প্রশ্নোত্তরে আক্বাইদ ও মাসাইল

প্রশ্নোত্তরে আক্বাইদ ও মাসাইল

প্রশ্নোত্তরে
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের
আক্বাইদ ও মাসাইল

লেখক
সৈয়দ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল-আযহারী
সহকারী অধ্যাপক, সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ।
খতীব, মুসাফির খানা জামে মসজিদ, নন্দনকানন, চট্টগ্রাম।

সম্পাদনা
মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান
মহাপরিচালক -আনজুমান রিসার্চ সেন্টার

প্রকাশনায়
আন্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট
[প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ] ৩২১, দিদার মার্কেট (৩য় তলা) দেওয়ান বাজার,

চট্টগ্রাম-৪০০০, বাংলাদেশ। ফোন : ০৩১-২৮৫৫৯৭৬,

প্রকাশকাল
১৫ জিলহজ্ব, ১৪৪০ হিজরী
০১ ভাদ্র, ১৪২৬ বাংলা
১৬ আগস্ট, ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ

সর্বস্বত্ত্ব প্রকাশকের

হাদিয়া: ৬০ /- (ষাট) টাকা (পৃষ্ঠা-২০৩)

সূচিপত্র

প্রথম অধ্যায়ঃ ওসীলা গ্রহণ ১০
০১. তাওয়াস্সুল বা ওসীলাহ্ ১১
০২. তাওয়াস্সুলের অর্থ কি? ১১
০৩. ওসীলার বৈধতার দলীল কি? ১২
০৪. ওফাতপ্রাপ্তদের ওসীলা নেওয়া বৈধ কিনা ১৪
০৫. ওফাতপ্রাপ্ত ওসীলা নেওয়ার বৈধতার প্রমান ১৫
০৬. সতর্কীকরণ ও মনযোগ আকর্ষণ ১৭
দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ সাহায্য প্রার্থনা ১৯
০৭. ইস্তিগাসাহ (সাহায্য প্রার্থনা)’র অর্থ ২০
০৮. আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো সাহায্য কামনা ২০
০৯. সাহায্য প্রার্থনার বৈধতার দলীল ২১
তৃতীয় অধ্যায়ঃ জীবিতদের প্রতি ওফাত প্রাপ্তদের সাহায্য করা ২৪
১০. মৃতদের পক্ষ থেকে জীবিতদের কোন উপকার পায় কিনা ২৫
১১. মৃতদের পক্ষ থেকে জীবিতদের কোন উপকার পায় এর দলীল ২৫
১২. নবীগণ আলাইহিমুস সালাম তাঁদের কবর শরীফ গুলোতে জীবিত কিনা ২৯
১৩. নবীগণ আলাইহিমুস সালাম তাঁদের কবর শরীফ গুলোতে জীবিত থাকার পক্ষে দলীল ২৯
চতুর্থ অধ্যায়ঃ বরকত হাসিল করা ৩২
১৪. আল্লাহর প্রিয়জনদের নির্দশন থেকে বরকত হাসিল করার বৈধতা ও এর প্রমাণ ৩৩
পঞ্চম অধ্যায়ঃ কবর যিয়ারত ৩৬
১৫. কবর যিয়ারত ও এর পক্ষের দলীল ৩৭
১৬. মহিলাদের কবর যিয়ারতের বিধান ৩৮
১৭. তিন মসজিদ ব্যতিত অন্যত্র সফর করা প্রসঙ্গে আলোচনা ৪০
ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ মৃতদের শ্রবণ শক্তি ৪১
১৮. মৃতরা কি অনুধাবন করতে পারে? ৪২
১৯. ‘আপনি কবরবাসীকে শুনতে পারবেন না’-এর মর্মার্থ কি? ৪৩
সপ্তম অধ্যায়ঃ মৃতদের রূহে সাওয়াব পৌঁছানো ৪৫
২০. মৃতদের প্রতি সাওয়াবের হাদিয়া পৌঁছানোর বিধান ৪৬
২১. মৃতদের উদ্দেশ্যে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের বৈধতার পক্ষে দলীল ৪৭
২২. ‘মানুষ তাই পাবে যা সে উপার্জন করে’-এর মর্মার্থ কি? ৪৯
অষ্টম অধ্যায়ঃ কবর প্রসঙ্গে ৫২
২৩. কবর স্পর্শ করা ও চুম্বন করার বিধান ৫৩
২৪. এর বৈধতার বিান ৫৩
২৫. কবর পাকা করা ও কবরের উপরে সমাধি (মাযার) নির্মাণের বিধান ৫৫
২৬. বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কবর পাকা করার নিয়ম প্রসঙ্গে আলোচনা ৫৬
২৭. কবরের উপর মাযার নির্মাণ সম্পর্কে ওলামায়ে কেরামের অভিমত ৫৮
২৮. ‘তালক্বীন’-এর বিধান ৫৮
২৯. হাদীস শরীফের আলোকে তালক্বীনের পদ্ধতি ৬০
নবম অধ্যায়ঃ আউলিয়া কেরাম ৬২
৩০. আউলিয়া কেরামের মাযারের নিকট পশু যবেহের বিধান ৬৩
৩১. আউলিয়া কেরামের উদ্দেশ্যে নযর-মান্নতের বিধান ৬৩
৩২. মৃতদের রূহে দান-খয়রাতের সাওয়াব পৌছেঁ ৬৪
দশম অধ্যায়ঃ শপথ ও মান্নত ৬৬
৩৩. আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো নামে শপথ করার বিধান ৬৭
৩৪. কবরবাসীর নামে শপথের বিধান ৬৭
একাদশ অধ্যায়ঃ আউলিয়া কেরামের কারামত ৬৯
৩৫. আউলিয়া কেরামের ওফাতের আগে ও পরে তাঁদের কারামত প্রকাশের স্ব প্রমান ও আলোচনা ৭০
৩৬. কারামত প্রমাণের দ্বিতীয় প্রকারের দলীল ৭০
দ্বাদশ অধ্যায়ঃ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আ‘লাইহি ওয়সাল্লামকে স্বপ্নে দেখা প্রসঙ্গে ৭৫
৩৭. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আ‘লাইহি ওয়সাল্লামকে জাগ্রতাবস্থায় দেখা সম্ভব কিনা ৭৬
৩৮. এর পক্ষের দলীল ৭৬
ত্রয়োদশ অধ্যায়ঃ হযরত খিদ্বির আলাহিস সালাম প্রসঙ্গে ৭৯
৩৯. হযরত খিদ্বির আলাইহিস্ সালাম জীবিত আছেন কিনা? ৮০
চতুর্দশ অধ্যায়ঃ পবিত্র কোরআন ও আল্লাহ তা‘আলার নাম দ্বারা আরোগ্য কামনা ৮২
৪০. ঝাড়ফুঁকের বিধান ও দলীল ৮৪
৪১. নিষিদ্ধ ঝাড়ফুঁক কোন গুলো? ৮৪
৪২. তাবীয ঝুলানো নিষিদ্ধ মর্মে বর্ণিত হাদিস শরীফগুলোতে কোন কোন তাবীয নিষিদ্ধ ৮৬
পঞ্চদশ অধ্যায়ঃ মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আ‘লাইহি ওয়সাল্লাম উদ্যাপন প্রসঙ্গে ৮৭
৪৩. মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আ‘লাইহি ওয়সাল্লাম উদ্যাপন উপলক্ষে মাহফিল আয়োজনের বিধান ৮৮
৪৪. বিদ‘আতের প্রকারভেদ ৮৮
৪৫. ‘বিদ’আত-ই হাসানাহ’ কি? ৮৯
৪৬. মন্দ বিদ‘আত কি? ৮৯
৪৭. মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আ‘লাইহি ওয়সাল্লাম উদ্যাপনের পক্ষে দলীল ৮৯
ষষ্ঠদশ অধ্যায়ঃ সমবেত কন্ঠে যিক্র ৯৪
৪৮. সমবেত কন্ঠে যিক্র করার বিধান- ৯৫
৪৯. এ আমলের উৎকৃষ্টতার পক্ষে প্রমান- ৯৫
৫০. উচ্চস্বরে যিক্র করার পক্ষে দলীল ৯৬
সপ্তদশ অধ্যায়ঃ আহ্লে বায়তের প্রতি ভালবাসা ৯৯
৫১. আহ্লে বায়তের প্রতি ভালবাসার গুরুত্ব আর তাঁদের সাথে শত্রুতার বিপক্ষে হুশিয়ারী ১০০
৫২. হাদীস শরীফের আলোকে আহলে বায়তের প্রতি ভালবাসা ১০১
৫৩. আহলে বায়তের প্রতি শত্রুতা ও তাঁদেরকে কষ্ট দেওয়ার ভয়াবহ পরিণতি ১১২
৫৪. আহলে বায়তের মর্যাদা ১১৬
৫৫. হাদীস শরীফের আলোকে আহলে বায়তের ফযীলত বা মর্যাদা ১২১
৫৬. এ প্রসঙ্গে একটি হাদীস শরীফের মর্মার্থ ১২৬
৫৭. সাহাবা-ই কেরামের ফযীলত ১২৯
৫৮. পবিত্র কোরআন শরীফের আলোকে সাহাবা-ই কেরাম ১৩৩
পবিত্র হাদীস শরীফের আলোকে সাহাবা-ই কেরাম ১৩৪
৫৯. সাহাবা-ই কেরামের বিরুদ্ধে সমালোচনা হারাম ১৩৯
৬০. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আ‘লাইহি ওয়সাল্লাম-এর পিতা মাতার ঈমান প্রসঙ্গে আলোচনা ১৪৬
৬১. রাসূলে কারীমের পবিত্র বংশনামা ১৫২
৬২. হুযুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আ‘লাইহি ওয়সাল্লাম-এর পিতা -মাতা ও বংশনামার পূর্বপুরুষগণ তাওহীদ বিশ্বাসী ছিলেন ১৫৫
৬৩. হযরত আবদুল্লাহ ও হযরত আমেনা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা ১৫৭
৬৪. হযরত খাজা আবদুল মুত্তালিব ১৫৮
৬৫. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আ‘লাইহি ওয়সাল্লাম-এর নূর ১৬১
৬৬. হুযুর-ই আকরাম নূর হবার পক্ষে দলীল ১৬১
৬৭. তাফসীর কারদের অভিমত ১৬২
৬৮. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আ‘লাইহি ওয়সাল্লাম-এর ইলমে গায়ব ১৬৬
৬৯. ইল্মে গায়বের পক্ষে দলীল ১৬৬
৭০. হাদীস শরীফের আলোকে ইলমে গায়ব ১৬৭
৭১. বিজ্ঞ আলেমদের দৃষ্টিতে ইল্মে গায়ব ১৭১
৭২. বৃদ্ধাঙ্গুল চুম্বনের বিধান ১৭৫
৭৩. এর পক্ষের দলীল ১৭৫
৭৪. আযানের পূর্বে সালাত ও সালাম পাঠ প্রসঙ্গে ১৭৬
৭৫. দাফনের পরে কবরে আযান দেওয়া ১৮৪
৭৬. এর পক্ষে প্রমাণ ১৮৪
৭৭. জানাযার নামাজের পর দো‘আ করা ১৯০
৭৮ বরকত হাসিলের জন্য খাদ্য-পানীয়ের উপর ফাতিহা পাঠ ১৯৪
৭৯. শরীয়তে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আ‘লাইহি ওয়সাল্লাম-এর ইখতিয়ার ১৯৬

মুখবন্ধ

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيْمِ

নাহ্মাদুহূ ওয়ানুসাল্লী ওয়া নুসাল্লিমু ‘আলা হাবীবিহিল কারীম
ওয়া ‘আলা- আ-লিহী ওয়া সাহ্বিহী আজমা‘ঈন

সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর এবং দুরূদ ও সালাম তার প্রিয় বান্দা, রসূল ও হাবীব সায়্যিদুনা মুহাম্মদ মোস্তফার উপর। যিনি মূল ও শাশ্বত নবী অনুরূপভাবে তাঁর সকল বংশধর, সাহাবা ও আউলিয়া-ই কেরামের উপরও আ-মী-ন।
ইসলামের একমাত্র সঠিক আদর্শ ও রূপরেখা হচ্ছে- ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত’। ‘ইলাহিয়্যাত’ বা আল্লাহ সম্পর্কে ঈমানগত বিষয়াদি, ‘রিসালাত’ বা নবী ও রাসুলগণ সম্পর্কিত বিষয়াদি, ‘মালাকিয়াত’ বা ফেরেশতা সম্পর্কিত বিষয়াদি, কবর, হাশর, যিয়ারত, ঈসালে সাওয়াব বা ওরস- ফাতিহা, দো‘আ-মুনাজাত, জানাযা, আযান ও সাহায্য প্রার্থনা ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ে আহলে সুন্নাতের আক্বাইদ এবং এতদসম্পর্কিত বিভিন্ন আমল সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ কিতাব, সুন্নাহ, ইজমা, ক্বিয়াস তথা ইসলামের চতুর্দলীলে অকাট্যভাবে বর্ণিত হয়েছে এবং বিশ্বের সত্যপন্থীরা ও পরকালের সাফল্যপ্রত্যাশিরা তদানুযায়ী ধর্মবিশ্বাস পোষণ ও আমল করে আসছেন। পক্ষান্তরে, ক্রমান্বয়ে এর অনেক বিষয়ে হতভাগা বাতিলপন্থীরা বিরোধিতা করে আসছে এবং নানা ধরণের খোড়াঁ যুক্তি ও তথাকথিত প্রমানাদি পেশ করার ও ধৃষ্টতা দেখিয়ে আসছে। হাদিস শরীফের ভাষায়- তাদের বিভিন্ন নামের ফির্ক্বার সংখ্যা বাহাত্তরে দাড়িঁয়েছে। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে, একটি মাত্র নাজাতপ্রাপ্ত দল ‘আহলে স্ন্নুাত ওয়াল জামা‘আত’ তাদের খন্ডন এবং সঠিক অভিমতটা তুলে ধরতে ও প্রতিষ্ঠা করতে সোচ্ছার হয়ে আসছেন।

সুতরাং বর্তমান যুগে মাথাচাড়া দেওয়া বিভিন্ন বাতিল ফির্ক্বার উদ্ভাবিত সুন্নী মতাদর্শ বিরোধী আক্বাইদ ও কার্যাবলী এক জায়গায় সংগ্রহ করে সেগুলোর জবাব বা খন্ডন প্রকাশ করা যুগের অন্যতম চাহিদা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলো প্রশ্নোত্তর আকারে বর্ণনা করলে পাঠক সমাজে সেগুলো অধিক হৃদয়গ্রাহী হয় বিধায় জনাব অধ্যাপক মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল আযহারী সত্তরাধিক বিষয় তার ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত’-এর আক্বাইদ ও মাসাইল’ নামের প্রামাণ্য পুস্তিকায় সন্নিবিষ্ট করেছেন, যা ‘আনজুমান এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট- প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ অতি যতœ সহকারে প্রকাশ করে পাঠক সমাজকে উপহার দিয়েছেন।

পুস্তকটিতে স্থান পাওয়া প্রতিটি প্রশ্নোত্তর সপ্রমাণ ও সহজে হৃদয়গ্রাহী। আশাকরি, পুস্তকখানা সম্মানিত পাঠক সমাজকে উপকৃত করবে। আর তাহলেই আমাদের এ প্রয়াসও স্বার্থক হবে। আল্লাহ্ পাক কবূল করুন! আ-মী-ন বিহুরমতে সাইয়্যেদিল মুরসালীন আলায়হি আফদ্বালুস সালাওয়াতি ওয়াত্ তাসলীম।

সালামান্তে

(মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান)
মহাপরিচালক, আন্জুমান রিসার্চ সেন্টার,
আলমগীর খানক্বাহ শরীফ, ষোলশহর, চট্টগ্রাম

প্রথম অধ্যায়

তাওয়াস্সুল বা ওয়াসীলাহ্

তাওয়াস্সুল বা ওয়াসীলাহ্
প্রশ্ন : নবীগণ ও ওলীগণের ওসীলাহ্ অবলম্বন করার হুকুম কি?
উত্তর: তাঁদের ওয়াসীলাহ্ এবং দুনিয়া ও আখিরাতের সমস্যা সমাধানে তাদের সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করা শরীয়তসম্মত। এর উপরে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর তাঁরা হলেন মুসলমানদের বৃহত্তর ও সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী, তাই তাঁদের ইজমা’ (ঐকমত্য) শরীয়তের দলীল ভুল-ভ্রান্তি থেকে তাঁদের সুরক্ষিত হবার কারণে।
ইমাম আহমদ এবং ত্বাবরানী প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন,
عَنْ أَبِي بَصْرَةَ الْغِفَارِيِّ صَاحِبِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: سَأَلْتُ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ أَنْ لَا يَجْمَعَ أُمَّتِي عَلَى ضَلَالَةٍ فَأَعْطَانِيهَا، ” (১)
আমি আমার রবের নিকট এ প্রার্থনা জানালাম যে, আমার উম্মত যেন গোমরাহীতে ঐক্যমত না হয়, তখন আমাকে আমার প্রার্থীত বস্তু দিয়ে দিলেন।
” مَا رَآهُ الْمُسْلِمُونَ حَسَنًا فَهُوَ عِنْدَ اللَّهِ حَسَنٌ “( )

প্রশ্ন : তাওয়াস্সুলের অর্থ কি?
উত্তর: তাওয়াস্সুল অর্থ হলো আল্লাহ্ তা‘আলার প্রিয়জনদের আলোচনার মাধ্যমে বরকত হাসিল করা। যেহেতু প্রমাণিত আছে যে, নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা স্বীয় বান্দাদের উপর দয়াপরবশ হন তাঁদের ওসীলায়। তাই তাদের ওসীলাহ্ গ্রহণ করা মানে হলো, তাঁদের মাধ্যম অবলম্বন করা অর্থাৎ তাঁরা সমস্যার সমাধান ও লক্ষ্য অর্জনে আল্লাহ্ তা‘আলার প্রতি অবলম্বন ও মাধ্যম। কেননা তাঁরা হলেন আল্লাহ্ তা‘আলার কাছে আমাদের চেয়ে অধিক নৈকট্যপ্রাপ্ত। তাই তিনি তাঁদের দো‘আ ক্ববুল করেন এবং তাঁদের সুপারিশ গ্রহণ করেন।
হাদিসে কুদসীতে আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللَّهَ قَالَ: مَنْ عَادَى لِي وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالْحَرْبِ وَمَا تَقَرَّبَ إِلَيَّ عَبْدِي بِشَيْءٍ أَحَبَّ إِلَيَّ مِمَّا افْتَرَضْتُ عَلَيْهِ وَمَا يَزَالُ عَبْدِي يَتَقَرَّبُ إِلَيَّ بِالنَّوَافِلِ حَتَّى أُحِبَّهُ فَإِذَا أَحْبَبْتُهُ كُنْتُ سَمْعَهُ الَّذِي يَسْمَعُ بِهِ وَبَصَرَهُ الَّذِي يُبْصِرُ بِهِ وَيَدَهُ الَّتِي يَبْطِشُ بِهَا وَرِجْلَهُ الَّتِي يَمْشِي بِهَا وَإِنْ سَأَلَنِي لَأُعْطِيَنَّهُ وَلَئِنْ اسْتَعَاذَنِي لَأُعِيذَنَّهُ وَمَا تَرَدَّدْتُ عَنْ شَيْءٍ أَنَا فَاعِلُهُ تَرَدُّدِي عَنْ نَفْسِ الْمُؤْمِنِ يَكْرَهُ الْمَوْتَ وَأَنَا أَكْرَهُ مَسَاءَتَهُ( )
যে আমার ওলীর বিরুদ্ধাচারণ করে আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলাম, আমার বান্দা তার উপর নির্ধারিত ফরযসমূহ আদায়ের চেয়ে আমার নিকট অধিক প্রিয় আর কোন কিছুর মাধ্যমে আমার নৈকট্য লাভ করতে পারে না, আর আমার বান্দা আমার অধিকতর নৈকট্য লাভ করতে থাকে নফল ইবাদতের মাধ্যমে, ফলে আমি তাকে ভালবেসে ফেলি, আর যখন আমি তাকে ভালবাসি তখন আমি তার ওই কর্ণ হয়ে যাই যা দ্বারা যে শুনতে পায়, তার ওই চক্ষু হয়ে যায় যা দ্বারা সে দেখতে পায়, তার ঐ হাত হয়ে যাই যা দ্বারা সে স্পর্শ করে এবং তার ওই পা হয়ে যাই যা দ্বারা সে চলে। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় তালাশ করে আমি তাকে অবশ্যই আশ্রয় দান করি।( )

প্রশ্ন : ওসীলাহর বৈধতার দলীল কি?
উত্তর: এর বৈধতার ক্ষেত্রে অসংখ্য বিশুদ্ধ ও সুস্পষ্ট হাদিসসমূহ বর্ণিত, তৎমধ্যে
কয়েকটা উল্লেখ করার প্রয়াস পাচ্ছি-
১. হযরত ওসমান ইবনে হানিফ থেকে ইমাম তিরমিযী, নাসা‘ঈ, বায়হাক্বী ও ত্বাবরানী বিশুদ্ধসূত্রে বর্ণনা করেছেনঃ
أنَّ رجلًا ضريرَ البصرِ أتى النَّبيَّ صلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ فقال ادعُ اللهَ أن يُعافيَني قال إن شئتَ دعوتُ وإن شئتَ صبرتَ فهو خيرٌ لك قال فادْعُه قال فأمره أن يتوضأ فيحسنَ وضوءَه ويدعو بهذا الدعاء اللهم إني أسألُك وأتوجَّه إليك بنبيِّك محمدٍ نبيِّ الرحمةِ إني توجَّهتُ بك إلى ربي في حاجتي هذه لتقضىَ لي اللهم فشَفِّعْه فيَّ( )
অর্থঃ একদা এক অন্ধ ব্যক্তি প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে এসে ফরিয়াদ করে বললেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহর কাছে দো‘আ করুন তিনি যেন আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেন। তখন প্রিয়নবী বললেন, আল্লাহর কাছে দো‘আ করুন যেন আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেন।” তখন প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন, “যদি চাও দো‘আ করতে পারি আর যদি ধৈর্য ধারণ কর তাহলে তোমার জন্য কল্যাণজনক, তখন ওই ব্যক্তি বললেন বরং দো‘আ করুন, তখন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ভালভাবে ওযূ করে এসে এ দো‘আ কর:
হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করছি এবং তোমার প্রতি মনোনিবেশ করছি তোমার প্রিয় নবী মুহাম্মদ মোস্তফার ওসীলায়। যিনি করুণার নবী। হে (আল্লাহর প্রিয়নবী) হযরত মুহাম্মদ! আমি আপনার ওসীলায় মনোনিবেশ করি আমার রবের দিকে আমার এ সমস্যা সমাধানে। হে আল্লাহ্! আমার ক্ষেত্রে তাঁর সুপারিশ কবুল করুন, এ দো‘আ করে লোকটি চলে গেলেন অতঃপর ফিরে আসলেন। আর আল্লাহ্ তা‘আলা তার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিলেন,’’
বাইহাক্বীর অন্য বর্ণনায় আছে যে, লোকটি দোয়া শেষ করে যখনি দাঁড়ালেন দেখা গেল সাথে সাথে তার চোখ ভাল হয়ে গেল এবং তিনি দেখতে লাগলেন।
আলিমগণ বলেন, এ হাদিস শরীফ দ্বারা ওসীলা এবং ইয়া রাসূলাল্লাহ্ বলে আহ্বান করা উভয় প্রমাণিত।
যুগ যুগ ধরে সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন এবং পূর্ব ও পরবর্তী ওলামা-বুযুর্গগন তাঁদের সমস্যা সমাধানে এ দো‘আর ব্যবহার করে আসছেন। (মহান আল্লাহ্ই ভাল জানেন)
২. পবিত্র সহীহ্ বুখারী শরীফের ওই হাদিস দ্বারা হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা থেকে বর্ণিত যে, হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আল আনহু যখন দুর্ভিক্ষ দেখা দিত তখন হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মোত্তালিবের ওসীলাহ্ নিয়ে বৃষ্টির প্রার্থনা করতেন এবং এ দো‘আ করতেন,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، كَانَ إِذَا قَحَطُوا اسْتَسْقَى بِالعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ المُطَّلِبِ، فَقَالَ: ্রاللَّهُمَّ إِنَّا كُنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّنَا فَتَسْقِينَا، وَإِنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِعَمِّ نَبِيِّنَا فَاسْقِنَاগ্ধ، قَالَ: فَيُسْقَوْنَ( )
অর্থাৎ ‘‘হে আল্লাহ! আমরা তোমার কাছে আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফার ওসীলায় যখনি বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করতাম তখনি তুমি আমাদেরকে বৃষ্টি দ্বারা ধন্য করতে, আর আমরা এখন আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের প্রিয় চাচার (আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু)’র ওসীলায় দোয়া করছি তাই তুমি আমাদের প্রতি বৃষ্টি বর্ষণ করো, বর্ণনাকারী বললেন, তাৎক্ষণিকভাবে বৃষ্টি অবতরণ করতো।
এ হাদীসের আলোকে ওলামাগণ অভিমত পেশ করেন, এটি সম্মানিত ও মর্যাদাবান মহান সত্ত্বাকে ওসীলায় দো‘আ প্রার্থনা করার বৈধতার সাথে সুস্পষ্ট প্রমাণ, কেননা সাহাবাগণ আল্লাহ্ তা‘আলার প্রতি হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুকে ওসীলাহ্ করার ফলে বৃষ্টি বর্ষিত হয়।

প্রশ্ন : ওফাত প্রাপ্তদেরকে ওসীলাহ্ হিসেবে গ্রহণ করা কি বৈধ?
উত্তর: ওলামা-ই কেরাম বলেন, আল্লাহ্ তা‘আলার প্রিয়জনদের ওসীলাহ্ গ্রহণ করা বৈধ, চাই তাঁরা তাদের দুনিয়াবী হায়াতে হোন কিংবা ইন্তিকালের পরে তাঁদের কবর তথা বরযখী জীবনে হোন, উভয় অবস্থার মাঝে কোনও পার্থক্য নেই। কেননা তাঁদের মাঝে যাঁরা কবরে শায়িত আছেন তাঁরা মহান আল্লাহর সান্নিধ্যেই আছেন। সুতরাং যারা তাঁদের দিকে মনোনিবেশ করলো মূলত: তারা মহান আল্লাহর দিকেই মনোনিবেশ করল। অর্থাৎ লক্ষ্য হাছিলের ক্ষেত্রে।

প্রশ্ন : ওফাতপ্রাপ্তদেরকে ওসীলাহ্ হিসেবে গ্রহণ করার বৈধতার স্বপক্ষের দলিল কি?
উত্তর: হযরত আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন-
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ , قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِذَا خَرَجَ الرَّجُلُ مِنْ بَيْتِهِ إِلَى الصَّلاةِ ، فَقَالَ : اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِحَقِّ السَّائِلِينَ عَلَيْكَ ، وَبِحَقِّ مَمْشَايَ ، فَإِنِّي لَمْ أَخْرُجْ أَشَرًا ، وَلا بَطَرًا ، وَلا رِيَاءً ، وَلا سُمْعَةً خَرَجْتُ اتِّقَاءَ سَخَطِكَ ، وَابْتِغَاءَ مَرْضَاتِكَ ، أَسْأَلُكَ أَنْ تُنْقِذَنِيَ مِنَ النَّارِ ، وَأَنْ تَغْفِرَ لِي ذُنُوبِي ، إِنَّهُ لا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلا أَنْتَ ، وَكَّلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ بِهِ سَبْعِينَ أَلْفَ مَلَكٍ يَسْتَغْفِرُونَ لَهُ ، وَأَقْبَلَ اللَّهُ تَعَالَى عَلَيْهِ بِوَجْهِهِ حَتَّى يَقْضِيَ صَلاتَهُ( ) ” .
‘যে ব্যক্তি নামাযের উদ্দেশ্যে স্বীয় ঘর থকে বের হয়ে এ দো‘আ করলো, ‘‘হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি তোমার নিকট প্রার্থনাকারীদের ওসীলায় এবং (তোমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে) তোমার দিকে আমার এ পদচারণার ওসীলায়। কেননা আমি বের হয়নি অহংকার, দাম্ভিকতা, লোক দেখানো কিংবা কারও প্রশংসা পাবার উদ্দেশ্যে এবং আমি বের হয়েছি একমাত্র তোমার ক্রোধের ভয়ে ও তোমার সন্তুষ্টি পাবার উদ্দেশ্যে, তাই আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করছি, তুমি যেন আমাকে দোযখ থেকে মুক্তিদান করো এবং আমার গুনাহ্সমূহকে ক্ষমা করো। কেননা তুমি ছাড়া গুনাহ্ ক্ষমা করার মতো আর কেউ নেই (যখন এ দো‘আ করবে)। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা এ দো‘আর বরকতে তার জন্য সত্ত্বর হাজার ফেরেশতার উপর দায়িত্ব অর্পণ করবেন যারা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে এবং স্বয়ং আল্লাহ্ তা‘আলাও তার প্রতি কৃপার দৃষ্টিতে দেবেন, যতক্ষণ না সে তার নামাজ সম্পন্ন করে।
২. অনুরূপভাবে বায়হাক্বী ইবনুস্ সুন্নী ও হাফেজ আবু নু‘আয়ম বর্ণনা করেছেন: প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নামাজের উদ্দেশ্যে বের হবার সময়কার দো‘আ ছিলো: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِحَقِّ السَّائِلِينَ عَلَيْكَ‘‘হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি তাঁদের ওসীলায়, যাঁরা তোমার দরবারে ফরিয়াদ করে থাকে। ( )
৩. আর প্রমাণিত আছে যে, যখন হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর মায়ের ইন্তিকাল হলো, তখন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এ দোয়াটি করেছিলেন,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : لَمَّا مَاتَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ أَسَدِ بْنِ هَاشِمٍ أُمُّ عَلِيٍّ ، دَخَلَ عَلَيْهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَجَلَسَ عِنْدَ رَأْسِهَا ، فَقَالَ : ” رَحِمَكِ اللَّهُ يَا أُمِّي ، كُنْتِ أُمِّي بَعْدَ أُمِّي ، تَجُوعِينَ وتُشْبِعِينِي ، وتَعْرَيْنَ وتَكْسُونَنِي ، وتَمْنَعِينَ نَفْسَكِ طَيِّبَ الطَّعَامِ وتُطْعِمِينِي ، تُرِيدِينَ بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ وَالدَّارَ الآخِرَةَ ” ، ثُمَّ أَمَرَ أَنْ تُغْسَلَ ثَلاثًا وَثَلاثًا ، فَلَمَّا بَلَغَ الْمَاءَ الَّذِي فِيهِ الْكَافُورُ ، سَكَبَهُ عَلَيْهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ ، ثُمَّ خَلَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَمِيصَهُ فَأَلْبَسَهَا إِيَّاهُ ، وكُفِّنَتْ فَوْقَهُ ، ثُمَّ دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ ، وَأَبَا أَيُّوبَ الأَنْصَارِيَّ ، وَعُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ ، وَغُلامًا أَسْوَدَ يَحْفِرُوا ، فَحَفَرُوا قَبْرَهَا ، فَلَمَّا بَلَغُوا اللَّحْدَ حَفَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ ، وَأَخْرَجَ تُرَابَهُ بِيَدِهِ ، فَلَمَّا فَرَغَ ، دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فاضْطَجَعَ فِيهِ ، وَقَالَ : ” اللَّهُ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ حَيٌّ لا يَمُوتُ ، اغْفِرْ لأُمِّي فَاطِمَةَ بِنْتِ أَسَدٍ ، ولَقِّنْهَا حُجَّتَهَا ، وَوَسِّعْ عَلَيْهَا مُدْخَلَهَا ، بِحَقِّ نَبِيِّكَ وَالأَنْبِيَاءِ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِي ، فَإِنَّكَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ ” ، ثُمَّ كَبَّرَ عَلَيْهَا أَرْبَعًا ، ثُمَّ أدْخَلُوهَا الْقَبْرَ ، هُوَ وَالْعَبَّاسُ ، وَأَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ . لَمْ يَرْوِ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ ، إِلا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ ، تَفَرَّدَ بِهِ : رَوْحُ بْنُ صَلاحٍ . ( )
হে আল্লাহ্! তুমি ক্ষমা করে দাও আমার মা ফাতিমা বিনতে আসাদকে আমাদেরকে এবং তাঁর জন্য প্রশস্ত করে দাও তাঁর প্রবেশদ্বারকে। তোমার এ নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এবং আমার পূর্ববর্তী নবীগণের ওসীলায়। এটি একটি সুদীর্ঘ হাদিস যা ইবনে হিব্বান, হাকেম ও ত্বাবরানী বর্ণনা করেছেন এবং সহীহ্ হাদিস হিসেবে গন্য করেছেন।
তাই লক্ষ্য কর প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এ বাণীর প্রতি وَالأَنْبِيَاءِ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِي (অর্থাৎ আমার পূর্ববর্তী নবীগণের ওসীলায়।) কেননা এটি হলো ওয়াফাত প্রাপ্তদের ওসীলাহ গ্রহণ করার বৈধতার স্বপক্ষে দ্ব্যর্থহীন দলিল। বুঝার চেষ্টা কর ধ্বংস থেকে নিরাপদ থাকবে।

সতর্কীকরণ ও মনোযোগ আকর্ষণ
ওলামাগন বলেন (আল্লাহ তা‘আলা তাদের জ্ঞান দ্বারা আমাদেরকে উপকৃত করুক): হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে ওসীলাহ্ করে হযরত ওমর ফারূক্ব রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু এ দো‘আ করা একথা প্রমাণ করে না যে, জীবিত ছাড়া অন্যদের ওসীলাহ্ অবৈধ বরং সরাসরি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামার ওসীলা না নিয়ে হযরত আব্বাসের ওসীলা নিয়ে হযরত ওমরের দো‘আ করার উদ্দেশ্য হলো- এ বিষয়টি সুস্পষ্ঠভাবে প্রমাণ করার জন্য যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ছাড়াও অন্যদেরও ওসীলাহ্ বৈধ ও এতে কোনও সমস্যা নেই।
অন্যান্য সাহাবাদের বাদ দিয়ে হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে ওসীলাহ্ করার উদ্দেশ্য হলো, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম পবিত্র বংশধরের মর্যাদা ও আভিজাত্য প্রকাশ। অন্যথায় সাহাবায়ে কেরামগণ প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তিকালের পরেও তাঁর ওসীলাহ্ নিয়ে দো‘আ করেছেন এমন অনেক দলীল ও প্রমাণ দ্ব্যর্থহীনভাবে বিদ্যমান।
যেমন ইমাম বায়হাক্বী ও ইবনে আবী শায়বাহ্ বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণনা করেছেন হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর খেলাফতকালে অনাবৃষ্টির ফলে দুর্ভিক্ষ দেখা দিল, তখন হযরত বেলাল ইবনে হারেস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু প্রিয় নবীর রওজা পাকে এসে ফরিয়াদ জানিয়ে বললেন,
من طريق أَبِي صَالِحٍ ، عَنْ مَالِكِ الدَّارِ، قَالَ: أَصَابَ النَّاسَ قَحْطٌ فِي زَمَنِ عُمَرَ ، فَجَاءَ رَجُلٌ إِلَى قَبْرِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، اسْتَسْقِ لِأُمَّتِكَ فَإِنَّهُمْ قَدْ هَلَكُوا ، فَأَتَى الرَّجُلَ فِي الْمَنَامِ فَقِيلَ لَهُ : ” ائْتِ عُمَرَ فَأَقْرِئْهُ السَّلَامَ، وَأَخْبِرْهُ أَنَّكُمْ مسْقِيُّونَ وَقُلْ لَهُ : عَلَيْكَ الْكَيْسُ ، عَلَيْكَ الْكَيْسُ “، فَأَتَى عُمَرَ فَأَخْبَرَهُ فَبَكَى عُمَرُ ثُمَّ قَالَ : يَا رَبِّ لَا آلُو إِلَّا مَا عَجَزْتُ عَنْهُ . ( )
এয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার উম্মতের জন্য বৃষ্টি প্রার্থনা করুন, কেননা তারা ধ্বংস হতে বসেছে, তখন তাকে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে দর্শনদানে ধন্য করলেন এবং এরশাদ করলেন ائْتِ عُمَرَ فَأَقْرِئْهُ السَّلَامَ، وَأَخْبِرْهُ أَنَّكُمْ مسْقِيُّونَ (ওমরের কাছে গিয়ে আমার সালাম জানাবে এবং বলবে তাদের প্রতি বৃষ্টি বর্ষিত হবে) তখন তিনি তাকে এসে এ সংবাদ পৌঁছালেন। আর হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু তা শুনে কাঁদতে লাগলেন এবং পরক্ষণেই বৃষ্টি বর্ষিত হলো।
এখানে দলীল হলো হযরত বেলাল রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু এ কর্ম-ক্রিয়া, তিনি এ একজন উল্লেখযোগ্য সাহাবী এবং হযরত ওমর ও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের অন্য কোন সাহাবী এ প্রক্রিয়াকে অস্বীকার ও অপছন্দ করেননি।

দ্বিতীয় অধ্যায়

في الاستغاثة
সাহায্য প্রার্থনা প্রসঙ্গে

في الاستغاثة সাহায্য প্রার্থনা প্রসঙ্গে
وَدَخَلَ الْمَدِينَةَ عَلَىٰ حِينِ غَفْلَةٍ مِّنْ أَهْلِهَا فَوَجَدَ فِيهَا رَجُلَيْنِ يَقْتَتِلَانِ هَٰذَا مِن شِيعَتِهِ وَهَٰذَا مِنْ عَدُوِّهِ ۖ فَاسْتَغَاثَهُ الَّذِي مِن شِيعَتِهِ عَلَى الَّذِي مِنْ عَدُوِّهِ فَوَكَزَهُ مُوسَىٰ فَقَضَىٰ عَلَيْهِ ۖ قَالَ هَٰذَا مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ ۖ إِنَّهُ عَدُوٌّ مُّضِلٌّ مُّبِينٌ( القصص-১৫)
প্রশ্ন : الاستغاثة(ইসতিগাছাহ্) অর্থ কি?
উত্তর: কোন বান্দার পক্ষ থেকে ঐ ব্যক্তির কাছে সাহায্য ও পরিত্রাণ কামনা করা, যে তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করবে এবং তার সমস্যার সমাধান করবে।

প্রশ্ন : আল্লাহ্ তা‘আলা ছাড়া অন্য কারও নিকট সাহায্য কামনা করা কি বৈধ?
উত্তর: হ্যাঁ, আল্লাহ্ তা‘আলা ছাড়া অন্য কারও কাছে তা চাওয়া বৈধ এ ভিত্তিতে যে, এটি হলো একটি ওসীলাহ ও মাধ্যম মাত্র। কেননা সাহায্য কামনা করা যদিওবা মূলত: আল্লাহ্ তা‘আলারই কাছ থেকে হয়ে থাকে, তারপরও এ বিশ্বাসকে নিষেধ করে না যে, আল্লাহ্ তা‘আলা এগুলোর জন্য কিছু উপকরণ ও মাধ্যম প্রস্তুত করে রেখেছেন। আর তার দলীল হলো, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সেই বাণী
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ الله عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: وَاللَّهُ فِي عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِي عَوْنِ أَخِيه ( )
আল্লাহ তা‘আলা ঐ বান্দার সাহায্যে এগিয়ে আসেন যে বান্দা তার মুসলমান ভাইয়ের সাহায্যে এগিয়ে আসে এবং প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর বাণী যা তিনি রাস্তায় অবস্থানকারীদের করণীয় ও দায়িত্ব সম্পর্কে অবিহিত করতে গিয়ে বলেন
وقوله صلى الله عليه وسلم في حقوق الطريق: وأن تغيثوا الملهوف وتهدوا الضال. ( )
তোমরা যেন বিপদগ্রস্থকে সাহায্য কর এবং পথ হারাকে পথ দেখাও।
তাই ‘সাহায্য’ শব্দটি বান্দার জন্য ব্যবহার করা ও তার সাথে সম্পর্কিত করা হয়েছে এবং সকল বান্দাকে আহ্বান করা হয়েছে তারা যেন একে অপরকে সাহায্য সহযোগিতা করে।

প্রশ্ন : সাহায্য প্রার্থনা’র বৈধতার দলীল কি?
উত্তর: তার বৈধতার স্বপক্ষে অনেক দলীল রয়েছে তৎমধ্যে: যা ইমাম বোখারী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু তাঁর বুখারী শরীফের কিতাবুজ্ জাকাতে বর্ণনা করেছেন যে,
حمزة بن عبد الله بن عمر قال سمعت عبد الله بن عمر رضي الله عنه قَالَ : ” إِنَّ الشَّمْسَ تَدْنُو يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يَبْلُغَ الْعَرَقُ نِصْفَ الأُذُنِ ، فَبَيْنَا هُمْ كَذَلِكَ اسْتَغَاثُوا بِآدَمَ ، ثُمَّ بِمُوسَى ، ثُمَّ بِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ “( )
ক্বেয়ামত দিবসে সূর্য এতবেশী নিকটে এসে পৌঁছাবে যে, তার প্রখরতা ও উত্তাপের কারণে ঘাম কারও কারও উভয় কর্ণ পর্যন্ত এসে পৌঁছবে, এমতাবস্থায় তারা সাহায্য প্রার্থনা করবে প্রথমে হযরত আদম আলায়হিস্ সালাম-এর নিকট, তারপর হযরত মুসা আলায়হিস্ সালাম-এর নিকট এবং সর্বশেষ প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট।
তাহলে দেখা যায়, সকল হাশর বা কেয়ামতবাসী নবীগণ আলায়হিস্ সালাম-এর নিকট সাহায্য প্রার্থনা বৈধতার ক্ষেত্রে ঐক্যমতে পৌঁছাবেন। আর তা হবে আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে তাদের প্রতি বিশেষ ইঙ্গিত ও ইশারার ফলে। এর ফলে আরও অধিকভাবে প্রমানিত হয় যে, নবীগণের ওসীলা ও সাহায্য প্রার্থনা করা দুনিয়া ও আখিরাত তথা উভয় জগতেই বৈধ ও মোস্তাহাব।
এর স্বপক্ষে আরও দলীল হলো ইমাম ত্বাবরানী বর্ণনা করেছেন যে, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এরশাদ করেছেন
من طريق عبد الرحمن بن شريك قال : حدثني أبي ، عن عبد الله بن عيسى ، عن زيد بن علي ، عن عتبة بن غزوان ، عن نبي الله صلى الله عليه وسلم قال : (إذَا أَضَلَّ أَحَدُكُمْ شَيْئًا ، أَوْ أَرَادَ أَحَدُكُمْ عَوْنًا ، وَهُوَ بِأَرْضٍ لَيْسَ بِهَا أَنِيسٌ ، فَلْيَقُلْ : يَا عِبَادَ اللَّهِ أَغِيثُونِي ، يَا عِبَادَ اللَّهِ أَغِيثُونِي ، فَإِنَّ لِلَّهِ عِبَادًا لا نَرَاهُمْ ( )
তোমাদের কেউ যদি হারিয়ে যায় বা পথ হারা হয়ে যায়। অথবা সাহায্য কামনা করে এমন স্থানে যেখানে কোন মানুষের পদচারণা নেই, অর্থাৎ জন-মানব শূন্য এলাকায়, তখন সে যেন এ আহ্বান করে, ‘‘হে আল্লাহর বান্দারা তোমরা আমাকে সাহায্য কর)। অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে: فَإِنَّ لِلَّهِ عِبَادًا لا تَرَونهُمْ (তোমরা আমাকে সাহায্য কর। কেননা তথায় আল্লাহর এমন কিছু বান্দা আছেন যাদেরকে তোমরা দেখতে পাওনা)।

এ হাদীসটি সাহায্য প্রার্থনা করা এবং জীবিত ও মৃত অদৃশ্য ব্যক্তিদেরকে আহ্বান করার বৈধতার জন্য সন্দেহাতীতভাবে দলীল ও প্রমাণ।

উপসংহার
হযরত ইমাম আহমদ বিন যাইনী দাহলাম রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন,
قال السيد أحمد بن زيني دحلان رحمه الله: “مذهب أهل السنة والجماعة جواز التوسل والاستغاثة بالأحياء والأموات لأنا لا نعتقد تأثيرا ولا نفعا ولا ضرا إلا لله وحده لا شريك له والأنبياء لا تأثير لهم في شيء وإنما يتبرك بهم ويستغاث بمقامهم لكونهم أحباء الله تعالي، والذين يفرقون بين الأحياء والأموات هم الذين يعتقدون التأثير للأحياء دون الأموات ونحن نقول الله خالق كل شيء: { وَاللَّهُ خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُونَ }الصافات-৯৬”.
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মাযহাব হলো- জীবিত ও ওফাতপ্রাপ্তদের ওসীলাহ্ এবং সাহায্য প্রার্থনা করা বৈধ। কেননা আমরা বিশ্বাস করিনা যে, আল্লাহ্ তা‘আলা যার কোন শরীক নেই তিনি ছাড়া অন্য কারও প্রভাব ও লাভ-ক্ষতির অধিকার আছে। এমনকি নবীগণেরও কোন বিষয়ে স্বতন্ত্র ও প্রত্যক্ষ কোন প্রভাব বা ক্ষমতা নেই। শুধুমাত্র তাঁদের বরকত হাসিল করা হয় এবং তাঁদের মহান মান-মর্যাদার ওসীলায় সাহায্য প্রার্থনা করা হয় মাত্র। কেননা তাঁরা হলেন মহান আল্লাহর প্রিয়ভাজন বরং যারা মৃত ও জীবিতের মধ্যে পার্থক্য করতে চায় একমাত্র তারাই বিশ্বাস করে থাকে যে, জীতের ক্ষমতা আছে, মৃতের নাই। আমরা বলি- আল্লাহ্ তা‘আলাই সকল বস্তুর একমাত্র সৃষ্টিকর্তা وَاللَّهُ خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُونَ আল্লাহ্ই সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমাদের আমল বা কর্মকে।(সূরা আস সা-ফ্ফাত, আয়াত-৯৬) ( )

তৃতীয় অধ্যায়
জীবিতদের প্রতি মৃতদের উপকার বা লাভ সাধন করা

জীবিতদের প্রতি মৃতদের উপকার বা লাভ সাধন করা
প্রশ্ন : মৃতদের পক্ষ থেকে দুনিয়াতে আমাদের জন্য কোন উপকার হাছিল হয় কিনা?
উত্তর: হাঁ, মৃত জীবিতের লাভ করতে সক্ষম। প্রমাণিত আছে যে, তারা জীবিতদের জন্য দোয়া ও সুপারিশ করে।
মাওলানা শেখ ইমাম আবদুল্লাহ্ বিন আলাভী আল হাদ্দাদ রহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন,
قال سيدنا الامام عبدالله الحداد قدس الله سره العظيم: “ان الاموات اكثر نفعا للاحياء منهم لهم لان الاحياء مشغولون عنهم بهمِّ الرزق و الاموات قد تجردوا عنه ولا لهم همّ الا فيما قدموه من الاعمال الصالحة. لا تعلق لهم إلا بذلك كالملائكة”
জীবিতরা নিজেরা নিজেদের যে উপকার করে তার চেয়ে মৃতরা জীবিতদের আরও অধিক উপকার ও লাভ সাধন করে থাকে। কেননা জীবিতরা রিযিক অন্বেষণে নিজেদেরকে নিয়ে ব্যস্ত, পক্ষান্তরে মৃতরা তা থেকে বিরত, কেননা তারা তাদের অতীতের সৎকর্মগুলো নিয়েই ব্যস্ত, শুধু তাদের সম্পর্ক আমলের সাথে যেমনিভাবে ফেরেশতাগণের।

