০
(ক) ইমাম আবুল ফিদা ইসমাইল ইবনে কাছীর (র.): তাফছীরে ইবনে কাছীর ৯ম খ-, ইফাবা বঙ্গানুবাদ, ৩য় সংস্করণ, জুন, ২০১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (পৃ.১১১), (খ) ইমাম আবূ ইসা আত তিরিমিযী (র.): তিরমিযী শরীফ ৫ম খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (২য় সংস্করণ, মার্চ, ২০০৭), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৩২০৭ এবং ৩২১০, পৃ. ৪৮৬)।
(ক) প্রাগুক্ত, পৃ. ২২, (খ) প্রাগুক্ত (তিরমিযী শরীফ ৫ম খ- , হাদিস নং ৩২০৯ এবং ৩২১০, পৃ. ৪৮৭)।
(ক) ইমাম আবুল হুসায়ন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল কুশায়রী আন নিশাপূরী (র): মুসলিম শরীফ, ৩য় খ- ইফাবা বংলা অনুবাদ (৪র্থ সংস্করণ, জুন, ২০১০), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৩৩৭৫, পৃ.৩৬৯), অনুরূপ হাদিস, হাদিস নং ৩৩৭১-৩৩৭৭ (পৃ.৩৬৭-৩৭২), (খ) ইমাম আবূ ইসা আত তিরিমিযী (র.): তিরমিযী শরীফ ৫ম খ-, ইফাবা বংলা অনুবাদ (২য় সংস্করণ, মার্চ, ২০০৭), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (হাদিস নং ৩২০৭ এবং ৩২১৮, পৃ. ৪৯২)।
আল কুরআন, ৪ সুরা নিসা: ৮০, পারা-৫
আল কুরআন, ৮ সুরা আনফাল: ২০, পারা- ৯
আল কুরআন, ৫৩ সূরা নাজম: ৩-৪, পারা-২৭
আল কুরআন, ১০ সূরা ইউনুস:৫৭, পারা-১১, ১৭ সূরা বনী ইসরাইল:৮২, পারা-১৫, ৪৫ সূরা জাছিয়া:২০, পারা-২৫
আল কুরআন, ২ সূরা বাকারা:২, ৯৭, পারা-১, ১৯ সূরা মারইয়াম:৯৭, পারা-১৬, ২৪ সূরা নূর:৩৪, পারা-১৮, ৮১ সূরা তাকভীর:২৭-২৮, পারা-৩০
আল কুরআন, ৪১ সূরা হা-মীম সাজদা:৮, পারা-২৪
আল কুরআন, ৪ সূরা নিসা: ১১৫, পারা-৫
আল কুরআন, ১ সূরা ফাতিহা:৬, পারা-১
আল কুরআন, ৩ সূরা আলে ইমরান:১৯৩, পারা-৪
আল কুরআন, ৫৯ সূরা হাশর:১০, পারা-২৮
আল কুরআন, ২৫ সূরা ফুরকান:৭৪, পারা-১৯
আল কুরআন, ১২ সূরা ইউসুফ:১০১, পারা-১৩, ২৬ সূরা শুআরা:৮৩, পারা-১৯
আল কুরআন, ৩৭ সূরা সাফ্ফাত: ১৮১-১৮২, পারা-২৩

লেখক- এডভোকেট, ঢাকা জজ কোর্ট, ঢাকা, বাংলাদেশ।