ইমাম আহমদ রেযা ও কানযুল ঈমান

ইমাম আহমদ রেযা ও কানযুল ঈমান

ইমাম আহমদ রেযা ও কানযুল ঈমান
অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভি
আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা রহমাতুল্লাহি আলায়হি’র রচনাবলীর মধ্যে তরজমা কুরআন কানযুল ঈমান ও ‘আল আতায়ান নববীয়্যা ফিল ফাতাওয়া আর রজভীয়্যাহ্’-এর উপমা তিনি নিজেই। প্রফেসর ড. মসউদ আহমদ’র তত্বাবধানে প্রফেসর ড. মজিদ উল্লাহ্ কাদেরী করাচি ইউনিভারসিটি থেকে ১৯৯৩খ্রি. এ ‘কানযুল ঈমান আউর দীগর মারুফ কুরআনি তারাজিম কা তাকাবুলি জায়েযাহ্’ (কানযুল ঈমান ও কুরআনের অন্যান্য প্রসিদ্ধ অনুবাদগুলোর তুলনামূলক পর্যালোচনা’) শীর্ষক শিরোনামে ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেন। কানযুল ঈমান কেন্দ্রিক প্রায় পঞ্চাশের অধিক গ্রন্থাবলী, পুস্তিকা ও শতাধিক গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ ভারত পাকিস্তান ও বাংলাদেশে প্রকাশ হয়েছে।
সম্প্রতি ইসলামী বিশ্বের সর্ববৃহৎ ইউনিভার্সিটি ‘জামেয়াতুল আযহার’র মানব্যর ভাইস চ্যান্সেলর শায়খুল আযহারকেও কানুযুল ঈমান উপহার দেওয়া হয়েছে।
[সূত্র. সাপ্তাহিক আরবি পত্রিকা, ‘আদ দাওয়াত’ লিবিয়া ২৬তম সংখ্যা, রবিউল আউয়াল-১৪৪১হিজরি] উপমহাদেশের কতেক খ্যাতিমান মুফাস্সির কানযুল ঈমানের তরজমার আলোকে তাফসীরের কিতাব প্রণয়ন টিকা-টিপ্পনী লিখন ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। পৃথিবীর প্রায় ১২টি ভাষায় কানযুল ঈমানের অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, হিজরি ত্রয়োদশ শতাব্দীতে অসংখ্য ভ্রান্ত আক্বিদা পোষণকারী ব্যক্তিবর্গ নিজেদের তরজমা কুরআনের মাধ্যমে ভ্রান্ত মতবাদের জাল বিস্তার করেছে। চকড়ালভী, দেওবন্দী, পারভেজী, আহলে কুরআন, আহলে হাদীস, কাদিয়ানী, ইত্যাদি ভ্রান্ত মতবাদীরা নতুন নতুন মতবাদ নিয়ে জনসম্মুখে প্রকাশ পেলো। প্রত্যেকে নিজেদের ভ্রান্ত আক্বিদার প্রচার প্রসারের জন্য পবিত্র কুরআনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ভ্রান্ত আক্বিদাসমূহ কুরআনের মনগড়া অনুবাদের মাধ্যমে সাধারণ মুসলমানদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়। সাধারণ মুসলমানরা কুরআনের এ ভুল অনুবাদগুলোকে গ্রহণ করে বিভ্রান্ত হতে থাকে। উপমহাদেশে মুসলমানদের মধ্যে আক্বিদাগত ভ্রান্তির কারণে সর্বত্র মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। ভ্রান্ত আক্বিদা বিশ্বাসে কুরআনের অপব্যাখ্যা করে নিজেও পথভ্রষ্ট হচ্ছে মুসলিম উম্মতকেও পথভ্রষ্ট করে যাচ্ছে। এ অবস্থার দিকে ইঙ্গিত করে মহান আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেছেন-
یُضِلُّ بِهٖ كَثِیْرًاۙ- وَّ یَهْدِیْ بِهٖ كَثِیْرًاؕ- وَ مَا یُضِلُّ بِهٖۤ اِلَّا الْفٰسِقِیْنۙচ (۲۶(