প্রশ্ন : মৃতদের পক্ষ থেকে জীবিতদের উপকার সাধিত হবার দলীল কি?
উত্তর: তার দলীল হলো-ইমাম আহমদ হযরত আনাস থেকে বর্ণনা করেছেন তিনি বলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন-
عَنْ أَنَسِ بْنَ مَالِكٍ يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أَعْمَالَكُمْ تُعْرَضُ عَلَى أَقَارِبِكُمْ وَعَشَائِرِكُمْ مِنْ الْأَمْوَاتِ فَإِنْ كَانَ خَيْرًا اسْتَبْشَرُوا بِهِ وَإِنْ كَانَ غَيْرَ ذَلِكَ قَالُوا: اللَّهُمَّ لَا تُمِتْهُمْ حَتَّى تَهْدِيَهُمْ كَمَا هَدَيْتَنَا. ( )
তোমাদের আমল (কর্ম, সৎ হোক কিংবা মন্দ হোক) তোমাদের পরিবার-পরিজন ও নিকটাত্মীয়দের নিকট পেশ করা হয়। যদি তোমাদের কর্ম সৎ হয় তাহলে তারা আনন্দিত হয় আর যদি অনুরূপ না হয়, তখন তারা আল্লাহ্ তা‘আলার কাছে এ দো‘আ করতে থাকে, হে আল্লাহ! তুমি তাদেরকে হেদায়ত দান না করে মৃত্যু দিওনা যেভাবে তুমি আমাদেরকে হিদায়ত করেছো।
ইমাম বায্যার হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণনা করেছেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন
عن عبد الله بن مسعود رضي الله عنه أن النبي صلى الله عليه وآله وسلم قال : حَيَاتِي خَيْرٌ لَكُمْ تُحَدِّثُونَ وَنُحَدِّثُ لَكُمْ ، وَوَفَاتِي خَيْرٌ لَكُمْ تُعْرَضُ عَلَيَّ أَعْمَالُكُمْ ، فَمَا رَأَيْتُ مِنَ خَيْرٍ حَمِدْتُ اللَّهَ عَلَيْهِ ، وَمَا رَأَيْتُ مِنَ شَرٍّ اسْتَغْفَرْتُ اللَّه لكم( )
আমার জীবন তোমাদের জন্য কল্যাণকর: তোমরা আমার বাণী বর্ণনা করবে এবং তোমাদেরকে আমার বাণী বর্ণনা করা হবে, অনুরূপভাবে আমার ইন্তিকাল ও তোমাদের জন্য কল্যাণকর: তোমাদের আমলসমূহ আমার নিকট উপস্থাপন করা হবে, যদি তোমাদের আমলগুলো ভাল দেখি তাহলে আল্লাহর প্রশংসা করবো, আর যদি খারাপ দেখি তবে তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবো
১. ওলামাগণ বলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে কোন গুনাহ্গারের আমল পেশ হবার পর ওই গুনাহ্গারের জন্য তাঁর ক্ষমা চাওয়ার চেয়ে অত্যাধিক উপকার আর কি হতে পারে?
২. কিছু সংখ্যক আলিমগণ বলেন, ওফাতপ্রাপ্তরা যে জীবিতদের উপকার করতে পারেন তার সবচেয়ে বড় দলীল হলো মি’রাজের রাতে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর উপর ৫০ (পঞ্চাশ) ওয়াক্ত নামায ফরয হওয়া।
উল্লেখ্য যে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মি’রাজের রাতে যখন মহান আল্লাহর সাক্ষাতে ধন্য হন, তখন আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর ও তাঁর উম্মতের উপর দৈনিক পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফরয করেন, তখন হযরত মুসা আলায়হিস্ সালাম প্রিয়নবীকে পরামর্শ দিলেন, তিনি যেন আল্লাহ্ তা‘আলার কাছ থেকে এ বিষয়ে কিছু ছাড় ও সহজতা কামনা করেন, ফলে আল্লাহ্ তা‘আলা পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাযকে পাঁচ ওয়াক্তে পরিবর্তন করে দিলেন। অনেক বিশুদ্ধ হাদিসে যার বর্ণনা উল্লেখ করা হয়েছে।
বলাবাহুল্য যে, হযরত মুসা আলায়হিস্ সালাম মি’রাজের সময় পার্থিব হায়াতে ছিলেন না বরং মি’রাজের ঘটনার প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে তিনি ইন্তিকাল করেন অথচ আমরা এবং প্রিয়নবীর সকল উম্মত কেয়ামত পর্যন্ত তাঁর বরকতের সুফল ভোগ করতে থাকবো। আর এ বিশেষ ছাড় পাওয়া গেল তাঁরই আলায়হিস্ সালাম-এর ওসীলায়। নিঃসন্দেহে এটি একটি মহা কল্যাণ ও লাভ।

প্রশ্ন : নবীগণ আলায়হিস্ সালাম কি তাঁদের কবরে জীবিত?
উত্তর: হ্যাঁ, প্রমাণিত আছে যে, তাঁরা আলায়হিস্ সালাম ইন্তিক্বালের পরেও হজ্ব পালন করেন এবং স্বীয় কবরে নামায পড়েন।
আলিমগণ বলেন, কিছু কিছু আমল এমনও আছে যা আদায় করা হয় দায়িত্ব ও কর্তব্য হিসেবে নয় বরং স্বাদ ও আনন্দ উপভোগের উদ্দেশ্যে। সুতরাং আখিরাত আমলের ক্ষেত্র না হলেও এ ধরনের আমল সম্পাদনে কোন বাধা নিষেধ নেই।

প্রশ্ন : তাঁরা যে জীবিত তার দলীল কি?
উত্তর: মুসলিম শরীফে হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন-
عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِىِّ وَسُلَيْمَانَ التَّيْمِىِّ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ্র أَتَيْتُ – وَفِى رِوَايَةِ هَدَّابٍ مَرَرْتُ – عَلَى مُوسَى لَيْلَةَ أُسْرِىَ بِى عِنْدَ الْكَثِيبِ الأَحْمَرِ وَهُوَ قَائِمٌ يُصَلِّى فِى قَبْرِهِ ( )
আমি মিরাজ রজনীতে হযরত মুসা আলায়হিস্ সালামের পাশ দিয়ে গমন করছিলাম, তখন দেখলাম তিনি লালছে রংয়ের বালুর স্তূপের পাশে নিজ কবরে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছেন।
অনুরূপভাবে ইমাম বায়হাক্বী ও আবূ ইয়া’লা হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
عَنِ الْحَجَّاجِ , عَنْ ثَابِتٍ , عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ , رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” الأَنْبِيَاءُ أَحْيَاءٌ فِي قُبُورِهِمْ يُصَلُّونَ ” . وَقَدْ رُوِيَ مِنْ وَجْهِ آخَرَ ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ مَوْقُوفًا . ( )
নবীগণ স্বীয় কবরে জীবিত, তাঁরা তথায় নামায আদায় করেন) ইমাম মানাভী বলেন এটি একটি বিশুদ্ধ হাদিস।
আলিমগণ আরও বলেন, আল্লাহ্ তা‘আলা পবিত্র ক্বোরআনে শহীদগণকে জীবিত হিসেবে ঘোষণা দিয়ে এরশাদ করেন
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا ۚ بَلْ أَحْيَاءٌ عِندَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ
যাঁদেরকে আল্লাহর রাস্তায় হত্যা করা হয়েছে তাঁদেরকে তোমরা মৃত বলে ধারণাও করোনা বরং তাঁরা জীবিত, তাঁদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে রিযিক প্রাপ্ত হন [আল-ই ইমরান, আয়াত নং-১৫৯] যদি শহীদগন স্বীয় কবরে জীবিত থাকেন, তাহলে নবীগণ ও সিদ্দিকগণ আরও উত্তমরূপে জীবিত। কেননা তাঁদের পদ মর্যাদা শহীদগণ থেকে অনেক উচ্চ ও মহান।
হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
أَخْبَرَنَا هِشَامٌ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ ، قَالَتْ : ” كُنْتُ أَدْخُلُ بَيْتِي الَّذِي دُفِنَ فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبِي ، فَأَضَعُ ثَوْبِي ، فَأَقُولُ : إِنَّمَا هُوَ زَوْجِي وَأَبِي ، فَلَمَّا دُفِنَ عُمَرُ مَعَهُمْ ، فَوَاللَّهِ مَا دَخَلْتُ إِلَّا وَأَنَا مَشْدُودَةٌ عَلَيَّ ثِيَابِي حَيَاءً مِنْ عُمَرَ ” ( )
আমি আমার ওই ঘরে প্রবেশ করতাম যেখানে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আমার ও পিতা হযরত আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুকে দাফন করা হয়েছে এমতাবস্থায় যে, আমি আমার শরীরকে পোষাক দ্বারা সম্পূর্ণরূপে আচ্ছাদিত করতাম না এবং আমি মনে মনে একথা বলতাম যে, তাঁদের একজন আমার স্বামী, অন্যজন আমার পিতা, আর যখন হযরত ওমর ফারুক্ব রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুকে তাঁদের পাশে দাফন করা হলো, মহান আল্লাহর শপথ! তখন থেকে আমি যখনি তথায় প্রবেশ করতাম তখনি আমি আমার পোশাক দ্বারা আমার পূরো শরীরকে আবৃত করে নিতাম, হযরত ওমরের সম্মানার্থে এবং তাঁর প্রতি লজ্জাবোধের কারণে। ( )

এ হাদীসটি একথা প্রমাণ করে যে, সাইয়্যেদা আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা এ দৃঢ় বিশ্বাস রাখতেন যে, হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু তাঁকে দেখছেন। এ কারণেই হযরত ওমরের সেখানে দাফন হবার পর থেকে তথায় প্রবেশকালে তিনি নিজেকে ঢেকে নিতেন এবং পর্দা গ্রহণ করতেন।

চতুর্থ অধ্যায়
বরকত হাসিল করা

বরকত হাসিল করা
প্রশ্ন : সালেহীন তথা আল্লাহর প্রিয়জনদের নিদর্শনাবলী দ্বারা বরকত লাভ করা কি বৈধ? তার দলীল কি?
উত্তর: হ্যাঁ, তা বৈধ বরং সকল মুসলিম ওলামাগণের মতে মুস্তাহাব বা উত্তম। তার স্বপক্ষে অসংখ্য দলীল-প্রমাণাদি বিদ্যমান, তন্মধ্যে বিশুদ্ধ মুসলিম শরীফে হযরত আনাস থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
عَنْ ثَابِتٍ ، عَنْ أَنَسٍ ، قَالَ : ” لَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، وَالْحَلَّاقُ يَحْلِقُهُ ، وَأَطَافَ بِهِ أَصْحَابُهُ ، فَمَا يُرِيدُونَ أَنْ تَقَعَ شَعْرَةٌ ، إِلَّا فِي يَدِ رَجُلٍ( ) ” .
আমি দেখলাম একদা নাপিত প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর চুল মুবারক কাটছেন বা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মাথা মুবারক মুন্ডাচ্ছেন আর সাহাবায়ে কেরামগণ তাঁর চতুর্পাশে প্রদক্ষিণরত অবস্থায় এ চুল মুবারকের অপেক্ষা করছেন, একটি চুল মুবারকও মাটিতে পড়তে দিলোনা বরং তারা প্রত্যেকেই নিজের মাঝে চুল মুবারকগুলো ভাগা-ভাগি করে নিয়ে নিলেন।
আর সাহাবায়ে কেরাম চিরদিন এ চুল মুবারককে সংরক্ষণ করে রাখতেন বরকত ও রোগমুক্তির উদ্দেশ্যে।
আরও প্রমাণিত আছে যে, হযরত খালেদ ইবনে ওয়ালিদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু স্বীয় টুপিতে সর্বদা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর চুল মুবারক সংরক্ষণ করে রাখতেন একদা কোন ও একযুদ্ধে তাঁর টুপি মাটিতে পড়ে যায়, তখন তিনি খুব জোরে শোরে টুপিটি খুঁজতে লাগলেন, এমনকি এর কারণে শত্রুরা তাঁর এ কাজের জন্য তাঁর নিন্দা করতে লাগলেন, তখন উত্তরে হযরত খালেদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বললেন, আমি যা করেছি তা এ টুপির জন্য নয় বরং টুপিটিতে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর একটি চুল মুবারক সংরক্ষিত ছিল তাই, যাতে আমি তার বরকত থেকে মাহরূম না হই এবং যাতে মুশরিকদের হস্তগত ও না হয়।
، ثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ جَعْفَرٍ ، عَنْ أَبِيهِ : ” أَنَّ خَالِدَ بْنَ الْوَلِيدِ ، فَقَدْ قَلَنْسُوَةً لَهُ يَوْمَ الْيَرْمُوكِ فَقَالَ: اطْلُبُوهَا فَلَمْ يَجِدُوهَا، ثُمَّ طَلَبُوهَا فَوَجَدُوهَا، وَإِذَا هِيَ قَلَنْسُوَةٌ خَلِقَةٌ ، فَقَالَ خَالِدٌ: ” اعْتَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَحَلَقَ رَأْسَهُ ، وَابْتَدَرَ النَّاسُ جَوَانِبَ شَعْرِهِ ، فَسَبَقْتُهُمْ إِلَى نَاصِيَتِهِ فَجَعَلْتُهَا فِي هَذِهِ الْقَلَنْسُوَةِ ، فَلَمْ أَشْهَدْ قِتَالًا وَهِيَ مَعِي إِلَّا رُزِقْتُ النَّصْرَ( ) ” .

ইমাম বুখারী তাঁর সহীহ্ বুখারীতে হযরত আবু জুহাইফাহ্ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:
عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِى جُحَيْفَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيّ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ فِى قُبَّةٍ حَمْرَاءَ مِنْ أَدَمٍ، وَرَأَيْتُ بِلاَلاً أَخَذَ وَضُوءَ النَّبِيّ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ يَبْتَدِرُونَ الْوَضُوءَ، فَمَنْ أَصَابَ مِنْهُ شَيْئًا تَمَسَّحَ بِهِ، وَمَنْ لَمْ يُصِبْ مِنْهُ شَيْئًا أَخَذَ مِنْ بَلَلِ يَدِ صَاحبه. ( )
আমি প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আসলাম তখন তিনি চামড়া দ্বারা নির্মিত একটি তাঁবুতে অবস্থান করছিলেন আর হযরত বেলাল রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুকে দেখলাম তিনি প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর ওযূর ব্যবহৃত পানিগুলো নিলেন, ওই দিকে সাহাবায়ে কেরামগণ ঐ ওযূর পানির দিকে ছুটাছুটি করছেন, যখন কারও ভাগ্যে ঐ পানি থেকে কিছু জুটল তখন তিনি তা তার শরীরে মালিশ করতে লাগলেন, আর যখন ভাগ্যে মিলেনি সে অন্যের পানি সিক্ত হাতের সাথে নিজের হাত মালিশ করে তা দ্বারা তার শরীর মাখছে। অর্থাৎ বরকত ও আরোগ্যের উদ্দেশ্যে।
মুসনাদে ইমাম আহমদ এ হযরত জাফর ইবনে মুহাম্মদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
عَنْ حَسَنِ بْنِ صَالِحٍ ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ ، قَالَ : ” كَانَ الْمَاءُ يسْتَنْقِعُ فِي جُفُونِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَانَ عَلِيٌّ يَحْسُوهُ ” . ( )
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর ওফাতের পর যখন তাঁকে গোসল দেয়া হলো, তখন তাঁর পবিত্র চোখের পাতায় বিন্দু-বিন্দু পানি দেখা যাচ্ছিল আর হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু চুমুক দিয়ে তা পান করছেন অর্থাৎ তাঁর চোখের পাতা মুবারকের সিক্ততা ও আদ্রতার উপর বরকত লাভের উদ্দেশ্যে চুমু খাচ্ছেন।

হযরত আস্মা বিনতে আবু বকর থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত,
عن أسماء رضي الله عنها قالت : هَذِهِ جُبَّةُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَأَخْرَجَتْ جُبَّةَ طَيَالِسَةٍ كِسْرَوَانِيَّةٍ لَهَا لِبْنَةُ دِيبَاجٍ ، وَفَرْجَيْهَا مَكْفُوفَيْنِ بِالدِّيبَاجِ ، فَقَالَتْ: هَذِهِ كَانَتْ عِنْدَ عَائِشَةَ حَتَّى قُبِضَتْ ، فَلَمَّا قُبِضَتْ قَبَضْتُهَا، وَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَلْبَسُهَا ، فَنَحْنُ نَغْسِلُهَا لِلْمَرْضَى يُسْتَشْفَى بِهَا( ) ” .
তিনি একদা একটি তায়ালাসী জুব্বা বের করলেন এবং বললেন, এ জুব্বা মুবারকটি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম পরিধান করতেন। আর আমরা তা ধৌত করে অসুস্থদের পান করায় আরোগ্য লাভের উদ্দেশ্যে।

পঞ্চম অধ্যায়
কবর জিয়ারত প্রসঙ্গে

কবর যিয়ারত
প্রশ্ন : নবীগণ, আউলিয়ায়ে কেরাম এবং অন্যান্যদের কবর জিয়ারত করার কি বিধান?
উত্তর: তাঁদের কবর জিয়ারত মুস্তাহাব ইবাদত, অনুরূপভাবে এ উদ্দেশ্যে সফর করাও। আলেমগণের অভিমত হলো ইসলামের প্রাথমিক যুগে কবর যিয়ারত নিষিদ্ধ ছিল, অতঃপর তা রহিত হয়ে যায় স্বয়ং প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী ও কর্মের মাধ্যমে।

প্রশ্ন : কবর যিয়ারতের বৈধতার কি দলীল?
উত্তর: তার বৈধতার দলীল হলো: ইমাম মুসলিম তার সহীহ্ মুসলিমে বর্ণনা করেছেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন “كُنْتُ نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيارَة القُبُورِ فَزُوروها” আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারতে নিষেধ করেছিলাম, এখন থেকে তোমরা কবর যিয়ারত কর।
বায়হাক্বীর বর্ণনায় রয়েছে-
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” كُنْتُ نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ الْقُبُورِ أَلا فَزُورُوهَا ، فَإِنَّهَا تُرِقُّ الْقَلْبَ ، وَتُدْمِعُ الْعَيْنَ ، وَتُذَكِّرُ الآخِرَةَ ، وَلا تَقُولُوا هُجْرًا ” . ( )
(আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারতে নিষেধ করেছিলাম, এখন থেকে তোমরা যিয়ারত কর, কেননা তা হৃদয়কে ন¤্র করে দেয়, চক্ষুকে অশ্রুসিক্ত করে দেয় এবং আখিরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয়)
সাইয়্যেদা আয়শা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম রাতের শেষাংশে ‘বকী’ কবরস্থানের উদ্দেশ্যে গমন করতেন এবং তথায় উপস্থিত হয়ে এরশাদ করতেন:
عن عائشَةَ رضي اللَّهُ عنها قالت : كان رسُولُ اللَّهِ ، صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، كُلَّما كان لَيْلَتها منْ رسول اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم يَخْرُجُ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ إِلى البَقِيعِ ، فَيَقُولُ : ্র السَّلامُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤمِنينَ ، وأَتَاكُمْ ما تُوعَدُونَ ، غَداً مُؤَجَّلُونَ ، وإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاحِقُونَ ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لأَهْلِ بَقِيعِ الغَرْقَدِ গ্ধ( )
মুসলিম জাবির চিরস্থায়ী গৃহে বসবাসরত হে কবরবাসী! তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক, তোমাদেরকে যা প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল ঠিক তাই পেয়েছে, কালকের জন্য তোমরা অপেক্ষমান এবং নিশ্চয় আমরাও তোমাদের সাথে মিলিত হবো যদি আল্লাহ্ চান, হে আল্লাহ! ক্ষমা করে দাও ‘বাকী’ আল গারদাকে বসবাসকারীদের)

প্রশ্ন : মহিলাদের কবর যিয়ারতের হুকুম কি?
উত্তর: আলিমগণ বলেন, কবর যিয়ারত করা পুরুষদের জন্য সুন্নাত এবং মহিলাদের জন্য মাকরূহ, হ্যাঁ, যদি বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যে হয়, যেমন, নবীগণ, আউলিয়ায়ে কেরাম ও আলেম-ওলামাদের কবর যিয়ারত করা, তাহলে মহিলাদের জন্যও সুন্নাত পুরুষদের ন্যায়। কেউ কেউ বলেছেন, শর্তহীনভাবে মহিলাদের জন্য কবর যিয়ারত বৈধ। বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম একদা এক মহিলাকে একটি কবরস্থানে নিজ ছেলের কবরে বসে কাঁদতে দেখে তাকে ধৈর্য ধারন করার নির্দেশ দিলেন। তিনি তাকে কবর জিয়ারতে নিষেধ করেননি।
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَتَى عَلَى امْرَأَةٍ تَبْكِي عَلَى صَبِيٍّ لَهَا، فَقَالَ لَهَا: ্রاتَّقِي اللهَ وَاصْبِرِيগ্ধ، فَقَالَتْ: وَمَا تُبَالِي بِمُصِيبَتِي فَلَمَّا ذَهَبَ، قِيلَ لَهَا: إِنَّهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَخَذَهَا مِثْلُ الْمَوْتِ، فَأَتَتْ بَابَهُ، فَلَمْ تَجِدْ عَلَى بَابِهِ بَوَّابِينَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللهِ لَمْ أَعْرِفْكَ، فَقَالَ: ্রإِنَّمَا الصَّبْرُ عِنْدَ أَوَّلِ صَدْمَةٍগ্ধ، أَوْ قَالَ: ্রعِنْدَ أَوَّلِ الصَّدْمَةِগ্ধ.( )

মুসলিম শরীফে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সায়্যিদানা আয়শা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহাকে কবর জিয়ারতের দো‘আ শিক্ষা দিয়েছেন, যখন তিনি প্রিয়নবীর দরবারে আরয করলেন, এয়া রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আমি তাদের উদ্দেশে কি বলব? তখন হুযূর-ই করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করলেন,
قَالَ قُولِي السَّلَامُ عَلَى أَهْلِ الدِّيَارِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُسْلِمِينَ وَيَرْحَمُ اللَّهُ الْمُسْتَقْدِمِينَ مِنْكُمْ وَمِنَّا وَالْمُسْتَأْخِرِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى بِكُمْ لَلَاحِقُونَ( )
কবরে বসবাসরত মু’মিন মুসলমানগণ! তোমাদের উদ্দেশে সালাম, আল্লাহ্ তা‘আলা করুণা করুক আমাদের মধ্যে পূর্বে ও পরে আগমনকারী সকলের উপর, নিশ্চয় আমরা আল্লাহ্ চাহে তো তোমাদের সাথে মিলিত হবো।

প্রশ্ন : প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সে বাণী
لعن الله زوَّارات القبور وفي رواية عن أبي هريرة رضي الله عنه: “أن رسول الله صلى الله عليه وسلم لَعَنَ زَوَّاراتِ القبور”( )
আল্লাহ্ অধিক কবর যিয়ারতকারী মহিলাদের উপর অভিসম্পাত করেছেন) অর্থ কি?
উত্তর: আলিমগণ বলেন, এ হাদীসটি প্রযোজ্য ওই ক্ষেত্রে যদি তাদের যিয়ারতের উদ্দেশ্য মৃত ব্যক্তির কীর্তি বর্ণনা, তাদের জন্য কান্না-কাটি ও বিলাপ করা হয় যা সাধারণত মহিলাদের স্বভাবে পরিণত হয়েছে। তা হলে এ ধরনের জিয়ারত হারাম আর যদি এরূপ করা না হয় তাহলে বৈধ।

প্রশ্ন :
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ , قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” لا تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلا إِلَى ثَلاثَةِ مَسَاجِدَ : الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ , وَمَسْجِدِي هَذَا , وَالْمَسْجِدِ الأَقْصَى ” . ( )
“তিন মসজিদ ব্যতিরেকে অন্য কোন মসজিদের উদ্দেশ্যে সফর করো না” প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীর অর্থ কি?
উত্তর: বিজ্ঞ আলেমগণ বলেন, এ হাদীসের অর্থ হলো- অধিক সাওয়াব, ফযিলত বা মর্যাদার উদ্দেশ্যে তিন মসজিদ ছাড়া অন্য কোন মসজিদের দিকে সফর করবে না, কেননা এ তিন মসজিদে নামাযের সাওয়াব অনেক বৃদ্ধি করা হয়। যদি তা না হয় তাহলে মিনা, আরাফাত, মা-বাবা ও নিকটাত্মীয়দের সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে সফর, শিক্ষা অর্জন, ব্যবসা ও জিহাদসহ সকল প্রকার সফর নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। যা কোন মুসলমান কখনও বলেনি।

ষষ্ঠ অধ্যায়
মৃতদের শ্রবণশক্তি

মৃতদের শ্রবণশক্তি
প্রশ্ন : মৃতরা কি অনুধাবন এবং শুনতে পান যা তাদেরকে বলা হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, এ জন্যই প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সম্বোধনসূচক শব্দ দ্বারা মৃতদের জিয়ারত ও তাদের উপর সালাম পেশ করার বিধান প্রবর্তন করেছেন। অধিকাংশ সময় প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম জান্নাতুল বকী বাসীদের জিয়ারত ও সালাত প্রদান করতেন, এটা কখনও হতে পারে না যে, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এমন কোন জাতিকে সালাম দিচ্ছেন, যারা শুনছেনও না বুঝছেনও না।
উত্তর: ‘কিতাবুল কুবুর’-এ ইবনে আবিদ্ দুনিয়া হযরত আয়েশা সিদ্দিক্বা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
عَن زيد بن أسلم عَن عَائِشَة رضى الله تَعَالَى عَنْهَا قَالَت قَالَ رَسُول الله مَا من رجل يزور قبر أَخِيه وَيجْلس عِنْده إِلَّا استأنس بِهِ ورد عَلَيْهِ حَتَّى يقوم( )
কোন ব্যক্তি যখন তার মুসলমান ভাইয়ের কবর জিয়ারত করে এবং কবরের পাশে বসে তখন ওই কবরবাসী তাতে আনন্দ উপভোগ করে এবং তার সালামের উত্তর দেয়, যতক্ষণ সে স্থান ত্যাগ করে।
হযরত আবূ হোরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
حدثنا زيد بن أسلم، عَن أَبى هُرَيْرَة رضى الله تَعَالَى عَنهُ قَالَ إِذا مر الرجل بِقَبْر أَخِيه يعرفهُ فَسلم عَلَيْهِ رد عَلَيْهِ السَّلَام وعرفه وَإِذا مر بِقَبْر لَا يعرفهُ فَسلم عَلَيْهِ رد عَلَيْهِ السَّلَام( )
যখন কোন ব্যক্তি তার ভাইয়ের (প্রিয়জনের) কবরের পাশ দিয়ে গমন করে তার উপর সালাম দেয়, তখন ওই কবরবাসী তার সালামের উত্তর দেয় এবং তাকে চিনতে পারে। আর যদি এমন কবরের পাশ দিয়ে গমন করে যাকে সে চিনে না এবং তাকে সালাম দিল, তখন ওই কবরবাসী তার সালামের উত্তর দেয়।

প্রশ্ন : وَمَا أَنتَ بِمُسْمِعٍ مَّن فِي الْقُبُورِ যারা কবরে তাদেরকে আপনি শুনাতে পারবেন না। (সূরা ফাত্বির, আয়াত-২২) এ আয়াতটির অর্থ কি?
উত্তর: ইবনে ক্বাইয়্যূম তার ‘কিতাবুর রূহ’ তে বলেছেন, পবিত্র এ আয়াতটির বর্ণনার ধরণ থেকে বুঝা যায় যে, আয়াতটির উদ্দেশ্য হলো- ওই কাফির যার হৃদয় মৃত তাকে আপনি এমন কিছু শুনাতে পারবেন না যা দ্বারা সে উপকৃত হয়, যেমনিভাবে কবরবাসীকে যা কিছু বলা হয় তা শুনতে পারে কিন্তু উপকৃত হতে পারে না। আল্লাহ্ তা‘আলার উদ্দেশ্য এ নয় যে, কবরবাসীরা কখনও কিছু শুনতে পায় না। আর তা কিভাবে হতে পারে? অথচ প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, তারা তাদের শেষ বিদায় দানকারীদের পদধ্বনিও শুনতে পায়।
عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : العَبْدُ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ ، وَتُوُلِّيَ وَذَهَبَ أَصْحَابُهُ حَتَّى إِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ ( )
আরও বর্ণিত আছে যে, বদর যুদ্ধে নিহত কোরাইশ দলপতিরা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাদের উদ্দেশ্যে দেয়া বাণী ও কথা তারা শুনতে পেয়েছে।

عن أنس بن مالك رضي الله عنه :্র أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَرَكَ قَتْلَى بَدْرٍ ثَلَاثًا ، ثُمَّ أَتَاهُمْ فَقَامَ عَلَيْهِمْ فَنَادَاهُمْ فَقَالَ : يَا أَبَا جَهْلِ بْنَ هِشَامٍ ، يَا أُمَيَّةَ بْنَ خَلَفٍ ، يَا عُتْبَةَ بْنَ رَبِيعَةَ ، يَا شَيْبَةَ بْنَ رَبِيعَةَ ، أَلَيْسَ قَدْ وَجَدْتُمْ مَا وَعَدَ رَبُّكُمْ حَقًّا ، فَإِنِّي قَدْ وَجَدْتُ مَا وَعَدَنِي رَبِّي حَقًّا . فَسَمِعَ عُمَرُ قَوْلَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَيْفَ يَسْمَعُوا ، وَأَنَّى يُجِيبُوا وَقَدْ جَيَّفُوا ؟ قَالَ : وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ ، مَا أَنْتُمْ بِأَسْمَعَ لِمَا أَقُولُ مِنْهُمْ ، وَلَكِنَّهُمْ لَا يَقْدِرُونَ أَنْ يُجِيبُوا . ثُمَّ أَمَرَ بِهِمْ فَسُحِبُوا فَأُلْقُوا فِي قَلِيبِ بَدْرٍ গ্ধ.( )
অনুরূপভাবে তারা শুনতে পায় এমন সম্বোধনসূচক বাক্য দ্বারা তাদেরকে সালাম প্রদান করার নিয়ম ইসলাম প্রবর্তন করেছে। আর তাও বর্ণিত আছে যে,
عَنْ ابن عَبَّاسٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” مَا مِنْ أَحَدٍ مَرَّ بِقَبْرِ أَخِيهِ الْمُؤْمِنِ كَانَ يَعْرِفُهُ فِي الدُّنْيَا فَسَلَّمَ عَلَيْهِ إِلَّا عَرَفَهُ وَرَدَّ عَلَيْهِ السَّلَامَ ” . ( )
যে ব্যক্তি তার মৃত মুমিন ভাইকে সালাম দেয়, তখন সে তার সালামের উত্তর প্রদান করে।
সুতরাং উপরোক্ত আয়াতটি নি¤েœাক্ত আয়াতেরই ন্যায়, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتَىٰ وَلَا تُسْمِعُ الصُّمَّ الدُّعَاءَ إِذَا وَلَّوْا مُدْبِرِينَ (নিশ্চয় আপনি শুনাতে পারবেন না, মৃতদের এবং শুনাতে পারবেন না বধির দেরকে আহ্বান, কেননা তারা পশ্চাতপদ। [সূরা আন্ নামাল, আয়াত-৮০]

সপ্তম অধ্যায়
মৃতদের প্রতি উপহারস্বরূপ সাওয়াব পৌঁছানো

মৃতদের প্রতি উপহারস্বরূপ সাওয়াব পৌঁছানো
প্রশ্ন : কবরে কোরআন তিলাওয়াত করা এবং মৃতদের প্রতি সাওয়াবের হাদিয়া পৌঁছানোর হুকুম কি?
উত্তর: জেনে রাখ, মৃতদের উদ্দেশ্যে, কেরাত ও তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাহ্) পড়ার ন্যায় মুসলমানদের বিবিধ সৎকর্ম করা বৈধ ও সঠিক, মুসলমান আলিমগণের ঐক্যমতের ভিত্তিতে ওই আমলের সাওয়াব ও তাদের মৃতদের নিকট পৌঁছে। কেননা তারা তাদের কিরাত ও তাহলিল পাঠের পর এ দো‘আ করে থাকে যে, ‘হে আল্লাহ্! আমাদের এ কেরাত বা এ তাহলিলের সাওয়াব অমুকের প্রতি পৌঁছিয়ে দাও।
বিতর্ক হলো যদি এভাবে দো‘আ না করে থাকেন। তাই শাফেয়ী মাযহাবের প্রসিদ্ধ অভিমত হলো, যদি এভাবে দো‘আ করা না হয় তাহলে এ সাওয়াব মৃত ব্যক্তির নিকট পৌঁছবে না। আর শাফেয়ী মাযহাবের পরবর্তীদের নির্ভরযোগ্য অভিমত হলো, মৃত ব্যক্তির নিকট ক্বেরাত ও যিকিরের সাওয়াব পৌঁছে বাকী তিন মাযহাবের ঠিক একই অভিমত, আর যা যুগ যুগ ধরে মুসলমানগণ করে আসছেন, مَا رَآهُ الْمُسْلِمُونَ حَسَنًا فَهُوَ عِنْدَ اللَّهِ حَسَنٌ “( )
“যা মুসলমানরা উত্তম মনে করে তা আল্লাহ্ তা‘আলার কাছেও উত্তম ও শ্রেয়।”
আমাদের মহান ইমাম ও শেখ, কুতুবুল ইরশাদ হযরত ইমাম আবদুল্লাহ্ ইবনে আলাভী আল হাদ্দাদ বলেন:
قال سيدنا الإمام الحجة قطب الإرشاد الإمام عبد الله بن علوي الحداد نفع الله به ون أعظم ما يهدي إلي الموتى بركته وأكثره نفعا قراءة القرآن وإهداء ثوابه إليهم وقد أطبق علي العمل بذلك المسلمون في الإعصار والأمصار وقال به الجماهير من العلماء والصالحين سلفا وخلفا الخ ما قال رضي الله عنه( )
‘মৃতদের প্রতি যা পাঠানো হয় তৎমধ্যে সর্বমহান বরকতময় এবং সর্বাধিক কল্যাণকর হলো, কোরআন তিলাওয়াত করা এবং এ তিলাওয়াতের সাওয়াব তাদের প্রতি পৌঁছানো, যার উপর সকল যুগ ও সকল দেশের মুসলমানদের আমল অব্যাহত এবং যার উপর একমত হয়েছেন পূর্ব ও পরবর্তী সংখ্যা গরিষ্ঠ আলিম, ওলামা ও মাশায়েখগণ… ( )।

প্রশ্ন : মৃতদের উদ্দেশ্যে কোরআন তেলাওয়াতের বৈধতার দলীল কি?
উত্তর: হযরত মা’কাল ইবনে ইয়ামার থেকে ইমাম আহমদ, আবূ দাউদ ও ইবনু মাজাহ্ বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
عَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ رضي الله عنه قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : اقْرَءُوا يس عَلَى مَوْتَاكُمْ ( )
“তোমরা তোমাদের মৃতদের উপর সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত কর।”
এ হাদিসের প্রেক্ষিতে ওলামাগণ বলেন, এ হাদিসটি শর্তহীন, তাই এটি মৃত্যু শয্যায় শায়িত তথা মৃত্যু পথগামী ও মৃত উভয়কেই শামিল করে।
ইমাম তাবরানী তাঁর ‘মু’জাম আল কাবীর’ এ এবং ইমাম বায়হাক্বী তাঁর শু‘আবুল ঈমান’ নামক হাদিস গ্রন্থে হযরত ইবনে ওমর থেকে মারফূ’ সূত্রে বর্ণনা করেন,
سَمِعْتُ عَطَاءَ بْنَ أَبِي رَبَاحٍ , سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ , سَمِعْتُ النَّبِيَّ ، صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، يَقُولُ : ” إِذَا مَاتَ أَحَدُكُمْ فَلا تَحْبِسُوهُ , وَأَسْرِعُوا بِهِ إِلَى قَبْرِهِ , وَلْيُقْرَأْ عِنْدَ رَأْسِهِ فَاتِحَةُ الْكِتَابِ ، وَعِنْدَ رِجْلَيْهِ بِخَاتِمَةِ الْبَقَرَةِ فِي قَبْرِهِ “( )
তোমাদের কেউ মৃত্যুবরণ করলে তোমরা তাকে তোমাদের কাছে আটকে রেখনা বরং দ্রুত তাকে তার কবরে কবরস্থ কর। অতঃপর তোমাদের কেউ যেন তার মাথার পাশে (তাকে কবরস্থ করার পর) সূরা বাক্বারার প্রথম আয়াতগুলো এবং তার পদযুগলের পাশে সূরা বাক্বারার শেষ আয়াতগুলো তেলাওয়াত করে। এ হাদিসটি ইমাম সুয়ূতী তার ‘জমউল জাওয়ামে’ নামক কিতাবে বর্ণনা করেছেন।
ইবনে ক্বাইয়্যেম তাঁর কিতাব, ‘আর রূহ’ তে এমন কিছু অভিমত উল্লেখ করেছেন যা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কবরের উপর ক্বোরআন তিলাওয়াত করা সুন্নাত। তার স্বপক্ষের দলীল হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, সালফে সালেহীনগণের অনেকেই মৃত্যুকালে ওসীয়ত করেছেন যেন তাঁদের কবরে ক্বোরআন তিলাওয়াত করা হয়, তাঁদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হলেন হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে ওমর, তিনি মৃত্যুকালে ওয়াছিয়ত করেছেন, তাঁর কবরে যেন সূরা বাক্বারা পাঠ করা হয়।
অনুরূপভাবে আনসারগণের যখন কেউ মৃত্যুবরণ করতেন তখন তাঁরা তার কবরে গিয়ে ক্বোরআন তিলাওয়াত করতেন।

বিজ্ঞ আলিমগণ বলেছেন, যে কোন ব্যক্তি তার পূণ্যকাজের সাওয়াব অন্য কাউকে উপহার স্বরূপ দান ও বখশিশ করতে পারবে, চাই সে পুণ্য কাজটি নামায হোক কিংবা ক্বোরআন তিলাওয়াত হোক অথবা অন্য কোন ধরনের পুণ্যকাজ হোক।

তার দরীল হলো: ইমাম দার আল ক্বুতনীর বর্ণিত হাদিসটি
وَلَقَد جَاءَ رَجلٌ إلى رسولِ الله صلى الله عَلَيْه وَسَلَّمَ وقال له :্রيَا رَسول الله، كَانَ لِي أَبوَان أَبُرُّهُمَا حَالَ حَياتِهمَا، فَكَيفَ لِي بِبِرِّهِمَا بعد مَماتِهمَا؟ فَقال النبيّ صلى الله عليه وسلم : ্রإنَّ من البرّ بَعدَ الـمَوت أنْ تُصَلِّي لَهُمَا مَعَ صَلاَتِكَ وتصوم لهما مع صومكَগ্ধ. عَنِ الْحَجَّاجِ بْنِ دِينَارٍ قال: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم: ্র إِنَّ مِنَ الْبِرِّ بَعْدَ الْبِرِّ أَنْ تُصَلِّىَ لأَبَوَيْكَ مَعَ صَلاَتِكَ وَتَصُومَ لَهُمَا مَعَ صَوْمِكَগ্ধ.( )
এক ব্যক্তি প্রিয়নবীর দরবারে হাজির হয়ে আরয করলেন, এয়া রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম! আমি আমার মাতা-পিতার জীবদ্দশায়ে তাদের প্রতি সদাচরণ করতাম, তাঁদের ইন্তিকালের পর আমি তাঁদের প্রতি সদাচরণ স্বরূপ কি করতে পারি? তখন প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তার উত্তরে এরশাদ করলেন, মা-বাবার প্রতি তোমার ভালবাসা ও অনুগ্রহের প্রমাণ হলো- তুমি যেন তোমার নিজের নামায আদায়কালে তাঁদের জন্যও নামায পড় এবং তোমার রোজার সাথে যেন তাঁদের জন্যও রোজা রাখ।

প্রশ্ন : মহান আল্লাহর বাণী وَأَن لَّيْسَ لِلْإِنسَانِ إِلَّا مَا سَعَىٰ (মানুষ তাই পাবে যা সে উপার্জন করেছে) এবং প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের বাণী:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُ , رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : ” إِذَا مَاتَ الإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَمَلُهُ إِلا مِنْ ثَلاثٍ : صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ ، أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ ، أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ( )
“মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায়।” এর অর্থ কি?

উত্তর: ইবনুল কাইয়্যূম তার ‘কিতাবুর রূহ’ নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন,
وقال ابن القيم في كتاب (الروح ص১৫৭): وَقَالَت طَائِفَة أُخْرَى الْقُرْآن لم ينف انْتِفَاع الرجل بسعي غَيره وَإِنَّمَا نفي ملكه لغير سَعْيه وَبَين الْأَمريْنِ من الْفرق مَالا يخفي فَأخْبر تَعَالَى أَنه لَا يملك إِلَّا سَعْيه وَأما سعى غَيره فَهُوَ ملك لساعيه فَإِن شَاءَ أَن يبذله لغيره وَإِن شَاءَ أَن يبقيه لنَفسِهِ وَهُوَ سُبْحَانَهُ لم يقل لَا ينْتَفع إِلَّا بِمَا سعى( )
কোন মানুষ অন্য কারও আমল দ্বারা উপকৃত হওয়াকে পবিত্র ক্বোরআন অস্বীকার করেনি বরং পবিত্র ক্বোরআনে বলছে, মানুষ তার কর্মের মালিক সে নিজেই এবং অন্যের মালিক একমাত্র ওই কর্তাই। সুতরাং চায় সে তা অন্যের জন্য দান করুক নতুবা নিজের জন্য তা সংরক্ষণ করে রাখুক। আর আল্লাহ্ তা‘আলা এ কথা বলেননি যে, সে একমাত্র তার নিজের কৃত কর্ম দ্বারাই উপকৃত হবে।
আর প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বাণী “إِذا مَاتَ العَبْد انْقَطع عمله” (তার আমল বন্ধ হয়ে যায়)
قال ابن القيم في كتاب الروح (ص/১৭৫): وَأما استدلالكم بقوله صلى الله عليه وسلم “إِذا مَاتَ العَبْد انْقَطع عمله” فاستدلال سَاقِط فانه صلى الله عليه وسلم لم يقل انْقَطع انتفاعه وَإِنَّمَا أخبر عَن انْقِطَاع عمله وَأما عمل غَيره فَهُوَ لعامله فان وهبه لَهُ وصل إِلَيْهِ ثَوَاب عمل الْعَامِل لَا ثَوَاب عمله هُوَ فالمنقطع شَيْء والواصل إِلَيْهِ شَيْء آخر
দ্বারা অন্যের আমল দ্বারা উপকৃত হওয়াকে প্রত্যাখান করা হয়নি বরং বলা হয়েছে তার নিজের আমল বন্ধ হয়ে গেছে। আর অন্যের আমলের মালিক তার ওই কর্তাই, সুতরাং সে যদি মৃত ব্যক্তির জন্য তা দান করে দেয়, তাহলে তার সাওয়াব ওই কর্তার পক্ষ থেকে ওই মৃত ব্যক্তির কাছে পৌঁছে যাবে, তার স্বীয় কর্মের সাওয়াব হিসেবে নয়। অতএব, বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি বিষয়, আর পৌঁছে যাওয়া অন্য আরেকটি বিষয়।( )
হযরত ইবনে আব্বাস থেকে তাফসীর বিশারদগণ বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী, وَأَن لَّيْسَ لِلْإِنسَانِ إِلَّا مَا سَعَىٰনি¤েœাক্ত আয়াত দ্বারা মানসুখ বা রহিত করা হয়েছে।
আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন,
وَالَّذِينَ آمَنُوا وَاتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُم بِإِيمَانٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَمَا أَلَتْنَاهُم مِّنْ عَمَلِهِم مِّن شَيْءٍ ۚ كُلُّ امْرِئٍ بِمَا كَسَبَ رَهِينٌ
আর যারা ঈমান গ্রহণ করবে এবং তাদের পরিবার-পরিজনও ঈমান সহকারে তাদের অনুসরণ করবে, তাহলে আমি তাদের সাথে তাদের পরিবার-পরিজনকে মিলিত করে দেব। [সূরা আত্তুর, আয়াত নং-২১] তাই দেখা গেল, সন্তানদেরকে বেহেশতে প্রবেশ করানো হলো পিতা-মাতাদের সৎকর্মপরায়ণতার কারণে।
হযরত ইকরামাহ্ বলেন, আয়াতটি ছিল মূলত: হযরত মূসা ও হযরত ইব্রাহীম আলায়হিস্ সালামের উম্মতদের বিষয়ে, আর এ মুসলিম জাতির জন্য তাদের নিজেদের আমল ও অন্যদের পক্ষ থেকে তাদের জন্য করা আমলও। কেননা এক মহিলা তার একটি শিশু সন্তানকে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে এনে জিজ্ঞেস করলেন,
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رضي الله عنهما قَالَ : رَفَعَتْ امْرَأَةٌ صَبِيًّا لَهَا فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ , أَلِهَذَا حَجٌّ ؟ قَالَ : نَعَمْ وَلَكِ أَجْرٌ. ( )
এয়া রাসূলাল্লাহ্! এ শিশুর জন্য কি হজ্ব আছে? তখন প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হ্যাঁ, তার সাওয়াব পাবে তুমিই।
অন্য এক ব্যক্তি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন,
عن عائشةَ رَضِيَ اللهُ عنها: أنَّ رجلًا قال للنبيِّ صلَّى الله عليه وسلَّم: إنَّ أمِّي افتُلتَتْ نفسُها، وأظنُّها لو تكلَّمَتْ تصدَّقَتْ؛ فهل لها أجرٌ إن تصدَّقتُ عنها؟ قال: نعمْ( )
হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম, আমার মা আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন, আমি যদি তার পক্ষ থেকে দান-সাদক্বাহ্ করি, তাহলে কি তিনি তার সাওয়াব পাবেন? তখন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ অবশ্যই।

অষ্টম অধ্যায়
কবর প্রসঙ্গে

কবর প্রসঙ্গে

প্রশ্ন : কবরকে স্পর্শ করা বা কবরের উপর হাত বুলানো এবং কবরকে চুম্বন করার হুকুম কি?
উত্তর: অধিকাংশ আলিমগণের মতে, তা শুধুমাত্র মাকরূহ। আর কারও কারও মতে তা জায়েয ও বৈধ যদি বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে। কেউ তা হারাম বা অবৈধ বলেননি।

