শিয়ারা জাহান্নামের কুকুর- অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার

শিয়ারা জাহান্নামের কুকুর- অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার

শিয়ারা জাহান্নামের কুকুর-
অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার
===
সাবধান! হঠাৎ করে শিয়া’রা তৎপর হয়েছে। ঈমান বাঁচাতে সচেতন হোন, চারপাশে খবর রাখুন। হাদিস শরিফে ৭৩ দলের মধ্যে ৭২ দলকে জাহান্নামি বলা হয়েছে, ওই জাহান্নামি দলগুলোর মধ্যে শিয়ারা শুধু পুরোনো নয়, বরং জঘন্য আক্বিদার বাতিল ফিরকা। বড়পীর, গাউসুল আযম শায়খ আবদুল কাদের জিলানী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি, আজ থেকে নয়শত বছর পূর্বে লিখিত তাঁর ‘গুনিয়াতুত তালেবীন’ কিতাবে এদেরকে ‘জাহান্নামের কুকুর’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এবং এই কুকুরদের জঘন্যতম দলটি ইরানের ‘খোম’ নগর হতে বের হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। ৮০’র দশকে তথাকথিত ইমাম খোমেনির আবির্ভাব এবং ইরানে শিয়া সরকার প্রতিষ্ঠা মূলত: গাউসে পাকের সেই ভবিষ্যদ্বাণীরই বাস্তবায়ন। ঠিক যেমন, হাদিস শরিফে, নজদ থেকে ‘শয়তানের শিং’ বের হবার যে উল্লেখ রয়েছে, তা পুরোপুরি বাস্তবে রূপ নেয় ১৯৩২ সনের ২৩ সেপ্টেম্বর, নজদের নাম রিয়াদ রেখে, নজদীদের হাতে, ইহুদীবাদের নীলনক্সার ওহাবী রাষ্ট্র ‘সউদী আরব’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। মাত্র ৮৫ বছরে, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়, সউদী আরব যেভাবে বিশ্বব্যাপি তাদের ওহাবীবাদকে ইসলামের নামে ব্যাপকভাবে চালিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে, আজ একই কায়দায় গত তিন যুগ ধরে ইরান রাষ্ট্রের টাকা ও সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতায় এই জঘন্য শিয়া মতবাদটি দুনিয়া ব্যাপি ছড়িয়ে দিতে প্রাণপণ প্রয়াস চালাচ্ছে। যেহেতু, সুন্নি-সূফিবাদী মুসলমানরা আহলে বাইতের প্রতি নিজেদের অকৃত্রিম ভালবাসা লালন করে, তাই শিয়া’রাও নিজেদেরকে আহলে বাইত প্রেমিক সাজিয়ে সুন্নি দরবার, প্রতিষ্ঠান, সংগঠনগুলোতে তাদের জঘন্য আক্বিদাগুলো প্রচারের সুযোগ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে, কেউ কেউ নিজেদের আকাবিরের ঐতিহ্যগতভাবে অনুশীলিত সুন্নি আক্বিদার পরিপন্থী অবস্থান নিয়ে শিয়াদের বদ আক্বিদা পোষণ শুরু করেছে এবং গোপনে গোপনে অন্যদের কাছেও তা সংক্রমিত করে ফেলছে। তাদের কেউ কেউ এখন শিয়াদের সূরে কথা বলছে হযরত আবু বকর, হযরত উমর, হযরত ওসমান- তাঁরা সবাই নাকি মুনাফিক ছিলো, (নাউজুবিল্লাহ্)
আবার কেউ বলছে, ‘সূরা নাস, সূরা ফালাক্ব, এগুলো আল্লাহর কালাম নয়।?’ (নাউজুবিল্লাহ্)। আরো বহু জঘন্য শিয়া আক্বিদা আমাদের সুন্নি সমাজের কিছু পথভ্রষ্ট লোকের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। যেহেতু কারবালার ঘটনায় ইমামে আলী মকাম হযরত হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর হৃদয়বিদারক শাহাদাতের ঘটনাটি দুষ্ট মুরতাদের কারণে ঘটেছিল, তাই একে অজুহাত হিসেবে নিয়ে, এরা সুকৌশলে এজিদের পিতা হযরত আমিরে মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুকে দোষারোপ করে, তাঁকে তথাকথিত মুনাফিক হিসেবে প্রচার করার ধৃষ্টতা দেখায়, শিয়া মতবাদের প্রথম পাঠ শুরু করে। প্রাথমিক ডোজ হযরত আমিরে মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু প্রসঙ্গে। সফল হলে পরবর্তী পাঠ হিসেবে ইসলামের প্রথম তিন খলিফাকেই মুনাফিক হিসেবে সাব্যস্ত করার চেষ্টা চালায়। যেহেতু, ইসলামের মূল হলো আল্লাহর অহী। যা পবিত্র কোরান করিম হিসেবে সংরক্ষিত, এমনকি যার সংরক্ষণ স্বয়ং আল্লাহ্ পাক করবেন বলে কোরানে পাকে গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে।