অর্থ: আল্লাহ্ তা‘আলা তা দ্বারা অনেককে গোমরাহ্ করেন এবং অনেককে হিদায়ত করেন এবং তা দ্বারা তাদেরকেই পথভ্রষ্ট করেন যারা ফাসিক্ব। [কানযুল ঈমান, সূরা বাক্বারা, আয়াত-২৬] পবিত্র কুরআন আল্লাহ্ তা‘আলা এ জন্যই অবতীর্ণ করেছেন যে, যুগে যুগে হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য বিধানে এ কুরআন হবে সত্যের দিশারী। হিজরি ত্রয়োদশ শতাব্দীতে উপমহাদেশে মুসলমানরা এক কঠিন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছিল। ইংরেজদের বহুমুখী চক্রান্তের কারণে মুসলমানদের পারস্পরিক ঐক্য সংহতি বিনষ্ট করার মাধ্যমে মুসলমানদেরকে বিভক্ত করার চক্রান্ত শুরু করে মুসলমানদের অন্তর থেকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র প্রেম-ভালবাসা ও সুমহান মর্যাদাকে হ্রাস করার জন্য নামধারী ওইসব মুসলমানদের মাধ্যমে এমন সব কথা লিখানো হলো, যা বিগত তের শত বৎসরে কেউ লেখেনি। এর মাধ্যমে মুসলমানদের বিভক্ত করা হলো, মুসলিম মিল্লাতের ঈমান আক্বিদা সংরক্ষণের এমন এক নাজুক সন্ধিক্ষণে একটি প্রামাণ্য নির্ভরযোগ্য বিশুদ্ধ আক্বিদার তরজমা লিখার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। মহান আল্লাহ্ তা‘আলা ইমাম আহমদ রেযা ফাযেলে বেরলভী রহমাতুল্লাহি আলায়হি থেকে তরজমা কুরআনের কাজ নিলেন। ইমাম আহমদ রেযার তরজমা কুরআনে পূর্বসূরী আসলাফ কেরামদের আকিদা-বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটলো, বিশেষতঃ উপমহাদেশের শীর্ষ স্থানীয় বুযুর্গ ওলামায়ে কেরাম যথা- হযরত আবদুল হক মুহাদ্দিস দেহলভি রহমাতুল্লাহি আলায়হি, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে সানি রহমাতুল্লাহি আলায়হি, হযরত শাহ্ ওলীউল্লাহ্ মুহাদ্দিস দেহলভী, হযরত শাহ্ আবদুল আজিজ মুহাদ্দিস দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলায়হি, হযরত শাহ্ বরকত উল্লাহ্ মারহারাভি রহমাতুল্লাহি আলায়হি, হযরত খাজা নিজাম উদ্দিন আউলিয়া রহমাতুল্লাহি আলায়হি, হযরত খাজা মুঈনুদ্দিন চিশতি আজমিরী রহমাতুল্লাহি আলায়হি প্রমুখ।
ওলামা-মায়েশেখের আদর্শিক চিন্তাধারায় কুরআনের অনুবাদ রচিত হলো
পাঠকের অন্তরে প্রশ্ন সৃষ্টি হতে পারে: তাহলে কি ইমাম আহমদ রেযার কৃত অনুবাদই প্রামাণ্য ও বিশুদ্ধ অন্য সব অনুবাদ বিশুদ্ধ নয়? নিঃসন্দেহে এ জাতীয় প্রশ্নের অবতারণা পাঠকের অন্তরে সৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক? এ জন্য অধম প্রবন্ধকার কুরআন অনুবাদের মূলনীতির সারসংক্ষেপে উপস্থাপনের প্রয়াস পাচ্ছি। এতে পাঠক নিজেই সুবিচারমূলক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে, কোন্ অনুবাদটি সঠিক যথার্থ বিশুদ্ধ আর কোন্টি নয়। আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ূতি রাহমাতুল্লাহি আলায়হি (৯১১ হি./১৫০৫খৃ.) কুরআনের তাফসীরকারকদের জন্য বিশ প্রকার ইলমের উপর পূর্ণ যোগ্যতা ও দক্ষতার অধিকারী হওয়াকে অপরিহার্য বলেছেন। যার আংশিক নি¤েœ বর্ণিত হলোঃ
১. ইলমুল লুগাত: আরবদের বিভিন্ন ভাষা সম্পর্কে জ্ঞানী হতে হবে।
২. ইলমে নাহু: বাক্য প্রকরণ শাস্ত্র সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে হবে।