প্রশ্ন : তার বৈধতার দলীল কি?
উত্তর: যেহেতু এ বিষয়ে শরীয়তের কোনও নিষেধাজ্ঞাও আসেনি এবং তার অবৈধতার কোন দলীলও নেই।
বর্ণিত আছে যে,
قد روي أن بلالاً رضي الله عنه لما زار المصطفى -صلى الله عليه وسلم – جعل يبكي ويمرغ خديه على القبر الشريف. وأن ابن عمر رضي الله عنهما كان يضع يده اليمنى عليه. ذكر ذلك الخطيب بان جملة. وثبت عن الإمام أحمد بن حنبل رحمه الله أنه سئل عنِ الرَّجُلِ يَمسُّ مِنبَرَ النبيّ صلى الله عليه وسلم ويَتبرَّكُ بِمسِّهِ ويُقبِّلُه وَيفْعلُ بالقبر مثل ذلك، أو نَحْو هذا، يُريدُ بذلكَ التقرُّبَ إلى الله جلَّ وعزَّ؟ فقالَ: لا بأسَ بذلك( )
যখনি হযরত বেলাল রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম রওজা শরীফ জেয়ারতে আসতেন তখনি তিনি কাঁদতে থাকেন এবং তাঁর উভয় গন্ডদেশ (গাল) প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর কবর শরীফের সাথে ঘষতেন।
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা তাঁর ডান হাত প্রিয়নবীর কবর শরীফের উপর রাখতেন ও মালিশ করতেন।
وذكر الخطيب إبن جملة : أن إبن عمر رضى الله تعالى عنه كان يضع يده اليمنى على القبر الشريف. ( )
এ বর্ণনাটি খতিব ইবনে জুমলাহ উল্লেখ করেছেন।
প্রমাণিত আছে যে, যখন ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হিকে প্রিয়নবীর কবর মুবারক ও মিম্বর শরীফ চুম্বন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো তখন তিনি বললেন, ‘‘কোন অসুবিধা নেই।’’
وأخبرني الحافظُ أبو سعيد بن العلائي قال: رأيتُ في كلام أحمد بن حنبل في جُزءٍ قديمٍ عليهِ خطُّ ابن ناصر وغيره من الحفَّاظ: أن الإمام أحمد سُئِلَ عن تقبيل قبرِ النبيِّ صلى الله عليه وسلم، وتقبيل منبره؟ فقالَ: لا بأسَ بذلك ( )
প্রশ্ন : কবর পাকা করা ও কবরের উপর দালান (মাজার) নির্মাণ করার হুকুম কি?
উত্তর:
أما تجصيص القبور فهو مكروه عند أكثر العلماء وقال أبو حنيفة: لا يكره ذلك , ولم يرد في الشرع على التحريم وأما حديث النهي أن يجصص القبر وأن يبنى عليه وأن يقعد عليه فقد اتفق جمهور العلماء على أن النهي للتنزيه لا للتحريم
অনেক আলিমগণের মতে কবর পাকা করা মাকরূহ। হযরত ইমাম আবূ হানিফা রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হির মতে মাকরূহ নয় এবং শরীয়তে তা হারাম হবার কোন দলীল উল্লেখ নেই। আর কবর পাকা করা, কবরের উপর মাজার নির্মাণ করা ও কবরের উপর বসার বিষয়ে নিষেধসূচক হাদিসটি সংখ্যাগরিষ্ট আলেমগণের মতে মাকরূহে তানযিহির জন্য, হারামের জন্য নয়।

প্রশ্ন : বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কবর পাকা করার প্রচলিত প্রথাটা কি নিরর্থক বা অপ্রয়োজনীয়?
উত্তর: তারা তা অযথা ও শোভা বর্ধনের জন্য করে না বরং তার পেছনে বিশেষ কিছু সৎ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিহিত রয়েছে। তৎমধ্যে-
*যাতে চেনা যায় যে, এ টি কবর, ফলে জিয়ারতের মাধ্যমে তা আবাদ রাখা হবে এবং অপবিত্রতা ও অবমাননা থেকে নিরাপদ থাকবে।
*যাতে করে মানুষ কবরটি খুঁড়ে কবরের লাশটিকে মাটির সাথে মিশ্রিত হয়ে যাবার আগেই বের করে ফেলে দিয়ে সেথায় অন্য কাউকে দাফন না করে।
*যাতে করে তার প্রিয়জনরা সেথায় জিয়ারতের জন্য সমবেত হতে পারে, কেননা তা সুন্নত।
প্রমাণিত আছে যে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হযরত ওসমান ইবনে মাযউন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর কবরের উপর একটি বড় পাথর রেখে দিয়ে এরশাদ করলেন,
ثبت في سنن أبي داود (৩২০৬) من حديث المطلب قال: لما مات عثمانُ بنُ مَظْعُونٍ، وأُخْرِج بِجِنازَتِه، فدُفِن، أمَر النبيُّ صلى الله عليه وسلم رجلاً أن يَأتِيَهُ بِحَجَرٍ، فلَمْ يَستطِعْ حَمْلَه، فقام إليه رسولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وحَسَرَ عن ذراعيه، ثم حمَلَها فوضَعها عندَ رأسِه، وقال: “أَتَعَلَّمُ بِهَا قبرَ أَخِي وأَدْفِنُ إِلَيْهِ مَنْ مَاتَ مِن أَهْلِي”. ( )
আমি আমার প্রিয় সাহাবীর কবরকে চিহ্ণিত করে রাখলাম (এ পাথর দ্বারা) যাতে করে তার পাশে তার পরিবার-পরিজনকে দাফন করতে পারি।( )

আর কবরের উপর মাযার নির্মাণ প্রসঙ্গে ওলামাগণ বিস্তারিত আলোকপাত করেছেনঃ
যদি মাযার নির্মাণের জায়গাটি স্বীয় মালিকানাধীন ভূমি হয় অথবা অন্য কারও ভূমির উপর মালিকের অনুমতি সাপেক্ষে নির্মিত হয় তাহলে তা মাকরূহ, হারাম নয়, চাই মাজারটি গুম্বুজ আকারের হয় কিংবা স্বাভাবিক ধরনের হয়। যদি ওয়াক্বফকৃত বা ফি সাবিলিল্লাহ্ কবরস্থান হয় তাহলে তাতে মাযার নির্মাণ হারাম। আর হারাম হবার কারণ হলো অন্যদের দাফনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা এবং কবরস্থানকে সংকোচিত করা মূলত এ কারণেই হারাম।

হ্যাঁ, তবে আউলিয়ায়ে কেরাম এবং ওলামায়ে ইযামের কবরের উপর মাযার নির্মাণের বিষয়টি উপরোক্ত নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে, যদিও বা মাজারটি ফি সাবিলিল্লাহ্ কবরস্থানে হয়, কেননা এর মাধ্যমে শরীয়ত নির্দেশিত জিয়ারতের বিধানটি প্রচলিত থাকবে, বরকত হাসিল করা যাবে এবং ক্বোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে মৃত-জীবিত সবাই উপকৃত হবে। যার প্রমাণ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মুসলমানদের আমল আর তা ওলামাগণের দৃষ্টিতে শরীয়তের একটি দলীল।

প্রশ্ন :
” لَعَنَ اللَّهُ الْيَهُودَ، وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسْاجِد”
(অভিসম্পাত করেছেন মহান আল্লাহ্ ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদের উপর কেননা তারা তাদের নবীগণের কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করেছে) হাদিস শরীফটির অর্থ কি?
উত্তর: আলিমগণ বলেন, হাদিস শরীফটির অর্থ হলো সম্মানার্থে তাঁদের কবরের উপর সাজদা করা, কবরমুখী হয়ে নামায পড়া, যেমনিভাবে ইয়াহুদী, খৃস্টানগণ করে থাকে। অর্থাৎ তারা সম্মান প্রদর্শন করতে গিয়ে তাদের নবীদের কবরে সাজদা করতো এবং তাঁদের কবরকে ক্বিবলাহ্ হিসেবে গ্রহণ করতো ও সে দিকে মুখ করে নামায পড়তো, যা নিঃসন্দেহে হারাম।
তাই নিষেধাজ্ঞাটি ছিল তাদের সাথে যেন অনুরূপ না হয় এবং তাদের ন্যায় কবরকে সাজদা করা ও কবরের দিকে ফিরে নামায পড়া না হয়। আর এ কাজটি কোন মুসলমানের শোভা পায় না এবং ইসলামে তার কোন সম্ভাবনাও নেই, যেহেতু প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন,
عَنْ جَابِرٍ قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِنَّ الشَّيْطَانَ قَدْ أَيِسَ أَنْ يَعْبُدَهُ الْمُصَلُّونَ فِي جَزِيرَةِ الْعَرَبِ، وَلَكِنْ فِي التَّحْرِيشِ بَيْنَهُمْ ( )
শয়তান ব্যর্থ ও নৈরাশ হয়েছে মুসল্লীগণকে তার ইবাদতের দিকে আকৃষ্ট করা থেকে, কিন্তু তাদের মাঝে প্ররোচণা দানে (ব্যর্থ হয়নি)। ( )

প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর তাকে ‘তালক্বীন’ দেয়ার হুকুম কি?

উত্তর: অনেক ওলামাগণের দৃষ্টিতে প্রাপ্ত বয়স্ক মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পরে ‘তালক্বীন’ দেয়া মুস্তাহাব। কেননা আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেছেন, وَذَكِّرْ فَإِنَّ الذِّكْرَىٰ تَنفَعُ الْمُؤْمِنِينَ (স্মরণ করিয়ে দাও, কেননা স্মরণে মুমিনদের কল্যাণ রয়েছে, )সূরা আয্যারিত, আয়াত নং-৫৫)।
তাই শাফেয়ীগণ ও হাম্বলী মাযহাবের অধিকাংশ আলিমগণ এ কাজকে মুস্তাহাব হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং হানাফী ও মালেকী মাযহাবের বিজ্ঞ আলিমগনের একই অভিমত। আর মানুষ এ সময়টিতেই স্মরণ করিয়ে দেয়ার প্রতি অধিক মুখাপেক্ষী।
ইবনে তাইমিয়্যাহ্ তার ‘ফাতাওয়া’তে উল্লেখ করেছেন,
هَذَا التَّلْقِينُ الْمَذْكُورُ قَدْ نُقِلَ عَنْ طَائِفَةٍ مِنْ الصَّحَابَةِ : أَنَّهُمْ أَمَرُوا بِهِ ، كَأَبِي أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ ، وَغَيْرِهِ ( )
সাহাবাগণের একটি বড় অংশ থেকে উল্লেখিত ‘তালক্বীন’ প্রমাণিত। তারা সে বিষয়ে নির্দেশিত ছিলেন।
হযরত ইমাম আহমদ্ ইবনে হাম্বল বলেন,
قَالَ الْإِمَامُ أَحْمَدُ وَغَيْرُهُ مِنْ الْعُلَمَاءِ : إنَّ هَذَا التَّلْقِينَ لَا بَأْسَ بِهِ ، فَرَخَّصُوا فِيهِ ، وَلَمْ يَأْمُرُوا بِهِ .وَاسْتَحَبَّهُ طَائِفَةٌ مِنْ أَصْحَابِ الشَّافِعِيِّ ، وَأَحْمَدَ ،( )
এতে কোন অসুবিধা নেই এবং শাফেয়ী, আহমদ্ ইবনে হাম্বলের অনুসারীদের একটি বৃহৎ দল জনগোষ্ঠী একে মুস্তাহাব হিসেবে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
তিনি আরও বলেছেন,
وَقَدْ ثَبَتَ أَنَّ الْمَقْبُورَ يُسْأَلُ ، وَيُمْتَحَنُ ، وَأَنَّهُ يُؤْمَرُ بِالدُّعَاءِ لَهُ ؛ فَلِهَذَا قِيلَ : إنَّ التَّلْقِينَ يَنْفَعُهُ ، فَإِنَّ الْمَيِّتَ يَسْمَعُ النِّدَاءَ .كَمَا ثَبَتَ فِي الصَّحِيحِ { عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ : إنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ } وَأَنَّهُ قَالَ : { مَا أَنْتُمْ بِأَسْمَعَ لِمَا أَقُولُ مِنْهُمْ } ، وَأَنَّهُ أَمَرَنَا بِالسَّلَامِ عَلَى الْمَوْتَى .فَقَالَ : { مَا مِنْ رَجُلٍ يَمُرُّ بِقَبْرِ الرَّجُلِ كَانَ يَعْرِفُهُ( )
প্রমাণিত যে, নিশ্চয় কবরবাসী জিজ্ঞেসিত হয় এবং তাঁর জন্য দো‘আ করার নির্দেশ প্রদানও করা হয়, তাই বলা হয়েছে, তালক্বীন তার উপকারী। কেননা মৃতরা জীবিতদের আহ্বান শুনতে পান, যেমন বিশুদ্ধ হাদিসে বর্ণিত আছে যে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, إنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِم(সে তাদের পাদুকা ধ্বনি শুনতে পায়)।
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আরও এরশাদ করেছেন, مَا أَنْتُمْ بِأَسْمَعَ لِمَا أَقُولُ مِنْهُمْ (আমি তাদেরকে যা বলছি তা তোমরা তাদের চেয়ে অধিক শুনতে পাওনা)।

প্রশ্ন : উল্লেখিত তালক্বীনের পদ্ধতি সম্পর্কে হাদিসে কোনও বর্ণনা আছে?
উত্তর: হ্যাঁ, ইমাম ত্বাবরানী মারফূ’ সূত্রে বর্ণনা করেছেন,
عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الأَوْدِيِّ ، قَالَ : شَهِدْتُ أَبَا أُمَامَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، وَهُوَ فِي النَّزْعِ ، قَالَ : ” إِذَا أَنَا مُتُّ ، فَاصْنَعُوا بِي كَمَا أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، أَنْ نَصْنَعَ بِمَوْتَانَا ، أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِذَا مَاتَ أَحَدٌ مِنْ إِخْوَانِكُمْ ، فَسَوَّيْتُمُ التُّرَابَ عَلَى قَبْرِهِ ، فَلْيَقُمْ أَحَدُكُمْ عَلَى رَأْسِ قَبْرِهِ ، ثُمَّ لِيَقُلْ : يَا فُلانُ بْنَ فُلانَةَ ، فَإِنَّهُ يَسْمَعُهُ وَلا يُجِيبُ ، ثُمَّ يَقُولُ : يَا فُلانُ بْنَ فُلانَةَ ، فَإِنَّهُ يَسْتَوِي قَاعِدًا ، ثُمَّ يَقُولُ : يَا فُلانُ بْنَ فُلانَةَ ، فَإِنَّهُ يَقُولُ : أَرْشِدْ رَحِمَكَ اللَّهُ ، وَلَكِنْ لا تَشْعُرُونَ ، فَلْيَقُلِ : اذْكُرْ مَا خَرَجْتَ عَلَيْهِ مِنَ الدُّنْيَا ، شَهَادَةَ أَنْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ، وَأَنَّكَ رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا ، وَبِالإِسْلامِ دِينًا ، وَبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا ، وَبِالْقُرْآنِ إِمَامًا ، فَإِنَّ مُنْكَرًا وَنَكِيرًا يَأْخُذُ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا بِيَدِ صَاحِبِهِ ، وَيَقُولُ : انْطَلِقْ مَا نَقْعُدُ عِنْدَ مَنْ قَدْ لُقِّنَ حُجَّتَهُ ، فَيَكُونُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ حَجِيجَهُ دُونَهُمَا ” ، فَقَالَ رَجُلٌ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، فَإِنْ لَمْ يَعْرِفْ أُمَّهُ ، قَالَ : يَنْسُبُهُ إِلَى حَوَّاءَ عَلَيْهَا السَّلامُ ، يَا فُلانُ ابْنَ حَوَّاءَ . ( )
যখন তোমাদের কোন মুসলমান ভাই ইন্তেকাল করে এবং তোমরা তাকে কবরস্থ করেছো, তখন তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যেন তার কবরের মাথার পার্শে দাড়িয়ে এ কথা বলে, হে অমুক রমণীর ছেলে অমুক! তখন সে শুনতে পারে তার পর আবার বলবে, হে অমুকের ছেলে অমুক! তখন সে উঠে বসবে, তারপর আবার যখন বলবে, হে অমুকের ছেলে অমুক! তখন সে উত্তরে বলবে, আল্লাহ্ তোমার উপর করুণা করুক। তুমি আমাকে দিক-নির্দেশনা দাও। কিন্তু তোমরা তা অনুভব করতে পারবে না। অতঃপর সে যেন ওই মৃত ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলে, স্মরণ কর ওই কালেমায়ে শাহাদাতকে যার উপর দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থেকে এ দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছ; আমার সাক্ষ্য যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই এবং নিশ্চয় হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসুল (আরও স্মরণ করা যে,) নিশ্চয় তুমি আল্লাহ্ তা‘আলাকে রব হিসেবে, ইসলামকে সত্য দ্বীন হিসেবে, হযরত মুহাম্মদ মোস্তফাকে সত্য নবী হিসেবে এবং কোরআনকে ইমাম ও আদর্শ হিসেবে সম্মতি দিয়ে গ্রহণ করে নিয়েছ। তখন নিশ্চয় মুনকার ও নকীর উভয়ে পরস্পরের হাত ধরে বলবে, চলো আমরা ফিরে যাই, অকাট্য প্রমাণের তালক্বীন তাকে দেয়া হয়েছে তার কাছে বসে থাকার কোনও প্রয়োজন নেই।
তখন জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, ‘এয়া রাসূলাল্লাহ্! যদি সে ওই মৃত ব্যক্তির মায়ের নাম না জানে, তখন কি বলবে? প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন, তখন সে তাকে তার আদি মাতা হাওয়া আলায়হিস্ সালামকে সম্বোধন করে বলবে, হে হযরত হাওয়া আলায়হাস্ সালাম-এর ছেলে অমুক!

নবম অধ্যায়
আউলিয়ায়ে কেরাম বিষয়ক

আউলিয়ায়ে কেরাম বিষয়ক

প্রশ্ন : আউলিয়ায়ে কেরামের মাযার শরীফের সামনে পশু জবাই করার হুকুম কি?
উত্তর: এ বিষয়ে ওলামায়ে কেরাম বিস্তারিত আলোচনা করেছেন, আর তা হলোঃ
এ জবাইটা যদি কোন ওলীর নামে হয় অথবা তাঁর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে হয়, তাহলে তা গায়রুল্লাহ্ (আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারও) নামে জবাই করার সমতুল্য, তাই জবাইকৃত পশু মূলত: মৃত পশুর ন্যায় হারাম এবং এ কাজ সম্পাদনকারী গুনাহ্গার হবে, তবে কাফির হবে না। হ্যাঁ, যদি এর মাধ্যমে ওই ওলীর প্রতি তা’যিম-সম্মান এবং তাঁর ইবাদত উদ্দেশ্য হয় তাহলে তা কুফর। যেমনিভাবে যদি কেউ ইবাদতের উদ্দেশ্যে কোন ওলীকে সাজদাহ্ করে।
আর যদি তার জবাইয়ের উদ্দেশ্য একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলা হয়ে থাকে এবং জবাইকৃত পশুর গোশত গরীব-মিসকিনদের মাঝে সদক্বাহ্ করে দেয় ওই ওলীর রূহের প্রতি ইসালে সাওয়াব হিসেবে, তা শুধুমাত্র জায়েজ নয় বরং তা সকল ইমাম ও ফক্বীহ্গণের মতে মুস্তাহাব। কেননা তা এক প্রকার সদক্বাহ্, যা মৃত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে করা হয় এবং যা তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও ইহসানের বহিঃপ্রকাশ। যার প্রতি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন এবং উৎসাহ্ প্রদান করেছেন। তাই তা বুঝার চেষ্টা কর।

প্রশ্ন : আউলিয়ায়ে কেরামের উদ্দেশ্যে নজর-মান্নত করার হুকুম কি?
উত্তর: ওলামায়ে কেরামের ভাষ্য হলো, আউলিয়ায়ে কেরাম ও ওলামায়ে ইজামের মাজার শরীফের উদ্দেশ্যে নজর-মান্নত করা বৈধ ও শরীয়তসম্মত। যদি মান্নতকারীর এ নজর-নেয়াজের উদ্দেশ্য হয় শুধুমাত্র তাঁদের মাজারে অবস্থানরত তাঁদের সন্তানগণ এবং ফকীর-মিসকিনগণ অথবা যদি তা দ্বারা তাঁদের মাজার নির্মাণ বা সংস্কার উদ্দেশ্য হয়, কেননা এর মাধ্যমে তাঁদের মাজার জিয়ারতের সুব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। যা বৈধ এবং প্রত্যাশিতও।

অনুরূপভাবে তাও বৈধ হবে যদি মান্নতকারী শর্তহীনভাবে তা দান করে এবং সুনির্দিষ্ট কোন নিয়তও না করে, আর যদি তা বৈধ প্রয়োজনে ও কল্যাণে ব্যয় করা হয়। হ্যাঁ, যদি তা দ্বারা কবরকে সম্মান করা এবং আল্লাহ্ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে কবরবাসীর নৈকট্য অর্জন করা উদ্দেশ্য হয় অথবা মৃত ব্যক্তি বা ওই ওলীর জন্যই মান্নত ও নজর করা হয় তাহলে ওই মান্নত সম্পাদিত হবে না, কেননা, তা হারাম।
এ কথা প্রমাণিত ও সত্য ও সর্বজনজ্ঞাত যে, কোন ঈমানদার কখনও এ ধরনের মান্নত করে না, তারা একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলার উদ্দেশ্যেই করে থাকেন, যদিও তা কোন মাজার প্রাঙ্গণেই হোক না কেন।

প্রশ্ন : যখন মুসলমানগণ কোন কিছু মৃতদের উদ্দেশ্যে জবাই করেন তাতে সাধারণত তাদের কি উদ্দেশ্য থাকতে পারে?
উত্তর: জেনে রেখ, এতে মুসলমানদের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো, তাঁদের পক্ষ থেকে দান-খয়রাত করা এবং তার সাওয়াব তাঁদের রূহে বখশিশ করা। তাই যখনি কোন মুসলমান কোন নবী বা ওলীর উদ্দেশ্যে কোন পশু জবাই করে অথবা তাঁদের জন্য কোন কিছু মান্নত করে মূলত তার উদ্দেশ্য হলো, তাঁদের পক্ষ থেকে সাজদা করা এবং তার মাধ্যমে প্রাপ্ত সাওয়াবকে তাঁদের রূহের উদ্দেশ্যে ন্যস্ত করা। ফলে তা মৃতদের জন্য জীবতদের পক্ষ থেকে হাদিয়া ও উপকারই। যার প্রতি শরীয়ত নির্দেশ প্রদান করেছে।
এ কথার উপর আহলে সুন্নাত এবং ওলামায়ে উম্মত ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, জীবিতদের পক্ষ থেকে মৃতদের জন্য সাজদা অত্যন্ত উপকারী এবং তা তাদের রূহে অবশ্যই পৌঁছে।

প্রশ্ন : মৃতদের প্রতি দান-খয়রাতের সাওয়াব পৌঁছার পক্ষে দলীল কি?
উত্তর: এর উপর অসংখ্য বিশুদ্ধ হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
ইমাম মুসলিম তার কিতাবে হযরত আবু হোরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه أَنَّ رَجُلًا قَالَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ أَبِي مَاتَ وَتَرَكَ مَالًا وَلَمْ يُوصِ فَهَلْ يُكَفِّرُ عَنْهُ أَنْ أَتَصَدَّقَ عَنْهُ؟ قَالَ نَعَمْ” ( )
এক ব্যক্তি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার পিতা মারা গেছেন কিন্তু তিনি কোন ওসীয়ত করে যাননি, আমি যদি তাঁর পক্ষ থেকে সাদকা করি তাহলে কি তা তাঁকে উপকার দেবে? উত্তরে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই।
হযরত সা’দ বিন ওবাদাহ্ প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্!
إنَّ أمِّي افتُلتَتْ نفسُها، وأظنُّها لو تكلَّمَتْ تصدَّقَتْ؛ فهل لها أجرٌ إن تصدَّقتُ عنها؟ قال: نعمْ( )
‘আমার মা হঠাৎ ইন্তেক্বাল করলেন, আমি জানি যদি তিনি বেঁচে থাকতেন তাহলে অবশ্যই দান-সাদকাহ্ করতেন, যদি আমি তাঁর পক্ষ থেকে দান-সাদকাহ্ করি তাহলে কি তাতে তিনি উপকৃত হবেন? প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, হ্যাঁ, তখন তিনি আবার তাঁকে প্রশ্ন করলেন,
فَأَيُّ الصَّدَقَةِ أَفْضَلُ؟،قَالَ: ্রالْمَاءُগ্ধ، قَالَ: فَحَفَرَ بِئْرًا، وَقَالَ: هَذِهِ لِأُمِّ سَعْدٍ. ( )
এয়া রাসূলাল্লাহ! কোন সাদকাহটি সবচেয়ে বেশী উপকারদায়ক? তিনি বললেন, পানি। তখন তিনি একটি কূপ খনন করে দিলেন এবং বললেন, এটি هذه لأمِّ سَعْد সা’দের মায়ের উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত।( )

দশম অধ্যায়
শপথ বা কসম এবং মান্নত বিষয়ক

শপথ বা কসম এবং মান্নত বিষয়ক

প্রশ্ন : আল্লাহ্ তা‘আলা ছাড়া অন্য কারও নামে শপথ করার হুকুম কি?
উত্তর: আলিমগণ মতবিরোধ করেছেন ওই ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে শপথ করার বিষয়ে যাদের জন্য বিশেষ হুরমত বা মর্যাদা রয়েছে আল্লাহ্ তা‘আলার দরবারে, যেমন নবী-রসূল, আউলিয়ায়ে কেরাম বা অন্যান্যরা।
কেউ বলেছেন, তা মাকরূহ, আবার কেউ বলেছেন, হারাম, কিন্তু হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর মশহুর বা প্রসিদ্ধ রায় বা অভিমত হলো হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর নামে শপথ করা জায়েয এবং কৃত শপথ পালন না করা শপথ ভঙ্গের শামিল, কেননা মুহাম্মদুর রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হলেন কালিমায়ে শাহাদতের দু’টি অংশের একটি এবং কোন আলিম একথা বলেন নি যে, আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারও নামে শপথ করা কুফরী।
হ্যাঁ, তবে যদি শপথকারী তা দ্বারা ওই ধরনের সম্মান প্রদর্শন করতে চায় যা একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলার জন্য সংরক্ষিত। আর এ ধরনের শপথ কোন মুসলমান কখনও করেন না, আর এরই উপর ভিত্তি করে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ( )্রمَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللَّهِ فَقَدْ أَشْرَكَগ্ধ যে আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারও নামে শপথ করেছে, সে মুশরিক হয়ে গেল।

প্রশ্ন : কিছু লোক কবর বা কবরবাসীর নামে শপথ করে থাকে, তাদের উদ্দেশ্য কি?
উত্তর: জেনে রেখ, তারা এর মাধ্যমে এমন কোন শপথের উদ্দেশ্য রাখে না যাকে প্রকৃতপক্ষে ‘শপথ’ বলা হয় বা যায় বরং প্রকৃতপক্ষে তারা এর মাধ্যমে আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট তাঁদের ওসীলাহ ও সুপারিশ কামনা করে থাকে। কেননা, তাঁদের জন্য রয়েছে আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট বিশেষ পদ মর্যাদা ও সম্মান; তাঁদের জীবদ্দশায় এবং তাঁদের ইন্তিকালের পরও। কারণ আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁদেরকে ওসীলা করে দিয়েছেন তার বান্দাদের চাহিদা পূরণের জন্য, তাঁদের সুপারিশ ও দোয়ার বরকতে।
যেমন কেউ বলল, হে আল্লাহ্ আমি তোমার উপর শপথ করে বসলাম অথবা আমি তোমার শপথ করছি অমুকের অথবা এ কবরবাসী, মাজারবাসী ইত্যাদি আর তা এমন কিছু বাক্য যা কখনও হারামের দিকে নিয়ে যায় না। কুফর এবং শিরক তো অনেক দূরের কথা। তাই একথা জেনে রেখো এবং সতর্ক থেকো ধ্বংসে পতিত হওয়া থেকে; কোন মুসলমানকে কাফির ও মুশরিক বলার কারণে। আল্লাহ্ তা‘আলা আমাদেরকে মার্জনা করেন কুফর ও শিরক ছাড়া সকল প্রকার গুনাহ্ থেকে।

একাদশ অধ্যায়
আউলিয়ায়ে কেরামের কারামত প্রসঙ্গে

আউলিয়ায়ে কেরামের কারামত
প্রশ্ন : আউলিয়ায়ে কেরামের জীবদ্দশায় এবং তাঁদের ইন্তিকালের পরে কি কোন প্রকার কারামত সংঘঠিত হয়?
উত্তর: আমাদের এ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা আবশ্যক যে, নিশ্চয় ওলীগণের কারামত সত্য ও বাস্তব অর্থাৎ তা বৈধ, সম্ভব এবং সম্পাদনযোগ্য তাঁদের হায়াতে এবং তাঁদের ইন্তিকালের পরেও। একমাত্র তা নিয়ে যাদের চক্ষু অন্ধ হয়ে গিয়েছে এবং অন্তর বিনষ্ট হয়ে গিয়েছে তারা ছাড়া এ বিষয় নিয়ে বিতর্ক ও বিরোধ করতে পারে না।
প্রশ্ন : এ কথার স্বপক্ষে দলিল কি?
উত্তর: তার দলিল দু’ভাবে পেশ করা যায়, প্রথমত: ক্বোরআনুল করিমে আল্লাহ্ তা‘আলা বর্ণনা করেছেন, হযরত মারইয়াম আলায়হাস্ সালামের ঘটনা। আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন
كُلَّمَا دَخَلَ عَلَيْهَا زَكَرِيَّا الْمِحْرَابَ وَجَدَ عِندَهَا رِزْقًا ۖ قَالَ يَا مَرْيَمُ أَنَّىٰ لَكِ هَٰذَا ۖ قَالَتْ هُوَ مِنْ عِندِ اللَّهِ ۖ إِنَّ اللَّهَ يَرْزُقُ مَن يَشَاءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ
যখন তাঁর (মারইয়াম আলায়হাস্ সালাম) মেহরাবে হযরত জাকারিয়া আলায়হিস্ সালাম প্রবেশ করে দেখতে পেলেন, তাঁর (মারইয়াম আলায়হিস্ সালাম) নিকট অসংখ্য রিয্ক, তিনি বললেন, এ মরিয়াম তোমার জন্য এগুলো কোথা হতে এসেছে? তিনি জবাবে বললেন, তা আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে। নিশ্চয় আল্লাহ্ যাকে চান তাকে গণনাহীন রিয্ক দিয়ে থাকেন। [আল-ই ইমরান, আয়াত-৩৭] তাফসীরকারকগণ বলেন, হযরত মরিয়াম আলায়হাস্ সালামের নিকট পাওয়া যেত গ্রীস্মকালে শীতকালের ফল-ফলাদি এবং শীতকালে গ্রীস্মকালের ফল-ফলাদি। আর তা তাঁর নিকট আসতো অস্বাভাবিকভাবে, এটা হলো কারামত, যা দ্বারা আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁকে সম্মানিত করেছেন।

আল্লাহ্ তা‘আলা তার সম্পর্কে এরশাদ করেছেনوَهُزِّي إِلَيْكِ بِجِذْعِ النَّخْلَةِ تُسَاقِطْ عَلَيْكِ رُطَبًا جَنِيًّا তুমি তোমার দিকে খেজুর গাছকে নাড়া দাও তখন তোমার নিকট ঝড়ে পড়তে থাকবে তাজা খেজুরসমূহ। [সূরা মরিয়াম, আয়াত-২৫] অনুরূপ কারামতের প্রমাণ হলো, আসহাবে ক্বাহাফ-এর ঘটনা যা আল্লাহ্ তা‘আলা স্বীয় কিতাব ক্বোরআন মাজীদে বিবৃত করেছেন।( )
তাঁরা এ গর্তে তিনশত নয় বছর নিদ্রিত ছিলেন কোন ধরনের খানা-পানি ছাড়া। আল্লাহ্ তা‘আলা দায়িত্ব গ্রহণ করে নিয়েছে তাঁদের পৃষ্ঠদেশ কোন ধরনের ব্যথা অনুভব না করে। সূর্য উদয় ও অস্তকালে যাতে তাঁদের নিকট সূর্যের তাপ পৌঁছতে না পারে তারও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। (সূরা কাহাফ, আয়াত ০৯-২৫)
একইভাবে পবিত্র ক্বোরআনুল করিমে হযরত খিযীর আলায়হিস্ সালামের কারামত। (সূরা কাহাফ, আয়াত ৬০-৮২) ( )
হযরত জুল কারনাইন আলায়হিস্ সালামের কারামত।
(সূরা কাহাফ, আয়াত ৮৩-৯৮) ( )
হযরত আসিফ ইবনে বরখিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কারামত বর্ণনা করা হয়েছে। (সূরা আন নামল, আয়াত-৪০) ( )

প্রশ্ন : কারামত প্রমাণের দ্বিতীয় প্রকারের দলিলগুলো কি কি?
উত্তর: মুতাওয়াতির (সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত) দলীলগুলো, যা সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, তবে তাবেয়ীন এবং এ পর্যন্ত অসংখ্য আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের থেকে কারামত প্রকাশের বিষয়ে বর্ণিত হয়েছে। যা সারা বিশ্ববাসীর নিকট পরিচিত এবং সর্বজন স্বীকৃত।
ইমাম বোখারী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি তাঁর সহীহ বোখারীতে বর্ণনা করেন যে, হযরত খুবাইব আলায়হিস্ সালাম অমৌসুমে মৌসুমী ফল-ফলাদি খেতেন অথচ তিনি মক্কার একটি জেলে লোহার শিকল পরিহিত বন্দী অবস্থায় এবং সে সময়ে মক্কায় কোন ধরনের ফল-ফলাদির অস্থিত্বও ছিলনা। নিঃসন্দেহে তা এমন এক ধরনের রিযক যা আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁকে দান করেছেন এবং যা তাঁর কারামতেরই একটি উজ্জ্বল প্রমান।
فقال عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عِيَاضٍ : قالت بِنْتَ الحَارِثِ : ” وَاللَّهِ مَا رَأَيْتُ أَسِيرًا قَطُّ خَيْرًا مِنْ خُبَيْبٍ ، وَاللَّهِ لَقَدْ وَجَدْتُهُ يَوْمًا يَأْكُلُ مِنْ قِطْفِ عِنَبٍ فِي يَدِهِ ، وَإِنَّهُ لَمُوثَقٌ فِي الحَدِيدِ، وَمَا بِمَكَّةَ مِنْ ثَمَرٍ ” وَكَانَتْ تَقُولُ: ” إِنَّهُ لَرِزْقٌ مِنَ اللَّهِ رَزَقَهُ خُبَيْبًا ( )” .
অনুরূপ ইমাম বোখারী তাঁর সহীহ্ বোখারীতে বর্ণনা করেছেন, হযরত আছিম রহমাতুল্লাহি আলায়হি যখন শাহাদত বরণ, করেন তখন মুশরিকগণ তাঁর শরীরের একটি টুকরা কেটে নিতে চেয়েছিল তাঁর মৃত্যুর নিশ্চিত প্রমানস্বরূপ। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা একদল মৌমাছি প্রেরণ করে তাঁকে তাদের থেকে রক্ষা করেন। ফলে তারা তাঁর কোন অংশ কেটে নিতে পারেনি। নিঃসন্দেহে এটিও হযরত আছিমের কারামতের এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
وكان عاصِمٌ قَتَل عَظيمًا مِن عُظَمائِهِم يومَ بدرٍ، فبَعَثَ اللهُ عليهِ مثلَ الظُّلَّةِ مِن الدَّبْرِ، فحَمَتْه مِن رُسُلِهم، فلَم يَقدِروا مِنه عَلى شيءٍ. ( )
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : كَانَ عَبَّادُ بْنُ بِشْرٍ ، وَأُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَحَدَّثَا عِنْدَهُ حَتَّى إِذَا خَرَجَا أَضَاءَتْ لَهُمَا عَصَا أَحَدِهِمَا فَمَشَيَا فِي ضَوْئِهَا ، فَلَمَّا تَفَرَّقَ بِهِمَا الطَّرِيقُ أَضَاءَتْ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا عَصَاهُ فَمَشَى فِي ضَوْئِهَا ” . ( )
হযরত ওসাইদ ইবনে হাদির এবং আব্বাস ইবনে বিশর প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিত ছিলেন, তখন ছিল তিমিরাচ্ছান্ন রাত। তখন আমরা তাঁর সাথে আলাপ-আলোচনার পর যখন তাঁরা উভয়ে বের হলেন, তখন তাঁদের একজনের লাঠি এতবেশি আলোকিত হয়ে গেল যে, তাঁরা উভয়ে এর আলোতে পথ চলতে থাকলেন এবং যখন তাঁরা আলাদা আলাদা রাস্তা ধরে চলছিলেন তখন তাঁদের উভয়ের লাঠিদ্বয় আলোকিত হয়ে গেল, আর তাঁরা এরই আলোতে নিজ নিজ গৃহে পৌঁছে গেলেন। ( )
ওলীগণের কারামত অসংখ্য অগণিত, আর তা সবই হলো মূলত আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এবং অন্যান্য নবীগণের মুজিযা। কেননা,
كل مَا جَازَ أَنْ يَكُونَ مُعْجِزَةً لِنَبِيٍّ جَازَ أَنْ يَكُونَ كَرَامَةً لِوَلِيٍّ
‘যা কোন নবীর মুজিযা’ তা একজন ওলীর জন্য কারামত হওয়া সত্ত্বেও সিদ্ধ ও শরীয়তসম্মত। তাঁদের মধ্যে এমন অনেক আছেন, যাঁরা জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশ করার পরও আগুন তাঁদেরকে স্পর্শও করতে পারেনি।
তাঁদের মধ্যে এমনও আছেন যাঁরা মৃতকে জীবিত করেছেন, তাঁদের কারও জন্য সারা পৃথিবী একটি মাত্র কদম। তাঁদের কেউ বাতাসের উপর এবং পানির উপর চলতে পারেন, আবার এমনও আছেন যাঁদেরকে জ্বিন ও অন্যান্য সৃষ্টিও শ্রদ্ধা করে এবং মান্য করে।
ইবনে তাইমিয়্যা তার الفرقانُ بينَ أولياءِ الرَّحمَنِ وأولياءِ الشَّيْطانِনামক কিতাবে এক শতাধিক কারামত উল্লেখ করেছেন যা বিভিন্ন সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীনদের কাছ থেকে প্রকাশিত হয়েছে এবং অতঃপর তিনি লিখলেন, ‘আমরা বর্তমানে যে সমস্ত কারামতগুলো দেখছি তা এত অধিক সংখ্যক যে, তা বর্ণনা করা অসম্ভব।
উল্লেখ্য যে, আলেমগন বলেছেন, কোন অলৌকিক ঘটনা যখন কোন কাফের বা ফাসেকের হাতে প্রকাশিত হয় তা হলো যাদু ও ইসদেরাজ। আর যখন ঈমানদার আল্লাহর ওলীর হাতে প্রকাশ পায় তাহলো- কারামত।

দ্বাদশ অধ্যায়
নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে স্বপ্ন যোগে দর্শন লাভ করা প্রসঙ্গে

নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে স্বপ্ন যোগে দর্শন লাভ করা প্রসঙ্গে

প্রশ্ন : প্রিয়নবীকে জাগ্রত অবস্থায় দেখা কি সম্ভব?
উত্তর: প্রিয়নবীকে জাগ্রত অবস্থায় দেখা সম্ভব এবং প্রমানিত, কারণ অনেক আলিমগণ উল্লেখ করেছেন যে, অনেক সুফিয়ায়ে কেরামগণ প্রিয়নবীকে প্রথমে স্বপ্নযোগে দেখেছেন, অতঃপর তাঁকে জাগ্রত অবস্থায়ও দেখেছেন এবং তাঁরা প্রিয়নবীর নিকট তাঁদের বিভিন্ন বিষয় ও সমস্যা নিয়ে ফয়সালাও প্রার্থনা করেছেন।

প্রশ্ন : তা সম্ভব হওয়ার বিষয়ে দলিল কি?
উত্তর: তার দলীল হলো: বুখারী, মুসলিম এবং অন্যান্যরা বর্ণনা করেছেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন,
فعن أبي هريرة رضي الله عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال :مَنْ رَآنِي فِي الْمَنَامِ فَسَيَرَانِي فِي الْيَقَظَةِ وَلَا يَتَمَثَّلُ الشَّيْطَانُ بِي ( )
যে আমাকে স্বপ্নে দেখেছে সে অনতিবিলম্বে আমাকে জাগ্রতাবস্থায় দেখতে পাবে, আর শয়তান কখনও আমার আকৃতি ধারণ করতে পারেনা।’’ ( )
আলিমগণ এ হাদিসের অর্থ করতে গিয়ে বলেন, এটা একটা সুসংবাদ যে, তাঁর উম্মতের মধ্যে যাঁরা তাঁকে স্বপ্নযোগে দর্শন লাভ করার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন, তারা নিশ্চয় তাঁকে জাগ্রত অবস্থায় দেখতে পাবেন ইনশা-আল্লাহ্, যদিওবা মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে হলেও। এ হাদিসকে আখিরাতে বা বরযখে তাঁকে দেখার উপর ব্যাখ্যা করা শুদ্ধ নয়। কেননা সকল উম্মত ক্বিয়ামতের দিনে ও বরযখে তাঁকে দেখতে পাবে। তাই এ হাদীসে সর্বোত্তম দলিল হলো, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সারা বিশ্বে হাযির-নাযির। কারণ বিশ্বের পূর্ব-পশ্চিমের সকল দর্শন লাভে ধন্যদের নিকট তিনি উপস্থিত।
হযরত ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ূতী বলেন, ‘এ বিষয়ে সকল হাদিসকে একত্রিত করলে এ কথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম জীবিত। স্বীয় শরীর মুবারক ও রূহ মুবারক উভয়ের উপস্থিতিতে।
হযরত আনাস ইবনে মালেক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বর্ণনা করেন
وقال البيهقي: اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَـىٌّ بِـجَسَدِهٖ وَرُوحِهٖ، وَاَنَّهٗ يَتَصَرَّفُ وَيَسِيْرُ حَيْثُ شَاءَ فِـىْ اَقْطَارِ الْاَرْضِ وَفِى الْمَلَكُوْتِ وَهُوَ بِـهَيْئَتِهِ الَّتِـىْ كَانَ عَلَيْهَا قَبْلَ وَفَاتِهٖ لَـمْ يَتَبَدَّلْ مِنْهُ شَـىْءٌ، وَاَنَّهٗ مُغَيَّبٌ عَنِ الْاَبْصَارِ كَمَا غُيِّبَتِ الْمَلَائِكَةُ مَعَ كَوْنِـهِمْ اَحْيَاءً بِاَجْسَادِهِمْ، فَاِذَا اَرَادَ اللَّهُ رَفْعَ الْـحِجَابِ عَمَّنْ اَرَادَ اِكْرَامَهٗ بِرُؤْيَتِهٖ رَاٰهُ عَلـٰى هَيْئَتِهِ الَّتِـىْ هُوَ عَلَيْهَا، لَا مَانِعَ مِنْ ذٰلِكَ( )
নবীগণ আলাইহিমুস্ সালাম জীবিত, তাঁরা তাঁদের কবর শরীফে নামায আদায় করেন। ( )
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আরও এরশাদ করেন,
عَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَّامِكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ ، فِيهِ خُلِقَ آدَمُ ، وَفِيهِ قُبِضَ ، وَفِيهِ النَّفْخَةُ ، وَفِيهِ الصَّعْقَةُ ، فَأَكْثِرُوا عَلَيَّ مِنَ الصَّلَاةِ فِيهِ ، فَإِنَّ صَلَاتَكُمْ مَعْرُوضَةٌ عَلَيَّ ” قَالَ : قَالُوا : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، وَكَيْفَ تُعْرَضُ صَلَاتُنَا عَلَيْكَ وَقَدْ أَرِمْتَ – يَقُولُونَ : بَلِيتَ – ؟ فَقَالَ : ” إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ حَرَّمَ عَلَى الْأَرْضِ أَجْسَادَ الْأَنْبِيَاءِ ( )
তোমাদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন। এ দিনে হযরত আদম আলায়হিস্ সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এ দিনে তাঁর ইন্তিকাল ও এ দিনেই ক্বিয়ামতে সিঙ্গায় ফুক দেয়া হবে, আর এ দিনেই ক্বিয়ামত কায়েম হবে। তাই তোমরা আমার প্রতি অধিকহারে দুরূদ প্রেরণ করো। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, কিভাবে আপনার প্রতি আমাদের দুরূদ ও সালাম পেশ করা হবে অথচ আপনি স্বীয় কবর শরীফে মাটির সাথে মিশে আছেন? তখন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা মাটির উপর হারাম করে দিয়েছেন নবীগণ আলায়হিমুস্ সালামের শরীর মুবারককে স্পর্শ করাকে। ( )
وقال البيهقي: اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَـىٌّ بِـجَسَدِهٖ وَرُوحِهٖ، وَاَنَّهٗ يَتَصَرَّفُ وَيَسِيْرُ حَيْثُ شَاءَ فِـىْ اَقْطَارِ الْاَرْضِ وَفِى الْمَلَكُوْتِ وَهُوَ بِـهَيْئَتِهِ الَّتِـىْ كَانَ عَلَيْهَا قَبْلَ وَفَاتِهٖ لَـمْ يَتَبَدَّلْ مِنْهُ شَـىْءٌ، وَاَنَّهٗ مُغَيَّبٌ عَنِ الْاَبْصَارِ كَمَا غُيِّبَتِ الْمَلَائِكَةُ مَعَ كَوْنِـهِمْ اَحْيَاءً بِاَجْسَادِهِمْ، فَاِذَا اَرَادَ اللَّهُ رَفْعَ الْـحِجَابِ عَمَّنْ اَرَادَ اِكْرَامَهٗ بِرُؤْيَتِهٖ رَاٰهُ عَلـٰى هَيْئَتِهِ الَّتِـىْ هُوَ عَلَيْهَا، لَا مَانِعَ مِنْ ذٰلِكَ( )
তিনি যেভাবে চান সেভাবে সারা বিশ্বে ও সকল ঊর্ধ্ব জগতে বিচরণ করেন, তিনি ইন্তিকালের পূর্বে যে অবস্থায় ছিলেন ঠিক সেই অবস্থায় বিদ্যমান থেকেই। আর তিনি মানুষের চক্ষু থেকে অদৃশ্য যেমনিভাবে ফেরেশতাগণ অদৃশ্য এবং যখন আল্লাহ্ তা‘আলা পর্দা উঠিয়ে নেন তাদের থেকে যাদেরকে তাঁর নূরানী দর্শন দ্বারা ধন্য করতে চান তখন তারা তাঁকে তাঁর আসল ও মূল আকৃতি ও অবস্থায় দেখতে পান।