শিয়ারা সে পাক কালাম নিয়েও নানা ধরনের সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি করে, মূলত ইসলামের বিরুদ্ধে, ইহুদীবাদী চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। তারা প্রচার করে যে, কোরানের আয়াত নাকি ১৭০০০ (সতের হাজার) ছিল, সে হিসেবে এখন আছে মাত্র এক তৃতীয়াংশ। বাকিগুলো নাকি হযরত ওসমান যিন নূরাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বাদ দিয়েছেন, পুড়িয়ে ফেলেছেন (নাউজুবিল্লাহ)। তারা আমাদের পবিত্র আহলে বাইতের প্রতি প্রেম-ভক্তিকে উস্কানি দিয়ে বিপদগ্রস্ত করবার জন্যই প্রচার করে যে, কোরান শরিফের যে আয়াতগুলো বাদ গেছে, সেগুলো নাকি আহলে বাইতের শা’ন ছিল (নাউজুবিল্লাহ্)।
মূলত, এই শিয়াদের আদি গুরু ছিল একজন ইহুদী, যার নাম আবদুল্লাহ্ ইবনে সাবা। মুসলমানদের সম্মুখে যুদ্ধে পরাজিত করতে ব্যর্থ ইহুদীরা সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত করে, তাদেরই মনোনীত ইবনে সাবাকে হযরত ওসমান রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর সময়ে আমাদের মধ্যে দল-উপদল তৈরীর দায়িত্ব দিয়ে পাঠায় এবং সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ ও শিক্ষা -প্রশিক্ষণ নিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মুসলমানদের মধ্যে বিভক্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে, প্রথমে হযরত ওসমান যিন নূরাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু শহীদ হন। তারপর, মাওলা আলী শেরে খোদা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর সাথে হযরত আমির মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর বিরোধে সিফ্ফিনের যুদ্ধ এবং হযরত আয়শা সিদ্দিক্বা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর বিরোধে জঙ্গে জামাল বা উস্ট্রের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যা হাজার হাজার সাহাবীর শাহাদাতের কারণ হয়। শুধু তাই নয়, মাওলা আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর শাহাদাতের ঘটনাটিও ছিল খারেজিদের হাতে এবং একই চক্রান্তের পরিণামে। এরি ধারাবাহিকহায় মূলত কারবালা এবং সাবায়ী’দের যারা প্রথমে রাফেজী নামে পরিচিত ছিল এতদিন, তারাই কারবালার পরে শিয়া নামে আত্মপ্রকাশ করল। এরা আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ‘হায় হোসাইন, হায় হোসাইন’ করে ১০ মহরম, কিন্তু মনে রাখবেন, আসলে এদের ‘মুখে শেখ ফরিদ, কিন্তু বগলের নিচে ইট’। এরা দাবি করে, তারা নাকি শিয়ানে আলি, অর্থাৎ হযরত আলীর প্রেমিক, অনুসারী অথচ এ দাবির উদ্দেশ্য অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং জঘন্য। শিয়ারা নিজেদের আলীর প্রেমিক দাবি করে প্রথম তিন খলিফা হযরত সিদ্দিকে আকবর, হযরত ফারুক-ই আযম, হযরত ওসমান যিন নূরাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমসহ বহু জলিলুল কদর সাহাবীদের বিরুদ্ধে সমালোচনার সুযোগ নেয়, তাঁদের গালিগালাজ করে, এমনকি মুনাফিক পর্যন্ত বলতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়না।