৩. ইলমে সরফ: শব্দ প্রকরণ শাস্ত্র, শব্দ গঠন প্রণালী, রূপান্তর প্রক্রিয়া সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা থাকতে হবে।
৪. ইলমুল মায়ানী: শব্দের অর্থের উৎস, বাক্য বিন্যাস, শব্দগত ভাব ব্যঞ্জনার রীতি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকতে হবে।
৫. ইলমুল বয়ান: বাক্যের মধ্যে বর্ণনামূলক উপমামূলক কোনটা অর্থবোধক, কোনটা রূপক, কোনটা ইঙ্গিত সূচক, এতদসংক্রান্ত ইলম থাকতে হবে।
৬. ইলমে উসূলে দ্বীন: দ্বীনের মৌলিক আক্বিদা বিষয়ক মূলনীতির উপর সুস্পষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।
৭. ইলমে উসূলে ফিক্বহ্: ফিক্বহ শাস্ত্রের মূলনীতি সম্পর্কিত জ্ঞান, পবিত্র কুরআনের আয়াত থেকে ইসলামী শরীয়তের বিভিন্ন মাসআলা মাসায়িল উদঘাটন ও বের করার পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।
৮. ইলমে হাদীস: কুরআনুল করীমের অসংখ্য আয়াতের ব্যাখ্যা হাদীস শরীফ দ্বারা করা হয়েছে, কোন হাদীসগুলো কোন আয়াতের ব্যাখ্যা প্রকাশ করেছে, এ সম্পর্কে সঠিক ও সম্যক জ্ঞান থাকতে হবে।
৯. ইলমে নাসিখ ওয়া মানসুখ: কুরআনের কিছু আয়াত অন্য আয়াতের বিধান রহিত করেছে। এ ক্ষেত্রে কোনটা রহিত, কোনটা রহিতকারী এতদবিষয়ে সম্যক জ্ঞান অপরিহার্য।
১০. ইলমুত তারিখ: ইতিহাস সম্পর্কিত জ্ঞান, পূর্ববর্তী রাজা বাদশাহ্, নবী রসূল, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীদের সমকালীন ঘটনাবলীর ইতিহাস ও সন তারিখ সম্পর্কিত সম্যক জ্ঞান থাকতে হবে।
১১. ইলমে মুহাওয়ারাতে আরব: আরবের প্রচলিত পরিভাষা সম্পর্কিত সম্যক জ্ঞান থাকতে হবে।
[আল ইতকান, ফী উলূমীল কুরআন, খন্ড-২য়, পৃ. ১৮৫] আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ূতির বর্ণিত শর্তাবলীর আলোকে কুরআনের অনুবাদকের দায়িত্ব তাফসীরকারের চেয়ে আরো বেশী। কেননা কুরআনের অনুবাদককে সীমিত শব্দাবলীর মধ্যে এমন সব বলতে ও লিখতে হয়, যা আল্লাহর উদ্দেশ্য। এ কাজ অসম্ভব না হলেও বড়ই কঠিন। পূর্ণ সতর্কতার সাথে সঠিক ও বিশুদ্ধ অনুবাদ তখনই সম্ভবপর হবে, যখন কুরআনের অনুবাদক তাফসীরের কিতাবসমূহ হাদীস শাস্ত্রের কিতাবসমূহ, ফিক্বহ্, ইতিহাস শাস্ত্রের দক্ষতার সাথে সাথে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের উপর গভীর দক্ষতার অধিকারী হবেন। এ ছাড়াও কুরআনের অনুবাদক আরবি ভাষার মূল তথ্যসূত্র অনুধাবন ও উদঘাটনে সক্ষম হবেন, অনুবাদকের জন্য এটাও আবশ্যক যে, ধর্মীয় সকল বিষয়ের দক্ষতার পাশাপাশি জাগতিক সকল সাধারণ বিষয় সম্পর্কেও তাকে সম্যক জ্ঞানের অধিকারী হতে হবে। যেহেতু পবিত্র কুরআনে জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখা- প্রশাখা সম্পর্কিত আয়াত বিদ্যমান রয়েছে, অনুবাদককে অনুবাদের সময় সংশ্লিষ্ট বিষয়ের জ্ঞান থাকাটাও অপরিহার্য। অতঃপর অনুবাদের সময় সে বিষয় সম্পর্কিত প্রচলিত পরিভাষা ব্যবহার করবেন, যেন সে বিষয়ের সঠিক ধারণা ও পরিচয় লাভ করা সহজ হয়।
উপরোক্ত বাস্তবতা ও নীতিমালার দর্শনে যখন আপনি উর্দু ভাষায় কুরআনের অনুবাদকারীদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন তখন অধিকাংশ অনুবাদককে যোগ্যতার কষ্টিপাথরে পূর্ণতার শীর্ষে উন্নীত পাবেন না। উর্দু ভাষায় কানযুল ঈমানের পূর্বে হোক বা অনুবাদক কানযুল ঈমানের পরবর্তীতে হোক, অধিকাংশ অনুবাদক সত্যিকার অর্থে আলেমে দ্বীন-ই নয়। তাদের রচিত নির্ভরযোগ্য কোন কিতাব না আছে উসূলে দ্বীনের উপর, না আছে উসূলে হাদীস বিষয়ে, না আছে তাফসীর বিষয়ে না আছে ফিক্বাহ্ শাস্ত্রে তাদের পূর্ণ দক্ষতা, না আছে আরবি বিষয়ে আরবি ভাষায় তাদের কোন রচিত গ্রন্থ। এ পর্যায়ে পবিত্র কুরআনের আয়াতে আরবি মতন (শব্দাবলী) থেকে ইমাম আহমাদ রেযা ব্যতীত অন্য একজনও পাওয়া যায় কিনা সন্দেহ রয়েছে। উর্দু ভাষায় কুরআনের সকল অনুবাদকই অনুবাদের সময় তার পূর্বে কৃত উর্দু অনুবাদ সামনে রেখেছে অথবা কেবল অভিধানের সাহায্য নিয়েছে। অনেক প্রসিদ্ধ অনুবাদকের জীবনী অনুসন্ধানে দেখতে পাবেন। তাঁরা হয়তো সাংবাদিক ছিলেন অথবা কোন না কোন নতুন দলের প্রতিষ্ঠাতা, সমর্থক বা অনুসারী হিসেবে পাবেন, আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা ব্যতীত উর্দু ভাষায় কুরআনের অনুবাদকারী এমন একজনও আপনি পাবেন না, যিনি ধর্মীয় ও জাগতিক জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রতিটি বিষয়ে সম্যক জ্ঞানের অধিকারী। এটা ইমাম আহমদ রেযার প্রতি মহব্বত ও ভালবাসার অতিশয়োক্তি নয় বরং এটাই প্রকৃত বাস্তবতা।
ইমাম আহমদ রেযা এমন এক বিস্ময়কর অনন্য অসাধারণ প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব, যিনি একাধারে আরবি, উর্দু, ফার্সী ভাষায় জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় শতাধিক বিষয়ে সহ¯্রাধিক কিতাব রচনা করেছেন। ইসলামী ফিক্বহ শাস্ত্রে ফিক্বহে হানফীর ইনসাইক্লোপিডিয়া নামে খ্যাত ৩০ খন্ডে তাঁর অনবদ্য অবদান ‘আল আতায়ান নবভীয়্যাহ্ ফিল ফাতাওয়া আর রজভীয়্যাহ্’ যে কিতাবের প্রতিটি মাসআলা কুরআন-হাদীস, ফিক্বহ ও উসূলে ফিক্বহর মূলনীতির আলোকে উৎসারিত। পক্ষান্তরে কুরআনের অন্যান্য উর্দু অনুবাদকের দিকে দৃষ্টিপাত করুন, স্যার সৈয়দ আহমদ খান, তিনি একজন সাধারণ শিক্ষিত শিক্ষাবিদ ও সরকারী চাকুরীজীবী, মৌলভী আশেকে এলাহী মিরাঠি একজন সাধারণ শিক্ষক, মৌলভী ফতেহ মুহাম্মদ জালন্ধরী, যার তরজমা কুরআন ছাড়া অন্য বিষয়ে কোন রচনা নেই। ডেপুটি নজির আহমদ দেহলভি, যিনি একজন গল্পকার, উপন্যাসিক, মৌলভি মাহমুদুল হাসান দেওবন্দি, দেওবন্দি আলেমে দ্বীন, মৌলভী মির্জা ওয়াহিদুজ্জামান আহলে হাদীস, মৌলভী আশরাফ আলী থানভী প্রসিদ্ধ দেওবন্দী আলেম, যার রচনাবলীতে নবীজির শানে গোস্তাখী রয়েছে। মাওলানা আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিক, মৌলভী মওদুদী সাংবাদিক ও রাজনীতিক, মৌলভী আবদুল্লাহ্ চকড়ালবি আহলে কুরআন, গোলাম আহমদ পারভেজ, পারভেজি ফের্কার প্রতিষ্ঠাতা। কোন অনুবাদকের তরজমা সঠিক ও বিশুদ্ধ কিনা সে সম্পর্কে বিস্তারিত অবগতির জন্য প্রফেসর ড. মজিদ উল্লাহ্ কাদেরীর পিএইচডি থিসিস দিশারীর ভূমিকা পালন করবে। পাঠক নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কোন্ অনুবাদটি ঈমান আক্বিদা সংরক্ষণের সহায়ক, কোন্ অনুবাদটি ঈমান বিধ্বংসী।
পাক ভারত উপমহাদেশে বিগত শতাব্দীতে অসংখ্য নতুন নতুন ভ্রান্ত দল-উপদলের (ফির্কার) আবির্ভাব ঘটেছে, প্রত্যেক ফির্কা নিজ নিজ ভ্রান্ত মতবাদ বা চিন্তাধারাকে প্রচার প্রসারের লক্ষ্যে নিজস্ব মনগড়া বিকৃত ও অপব্যাখ্যা সম্বলিত তরজমা কুরআনের সহায়তা গ্রহণ করেছে, সাধারণ পাঠক সমাজ যেহেতু আরবি ভাষা সম্পর্কে অবগত নয়, সেহেতু তারা ভ্রান্ত মতাবলম্বীদের তরজমা কুরআনকেই সঠিক তরজমা মনে করে পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত হয়েছে। বিভ্রান্ত ও প্রতারণার শিকার হয়ে অপব্যাখ্যার আলোকেই নিজেদের আক্বিদা গঠন করেছে।
এমন এক নাজুক সন্ধিক্ষণে ইমাম আহমদ রেযার শুভাকাক্সক্ষী মহলের পক্ষ থেকে হযরতের সমীপে আবেদন করা হলো যে, উর্দু ভাষায় বিভিন্ন অপব্যাখ্যা সম্বলিত তরজমা কুরআনের কারণে সরলপ্রাণ মুসলমানরা বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছে, নিত্য নতুন ফির্কা ও আক্বিদা সৃষ্টি হচ্ছে, সময়ের দাবী ও চাহিদার প্রেক্ষিতে আপনি মুসলিম মিল্লাতের মুক্তির পথ প্রদর্শনে একটি নির্ভরযোগ্য সঠিক ও বিশুদ্ধ তরজমা কুরআন লিখে দিন। ইমাম আহমদ রেযা যিনি দৈনিক ২২ ঘন্টাই বিরতিহীনভাবে দ্বীনের কলমী খিদমতে নিজকে নিয়োজিত রাখতেন, সার্বক্ষণিক ব্যস্ততার মধ্যেও কুরআনের তরজমা লিখার এ গুরু দায়িত্বটাও নিজ কাঁধে নিয়ে নিলেন।
ইমাম আহমদ রেযা তদীয় খলিফা ও ছাত্র সদরুশ শরীয়াহ্ মাওলানা আমজাদ আলীকে বলেছিলেন, যখনই আমার সময় সুযোগ হবে আপনি আমার নিকট এসে বসে যাবেন, আমি তরজমা পেশ করব আপনি লিখতে থাকবেন, নির্দেশ মোতাবেক যথাসময়ে কাজ শুরু হয়ে গেল, ইমাম আহমদ রেযা তরজমার কর্ম শুরু করলেন, এ শুভ সন্ধিক্ষণে ইমাম আহমদ রেযা ও সদরুশ শরীয়া ছাড়া তৃতীয় কারো অবস্থান ছিলোনা, মুফতি আমজাদ আলী আয়াত তিলাওয়াত করে যেতেন, ইমাম আহমদ রেযা চিন্তা ফিকির ছাড়াই তরজমা পেশ করতেন। সদরুশ শরীয়াহ্ তা লিপিবদ্ধ করতেন।
লিখিত এ তরজমা প্রসঙ্গে অন্তরের প্রশান্তির জন্য যখনই সদরুশ শরীয়ত তাফসীর বা অভিধান খুলে দেখতেন, সেই মর্মার্থই পেয়ে যেতেন যা ইমাম আহমদ রেযা তরজমা করেছেন, এটা ছিলো মহান রবের কৃপা। ইমাম আহমদ রেযার তরজমা কুরআনের পান্ডুলিপি অবলোকনে এ কথার প্রমাণ বহন করে যে প্রফেসর ড. মজিদ উল্লাহ্’র বর্ণনামতে এক বৎসর বা দেড় বৎসর সময়ের মধ্যে ২৮ জমাদিউল আখের মুতাবিক ১৩৩০ হিজরীতে তরজমা কর্ম সম্পন্ন হয়। তরজমা সমাপ্তির পরই অতিদ্রুত প্রথমবারে শুধু তরজমা সহকারে মুরাদাবাদ প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়।
পরবর্তীতে সদরুল আফাযিল মাওলানা সৈয়্যদ নঈমুদ্দিন মুরাদাবাদীর হাশিয়া টিকা টিপ্পনীসহ প্রকাশ করা হলো, যা অদ্যাবধি বিদ্যমান রয়েছে। ইমাম আহমদ রেযার তরজমা কুরআন সহজ সরল প্রাঞ্জল সর্বাধিক বিশুদ্ধ তরজমা হিসেবে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্যতা পায়। যার উজ্জ্বল প্রমাণ এ তরজমা কুরআনের প্রকাশনা দেশে বিদেশে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় কত লক্ষ কপি মুদ্রিত হয়েছে তা বর্ণনাতীত। পাক ভারত উপমহাদেশে এমন কোন উল্লেখযোগ্য লাইব্রেরী নেই যেখানে এ তরজমা কুরআন নেই।
উপমহাদেশে যেহেতু আহলে সুন্নাতের মতাদর্শী সুন্নী মুসলমানরাই সংখ্যা গরিষ্ঠ, এ কারণে সাধারণ জনগণের সংখ্যা গরিষ্ঠরাই এ তরজমা কুরআনকে গ্রহণ করে নিয়েছে। এর গ্রহণযোগ্যতা দিনদিন বৃদ্ধিই পাচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ্!
কানযুল ঈমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক নিষেধাজ্ঞা
কানযুল ঈমানের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শ বিরোধী অন্যান্য সকল ফির্কার ওলামাগণ বহুমুখী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র শুরু করলো, যেন তাদের ভ্রান্ত আক্বিদার তরজমা কুরআন ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়। সহজে তাদের বদ আক্বিদার যেন বিস্তার ঘটে, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের অশুভ চিন্তাধারা বাস্তবায়নে সকলে সম্মিলিতভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য এমন রাষ্ট্রে অভিযোগ পেশ করলো, যাদের ভাষাও উর্দু নয়। তাদের চক্রান্ত-সাময়িকভাবে সফল হয়েছিলো, তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে ১৯৮২ সনে সৌদি আরব, কুয়েত ও ইমারতে উর্দু ভাষার তরজমা কুরআন ‘কানযুল ঈমান’র উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়। একই সাথে কানযুল ঈমানের গ্রহণযোগ্যতা কমানো এবং বর্তমান মুসলমানকে ‘কানযুল ঈমান’ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে সৌদি হুকুমতের কাছে তারা এ আবেদনও পেশ করেছে, যেন পবিত্র হজ্বকালীন সময়ে উর্দু ভাষাভাষী হাজীদের মধ্যে মৌলভী মাহমুদুল হাসান দেওবন্দির কৃত তরজমা কুরআন উপহার স্বরূপ বিতরণ করা হয়। উপমহাদেশের উর্দুভাষী মুসলমানরা যেন এ তরজমা পড়ে কানযুল ঈমান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় পক্ষান্তরে ওহাবী নজদী আক্বিদায় গড়ে উঠে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে ১৯৮২ সন থেকে শুরু হওয়া সেই তৎপরতা অদ্যাবধি অব্যাহত রয়েছে, প্রতি বছর মৌলভী মাহমুদুল হাসান দেওবন্দির তরজমা কুরআন সৌদি অর্থায়নে অত্যন্ত মনোরম আকর্ষণীয় ডিজাইনে অফসেট পেপারে ছাপিয়ে হজ্ব মৌসুমে উর্দু ভাষী হাজীদের মধ্যে ফ্রি বিতরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবে সৌদি আরবের অর্থায়নে ওহাবী মতবাদ দ্রুতভাবে সর্বত্র পৌছে যাচ্ছে।
কানযুল ঈমানের নিষেধাজ্ঞা প্রতিরোধ
কানযুল ঈমানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হওয়ার পর আহলে সুন্নাতের ওলামা মাশায়িখ ও সুন্নী জনসাধারণের পক্ষ থেকে পাক ভারত উপমহাদেশের সর্বত্র ব্যাপকভাবে প্রতিবাদ শুরু হলে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ, প্রতিবাদে বড় বড় জলসা, সভা, সেমিনার অনুষ্ঠিত হলো, সৌদি প্রশাসনসহ আরব রাষ্ট্রগুলোর দূতাবাস ঘেরাও করা হলো, নিষেধাজ্ঞা বাতিলের জোরদাবী পেশ করা হলো, এ তীব্র আন্দোলন ও বিক্ষোভের মুখে কিছুটা নমনীয় হলো, ধীরে ধীরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও ওহাবী দেওবন্দীরা এ নিষেধাজ্ঞার ফলে আরব বিশ্ব থেকে বিশেষ সুবিধা আদায় করে নিলো।