ত্রয়োদশ অধ্যায়
হযরত খিদ্বির আলায়হিস্ সালাম প্রসঙ্গ

হযরত খিদ্বির আলায়হিস্ সালাম
প্রশ্ন : হযরত খিদ্বির আলায়হিস্ সালাম কি জীবিত না মৃত?
উত্তর: জমহুর ওলামাগণ একথার উপর এজমা বা ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, হযরত খিদ্বির আলায়হিস্ সালাম এখনও জীবিত এবং একথা সাধারণ অসাধারণ সকলের নিকট প্রসিদ্ধ।
হযরত ইবনে আতাউল্লাহ্ তাঁর ‘লাতায়েফ’ নামক কিতাবে বলেছেন,
واعلم أن بقاء الخضر قد أجمع عليه هذه الطائفة وتواتر عن أولياء كل عصر لقاؤه والأخذ عنه ، واشتهر ذلك إلى أن بلغ الأمر إلى حد التواتر الذي لايمكن جحده ، والحكايات في ذلك كثيرة
প্রত্যেক যুগের আউলিয়ায়ে কেরামের তাঁর সাথে সাক্ষাত করা এবং তাঁর কাছ থেকে ইলম হাসিল করার বিষয়টি সন্দেহতীতভাবে প্রমাণিত সত্য এবং তা এত বেশী প্রসিদ্ধি লাভ করেছে যে, তা বর্ণনার দিক থেকে তাওয়াতুর (সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত) পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যাকে অস্বীকার করা অসম্ভব।
জনাব ইবনুল কাইয়ুম তার مثير الغرام السكن(মুছিরুল গারাম আস্ সাকন) নামক কিতাবে চারটি বিশুদ্ধ রেওয়ায়ত বর্ণনা করেছেন তাঁর জীবিত থাকার প্রমাণ স্বরূপ।
ইমাম বায়হাক্বী ‘দালায়েলুন নাবুয়্যাহ্’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন,
” عَنْ جَعْفَر بْن مُحَمَّد بْن عَلِيّ بْن الْحُسَيْن عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَلِيّ بْن أَبَى طَالِب رَضِيَ اللَّه عَنْهُ قَالَ : لَمَّا تُوُفِّيَ النَّبِيّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَاءَتْ التَّعْزِيَة جَاءَهُمْ آتٍ يَسْمَعُونَ حِسّه وَلَا يَرَوْنَ شَخْصه فَقَالَ : السَّلَام عَلَيْكُمْ أَهْل الْبَيْت وَرَحْمَة اللَّه وَبَرَكَاته ” كُلّ نَفْس ذَائِقَة الْمَوْت وَإِنَّمَا تُوَفَّوْنَ أُجُوركُمْ يَوْم الْقِيَامَة ” إِنَّ فِي اللَّه عَزَاء مِنْ كُلّ مُصِيبَة وَخَلَفًا مِنْ كُلّ هَالِك وَدَرَكًا مِنْ كُلّ فَائِت فَبِاَللَّهِ فَثِقُوا وَإِيَّاهُ فَارْجُوا فَإِنَّ الْمُصَاب مَنْ حُرِمَ الثَّوَاب وَالسَّلَام عَلَيْكُمْ وَرَحْمَة اللَّه وَبَرَكَاته قَالَ جَعْفَر بْن مُحَمَّد فَأَخْبَرَنِي أَبِي أَنَّ عَلِيّ بْن أَبِي طَالِب قَالَ : أَتَدْرُونَ مَنْ هَذَا ؟ هَذَا الْخَضِر عَلَيْهِ السَّلَام . ( )
‘যখন প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকাল করেন তখন উপস্থিত সকলে ঘরের একপাশ থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পান, ‘হে আহলে বায়ত আপনাদের প্রতি সালাম, রহমত ও বরকত, প্রত্যেক মানুষ মরনশীল এবং নিশ্চয় তোমাদেরকে তোমাদের প্রতিদান ক্বিয়ামত দিবসে পরিপূর্ণভাবে প্রদান করা হবে। নিশ্চয় প্রত্যেক মুসিবতে রয়েছে আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে সান্ত¦না এবং প্রত্যেক ধ্বংসের বদলা ও প্রত্যেক হারানোর খোঁজ। তাই আপনারা আল্লাহ্ তা‘আলার উপর দৃঢ় বিশ্বাসী ও ভরসাকারী হোন এবং তাঁরই নিকট প্রত্যাশা করুন, কেননা প্রকৃত মুসিবতগ্রস্থ সেই ব্যক্তিই যে অধৈর্যের কারণে সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হয়েছে, তখন হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বললেন, ‘তোমরা কি জান, এ বক্তা কে? তিনি হলেন হযরত খিদ্বির আলায়হিস্ সালাম। ( )

চতুর্দশ অধ্যায়
পবিত্র ক্বোরআন ও আল্লাহ্ তা‘আলার
পবিত্র নাম দ্বারা আরোগ্য কামনা

পবিত্র ক্বোরআন ও আল্লাহ্ তা‘আলার
পবিত্র নাম দ্বারা আরোগ্য কামনা
জেনে রেখো, আল্লাহ্ তা‘আলা আসমান থেকে এমন কোন শেফা বা আরোগ্য নাযিল করেননি, যেটি পবিত্র ক্বোরআনুল করীম থেকে অধিক উপকারী ও কার্যকর। আল কুরআন সকল রোগের নিরাময় এবং অন্তরসমূহের মরিচা ও ময়লাকে পরিস্কারকারী। আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন, ‘আমি নাযিল করি এ ক্বোরআন থেকে তা, যা হলো মু’মিনগণের জন্য আরোগ্য ও রহমত। [ইসরা-৮৩] প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,

أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ لَمْ يَسْتَشْفِ بِالْقُرْآنِ فَلَا شَفَاهُ اللَّهُ تَعَالَى( )

যে ব্যক্তি ক্বোরআনুল করিম এর মাধ্যমে আরোগ্য কামনা করেনি আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে আরোগ্য দেবেন না। ( )
প্রশ্ন : বিভিন্ন রোগের কারণে তাবীজ দেয়া ও ঝড় ফুক করার হুকুম কি?
উত্তর: ওলামাগণ তাবীজ ও ঝাড়ফুক করা বৈধ হবার ক্ষেত্রে ঐক্যমত প্রকাশ করেছেন, তবে নি¤েœাক্ত তিনটি শর্ত থাকা আবশ্যক। আর তা হলো-
*তা যেন আল্লাহ্ তা‘আলার কালাম, তাঁর নাম ও সিফাত দ্বারা হয়।
*তা যেন আরবী ভাষা বা অন্য কোন বোধগম্য ভাষায় হয়।
*এ বিশ্বাস রাখা যে, তাবীজ বা ঝাড়ফুকের সত্ত্বাগত কোন প্রভাব নেই বরং আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে যা নির্ধারিত তাই হবে।

প্রশ্ন : উল্লেখিত শর্তে ঝাড়ফুক বৈধতার ক্ষেত্রে কোন দলীল আছে কি?
উত্তর: তার বৈধতার দলীল হলো ইমাম মুসলিমের আওফ ইবনে মালেক থেকে বর্ণিত হাদিস।
عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ الْأَشْجَعِيِّ، قَالَ: كُنَّا نَرْقِي فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ كَيْفَ تَرَى فِي ذَلِكَ فَقَالَ: ্রاعْرِضُوا عَلَيَّ رُقَاكُمْ، لَا بَأْسَ بِالرُّقَى مَا لَمْ يَكُنْ فِيهِ شِرْكٌগ্ধ( )
হযরত আওফ ইবনে মালেক বলেন, আমরা জাহেলী যুগে ঝাড়ফুক করতাম। তখন আমরা বললাম, এয়া রাসূলাল্লাহ্! এ বিষয়ে আপনার অভিমত কি? প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা তোমাদের ঝাড়ফুকের বাক্য ও পদ্ধতিগুলো আমার নিকট পেশ কর। [প্রিয়নবীর নিকট তা পেশ করার পর ও শোনার পর] বললেন, ঝাড়ফুকে কোন ক্ষতি নেই, যদি তাতে কোন ধরনের শিরক বাক্য বা কর্ম না থাকে। ( )

প্রশ্ন : নিষিদ্ধ ঝাড়ফুক কোনগুলো?
উত্তর: নিষিদ্ধ ঝাড়ফুক হলো, যেগুলো আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় হয়ে থাকে, ফলে তাতে বুঝা যায় এটি কি? হতে পারে এতে কোন ধরনের যাদু বা কুফরী বাক্য প্রবেশ করেছে।
হ্যাঁ, যদি অর্থ বুঝা যায়, যেমন আল্লাহ্ তা‘আলার যিকর, তার নাম ও গুণাবলীর যিকর, তাহলে তা জায়েয বরং মুস্তাহাব ও বরকতময়।

প্রশ্ন : তাবীয লিখা ও তা গলায় ঝুলানোর হুকুম কি?
উত্তর: এ ধরনের তাবীজ লিখা জায়েয যাতে বোধগম্য নয় এমন প্রকার কোন নাম বা লিখা পাওয়া যায় না। এ ধরনের তাবীজ মানুষ ও পশু-পাখির গলায় ঝুলানো জায়েয। এটাই বিশুদ্ধ মাযহাব, যার উপর রয়েছেন মুসলিম মিল্লাতের বিজ্ঞ আলিমগণ।
ইবনুল কায়্যূম তার ‘যাদুল মায়াদ’ নামক কিতাবে লিখেছেন,
قالَ المروزي: وَقَرَأَ عَلَى أبي عبد الله – وَأَنَا أَسْمَعُ – أبو المنذر عمرو بن مجمع، حَدَّثَنَا يونس بن حبان، قَالَ: سَأَلْتُ أبا جعفر محمد بن علي أَنْ أُعَلِّقَ التَّعْوِيذَ، فَقَالَ: إِنْ كَانَ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ أَوْ كَلَامٍ عَنْ نَبِيِّ اللَّهِ فَعَلِّقْهُ وَاسْتَشْفِ بِهِ مَا اسْتَطَعْتَ. ( )
ইবনে হিব্বান হযরত জাফর ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুম এর নিকট তাবীজ পরিধান করা বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘যদি আল্লাহ্ তা‘আলার কিতাব এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর বাণী হয়, তাহলে তা আপনি ব্যবহার করুন এবং তা দ্বারা আরোগ্য অর্জন করুন।
وقال الميموني: سمعت من سأل أبا عبد الله عن التمائم تعلق بعد نزول البلاء فقال: أرجو أن لا يكون به بأس”، ( )
ইবনে হিব্বান আরও বলেন ইমাম আহমদ্ ইবনু হাম্বল রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুকে বালা-মুসিবতের সময়ে তাবীজ ব্যবহার করা বা গলায় ঝুলানোর বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আশা করি এতে কোন প্রকার সমস্যা হবে না।
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে ইমাম আহমদ বলেন,
قال الخلال : وحدثنا عبد الله بن أحمد ، قال : رأيت أبي يكتب التعويذ للذي يفزع ، وللحمى بعد وقوع البلاء . ( )
আমি আমার বাবাকে দেখেছি তাবীজ লিখতে ভীত, বিচলিত ও মানসিক অস্থির ব্যক্তিদের জন্য এবং জ্বরে আক্রান্তদের জন্য, বিশেষ করে যখন কোন ধরনের বালা-মুসিবত উপস্থিত হয় তখন।
ইবনে তায়মিয়্যাহ তার ‘ফাতাওয়া’তে লিখেন,
وَنَقَلُوا عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – أَنَّهُ كَانَ يَكْتُبُ كَلِمَاتٍ مِنْ الْقُرْآنِ وَالذِّكْرِ ، وَيَأْمُرُ بِأَنْ تُسْقَى لِمَنْ بِهِ دَاءٌ ( )
হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে রাবীগণ বর্ণনা করেছেন যে, তিনি কুরআনুল করিমের কতগুলো আয়াত ও যিকর থেকে কতগুলো শব্দ লিখতেন এবং নির্দেশ দিতেন যেন তা অসুস্থ ব্যক্তিকে পান করানো হয়।
তাঁর এ কাজ প্রমাণ করে যে, এতে রয়েছে বরকত ও শেফা এবং হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু এটি বৈধ হবার বিষয়ে দলিলসহ প্রমাণ পেশ করেছেন।
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مِنْ عَلَّقَ تَمِيمَةً فَقَدْ أَشْرَكَ. ( )প্রশ্ন :
যে ব্যক্তি কোন ধরনের তাবীজ ঝুলিয়েছে সে অবশ্যই কুফুরী করেছে, এ হাদিসের বর্ণনা মতে কোন ধরনের তাবীজকে নিষেধ করা হয়েছে?
উত্তর: বিজ্ঞ আলিমগণ বলেছেন,
قال العلماء المراد بالتميمة في هذا الحديث قَالَ الْبَيْهَقِيُّ وَيُقَالُ إنَّ التَّمِيمَةَ خَرَزَةٌ كَانُوا يُعَلِّقُونَهَا يَرَوْنَ أَنَّهَا تَدْفَعُ عَنْهُمْ الْآفَاتِ وَإِنَّمَا كَانَ ذَلِكَ مِنْ الشِّرْك لِأَنَّهُمْ أَرَادُوا دَفْع الْمَضَارّ وَجَلْب الْمَنَافِع مِنْ عِنْد غَيْر اللَّه ، وَلَا يَدْخُل فِي ذَلِكَ مَا كَانَ بِأَسْمَاءِ اللَّه وَكَلَامه.
এ হাদিসে বর্ণিত তাবীজ দ্বারা বুঝানো হয়েছে ওই ধরনের গুটিকা বা কণ্ঠহার যা জাহেলী যুগে মানুষ স্বীয় কণ্ঠে ঝুলিয়ে দিত এবং তারা বিশ্বাস করতো যে, তা তাদেরকে বিপদাপদ থেকে রক্ষা করবে। এটা ছিল এক প্রকার শিরক, কেননা তারা তা দ্বারা ক্ষতি প্রতিরোধ এবং লাভ আনয়ন করতে চেয়েছিল আল্লাহ্ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে অন্য কারও নিকট থেকে, যা মূলত শিরক।
সুতরাং আল্লাহ্ তা‘আলার পবিত্র নাম ও তাঁর পবিত্র কালামের আয়াত লিখিত তাবীজ নিষেধজ্ঞার আওতায় পড়ে না।

পঞ্চদশ অধ্যায়
মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম
উদ্যাপনের হুকুম

মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম
উদ্যাপনের হুকুম
প্রশ্ন : মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম উদ্যাপন করা এবং এ উদ্দেশ্যে মাহফিল করার হুকুম কি?
উত্তর: মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম রয়েছে, ওই সমস্ত ঘটনাগুলো বর্ণনা করা যা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আগমনের পূর্বে সংঘঠিত হয়েছে এবং ওই সমস্ত মু’জিযা ও নিদর্শনাবলী বর্ণনা করা যা প্রিয়নবীর জন্মকালীন সময়ে সংঘঠিত হয়েছে। যা মূলত ‘বিদাতে হাসানাহ্’ বা উত্তম হিদায়ত, যার উপর আমলকারীকে পুণ্য ও সাওয়াব দান করা হয়। কেননা এতে রয়েছে, প্রিয়নবীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং তাঁর শুভ বেলাদতে খুশি ও আনন্দ প্রকাশ করা, যা বৈধ, প্রশংসিত ও নির্দেশিত।

প্রশ্ন : বিদ‘আত কয় প্রকার?
উত্তর: ওলামাগণ বিদ‘আতকে দু’ভাগে ভাগ করেছেন, একটি হলো حسنة হাসানা অপরটি قبيحة কবীহাহ্ (মন্দ)

প্রশ্ন : বিদ‘আতে হাসানা কি?
উত্তর: ওই সমস্ত কর্মকান্ডের উদ্ভাবন যা ক্বোরআন ও সুন্নাহর সাথে বিরোধ হবে না এবং যা করাটা বিজ্ঞ আলিমগণের নিকটও বৈধ। কেননা এতে রয়েছে মানব জাতির জন্য এবং দ্বীন ইসলামের জন্য কল্যাণ ও উপকার। যেমন পবিত্র ক্বোরআনকে একটি জায়গায় একত্রিত করে একটি মাছহাফে লিপিবদ্ধ করা, জামাত সহকারে তারাবীর নামাযের প্রচলন করা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা এবং ওই সকল কল্যাণকর কাজ যা প্রিয়নবীর যুগে তথা প্রথম যুগে প্রচলিত ছিলনা।
হাদিস শরীফে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رضي الله عنه قال: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( مَنْ سَنَّ فِي الْإِسْلَامِ سُنَّةً حَسَنَةً فَعُمِلَ بِهَا بَعْدَهُ كُتِبَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ مَنْ عَمِلَ بِهَا ، وَلَا يَنْقُصُ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْءٌ . وَمَنْ سَنَّ فِي الْإِسْلَامِ سُنَّةً سَيِّئَةً فَعُمِلَ بِهَا بَعْدَهُ كُتِبَ عَلَيْهِ مِثْلُ وِزْرِ مَنْ عَمِلَ بِهَا ، وَلَا يَنْقُصُ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْءٌ ( )
অর্থাৎ ‘যে ব্যক্তি ইসলামে কোন নতুন প্রথা বা পদ্ধতির প্রচলন করছে যা উত্তম ও কল্যাণকর হবে, তাহলে ওই ব্যক্তির জন্য রয়েছে এ কর্মের প্রতিদান এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত পরবর্তীতে যারা এর উপর আমল করবে তাদের অর্জিত সাওয়াবের সমপরিমাণ সাওয়াব। হ্যাঁ, তবে তাদের প্রতিদানে কোন প্রকার কমানো হবে না।’’( )

প্রশ্ন : মন্দ বিদ‘আত কি?
উত্তর: তাহলো যা ক্বোরআন ও সুন্নাহর নস এবং ইজমার সাথে বিরোধপূর্ণ। এরই উপর ভিত্তি করে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নি¤েœাক্ত বাণীঃ وَكُلُّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ وَكُلُّ ضَلَالَةٍ فِي النَّار
অর্থাৎ প্রত্যেক নব আবিস্কৃত বিদ‘আত এবং প্রত্যেক বিদ‘আত ভ্রষ্ঠতা। ( )
সুতরাং এ হাদিস দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, ওই সমস্ত নব আবিস্কৃত যা বাতিল এবং ওই বিদ‘আত যা নিন্দনীয় ও বর্জনীয়।

প্রশ্ন: মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম উদ্যপনের সমর্থনে হাদিস শরীফে কোন দলীল আছে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, অবশ্যই আছে। ইমাম হাফেযুল হাদিস আহমদ ইবনে হাজার আসকালানী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি তার সমর্থনে একটি স্বতন্ত্র হাদিস বর্ণনা করেছেন। আর এটি হলো:
বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত রয়েছে-
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِاللَّهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ السَّخْتِيَانِيُّ عَنِ ابْنِ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ أَبِيهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِي اللَّهم عَنْهمَا أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهم عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ وَجَدَهُمْ يَصُومُونَ يَوْمًا يَعْنِي عَاشُورَاءَ فَقَالُوا هَذَا يَوْمٌ عَظِيمٌ وَهُوَ يَوْمٌ نَجَّى اللَّهُ فِيهِ مُوسَى وَأَغْرَقَ آلَ فِرْعَوْنَ فَصَامَ مُوسَى شُكْرًا لِلَّهِ فَقَالَ أَنَا أَوْلَى بِمُوسَى مِنْهُمْ فَصَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ( )
‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মদিনা শরীফে হিযরত করার পর দেখতে পেলেন, ইয়াহুদীরা আশুরার দিন (মুর্হরম মাসের দশম দিন) রোজা পালন করছে। তাদেরকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করালো তারা উত্তরে বললেন, এটি ওই দিন যেদিন আল্লাহ্ তা‘আলা ফেরআউনকে সাগরে নিমজ্জিত করে হত্যা করেছিলেন এবং হযরত মুসা আলায়হিস্ সালামকে মুক্তি দিয়েছিলেন, তাই আমরা এ দিন আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ার্থে রোজা পালন করি।
অতপর এ দিন নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নিজেও রোযা রাখলেন এবং মুসলমানদেরকেও রোযা রাখার নির্দেশ দিলেন।
এ হাদিস শরীফটি বর্ণনা করার পর ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী বলেন,
الإمام الحافظ المحدث جلال الدين السيوطي قال معقباً على كلام الحافظ ابن حجر العسقلاني: “وَقَدْ أَلَّفَ السّيُوطِيُّ كِتَابًا فِي رَدِّ كَلَامِهِ سَمَّاهُ “حُسْنُ الـمَقْصَدِ فِي عَمَلِ الـمَوْلِدِ”، فَنَّدَ فِيهِ مَا ادَّعَاهُ الفَاكِهَانِيُّ مِنْ أَنَّهُ لَيْسَ هُنَاكَ نَصٌّ يُجِيزُ الاحْتِفَالَ بِالـمَوْلِدِ بِمَا أَجَابَ بِهِ شَيْخُ الإِسْلَامِ الحَافِظُ ابْنُ حَجَرٍ بِأَنَّهُ قَدْ ظَهَرَ لَهُ تَخْرِيجُ عَمَلِ الـمَوْلِدِ عَلَى أَصْلٍ مِنَ السُّنَّةِ، وَهوَ مَا ثَبَتَ فِي الصَّحِيحَيْنِ مِنْ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدِمَ الـمَدِينَةَ، فَوَجَدَ اليَهُودَ يَصُومُونَ يَوْمَ عَاشُورَاء، فَسَأَلَهُمْ فَقَالُوا: هُوَ يَوْمٌ أَغْرَقَ اللهُ فِيهِ فِرْعَوْنَ وَنَجَّى مُوسَى، فَنَحْنُ نَصُومُهُ شُكْرًا لِلَّـهِ تَعَالَى” فَيُسْتَفَادُ مِنْ هَذَا الحَدِيثِ فِعْلُ الشُّكْرِ لِلَّـهِ تَعَالَى عَلَى مَا مَنَّ بِهِ فِي يَوْمٍ مُعَيَّنٍ، مِنْ إِسْدَاءِ نِعْمَةٍ، أَوْ دَفْعِ نِقْمَةٍ، وَيُعَادُ ذَلِكَ فِي نَظِيرِ ذَلِكَ اليَوْمِ مِنْ كُلِّ سَنَةٍ، والشُّكرُ للهِ يَحْصُلُ بِأَنْواعِ العِبادَةِ كالسُّجودِ والصِّيامِ والصَّدَقَةِ والتِّلاوَةِ، وأَيُّ نِعْمَةٍ أَعْظَمُ مِنْ نِعْمَةِ بُرُوزِ النَّبيِ صلى الله عليه وسلم. ( )
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ وَجَدَهُمْ يَصُومُونَ يَوْمًا يَعْنِي عَاشُورَاءَ فَقَالُوا هَذَا يَوْمٌ عَظِيمٌ وَهُوَ يَوْمٌ نَجَّى اللَّهُ فِيهِ مُوسَى وَأَغْرَقَ آلَ فِرْعَوْنَ فَصَامَ مُوسَى شُكْرًا لِلَّهِ فَقَالَ : أَنَا أَوْلَى بِمُوسَى مِنْهُمْ فَصَامَهُ ، وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ ( )
এ হাদিস শরীফ থেকে প্রমাণিত হয় নি’মাত প্রাপ্তির উপর এবং বিপদ মুক্তির উপর নির্দিষ্ট দিনে আল্লাহ্ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করা প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাত ও আমল বিদ্যমান। আর বিভিন্নভাবে আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করা যায়। যেমন- সাজদা, রোযা রাখা ও সাদক্বাহ্ করা ইত্যাদির মাধ্যমে। সুতরাং রহমতের নবীর আগমনের চেয়ে কোন নি’মাতটি অধিক উত্তম নি’মাত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে? এ ইবারাতটি ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ূতী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি তাঁর ফাত্ওয়ারالحاوي للفتاوى. কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
অতপর তিনি বলেন:
فعلم مما تتقدم أن الاجتماع لسماع قصة مولده (صلى الله عليه وسلم) من أعظم القربات لما في ذلك من إظهار الشكر لله بظهور صاحب المعجزات ولما يشتمل عليه من إطعام الطعام والصلات وكثرة الصلاة والتحيات وغير ذلك من وجوه القربات. ( )
‘পূর্বের বর্ণনা থেকে এ কথা প্রমাণিত হয় যে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মিলাদে পাকের নানা ঘটনাবলীর বর্ণনা শ্রবণের উদ্দেশ্যে মাহফিল করা ও সমবেত হওয়া সর্বোত্তম ইবাদতগুলোর একটি। কেননা এর মাধ্যমে অসংখ্য মু’জিযার ধারক প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর আগমনের উপর আল্লাহ্ তা‘আলার প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন প্রতীয়মান হয়। বিশেষ করে এ উপলক্ষে মানুষকে খাদ্য দান করা, আত্মীয়তা ও মুসলমানদের মধ্যকার সম্পর্ক পূণনির্মাণ করা, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি দুরূদ ও সালাম প্রেরণ করা ইত্যাদিও অন্যতম ইবাদতের অন্তর্ভূক্ত।
বিশ্বনন্দিত ওলামায়ে কেরাম এ মর্মে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন যে,
وقال ابن الجوزي: وَمِمَّا جُرِّبَ مِنْ خَوَاصِّه اَنَّه اَمَانٌ فِىْ ذلِكَ الْعَامِّ وَبُشْرى عَاجِلَةٌ بِنَيْلِ الْبُغْيَةِ وَالْمَرَامِ ـ
মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম উদযাপন করা মানে হলো, পূর্ণ বৎসরের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সফল হবার অগ্রীম সুসংবাদ লাভ করা। إنما الأعمال بالنيات প্রত্যেক আমল তার নিয়তের উপর নির্ভরশীল আল্লাহ্ সুবহানাল্লাহ্ ওয়া তা‘আলাই ভালো জানেন।

উল্লেখ্য যে, হাফেজ ইমাম শামসুদ্দিন আল জুযারী তাঁর রচিত عرف التعريف بالمولد الشريف নামক কিতাবে উল্লেখ করেছেন:
وَقَدْ رُوِيَ أَنَّ أَبَا لَهَبٍ رُؤِيَ بَعْدَ مَوْتِهِ فِي النَّوْمِ ، فَقِيْلَ لَهُ : مَا حَالُكَ ، فَقَالَ فِي النَّارِ، إِلَّا أَنَّهُ يُخَفَّفُ عَنِّيْ كُلَّ لَيْلَةِ اثْنَيْنِ وَأَمُصُّ مِنْ بَيْنَ أَصْبُعِيْ مَاءً بِقَدْرِ هَذَا – وَأَشَارَ إِلَى نُقْرَةِ إِبْهَامِهِ – وَأَنَّ ذَلِكَ بِإِعْتَاقِيْ لِثُوَيْبَةَ عِنْدَمَا بَشَّرَتْنِيْ بِوِلَادَةِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبِإِرْضَاعِهَا لَهُ.
‘আবু লাহাবের মৃত্যুর পর তাকে স্বপ্নযোগে দেখা হলে জিজ্ঞেস করা হয়, আবু লাহাব তোমার কি অবস্থা বা তুমি কেমন আছ? উত্তরে সে বলল, আমি জাহান্নামেই আছি, তবে প্রত্যেক সোমবার রাতে আমার আযাব হালকা করা হয় এবং আমি এ রাতে আমার দুই আঙ্গুলের মাঝখান থেকে কিছু শীতল পানীয় পান করি। (এ বলে যে তার হাতের আঙ্গুলের অগ্রভাগের দিকে ইশারা করল) আর আমি এ শীতল পানীয় পেয়ে থাকি আমার কৃতদাসী ‘সুয়াইবাহ্’ কে আযাদ করার কারণে যখন সে আমাকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শুভাগমন তথা শুভজন্মের ও তাঁকে দুধ পান করানোর সুসংবাদ দেয়।( )

তিনি বুখারী ও নাসায়ী শরীফের এ বর্ণনা পেশ করার পর বলেন,
إِذَا كَانَ أَبُوْ لَهَبٍ اَلْكَافِرُ الَّذِيْ نَزَلَ الْقُرْآنُ بِذَمِّهِ جُوْزِيَ فِي النَّارِ بِفَرْحِهِ لَيْلَةَ مَوْلِدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَمَا حَالُ الْمُسْلِمِ الْمُوَحِّدِ مِنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُسَرُّ بِمَوْلِدِهِ وَيَبْذُلُ مَا تَصِلُ إِلَيْهِ قُدْرَتُهُ فِيْ مَحَبَّتِهِ صلى الله عليه وسلم ؛ لَعَمْرِيْ إِنَّمَا يَكُوْنُ جَزَاؤُهُ مِنَ اللهِ الْكَرِيْمِ أَنْ يُدْخِلَهُ بِفَضْلِهِ جَنَّاتِ النَّعِيْمِ
‘এত বড় কাফির আবু লাহাব যার নিন্দায় পবিত্র ক্বোরআনে ‘সূরা লাহাব’ নামক একটি স্বতন্ত্র সূরা নাযিল হয়েছে, তাকে যদি মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর উপর খুশী হবার কারণে জাহান্নামে থেকেও নি’মাত ও প্রতিদান দেয়া হয় তাহলে ওই ঈমানদার মুসলমানের পুরস্কার হতে পারে যে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আগমনে খুশী উদ্যাপন করবে এবং তাঁর মুহাব্বতে স্বীয় সাধ্যানুযায়ী কিছু খরচ করবে? আমার জীবনের শপথ করে বলছি, আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে তার একমাত্র প্রতিদান ও পুরস্কার হবে যে, আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে স্বীয় অনুগ্রহে জান্নাতুন নাঈম দান করবেন।

ষষ্ঠদশ অধ্যায়
সমবেত কণ্ঠে যিকর

সমবেত কণ্ঠে যিকর
প্রশ্ন : সমবেতভাবে যিকর করা ও একত্রিত হয়ে বিভিন্ন ইবাদত করা যা অনেক লোকজন করে থাকেন, তার হুকুম কি?
উত্তর: একত্রিত হয়ে এ ধরনের ইবাদত ও যিকর-আযকার করা সুন্নাত ও মুসতাহাব ইবাদত। যদি এতে কোন ধরনের শরীয়ত বর্জিত কাজ সংগঠিত না হয়। যেমন: বেগানা নারী ও পুরুষের মধ্যকার অবাধ মিলল, ইত্যাদি।

প্রশ্ন : সমবেতভাবে ও উচ্চস্বরে এ আমলগুলো করা মুস্তাহাব হবার স্বপক্ষে কোন দলীল আছে কি?
উত্তর: সমবেতভাবে যিকর করা ও এতে কণ্ঠস্বর উঁচু করার সমর্থনে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে হাদিস পাওয়া যায়। তৎমধ্যে:
فعن أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رضي الله عنهما أَنَّهُمَا شَهِدَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ : لَا يَقْعُدُ قَوْمٌ يَذْكُرُونَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ إِلَّا حَفَّتْهُمْ الْمَلَائِكَةُ وَغَشِيَتْهُمْ الرَّحْمَةُ وَنَزَلَتْ عَلَيْهِمْ السَّكِينَةُ وَذَكَرَهُمْ اللَّهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ ( )
যখন কিছু সংখ্যক লোক একত্রিত হয়ে আল্লাহ্ তা‘আলার যিকর কে র তখন ফেরেশতারা তাদেরকে পরিবেষ্টন করে নেয় এবং তাদের উপর আল্লাহ্ তা‘আলার রহমত নাযিল হয় ও তাদের উপর প্রশান্তি অবতরণ করে। আর আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের সম্পর্কে ফেরেশতাদের সামনে আলোচনা করেন।( )
ইমাম মুসলিম ও তিরমিযী বর্ণনা করেন,
وَعَنْ مُعَاوِيَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلّى الله عليه وسلّم خَرَجَ عَلَى حَلْقَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ، فَقَالَ: مَا أَجْلَسَكُمْ ؟ قَالُوا: جَلَسْنَا نَذْكُرُ اللهَ، وَنَحْمَدُهُ عَلَى مَا هَدَانَا لِلْإِسْلَامِ، وَمَنَّ بِهِ عَلَيْنَا. قَالَ: آللهِ، مَا أَجْلَسَكُمْ إِلَّا ذَاكَ ؟. قَالُوا: اللهِ مَا أَجْلَسَنَا إِلَّا ذَلكَ. قَالَ: أَمَا إِنِّي لَمْ أَسْتَحْلِفْكُمْ تُهْمَةً لَكُمْ، وَلَكِنَّهُ أَتَانِي جِبْرَائِيلُ فَأَخْبَرَنِي أَنَّ اللَّهَ عزّ وجلّ يُبَاهِي بِكُمْ الْمَلَائِكَةَ . ( )
একদা সাহাবায়ে কেরাম দলবদ্ধভাবে ইবাদত করছিলেন, তখন প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করলেন, জিবরাঈল আলায়হিস্ সালাম আমার নিকট এসে এ শুভ সংবাদ দিল যে, নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাদেরকে নিয়ে ফেরেশতাদের সামনে গর্ব করছেন।
ইমাম আহমদ ও ত্বাবরানী তাঁদের হাদিসগ্রন্থে বর্ণনা করেন,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” مَا مِنْ قَوْمٍ اجْتَمَعُوا يَذْكُرُونَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ ، لا يُرِيدُونَ بِذَلِكَ إِلا وَجْهَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ، إِلا نَادَاهُمْ مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ : قُومُوا مَغْفُورًا لَكُمْ ، قَدْ بُدِّلَتْ سَيِّئَاتُكُمْ حَسَنَاتٍ ” ( )
‘যখন আল্লাহ্ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে কিছুলোক একত্রিত হয়ে আল্লাহ্ তা‘আলার যিকর করে, তখন তাদেরকে উদ্দেশ্য করে আসমানের এক ফেরেশতা ঘোষণা করতে থাকেন, যাও, তোমাদের সকল গুনাহ্ ক্ষমা করা হয়েছে এবং তোমাদের পাপরাশিকে পুণ্য ও সাওয়াবে পরিণত করে দেয়া হয়েছে।’
উল্লেখিত হাদিসগুলো দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, যিকর ও পুন্য কাজের উদ্দেশ্য সমবেত হওয়া ও একত্রিতভাবে যিকর-আযকার করা অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ কাজ এবং তাদেরকে নিয়ে আল্লাহ্ তা‘আলা ফেরেশতাদের সামনে গৌরব করেন।
উচ্চস্বরে যিকর করা মুস্তাহাব হওয়া সম্পর্কে দলীল হলো: ইমাম বুখারী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি হযরত আবু হোরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
أخرجه الإمام البخاري في صحيحه: يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِي فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلَإٍ ذَكَرْتُهُ فِي مَلَإٍ خَيْرٍ مِنْهُمْ وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ بِشِبْرٍ تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ بَاعًا وَإِنْ أَتَانِي يَمْشِي أَتَيْتُهُ هَرْوَلَةً ( )
আল্লাহ্ তা‘আলা (হাদিসে কুদসীতে) এরশাদ করেন, ‘আমি আমার সম্পর্কে আমার বান্দার ধারণার অনুরূপ, আমি তার সাথে থাকি যখন সে আমার যিকর করে, যদি সে আমাকে স্মরণ করে (যিকর করে) তার মনে মনে বা একাকীভাবে তাহলে আমিও তাকে আমার মনে মনে স্মরণ করি। আর যদি সে আমার যিকর করে বড় একটি দল বা জামাতের সামনে, তখন আমিও তাকে স্মরণ করি এমন একটি বড় দল বা জামাতের সামনে যে দলটি ওই দল থেকে অনেক উত্তম ও সংখ্যাধিক্য হবে (অর্থাৎ ফেরেশতাদের জামাতের সামনে।)’
সুতরাং প্রমাণিত হয় যে, বড় একটি দলের বা জামাতের সামনে যিকর করাটা চুপি চুপি হয় না বরং তা হয় সমুচ্চস্বরে ও উঁচু ধ্বনিতে।
ইমাম বায়হাক্বী তার ‘সুনানে কুবরাতে বর্ণনা করেন,
عَنْ عَمْرِو بْنِ مَالِكٍ ، عَنْ أَبِي الْجَوْزَاءِ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” أَكْثِرُوا ذِكْرَ اللَّهِ حَتَّى يَقُولَ الْمُنَافِقُونَ: إِنَّكُمْ مُرَاءُونَ “( )
‘তোমরা অধিকহারে আল্লাহ্ তা‘আলার যিকর করো, যাতে মুনাফিকরা তোমাদেরকে দেখে বলে উঠে, তোমরা তো লোক দেখানোর জন্য যিকর করছ।’
অন্য রেওয়ায়েত রয়েছে,
عن الصحابي الجليل أبي سعيد الخدري رضي الله عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : أَكْثِرُوا ذِكْرَ اللهِ حَتَّى يَقُولُوا : مَجْنُونٌ ( )
যাতে তারা বলে যে, তোমরাতো পাগল!
এ থেকে বুঝা যায় যখন যিকর উচ্চস্বরে কথা হয় তখনই মুনাফিকরা শুনতে পাবে এবং তখনই তারা বলে উঠবে পাগল, লোক দেখানো ইত্যাদি চুপি চুপি যিকর করলে কেউ শুনতেই পাবে না, পাগল বলাতো দুরের কথা।

জ্ঞাতব্য : বিজ্ঞ আলেমগণ বলেছেন,
قال العلماء العارفون نفعنا الله بهم قد وردت أحاديث تقتضي استحباب الجهر بالذكر وأحاديث تقتضي الإسرار به
কিছু হাদিস দ্বারা উচ্চস্বরে যিকর করা মুস্তাহাব হিসাবে প্রমাণিত হয় আবার কিছু হাদিস দ্বারা চুপে চুপে করার প্রমাণও পাওয়া যায়।
উভয় প্রকার হাদিসের বিরোধ নিরসনকল্পে বলা যায়-
أن ذلك يختلف باختلاف الأحوال والأشخاص فليكن الذاكر مع ما يراه منهما أصلح لقلبه وأجمع لهمه.
ব্যক্তি ও অবস্থার ভিন্নতার কারণে হুকুমও ভিন্ন হয়ে থাকে। অতএব প্রত্যেকে নিজের জন্য যে অবস্থাটা ভাল ও যথোপযুক্ত মনে করবেন সেভাবেই করাটা ভাল ও উত্তম।
وذكروا أيضا أن الأسرار بالذكر أفضل لمن يخشى الرياء أو اخشي التشويش بجهره علي مصل ونحوه.
তাঁরা আরও বলেন, যে ব্যক্তি রিয়া বা লোক দেখানোর ভয় করে এবং তার সমুচ্চস্বরে যিকরের কারণে অন্য কোন মুসল্লী বা ইবাদতকারীর মনোযোগ বিঘিœত হয়, তাহলে তার জন্য চুপি-চুপি যিকর করাই উত্তম।
. فإن أمن ذلك كان الجهر أفضل لأن العمل فيه أكثر ويتعدي نفعه إلي الغير وهو أقوي في تأثر القلب وجمعيته ولكل امرئ ما نوي والمطلع علي السرائر هو الله سبحانه وتعالي.
আর যদি এ অবস্থার সম্ভাবনা না থাকে, তাহলে উচ্চস্বরে যিকর করাটাই উত্তম ও শ্রেয়। কেননা অধিকাংশ আমল প্রকাশ্যে ও উচ্চস্বরেই করা হয় এবং এ যিকরের উপকারিতা যিকরকারীর মধ্যে সীমিত থাকবেনা বরং তা দ্বারা অন্যরাও উপকৃত হবে ও সাওয়াব পাবে এবং যারা যিকর থেকে বিরত বা উদাসীন তাদের হৃদয়েও এর প্রভাব প্রতিফলিত হবে। প্রতিটি কাজ তার নিয়তের উপরই নির্ভরশীল, আল্লাহ্ তা‘আলাই ভাল জানেন।

সপ্তদশ অধ্যায়
আহলে বায়তের প্রতি ভালবাসার গুরুত্ব

তাঁদের সাথে শত্রুতা বা বৈরীতার ব্যাপারে হুশিয়ারী

আহলে বায়তের প্রতি ভালবাসার গুরুত্ব ও তাঁদের সাথে শত্রুতা বা বৈরীতার ব্যাপারে হুশিয়ারী
ভূমিকা : সর্বজন স্বীকৃত ও প্রমাণিত যে, রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র বংশধরের প্রতি ভালবাসা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয বা আবশ্যক। পবিত্র কুরআনের আয়াত ও অসংখ্য হাদিস শরীফ দ্বারা তাদের প্রতি ভালবাসা ও শ্রদ্ধা-সম্মানের তাগিদ দেয়া হয়। আর এ নীতির উপরই অটল ছিলেন সকল সাহাবা, তাবেয়ীন ও সলফে সালেহীনগণ।
তাদের প্রতি ভালবাসার আবশ্যকতা সম্পর্কে পবিত্র ক্বোরআনের আয়াতগুলোর মধ্যে একটি হলো- আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে সম্বোধন করে বলছেন,
قُل لَّا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَىٰ ۗ وَمَن يَقْتَرِفْ حَسَنَةً نَّزِدْ لَهُ فِيهَا حُسْنًا ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ شَكُورٌ
(হে হাবীব) আপনি বলে দিন, ‘আমি এর বিনিময়ে তোমাদের নিকট হতে আত্মীয়ের (আহলে বায়ত) প্রতি ভালবাসা ছাড়া অন্য কোন প্রতিদান চাইনা। [সূরা শুরা, আয়াত-২৩] ইমাম আহমদ, ত্বাবরানী এবং হাকেম তাঁদের স্ব স্ব হাদিসগ্রন্থে বর্ণনা করেছেন,
أخرج الطبري وبن أَبِي حَاتِمٍ مِنْ طَرِيقِ قَيْسِ بْنِ الرَّبِيعِ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ بن عَبَّاسٍ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ قَرَابَتُكَ الَّذِينَ وَجَبَتْ عَلَيْنَا مَوَدَّتُهُمْ قاَلَ عَلِيٌّ وَفاَطِمَةُ وَأَبْناَءُهُماَ( )
যখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হলো তখন সাহাবায়ে কেরাম আরয করলেন, এয়া রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম! আপনার নিকটাত্মীয় কারা যাঁদের প্রতি ভালবাসা আমাদের উপর ফরয করে দেয়া হয়েছে? তিনি উত্তরে এরশাদ করলেন, তারা হলো, হযরত আলী, হযরত ফাতেমা ও তাদের দুই সন্তান অর্থাৎ ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুম।( )
হযরত সাঈদ বিন জুবাইর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
وعن سعيد بن جبير رحمه الله في قوله تعالي” إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى “. قال قربي رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ( )
এখানে মানে হলো, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর বংশধর ও নিকটাত্মীয়গণ।
হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
وعن ابن عباس رضي الله عنهما في قوله تعالي” وَمَنْ يَقْتَرِفْ حَسَنَةً نَزِدْ لَهُ فِيهَا حُسْنًا “. قال الحسنة مودة آل محمد صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. ( )
এ আয়াতের শেষাংশে আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন, যে উত্তম কাজ করে আমি তার জন্য এতে কল্যাণ বর্ধিত করে দিই। [শুরা-২৩] এখানে الحسنة বা কল্যাণ দ্বারা হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের পবিত্র বংশধরের প্রতি ভালবাসাকে বুঝানো হয়েছে।

হাদিস শরীফের আলোকে আহলে বায়তের প্রতি ভালবাসা
ইবনু মাজাহ হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
أخرج احمد والترمذي والنسائي والحاكم عنِ الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، قَالَ كُنَّا نَلْقَى النَّفَرَ مِنْ قُرَيْشٍ وَهُمْ يَتَحَدَّثُونَ فَيَقْطَعُونَ حَدِيثَهُمْ فَذَكَرْنَا ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ ‏ “‏ مَا بَالُ أَقْوَامٍ يَتَحَدَّثُونَ فَإِذَا رَأَوُا الرَّجُلَ مِنْ أَهْلِ بَيْتِي قَطَعُوا حَدِيثَهُمْ وَاللَّهِ لاَ يَدْخُلُ قَلْبَ رَجُلٍ الإِيمَانُ حَتَّى يُحِبَّهُمْ لِلَّهِ وَلِقَرَابَتِهِمْ مِنِّي ‏”‏ ( )
ওই লোকদের কি হয়েছে যখন তাদের সাথে আমার পবিত্র বংশধরের কেউ মিলিত হয় তখন তারা তাদের কথা বন্ধ করে দেয়? আমি ওই মহান যাতে আল্লাহ্ পাকের শপথ করে বলছি, কোন ব্যক্তির হৃদয়ে ইমান ততক্ষণ পর্যন্ত প্রবেশ করবেনা যতক্ষণ না সে তাঁদের (আহলে বাইত)কে আল্লাহ্ তা‘আলা ও তাঁদের সাথে আমার আত্মীয়তার সম্পর্কের কারণে ভালবাসে। ( )
অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে,
وَالَّذِي نَفسِي بِيَدِهِ لَا يُؤمن عبد بِي حَتَّى يحبني وَلَا يحبني حتى يحب ذَوي قَرَابَتي ( )
এ পর্যন্ত কোন বান্দা আমার প্রতি ঈমান আনেনি যতক্ষণ পর্যন্ত সে আমাকে ভালবাসবেনা, আর সে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসলনা যে আমার আহলে বায়তকে ভালবাসেনি।
ইমাম তিরমিযী ও হাকেম হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
اخرج الترمذي والطبراني عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” أَحِبُّوا اللَّهَ لِمَا يَغْذُوكُمْ بِهِ مِنْ نِعَمِهِ ، وَأَحِبُّونِي لِحُبِّ اللَّهِ ، وَأَحِبُّوا أَهْلَ بَيْتِي لِحُبِّي ” قال : وحسنه الترمذي . ( )
তোমরা আল্লাহ্ তা‘আলাকে ভালবাস, এ জন্য যে, তিনি তোমাদেরকে সকাল-সন্ধ্যা অসংখ্য নি’মাত প্রদান করছেন এবং আমাকে ভালবাস আল্লাহ্ তা‘আলার ভালবাসা হাসিল করার জন্য আর আমার আহলে বায়তকে ভালবাস আমার ভালবাসা অর্জন করার জন্য।( )
দায়লামী তাঁর ‘মুসনাদ’-এ বর্ণনা করেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
اخرج الديلمي عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ , رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” أَدِّبُوا أَوْلَادَكُمْ عَلَى خِصَالٍ ثَلَاثٍ : عَلَى حُبِّ نَبِيِّكُمْ ، وَحُبِّ أَهْلِ بَيْتِهِ ، وَعَلَى قِرَاءَةِ الْقُرْآنِ ، فَإِنَّ حَمَلَةَ الْقُرْآنِ فِي ظِلِّ اللَّهِ يَوْمَ لَا ظِلَّ إِلَّا ظِلُّهُ مَعَ أَنْبِيَائِهِ وَأَصْفِيَائِهِ “. ( )
‘তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে তিনটি বিষয়ের উপর বাস্তব শিক্ষা প্রদান করে, আর তা হলো- তোমাদের নবীর ভালবাসা, তাঁর আহলে বায়তের ভালবাসা এবং পবিত্র ক্বোরআন তেলাওয়াতের উপর।
ত্বাবরানী তাঁর ‘আল আওসাত্ব’ এ হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে ওমর থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:
اخرج الطبراني في الأوسط عَنْ نَافِعٍ ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، قَالَ : كَانَ آخِرُ مَا تَكَلَّمَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” اخْلُفُونِي فِي أَهْلِ ( )
নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তেকালের সময় সর্বশেষ ওয়াছিয়াত ছিল, তোমরা আমার আহলে বায়তের প্রতি সদাচরণের ক্ষেত্রে আমার প্রতিনিধিত্ব কর।( )

ত্বাবরানী তাঁর ‘আল কাবীর’ এ বর্ণনা করেন, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
اخرج الحاكم في تاريخه والديلمي عن عِمْرَانُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيِّبِ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ جَدِّهِ ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِي اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُ , قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِنَّ لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ حُرُمَاتٍ ثَلاثٍ ، مَنْ حَفِظَهُنَّ حَفِظَ اللَّهُ لَهُ أَمْرَ دِينِهِ وَدُنْيَاهُ ، وَمَنْ لَمْ يَحْفَظْهُنَّ لَمْ يَحْفَظِ اللَّهُ لَهُ شَيْئًا : حُرْمَةَ الإِسْلامِ ، وَحُرْمَتي ، وَحُرْمَةَ رَحِمِي . ( )
আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট তিনটি বিষয় পরম সম্মানিত, যে এগুলোর উপর যতœবান হবে আল্লাহ্ তা‘আলা তার দ্বীন ও দুনিয়া হেফাজত রাখবেন, আর যে এগুলোর প্রতি যথাযথ যতœবান হবেনা আল্লাহ্ তা‘আলা তার দ্বীন ও দুনিয়া কোনটাই হেফাজত করবেন না। এগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন: ১. ইসলামের মর্যাদা ২. আমার সম্মান-মর্যাদা, ৩. এবং আমার সাথে যাদের রেহম বা রক্ত সম্পর্কীয় আছেন তাঁদের সম্মান-মর্যাদা। ( )
ইমাম বায়হাক্বী ও দায়লামী বর্ণনা করেন, রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى , قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” لا يُؤْمِنُ عَبْدٌ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ نَفْسِهِ , وَتَكُونَ عِتْرَتِي أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ عِتْرَتِهِ , وَيَكُونَ أَهْلِي أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ أَهْلِهِ , وَتَكُونَ ذَاتِي أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ ذَاتِهِ ” . ( )
কোন বান্দা ঈমানদার হতে পারবেনা যতক্ষণ আমি তার নিকট তার প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয় হবো না এবং আমার পরিবার-পরিজন তার নিকট স্বীয় পরিবার-পরিজনের চেয়েও অধিক প্রিয় হবে না এবং আমার আহলে বায়ত তার নিকট নিজ আহলে বায়ত থেকেও অধিক প্রিয় হবে না।( )
ইমাম বুখারী তাঁর ‘সহীহ্ বুখারী’তে হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেন,
عَنْ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، قَالَ: يا أيها الناس ্রارْقُبُوا مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي أَهْلِ بَيْتِهِগ্ধ أي: احفظوه فيهم؛ فلا تؤذوهم( )
তোমরা হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে পর্যবেক্ষণ কর তাঁর আহলে বায়তের মাঝে অর্থাৎ নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের দর্শন লাভ কর তাঁর পবিত্র বংশধরদের দর্শনের মাধ্যমে এবং তোমরা তাঁর প্রতি তোমাদের দায়িত্ব আদায় কর তাঁর আহলে বায়তের হক্ব আদায় করার মাধ্যমে। সুতরাং তোমরা কখনও তাঁদেরকে কষ্ট দেবে না।( )
হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু প্রায়ই বলতেন,
‘‘আমি ওই আল্লাহ্ তা‘আলার কসম করছি যাঁর ক্বুদরতের হাতে আমার জীবন, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র বংশধরের প্রতি সদাচরণ ও সম্পর্ক যোজন আমার নিকট আমার পরিবার-পরিজনের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের চেয়েও আধিক প্রিয়।( )