শুধু তাই নয়, হযরত আলীর এ তথাকথিত প্রেমিক, শিয়াদের জঘন্য আক্বিদা হলঃ আল্লাহ্, জিব্রাইলকে অহী দিয়ে পাঠিয়েছিলেন হযরত আলি রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর কাছে কিন্তু ভুল করে তিনি চলে যান মুহম্মদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের) কাছে। এদের কলেমা আমাদের চেয়ে পৃথক, তারা কলেমায় ‘আলি খলিফাতুল্লাহ্’ নামে একটি মনগড়া অংশ যোগ করে এদের নামাজ, আজান, ফরায়েজ সহ শরিয়তের বহুকাজ আমাদের চেয়ে পৃথক। তাই, এদেরকে মুসলমান, না বলে কাদিয়ানিদের মত পৃথক ধর্মের অনুসারী বলে মনে না করার উপর যেমন, চট্টগ্রাম জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসার তৎকালিন শেখুল হাদিস, আল্লামা ফজলুল করিম নক্সবন্দী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলাহির একটি বইয়ের নাম ছিল-‘শিয়া ধর্ম’।
শিয়ারা মুসলমানদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টির উদ্দেশ্যে গভীর চক্রান্ত আরম্ভ করেছে। তাঁরা এ দেশের কিছু জ্ঞানপাপী শিক্ষিতদের এজেন্ট নিয়োগ দিয়েছে। তারা আমিরে মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর’র শানে বিভ্রান্তি ছড়ায় সুবিধাপ্রাপ্ত এজেন্টরা এবং সফলতা পেলে, পরিস্থিতি বুঝে, ক্ষেত্র-পাত্র বিশেষে অপরাপর জঘন্য আক্বিদা, যেমন কোরান করিম, হাদিস শরিফ, সাহাবা-খোলাফায়ে রাশেদা, মাযহাব সহ বিভিন্ন বিষয়কে বিতর্কিত করে দেয়। বিদায় হজ্জ শেষের গদীরে খোম ঘোষণাকে (আমি যার মাওলা আলি তার মাওলা-হাদিস) অতিরঞ্জিত করে, অপব্যাখ্যার আশ্রয় নেয়, এবং নিজেদের আলি প্রেমিক (শিয়ানে আলি) দাবি করে, এবং বলে যে, একমাত্র হযরত আলিই খলিফা হবার যোগ্য ছিলেন, কিন্তু প্রথম তিন খলিফা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে, তাই তারা আসলে মুনাফিক ছিলেন (নাউজুবিল্লাহ্)।
আসলে তারা ইহুদী চক্রের দালাল হিসেবে, ইসলামের মধ্যে সন্দেহ প্রবেশের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অনবরত। তারা ইহুদীদের তৈরী করা ইসলামের ইতিহাস থেকে তথ্য নিয়ে তা ছড়িয়ে দিচ্ছে। ইহুদীদের হাতে অত্যন্ত সূক্ষ্মতর কারসাজিতে তৈরী হয়েছে ইসলামের ইতিহাস। এ সব ইতিহাস হিব্রু থেকে ইংরেজি এবং অন্যান্য ভাষায় রূপান্তরিত হয়ে আজ ইসলামের বিরুদ্ধে দল-উপদল এবং নাস্তিক্যবাদ সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে। তাই বলা হয় ইসলামের ইতিহাসের ছাত্ররাই নাকি বেশি নাস্তিক হয়, বা ইসলাম বিরোধী হয়ে যায়। কারণ, প্রকৃত ইতিহাস যাঁচাই-বাছাই করে সত্যতা খোঁজার অবসর এবং ঈমানি-জেহাদি প্রেরণা, গবেষণার মানসিকতা সবার থাকেনা। তাই, আমাদের জন্য আজ দরকার কোরান-হাদিস, আহলে বায়ত-সাহাবী এবং সলফে সালেহীন, মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কেরামের অনুসরন, বিশেষত ইমামে আযম আবু হানিফা, গাউসুল আযম দস্তগীর, দাতা গঞ্জেবখস, খাজা গরীবনওয়াজ মঈনুদ্দিন চিশতি, জালালুদ্দিন রুমি, মুজাদ্দিদ আল ফেসানি, গাউসুল আজম মাইজভান্ডারি, ইমাম আ’লা হযরত, শাহানশাহে সিরিকোট, ইমাম শেরে বাংলাসহ এখনো বিদ্যমান নির্ভরযোগ্য সুন্নি আলেমদের পথ গ্রহণ। আমরা এ হাজার বছরের ইসলামের ইতিহাসে যাঁদেরকে সূফি-দরবেশ, ইমাম, অলী, গাউস