চক্রান্ত ব্যর্থ হলো
কানযুল ঈমানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য ছিলো, এ জন্যই যে, জনসাধারণ এ তরজমা কুরআন সংগ্রহ করবে না, সরবরাহ্ হ্রাস পাবে, পাঠক কমে যাবে; কিন্তু মহান আল্লাহর শান দেখুন তাদের সব অপচেষ্টা চক্রান্ত ব্যর্থ হয়ে যায়, কানযুল ঈমানের সরবরাহ্ প্রকাশনা বন্ধ হওয়া তো দূরের কথা বরং বহুগুণে এর প্রকাশনা বিতরণ, বিপনন, সরবরাহ্ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বড় বড় প্রকাশনা সংস্থাগুলো কানযুল ঈমানের প্রকাশনায় প্রতিযোগিতা শুরু করলো ফলে কানযুল ঈমানের চাহিদা এতো ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেল যে, এককভাবে কানযুল ঈমান অন্যসব তরজমা কুরআনের বিক্রয়কে ছাড়িয়ে গেল। সম্প্রতি আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও নবীদ্রোহী আহলে হাদীস নামধারী এক কুলাঙ্গার কর্তৃক আ’লা হযরত গবেষক বরেণ্য আলেমে দ্বীন হযরতুলহাজ্ব আল্লামা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান (মু.জি.আ.) কর্তৃক বাংলা ভাষায় অনূদিত, কানযুল ঈমান’র প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করায় দেশ বিদেশের সর্বত্র সোশাল মিডিয়াসহ সভা সেমিনার ও অনলাইন জগতে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। আল্লামা এম.এ. মান্নান ছাহেব কর্তৃক ১৯৯৫ সনে অনূদিত ও প্রকাশিত কানযুল ঈমান বিগত দু’যুগের অধিক সময় যতটুকু প্রচার পায়নি, এ কুলাঙ্গারের বিদ্বেষপূর্ণ বিরোধিতা ও অপপ্রচারের কারণে কানযুল ঈমানের জনপ্রিয়তা ও পাঠক প্রিয়তা প্রচারণা অনেক অনেক গুণ বেড়ে গেছে। ইতোমধ্যে এ অপ্রপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাবদানে দেশ বিদেশের অসংখ্য খ্যাতিমান ইসলামী স্কলার গবেষক প্রখ্যাত ওলামায়ে কেরাম অনলাইন ভার্চুয়াল প্রোগ্রামে অংশ গ্রহণ করে তরজমা কুরআন কানযুল ঈমানের শ্রেষ্ঠত্ব ও বৈশিষ্ট্যসমূহ তুলে ধরেছেন। সাথে সাথে তরজমা কুরআনের নামে ভ্রান্ত তাফসীর ও তরজমা সম্পর্কে জনগণকে সজাগ করেছেন ভ্রান্ত মতবাদীদের স্বরূপ উন্মোচন করেছেন নব উদ্দীপনায় লেখক গবেষকদের মাঝে কানযুল ঈমান নিয়ে নতুনভাবে গবেষণা করার প্রেরণা সৃষ্টি হয়েছে।
উপমহাদেশে তরজমা কুরআন কানযুল ঈমানের আলোকে লিখিত তাফসীরসমূহ
উপমহাদেশের খ্যাতিমান মুফাস্সিরবৃন্দ যারা কানযুল ঈমানের তরজমার আলোকে তাফসীর প্রণয়ন করেছেনঃ
১. হাশিয়ায়ে খাযায়িনুল ইরফান ফী তাফসীরিল কুরআন, কৃত. সদরুল আফাযিল মাওলানা মুফতি সৈয়দ নঈমুদ্দিন মুরাদাবাদী (রহ.) (১৯৪৮ খ্রি.)
২. ইমদাদুদ দ্যায়্যান ফী তাফসীরিল কুরআন, কৃত. আল্লামা মুফতি হাশমত আলী খান কাদেরী, পিলিভেতী। (ওফাত-১৯৬১ খ্রি.)