ইমাম কাযী আয়াদ্ব রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি তার ‘শিফা’ নামক কিভাবে উল্লেখ করেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
مَعْرِفَةُ آلِ مُحَمَّدٍ بَرَاءَةٌ مِنَ النَّارِ وَحُبُّ آلِ مُحَمَّدٍ جَوَازٌ عَلَى الصِّرَاطِ وَاْلوِلاَيَةُ لِآلِ مُحَمَّدٍ أَمَانٌ مِنَ اْلعَذَابِ( )
হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র বংশধরের পরিচয় লাভ করা এবং তাঁদের অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন হওয়া জাহান্নাম থেকে মুক্তির ওসীলা, নবী বংশের ভালবাসা পুলসিরাতে নিরাপদে পার হবার উপায় এবং নবী বংশের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করা ও নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধা করা পরকালের কঠিন শাস্তি থেকে নিরাপদ থাকার নিশ্চয়তা।

তাঁদের সাথে শত্রুতা পোষণ করা ও তাঁদেরকে কষ্ট দেয়ার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে হুশিয়ারী
তাঁদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করা ও তাঁদেরকে ঘৃণা করার ভয়াবহতা সম্পর্কে হাদিস গ্রন্থগুলোতে অসংখ্য সহীহ্ হাদীস বিদ্যমান। সুতরাং প্রত্যেক মুসলমান যে তার দ্বীন-ঈমানকে রক্ষা করতে চায়, সে যেন এ বিষয়ে খুববেশী সতর্ক থাকে এবং তাঁদের প্রতি কোনরূপ বৈরীভাব প্রদর্শন না করে, কেননা এর মাধ্যমে ধ্বংস হয়ে যাবে তার দুনিয়া-আখিরাত এবং তাদেরকে কষ্ট দেয়া ও তাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করা মূলত: রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে শত্রুতা ও বৈরীতা প্রদর্শনের নামান্তর।
প্রখ্যাত মুহাদ্দিসগণের বিশুদ্ধ রেওয়ায়ত ও বিজ্ঞ আলিমদের বক্তব্য ও ভাষ্য থেকে এ কথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, যে ব্যক্তি আহ্লে বায়তে রসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দিল সে প্রকৃতপক্ষে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দিল, আর যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দিল, সে মূলত আল্লাহ্ তা‘আলাকেই কষ্ট দিল এবং সে আল্লাহর লানত ও শাস্তির উপযোগী হয়ে গেল।

আর যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলকে কষ্ট দেয়, তাদের পরিণতি হলো আল্লাহ্ তা‘আলা পবিত্র ক্বোরআনে এরশাদ করেন: إِنَّ الَّذِينَ يُؤْذُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُّهِينًا নিশ্চয় যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, এবং তাদের প্রতি আল্লাহ্ তা‘আলা লানত করেছেন দুনিয়া ও আখিরাতে এবং তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’’ [আহযাব-৫৭] ইমাম তাবরানী ও বায়হাক্বী সূত্রে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
وأخرج الطبراني والبيهيقي أن النبي صلى الله عليه وسلم قال وهو علي المنبر مَا بَالَ أَقْوَامٍ يُؤْذُوننِي فِي نَسَبِي وَذَوِي رَحمِي؟ أَلَا وَمَنْ آذَى نَسَبِي وَذَوِي رَحمِي فَقَدْ آذَانِي، وَمَنْ آذَانِي فَقَد آذَى اللهَ”( )
ওই জাতির কি পরিণতি হতে পারে যে, আমাকে কষ্ট দেয় আমার বংশ ও আমার পরিবার-পরিজনকে কষ্ট দেয়ার মাধ্যমে? সাবধান! যারা আমার বংশধর ও পরিবার-পরিজনকে কষ্ট দিল, সে মূলত: আমাকেই কষ্ট দিল। আর যে আমাকে কষ্ট দিল, সে স্বয়ং আল্লাহ্ তা‘আলাকেই কষ্ট দিল।’’. ( )
ইমাম তিরমিজী, ইবনু মাজাহ ও হাকেম বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ عَبْدِ الْجَبَّارِ الْبَغْدَادِىُّ حَدَّثَنَا عَلِىُّ بْنُ قَادِمٍ حَدَّثَنَا أَسْبَاطُ بْنُ نَصْرٍ الْهَمْدَانِىُّ عَنِ السُّدِّىِّ عَنْ صُبَيْحٍ مَوْلَى أُمِّ سَلَمَةَ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ لِعَلِىٍّ وَفَاطِمَةَ وَالْحَسَنِ وَالْحُسَيْنِ ্র أَنَا حَرْبٌ لِمَنْ حَارَبَهُمْ ، وَسِلْمٌ لِمَنْ سَالَمَهُمْ গ্ধ. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ. وَصُبَيْحٌ مَوْلَى أُمِّ سَلَمَةَ لَيْسَ بِمَعْرُوفٍ. ( )
যারা আমার আহলে বায়তের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব এবং যারা তাদের সাথে শান্তি চুক্তি করে, আমিও তাদের সাথে শান্তিচুক্তিতে আবদ্ধ হবো।( )
ইমাম ইবনে আবী শায়বাহ্ তাঁর ‘আল মুসান্নাফ’ এ মারফু হিসেবে বর্ণনা করেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
لا يحبّنا أهل البيت إلاّ مؤمن تقي ، ولا يبغضنا إلاّ منافق شقي ( )
আমার আহলে বায়তকে একমাত্র খোদাভীরু ঈমানদারগণই ভালবাসবে এবং একমাত্র হতভাগা মুনাফেকরাই তাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করবে। [[মুসান্নাফ-ই ইবনে আবি শায়বাহ্; ৬/৩৭২] ইমাম তাবরানী ও হাকেম বর্ণনা করেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
وَلَوْ أَنَّ رَجُلا صَفَنَ بَيْنَ الرُّكْنِ وَالْمَقَامِ فَصَلَّى وَصَامَ ثُمَّ لَقِيَ اللَّهَ وَهُوَ مُبْغِضٌ لأَهْلِ بَيْتِ مُحَمَّدٍ دَخَلَ النَّارَ ” ( )
কোন ব্যক্তি যদি বায়তুল্লাহ্ শরীফের রুকনে ইয়ামানী এবং মক্বামে ইব্রাহীমের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান করে, সেথায় সারা জীবন রোজা, নামাজ ও ইবাদত বন্দেগী করে এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়, কিন্তু সে যদি হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র বংশধরের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী হয়, তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।( )
রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
اخرج الديلمي عن أبي سعيد رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اشْتَدَّ غَضَبُ اللَّهِ عَلَى مَنْ آذَانِي فِي عِتْرَتِيগ্ধ. ( )
তার প্রতি অতিমাত্রায় আল্লাহ্ তা‘আলার ক্রোধ আপতিত, যে আমার পরিবার-পরিজনের বিষয়ে আমাকে কষ্ট দিয়েছে’’( )

আহলে বায়তে রসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম- এর মর্যাদা
জেনে রেখো যে, রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা এবং তাঁর সাথে বংশীয় সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়া অতি মহান গৌরব ও সম্মানের বিষয়। সাথে সাথে একথাও জেনে রাখা দরকার যে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর বংশীয় ধারার পূর্ব পুরুষগণ (তথা হযরত আদম আলায়হিস্ সালাম থেকে হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পিতা হযরত আবদুল্লাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু এবং মাতা হযরত আমেনা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা পর্যন্ত) যেমনিভাবে সৃষ্টির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন, অনুরূপভাবে হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র বংশধরগণও সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ বংশীয় মর্যাদার আসনে সমাসীন।
তাঁদের মর্যাদা ও ফযীলত সম্পর্কে পবিত্র ক্বোরআনের অসংখ্য আয়াত ও হাদীসের অমূল্য বাণীসমূহ বিদ্যমান। আল্লাহ্ তা‘আলা পবিত্র ক্বোরআনে এরশাদ করেন: إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمْ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا ”
বিজ্ঞ আলেমগণ বলেন, এখানে أَهْل الْبَيْتِ (আহলে বায়ত) শব্দ দ্বারা নবীগৃহে অবস্থানরত এবং নবীর বংশধর উভয়কেই বুঝায়। তার দলীল হলো:
عن أَبي سعيد الخدري، قال: قال رسول الله صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّم: ” نـزلَت هَذِهِ الآيَةُ فِي النبي صلى الله عليه وسلم وَفِي عَلِيٍّ رَضِيَ الله عَنْهُ وَحَسَنٍ رَضِيَ الله عَنْهُ وَحُسَيْنٍ رَضِيَ الله عَنْهُ وَفَاطِمَةَ رَضِيَ الله عَنِهَا
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمْ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম, হযরত আলী, হযরত ফাতেমা, হযরত হাসান ও হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুম সম্পর্কে।( )
বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাঁদেরকে একটি চাদরাবৃত করে এরশাদ করলেন:
“اللهم إن هؤلاء أهلُ بيتي و خاصتي فأًذهِب عنهم الرجسَ ، و طَهِّرهم تطهيراً، اللهم هؤلاء أهل بيتي و خاصتي فأذهِب عنهم الرجسَ و طَهِّرهُم تطهيراً ” . ( )
হে আল্লাহ! এরা আমার আহলে বায়ত ও অতি আপনজন, দূরীভূত করে দাও তাদের থেকে সকল প্রকার অপবিত্রতা এবং তাদেরকে যথাযথভাবে পবিত্র করে দাও।
অন্য রেওয়ায়তে উদ্ধৃত হয়েছে, হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাঁদের উপর একটি চাদর রাখলেন এবং তার উপর হাত মুবারক রেখে এরশাদ করলেন:
فَأَلْقَى عَلَيْهِمْ كِسَاءً فَدَكِيًّا ، قَالَ : ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ عَلَيْهِمْ ، ثُمَّ قَالَ : ” اللَّهُمَّ إِنَّ هَؤُلَاءِ آلُ مُحَمَّدٍ ، فَاجْعَلْ صَلَوَاتِكَ وَبَرَكَاتِكَ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ ” ( )
‘হে আল্লাহ! এরা হলো হযরত মুহাম্মদ মোস্তফার পবিত্র বংশধর, তাই তোমার দয়া, রহমত ও বরকত নাযিল করো হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র বংশধরের প্রতি, নিশ্চয় তুমি পরম প্রশংসিত ও সর্বাধিক মর্যাদাবান। ( )
তাদের মর্যাদা বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন:
فَمَنْ حَاجَّكَ فِيهِ مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَكَ مِنْ الْعِلْمِ فَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ وَنِسَاءَنَا وَنِسَاءَكُمْ وَأَنْفُسَنَا وَأَنْفُسَكُمْ ثُمَّ نَبْتَهِلْ فَنَجْعَلْ لَعْنَةَ اللَّهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ
আপনার নিকট নিশ্চিত জ্ঞান আমার পরও যদি কেউ আপনার সাথে তর্ক করে তাহলে আপনি তাদেরকে বলে দিন, আমরা আহ্বান করি আমাদের পুত্র সন্তানদেরকে ও তোমাদের পুত্র সন্তানদেরকে, আমাদের নারীগণকে ও তোমাদের নারীগণকে। আমাদের নিজেদেরকে ও তোমাদের নিজেদেরকে, অতপর আমরা বিনীত আবেদন করি এবং মিথ্যাবাদীদের উপর দিই আল্লাহর লা’নত। [সূরা আল-ই ইমরান, আয়াত-৬১] তাফসীরকারকগণ বলেন,
لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ ( فَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ …) دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلِيًّا وَفَاطِمَةَ وَحَسَنًا وَحُسَيْنًا فَقَالَ : اللَّهُمَّ هَؤُلَاءِ أَهْلِي “( )
যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলো তখন রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হযরত আলী, হযরত ফাতেমা, হযরত হাসান ও হযরত হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমকে ডাকলেন, আর প্রিয়নবী বলছিলেন اللَّهُمَّ هَؤُلَاءِ أَهْلِي হে আল্লাহ! এরা আমার আহলে বায়ত।
তাফসীরকারকগণ বলেন,
قال أهل التفسير لما نزلت هذه الآية دعا رسول الله (صلى الله عليه وسلم) عليا وفاطمة والحسن والحسين رضي الله عنهم فأحتضن الحسين وأخذ بيد الحسن ومشت فاطمة خلفه وعلي خلفهما وقال اللهم هؤلاء أهلي.
যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলো, তখন রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হযরত আলী, হযরত ফাতেমা, হযরত হাসান ও হযরত হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমকে ডাকলেন, অতঃপর ইমাম হোসাইনকে হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর কোলে বসালেন এবং হযরত ইমাম হাসানের হাত ধরলেন আর হযরত ফাতেমা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পেছনে এবং হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু উভয়ের পেছনে চললেন, আর প্রিয়নবী বলছিলেন اللَّهُمَّ هَؤُلَاءِ أَهْلِي হে আল্লাহ! এরা আমার আহলে বায়ত।
وفي هذه الآيه دليل صريح علي أن أولاد فاطمة وذريتهم يسمون أبناءه صلى الله عليه وسلم وينسبون إليه صحيحة نافعة في الدنيا والآخرة.
এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, হযরত ফাতেমা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহার সন্তানগন এবং তাঁর সন্তানগণের সন্তানগণকে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সন্তান হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এবং হুযূর-ই করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তাঁদের বংশীয় সম্পর্ক বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত। আর এ সম্পর্ক দুনিয়া ও আখিরাতে বিদ্যমান থাকবে এবং উপকার ও সম্মান বহন করবে।
حكي انّ الرشيد سأله يوماً: كيف قلتم نحن ذرّية رسول اللّه ـ صلى الله عليه وآله وسلم ـ وأنتم بنو علي وانّما ينسب الرجل إلى جدّه لأبيه دون جدّه لاُمّه؟ فقال الكاظم ـ عليه السلام ـ : أعوذ باللّه من الشيطان الرجيم بِسم اللّه الرَّحمن الرَّحيم: … وَمِنْ ذُرِّيَّتِهِ دَاوُودَ وَسُلَيْمَانَ وَأَيُّوبَ وَيُوسُفَ وَمُوسَىٰ وَهَارُونَ وَكَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ * وَزَكَرِيَّا وَيَحْيَىٰ وَعِيسَىٰ وَإِلْيَاسَ … ( القران الكريم: سورة الأنعام (৬)، الآية: ৮৪ و ৮৫، الصفحة: ১৩৮.) وليس لعيسى أب إنّما اُلحق بذريّة الأنبياء من قبل اُمّه وكذلك اُلحقنا بذريّة النبي من قبل اُمّنا فاطمة الزهراء، وزيادة اُخرى يا أميرالمؤمنين: قال اللّه عزّوجلّ: فَمَنْ حَاجَّكَ فِيهِ مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ فَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ وَنِسَاءَنَا وَنِسَاءَكُمْ وَأَنْفُسَنَا وَأَنْفُسَكُمْ ثُمَّ نَبْتَهِلْ … ( القران الكريم: سورة آل عمران (৩)، الآية: ৬১، الصفحة: ৫৭.) ولم يدع ـ صلى الله عليه وآله وسلم ـ عند مباهلة النصارى غير علي وفاطمة والحسن والحسين وهما الأبناء( )
বর্ণিত আছে যে, একদা বাদশা হারুনুর রশীদ ইমাম মুসা কাজেম রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হিকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা নিজেদেরকে কিভাবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর বংশধর হিসেবে দাবী কর, অথচ তোমরা তো হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর বংশধর, কেননা মানুষের বংশ প্রমাণিত হয় দাদার দিক থেকে, নানার দিক থেকে নয়?
তখন জবাবে ইমাম মুসা কাজেম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নি¤েœাক্ত আয়াতটি পাঠ করেন,
وَمِنْ ذُرِّيَّتِهِ دَاوُودَ وَسُلَيْمَانَ وَأَيُّوبَ وَيُوسُفَ وَمُوسَىٰ وَهَارُونَ وَكَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ * وَزَكَرِيَّا وَيَحْيَىٰ وَعِيسَىٰ وَإِلْيَاسَ
এবং তাঁর বংশধর হযরত দাঊদ, হযরত সোলায়মান ও হযরত আইয়ূব, হযরত ইয়ূসুফ, হযরত মূসা ও হযরত হারূন আলায়হিমুস্ সালামকেও; আর এভাবেই সৎকর্মপরায়ণদের পুরস্কৃত করি। এবং হযরত যাকারিয়া, হযরত ইয়াহ্ইয়া, হযরত ঈসা এবং হযরত ইলয়াস আলায়হিমুস্ সালামকেও সৎপথে পরিচালিত করেছিলাম, তাঁরা সকলেই সৎকর্ম পরায়নদের দলভুক্ত ছিলেন। [সূরা আনআম, আয়াত-৮৪, ৮৫] হযরত বললেন, হযরত ঈসা আলায়হিস্ সালাম-এর কোন পিতা ছিলনা, তাঁর মায়ের দিক থেকেই তাঁর বংশ প্রমাণিত এবং পরবর্তী নবীগণের সাথে সংযোজিত। অনুরূপভাবে আমরাও নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর বংশের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছি আমাদের মা হযরত ফাতেমা আলায়হাস্ সালাম-এর মাধ্যমে।
এছাড়াও আরও উল্লেখ্য যে, হে আমিরুল মু’মিনীন! মুবাহালার আয়াতটি
فَمَنْ حَاجَّكَ فِيهِ مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ فَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ وَنِسَاءَنَا وَنِسَاءَكُمْ وَأَنْفُسَنَا وَأَنْفُسَكُمْ ثُمَّ نَبْتَهِلْ (সূরা আলে ইমরানের ৬১নং আয়াত)
যখন নাযিল হয় তখন রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হযরত আলী, ফাতেমা এবং হযরত ইমাম হাসান ও হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু ছাড়া অন্য কাউকে তো ডাকেননি এবং সাথে নিয়ে যাননি।
[মাজমাউল আহবাব]

আহলে বায়তের ফযীলত ও মর্যাদা সম্পর্কে হাদীস
আহলে বায়তের ফযীলত ও মর্যাদা বর্ণনায় অনেক হাদিস পাওয়া যায়। তৎমধ্যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
اخرج بن أبي شيبة ومسدد في مسنديهما والحكيم الترمذي في نوادر الأصول وأبو يعلى والطبراني عَنْ إِيَاسِ بْنِ سَلَمَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” النُّجُومُ أَمَانٌ لأَهْلِ السَّمَاءِ ، وَأَهْلُ بَيْتِي أَمَانٌ لأَهْلِ الأَرْضِ ، فَإِذَا ذَهَبَ أَهْلُ بَيْتِي أَتَى أُمَّتِي مَا يُوعَدُونَ ” .. ( )
আসমানের নক্ষত্ররাজি আসমানবাসীর জন্য নিরাপত্তা আর আমার আহলে বায়ত হলো আমার উম্মতের জন্য মতদ্বৈততা থেকে নিরাপদ থাকার একমাত্র উপায়।( )
অন্য রেওয়ায়তে ইমাম আহমদ বর্ণনা করেন, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
فإذا ذَهبَ أهلُ بيتي جاء أهل الأرض من الآيات ما كانوا يوعدُوّن” গ্ধ( )
আমার আহলে বায়ত যদি পৃথিবীর বুকে না থাকে তাহলে পৃথিবীবাসীর প্রতি প্রতিশ্রুত নিদর্শনাবলী ও আযাব আবশ্যম্ভাবী।
হযরত আনাস ইবনে মালেক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
اخرج الحاكم عن انس رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: إنَّ اللهَ تَـعَـالَـى وَعَدَنِــي فِـيْ أَهْــــلِ بَيْـتِي مَـنْ أَقَـرَّ مِنْـهُمْ لِلهِ بَالتَّـوْحِيْدِ وَلِيَ بِـالْبَلَاغِ أَنْ لَا يُعَذِّبَــهُمْ. ( )
আল্লাহ্ তা‘আলা আমার সাথে আমার আহলে বায়ত সম্পর্কে এ ওয়াদাবদ্ধ হয়েছেন যে, তাদের মধ্যে যাঁরা তাওহীদ ও রেসালতের স্বীকৃতি দেবেন তাঁদেরকে কোনরূপ শাস্তি দেয়া হবে না।

সুনানে তিরমিযীতে বর্ণিত, রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ . قَالَا : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنِّي تَارِكٌ فِيكُمْ مَا إِنْ تَمَسَّكْتُمْ بِهِ لَنْ تَضِلُّوا بَعْدِي أَحَدُهُمَا أَعْظَمُ مِنَ الآخَرِ: كِتَابُ اللَّهِ حَبْلٌ مَمْدُودٌ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ. وَعِتْرَتِي أَهْلُ بَيْتِي ، وَلَنْ يَتَفَرَّقَا حَتَّى يَرِدَا عَلَيَّ الحَوْضَ ، فَانْظُرُوا كَيْفَ تَخْلُفُونِي فِيهِمَا( )
আমি তোমাদের নিকট এমন দু’টি মূল্যবান জিনিস রেখে যাচ্ছি যদি তোমরা তা আকড়ে ধর, তাহলে তোমরা কখনও পথভ্রষ্ট হবে না। এর একটি অন্যটি থেকে মহান। ওই দু’টির মধ্যে একটি হলো আল্লাহ্ তা‘আলার কিতাব, যা আসমান থেকে জমিন পর্যন্ত প্রসারিত এক রজ্জু, আর অপরটি হলো আমার ইবারত তথা আহলে বায়ত। এ দু’টির একটি অপরটি থেকে আমার নিকট ‘হাউদ্বে কাউসার’ এ উপস্থিত হওয়া পর্যন্ত কখনও বিচ্ছিন্ন হবে না। সুতরাং তোমরা ভেবে দেখ। আমার পরে এ দু’টির বিষয়ে তোমরা কিরূপ আমার প্রতিনিধিত্ব করছো।( )
সহীহ্ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, রসূলে করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ: إِنَّمَا مَثَلُ أَهْلِ بَيْتِي فِيكُمْ كَمَثَلِ سَفِينَةِ نُوحٍ، مَنْ رَكِبَهَا نَجَا وَمَنْ تَخَلَّفَ عَنْهَا غَرِقَ. وفي رواية وَمَنْ تَخَلَّفَ عَنْهَا هَلَكَ( )
তোমাদের মাঝে আমার আহলে বায়ত হলেন হযরত নূহ আলায়হিস্ সালাম এর ওই কিস্তীর ন্যায় যারা এতে আরোহণ করেছেন মুক্তি পেয়েছে, আর যারা তা থেকে পিছনে ছিল বা এতে আরোহণ থেকে বিরত ছিল, তারা ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছে।( )
অন্য রেওয়ায়তে এসেছে,
إِنَّمَا مَثَلُ أَهْلِ بَيْتِي فِيكُمْ مَثَلُ بَابِ حِطَّةٍ فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ، مَنْ دَخَلَ غُفِرَ لَهُ. ( )
আমার আহলে বায়ত তোমার জন্য বনী ইসরাইলের ‘বাবে হিত্ত্বা’র ন্যায়। এতে যারা প্রবেশ করেছিল, তারা ক্ষমা প্রাপ্ত হয়েছিল।
‘মুসনাদে ফেরদাউস’-এ ইমাম দায়লামী বর্ণনা করেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
“الدُعَاءٍ مَحْجُوبٌ حَتَّى يُصَلَّى عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آل بيته ” ( )
ততক্ষণ পর্যন্ত দো‘আ কবুল করা হবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর আহলে বায়তের প্রতি দুরূদ পেশ করা হলো।( )
হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন,
يا آلَ بيتِ رسولِ اللهِ حبكمُ فَرْضٌ مِنَ اللَّهِ في القُرآنِ أَنْزَلَهُ
كفاكم منْ عظيمِ الفخرِ أتَّكمُ مَنْ لَمْ يُصَلِّ عَلَيْكُمْ لا صَلاة َ لَهُ
হে আহলে বায়তে রসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আপনাদের প্রতি ভালবাসা আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে ফরয করে দেওয়া হয়েছে, ক্বোরআনের আয়াত অবতীর্ণ করার মাধ্যমে।
আপনাদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মানের জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে, যারা আপনাদের প্রতি নামাজে সালাম প্রদান করবেনা তাদের নামাযই হবে না।
বিজ্ঞজনেরা বলেছেন,
من أمعن النظر في الواقع والمشاهد وجد أهل البيت إلا من ندرهم القائمون بوظائف الدين والدعوات إلي شريعة سيد المرسلين المتقون لربهم والمقتفون لجدهم يضعون القدم علي القدم ومن يشابه أباه فما ظلم وعلماؤهم هم قادة الأمم والشموس التي تنجاب بها الظلم فهم بركة هذه الأمة الكاشفون عنها في غياهب الكون كل غمة فلابد وأن يوجد في كل عصر طائفة منهم يدفع الله بها عن الناس البلاء
গভীরভাবে চিন্তা করলে ইসহাম ও বাস্তবতা সাক্ষী দেয় যে, যুগযুগ ধরে আহলে বায়তগণই ছিলেন দ্বীনের প্রচারক ও মানুষকে সত্য দ্বীন তথা শরীয়তের প্রতি দাওয়াতকারী এবং তাঁরাই ছিলেন বিশ্ব মুসলিমের নেতা ও অগ্রনায়ক ও উম্মতে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের জন্য আল্লাহ্ তা‘আলার রহমত। তাঁদের বরকতেই আল্লাহ্ তা‘আলা মানবজাতিকে নানাবিধ বিপদাপদ থেকে রক্ষা করেন।
فإنهم أمان لأهل الأرض كما أن النجوم أمان لأهل السماء
নক্ষত্ররাজি যেমন আকাশকে রক্ষাকারী অনুরূপ তারাঁও এ উম্মতকে রক্ষাকারী।
তাইতো নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
تَعلَّموا منهم ولا تعلّموهم، وأنكم حزب إبليس إذا خالفتموهم( )
তাঁদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করো, তাঁদেরকে শিক্ষা দিওনা, যদি তোমরা তাঁদের বিরোধিতা কর, তাহলে তোমরা ইবলিসের দলে পরিণত হবে।’’( )
অনুরূপ তিনি এরশাদ করেন, তাঁদেরকে অনুসরণ মুক্তি ও গোমরাহী থেকে নাজাতের মাধ্যম। আর যারা তাঁদের বিরোধীতা করবে তারা দ্বীন থেকে বিচ্যুৎ ও মুনাফিক।

প্রশ্ন : হাদীস শরীফটির অর্থ কি? আর তা হলো নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন,
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : قَامَ رَسُولُ اللَّهِ – صلى الله عليه وسلم – حِينَ أَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ( وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ ) قَالَ : يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ – أَوْ كَلِمَةً نَحْوَهَا – اشْتَرُوا أَنْفُسَكُمْ ، لاَ أُغْنِي عَنْكُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا ، يَا بَنِي عَبْدِ مَنَافٍ لاَ أُغْنِي عَنْكُمْ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا ، يَا عَبَّاسُ بْنَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ لاَ أُغْنِي عَنْكَ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا ، وَيَا صَفِيَّةُ عَمَّةَ رَسُولِ اللَّهِ لاَ أُغْنِي عَنْكِ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا ، وَيَا فَاطِمَةُ بِنْتَ مُحَمَّدٍ سَلِينِي مَا شِئْتِ مِنْ مَالِي لاَ أُغْنِي عَنْكِ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا ( )
হে ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম, হে সফীয়্যা বিনতে আবদুল মুত্তাবিল ওহে আবদুল মুত্তালিবের বংশধর। তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর। আমি আল্লাহর হুকুম ছাড়া তোমাদের জন্য কিছুই করতে পারবনা। ( )
উত্তর: এ হাদিস শরীফের বিষয়ে ওলামাযে কেরামের অভিমত হলো, এ হাদিসটি এবং আহলে বায়তের ফযীলতের বিষয়ে উল্লেখিত হাদিসগুলোর মধ্যকার মূলত: কোন ধরনের দ্বন্দ্ব বা বৈরীতা নেই। উল্লেখিত হাদিসের অর্থ হলো
قاله المحب الطبري، أنه صلى الله عليه وسلم لا يملك لأحد شيئاً لا نفعاً ولا ضراً، لكن اللّه عز وجل يُمَلِّكُهُ نفع أقاربه، بل وجميع أمته بالشفاعة العامة والخاصة، فهولا يملك إلا ما يملكه له مولاه كما أشار إليه بقوله غَيْرَ أَنَّ لَكُمْ رَحِمًا سَأَبُلُّهَا بِبَلَالِهَا وكذا معنى قوله لا أغنى عنكم من الله شيئاً. أي بمجرد نفسي من غير ما يكرمني به الله، من نحو شفاعة، أو مغفرة، وخاطبهم بذلك رعاية لمقام التخويف والحث على العمل، والحرص على أن يكونوا أولى الناس حظاً في تقوى الله وخشيته
আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে ক্ষমতা প্রদান করা ছাড়া কেউ স্বতন্ত্রভাবে কারও কোন প্রকার লাভ-ক্ষতি করতে পারে না। কিন্তু আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবার পর লাভ-ক্ষতি করার ক্ষমতা অর্জিত হয়। তাই এতে কোন সন্দেহ নেই যে, আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর প্রিয়নবী ও রসূলকে ক্বিয়ামতের দিনে তাঁর আহলে বায়ত এবং উম্মতদের জন্য শাফায়াত করার অধিকার এবং তাঁর শাফায়াত কবুল করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছেন। তাই তিনি এ সম্মান ও প্রদত্ত ক্ষমতা বলে তাঁর আহলে বায়ত ও উম্মতদের জন্য অবশ্যই শাফায়াত করবেন এবং গুনাহ্গার উম্মতদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করবেন।
তাছাড়া একটি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, غَيْرَ أَنَّ لَكُمْ رَحِمًا سَأَبُلُّهَا بِبَلَالِهَا হ্যাঁ, তবে তোমাদের সাথে আমার রেহেম বা রক্তের সম্পর্ক বিরাজমান, আর আমি ক্বিয়ামতের দিনে এ সম্পর্কের কারণে তোমাদের প্রতি কৃপা ও অনুগ্রহ করব। ( )
অনুরূপ অনেক বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর বংশীয় সম্পর্ক ক্বিয়ামত দিবসেও সহায়ক ও উপকারী হবে। তন্মধ্যে বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত, রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
أخرَجَ أحمد والحاكم عن المسوّر ، ان النبي صلى الله عليه وآله قال : ্রفاطمة بَضعَةٌ مني يُغضبني ما يُغضبها ويبسطني ما يبسطها ، وان الانساب تنقطع يوم القيامة غير نسبي وسببي وصهريগ্ধ( )
‘ফাতেমা আমার দেহের অংশ বিশেষ, আমাকে তা ক্রোধান্বিত করে যা তাকে ক্রোধান্বিত করে এবং আমাকে তা আনন্দিত করে যা তাকে আনন্দিত করে। আর ক্বিয়ামতের দিবসে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে সকল প্রকার বংশীয় সম্পর্ক কিন্তু একমাত্র আমার বংশীয়, গোত্রীয় ও বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়া। ( )

‘মুসতাদরাক’ এ হাকেম নিসাপুরীর সূত্রে হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
اخرج الحاكم عن انس رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: إنَّ اللهَ تَـعَـالَـى وَعَدَنِــي فِـيْ أَهْــــلِ بَيْـتِي مَـنْ أَقَـرَّ مِنْـهُمْ لِلهِ بَالتَّـوْحِيْدِ وَلِيَ بِـالْبَلَاغِ أَنْ لَا يُعَذِّبَــهُمْ. ( )
আমার রব আমার সাথে আমার আহলে বায়ত সম্পর্কে এ মর্মে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন যে, তাদের মধ্যে যারা এক আল্লাহর তাওহীদ এবং আমার রিসালতের স্বীকৃতি দেবে তাদেরকে ক্বিয়ামত দিবসে কোন প্রকার শাস্তি দেয়া হবে না।( )

সাহাবায়ে কেরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম-এর ফযীলত
সাহাবায়ে কেরাম হেদায়াতের নক্ষত্র, তাক্বওয়ার পূর্ণচন্দ্র, দীপ্তিমান তারকা, সুদীপ্ত পূর্ণিমা; রাতের দরবেশ, দিনের অশ্বারোহী; যাঁরা আপন আঁখি যুগলকে সজ্জিত করেছেন মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নূরের সুরমায়; ইসলাম নিয়ে যারা ছুটে গেছেন পূর্বে ও পশ্চিমে, যার বদৌলতে ইসলাম ছড়িয়ে পড়েছে ভূভাগের প্রতিটি দেশে এবং প্রতিটি প্রান্তে। তাঁরা ছিলেন আনসার, যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে করেছেন নুসরাত ও সাহায্য। তাঁরা ছিলেন মুহাজির, যারা কেবলই আল্লাহর জন্য করেছেন হিজরত, বিসর্জন দিয়েছেন নিজেদের দেশ ও সহায় সম্পদ।
আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু কত সুন্দরই না বলেছেন। তিনি বলেন,
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ , رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ , قَالَ : ” إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ نَظَرَ فِي قُلُوبِ الْعِبَادِ فَوَجَدَ قَلْبَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرَ قُلُوبِ الْعِبَادِ ، فَاصْطَفَاهُ لِنَفْسِهِ , وَابْتَعَثَهُ بِرِسَالَتِهِ ، ثُمَّ نَظَرَ فِي قُلُوبِ الْعِبَادِ بَعْدَ قَلْبِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ فَوَجَدَ قُلُوبَ أَصْحَابِهِ خَيْرَ قُلُوبِ الْعِبَادِ بَعْدَ قَلْبِهِ ، فَجَعَلَهُمْ وُزَرَاءَ نَبِيِّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، يُقَاتِلُونَ عَلَى دِينِهِ ، فَمَا رَآهُ الْمُسْلِمُونَ حَسَنًا فَهُوَ عِنْدَ اللَّه حَسَنٌ ، وَمَا رَآهُ الْمُسْلِمُونَ سَيِّئًا فَهُوَ عِنْدَ اللَّهِ سَيِّئٌ ” .
‘আল্লাহ বান্দাদের অন্তরের প্রতি দৃষ্টি দিয়ে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্তরকে সর্বোত্তম দেখতে পান। ফলে তিনি তাঁকে নিজের (বিশেষ ভালোবাসা ও অনুগ্রহের) জন্য নির্বাচন করেন। তাঁকে তাঁর রিসালাত সমেত প্রেরণ করেন। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্তরের পর তিনি নযর দেন বান্দাদের অন্তরে। এ দফায় তিনি তাঁর ছাহাবীগণের অন্তরকেই সকল বান্দার অন্তরের মধ্যে সর্বোত্তম দেখতে পান। ফলে তিনি তাঁদেরকে তাঁর নবীর সাহায্যকারী বানিয়ে দেন। যারা তাঁর দীনের জন্য লড়াই করেন। অতএব মুসলিমরা (সাহাবীগণ) যে জিনিসকে সুন্দর ও ভালো মনে করে, তা আল্লাহর কাছেও পছন্দনীয় বিবেচিত হয়। আর যা তাঁদের কাছে মন্দ বিবেচিত হয় তা তাঁর কাছেও মন্দ হিসেবে গৃহীত হয়।’( )
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর তাঁরাই বহন করেছেন ইসলামের ঝান্ডা। ইসলামের পতাকা উড্ডীন করেছেন পৃথিবীর নানা প্রান্তে। আল্লাহ তাঁদের মাধ্যমে ইসলাম ও মুসলিমকে সম্মানিত করেছেন। এ কারণেই আমরা বিচারের দিন পর্যন্ত তাঁদের নিকট ঋণী। কবি বলেন, ‘ইসলামের সম্মান তো তাঁদের ছায়াতেই; আর মর্যাদা তো তাই, যা তাঁরা নির্মাণ করে সুদৃঢ় করেছেন!’
তাঁরাই সুন্নাহ সম্পর্কে বেশি জানতেন, কুরআনও সবচেয়ে ভালো বুঝতেন তাঁরাই। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের কাছে কুরআনের অর্থ ব্যাখ্যা করেছেন, এর অস্পষ্ট বিষয় তাঁদের সামনে স্পষ্ট করেছেন এবং এর কঠিন বিষয় তাঁদের জন্য সহজ করে বলেছেন। তাঁরাই এ কুরআনের তাফসীর সম্পর্কে সবচে বেশি জ্ঞাত। কারণ, তাঁরা কুরআন নাযিলের প্রেক্ষাপট তথা সময় ও অবস্থা প্রত্যক্ষ করেছেন( )।
ইমাম শাফেয়ী রহ. তাঁর ‘আর-রিসালা’ গ্রন্থে ছাহাবীগণের কথা আলোচনা করেন। তাঁদের যথাযোগ্য প্রশংসা করেন। অতপর তিনি বলেন:
قَالَ الشَّافِعِيُّ:أَثْنَى اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى عَلَى أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْه وَسَلَّمَ فِي الْقُرْآنِ وَالتَّوْرَاةِ وَالْإِنْجيلِ وَسِيقَ لَهُمْ عَلَى لِسَانِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيه وَسَلَّمَ مِنَ الْفَضْلِ مَا لَيْسَ لِأحَدٍ بَعْدَهُمْ فَرَحِمَهُمُ اللهُ وَهَنَّأَهُمْ بِمَا آتَاهُمْ مِنْ ذَلِكَ بِبُلُوغِ أعْلَى مَنَازِلِ الصِّدِّيقِينَ وَالشّهداءِ وَالصَّالِحِينَ فَهُمْ أَدَّوْا إلْيَنَا سُنَنَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْه وَسَلَّمَ وَشَاهَدُوهُ وَالْوَحْيُ يَنْزِلُ عَلَيه فَعَلِمُوا مَا أَرَادَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيه وَسَلَّمَ عَامًّا وَخَاصًّا وَعَزْمًا وَإِرْشَادًا وَعَرَفُوا مِنْ سُنَّتِهِ مَا عَرَفْنَا وَجَهْلِنَا، وَهُمْ فَوْقَنَا فِي كُلِّ عِلْمٍ وَاجْتِهَادٍ وَوَرَعٍ وَعَقْلٍ وَأَمْرٍ اُسْتُدْرِكَ بِهِ عِلْمٌ وَاسْتُنْبِطَ بِهِ، وآراؤهم لَنَا أَحْمَدُ وَأَوْلَى بِنَا مِنْ آرائنا عندَنَا لِأَنْفَسُنَا وَاللهُ أعْلَمُ. ( )

‘তাঁরা ইলম, ইজতিহাদ, তাকওয়া ও জ্ঞান-বুদ্ধিতে আমাদের ওপরে। তাঁরা আমাদের চেয়ে উত্তম এমন বিষয়ে যে ব্যাপারে ইলম জানা গেছে কিংবা যা ইস্তিমবাত বা উদ্ভাবন করা হয়েছে। তাঁদের রায়গুলো আমাদের কাছে প্রশংসনীয়। আমাদের নিজেদের ব্যাপারেই আমাদের সিদ্ধান্তের চেয়ে তাঁরাই অগ্রাধিকার পাবার হকদার।’ ( )
আমাদের উপর তাদের বহু অনুগ্রহ রয়েছে। আমাদের পূর্বেই তারা ইসলামের এ নিয়ামত প্রাপ্ত হয়েছেন এবং আমাদের কাছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি প্রেরিত বাণী পৌঁছিয়ে দিয়েছেন ও তন্মধ্যে যা অস্পষ্ট ছিল তা স্পষ্ট করে বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন এবং তাদেরকে সন্তুষ্ট করুন।
সাহাবা কারা? বুখারী রহ. তাঁর সহীহ গ্রন্থে ছাহাবীর সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে: ‘মুসলিমদের মধ্যে যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গ লাভ করেছেন অথবা তাঁকে দেখেছেন তিনিই ছাহাবী।’ অর্থাৎ ছাহাবী হলেন, যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঈমানসহ দেখেছেন এবং ইসলাম নিয়েই ইন্তিকাল করে গেছেন।
‘সাহাবী’র সংজ্ঞায় এ ব্যাপকতা মূলত ছোহবত বা সাহচর্যের মর্যাদা এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মর্যাদার মহত্ত্বের প্রতি লক্ষ্য করে। কেননা নবুওতের নূর দর্শন মুমিনের অন্তরে একটি সংক্রামক শক্তি সঞ্চার করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বরকতে মৃত্যু অবধি এ নূরের প্রতিক্রিয়া দৃশ্যমান হয় দর্শকের ইবাদত-বন্দেগীতে এবং তার জীবনযাপন প্রণালীতে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি বাণীতে আমরা এর সাক্ষ্য পাই।
আনাস ইবন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدَّرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” طُوبَى لِمَنْ رَآنِي وَآمَنَ بيِ ، وَطُوبَى ثُمَّ طُوبَى ثُمَّ طُوبَى لِمنْ آمَنَ بِي وَلَمْ يَرَنيِ ” ( )
‘সুসংবাদ ওই ব্যক্তির জন্য যে আমাকে দেখেছে এবং আমার প্রতি ঈমান এনেছে। আর সুসংবাদ ওই ব্যক্তির জন্য যে আমার প্রতি ঈমান এনেছে অথচ আমাকে দেখেনি।’ এ কথা তিনি সাতবার বললেন। ( )
এ সংজ্ঞা মতে, সাহাবীরা ছোহবত বা সাহচর্যের সৌভাগ্য এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দর্শনের মর্যাদায় অভিষিক্ত। আর তা এ কারণে যে, নেককারদের ছোহবতেরই যেখানে এক বিরাট প্রভাব বিদ্যমান, সেখানে সকল নেককারের সরদার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ছোহবতের প্রতিক্রিয়া ও প্রভাব কেমন হবে তা বলাই বাহুল্য। অতএব যখন কোনো মুসলিম তাঁর দর্শন লাভে ধন্য হয়, হোক তা ক্ষণিকের জন্যে, তার আত্মা ঈমানের দৃঢ়তায় টইটুম্বুর হয়ে যায়। কারণ সে ইসলামে দীক্ষিত হবার মাধ্যমে স্বীয় আত্মাকে ‘গ্রহণ’ তথা কবুলের জন্য প্রস্তুতই রেখেছিল। ফলে যখন সে ওই মহান নূরের মুখোমুখী হয়, তখন তার কায়া ও আত্মায় এর প্রভাব ভাস্কর হয়ে ওঠে।’( )
ইবন উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন,
عَنْ نُسَيْرِ بْنِ ذُعْلُوقٍ ، قَالَ : سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ ، يَقُولُ : ” لا تَسُبُّوا أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ فَلَمَقَامُ أَحَدِهِمْ سَاعَةً خَيْرٌ مِنْ عِبَادَةِ أَحَدِكُمْ أَرْبَعِينَ سَنَةً “( )
‘তোমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ছাহাবীদের গালাগাল করো না। কেননা তাদের এক মুহূর্তের (ইবাদতের) মর্যাদা তোমাদের প্রত্যেকের জীবনের আমলের চেয়ে বেশি।’ ( )
এ ব্যাপারে ইবন হাযম একটি মূল্যবান বাক্য রয়েছে, তিনি বলেন, ‘আমাদের কাউকে যদি যুগ-যুগান্তর ব্যাপ্ত সুদীর্ঘ হায়াত প্রদান করা হয় আর সে তাতে অব্যাহতভাবে ইবাদত করে যায়, তবুও তা ওই ব্যক্তির সমকক্ষ হতে পারবে না যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক সেকেন্ড বা তার চেয়ে বেশি সময়ের জন্য দেখেছেন।’( )

আল কুরআনে সাহাবায়ে কেরাম
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর পবিত্র গ্রন্থে অনেক স্থানে এ সাহাবীদের কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁদের সম্মান ও শ্রেষ্ঠত্বের কথা ব্যক্ত করেছেন। আল্লাহ বলেন,
وَالسّابِقونَ الأَوَّلونَ مِنَ المُهاجِرينَ وَالأَنصارِ وَالَّذينَ اتَّبَعوهُم بِإِحسانٍ رَضِيَ اللَّـهُ عَنهُم وَرَضوا عَنهُ وَأَعَدَّ لَهُم جَنّاتٍ تَجري تَحتَهَا الأَنهارُ خالِدينَ فيها أَبَدًا ذلِكَ الفَوزُ العَظيمُ﴿التوبة-১০০﴾
‘মুহাজির ও আনছারগণের মধ্যে অগ্রবর্তী ছাহাবীগণ এবং কল্যাণকর্মের মাধ্যমে তাঁদের অনুসারীগণের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়েছেন। আর তাঁরাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন’ (তওবাহ ১০০)
সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে আমাদের অন্তঃকরণকে নিষ্কলুষ রাখতে হবে। তাঁদের প্রতি হৃদয়ে কোন হিংসা-বিদ্বেষ বা ঘৃণা থাকবে না; থাকবে না কোন প্রকার শত্রুতা। বরং হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান পাবে শুধু ভালবাসা, অনুগ্রহ আর সহানুভূতি। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
وَالَّذِينَ جَاءُوا مِن بَعْدِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ﴿الحشر-১০﴾
‘যারা তাদের পরে এসেছে তারা বলে: ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে ও আমাদের ভাই যারা ঈমান নিয়ে আমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে তাদের ক্ষমা করুন; এবং যারা ঈমান এনেছিল তাদের জন্য আমাদের অন্তরে কোনো বিদ্বেষ রাখবেন না; হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি দয়াবান, পরম দয়ালু।’ {সূরা আল-হাশর, আয়াত : ১০}
সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)-এর গুণকীর্তন শুধুমাত্র পবিত্র কুরআনেই আসেনি; বরং তাঁদের সৃষ্টির আগেই তাওরাত ও ইঞ্জীলে তাঁদের প্রশংসার কথা বিঘোষিত হয়েছে। সূরা আল-ফাত্হের শেষ আয়াতে মহান আল্লাহ ছাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে ইরশাদ করেন,
مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّـهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ تَرَاهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّنَ اللَّـهِ وَرِضْوَانًا سِيمَاهُمْ فِي وُجُوهِهِم مِّنْ أَثَرِ السُّجُودِ ذَلِكَ مَثَلُهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَمَثَلُهُمْ فِي الْإِنجِيلِ كَزَرْعٍ أَخْرَجَ شَطْأَهُ فَآزَرَهُ فَاسْتَغْلَظَ فَاسْتَوَى عَلَى سُوقِهِ يُعْجِبُ الزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ الْكُفَّارَ وَعَدَ اللَّـهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ مِنْهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا ﴿الفتح-২৯﴾
‘হযরত মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল এবং তাঁর সাথে যারা আছে তারা কাফিরদের প্রতি অত্যন্ত কঠোর; পরস্পরের প্রতি সদয়, আপনি তাদেরকে রুকূকারী, সিজদাকারী অবস্থায় দেখতে পাবেন। তারা আল্লাহর করুণা ও সন্তুষ্টি অনুসন্ধান করছে। তাদের আলামত হচ্ছে, তাদের চেহারায় সিজদার চি‎হ্ন থাকে। এটাই তাওরাতে তাদের দৃষ্টান্ত। আর ইনজীলে তাদের দৃষ্টান্ত হলো একটি চারাগাছের মত, যে তার কচিপাতা উদগত করেছে ও শক্ত করেছে, অতঃপর তা পুষ্ট হয়েছে ও স্বীয় কান্ডের ওপর মজবুতভাবে দাঁড়িয়েছে, যা চাষীকে আনন্দ দেয়। যাতে তিনি তাদের দ্বারা কাফিরদেরকে ক্রোধান্বিত করতে পারেন। তাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের জন্য ক্ষমা ও মহাপ্রতিদানের ওয়াদা করেছেন।’ {সূরা আল-ফাতহ, আয়াত : ২৯}