জেনে এসেছি উনাদের কেউ শিয়াদের জঘন্য আক্বিদাগুলো পোষণ করেছেন এ রকম একটি নজীরও পাওয়া যাবেনা। এরপরও, ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’ বলে কথা টাকা আর নারী সঙ্গ, কিংবা মাজহাবের ইমাম, ত্বরিকতের প্রসিদ্ধ ইমামদের চেয়ে নিজেকে বেশি যোগ্য মনে করার অহংকার এমন অধ:পতনের কারণ হতে পারে অনেকের ক্ষেত্রে। এখন কেউ কেউ গাউসে পাককে পর্যন্ত কাফের বলে মন্তব্য করে বসেছে। হানাফি, শাফেয়ি ইত্যাদি মাজহাবের অনুসরনকেও নিষেধ বলে দাবি করছে। লা মাজহাবি একদল আছে, যারা ওহাবীদেরই কট্টর অংশ, কিন্তু দাবি করে আহলে হাদিস তাদেরও উদ্দেশ্য হল মুসলমানদেরকে স্বীকৃত চার মাজহাবের ইমামের অনুসরন থেকে বের করে আনা, যাতে সহজে বিপদগামী করা যায়। একই উদ্দেশ্য শিয়াদেরও। এরাও মাজহাব বিরোধি। এমনকি এরা প্রসিদ্ধ কোন ত্বরিকার ও সমর্থক নয়, যদিও আমাদের সুন্নি সমাজ ও সূফি দরবারিদের কাছে নিজেদের কট্টর সূফিবাদি হিসেবে তুলে ধরে, যাতে সহজে আমাদের ঘনিষ্ঠতা পাওয়া যায়। আল্লামা রুমির মসনবী শরীফে শিয়াদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। তাতে আহলে সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, এবং বলা হয়েছে, যারা এই সুন্নি জামাত হতে বিচ্ছিন্ন হবে তারা নিজেদের হিং¯্র জানোয়ারের কাছে হাওলা করবে। [মসনবী]
গাউসে পাক তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে লড়েছেন এবং লিখে গেছেন। এমনকি তাঁরও আগে এসেছিলেন হযরত দাতা গঞ্জেবখশ আলী হাজভিরি রহমাতুল্লাহি আলায়হি, যাঁর মাজারে চিল্লা করেছিলেন খাজা বাবা মঈনুদ্দিন চিশতি, আজমির আসবার পথে, এবং যাঁর শা’নে খাজা সাহেবের লেখা কাসিদা আজ এই উপমহাদেশে সমধিক পরিচিত, ‘গঞ্জে বখশে ফয়জে আলম, মাযহারে নূরে খোদা ‘নাকেসাঁরা পীরে কামেল, কামেলাঁ-রা রাহনুমা’ ওই সে দাতা গঞ্জেবখ্শ রহমাতুল্লাহি আলায়হি লিখিত বিখ্যাত তাসাউফ গ্রন্থ ‘কাশফুল মাহজুব’ এর পাতায় পাতায় আছে সুন্নি আক্বিদার শিক্ষা এবং সিদ্দিকে আকবর, ফারুকে আযম, ওসমান যিন নূরাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমের প্রশংসা, মর্যাদা এবং তাসাউফ শিক্ষার কথা, যা শিয়াদের খন্ডন হিসেবে প্রণিধানযোগ্য। চিশতিয়া ত্বরিকার প্রসিদ্ধ শেখ এবং খাজা বাবার খলিফা পরম্পরায় সবাই শিয়া বিরোধি এবং সুন্নি ছিলেন। তাঁরা সবাই হানাফি মাজহাবের অনুসারি ছিলেন এবং তাঁদের কিতাবে উক্ত খোলাফায়ে রাশেদাগণের উচ্চ মর্যাদা লিপিবদ্ধ হয়েছে, যা হযরত বখতিয়ার কাকি, বাবা শেখ ফরিদ, নিজামুদ্দিন আউলিয়া রহমাতুল্লাহি আলায়হির ভাষ্য এবং সংকলন রাহাতুল কুলুব, এবং রাহাতিল মুহিব্বীন পড়লে যে কেউ বুঝতে সক্ষম। মুজাদ্দিদ আলফেসানি রহমাতুল্লাহি আলায়হি শুধু দ্বীনি ইলাহির বিরুদ্ধে নয়, শিয়াদের বিরুদ্ধেও লড়েছেন এবং লিখেছেন। অন্যান্য মুজাদ্দিদগণও শিয়াদের বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন যেমন, শাহ্ আবদুল আজিজ মুহাদ্দিস দেহলভী, ইমাম আ’লা হযরত, এমনকি সম্রাট আওরঙ্গজেব আলমগীরও। মুফতি আহমদ এয়ার খাঁন নঈমী রহমাতুল্লাহি আলায়হি থেকে শুরু করে আমাদের সময়ের হাফেজ আল্লামা অধ্যক্ষ আবদুল জলিল রহমাতুল্লাহি পর্যন্ত শিয়াদের বিরুদ্ধে কিতাব লিখে গেছেন। এরপরও আমাদের বিভ্রান্ত হবার কারণ থাকতে পারেনা।