৩. আহসানুল বয়ান লি তাফসীরিল কুরআন, কৃত. আল্লামা আবদুল মুস্তফা আল-আযহারী। (ওফাত-১৯৮৯ খ্রি.)
৪. তাফসীরে নুরুল ইরফান, কৃত. আল্লামা মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী। (ওফাত-১৯৭১খ্রি.)
৫. তাফসীরে নাঈমী, কৃত. আল্লামা মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী। (১৫ খন্ড)।
৬. খোলাসাতুত্ তাফাসীর, কৃত. আল্লামা মুফতি খলিল আহমদ খান বরকাতি। (ওফাত-১৯৮৪খ্রি.)
৭. তাফসীরে হাছানাতি, কৃত. আল্লামা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ আহমদ কাদেরী। (ওফাত-১৯৮০ খ্রি.)
৮. তাফসীরে নবভী, কৃত. আল্লামা মুহাম্মদ নবী বখশ হালওয়াযী নক্সবন্দি। (ওফাত-১৯৪৪খ্রি.)
৯. ফুয়ূজুর রহমান, উদু তরজমা-রুহুল বয়ান। কৃত. আল্লামা ফয়েজ আহমদ ওয়েসী।
১০. নজুমুল ফুরকান মিন তাফসীরে আয়াতিল কুরআন, কৃত. আল্লামা মুফতি আবদুর রাজ্জাক।
মুজতাহিদ ফকীহগণের পুরোধা, খোদাপ্রদত্ত অনন্য তীক্ষè মেধা ও প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলায়হিকে আল্লাহ্ তা‘আলা অসাধারণ যোগ্যতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন অদ্যাবধি তাঁর সমকক্ষ দ্বিতীয়জন হয়নি। বেলায়তের উজ্জ্বল নক্ষত্র তরীক্বত জগতের জ্যোতিস্ক সৈয়্যদানা আবদুল কাদের জিলানী শাহেনশাহে বাগদাদকে আল্লাহ্ তা‘আলা আলোকবর্তিকারূপে সৃষ্টি করেছেন কিয়ামত অবধি তাঁর সমকক্ষ আর আসবে না। এভাবে আল্লাহ্ তা‘আলা ইমাম আহমদ রেযা থেকে দ্বীন ও মিল্লাতের বিশেষত: তরজমা কুরআনের এমন খিদমত নিয়েছেন, যে তরজমার পর মুসলিম উম্মাহর ঈমান আক্বিদা সংরক্ষণের জন্য অন্য কোন তরজমার প্রয়োজন হয় না। উর্দু ভাষার এ তরজমা বর্তমান বিশ্বের প্রায় ১৫টির অধিক ভাষায় (বাংলাসহ) অনূদিত হয়ে বিশ্বব্যাপী সহীহ্ আক্বিদা তথা আহলে সুন্নাতের মতাদর্শ প্রচার ও মুসলমানদের অন্তরে খোদাভীতি নবীপ্রেম, আহলে বায়তে রসূলের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা, সাহাবায়ে কেরামের প্রতি যথাথ সম্মান প্রদর্শন ও মুজতাহিদ ইমামগণের যথার্থ অনুসরণ তথা আউলিয়ায়ে কেরাম ও বুযুর্গানে দ্বীনের শ্রদ্ধা নিবেদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও এ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। মহান আল্লাহ্ তা‘আলা প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের ওসীলায় আমাদের ঈমান আক্বিদা সুরক্ষায় কানযুল ঈমানের মাধ্যমে উপকৃত হওয়ার সৌভাগ্য নসীব করুন। আমিন।
[নোট: প্রবন্ধটি করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, আ’লা হযরত গবেষক, কানযুল ঈমান’র উপর পিএইচডি অর্জনকারী প্রথম ব্যক্তিত্ব, মা’রেফে রেযা মাসিক (উর্দু) পত্রিকার সম্পাদক, ইদারায়ে তাহকীকাতে ইমাম আহমদ রেযা ইন্টারন্যাশনাল’-এর চেয়ারম্যান ড. মজিদ উল্লাহ্ কাদেরী লিখিত, ‘ইমাম আহমদ রেযা কা তরজমায়ে কুরআন কানযুল ঈমান তারিখ কী আয়েনে মে’ উর্দু প্রবন্ধের নির্বাচিত অংশ অবলম্বনে অনূদিত]

লেখক: অধ্যক্ষ, মাদরাসা-এ তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল, বন্দর, হালিশহর, চট্টগ্রাম।