সাহাবায়ে কেরাম’র প্রতি সুবাসিত এই প্রশংসা ও গুণকীর্তন উল্লিখিত হয়েছে তাওরাত ও ইঞ্জীলে। এ ছাড়া আরও অনেক আয়াতে সাহাবা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের কথা তুলে ধরা হয়েছে।

হাদিসে পাকে সাহাবায়ে কেরাম
একইভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও ছাহাবীদের অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন। তাঁদের মর্যাদা ও মর্তবার কথা ব্যক্ত করেছেন। এ কথা থেকেই মানুষ তাঁদের মর্যাদা অনুধাবন করতে পারে যে, ইবাদত-বন্দেগী ও তাক্বওয়া-পরহেযগারীতে কেউ যতই উচ্চতায় পৌঁছুক না কেন ছাহাবীগণ যে স্তরে পৌঁছেছিলেন তার ধারে-কাছেও ঘেঁষতে পারবে না। নিচের হাদীসই সে কথা বলছে।
ছাহাবী আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
وفي الصحيحين عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ : ” يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ يَغْزُونَ فِيهِ فِئَامًا مِنَ النَّاسِ ، فَيُقَالُ : هَلْ فِيكُمْ مِنْ صَحْبِ رَسُولِ اللَّهِ ؟ فَيُقَالُ : نَعَمْ . فَيُفْتَحُ لَهُمْ , ثُمَّ يَأْتِي عَلَيْهِمْ زَمَانٍ يَغْزُو فِيهِ فِئَامٌ مِنَ النَّاسِ ، فَيُقَالُ : هَلْ فِيكُمْ مِنْ صَحْبِ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ ؟ فَيُقَالُ : نَعَمْ , فَيُفْتَحُ لَهُمْ , ثُمَّ يَأْتِي عَلَيْهِمْ زَمَانٌ يَغْزُو فِيهِ فِئَامٌ مِنَ النَّاسِ ، فَيُقَالُ : هَلْ فِيكُمْ مِنْ صَحْبِ مَنْ صَاحَبَهُمْ ؟ فَيُقَالُ : نَعَمْ . فَيُفْتَحُ لَهُمْ . ( )
‘লোকদের ওপর এমন এক যুগ আসবে যখন একদল লোক যুদ্ধ করবে, তারা বলবে, তোমাদের মধ্যে কি কেউ আছেন যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গ লাভ করেছেন? সবাই বলবে, হ্যাঁ। তখন তাদের বিজয় দান করা হবে। অতঃপর লোকদের ওপর এমন এক যুগ আসবে যখন একদল লোক যুদ্ধ করবে, তারা বলবে, তোমাদের মধ্যে কি কেউ আছেন যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গলাভকারী কারও ছোহবত পেয়েছেন? সবাই বলবে, জী হ্যাঁ। তখন তাদের বিজয় দান করা হবে। অতঃপর লোকদের ওপর এমন এক যুগ আসবে যখন একদল লোক যুদ্ধ করবে, তারা বলবে, তোমাদের মধ্যে কি কেউ আছেন যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গ লাভকারীর সোহবতপ্রাপ্ত কারও সাহচর্য পেয়েছেন? সবাই বলবে, হ্যাঁ। তখন তাদের বিজয় দান করা হবে।’( )
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ , قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ : ” لا تَسُبُّوا أَصْحَابِي , فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا أَدْرَكَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلا نَصِيفَهُ( )
আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,‘তোমরা আমার সাহাবীদের গালমন্দ করো না। সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ। যদি তোমাদের কেউ উহুদ পরিমাণ স্বর্ণও আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তবে তা তাদের এক মুদ বা তার অর্ধেকরও সমকক্ষ হতে পারবে না।’( )
কোন একজন ছাহাবী যদি একজন মিসকীনকে এক মুদ্দ (সামান্য) পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য দান করে আর আপনি এক ওহোদ পরিমাণ স্বর্ণ দান করেন, তথাপিও আপনি ঐ ছাহাবীর এক মুদ্দ পরিমাণ দানের ধারে কাছেও যেতে পারবেন না। যদিও এটি সম্ভব নয় যে, আমাদের কারো ওহোদ পরিমাণ স্বর্ণ হবে এবং সে তা আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয় করবে।

সহীহ্ হাদীছে এসেছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بن مسعود رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: خَيْرُ النَّاسِ قَرْنِي، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ يَجِيءُ أَقْوَامٌ تَسْبِقُ شَهَادَةُ أَحَدِهِمْ يَمِينَهُ، وَيَمِينُهُ شَهَادَتَهُ ( )
‘আমার যুগের মানুষই সর্বোত্তম মানুষ। অতঃপর তার পরের যুগের মানুষ, অতঃপর তার পরের যুগের মানুষ’( )।
আরেক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
“النُّجُومُ أَمَنَةٌ لِلسَّمَاءِ فَإِذَا ذَهَبَتْ النُّجُومُ أَتَى السَّمَاءَ مَا تُوعَدُ وَأَنَا أَمَنَةٌ لِأَصْحَابِي فَإِذَا ذَهَبْتُ أَتَى أَصْحَابِي مَا يُوعَدُونَ وَأَصْحَابِي أَمَنَةٌ لِأُمَّتِي فَإِذَا ذَهَب أَصْحَابِي أَتَى أُمَّتِي مَا يُوعَدُونَ”. ( )
‘নক্ষত্ররাজি হলো আসমানের জন্য নিরাপত্তাস্বরূপ, তাই যখন তারকারাজি ধ্বংস হয়ে যাবে, আসমানের জন্য যা প্রতিশ্রুত ছিল তা এসে যাবে। একইভাবে আমি আমার সাহাবীদের জন্য নিরাপত্তাস্বরূপ। অতএব আমি যখন চলে যাব তখন আমার সাহাবীদের ওপর তা আসবে যা তাদের ওয়াদা করা হয়েছিল। আর আমার সাহাবীরা আমার উম্মতের জন্য নিরাপত্তাস্বরূপ। যখন আমার সাহাবীরা চলে যাবে তখন আমার উম্মতের ওপর তা আসবে যা তাদের ওয়াদা করা হয়েছিল।’ ( )
حديث أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: “افْتَرَقَتِ الْيَهُودُ عَلَى إِحْدَى أَوْ ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً، وَتَفَرَّقَتِ النَّصَارَى عَلَى إِحْدَى أَوْ ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً، وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِى عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً” ( )
“হাদীছ শরীফে আরো উল্লেখ আছে যে, অতি শীঘ্রই আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে । একটি দল ব্যতীত বাহত্তরটি দলই জাহান্নামে যাবে। তখন ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ বললেন, ইয়া রসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যে একটি দল নাযাতপ্রাপ্ত, সে দল কোন্টি? হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি এবং আমার সাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম’র মত ও পথের উপর যারা কায়েম থাকবে । অর্থাৎ তারাই নাযাত প্রাপ্ত দল । (তিরমিযী শরীফ)
অপর এক হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে :
وحديث معاوية بن أبي سفيان رضي الله عنهما قال: ألا إن رسول الله صلى الله عليه وسلم قام فينا فقال: “أَلاَ إِنَّ مَنْ قَبْلَكُمْ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ افْتَرَقُوا عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ مِلَّةً، وَإِنَّ هَذِهِ الْمِلَّةَ سَتَفْتَرِقُ عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ ، ثِنْتَانِ وَسَبْعُونَ فِي النَّارِ، وَوَاحِدَةٌ فِي الْجَنَّةِ، وَهِي الْجَمَاعَةُ”( )
“হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে, বাহাত্তরটি দল হবে জাহান্নামী, আর একটি দল হবে জান্নাতী । আর সে দলটিই হচ্ছে জামা‘আতে সাহাবা (তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত) । ( )
نِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : ” اللَّهَ اللَّهَ فِي أَصْحَابِي ، لا تَتَّخِذُوهُمْ غَرَضًا مِنْ بَعْدِي ، فَمَنْ أَحَبَّهُمْ فَبِحُبِّي أَحَبَّهُمْ ، وَمَنْ أَبْغَضَهُمْ فَبِبُغْضِي أَبْغَضَهُمْ ، وَمَنْ آذَاهُمْ فَقَدْ آذَانِي ، وَمَنْ آذَانِي فَقَدْ آذَى اللَّهَ ، وَمَنْ آذَى اللَّهَ فَيُوشِكُ أَنْ يَأْخُذَهُ ” .
আবদুল্লাহ ইবন মুগাফফাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,‘আমার সাহাবীদের ব্যাপারে তোমরা আল্লাহকে ভয় করো আল্লাহকে ভয় কর। আমার পরবর্তীকালে তোমরা তাঁদের সমালোচনার নিশানায় পরিণত করো না। কারণ যে তাদের ভালোবাসবে, সে আমার মুহাব্বতেই তাদের ভালোবাসবে। আর যে তাঁদের অপছন্দ করবে, সে আমাকে অপছন্দ করার ফলেই তাদের অপছন্দ করবে। আর যে তাঁদের কষ্ট দেবে সে আমাকেই কষ্ট দেবে। আর যে আমাকে কষ্ট দেবে সে যেন আল্লাহকেই কষ্ট দিল। আর যে আল্লাহকে কষ্ট দেবে অচিরেই আল্লাহ তাকে পাকড়াও করবেন।’( )
উপরের উদ্ধৃতিগুলো থেকে আমরা জানলাম যে, আল্লাহ তা‘আলা সাহাবীদের প্রশংসা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের ওপর তাঁর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। আল্লাহ কর্তৃক তাঁদের স্তুতি ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক তাঁদের ভূয়সী প্রশংসাই প্রমাণ করে যে, তাঁরা হলেন ন্যায়নিষ্ঠ। সর্বোপরি আপন নবীর সঙ্গী ও তাঁর সহযোগী হিসেবে আল্লাহ যাদের ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন তাঁদের তো আর কোনো ন্যায়নিষ্ঠতা প্রমাণের প্রয়োজন নেই। এর চেয়ে বড় আর কোনো সনদ হতে পারে না। এর চেয়ে পূর্ণতার আর কোনো দলীল হতে পারে না। ( )
আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর আরেকটি উক্তি এখানে প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন,
قَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ” مَنْ كَانَ مِنْكُمْ مُتَأَسِّيًا فَلْيَتَأَسَّ بِأَصْحَابِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؛ فَإِنَّهُمْ كَانُوا أَبَرَّ هَذِهِ الأُمَّةِ قُلُوبًا وَأَعْمَقَهَا عِلْمًا وَأَقَلَّهَا تَكَلُّفًا وَأَقْوَمَهَا هَدْيًا وَأَحْسَنَهَا حَالا ، قَوْمًا اخْتَارَهُمُ اللَّهُ لِصُحْبَةِ نَبِيِّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَاعْرِفُوا لَهُمْ فَضْلَهُمْ وَاتَّبِعُوهُمْ فِي آثَارِهِمْ ؛ فَإِنَّهُمْ كَانُوا عَلَى الْهُدَى الْمُسْتَقِيمِ. “( )
“তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অনুসরণ করতে চায় তবে সে যেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণেরই অনুসরণ করে। কারণ, তাঁরাই ছিলেন এ উম্মতের মধ্যে আত্মার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি নেককার, ইলমের দিক থেকে গভীরতর, লৌকিকতার দিক থেকে সল্পতম, আদর্শের দিক থেকে সঠিকতম, অবস্থার দিক থেকে শুদ্ধতম। তাঁরা এমন সম্প্রদায় আল্লাহ যাদেরকে আপন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সংস্পর্শধন্য হবার জন্য এবং তাঁর দ্বীন কায়েমের উদ্দেশ্যে বাছাই করেছেন। অতএব তোমরা তাঁদের মর্যাদা অনুধাবন করো এবং তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করো। কারণ, তাঁরা ছিলেন সীরাতে মুস্তাকীমের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ( )

সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর
সমালোচনা হারাম
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা’য়ালার জন্য যিনি রব্বুল আলামীন। দুরুদ ও সালাম রসূলুল্লাহ্ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি যিনি রহমাতুল্লিল আলামীন, তাঁর পরিবারবর্গ, সাহাবায়ে কিরাম এবং সালেহীন তথা সৎকর্মপরায়নগণের প্রতি, যাঁরা হলেন হেদায়তের পূর্ণশিখা।
হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমের প্রতি মুহব্বত রাখা, তাঁদের প্রতি সুধারণা পোষণ করা হচ্ছে ঈমানের অঙ্গ। তাঁদের ইত্তেবা বা অনুসরণ করা ওয়াজিব। আর তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা, তাঁদেরকে কষ্ট দেয়া, সমালোচনা করা, নাকিছ বা অপূর্ণ বলা সম্পূর্ণ গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা। এটাই আহ্লে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদা বা বিশ্বাস। এর বিপরীত আক্বীদা পোষণ করা বৃহত্তর মুসলিম ঐক্যের বিপরীতে অবস্থান গ্রহনের নামান্তর।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের একটি মূলনীতি হচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবাদের ব্যাপারে তাদের অন্তর এবং বাক-যন্ত্র পুতঃপবিত্র ও সংযত থাকবে, আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণীর প্রতিও তারা আমল করবে, রাফেযী- খারেজীদের ভ্রষ্ট তরীকা থেকে তারা মুক্ত থাকবে। কিতাব ও সুন্নায় সাহাবায়ে কিরামের যে ফযিলত বর্ণনা করা হয়েছে, আহলে সুন্নাত তা মেনে নেয় এবং বিশ্বাস করে যে, তারাই যুগের সর্বোত্তম প্রজন্ম।

যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন:
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بن مسعود رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: خَيْرُ النَّاسِ قَرْنِي، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ يَجِيءُ أَقْوَامٌ تَسْبِقُ شَهَادَةُ أَحَدِهِمْ يَمِينَهُ، وَيَمِينُهُ شَهَادَتَهُ ( )
আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার যুগের লোকেরাই সর্বোত্তম ব্যক্তি, অতঃপর যারা তাদের নিকটবর্তী। অতঃপর যারা তাদের নিকটবর্তী এরপরে এমন সব ব্যক্তি আসবে যারা কসম করার আগেই সাক্ষ্য দিবে, আবার সাক্ষ্য দেয়ার আগে কসম করে বসবে। ( )।
আল্লাহ তা‘আলা সাহাবীদের প্রশংসা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের ওপর তাঁর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। আল্লাহ কর্তৃক তাঁদের স্তুতি ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক তাঁদের ভূয়সী প্রশংসাই প্রমাণ করে যে তাঁরা হলেন ন্যায়নিষ্ঠ, তাঁরা ছিলেন ভূ-পৃষ্ঠের শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তির শ্রেষ্ঠতম সহচর। সর্বোপরি আপন নবীর সঙ্গী ও তাঁর সহযোগী হিসেবে আল্লাহ যাদের ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন তাঁদের তো আর কোনো ন্যায়নিষ্ঠতা প্রমাণের প্রয়োজন নেই। এর চেয়ে বড় আর কোনো সনদ হতে পারে না। এর চেয়ে পূর্ণতার আর কোনো দলীল হতে পারে না।( )
তাঁদের যাবতীয় অপ্রকাশ্য বিষয় সম্পর্কে সুপরিজ্ঞাত আল্লাহ কর্তৃক ন্যায়নিষ্ঠতার ঘোষণার পর আর কোনো সৃষ্টি কর্তৃক তাঁদেরকে ন্যায়নিষ্ঠ ঘোষণার প্রয়োজন নেই। আর তাঁদের মর্যাদা এমনই প্রশ্নাতীত যে তাঁদের মর্তবা সম্পর্কে যদি আয়াতগুলো নাযিল না করতেন আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপরোল্লিখিত হাদীসগুলো উচ্চারণ না করতেন, তথাপি তাঁদের হিজরত, জিহাদ, নুছরত, পদ ও প্রতিপত্তি ত্যাগ, পিতা ও পুত্রের বিরুদ্ধে লড়াই, দ্বীনের জন্য অবর্ণনীয় কল্যাণকামিতা এবং ঈমান ও ইয়াকিনের দৃঢ়তা তাঁদের ন্যায়নিষ্ঠতা থেকে বিচ্যুত হওয়া ঠেকাত, তাঁদের পবিত্রতা ও মহানুভবতার পক্ষে সাক্ষী হত।
মোদ্দাকথা তাঁরা তো সকল সত্যায়নকারী ও সাফাইকারীর চেয়েই শ্রেষ্ঠ যারা তাঁদের পর এসেছে। এটাই উল্লেখযোগ্য আলেম এবং ফিকহবিদের মত। ( )
হযরত আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর একটি উক্তি এখানে প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন,
عبد الله بن مسعود رضي الله عنه : ” مَن كانَ مُسْتَنًّا ، فَلْيَسْتَنَّ بمن قد ماتَ ، فإنَّ الحيَّ لا تُؤمَنُ عليه الفِتْنَةُ ، أولئك أصحابُ محمد صلى الله عليه وسلم، كانوا أفضلَ هذه الأمة : أبرَّها قلوبًا، وأعمقَها علمًا، وأقلَّها تكلُّفًا، اختارهم الله لصحبة نبيِّه ، ولإقامة دِينه ، فاعرِفوا لهم فضلَهم، واتبعُوهم على أثرهم، وتمسَّكوا بما استَطَعْتُم من أخلاقِهم وسيَرِهم ، فإنهم كانوا على الهُدَى المستقيم “.
“তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অনুসরণ করতে চায় তবে সে যেন হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণেরই অনুসরণ করে। কারণ, তাঁরাই ছিলেন এ উম্মতের মধ্যে আত্মার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি নেককার, ইলমের দিক থেকে গভীরতর, লৌকিকতার দিক থেকে স্বল্পতম, আদর্শের দিক থেকে সঠিকতম, অবস্থার দিক থেকে শুদ্ধতম। তাঁরা এমন সম্প্রদায় আল্লাহ যাদেরকে আপন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সংস্পর্শধন্য হবার জন্য এবং তাঁর দ্বীন কায়েমের উদ্দেশ্যে বাছাই করে নিয়েছেন। অতএব তোমরা তাঁদের মর্যাদা অনুধাবন করো এবং তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করো। কারণ, তাঁরা ছিলেন সীরাতে মুস্তাকীমের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ( )
‘তাঁরা ইলম, ইজতিহাদ, তাকওয়া ও জ্ঞান-বুদ্ধিতে আমাদের ওপরে। তাঁরা আমাদের চেয়ে উত্তম এমন বিষয়ে যে ব্যাপারে ইলম জানা গেছে কিংবা যা ইস্তিমবাত বা উদ্ভাবন করা হয়েছে। তাঁদের রায়গুলো আমাদের কাছে প্রশংসনীয়। আমাদের নিজেদের ব্যাপারেই আমাদের সিদ্ধান্তের চেয়ে তাঁরাই অগ্রাধিকার পাবার হকদার।’ ( )
আর এ সকল ফযীলতের কারনে ছাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম সম্পর্কে বিখ্যাত ফক্বীহ সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের সমালোচনা করা, বিদ্বেষ করা কুফরী: আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ করেন:
إِنَّ الَّذِينَ يُؤْذُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُّهِينًا
“নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ পাক ও তার রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কষ্ট দেয়, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের প্রতি আল্লাহ পাকের অভিসম্পাত এবং তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।” [ সূরা আহযাব ৫৭ ]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِيْ إِيَاسٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ الأَعْمَشِ قَالَ سَمِعْتُ ذَكْوَانَ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: لَا تَسُبُّوْا أَصْحَابِيْ فَلَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا بَلَغَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلَا نَصِيْفَهُ.
“তোমরা আমার সাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমকে গালি দিও না। কেননা যদি তোমাদের কেউ উহুদ পাহাড় পরিমান স্বর্ণ আল্লাহ পাকের রাস্তায় দান করে, তবুও সাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের এক মুদ (১৪ ছটাক) বা অর্ধ মদ (৭ ছটাক) সমপরিমান গম দান করার ফযীলতের সমপরিমান ফযীলতও অর্জন করতে পারবে না।” ( )
সমগ্র দুনিয়ার সকল মানুষের নেক আমল এক করলেও সাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের কয়েক মুহূর্তের আমলের সমান হবে না। হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন:
لا تَسُبُّوا أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ فَلَمَقَامُ أَحَدِهِمْ سَاعَةً خَيْرٌ مِنْ عَمَلِ أَحَدِكُمْ عُمْرَهُ
‘তোমরা হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের গালাগাল করো না। কেননা তাঁদের এক মুহূর্তের (ইবাদতের) মর্যাদা তোমাদের প্রত্যেকের জীবনের আমলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।’ ( )
এ ব্যাপারে ইবন হাযম রাহিমাহুল্লাহর একটি মূল্যবান বাক্য রয়েছে, তিনি বলেন, ‘আমাদের কাউকে যদি যুগ-যুগান্তর ব্যাপ্ত সুদীর্ঘ হায়াত প্রদান করা হয় আর সে তাতে অব্যাহতভাবে ইবাদত করে যায়, তবুও তা ওই ব্যক্তির সমকক্ষ হতে পারবে না যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক সেকেন্ড বা তার চেয়ে বেশি সময়ের জন্য দেখেছেন।’ ( )
ইবন মুগাফফাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ الْمُزَنِيِّ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” اللَّهَ اللَّهَ فِي أَصْحَابِي، اللَّهَ اللَّهَ فِي أَصْحَابِي، لَا تَتَّخِذُوهُمْ غَرَضًا بَعْدِي، فَمَنْ أَحَبَّهُمْ فَبِحُبِّي أَحَبَّهُمْ، وَمَنْ أَبْغَضَهُمْ، فَبِبُغْضِي أَبْغَضَهُمْ، وَمَنْ آذَاهُمْ فَقَدْ آذَانِي، وَمَنْ آذَانِي فَقَدْ آذَى اللَّهَ، وَمَنْ آذَى اللَّهَ فَيُوشِكُ أَنْ يَأْخُذَهُ ” ( )
‘আমার সাহাবীদের ব্যাপারে তোমরা আল্লাহকে ভয়, করো আল্লাহকে ভয় কর। আমার পরবর্তীকালে তোমরা তাঁদের সমালোচনার নিশানায় পরিণত করো না। কারণ, যে তাদের ভালোবাসবে সে আমার মুহাব্বতেই তাদের ভালোবাসবে। আর যে তাঁদের অপছন্দ করবে সে আমাকে অপছন্দ করার ফলেই তাঁদের অপছন্দ করবে। আর যে তাঁদের কষ্ট দেবে সে আমাকেই কষ্ট দেবে। আর যে আমাকে কষ্ট দেবে সে যেন আল্লাহকেই কষ্ট দিল। আর যে আল্লাহকে কষ্ট দেবে অচিরেই আল্লাহ তাকে পাকড়াও করবেন।’ ( )
সুতরাং উক্ত দলীল থেকে বোঝা গেল, যারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমদের প্রতি বিন্দু মাত্র সমালোচনা করবে, উনাদের বিরুদ্ধে স্বজন প্রীতির অপবাদ দিবে, তারা নিশ্চিত কাফির হয়ে জাহান্নামে যাবে। আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেন: لِيَغِيظَ بِهِمُ الْكُفَّارَ “একমাত্র কাফিররাই তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ পোষন করে। (সূরা ফাতাহ ২৯ )
এ আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় হাদীস শরীফে বর্নিত আছে:
قال الإمامُ مالك ـ رحمه الله ـ: ্রمن أصبحَ في قلبِه غَيْظٌ عَلى أحَدٍ مِن أصْحَابِ رَسُولِ الله – صلى الله عليه وسلم – فقد أصَابَتْه الآية ( )
ইমাম মালেক বলেন, যে ব্যক্তি হযরত সাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের প্রতি বিদ্বেষ পোষন করবে, সে এ আয়াতের হুকুমের আওতায় পড়বে।”( )
হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে:
أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ- عَنْ النَّبِيِّ -صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- قَالَ: آيَةُ الْإِيمَانِ حُبُّ الْأَنْصَارِ، وَآيَةُ النِّفَاقِ بُغْضُ الْأَنْصَارِ( )
“হযরত সাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের প্রতি বিশেষ করে আনসারগনের প্রতি মুহব্বত ঈমান, আর উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষন করা নিফাক তথা কুফরী।”( )

ইমাম আবূ যুর‘আ রাহিমাহুল্লাহ বলেন:
قال الإمام أبو زرعة العراقي أحد مشايخ مسلم: ( ):إذا رأيت الرَّجلَ يَنْتَقِصُ أحدًا منْ أصحابِ رسولِ الله -صلى الله عليه وسلَّم- فاعْلَمْ أنَّه زِنْدِيقٌ؛ وذلك أنَّ الرَّسولَ -صلى الله عليه وسلَّم- عندنا حقٌّ، والقرآنُ حقٌّ، وإنَّما أدَّى إلينا هذا القرآنَ والسُّنَنَ أصحابُ رسولِ الله -صلى الله عليه وسلَّم-، وإنَّما يريدون أن يُجَرِّحُوا شهودَنا لِيُبْطِلُوا الكتابَ والسُّنَّةَ، والجَرْحُ بهم أَوْلَى، وهم زَنادِقَة. ( )
‘যখন তুমি কোনো ব্যক্তিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণের কোনো একজনের মর্যাদাহানী করতে দেখবে তখন বুঝে নেবে যে সে একজন ধর্মদ্রোহী নাস্তিক। আর তা এ কারণে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে সত্য, কুরআন সত্য। আর এ কুরআন ও সুন্নাহ আমাদের কাছে পৌঁছিয়েছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবায়ে কিরাম। নিশ্চয় তারা চায় আমাদের প্রমাণগুলোয় আঘাত করতে। যাতে তারা কিতাব ও সন্নাহকে বাতিল করতে পারে। এরা হলো ধর্মদ্রোহী- নাস্তিক। এদেরকে আঘাত করাই শ্রেয়।’ ( )
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছাল শরীফের পর একটা মুরতাদ দল বের হবে যারা কিনা সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাদের প্রতি বিদ্বেষ করবে। এদের সম্পর্কে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পূর্বেই সতর্ক করে ভবিষ্যতবাণী করেছেন:
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِنَّ اللَّهَ اخْتَارَنِي، وَاخْتَارَ أَصْحَابِي، وَإِنَّهُ سَيَجِيءُ قَوْمٌ يَنْتَقِصُونَهُمْ، وَيُعِيبُونَهُمْ، وَيَسُبُّونَهُمْ، فَلا تُجَالِسُوهُمْ، وَلا تُؤَاكِلُوهُمْ، وَلا تُشَارِبُوهُمْ، وَلا تُصَلُّوا مَعَهُمْ، وَلا تُصَلُّوا عَلَيْهِمْ “. ( )
“অতি শীঘ্রই একটি দল বের হবে, যারা আমার সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগনকে গালি দিবে, উনাদের নাকিছ বা অপূর্ণ বলবে। সাবধান ! সাবধান ! তোমরা তাদের মজলিসে বসবে না, তাদের সাথে পানাহার করবে না, তাদের সাথে বিয়ে-শাদীর ব্যবস্থা করবে না।
অন্য রেওয়াতে আছে, তাদের পেছনে নামাজ পড়বে না এবং তাদের জন্য দোয়া করবে না।”( )

আরো ইরশাদ হয়েছে:
عَنْ نَافِعٍ ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِذَا رَأَيْتُمُ الَّذِينَ يَسُبُّونَ أَصْحَابِي فَقُولُوا: لَعْنَةُ اللَّهِ عَلَى شَرِّكُمْ ” ( )
“যখন তোমরা কাউকে আমার সাহাবায়ে কিরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগনকে গালি দিতে দেখবে, তখন তোমরা বলো, এ নিকৃষ্ট কাজের জন্য তোমাদের প্রতি আল্লাহ পাকের লা’নত বর্ষিত হোক।”( )
হযরত আনাস ইবন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” مَنْ سَبَّ أَصْحَابِي فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللَّهِ، وَالْمَلائِكَةِ، وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ، لا يَقْبَلُ اللَّهُ مِنْهُ صَرْفًا وَلا عَدْلا ” ، قَالَ : الْعَدْلُ: الْفَرَائِضُ , وَالصَّرْفُ: التَّطَوُّعُ . ( )
‘যে ব্যক্তি আমার সাহাবীকে গাল দেবে তার ওপর আল্লাহ, ফেরেশতা সকল মানুষের অভিশাপ। আল্লাহ তার নফল বা ফরয কিছুই কবুল করবেন না।’( )
হযরত আতা ইবন আবী রাবাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে আমার সাহাবীদের ব্যাপারে আমাকে সুরক্ষা দেবে, কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য সুরক্ষাকারী হব। আর ‘যে আমার সাহাবীকে গাল দেবে তার ওপর আল্লাহর অভিশাপ।’ ( )
বিখ্যাত সিরাত গ্রন্থ “শিফা”তে বর্ণিত আছে: إِذَا ذُكِرَ أَصْحَابِي فَأَمْسِكُوا ،( )
“আমার সাহাবীদের আলোচনাকালে তোমরা সংযত থেকো।” ( )
মহান আল্লাহ ঈমানদারগণকে সাহাবায়ে কেরাম -এর জন্য দো‘আ প্রার্থনার আদেশ করেছেন এবং সত্যিকার মুমিনগণ তা বাস্তবায়নও করেছেন। কিন্তু কতিপয় লোক কুরআন ও হাদীস নির্দেশিত এই পথ প্রত্যাখ্যান করে চরম ধৃষ্টতার পরিচয় দিয়েছে। ক্ষমা প্রার্থনার পরিবর্তে তারা তাঁদেরকে দিয়েছে গালি এবং প্রশংসার পরিবর্তে করেছে নিন্দা।
আমাদের আলোচনার এটিই শেষ বিষয়। সাহাবীগণের মধ্যে যেসব মতানৈক্য হয়েছে, তদ্বিষয়ে আমাদের করণীয় কি? সালাফে ছালেহীনের এক ব্যক্তিকে যখন এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তখন তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, আল্লাহ তা থেকে আমাদের তরবারীকে মুক্ত রেখেছেন। অতএব, আমরা তা থেকে আমাদের যবানকেও মুক্ত রাখব’।( )
আরেকজনকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি নিম্নোক্ত আয়াত তেলাওয়াত করেন: تِلْكَ أُمَّةٌ قَدْ خَلَتْ ۖ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَلَكُم مَّا كَسَبْتُمْ ۖ وَلَا تُسْأَلُونَ عَمَّا كَانُوا يَعْمَلُونَ ‘তারা ছিল এক সম্প্রদায়, যারা গত হয়ে গেছে। তারা যা করেছে, তা তাদেরই জন্য। তারা কি করত, সে সম্পর্কে তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে না’ ( )
সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে আমাদের অন্তঃকরণকে নিষ্কলুষ রাখতে হবে। তাঁদের প্রতি হৃদয়ে কোন হিংসা-বিদ্বেষ বা ঘৃণা থাকবে না; থাকবে না কোন প্রকার শত্রুতা। বরং হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান পাবে শুধু ভালবাসা, অনুগ্রহ আর সহানুভূতি।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র মাতা-পিতার ও তাঁদের ঈমান প্রসঙ্গ
প্রতিটি মুসলমান তো বটেই প্রতিটি মানুষেরই জানা উচিত বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বংশ পরিচয় কী?। আমাদের উচিত হচ্ছে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে সঠিক পরিচিতি অর্জন করা। তিনি মানব ও জ্বিন জাতিসহ সকল সৃষ্টির মধ্য হতে শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। তাঁকে সৃষ্টি করা না হলে পৃথিবীর কোন কিছু সৃষ্টি করা হত না। তাঁর নুর হতে পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি করা হয়েছে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বপ্রথম সৃষ্টি। তাঁর পূর্বে আল্লাহ তায়ালা কোন কিছু সৃষ্টি করেননি। হযরত আদম আলাহিস সালামও তাঁকে ওসিলা করে দোয়া করেছেন। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ كُنْتُ نَبِيًّا وَآدَمُ بَيْنَ الْمَاءِ وَالطِّينِ আমি তখনও নবী ছিলাম যখন আদম পানি ও মাটির মধ্যে মিশ্রিত ছিলেন। ( )

عن ميسرة الفجرِ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَتَى كُتِبْتَ نَبِيًّا؟ قَالَ: ্রوآدَمُ بَيْنَ الرُّوحِ وَالْجَسَدِ( )
শুধু আদম আলাহিস সালাম নন; বরং সকল নবী-রাসূল তাঁকে ওসিলা করে দোয়া করেছেন ও সমস্যার সমাধান পেয়েছেন।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র বংশ সারা দুনিয়ার সব বংশাবলী থেকে অতি পবিত্র ও সম্ভ্রান্ত, সারা বিশ্বের সেরা ও উত্তম বংশ। তা এমনি একটি বাস্তব সত্য কথা যে, আপন পর সবাই অকপটে তা স্বীকার করত। তাঁর চরম দুশমন ও মক্কার কাফেরকুলও তা অমান্য করতে পারেনি। রোমের বাদশাহর সামনে হযরত আবু সুফিয়ান রাদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আনহু কাফের থাকাবস্থায় তা স্বীকার করেছিলেন ও বলেছিলেন,
قَالَ كَيْفَ نَسَبُهُ فِيكُمْ؟، قُلْتُ هُوَ فِينَا ذُو نَسَبٍ
“তিনি আমাদের মধ্যে উচ্চ বংশীয় ব্যক্তি। বংশ গৌরব ও আভিজাত্যে কেউ তাঁর তুল্য নয়।
তখন রোম সম্রাট হিরাকল বলেছিলেনঃ
فَقَالَ لِلتَّرْجُمَانِ قُلْ لَهُ سَأَلْتُكَ عَنْ نَسَبِهِ فَذَكَرْتَ أَنَّهُ فِيكُمْ ذُو نَسَبٍ فَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِي نَسَبِ قَوْمِهَا. ( )
“তেমনি নবী রসূলগণ সর্বোচ্চ বংশ ও গোত্রে প্রেরীত হয়ে থাকেন। “
অথচ তিনি তখন চেয়েছিলেন যে, যদি কোন সুযোগ-সুবিধা হয়ে যায়, তাহলে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর কোন প্রকার দোষারোপ করবেন।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও বলেছেনঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ , قَالَ : ” بُعِثْتُ مِنْ خَيْرِ قُرُونِ بَنِي آدَمَ قَرْنًا فَقَرْنًا حَتَّى كُنْتُ فِي الْقَرْنِ الَّذِي كُنْتُ فِيهِ( ) ” .
“আমি বনী আদমের সর্বোত্তম বংশে প্রেরীত হয়েছি। আমার যুগই সর্বশেষ্ঠ যুগ। “( )
আল্লাহ তাআলা তাঁর সর্বোচ্চ বংশো™ু¢ত হওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেনঃ اللَّهُ أَعْلَمُ حَيْثُ يَجْعَلُ رِسَالَتَهُ ۗ “আল্লাহ তাঁর রিসালত বা পয়গামের দায়িত্ব কাকে দিচ্ছেন সে ব্যাপারে অনেক জ্ঞাত। “ (সূরা আন আমঃ ১২৪)
হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা নিজেও বহুবার আপন জবানে পাকে আপন বংশপরিচয় দিয়ে ইরশাদ করেছেন:
خَطَبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ : ” أَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ بْنِ هَاشِمِ بْنِ عَبْدِ مَنَافِ بْنِ قُصَيِّ بْنِ كِلابِ بْنِ مُرَّةَ بْنِ كَعْبِ بْنِ لُؤَيِّ بْنِ غَالِبِ بْنِ فِهْرِ بْنِ مَالِكِ بْنِ النَّضْرِ بْنِ كِنَانَةَ بْنِ خُزَيْمَةَ بْنِ مُدْرَكَةَ بْنِ إِلْيَاسَ بْنِ مُضَرَ بْنِ نِزَارٍ ، وَمَا افْتَرَقَ النَّاسُ فِرْقَتَيْنِ إِلا جَعَلَنِي اللَّهُ فِي الْخَيْرِ مِنْهُمَا حَتَّى خَرَجْتُ مِنْ بَيْنِ أَبَوَيْنِ ، وَلَمْ يُصِبْنِي مِنْ زَعْمِ الْجَاهِلِيَّةِ ، وَخَرَجْتُ مِنْ نَكَاحٍ وَلَمْ أَخْرُجْ مِنْ سِفَاحٍ مِنْ لَدُنَّ آدَمَ حَتَّى انْتَهَيْتُ إِلَى أَبِي وَأُمِّي ، وَأَنَا خَيْرُكُمْ نَفْسًا وَخَيْرُكُمْ أَبًا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ( ) ”
“আমি হলাম মুহাম্মদ ইবনে আব্দিল্লাহ ইবনে আব্দিল মুত্তালিব ইবনে হাশিম ইবনে আবদে মানাফ“। অনুরুপভাবে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা কখনো কখনো ‘আদনান’ পর্যন্ত নিজের বংশ সূত্র বর্ণনা করেছেন।
হযরত আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব রাদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা বলেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার কোন কারণে মিম্বরে দাঁড়িয়ে সমবেত লোকদেরকে জিজ্ঞেস করলেন-
عَنِ الْمُطَّلِبِ بْنِ أَبِي وَدَاعَةَ ، قَالَ : قَالَ الْعَبَّاسُ : بَلَغَهُ صلى الله عليه وسلم بَعْضُ مَا يَقُولُ النَّاسُ ، قَالَ : فَصَعِدَ الْمِنْبَرَ ، فَقَالَ : مَنْ أَنَا ؟ قَالُوا : أَنْتَ رَسُولُ اللهِ ، فَقَالَ : أَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ ، إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ الْخَلْقَ فَجَعَلَنِي فِي خَيْرِ خَلْقِهِ ، وَجَعَلَهُمْ فِرْقَتَيْنِ ، فَجَعَلَنِي فِي خَيْرِ فِرْقَةٍ ، وَخَلَقَ الْقَبَائِلَ ، فَجَعَلَنِي فِي خَيْرِ قَبِيلَةٍ ، وَجَعَلَهُمْ بُيُوتًا ، فَجَعَلَنِي فِي خَيْرِهِمْ بَيْتًا ، فَأَنَا خَيْرُكُمْ بَيْتًا وَخَيْرُكُمْ نَفْسًا.
عَنْ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ بْنِ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ قَالَ : أَتَى نَاسٌ مِنَ الأَنْصَارِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم، فَقَالُوا : إِنَّا نَسْمَعُ مِنْ قَوْمِكَ حَتَّى يَقُولَ الْقَائِلُ مِنْهُمْ : إِنَّمَا مِثْلُ مُحَمَّدٍ مِثْلُ نَخْلَةٍ نَبَتَتْ فِي كِبَا – قَالَ حُسَيْنٌ : الْكِبَا : الْكُنَاسَةُ – . فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُّهَا النَّاسُ ، مَنْ أَنَا ؟ . قَالُوا : أَنْتَ رَسُولُ اللهِ . قَالَ : أَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ – قَالَ: فَمَا سَمِعْنَاهُ قَطُّ يَنْتَمِي قَبْلَهَا – أَلاَ إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ خَلْقَهُ ، فَجَعَلَنِي مِنْ خَيْرِ خَلْقِهِ ، ثُمَّ فَرَّقَهُمْ فِرْقَتَيْنِ فَجَعَلَنِي مِنْ خَيْرِ الْفِرْقَتَيْنِ ، ثُمَّ جَعَلَهُمْ قَبَائِلَ فَجَعَلَنِي مِنْ خَيْرِهِمْ قَبِيلَةً ، ثُمَّ جَعَلَهُمْ بُيُوتًا ، فَجَعَلَنِي مِنْ خَيْرِهِمْ بَيْتًا ، وَأَنَا خَيْرُكُمْ بَيْتًا وَخَيْرُكُمْ نَفْسًا. ( )
আমি কে? সাহাবীগণ বললেন- আপনি আল্লাহর রাসূল, আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তখন তিনি বললেন- আমি আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুত্তালিবের ছেলে মুহাম্মদ। আল্লাহ তাআলা তামাম মাখলূক সৃষ্টি করে আমাকে সর্বোত্তম সৃষ্টির অন্তর্ভূক্ত করেছেন অর্থাৎ মানুষ বানিয়েছেন। এরপর তাদেরকে দু’ভাগে আরব ও অনারবে বিভক্ত করে আমাকে উত্তম ভাগে আরবে রেখেছেন এবং আমাকে তাদের মধ্যে সর্বোত্তম গোত্রে পাঠিয়েছেন। এরপর সে গোত্রকে বিভিন্ন পরিবারে বিভক্ত করেছেন এবং আমাকে সর্বোত্তম পরিবারে প্রেরণ করেছেন। সুতরাং আমি ব্যক্তি ও বংশ সর্বদিক থেকে তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম। ( )
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهَا ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : ” قَالَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ : قَلَّبْتُ مَشَارِقَ الْأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا فَلَمْ أَجِدْ رَجُلًا أَفْضَلَ مِنْ مُحَمَّدٍ ، وَقَلَّبْتُ مَشَارِقَ الْأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا فَلَمْ أَجِدْ بَيْتًا أَفْضَلَ مِنْ بَنِي هَاشِمٍ( ) ”
হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম স্বয়ং বর্ণনা করেছেন, আমি সমগ্র জাহান তদন্ত করে দেখলাম, আমি কোথাও হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা অপেক্ষা উত্তম পুরুষ দেখিনি, তাঁর বংশ ও গোত্র অপেক্ষা উত্তম কোন বংশ বা গোত্র আমার নজরে পড়েনি, আর বনূ হাশেম অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ কোন গোত্রই আমি দেখিনি।( )
হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম যেই বনূ হাশেম গোত্র সম্পর্কে “সেটাই সর্বোচ্চ বংশ ও গোত্র“ বলে মন্তব্য করেছেন, বাস্তবতাও যে বংশের পক্ষে সাক্ষ্য দেয়। সেই উচ্চতর বংশেই আমাদের আক্বা ও মাওলা বিশ্বকূল সরদার হুযুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বেলাদত শরীফ হয়েছে।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ , قَالَ : ” بُعِثْتُ مِنْ خَيْرِ قُرُونِ بَنِي آدَمَ قَرْنًا فَقَرْنًا حَتَّى كُنْتُ فِي الْقَرْنِ الَّذِي كُنْتُ فِيهِ( ) ” .
“যুগে যুগে মানব সমাজের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বংশ পরস্পরায় আমি প্রেরিত হয়েছি। অবশেষে যে যুগের মানব বংশে আমি এসেছি তাও শ্রেষ্ঠ।”

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ:
لم يلتق أبواي قط على سفاح، لم يزل الله ينقلني من الأصلاب الطيبة إلى الأرحام الطاهرة، مصفى مهذبًا، لا تتشعب شعبتان إلا كنت في خيرهما”.( )
“আমার পিতা ও মাতাগণ কখনো যিনা বা ব্যভিচারে লিপ্ত হননি। সর্বদা মহান আল্লাহ পাক আমাকে পবিত্র পৃষ্ঠ মুবারক হতে পবিত্রা রেহেম শরীফে পবিত্রভাবে স্থানান্তরিত করেন। যখন দু’টি শাখা বের হতো অর্থাৎ দু’টি সন্তান জন্ম নিত, তখন আমি দু’টি শাখার মধ্যে যে শাখাটি উত্তম বা দু’টি সন্তানের মধ্যে যে সন্তানটি উত্তম তার পৃষ্ঠে বা রেহেম স্থান নিতাম।”
عن واثلة بن الأسقع – رضي الله عنه – قال: قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم -: ” قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ اصْطَفَى كِنَانَةَ مِنْ وَلَدِ إِسْمَاعِيلَ ، وَاصْطَفَى مِنْ كِنَانَةَ قُرَيْشًا ، وَاصْطَفَى مِنْ قُرَيْشٍ بَنِي هَاشِمٍ ، وَاصْطَفَانِي مِنْ بَنِي هَاشِمٍ ” ( )
হযরত রাসূলে মাকবুল সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ ফরমান, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ইসমাঈল আলায়হিস সালামের সন্তানদের মধ্যে বনী কেনানাকে পছন্দ করেছেন। আর বনী কেনানা থেকে কুরাইশকে, আর কুরাইশ থেকে বনী হাশিমকে, আর বনী হাশিম থেকে আমাকে পছন্দ করেছেন।”

ইবনে সাদের এক মুরসাল বর্ণনায় এতটুকু অতিরিক্ত রয়েছে যে, “বনী হাশিম থেকে আব্দুল মুত্তালিবকে পছন্দ করেছেন।” ( )
হযরত আদম আলাহিস সালাম থেকে শুরু করে রসূল কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাতা পিতা পর্যন্ত নারী পুরুষের যতগুলি স্তর রয়েছে প্রত্যেক স্তরের প্রতিটি নারী ও পুরুষ সৎ ও পবিত্র ছিলেন। কেউ কখনো ব্যবিচারে লিপ্ত হননি।
রসূল কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
عَنْ جعفر ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” خَرَجْتُ مِنْ نِكَاحٍ ، وَلَمْ أَخْرُجْ مِنْ سِفَاحٍ ، مِنْ لَدُنْ آدَمَ لَمْ يُصِبْنِي سِفَاحُ الْجَاهِلِيَّةِ ” . ( )
“আমি বিবাহের মাধ্যমে জন্ম গ্রহন করেছি, ব্যভিচারের মাধ্যমে নয়। হযরত আদম আলাহিস সালাম থেকে শুরু করে আমার পিতা মাতা পর্যন্ত কোন নারী পুরুষ ব্যভিচারে লিপ্ত হননি। আর জাহেলী যুগের ব্যভিচার আমাকে চুয়েঁও নি।”( )
হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,“আমি সর্বদা পবিত্র পৃষ্ঠ মুবারক হতে পবিত্র রেহেম শরীফে স্থানান্তরিত হয়েছি। আমার পূর্ব পুরুষগণের মধ্যে হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম পর্যন্ত কোন পুরুষ বা মহিলা কেউই কাফির ছিলেন না।”
হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমার পূর্ব পুরুষগণের কোন পুরুষ বা মহিলা কেউই চারিত্রিক দোষে দোষী ছিলেন না।” প্রতীয়মান হল যে,উল্লেখিত বংশগুলো পৃথিবীর অন্যান্য সকল বংশ অপেক্ষা উত্তম ও সম্মানিত।

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র বংশ তালিকা

রসূল কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র বংশধারা নিম্নরূপঃ হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইবনু আব্দিল্লাহ, ইবনু আব্দিল মুত্তালিব, ইবনু হাশিম, ইবনু আব্দি মানাফ, ইবনু কুসাই, ইবনু কিলাব, ইবনু মুররাহ, ইবনু কাআ’ব, ইবনু লুওয়াই, ইবনু গালিব, ইবনু ফেহের (কুরাইশ), ইবনু মালিক, ইবনু নযর, ইবনু কিনানা, ইবনু খুযাইমাহ, ইবনু মুদরিকাহ, ইবনু ইলিয়াস, ইবনু মুদ্বার, ইবনু নাযার, ইবনু মাআ’দ, ইবনু আদনান।”এই পর্যন্ত বংশ ধারা উম্মতের ঐক্যমতে প্রমাণিত এবং এখান থেকে আদম আলাইহিস সালাম পর্যন্ত বংশ তালিকায় মতানৈক্য থাকায় তার বিবরণ পরিত্যাগ করা হল।