হযরত মাওলানা সৈয়দ দেলওয়ার হোসাইন মাইজভান্ডারি শিয়াদের বিষয়ে সম্পর্কে বলেন, প্রবাদ আছে যে, ‘ওহাবীদের মধ্যে অলী হয়না, আর শিয়াদের মধ্যে হাফেজ হয়না’-এর কারণ, আমরা ইতোমধ্যে বলেছি যে, শিয়ারা কোরান শরিফ বিশ্বাস করেনা, সুতরাং এ পবিত্র গ্রন্থ তারা মুখস্থ করবে কেন? অথচ, কাদেরিয়া -চিশতিয়া সহ সব ত্বরিকায় অসংখ্য অলি দরবেশ হাফেজ ছিলেন। তাহলে এরা কারা? যারা কাদেরি, চিশতি, মাইজভান্ডারি নাম ব্যবহার করে শিয়া আক্বিদা পোষন করে! এরা মূলত উক্ত সব সহীহ্ এবং জনপ্রিয় সিলসিলাহ ধ্বংস করার কাজে হাত দিয়েছে ইরানের ফাঁদে পা দিয়ে। এদের যত। তাড়াতাড়ি সনাক্ত করা যাবে তত দ্রুত বাঁচা যাবে। ঘরের ইঁদুর বেড়া কাটছে, দ্রুত ওষুধ ছিটান।
পরিশেষে, পাক-ভারতের বিখ্যাত ওয়ায়েজ, আওলাদে রাসুল, আল্লামা সৈয়্যদ হাশেমী মিয়া আশরাফি ‘র ভাষায় বলি, ওরে শিয়ারা তোমরা নয়, আমরাই আহলে বাইত ভক্ত। আমরা ইমাম হাসান-হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা উভয়ের অনুসারি। আমরা আমিরে মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুকে মানি, কারণ হযরত ইমাম হাসান রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু তাঁকে মেনে নিয়ে সমঝোতা করেছেন, আর আমরা এজিদকে মানিনা, কাফের, মুরতাদ এবং লানতের উপযোগি মনে করি, কারণ হযরত ইমাম হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু তাকে মানেননি, তার সাথে যুদ্ধকে বেছে নিয়েছেন’। সুতরাং হে ইসলামের শত্রু শিয়ারা, তোমরা সীমালংঘনকারী, তোমরা কি ইমাম হাসান রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর চেয়েও বেশি আলী প্রেমিক?
হযরত ইমাম হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু শির দিয়েছেন, কিন্তু হাত দেননি এজিদের সাথে আপোষ করেননি মিথ্যার সাথে। নাকি, হযরত ইমাম হাসান রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু মিথ্যার সাথে আপোষ করেছিলেন? তাই, হযরত আমিরে মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুকে মেনে নেওয়া, এবং এজিদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোই সঠিক পথ, যার অপর নাম সুন্নিয়ত। বলা বাহুল্য, এটাই হোসাইনি আদর্শ। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, শিয়াদের মূল টার্গেট এশিয়ার অন্যতম প্রধান দ্বীনি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা, ঢাকার কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া আলিয়া মাদরাসা, মাইজভান্ডার দরবার শরিফ সহ বিভিন্ন দায়রা, খানকাহ্, দরগাহ্ ও সুন্নি মাদরাসা, যার বহু আলামত ইতোমধ্যেই চিহ্নিত হয়েছে। তাই, আমাদেরকেই বেশি সচেতন পদক্ষেপ নিতে হবে এদের বিরুদ্ধে। ইনশা-ল্লাহ্, চট্টগ্রাম জামেয়ার শীর্ষ আলেমরা ইতোমধ্যে শিয়াদের বিরুদ্ধে ভিডিও ম্যাসেজ দিয়ে সুন্নি মুসলমানদের সচেতন করার কাজ শুরু করেছেন। আশা করছি, অপরাপর মাদরাসা, এবং দরবার কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসবেন শীঘ্রই। প্রত্যেক দরবার, মাদরাসার নিজস্ব মাহফিলে, কনভেনশনে শিয়াদের আক্বিদা এবং অপতৎপরতা সম্পর্কে এখন প্রকাশ্যে বলা উচিৎ বলে আমি মনে করি। এখন দরকার হয়ে গেছে, খোলাফায়ে রাশেদগণের বুযুর্গীর কথা তুলে ধরে, তাঁদের বিরুদ্ধে শিয়াদের কুৎসা রটনার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া।
লেখক: প্রাবন্ধিক, গবেষক, যুগ্ম মহাসচিব-গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ।