মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল- চট্টগ্রাম। প্রশ্ন: যদি কোন ব্যক্তি সারারাত না ঘুমায় তাহলে কি তাহাজ্জুদ নামায পড়লে হবে না? ঘুম কি শর্ত?
উত্তর: তাহাজ্জুদ শব্দের অর্থ জাগ্রত হওয়া, ঘুম থেকে উঠা ইত্যাদি এশার নামাযের পর নিদ্রা বা ঘুম হতে রাতে জাগ্রত হয়ে যে নামায তাহাজ্জুদের নিয়তে আদায় করা হয় সেটাই তাহাজ্জুদের নামায। এ প্রসঙ্গে হাদীসে পাকে উল্লেখ রয়েছে-
عن ابن عباس رضى الله عنه قال كان النبى صلى الله عليه وسلم اذا قام من الليل يتهجد [رواه البخارى]
অর্থাৎ প্রখ্যাত সাহাবী রঈসুল মুফাসসেরীন হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম রাতে যখন জাগ্রত হতেন তিনি তাহাজ্জুদের নামায পড়তেন।
আর বিনা নিদ্রায় বা রাতে না ঘুমিয়েও এশার নামাযের আগে পরে নফল নামায আদায় করা যায় তাতে কোন অসুবিধা নেই। বিনা নিদ্রায় রাত জেগে নামায আদায় করাকে সালাতু কিয়ামুল লাইল বলা হয়। তাছাড়া কেউ যদি নিদ্রায় গিয়েও সারারাত নামায আদায়ের সাওয়াব লাভ করতে চায় এক্ষেত্রে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামা’র এ হাদীস শরীফ খানা প্রণিধানযোগ্য। যেমন-
عن عثمان بن عفان سمعت رسىل الله صلى الله عليه وسلم يقول من صلى العشاء فى جماعة فكانما قام نصف الليل ومن صلى الصبح فى جماعة فكانما صلى الليل كله [رواه مسلم]
অর্থাৎ আমিরুল মু’মিনীন হযরত ওসমান ইবনে আফফান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি ইশার নামায জামা‘আত সহকারে পড়ল সে যেন অর্ধরাত অবধি নামায পড়ল। আর যে ব্যক্তি ফজরের নামায জামাআতে পড়ল, সে যেন সারারাত নামায পড়ল। [সহীহ্ মুসলিম শরীফ, সূত্র. রিয়াদুস্ সালেহীন, পৃ. ৪৩১, হাদীস নং-১০৭১] উপরোক্ত হাদিসে পাক হতে প্রমাণিত হয় যে, যথাসময়ে ফজর ও এশার নামায জমাত সহকারে আদায় করলে আল্লাহ্ তা‘আলা দয়া ও অনুগ্রহ করে সারারাত ইবাদত বন্দেগী করার সাওয়াব দান করবেন। সুতরাং দাওয়াত-ই খায়র ইজতিমা তোহফার ২৯নং পৃষ্ঠায় নামাযে তাহাজ্জুদ সম্পর্কে যে মাসআলা লেখা হয়েছে তা ঠিক আছে।
[মিরআতুল মানাজিহ শরহে মিশকাতুল মাসাবিহ,কৃত. হাকিমুল উম্মত মুফতি আহমদ ইয়ার খাঁন ঈমী, রহ.]