সম্মানিত মাতার পক্ষ থেকে বংশ তালিকা নিম্নরূপ
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবনে আমিনা বিনতে ওয়াহাব ইবনে আব্দে মানাফ ইবনে যুহরা ইবনে কিলাব। এ দ্বারা বুঝা যায় যে, কিলাব ইবনে মুররা পর্যন্ত মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পিতা-মাতার বংশীয় ধারা একসাথে মিলিত হয়ে যায়।
হযরত আদম আলাইহিস সালামের বিছাল শরীফের পূর্বে নূরে মুহম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাহক তাঁর পুত্র-সন্তান ও পরবর্তী নবী-রসূল হযরত শীশ আলাইহিস সালামকে নছীহত করতে গিয়ে বলেছিলেন, “যেন (হযরত শীশ আলাইহিস সালাম এই নূরের পরবর্তী বাহককে নছীহত করেন) এই নূর মুবারককে পবিত্র নারী ব্যতীত অন্য কোন নারীর নিকট নিবেদন না করেন।”
আদম আলাইহিস্ সালাম আপন পুত্র হযরত শীস আলাইহিস্ সালামকে লক্ষ্য করে বলেন:
واخرج ابْن عَسَاكِر عَن كَعْب الاحبار قَالَ ان الله انْزِلْ على آدم عصيا بِعَدَد الْأَنْبِيَاء وَالْمُرْسلِينَ ثمَّ اقبل على ابْنه شِيث فَقَالَ أَي بني انت خليفتي من بعدِي فَخذهَا بعمارة التَّقْوَى والعروة الوثقى فَكلما ذكرت الله فاذكر الى جنبه اسْم مُحَمَّد صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَإِنِّي رَأَيْت اسْمه مَكْتُوبًا على سَاق الْعَرْش وَأَنا بَين الرّوح والطين ثمَّ إِنِّي طفت السَّمَوَات فَلم أر فِي السَّمَوَات موضعا إِلَّا رَأَيْت اسْم مُحَمَّد مَكْتُوبًا عَلَيْهِ وَأَن رَبِّي اسكنني الْجنَّة فَلم ار فِي الْجنَّة قصرا وَلَا غرفَة إِلَّا اسْم مُحَمَّد مَكْتُوبًا عَلَيْهِ وَلَقَد رَأَيْت اسْم مُحَمَّد مَكْتُوبًا على نحور الْحور الْعين وعَلى ورق قصب آجام الْجنَّة وعَلى ورق شَجَرَة طُوبَى وعَلى ورق سِدْرَة الْمُنْتَهى وعَلى أَطْرَاف الْحجب وَبَين اعين الْمَلَائِكَة فَأكْثر ذكره فان الْمَلَائِكَة تذكره فِي كل ساعاتها ( )
“হে প্রিয় বৎস। আমার পরে তুমি আমার খলিফা। সুতরাং এই খেলাফতকে তাক্বওয়ার তাজ ও দৃঢ় এক্বিনের দ্বারা মজবুত করে ধরে রেখো। আর যখনই আল্লাহর নাম যিকির (উল্লেখ) করবে তার সাথেই হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নামও উল্লেখ করবে। তার কারন এ যে, আমি রূহ ও মাটির মধ্যবর্তী থাকা অবস্থায়ই তাঁর পবিত্র নাম আরশের পায়ায় (আল্লাহর নামের সাথে) লিখিত দেখেছি। এরপর আমি সমস্ত আকাশ ভ্রমন করেছি। আকাশের এমন কোন স্থান ছিলনা যেখানে হযরত মুহাম্মাদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নাম মুবারক অংকিত পাইনি। আমার রব আমাকে বেহেস্তে বসবাস করতে দিলেন। বেহেস্তের এমন কোন প্রাসাদ ও কামরা পাইনি যেখানে হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নাম মুবারক ছিলনা। আমি হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বরকতময় নাম আরোও লিখিত দেখেছি সমস্ত হুরের স্কন্ধ দেশে, বেহেস্তের সমস্ত বৃক্ষের পাতায়, বিশেষ করে তুলা বৃক্ষের পাতায় পাতায়, পর্দার কিনারায় এবং ফেরেশতাগনের চোখের মনিতে ঐ নাম মুবারক অংকিত দেখেছি। সুতরাং হে শীস ! তুমি এই নাম বেশী বেশী করে জপতে থাক। কেননা, ফেরেস্তাগন পূর্ব হতেই এই নাম জপনে মশগুল রয়েছেন। “( )
তিনি সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ও পবিত্র পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেছেন। তাঁর পিতা-মাতা নিষ্পাপ ও পবিত্র ব্যক্তি ছিলেন। তারা কখনো মূর্তিপূজা করেননি। সর্বদা তৌহিদে বিশ্বাসী ছিলেন এবং আল্লাহর এবাদত করতেন। রাসুলের বংশ নবীগণের সাথে সম্পর্কিত। যেমন: তাঁর পূর্ব পুরুষ ছিলেন হযরত ইসমাইল, হযরত ইব্রাহিম ও হযরত নুহ আলাহিস সালামের মত ব্যক্তিগণ।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর পিতা মাতা ও পূর্ব পুরুষগণ তৌহিদে বিশ্বাসী ছিলেন

ইতিহাস থেকে জানা যায়- আখিরী রসূল, মহানবী হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূর্ব পুরুষগণ কেউ কাফির-মুশরিক বা অপবিত্র ছিলেন না, প্রত্যেকেই ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম। তাঁরা একত্ববাদী বা হানিফ ছিলেন এবং কোনো পিতাই কখনও কাফির ছিলেন না। তাঁরা আল্লাহর একত্ববাদে মনে প্রানে বিশ্বাস করে তদানুযায়ী জীবন যাপন করতেন। এমনকি তাঁদের উভয়ের বংশীয় পূর্ব পুরুষ ও মহিলাগণও তৌহিদে বিশ্বাসী ছিলেন। শির্ক-কুফরের অপবিত্রতা তাঁদের কখনোই স্পর্শ করতে পারেনি। তাঁরা তা থেকে সম্পূর্ণ পবিত্রই ছিলেন।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আপন হাবীবের পবিত্র নূরকে পাক পবিত্র পুরুষগনের ঔরসেই এবং পবিত্র মহীয়সী মায়েদের মাধ্যমে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। কারন, কোন কাফির পুরুষ কিংবা নারীর এহেন সৌভাগ্য হতে পারেনা। সুতরাং রাসূল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মানিত পিতা-মাতা তাঁদের জীবদ্দশায় যেমন তৌহিদ-এ বিশ্বাসী ছিলেন,তাঁদের ইন্তিকালও হয়েছিল ঈমানের উপর। এ অকাট্য সত্য তথ্যের স্বপক্ষে নিম্নে কতিপয় প্রমাণ পেশ করা গেল।
পবিত্র কুরআনের আলোকে: পবিত্র কুরআন মজীদে আল্লাহ পাক এরশাদ ফরমান- وَتَقَلُّبَكَ فِي السَّاجِدِينَ“ওয়া তাক্বাল্লুবাকা ফিস্ সাজিদীন”। (শূয়ারা-২১৯) অর্থাৎ, হে নবী! আমি আপনাকে সিজদাকারীদের পৃষ্ঠের মাধ্যমে(ঔরসে) স্থানান্তরিত করেছি। এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হচ্ছে যে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে আরম্ভ করে হযরত আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু পর্যন্ত সকল পূর্বপুরূষই মু’মিন ছিলেন।( )
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরও ইরশাদ করেন, لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِّنْ أَنفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُم بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ“লাক্বাদ জা’আকুম রাসূলুম মিন আনফুসিকুম আযীযুন আলাইহি মা’আনিত্তুম।“ অর্থঃ-নিশ্চয় তোমাদের নিকট তাশরিফ আনয়ন করেছেন, তোমাদের মধ্য থেকে ঐ রাসূল, যাঁর নিকট তোমাদের কষ্টে পড়া কষ্টদায়ক। (সুরা তাওবা-১২৮. বঙ্গানুবাদঃ কানযুল ঈমান।)
এ আয়াতের ‘আনফুসিকুম‘ শব্দটির ‘ফা’ অক্ষরটিতে ‘যবর’ও বর্ণিত হয়েছে। তখন আয়াতের অর্থ দাঁড়ায় নিম্নরুপঃ “তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্যে সর্বোতকৃষ্ট, অভিজাত ব্যক্তিবর্গ থেকে এক মহান রাসূল তাশরীফ আনয়ন করেছেন ( )
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা নিজেও ইরশাদ করেন:
وعن أنس رضى الله عنه قال قرأ رسول الله صلى الله عليه وسلم “لقد جاءكم رسول من أنفسكم” بفتح الفاء وقال أنا أنفسكم نَسَبًا وَصِهْرًا وَحَسَبًا لَيْسَ فِي آبَائِي مِنْ لَدُنْ آدَمَ سِفَاحٌ، كُلُّهَا نِكَاحٌ
“আনা আনফাসূকুম“ অর্থাৎ,আমি তোমাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম বংশোদ্ভূত। (তাবরানী শরীফ) হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূর্ব পুরুষদের মধ্যে হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে হযরত আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু পর্যন্ত কেউ মন্দ ও অশ্লীল কর্মে লিপ্ত হননি। ( )
পবিত্র কুরআনে আরও ইরশাদ হয়েছে- نَجَصٌ إِنَّمَا الْمُشْرِكُونَ “ইন্নামাল মুশরিকুনা নাজাসুন“(তাওবা-২৮)।
অর্থঃ-নিঃসন্দেহে মুশরিকরা অপবিত্র।
কুরআন মজীদে যেহেতু আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুশরিকদেরকে অপবিত্র বলে ঘোষনা করেছেন, সেহেতু তিনি তাঁর প্রিয় নবীর নূরকে যেকোন নাপাক ব্যক্তির ঔরসে রাখবেন না, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। এ কথার সমর্থনে রাসূলে পাকের এ হাদীস শরীফটি বিশেষভাবে প্রনিধানযোগ্য। তিনি ইরশাদ করেন-“আল্লাহ তায়ালা আমাকে সর্বদা পূত-পবিত্র পৃষ্ঠদেশ থেকে পবিত্র গর্ভেই স্থানান্তরিত করেছেন। পবিত্র পরিচ্ছন্ন-দুটি বংশীয় ধারার উভয়টির মধ্যে আমি উত্তম বংশের অন্তর্ভূক্ত“( )

হাদীস শরীফের আলোকে
রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মানিত পিতা-মাতা, পিতামহ ও মাতামহগন, যাঁদের মাধ্যমে তাঁর পবিত্র ও বরকতময় নূর স্থানান্তরিত হয়ে হযরত আব্দুল্লাহ ও হযরত আমিনা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা পর্যন্ত পৌছেছে, তাঁদের সম্পর্কে খোদ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা ইরশাদ করেন:
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” لَمْ يَلْتَقِ أَبَوَايَ فِي سِفَاحٍ ، لَمْ يَزَلِ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ يُنَقِّلُنِي مِنْ أَصْلابٍ طَيِّبَةٍ إِلَى أَرْحَامٍ طَاهِرَةٍ ، صَافِيًا ، مُهَذَّبًا ، لا تَتَشَعَّبُ شُعْبَتَانِ إِلا كُنْتُ فِي خَيْرِهِمَا ( ) . “.
“আমি সর্বদা পবিত্র পৃষ্ঠদেশ সমূহ থেকে পবিত্র মাতৃগর্ভ সমূহে স্থানান্তরিত হয়ে ভূ-পৃষ্ঠে আবির্ভূত হয়েছি।( )
তিনি আরও ইরশাদ করেন, “আমি প্রতিটি যুগে মানবজাতির সর্বস্তরের সর্বশ্রেষ্ঠ বংশে আবির্ভূত হয়েছি।( )
তিনি আরও ইরশাদ করেন, “আল্লাহ তায়ালা ধারাবাহিকভাবে পবিত্র পৃষ্ঠদেশ ও পবিত্র গর্ভে স্থানান্তরিত করে ভূ-পৃষ্ঠে আমার বরকতময় আবির্ভাব ঘটিয়েছেন।”( )

হযরত আব্দুল্লাহ ও হযরত আমেনা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা
কুরাইশ সর্দার হযরত আব্দুল মুত্তালিবের ছিল দশ পুত্র। এদের সকলেই ছিলেন বিশিষ্ট ও খ্যাতিমান। তাঁর সকল পুত্রের মধ্যে হযরত আব্দুল্লাহ খুবই প্রশংসনীয় গুণাবলী ও কেন্দ্রীয় মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। তাঁর পিতা বিয়ে দিয়েছিলেন বনূ যুহরার সর্দার ওহাব এর কন্যা হযরত আমেনার সঙ্গে, যাঁকে সে সময় উচ্চ বংশ, সম্মান ও প্রভাব প্রতিপত্তির দিক দিয়ে কুরাইশদের ভিতর সবচেয়ে সম্মানিত মহিলা মনে করা হত।
রসূল কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাতৃগর্ভে থাকাকালেই তাঁর পিতা হযরত আব্দুল্লাহ মাত্র পঁচিশ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। তিনি সিরিয়া সফর থেকে ফেরার পথে মদীনা শরীফে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তথায় ওফাত বরণ করেন। ‘দার আল্ নাবেগা আলজা’দী’ নামক স্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।( )
হযরত আমেনা রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মের পূর্বেই এমন বহু নিদর্শন দেখতে পান যদ্বারা বোঝা যেত যে, তাঁর সন্তানের ভবিষ্যৎ অতুজ্জল ও মর্যাদাকর হবে। ( )

হযরত খাজা আব্দুল মুত্তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু
হযরত আবদুল্লাহর পিতা খাজা আব্দুল মুত্তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু নিজের জীবনের কঠিনতম সংকটে ও বিপদের সময়েও আল্লাহর ইবাদত ত্যাগ করেননি ও একত্ববাদের দ্বীনের সহায়তা করতে কুণ্ঠা বোধ করেননি। যখন আবরাহার হস্তি সওয়ার বিশাল বাহিনী কা’বা গৃহ ধ্বংসের উদ্দেশ্যে মক্কার দিকে অগ্রসর হয়, তখন পথিমধ্যে আব্দুল মুত্তালিবের কিছু উট তারা ধরে নিয়ে যায়। অতঃপর আব্দুল মুত্তালিব যখন উটগুলো ফিরিয়ে নিতে তার কাছে আসলেন তখন আবরাহা আশ্চার্যান্বিত হয়ে জিজ্ঞেস করল: উট ফেরত না চেয়ে কেন আমার বাহিনী ফেরত নিতে ও কা’বা ঘর ধ্বংস না করার আবেদন জানালে না? তখন আব্দুল মুত্তালিব আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ ঈমান ও তাঁর ওপর ভরসা করে বললেন:
لَمَّا سَأَلَ أَبْرَهَةَ أَنْ يَرُدَّ لَهُ إِبِلَهُ ، فَقَالَ : سَأَلْتَنِي مَالَكَ ، وَلَمْ تَسْأَلْنِي الرُّجُوعَ عَنْ هَذَا الْبَيْتِ مَعَ أَنَّهُ شَرَفُكُمْ ؟ فَقَالَ : إِنَّ لِلْبَيْتِ رَبًّا يَحْمِيهِ .
“আমি হলাম এই উটগুলোর মালিক আর এই কা’বা ঘরেরও মালিক বা প্রভু রয়েছেন তিনি সেটা রক্ষা করবেন।”( )
এরপর তিনি মক্কার দিকে রওয়ানা দিলেন এবং কা’বা ঘরের কাছে এসে কা’বার দরজার কড়া ধরে বলেছিলেন:
وَرَجَعَ عَبْدُ الْمُطَّلِبِ إِلَى قُرَيْشٍ فَأَمَرَهُمْ بِالْخُرُوجِ مِنْ مَكَّةَ، وَالتَّحَصُّنِ فِي رُءُوسِ الْجِبَالِ، تَخَوُّفًا عَلَيْهِمْ مِنْ مَعَرَّةِ الْجَيْشِ. ثُمَّ قَامَ عَبْدُ الْمُطَّلِبِ فَأَخْذَ بِحَلْقَةِ بَابِ الْكَعْبَةِ، وَقَامَ مَعَهُ نَفَرٌ مِنْ قُرَيْشٍ يَدْعُونَ اللَّهَ وَيَسْتَنْصِرُونَهُ عَلَى أَبَرْهَةَ وَجُنْدِهِ…
فقال عبد المطلب وهو آخذ بحلقة باب الكعبة لاهَمَّ إِنَّ الْمَرْءَ يَمْنَعُ رَحْلَهُ فَامْنَعْ حَلالَكَ لا يَغْلِبَنَّ صَلِيبُهُمْ وَمِحَالُهُمْ غَدْوًا مِحَالَكَ جَرُّوا جَمِيعَ بِلادِهِمْ وَالْفِيلَ كَيْ يَسْبُوا عِيَالَكَ عَمَدُوا حِمَاكَ بِكَيْدِهِمْ جَهْلا وَمَا رَقَبُوا جَلالَكَ إِنْ كُنْتَ تَارِكُهُمْ وَكَعْبَتَنَا فَأَمْرٌ مَا بَدَا لَكَ قَالَ ابْنُ إِسْحَاقَ: ثُمَّ أَرْسَلَ عَبْدُ الْمُطَّلِبِ حَلْقَةَ بَابِ الْكَعْبَةِ، وَانْطَلَقَ هُوَ وَمَنْ مَعَهُ مِنْ قُرَيْشٍ إِلَى شَعَفِ الْجِبَالِ يَتَحَرَّزُونَ فِيهَا يَنْتَظِرُونَ مَا أَبْرَهَةُ فَاعِلٌ..
“হে আমার প্রতিপালক! তুমি ছাড়া আমি কারো ওপর ভরসা করি না। হে আমার প্রভু! (সকলের জন্য নির্ধারিত) নিজের এই নিরাপদ আশ্রয় স্থলকে রক্ষা কর। এই ঘরের শত্রুরা তোমার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত, তাদেরকে তোমার ঘর ধ্বংস করা হতে বিরত রাখো। ” ( )
এই কথাগুলো হযরত আব্দুল মুত্তালিবের আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী হওয়ার স্পষ্ট দলিল। ইয়াকুবী নিজ ইতিহাস গ্রন্থে খাজা আব্দুল মুত্তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু সম্পর্কে লিখেছেন: “আব্দুল মুত্তালিব মূর্তিপূজা থেকে দূরে ছিলেন এবং মহিমান্বিত ও গৌরবময় এক আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদত করতেন না।” ( )
أن جميع آبائه عليه السلام وأمهاته كانوا على التوحيد ، لم يدخلهم كفر ولا عيب ولا رجس ، ولا شيء مما كان عليه أهل الجاهلية – ذكر الباجوري في حاشيته على جوهرة التوحيد أنها بالغة مبلغ التواتر يعني المعنوي.
কা’বুল আহবার বর্ণনা করেন, হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক হযরত খাজা আব্দুল মুত্তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহুর ললাট মুবারক-এ বেমেছালভাবে জ্বলজ্বল করতো, যা বর্ণনার ঊর্ধ্বে। নূরে মুহাম্মাদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বরকতে হযরত খাজা আব্দুল মুত্তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহুর শরীর মুবারক হতে মিশক আম্বরের সুঘ্রাণ পাওয়া যেত। আর হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নূরে পাক তাঁর কপালে সর্বদা চমকিত।
وعن كعب الأحبار أن نور رسول الله صلى الله عليه وسلم لما صار إلى عبد المطلب وأدرك نام يوما فى الحجر فانتبه مكحولا مدهونا قد كسى حلة البهاء والجمال فبقى متحيرا لايدرى من فعل به ذلك فأخذ أبوه بيده ثم انطلق به إلى كهنة قريش فأشاروا عليه بتزويجه فزوجه وكانت تفوح منه رائحة المسك الأذفر ونور رسول الله صلى الله عليه وسلم يضئ فى غرته وكانت قريش إذا أصابها قحط شديد تأخذ بيده فتخرج به إلى جبل ثبير فيتقربون به إلى الله تعالى ويسألونه أن يسقيهم الغيث فكان يغيثهم ويسقيهم ببركة نور محمد صلى الله عليه وسلم. ( )
হযরত খাজা আব্দুল মুত্তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু নূরে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বরকতে অনেক বিশেষত্বের অধিকারী হয়েছেন। কাবা শরীফের মুতাওয়াল্লী হওয়া এবং হজ্ব পালনকারীর দেখাশুনা করার দায়িত্ব তাঁর উপর ন্যস্ত ছিল। তিনি নূরে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বরকতে অনেক গুনের অধিকারী ছিলেন। তিনি শরাব পান,ব্যাভিচার এবং উলঙ্গঁপনা অবস্থায় কাবা শরীফের তাওয়াফ করা নিষিদ্ধ করেছেন।

উপরোক্ত হাদীস শরীফগুলো থেকে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মানিত পিতা-মাতা এবং পিতামহ ও মাতামহগনের সব ধরনের পাপাচার থেকে পবিত্রতারই প্রমাণ মিলে। তাই হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে আরম্ভ করে হযরত আব্দুল্লাহ ও হযরত আমিনা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা পর্যন্ত যারা যথাক্রমে আপন আপন ঔরস ও গর্ভে নূর নবীর নূর মুবারক বহন করেছেন, তাঁদের চারিত্রিক পবিত্রতা প্রসঙ্গে প্রত্যেকেরই বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করা দায়িত্ব-কর্তব্য।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের নূর প্রসঙ্গে
প্রশ্ন : নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম কি নূর?
উত্তর: হ্যাঁ, তিনি নূরও এবং বাশার (মানুষ)ও। এ দু’য়ের মধ্যকার কোন বিরোধ নেই। কেননা আল্লাহ্ তা‘আলা ক্বোরআনে পাকে হযরত জিবরাঈল আলায়হিস্ সালামকে বাশার বলে উল্লেখ করেছেন। এরশাদ হচ্ছে- فَأَرْسَلْنَا إِلَيْهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا‘অতঃপর আমি তার (মরিয়াম) নিকট প্রেরণ করেছি আমার বিশেষ রূহ (জিবরাঈল)কে, আর সে তার সামনে একজন সুস্থ মানুষের রূপে আত্মপ্রকাশ করলো।’’ [সূরা মরিয়াম, আয়াত-১৭] কারও নিকট অজানা নয় যে, হযরত জিবরাঈল আলায়হিস্ সালাম এবং সকল ফিরিশতা নূরের তৈরী, এতদ্বসত্ত্বেও তিনি মানব আকৃতি ধারণ করেছেন, অতএব একই সত্ত্বার মধ্যে নূর ও বাশার উভয়ের সম্মিলন ঘটতে কোন অসুবিধা নেই। সুতরাং যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর বাশারিয়্যাত বা মানব হওয়াকে অস্বীকার করবে, সে কাফির এবং যে তাঁর নুরানীয়্যাত বা তিনি নূরের সৃষ্টি হওয়াকে অস্বীকার করবে, সে গোমরাহ্, পথভ্রষ্ট ও বিভ্রান্তকারী।

প্রশ্ন : তাঁর নূরানীয়্যাতের দলীল কী?
উত্তর: তাঁর নূরানীয়্যাতের দলীল হলো আল্লাহ্ তা‘আলার মহান বাণী। তিনি এরশাদ করেন, قَدْ جَاءَكُم مِّنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُّبِينٌনিশ্চয় তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে নূর এসেছে। ( মায়েদা-১৫)
আর এখানেنُورٌ (নূর) থেকে উদ্দেশ্য হলো, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম, যা তাফসীরে ইবনে আব্বাস, রাযী, ত্ববরী, জালালাইন, খাযেন ও আলুসীসহ বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থ দ্বারা প্রমাণিত।

তাফসীর কারকগণের অভিমত
১. তাফসীরে ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমায় হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা বলেন,
النور الرسول يعني : محمدا صلى الله عليه وسلم
এখানে নূর মানে রাসূল তথা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম( )
২. তাফসীরে কবীর: হযরত ইমাম রাযী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি তাঁর সুপ্রসিদ্ধ তাফসীরে বলেন
قد جاءكم من الله نور وكتاب مبين ) وفيه أقوال : الأول : أن المراد بالنور محمد ، وبالكتاب القرآن . والثاني : أن المراد بالنور الإسلام ، وبالكتاب القرآن . الثالث : النور والكتاب هو القرآن ، وهذا ضعيف ؛ لأن العطف يوجب المغايرة بين المعطوف والمعطوف عليه ، وتسمية محمد والإسلام والقرآن بالنور ظاهرة ؛ لأن النور الظاهر هو الذي يتقوى به البصر على إدراك الأشياء الظاهرة ، والنور الباطن أيضا هو الذي تتقوى به البصيرة على إدراك الحقائق والمعقولات .
এ আয়অতের উদ্দেশ্য নিয়ে বিভিন্ন মতামত বিদ্যমান, তৎমধ্যে প্রথম মতটি হলো, (نور) নূর দ্বারা হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এবং (كتاب) কিতাব দ্বারা ক্বোরআনুল কারীমকে বুঝানো হয়েছে।( )
৩. তাফসীরে ত্বাবারী, ইমাম ইবনে জাবীর আত ত্বাবারী এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন-
قال الطبري في هذه الآية: الْقَوْلُ فِي تَأْوِيلِ قَوْلِهِ تَعَالَى: {قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُبِينٌ} [المائدة: ১৫] يَقُولُ جَلَّ ثَنَاؤُهُ لِهَؤُلَاءِ الَّذِينَ خَاطَبَهُمْ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ: قَدْ جَاءَكُمْ يَا أَهْلَ التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ مِنَ اللَّهِ نُورٌ , يَعْنِي بِالنُّورِ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , الَّذِي أَنَارَ اللَّهُ بِهِ الْحَقَّ , وَأَظْهَرَ بِهِ الْإِسْلَامَ , وَمَحَقَ بِهِ الشِّرْكَ فَهُوَ نُورٌ لِمَنِ اسْتَنَارَ بِهِ يُبَيِّنُ الْحَقَّ , وَمِنْ إِنَارَتِهِ الْحَقَّ تَبْيِينُهُ لِلْيَهُودِ كَثِيرًا مِمَّا كَانُوا يُخْفُونَ مِنَ الْكِتَابِ. .
অর্থাৎ এখানে نُورٌ দ্বারা হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে।( )
৪. তাফসীরে জালালাইন; এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন,
قد جاءكم من الله نور هو النبي – صلى الله عليه وسلم وكتاب قرآن مبين بين ظاهر.
নিশ্চয় তোমাদের নিকট নূর এসেছে, ‘‘এখানে نور দ্বারা هو النبي – صلى الله عليه وسلم নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর নুরকে বুঝানো হয়েছে।( )
৫. তাফসীরে খাযেন, ইমাম আলী ইবনে মুহাম্মদ আল খাযেন, তাঁর তাফসীরে বলেন, এখানে نور দ্বারা হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে বুঝানো হয়েছে। তাঁকে আল্লাহ্ তা‘আলা নূর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এ জন্যই যে, কেননা পৃথিবীবাসী তাঁর মাধ্যমে হেদায়তপ্রাপ্ত হবে যেমনিভাবে আলো দ্বারা অন্ধকারে পথের দিশা পাওয়া যায়।( )
৬. তাফসীরে নাসাফী, ইমাম আবদুল্লাহ্ ইবনে নাসাফী তার তাফসীর গ্রন্থে বলেন,
أو النور محمد صلى الله عليه وسلم; لأنه يهتدى به، كما سمي سراجا.
অথবা এখানে نور দ্বারা হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম। কেননা তাঁর মাধ্যমে মানুষ আলোর দিশা পাবে। যেমনিভাবে অন্য আয়াতে তাঁকে سراج (সিরাজ) বা প্রদীপ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।( )
৭. তাফসীরে রূহুল মা‘আনী, শেখ মাহমুদ আলূসী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা তাঁর প্রসিদ্ধ তাফসীর রূহুল মা‘আনীতে বলেন,
قد جاءكم من الله نور عظيم، وهو نور الأنوار، والنبي المختار – صلى الله تعالى عليه وسلم – وإلى هذا ذهب قتادة ، واختاره الزجاج وقال أبو علي الجبائي : عنى بالنور القرآن لكشفه وإظهاره طرق الهدى واليقين، واقتصر على ذلك الزمخشري ، وعليه فالعطف في قوله تعالى: وكتاب مبين لتنزيل المغايرة بالعنوان منزلة المغايرة بالذات، وأما على الأول فهو ظاهر.
‘নিশ্চয় আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট এসেছে এক মহান নূর। যিনি হলেন সকল নূরের নূর বা সকল আলোর আলো এবং এখতিয়ারের অধিকারী নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম। ( )

হাদীস শরীফের আলোকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর নূরানীয়্যাত

১. ইমাম নাবলুসী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি ইমাম আবদুলগনী নাবলূসী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি তাঁর ‘আল হাদীক্বাহ্ আন্ নাদিয়্যাহ’ নামক কিভাবে বর্ণনা করেন,
إن الله تعالى خلق كل شىء من نوره صلى الله عليه وسلم
আর তাঁরই নূর থেকে সকল কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে, যার সমর্থনে অনেক বিশুদ্ধ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। ( )
হে হাদীস শরীফটি ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলায়হিমার শিক্ষা গুরু বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস হযরত আবদুর রায্যাক তাঁর ‘মুসান্নাফ’ এ রেওয়ায়ত করেছেন।
২. ইমাম বায়হাক্বী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি, ইমাম বায়হাক্বী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হিও এ হাদীস শরীফটি তাঁর ‘দালায়েলুন্ নবুয়্যাহ্’ নামক কিতাবে বর্ণনা করেছেন।( )
৩. নিসাপুরী: নিযামুদ্দীন হাসান নিসাপুরী তাঁর ‘গারায়েবুল ক্বোরআন’ এ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ (আমিই সর্বপ্রথম মুসলমান) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, এ আয়াতের ব্যাখ্যা ‘আল্লাহ্ তা‘আলা সর্বপ্রথম আমার নূরকেই সৃষ্টি করেছেন,’ ওই হাদীসের অনুরূপ।( )
৪. আল্লামা আল বিকরী: আল্লামা আবুল হাসান ইবনে আবদুল্লাহ্ আল বিকরী তাঁর আল আন্ওয়ার ফী মাওলিদিন নাবীয়্যিল মুখতার’ নামক কিতাবে উপরোক্ত বর্ণনাটি উল্লেখ করে বলেন, হযরত ইমাম আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু এরশাদ করেন,
كان الله ولا شيء معه فأول ما خلق نور حبيبه محمد صلى الله عليه وآله وسلم قبل خلق الماء والعرش والكرسي والسموات والأرض واللوح والقلم والجنة والنار والملائكة وآدم وحواء بأربعة وعشرين وأربع مائة ألف عام
একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলাই ছিলেন, আর কিছুই ছিলনা, অতঃপর সর্বপ্রথম তাঁর প্রিয় হাবীবের নূর মুবারককে সৃষ্টি করেন, পানি, আরশ, কুরসী, লাওহ, ক্বলম, জান্নাত, দোযখ, হিজাব, বাদল এমনকি আদম আলায়হিস্ সালাম ও হাওয়া আলায়হাস্ সালাম-এর সৃষ্টির চার হাজার বছর পূর্বে।’’ ( )
৫. হযরত মুজাদ্দিদ এ আলফে সানী, ইমাম রাব্বানী, মুজাদ্দিদ এ আলফেসানী শেখ ফারুক সিরহিন্দী তাঁর ‘মাকতুবাত’ এ বলেন, ‘রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আমাকে মহান আল্লাহর নুর থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে, আর সকল মুমিনকে আমার নূর থেকে। কেননা তিনিই হলেন সকল সৃষ্টি ও মহান আল্লাহ্ তা‘আলার মধ্যকার একমাত্র মাধ্যম। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর মাধ্যম ছাড়া কেউ তার লক্ষ্যে পৌঁছা অসম্ভব।’( )
৬. ইমাম শা’রানী, ইমাম আবদুল ওয়াহ্হাব শা’রানী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি তাঁর ‘ইয়াওমা কীত ওয়াল জাওয়াহির’ নামক কিতাবে বলেন, যদি প্রশ্ন করা হয় যে, একটি হাদীসে أول ما خلق الله نوري (আল্লাহ্ তা‘আলা সর্বপ্রথম আমার নূরকেই সৃষ্টি করেছেন) বলা হয়েছে, আবার অন্য হাদীসে أول ما خلق الله العقل (আল্লাহ্ সর্বপ্রথম আক্বল (বিবেক)কে সৃষ্টি করেছেন) বলা হয়েছে, এর সমাধান কী?
তার উত্তর হলো, উভয় হাদীসের অর্থ এক ও অভিন্ন। কেননা নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর হাক্বীক্বতকে কখনও العقل الأول (প্রথম আক্বল) শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করা হয়েছে। আবার কখনও নূর দ্বারা। ( )

ইলমে গায়ব
প্রশ্ন : নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম কি গায়ব জানেন?
উত্তর: হ্যাঁ, নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর নবী-রসূলগণ এবং বিশেষ ব্যক্তিবর্গকে এমন কিছু গায়বের ইলম দান করেন, যা অন্য কাউকে সাধারণত দান করে থাকেন না।

প্রশ্ন : তার দলীল কী?
উত্তর: প্রথমত, আল ক্বোরআনুর কারীম: আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন:
عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَىٰ غَيْبِهِ أَحَدًا. إِلَّا مَنِ ارْتَضَىٰ مِن رَّسُولٍ فَإِنَّهُ يَسْلُكُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ رَصَدًا
অদৃশ্যের জ্ঞাতা, সুতরাং আপন অদৃশ্যের উপর কাউকেও ক্ষমতাবান করেন না, আপন মনোনীত রাসূলগণ ব্যতীত [সূরা জিন, আয়াত-২৭] আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন:
وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُطْلِعَكُمْ عَلَى الْغَيْبِ وَلَٰكِنَّ اللَّهَ يَجْتَبِي مِن رُّسُلِهِ مَن يَشَاءُ ۖ فَآمِنُوا بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ ۚ وَإِن تُؤْمِنُوا وَتَتَّقُوا فَلَكُمْ أَجْرٌ عَظِيمٌ
‘‘এবং আল্লাহর শান এ নয় যে, হে সর্বসাধারণ! তোমাদেরকে অদৃশ্যের জ্ঞান দিয়ে দেবেন। তবে আল্লাহ্ নির্বাচিত করে নেন তাঁর রাসূলগনের মধ্য থেকে যাকে চান, [আল-ই ইমরান, আয়া-১৭৯] আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন: ذَٰلِكَ مِنْ أَنبَاءِ الْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَ ۖএসব অদৃশ্যের সংবাদ যা আমি আপনার প্রতি ওহী করেছি।’’ [সূরা হুদ, আয়াত-৪৯] আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন: وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُن تَعْلَمُ ۚ وَكَانَ فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكَ عَظِيمًا এবং আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন যা কিছু আপনি জানতেন না আর আপনার উপর আল্লাহর মহা অনুগ্রহ রয়েছে। [সূরা নিসা, আয়াত-১১৩] আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন: مَّا فَرَّطْنَا فِي الْكِتَابِ مِن شَيْءٍ ۚ ثُمَّ إِلَىٰ رَبِّهِمْ يُحْشَرُونَ ‘আমি এ কিতাবে কোন কিছু লিপিবদ্ধ করতে ত্রুটি করিনি। [সূর আন্‘আম, আয়াত-৩৮]

আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন: وَمَا هُوَ عَلَى الْغَيْبِ بِضَنِينٍ এবং এ নবী অদৃশ্য বিষয় বর্ণনা করার ব্যাপারে কৃপণ নন।’’ [সূরা তাকবীর, আয়াত-২৪] আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন: وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ تِبْيَانًا لِّكُلِّ شَيْءٍ وَهُدًى وَرَحْمَةً وَبُشْرَىٰ لِلْمُسْلِمِينَ আর আমি আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি প্রত্যেক কিছুর বর্ণনাকারী স্বরূপ। [নাহল-৮৯]

হাদীস শরীফের আলোকে ইলমে গায়ব
১. রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ قَالَ: “سَمِعْتُ عُمَرَ -رضي الله عنه- يَقُولُ: قَامَ فِينَا النَّبِيُّ -صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- مَقَامًا، فَأَخْبَرَنَا عَنْ بَدْءِ الْخَلْقِ حَتَّى دَخَلَ أَهْلُ الْجَنَّةِ مَنَازِلَهُمْ وَأَهْلُ النَّارِ مَنَازِلَهُمْ، حَفِظَ ذَلِكَ مَنْ حَفِظَهُ، وَنَسِيَهُ مَنْ نَسِيَهُ”.( )
তারেক ইবনে শিহাব বলেন, আমি হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, একদিন নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট খুতবা দিতে দাঁড়ালেন, তখন তিনি তাঁর এ খুতবায় আমাদেরকে জানিয়ে দিলেন, সৃষ্টির প্রারম্ভ থেকে শুরু করে জান্নাতবাসীদের জান্নাতের নিজ নিজ স্থানে প্রবেশ এবং জাহান্নামীদের জাহান্নামের নির্ধারিত স্থানে প্রবেশ করা পর্যন্ত আদ্যোপান্ত সকল ঘটনাবলী।( )
২. রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
نَعَمْ عُرِضَ عَلَيَّ مَا هُوَ كَائِنٌ مِنْ أَمْرِ الدُّنْيَا، وَأَمْرِ الْآخِرَةِ،( )
আমার নিকট পেশ করা হলো দুনিয়া ও আখিরাতের সকল বিষয়াদি যা সংঘটিত হয়েছে ও যা সংঘটিত হবে।( )
৩. রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
حَدَّثَنِي أَبُو زَيْدٍ يَعْنِي عَمْرَو بْنَ أَخْطَبَ ، قَالَ : ” صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْفَجْرَ وَصَعِدَ الْمِنْبَرَ ، فَخَطَبَنَا حَتَّى حَضَرَتِ الظُّهْرُ ، فَنَزَلَ فَصَلَّى ثُمَّ صَعِدَ الْمِنْبَرَ ، فَخَطَبَنَا حَتَّى حَضَرَتِ الْعَصْرُ ثُمَّ نَزَلَ ، فَصَلَّى ثُمَّ صَعِدَ الْمِنْبَرَ ، فَخَطَبَنَا حَتَّى غَرَبَتِ الشَّمْسُ ، فَأَخْبَرَنَا بِمَا كَانَ وَبِمَا هُوَ كَائِنٌ فَأَعْلَمُنَا أَحْفَظُنَا ” . ( )
অতপর হুযূর-ই করীম আমাদেরকে জানিয়ে দিলেন অতীতে যা ঘটেছে এবং আগামীতে যা ঘটবে তার সম্পর্কে। ( )
৪. রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন: فَتَجَلَّى لِي كُلُّ شَيْءٍ وَعَرَفْتُ( )
অতএব, আপনার নিকট উদ্ভাসিত হয়ে গেল সকল কিছু এবং আমি এসবকে চিনতে পারলাম।( )
৬. রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
إِنَّ اللهَ زَوَى لِي الأَرْضَ، فَرَأَيْتُ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَهَا( )
নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা আমার সম্মুখে এ পৃথিবীকে তুলে ধরলেন। আর আমি এর দিকে তাকালাম, ফলে আমি দেখতে পেলাম যা কিছু এতে বর্তমানে বিদ্যমান এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু হবে সবই, যেমনিভাবে আমি আমার হাতের তালুর দিকে তাকালে দেখতে পাই।( )

৭. নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ্রإِنِّي أَرَى مَا لَا تَرَوْنَ، وَأَسْمَعُ مَا لَا تَسْمَعُونَ وَاللَّهِ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلًا وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا،( )
‘আমি যা জানি যদি তোমরা তা জানতে তাহলে তোমরা খুব কমই হাসতে এবং অধিক হারে কান্না করতে।( )

৮. নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদদ করেন:
عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ্রهَلْ تَرَوْنَ قِبْلَتِي هَا هُنَا، وَاللَّهِ مَا يَخْفَى عَلَيَّ رُكُوعُكُمْ وَلاَ خُشُوعُكُمْ، وَإِنِّي لأَرَاكُمْ وَرَاءَ ظَهْرِيগ্ধ( )
‘‘তোমরা কি আমার সামনের দিকে দেখতে পাচ্ছ? আল্লাহর শপথ করে বলছি, আমার নিকট অজানা নয় তোমাদের খুশু’ (অন্তরের একাগ্রতা) ও তোমাদের রুকূ’ কেননা আমি তোমাদেরকে আমার পেছন থেকে ঠিক ওইভাবে দেখি যেভাবে সামনে দেখি।( )

৯. নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বদরের পূর্বে রাত্রিতে উপস্থিত সাহাবাগণের উদ্দেশ্যে বলেন,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَانَ يُرِينَا مَصَارِعَ أَهْلِ بَدْرٍ، بِالْأَمْسِ، يَقُولُ: ্রهَذَا مَصْرَعُ فُلَانٍ غَدًا، إِنْ شَاءَ اللهُগ্ধ، قَالَ: فَقَالَ عُمَرُ: فَوَالَّذِي بَعَثَهُ بِالْحَقِّ مَا أَخْطَئُوا الْحُدُودَ الَّتِي حَدَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ،( )
এটি হলো অমুকের নিহত হবার স্থান, এটি হলো তমুকের নিহত হবার স্থান, এ বলে তিনি বদর ভূমির বিভিন্ন স্থানে চিহ্ণ এঁকে দিলেন। যুদ্ধ শেষ হবার পর সাহাবাগন বললেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের নির্ধারিত স্থান থেকে বিন্দুমাত্র এদিক-ওদিক হয়নি।( )

ওলামায়ে কেরামের দৃষ্টিতে ইলমে গায়ব
১.
ويجوز أن يكون الله تعالى أطلع حبيبه عليه الصلاة والسلام على وقت قيامها على وجه كامل، لكن لا على وجه يحاكي علمه تعالى به إلا أنه سبحانه أوجب عليه صلى الله تعالى عليه وسلم كتمه لحكمة، ويكون ذلك من خواصه عليه الصلاة والسلام، وليس عندي ما يفيد الجزم بذلك،
সৃষ্টিতে জানার মত যা কিছু আছে সব কিছু না জেনে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকাল হয়নি।( )

২. আল্লামা আবদুল আযীয দাব্বাগ রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন:
يقول الدباغ : كيف يخفى أمر الخمس عليه صلى الله عليه وسلم و الواحد من أهل التصريف من أمته الشريفة لا يمكنه التصرف إلا بمعرفة هذه الخمس . ( )
নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ‘উলূমে খামসাহ্’ (পাঁচটি এমন বিষয় যেগুলোর জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট সংরক্ষিত বলে দাবী করা হয়।) কিভাবে গোপন থাকতে পারে অথচ তাঁর উম্মতগণের মধ্যে যাঁরা তাসাররুফ বা ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকারী তাঁরাও সৃষ্টিতে যা তাসাররুফ করে তা এ ‘উলূমে খামসাহ্’ বিষয়ে জ্ঞান রাখার ফলেই তাঁরা তা আঞ্জাম দিতে সক্ষম হন।( )

৩. ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ূত্বী রহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন:
قال الحافظ السيوطي في الخصائص الكبرى : ذهب بعضهم الى أنه صلى الله عليه وسلم أوتي علم الخمس أيضا وعلم وقت الساعة والروح وأنه أمر بكتم ذلك. اهـ
কিছু সংখ্যক ওলামায়ে কেরামের অভিমত হলো নিশ্চয় প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে ‘উলূমে খামসাহ্’ এর ইলমও দেয়া হয়েছে, এমনকি তাঁকে কেয়ামতের সময় ও রূহ সম্পর্কেও জ্ঞান দেয়া হয়েছে; কিন্তু তিনি তা গোপন করতে নির্দেশিত হন।( )

৪. আল্লামা শেখ মানাভী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন:
وفي فيض القدير بشرح الجامع الصغير للمناوي في الكلام على حديث خمس لا يعلمهن الا الله .. الـخ ما نصه : خمس لا يعلمهن الا الله على وجه الاحاطة والشمول كليا , وجزئيا فلا ينافيه إطلاع الله بعض خواصه على كثير من المغيبات حتى من هذه الخمس لأنها جزئيات معدودة وان كان للمعتزلة في ذلك مكابرة اهـ.
পাঁচটি বিষয় যা আল্লাহ্ ছাড়া কেউ জানেনা, ‘এ হাদীসের ব্যাখ্যা হলো, পরিপূর্ণ ও আংশিক সকল বিষয়কে ব্যাপক ও সর্বদিক থেকে আয়ত্ব ও শামিল করে নেয়া। উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা বুঝা যায় যে, আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর বিশেষ বান্দাদেরকে অনেক অদৃশ্য বিষয়াদির জ্ঞান দান করা, এমনকি ‘উলূমে খামসাহ্’ বিষয়ে জ্ঞান দান করা অসম্ভব কিছু নয়, কেননা তাহলো মূলত: ইলমের অংশ বিশেষ আর এ বিষয়কে ফেরকায়ে মু’তাযিলার অস্বীকার করাটা মূলত: দাম্ভিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। ( )

৫. আল্লামা শিহাবুদ্দিন খিফাজী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন:
اطَّلاع العبد المخصوص على غيب من غيوب الله، ليس بجثمانيته ولا وجود صورته، وإنما هو بنور الحق فيه، دليل ذلك قوله: ্রاتقوا فراسة المؤمن؛ فإنه ينظر بنور اللهগ্ধ( )
বান্দাকে স্বীয় গায়বের বিষয়ে জ্ঞান দান করাটা হলো মূলত তারই পক্ষ থেকে নূরের একটি ঝলক দান করা, কেননা হাদীসে পাকে রয়েছে ‘তোমরা ঈমানদারের ফেরাসত (অন্তরদৃষ্টি)কে ভয় কর, কেননা তারা আল্লাহ্ তা‘আলার প্রদত্ত নূর দ্বারাই দেখেন।’ সুতরাং গায়ব বিষয়ে জানা অসম্ভবের কিছু নয়।( )

১০. ইমাম শাওকানী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন, পবিত্র ক্বোরআনের উপরোক্ত দলীল দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর চয়নকৃত বান্দাদের নিকট তার গায়ব প্রকাশিত করেন বা জানান, এখন প্রশ্ন হলো নবী-রসূলগণের জন্য কি এটা বৈধ হবে যে, তাঁরা যে গায়ব সম্পর্কে অবগত হয়েছেন তা তাঁদের বিশেষ উম্মতদের প্রতি প্রকাশ করা? তখন উত্তরে বলল, ‘হ্যাঁ, এতে কোন নিষেধ নেই, কেননা রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নিকট থেকে এ ধরনের অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়, যা হাদীস শরীফ সম্পর্কে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিকট অজানা নয়। ( )
১১. ইমাম ইবনে হাজার আল আসকালানী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন,
وله صفة بها يدرك ما سيكون في الغيب ويطالع بها ما في اللوح المحفوظ كالصفة التي يفارق بها الذكي البليد ، فهذه صفات كمالات ثابتة للنبي ( )
তাঁর এমন একটি বিশেষ গুণ রয়েছে যার মাধ্যমে তিনি অবগত হন আগামীতে ঘটমান গায়বের বিষয়াদি সম্পর্কে এবং যে বিশেষ গুণ দ্বারা তিনি প্রত্যক্ষ করেন লাওহে মাহফুযে যা বিদ্যমান তাও।’’( )
১২. ইমাম গাযালী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন:
والرابع أن له صفة بها يدرك ما سيكون في الغيب إما في اليقظة أو في المنام إذ بها يطالع اللوح المحفوظ فيرى ما فيه من الغيب فهذه كمالات وصفات يعلم ثبوتها للأنبياء
তাঁর এমন একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার মাধ্যমে তিনি আগামীতে যা যা ঘটবে সে সকল গায়বী বিষয়ে অবগত থাকেন, জাগ্রতাবস্থায় হোক কিংবা নিদ্রিত অবস্থায় এবং যে বৈশিষ্ট্য দ্বারা তিনি লাওহে মাহফুযে বিদ্যমান সকল অদৃশ্য বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক অবগত থাকেন।( )
১৩. ইমাম কাযী আয়ায রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন:
الفصل الرَّابِعُ وَالْعِشْرُونَ‏:‏ وَمِنْ ذَلِكَ مَا أَطَّلَعَ عَلَيْهِ مِنَ الْغُيُوبِ، وَمَا يَكُونُ وَالْأَحَادِيثُ فِي هَذَا الْبَابِ بَحْرٌ لَا يُدْرَكُ قَعْرُهُ، وَلَا يَنْزِفُ غَمْرُهُ‏.‏ وَهَذِهِ الْمُعْجِزَةُ مِنْ جُمْلَةِ مُعْجِزَاتِهِ الْمَعْلُومَةِ عَلَى الْقَطْعِ الْوَاصِلِ إِلَيْنَا خَبَرُهَا عَلَى التَّوَاتُرِ لِكَثْرَةِ رُوَاتِهَا، وَاتِّفَاقِ مَعَانِيهَا عَلَى الِاطِّلَاعِ عَلَى الْغَيْبِ‏:‏
তৎমধ্যে ওই সকল অদৃশ্যের জ্ঞান যা সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন এবং যা সম্পর্কে তিনি অবগত হবেন। এ সম্পর্কে হাদীস শরীফের এমন এক মহাসমূদ্র বিদ্যমান যার গভীরতা জানা যায় না। ( )

বৃদ্ধাঙ্গুল চুম্বন করা
প্রশ্ন : আযানে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের নাম মুবারক শুনে বৃদ্ধাঙ্গুল চুম্বন করার হুকুম কী?
উত্তর: নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের নাম মুবারক শুনে উভয় হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন করা জায়েয ও মুস্তাহাব এবং এতে শরীয়তের কোন নিষেধ নেই। কেননা এটি রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের প্রতি ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ। এটি কোন ওয়াজিব বা আবশ্যক আমল নয় বরং তা মুস্তাহাব ও পছন্দনীয় আমল।

প্রশ্ন : এর স্বপক্ষে কোন দলীল আছে কি?
উত্তর: এর স্বপক্ষে দলীল হলো ইমাম শামী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হির রদ্দুল মুহতার এর নি¤েœাক্ত ব্যক্ত, এতে তিনি ‘আযান’ অধ্যায়ে লিখেন,
فى شرح النقاية: “واعلم أنه يستحبّ أن يقال عند سماع الأولى من الشهادة الثانية ” صلّى الله تعالى عَلَيْكَ يا رَسُولَ اللهِ ” و عند الثانية منها ” قُرةُ عَيْنِىْ بِكَ يَارَسُوْلَ اللهِ ” ثم يقال ” الَلهُمَّ مَتِّعْنِىْ بِالسَّمْعِ وَالْبَصَرِ ” بعد وضع ظفرى الإبهامين على العينين، فإنه صلى الله تعالى عليه و سلم يكون قائدًا له إلى الجنة” كذا فى كنز العباد. ( )
আযানে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলার সময় মুস্তাহাব হলো প্রথমবারে ‘সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’ এবং দ্বিতীয়বারে ‘ক্বুররাতু আইনী বিকা এয়া রাসূলাল্লাহ্ (হে আল্লাহর রসূল! আপনার নাম মুবারকের বরকতে আমার চক্ষুযুগল শীতল হয়েছে) বলা মুস্তাহাব। অতঃপর ‘আল্লাহুম্মা মাত্তিনী বিস্ সাময়ী ওয়াল বাসার। (হে আল্লাহ! আমাকে শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তির নি’মাত দ্বারা ধন্য কর) বলে উভয় বৃদ্ধাঙ্গুলীর নখ উভয় চোখের উপর রাখবে, কেননা এ মুস্তাহাব আমলটি যে করবে তাকে ক্বিয়ামত দিবসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তার হাত ধরে জান্নাতে নিয়ে যাবেন। কানযুল উব্বাদ এ এমনই বর্ণনা পাওয়া যায়।( )
ইমাম দায়লামী তাঁর ‘মুসনাদ আল ফেরদৌস’ এ হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন,
ذَكَرَهُ الدَّيْلَمِيُّ فِي الْفِرْدَوْسِ مِنْ حَدِيثِ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ أَنَّهُ لَمَّا سَمِعَ قول المؤذن أشهد أن محمد رَسُولُ اللَّه قَالَ هَذَا، وَقَبَّلَ بَاطِنَ الأُنْمُلَتَيْنِ السَّبَّابَتَيْنِ وَمَسَحَ عَيْنَيْهِ، فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ فَعَلَ مِثْلَ مَا فَعَلَ خَلِيلِي فَقَدْ حَلَّتْ عَلَيْهِ شَفَاعَتِي،( )
তিনি মুয়াযযিনকে আযানে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ্’ বলতে শুনতে তিনি তাঁর দুই শাহাদত আঙ্গুলীর অভ্যন্তরভাগে চুমু খেলেন এবং তাঁর চক্ষুযুগল তা দ্বারা মাসেহ করলেন, অতঃপর তা দেখে রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করলেন, আমার অতি প্রিয় বন্ধু (আবু বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু) যেরূপ করেছে যদি কেউ সেরূপ কওে, তাহলে তার জন্য আমার শাফা‘আত অবধারিত হয়ে গেল।’( )

আযানের পূর্বে-পরে সালাত ও সালাম
প্রশ্ন : আযানের পূর্বে ও পরে সালাত ও সালাম প্রদান করা কি বৈধ?
উত্তর: হ্যাঁ, বৈধ, শুধু বৈধ নয় বরং তা একটি অত্যন্ত প্রিয় ও পছন্দনীয় আমল। কেননা আযান হলো, ই’লান বা ঘোষণা দেয়া, তথা মানুষকে নামাযের দিকে আহ্বানের ঘোষণা দেয়া, আর যে নামাযের ডাক দেয়া হচ্ছে সালাত ও সালাম স্বয়ং সেই নামাযের ভিতরেই বিদ্যমান, তাহলে নামাযের বাইরে নিষেধ হবে কেন? আর সালাত-সালামের জন্য নির্ধারিত কোন সময় নেই বরং রাত-দিন সার্বক্ষণিকভাবে তাঁর প্রতি সালাত-সালাম প্রদান করা বৈধ। যার নির্দেশ পবিত্র ক্বোরআনে বিদ্যমান। আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন,
إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ ۚ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا
‘নিশ্চয় আল্লাহ্ ও তাঁর ফেরেশতরা দুরূদ প্রেরণ করেন, ওই অদৃশ্য বক্তা (নবী)’র প্রতি, হে ঈমানদারগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দুরূদ ও অধিকহারে সালাম প্রেরণ করো। [আহযাব, আয়াত-৫৬] এ আয়াতে দুরূদ ও সালামের জন্য কোন সময়কে নির্ধারিত করে দেওয়া হয়নি বরং শুধুমাত্র নিষিদ্ধ সময় ব্যতীত অন্য যে কোনও সময় সালাত ও সালাম বৈধ। তৎমধ্যে আযানের পূর্বে ও পরে। অনুরূপ এ সালাত-সালাম যদি ফরয নামাযে বৈধ হয়ে থাকে, তাহলে নামাযের বাইরে কিভাবে অবৈধ হতে পারে?
হাদীস শরীফে হযরত ওবাই ইবনে কা’ব রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ رضي الله عنه قَالَ : قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُكْثِرُ الصَّلَاةَ عَلَيْكَ فَكَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلَاتِي ؟ فَقَالَ : مَا شِئْتَ . قَالَ قُلْتُ الرُبُعَ ؟ قَالَ : مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ . قُلْتُ النِّصْفَ ؟ قَالَ : مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ . قَالَ قُلْتُ فَالثُّلُثَيْنِ ؟ قَالَ : مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ . قُلْتُ أَجْعَلُ لَكَ صَلَاتِي كُلَّهَا ؟ قَالَ : إِذًا تُكْفَى هَمَّكَ وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ . ( )
আমি একদা রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম এয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি আপনার প্রতি অধিকহারে দুরূদ ও সালাম পাঠ করি, এয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি (রাত-দিনের মধ্যে) কত সময় আপনার প্রতি দুরূদ-সালামের জন্য নির্ধারণ করবো? তিনি উত্তরে বললেন, তুমি যে পরিমাণ চাও, আমি বললাম, রাত-দিনের এক চতুর্থাংশ সময়? বললেন, যা চাও, যদি এর চেয়ে বেশী সময় নির্ধারণ কর তাহলে আরও ভাল হয়। আমি বললাম, যদি রাত-দিনের অর্ধেক সময়? বললেন, তুমি যা চাও, আর যদি তার চেয়েও অধিক পরিমাণে পাঠ করো তাহলে আরও ভাল হয়, আমি বললাম, যদি দুই তৃতীয়াংশ? বললেন, তুমি যা চাও, যদি তারও বেশি হয় তাহলে আরও ভাল হয়, তখন আমি বললাম, তাহলে আমি রাত-দিনের সবটুকু সময় আপনার প্রতি দুরূদ-সালাম পাঠের জন্য নির্ধারণ করে নিলাম। তখন রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি তাই করো তাহলে তোমার সকল চিন্তা-পেরেশানী দূরীভূত হয়ে যাবে এবং তোমার সকল গুনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হবে।( )
উপরোক্ত হাদীস শরীফ থেকে বুঝা যায়, রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এত অধিকহারে উক্ত সাহাবীকে দুরূদ পাঠ করার অনুমতি দিয়েছেন যে, তাঁর দৈনন্দিন জীবনের একমাত্র ওযীফা ছিল দুরূদ পাঠ করা, আর এতে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম খুশী হয়ে ওই সাহাবীকে দুনিয়া ও আখিরাতের সকল প্রকার চিন্তা-পেরেশানী মুক্ত হবার এবং জীবনের সকল গুনাহ্ ক্ষমা হয়ে যাবার সুসংবাদও দিয়েছেন।
আর আযানের পূর্বের সময়টুকু উপরোক্ত সময় থেকে পৃথক সময় নয় বরং ওই সাহাবীর দুরুদ পাঠের সময়গুলোর একটি হলো আযানের পূর্ব ও পরবর্তী সময়। কেননা রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাঁকে আযানের পূর্বে দুরূদ পড়তে নিষেধ করেননি বরং আযানের পূর্বে ও পরেও দুরূদ পাঠের অনুমতি দিয়েছেন। অতএব, আযানের পূর্বে ও পরে দুরূদ-সালাম পাঠ করা শুধু বৈধ নয় বরং একটি মুস্তাহাব কাজ।
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : كان بلالٌ إذا أرادَ أنْ يُقِيمَ الصلاةَ قال السلامُ عليْكَ أيُّها النبيُّ ورحمَةُ اللهِ وبَرَكَاتُهُ الصلاةُ رَحِمَكَ اللهُ( )
হযরত আবু হোরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত বেলাল রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু যখন ইক্বামত দেয়ার ইচ্ছাপোষন করতেন তখন তিনি বলতেন,
السلامُ عليْكَ أيُّها النبيُّ ورحمَةُ اللهِ وبَرَكَاتُهُ الصلاةُ رَحِمَكَ اللهُ
“হে প্রিয়নবী! আপনার প্রতি সালাম, আল্লাহর রহমত ও বরকত নাযিল হোক এবং আল্লাহ তাআলা আপনার প্রতি করুনা করুক।”( )
আযানের পরে সালাত-সালাম পাঠের ক্ষেত্রে আল্লামা শামী তাঁর রদ্দুল মুহতার এ বলেন, মাগরিবের আযানের পূর্বে ও পরে দুই বার সালাত-সালাম পাঠ করা হতো, যা ‘খাযায়েন’ নামক কিতাবে সুস্পষ্টবাবে বর্ণনা করেছেন, এ থেকে বুঝা যায়, আযানের পর সালাত-সালাম পাঠ করার নিয়মটি তাঁর সময়েও প্রচলিত ছিল, অথবা এ দুইবার সালাত-সালাম পাঠ করার সময়টি ছিল, একটি মাগরিবের পরে আর অপরটি এশার নামাযের পূর্বে অথবা মাগরিব ও ইশার নামাযের মধ্যবর্তী সময়ে, আর তা ছিল জুমার দিন ও সোমবারের দিন, যা দামেশকে (সিরিয়ার রাজধানী) ‘তাযকীর’ নামে পরিচিত ছিল। একইভাবে যেটি জুমার দিনের আযানের পূর্বে প্রচলন ছিল।
وقال السخاوي في القول البديع: أحدث المؤذنون الصلاة والسلام على رسول الله صلى الله عليه وسلم عقب الاذان للفرائض الخمس جلا الصبح والجمعة فإنهم يقدمون ذلك قبل الاذان، وإلا المغرب فلا يفعلونه لضيق وقتها، وكان ابتداء حدوثه في أيام الناصر صلاح الدين يوسف بن أيوب وبأمره. وذكر بعضهم أن أمر الصلاح بن أيوب بذلك كان في أذان العشاء ليلة الجمعة، ثم إن بعض الفقراء زعم أنه رأى رسول الله صلى الله عليه وسلم وأمره أن يقول للمحتسب أن يأمر المؤذنين أن يصلوا عليه عقب كل أذان فسر المحتسب بهذه الرؤيا فأمر بذلك واستمر إلى يومنا هذا.
وقد اختلف في ذلك هل هو مستحب أو مكروه أو بدعة أو مشروع؟ واستدل للأول بقوله: * (وافعلوا الخير) * ومعلوم أن الصلاة والسلام من أجل القرب لا سيما وقد تواترت الاخبار على الحث على ذلك مع ما جاء في فضل الدعاء عقبه والثلث الأخير وقرب الفجر. والصواب أنه بدعة حسنة وفاعله بحسب نيته انتهى. ( )
মূল কিতাবের বক্তব্যের নিরিখে ব্যাখ্যাকারী বলেন, এটি বিদআতে হাসানাহ্ বা প্রচলনকৃত উত্তম কাজ। ‘নাহর’ নামক কিতাবে ‘আল কাওলুল বাদী’ নামক কিতাবের সূত্রে বর্ণনা করেন, উপরোক্ত মতামতের ভিত্তিতে বিশুদ্ধ অভিমত হলো, এটি বিদ্আতে হাসানাহ্’।( )
الحافظ ابن حجر نقل عن بعض الحنفية أن النداء قبل الفجر لم يكن بألفاظ الأذان، وإنما كان تكبيرا أو تسبيحا كما يقع للناس اليوم . ( )
ইমাম ইবনে হাজর আল আসক্বালানী কতেক উল্লেখযোগ্য হানাফী আলিমদের সূত্রে বর্ণনা করেন, ফজরের আযানের পূর্বে মুয়াযযিনগণ আহবানের উদ্দেশ্যে যা বলতেন তার শব্দগুলো মূলত আযানের শব্দ ছিলনা বরং তা ছিল তাকবীর, তাসবীহ ইত্যাদি, যার প্রচলন এখনও বিদ্যমান।”( )
وقال شمس الدين أبو عبد الله محمد بن محمد بن عبد الرحمن الطرابلسي المغربي، المعروف بالحطاب الرُّعيني المالكي في مواهب الجليل في شرح مختصر خليل
ذكر ابن سهل عن ابن عتاب والمسيلي أنهما أجازا قيام المؤذنين بعد نصف الليل بالذكر والدعاء.
وقال صاحب مواهب الجليل في شرح مختصر خليل: الحافظ السخاوي وألف جزءا في سماه {القول المألوف في الرد على منكر المعروف} ، وقال فيه بعد كلام كثير: فعلم أن المؤذن قد أتى بسنة شريفة، وهي الدعاء في هذا الوقت المرجو الإجابة، وكونه جهر به ملتحق بالمواطن التي جاءت السنة بالجهر فيها فهو إن شاء الله سنة، ثم ذكر السخاوي عن جماعة من الشافعية وغيرهم أنهم أفتوا بجواز ذلك
‘রদ্দুল মুহতার’ এ বিদ্যমান আল্লামা শামী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হির ভাষ্য থেকে প্রমাণিত হয় যে, ‘দুররুল মুখতার’ নামক কিতাব রচনাকালে মাগরিবের পূর্বে ও পরে অথবা মাগরিবের পরে ও ইশার আযানের পূর্বে অনুরূপভাবে জুমার আযানের পূর্বে সালাত-সালাম পাঠ করার প্রচলন ছিল। অর্থাৎ তা ব্যাপকভাবে বিশ্বের মুসলমানদের নিকট পরিচিত ও প্রচলিত ছিল যাকে ফুকহায়ে কেরাম একটি মুস্তাহাব ও উত্তম আমল হিসেবে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
ইমাম সাখাভী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি তাঁর ‘আল কাওলুল বাদী’ নামক কিতাবে লিখেন “মুয়াযযিনগণ ফযর এবং জুমার নামায ব্যতীত অন্যান্য নামাযের আযানের পরে সালাত-সালাম পাঠ করার নিয়ম প্রচলন করেন, আবার তারা ওই সমস্ত নামাযের আযানের পূর্বেও সালাত-সালাম প্রদান করতেন।”( )
আলিমগণের অভিমত হলো যে, প্রত্যেক আযানদাতা, ইক্বামতদাতা ও শ্রোতার জন্য সুন্নাত হলো, আযান ও ইক্বামত থেকে অবসর হওয়ার পর রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের প্রতি দুরূদ-সালাম প্রেরণ করা।( )
আল ফিক্বহ্ আলাল মাযাহিবিল আরবা’ঃ ফিক্বহ্ শাস্ত্রের প্রসিদ্ধ এ কিতাবে আযানের পূর্বে শুধু সালাত-সালামকে বৈধ হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়নি বরং এ বিষয়ে স্বতন্ত্র একটি বাব বা অধ্যায় স্থাপন করা হয়েছে। আর শিরোনামটি ছিল আযানের পূর্বে সালাত-সালাম বিষয়ক অধ্যায়।( )
তাফসীরে রূহুল বয়ানঃ বিশ্ববিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘রুহুল বয়ান’-এর লিখক আল্লামা ইসমাইল হক্কী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা সালাত-সালাম পাঠের মুস্তাহাব সময়গুলোর বর্ণনার এক পর্যায়ে বলেন, অর্থাৎ প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ ও ফযীলতপূর্ণ কাজ করার পূর্বে দুরূদ ও সালাম পাঠ করা মুস্তাহাব।( )
আযানে একটি ইসলামী শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ ও ফযীলতমন্ডিত আমল তাই এর পূর্বেও সালাত-সালাম পাঠ করা মুস্তাহাব।
সহীহ্ মুসলিম শরীফ: হাদীস শাস্ত্রের সর্বাধিক বিশুদ্ধ কিতাবদ্বয়ের একটি হলো মুসলিম শরীফ, এতে বর্ণিত আছে, রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
فعن عبد الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما أنه سمع النبي صلى الله عليه وسلم يقول : إِذَا سَمِعْتُمْ الْمُؤَذِّنَ فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ ، ثُمَّ صَلُّوا عَلَيَّ ، فَإِنَّهُ مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلاةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا ، ثُمَّ سَلُوا اللَّهَ لِي الْوَسِيلَةَ ، فَإِنَّهَا مَنْزِلَةٌ فِي الْجَنَّةِ لا تَنْبَغِي إِلا لِعَبْدٍ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ ، وَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَنَا هُوَ ، فَمَنْ سَأَلَ لِي الْوَسِيلَةَ حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ ( )
যখন তোমরা আযান শুনবে তখন উত্তরে তাই বলো যা মুয়ায্যিন বলছে, অতঃপর তোমরা আমার প্রতি সালাত পাঠ কর।( )
এ হাদীস শরীফ থেকে আযানের পর সালাত-সালাম পাঠ করা সুন্নাত প্রমাণিত হলো এবং পূর্ববর্তী বর্ণনা থেকে আযানের পূর্বে সালাত-সালাম মুস্তাহাব বা সুন্নত প্রমাণিত হলো।
ফাতাওয়ায়ে শামী :এ বিষয়ে ফাতাওয়ায়ে শামীতে উল্লেখ করা হয়েছে এভাবে-
مطلب نص العلماء على استحباب الصلاة على النبي صلى الله عليه وسلم في مواضع ( قوله ومستحبة في كل أوقات الإمكان ) أي حيث لا مانع( )
অর্থাৎ শুধুমাত্র নিষিদ্ধ সময় ও স্থান ব্যতীত সম্ভাব্য সকল সময় ও স্থানে সালাত-সালাম মুস্তাহাব। ( )
এ নিষিদ্ধ সময় ও স্থান সম্পর্কে তিনি আরও বলেন:
مطلب في المواضع التي تكره فيها الصلاة على النبي صلى الله عليه وسلم[ تنبيه ] تكره الصلاة عليه صلى الله عليه وسلم في سبعة مواضع : الجماع ، وحاجة الإنسان ، وشهرة المبيع والعثرة ، والتعجب ، والذبح ، والعطاس على خلاف في الثلاثة الأخيرة شرح الدلائل ، ونص على الثلاثة عندنا( )
অর্থাৎ সাতটি স্থানে ও সময়ে সালাত-সালাম পাঠ করা নিষেধ। আর তা হলো- ১. স্বামী-স্ত্রী মিলনকালে ২. মল-মূত্র ত্যাগকালে, ৩. পণ্য সামগ্রী বিক্রয়কালে তার বহুল প্রচারের উদ্দেশ্যে, ৪. হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে বা যাবার সময়, ৫. আশ্চর্যজনক কোন ঘটনা শ্রবণ বা দর্শনকালে, ৬. পশু যবেহ করার সময়, ৭. হাঁচি ও হাই তোলার সময়।( )
সুতরাং উপরোক্ত নিষিদ্ধ সময়গুলো ব্যতীতঅন্য যে কোন সময় সালাত-সালাম পাঠ করা বৈধ। আর আযানের পূর্ব ও পরের সময়টি নিষিদ্ধ সময়গুলোর অন্তর্ভুক্ত নয়।
মক্কা মুকাররমার নন্দিত মুফতী আল্লামা যিকরী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি তাঁর প্রসিদ্ধ কিতাব ‘ইয়ানাতুত্ তালেবীন’ এ লিখেন’
وجاء في “إعانة الطالبين” (১/২৮০) للسيد البكري الدمياطي (ت بعد ১৩০২هـ) قوله : وتسن الصلاة على النبي صلى الله عليه وسلم قبلهما: أي الأذان والإقامة ” انتهى . ( )”
অর্থাৎ আযান ও ইক্বামতের পূর্বে সালাত-সালাম প্রদান করা সুন্নাত।( )
আল্লামা কাযী আয়ায রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি, তিনি সালাত-সালামের মুস্তাহাব সময়গুলো সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন,
أما المواطن التي يستحب فيها الصلاة والسلام على النبي صلى الله عليه وسلم فهي : عند ذكره وسماع اسمه ، أو كتابته، وعند الأذان
অর্থাৎ নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের প্রতি দুরুদ-সালাম প্রেরণের মুস্তাহাব সময়গুলোর মধ্যে হলো, তাঁর নাম মুবারক উচ্চারণকালে শ্রবণকালে ও লেখার সময় এবং আযানের পূর্বে। ( )
وجاء في “إعانة الطالبين” (১/২৮০) للسيد البكري الدمياطي (ت بعد ১৩০২هـ) قوله ” وتسن الصلاة على النبي صلى الله عليه وسلم قبلهما : أي الأذان والإقامة “( )
عن أبي هريرة قال : كان بلال إذا أراد أن يقيم الصلاة قال : السلام عليك أيها النبي ورحمة الله وبركاته ، الصلاة رحمك الله . ( )
দাফনের পর কবরে আযান দেওয়া
প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তিকে কবরস্থ করার পর কবরের উপর আযান দেওয়ার হুকুম কী?
উত্তর: এ কাজটি বৈধ, কেননা এটি হলো যিকর, আর যিকর হলো ইবাদত। যেস্থানে যিকর হয়, সেস্থানে আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে রহমত ও বরকত নাযিল হয়, আর কবরবাসী রহমত ও বরকতের অতি প্রত্যাশী।

প্রশ্ন : এর স্বপক্ষে কোন দলীল আছে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, বিশুদ্ধ হাদীসে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
إِنَّ الْمُؤَذِّنَ يُغْفَرُ لَهُ مَدَى صَوْتِهِ ، وَيُصَدِّقُهُ كُلُّ رَطْبٍ وَيَابِسٍ سَمِعَهُ ، وللشَّاهِدُ عَلَيْهِ خَمْسَةً وَعِشْرِينَ دَرَجَةً ( )
আল্লাহ্ তা‘আলা আযানের ধ্বনি উচ্চকারীকে ক্ষমা করে দেন তার আযানের শব্দ যতটুকু যায় ততটুকুর জন্য এবং তার জন্য আল্লাহ্ তা‘আলার দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করে ওই সকল তরল ও শুস্ক বস্তু ও যারা তার আযানের শব্দ শুনেছে।( )
এ হাদীস শরীফ থেকে জানা গেলো যে, আযান হলো গুনাহ্ ক্ষমার মাধ্যম ও কারণ, আর কবরবাসী এ মাগফিরাতের অতি মুহতাজ।
ইমাম ইবনু আবেদীন ‘রদ্দুল মুহতার’ নামক ফিক্বহ শাস্ত্রের প্রসিদ্ধ ও সর্বজন গৃহীত কিতাবে উল্লেখ করেন,
يسن الأذان في أذن المولود حين يولد، وفي أذن المهموم فإنه ينزل الهم، وخلف المسافر، ووقت الحريق، وعند مزدحم الجيش، وعند الضلال في السفر، وللمصروع والغضبان، ومن ساء خلقه من إنسان أو بهيمة، وعند إنزال الميت القبر قياساً على أول خروجه إلى الدنيا
নামাযের সময় ছাড়াও আযান দেওয়া কখনও কখনও সুন্নাত, যেমন, নবজাতকের কানে আযান দেওয়া, চিন্তাগ্রস্থ, বেহুশ হয়ে যাওয়া ব্যক্তি, ক্রোধান্বিত ও উগ্র স্বভাবের মানুষ বা চতুষ্পদ জন্তুর সামনে বা কানে আযান দেওয়া। অনুরূপভাবে শত্রুর মুখোমুখি হবার সময় ও আগুন লাগার সময় আযান দেওয়া। আর মৃত ব্যক্তিকে কবরে নামানোর সময়ও আযান দেওয়া সুন্নাত। যেহেতু দুনিয়াতে আসার পরপরই আযান দেওয়া সুন্নত। সুতরাং এর উপর ভিত্তি করে দুনিয়া থেকে চিরবিদায়ের সময়ও আযান দেওয়া সুন্নাত।( )

অন্য আরেকটি বিশুদ্ধ হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جَابِرٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، قَالَ : لَمَّا انْتَهَوْا إِلَى قَبْرِ سَعْدٍ نَزَلَ فِيهِ أَرْبَعَةُ نَفَرٍ : الْحَارِثُ بْنُ أَوْسِ بْنِ مُعَاذٍ ، وَأُسَيْدُ بْنُ الْحُضَيْرِ ، وَأَبُو نَائِلَةَ سِلْكَانُ بْنُ سَلامَةَ ، وَسَلَمَةُ بْنُ سَلامَةَ بْنِ وَقْشٍ ، وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاقِفٌ عَلَى قَدَمَيْهِ فَلَمَّا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ تَغَيَّرَ وَجْهُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، وَسَبِّحَ ثَلاثًا ، فَسَبَّحَ الْمُسْلِمُونَ ثَلاثًا ، حَتَّى ارْتَجَّ الْبَقِيعُ ، ثُمَّ كَبَّرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلاثًا ، وَكَبَّرَ أَصْحَابُهُ ثَلاثًا ، حَتَّى ارْتَجَّ الْبَقِيعُ بِتَكْبِيرِهِ ، فَسُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذَلِكَ ، فَقِيلَ لَهُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، رَأَيْنَا بِوَجْهِكَ تَغَيُّرًا ، وَسَبَّحْتَ ثَلاثًا ، قَالَ : ” تَضَايَقَ عَلَى صَاحِبِكُمْ قَبْرُهُ وَضُمَّ ضَمَّةً لَوْ نَجَا مِنْهَا أَحَدٌ لَنَجَا سَعْدٌ مِنْهَا ، ثُمَّ فَرَّجَ اللَّهُ عَنْهُ( ) ”
যখন হযরত সাদ ইবনে মায়ায রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুকে দাফন করা হলো তখন দীর্ঘ সময় ধরে রসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবাগণ তাসবীহ্ পাঠ করেন, অতঃপর তাকবীর পাঠ করলে আর লোকেরাও তাঁর সাথে তাসবীহ্ ও তাকবীর পাঠ করলেন, তখন সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, এয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি কেন দীর্ঘ সময় ধরে তাসবীহ্ ও তাকবীর পাঠ করলেন? তখন উত্তরে তিনি এরশাদ করলেন, এ সৎকর্মপরায়ণ নেককার লোকটির উপর কবর সংকোচিত হয়ে গেল (এ তাসবীহ্ ও তাকবীর পাঠের বরকতে) অতঃপর আল্লাহ্ তা‘আলা তার কবরকে প্রসারিত ও প্রশস্ত করে দিলেন।( )
আল্লামা ত্বিবী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি এ হাদিসটিতে আরও উল্লেখ করেন যে, রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আমি তোমাদেরকে নিয়ে তাসব্হী ও তাকবীর পাঠ করছিলাম এক পর্যায়ে আল্লাহ্ তা‘আলা তার কবর প্রশস্ত করে দিলেন।( )
অপর একটি হাদীসে হযরত সা‘ঈদ ইবনে মু‘সাইয়্যেব রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন,
عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيِّبِ، قَالَ : حَضَرْتُ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، فِي جَنَازَةٍ ، فَلَمَّا وَضَعَهَا فِي اللَّحْدِ ، قَالَ : ” بِسْمِ اللَّهِ ، وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ ، وَعَلَى مِلَّةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ” ، فَلَمَّا أَخَذَ فِي تَسْوِيَةِ اللَّبَنِ عَلَى اللَّحْدِ ، قَالَ : ” اللَّهُمَّ أَجِرْهَا مِنَ الشَّيْطَانِ ، وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ ، وَمِنْ عَذَابِ النَّارِ ” ، فَلَمَّا سَوَّى الْكَثِيبَ عَلَيْهَا ، قَامَ جَانِبَ الْقَبْرِ ، ثُمَّ قَالَ : ” اللَّهُمَّ جَافِ الأَرْضَ عَنْ جَنْبِهَا ، وَصَعِّدْ رُوحَهَا ، وَلَقِّهَا مِنْكَ رِضْوَانًا ” ، فَقُلْتُ : أَشَيْءٌ سَمِعْتَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، أَمْ شَيْءٌ قُلْتَ مِنْ رَأْيِكَ ؟ قَالَ : إِنِّي إِذًا لَقَادِرٌ عَلَى الْقَوْلِ ، بَلْ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ( )
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা একটি জানাযায় উপস্থিত হলেন, যখন মাইয়্যতকে কবরে রাখলেন তখন বললেন, বিসমিল্লাহ্ ওয়া ফী সাবীলিল্লাহ্ (আল্লাহর নামে এবং আল্লাহর রাস্তায় তাকে সোপর্দ করলাম) আর যখন কবর সমান, করছিলেন তখন বললেন, আল্লাহুম্মা আযিরহা মিনাশ্ শায়ত্বান ওয়া মিন আযাবিল কবর’ (হে আল্লাহ! তাকে শয়তান থেকে এবং কবরের আযাব থেকে নিরাপদ রাখো) অতপর তিনি বললেন, আমি এভাবে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি।( )
কাঁচা ও সতেজ খেজুরের ঢাল যদি শুকনো না হওয়া পর্যন্ত তাসবীহ্ পাঠ করার কারণে কবরের আযাব মাফ বা হালকা করা হয় ( )
عَنْ ابن عبَّاسٍ رَضِيَ اللَّـهُ عَنْهُمَا قَالَ: “مَرَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّـهُ عَلَيْهِ سَلَّمَ بِقَبْرينِ فَقَالَ: إِنِّهُمَا لَيُعَذَّبَانِ، وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ، أَمَّا أَحَدُهُمَا فَكَانَ لَا يَسْتَتِرُ مِنَ الْبَوْلِ، وَأَمَّا الآخَرُ فَكَانَ يَمْشِي بِالنَّمِيمَةِ، فَأَخَذَ جَريدةً رِطْبَةً فَشَقَّهَا نِصْفَين فَغَرَزَ فِي كُلِّ قَبْرٍ وَاحِدَةً. فَقَالُوا: لِـمَ فَعَلْتَ هَذَا يَا رَسُولَ الله؟. فَقَالَ: لَعَلَّهُ يُخَفِّفُ عَنْهُمَا مَا لَـمْ يَيْبَسَا( )
তাহলে আযান দ্বারা মৃত ব্যক্তি আরও অধিক উপকৃত হবে, কেননা আযানে তাকবীর, তাহলীল ও দুই শাহাদত বিদ্যমান।
অনুরূপভাবে আযান দ্বারা শয়তান বিতাড়িত হয় এবং শয়তান থেকে রক্ষা ও নিরাপদ থাকা যায়। ( )
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: ্রإِذَا نُودِيَ لِلصَّلاَةِ أَدْبَرَ الشَّيْطَانُ لَهُ ضُرَاطٌ ্রوفي رواية: وَلَهُ حُصَاصٌগ্ধ حَتَّى لاَ يَسْمَعَ التَّأْذِينَ، فَإِذَا قُضِيَ التَّأْذِينُ أَقْبَلَ، حَتَّى إِذَا ثُوِّبَ بِالصَّلاَةِ أَدْبَرَ. حَتَّى إِذَا قُضِيَ التَّثْوِيبُ أَقْبَلَ، حَتَّى يَخْطِرَ بَيْنَ الْمَرْءِ وَنَفْسِهِ. يَقُولُ لَهُ: اذْكُرْ كَذَا، وَاذْكُرْ كَذَا، لِمَا لَمْ يَكُنْ يَذْكُرُ مِنْ قَبْلُ. حَتَّى يَظَلَّ الرَّجُلُ مَا يَدْرِي كَمْ صَلَّىগ্ধ.
وفي رواية: ্রفَإِذَا لَمْ يَدْرِ أَحَدُكُمْ كَمْ صَلَّى فَلْيَسْجُدْ سَجْدَتَيْنِ. وَهُوَ جَالِسٌগ্ধ.ولمسلم من حديث جَابِرٍ مرفوعاً: ্রإِنَّ الشَّيْطَانَ إِذَا سَمِعَ النِّدَاءَ بِالصَّلاَةِ، ذَهَبَ حَتَّى يَكُونَ مَكَانَ الرَّوْحَاءِগ্ধ. قَالَ سُلَيْمَانُ: فَسَأَلْتُهُ عَنِ الرَّوْحَاءِ؟ فَقَالَ: هِيَ مِنَ الْمَدِينَةِ سِتَّةٌ وَثَلاَثُونَ مِيلاً. ( )
অন্য একটি হাদীসে রয়েছেإذا أذن في قرية أمنه الله من عذابه ذلك اليوم
যখন কোন গ্রামে বা অঞ্চলে আযান দেয়া হয় তখন আল্লাহ্ তা‘আলা ওই দিন এ গ্রাম ও গ্রামবাসীকে শাস্তি প্রদান থেকে নিরাপদ রাখবেন। ( )
আর কবরে আযান দেওয়া হয় মৃত ব্যক্তির উপকারের জন্য, যা মাইয়্যেতকে এক প্রকার তালক্বীন ও সঙ্গ দেওয়ার শামিল, বিশেষ করে মুনকার-নকীরের উপস্থিত ও প্রশ্নকালীন সময়ে মাইয়্যেতকে তালক্বীন দেয়া একটি সুন্নত ও প্রিয় আমল।
যা হযরত আমর ইবনে আস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু আমল ও ওসীয়ত দ্বারা বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত।
মুসলিম শরীফে রয়েছে: হযরত আমর ইবনে আস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু ইন্তিকালের পূর্বে তাঁর ছেলেকে ওসীয়্যত করে বললেন,
فَإِذَا أَنَا مُتُّ فَلَا تَصْحَبْنِي نَائِحَةٌ، وَلَا نَارٌ، فَإِذَا دَفَنْتُمُونِي فَشُنُّوا عَلَيَّ التُّرَابَ شَنًّا، ثُمَّ أَقِيمُوا حَوْلَ قَبْرِي قَدْرَ مَا تُنْحَرُ جَزُورٌ وَيُقْسَمُ لَحْمُهَا، حَتَّى أَسْتَأْنِسَ بِكُمْ، وَأَنْظُرَ مَاذَا أُرَاجِعُ بِهِ رُسُلَ رَبِّي( )
যখন তোমরা আমাকে দাফন করবে এবং আমার কবরকে প্রস্তত করবে, তখন আমার কবরের চতুর্পাশে একটি উট জবাই করে তার চামড়া খোলা ও গোশতগুলো বন্টন করতে যে পরিণাম সময় লাগে সে পরিমাণ সময় অবস্থান করবে, যাতে আমি তোমাদেরকে দেখে সাহস ও আনন্দ পাই। আর তোমরা দেখ আমি আমার রবের ওই দুই ফিরিশতা কী উত্তর দিই।( )
যদি কবরের পাশে মুসলমানদের দাঁড়িয়ে থাকলে এত বেশী উপকার হয়, তাহলে আযান দিলে তো আরও বেশী উপকার হবে নিঃসন্দেহে।

জানাযার নামাযের পর দো‘আ
প্রশ্ন : জানাযার নামাযের পর দো‘আ করার হুকুম কী?
উত্তর: জানাযার নামাযের পর দো‘আ করা বৈধ ও মুস্তাহাব, এ বিষয়ে শরীয়তে কোথাও নিষেধ নেই। মানুষ সার্বক্ষণিক দো‘আর মুহতাজ, জীবিত হোক বা মৃত হোক আর মৃত ব্যক্তি দো‘আর মুহতাজ জীবিতের চেয়ে অনেক বেশী।

প্রশ্ন : তার বৈধতার পক্ষে কোন দলীল আছে কী?
উত্তর: সহীহ্ মুসলিম শরীফে বর্ণিত, রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ ، يَقُولُ : أَرْخَصَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي رُقْيَةِ الْحَيَّةِ لِبَنِي عَمْرٍو ، قَالَ أَبُو الزُّبَيْر : وَسَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ ، يَقُولُ : لَدَغَتْ رَجُلًا مِنَّا عَقْرَبٌ وَنَحْنُ جُلُوسٌ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَ رَجُلٌ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، أَرْقِي ، قَالَ : ” مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ أَنْ يَنْفَعَ أَخَاهُ فَلْيَفْعَلْ “( )
তোমাদের কেউ যদি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রতি উপকার করতে সক্ষম হয় সে যেন অবশ্যই তা করে। ( )
আর মৃত ব্যক্তির জন্য সবচেয়ে বড় উপকার হলো, তার জন্য দো‘আ করা। পবিত্র ক্বোরআনে আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন,
وَالَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ ۖ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًا
এবং ওইসব লোক, যারা এ প্রার্থনা করে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের দিক থেকে ফিরিয়ে দিন জাহান্নামের শাস্তিকে, কেননা তার শাস্তি হচ্ছে গলার শৃঙ্খল। [সূরা ফুরক্বান, আয়াত-৬৫] সুতরাং পরম করুণাময়ের প্রকৃত বান্দাদের আলামত হলো সদা-সর্বদা মহান আল্লাহর দরবারে এ প্রার্থনা করা যে, তিনি যেন সকল মুসলমান (মৃত ও জীবিত) থেকে জাহান্নামের শাক্তি প্রতিহত করলেন। আর জীবিতদের চেয়ে মৃতরাই আল্লাহর প্রিয়জনদের দো‘আর সর্বাধিক হক্বদার পবিত্র ক্বোরআনে অন্যত্র আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন:
وَالَّذِينَ جَاءُوا مِن بَعْدِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ
আর যারা তাঁদের পরে আসবে তারা এ প্রার্থনা করবে যে, হে আমাদের প্রতিপালক ক্ষমা করো আমাদেরকে এবং আমাদের ওই সকল ভাইদেরকে যারা আমাদের পূর্বে ঈমানসহকারে গত হয়েছে, আর আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের প্রতি কোন প্রকার হিংসা-বিদ্বেষ রেখোনা, হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয় তুমিই অতি দয়ার্দ্র, করুণাময়। [সূরা হাশর, আয়াত-১০] এ আয়াতে আল্লাহ্ তা‘আলা জীবিত ঈমানদারদের নিকট তলব করেছেন যে, তারা যেন তাদের মৃত ভাইদের জন্য সদা-সর্বদা মাগফিরাত বা ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং অধিকহারে তাদের জন্য দো‘আ করেন।
সুতরাং যারা জানাযার নামাযের পর দো‘আ করবে তারা মূলতঃ ক্বোরআনুল কারীমের উপরোক্ত আয়াতের উপরই আমল করবে।
পাশাপাশি এখানে সম্মিলিতভাবে দো‘আ করার প্রতিও উৎসাহিত করা হয়েছে। বিশুদ্ধ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : إِذَا صَلَّيْتُمْ عَلَى الْمَيِّتِ فَأَخْلِصُوا لَهُ الدُّعَاءَ ( )
তোমরা যখন মৃত ব্যক্তির উপর জানাযার নামায পড়ে ফেলবে, তখন তোমরা কালবিলম্ব না করে পরক্ষণেই তার জন্য নিষ্ঠার সাথে দো‘আ করো, ( )
এ হাদীস শরীফে فَأَخْلِصُوا শব্দের মধ্যে যে )ف ফা( বিদ্যমান তার অর্থ হলো কোন প্রকার বিলম্ব না করে একটার পর অপর কাজটা করা। তাই জানাযার পর দো‘আ করা বিশুদ্ধ হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত।
মূতার যুদ্ধে হযরত যায়দ ইবনে হারেসা, হযরত জাফর ইবনে আবু তালেব ও হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে রাওয়াহা শাহাদাত বরণ করার পর রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম একে একে সকলের জানাযার নামায আদায় করলেন ও তিনি তাঁদের জন্য দো‘আ করলেন এবং উপস্থিত সাহাবাগণকে বললেন, اسْتَغْفِرُوا لأَخِيكُمْ وَاسْأَلُوا لَهُ التَّثْبِيتَ فَإِنَّهُ الآنَ يُسْأَلُ তোমরাও তোমাদের ভাইয়ের জন্য দো‘আ ও ইস্তিগফার করো।
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে,
عَنْ عُثْمَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ , قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ إِذَا فَرَغَ مِنْ دَفْنِ الْمَيِّتِ , قَالَ : ” اسْتَغْفِرُوا لِمَيِّتِكُمْ وَاسْأَلُوا لَهُ التَّثْبِيتَ فَإِنَّهُ الآنَ يُسْأَلُ “( )
নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করলেন, তোমরা তার জন্য অথবা তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য দো‘আ প্রার্থনা কর। ( )
হযরত ওমর ফারুক্ব রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর জানাযায় উপস্থিত হয়ে হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে সালাম রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু জানাযা না পেয়ে বললেন,
وَرُوِيَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلَامٍ أَنَّهُ فَاتَتْهُ الصَّلَاةُ عَلَى جِنَازَةِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ فَلَمَّا حَضَرَ قَالَ: إنْ سَبَقْتُمُونِي بِالصَّلَاةِ عَلَيْهِ فَلَا تَسْبِقُونِي بِالدُّعَاءِ لَهُ،( )
তোমরা যদিও আমার পূর্বে তাঁর নামাযে জানাযা সম্পন্ন করে নিয়েছো কিন্তু আমার আগে তাঁর প্রতি দো‘আ সম্পন্ন করে নিওনা, অর্থাৎ জানাযা হয়ে গেলেও এখনও তো দো‘আ বাকী রয়েছে তাই আমরা সকলে মিলে তথা সম্মিলিতভাবে তাঁর জন্য দো‘আ করবো।( )
বর্ণিত আছে যে, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তির জানাযা সম্পন্ন করার পর হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুসহ কিছু লোক উপস্থিত হয়ে দ্বিতীয়বার জানাযা পড়তে চাইলে রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন,
أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى عَلَى جِنَازَةٍ فَلَمَّا فَرَغَ جَاءَ عُمَرُ وَمَعَهُ قَوْمٌ فَأَرَادَ أَنْ يُصَلِّيَ ثَانِيًا، فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ: صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الصَّلَاةُ عَلَى الْجِنَازَةِ لَا تُعَادُ، وَلَكِنْ اُدْعُ لِلْمَيِّتِ وَاسْتَغْفِرْ لَهُ( )
জানাযা হয়ে গেছে বরং তোমরা মৃত ব্যক্তির জন্য দো‘আ ও ইসতিগফার করো।’( )
وَرُوِيَ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ وَابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُمْ فَاتَتْهُمَا صَلَاةٌ عَلَى جِنَازَةٍ فَلَمَّا حَضَرَا مَا زَادَا عَلَى الِاسْتِغْفَارِ لَهُ( )
বর্ণিত আছে, একদা হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর ও হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা এক ব্যক্তির জানাযায় এসে জানাযা না পেয়ে মৃত ব্যক্তির জন্য দো‘আ ও ইসতিগফার করলেন।( )
অতএব, প্রমাণিত হলো যে, জানাযার নামাযের পর দো‘আ করা জায়েয এবং মুস্তাহাব কাজ।
কেউ কেউ বলে থাকে, জানাযা যেহেতু দো‘আ সুতরাং জানাযার পর দো‘আ করা যাবেনা।
আমরা এ আপত্তির জবাবে বলতে চাই, বারবার দো‘আ করা শরীয়তে অবৈধ নয় বরং তা মুস্তাহাব এবং রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত।
যেমন মুসলিম শরীফের হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম একই দু‘আ বার বার করেছেন: اَللّهُمَّ اَعِنّا اَللّهُمَّ اَعِنّا اَللّهُمَّ اَعِنّا ‘হে আল্লাহ্! আমাদেরকে সাহায্য করো, হে আল্লাহ! আমাদেরকে সাহায্য করো, হে আল্লাহ! আমাদেরকে সাহায্য করো।( )
এতে দেখা যায়, তিনি একই দো‘আ তিনবার করেছেন, তাই তিনবার দো‘আ করা মুস্তাহাব।( )

বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যে খাদ্য দ্রব্য
ও পানীয়ের উপর ফাতিহা পাঠ করা

প্রশ্ন : বরকতের উদ্দেশ্যে উপস্থিত খাদ্য ও পানীয়ের উপর ফাতেহা ও ক্বোরআনের বিভিন্ন সূরা বা আয়াত তিলাওয়াত করে দো‘আ করার হুকুম কী?
উত্তর: তা বৈধ ও মুস্তাহাব এবং শরীয়তের এক প্রকার নির্দেশ পালনেরই অংশ। কেননা রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
وَإِذَا أَكَلْتُمْ فَسَمُّوا حَتَّى لَا يُشْرِكَكُمْ فِي طَعَامِكُمْ ، فَإِنَّكُمْ إِنْ لَمْ تَفْعَلُوا أَشْرَكَكُمْ فِي طَعَامِكُمْ ( )
তোমরা যখন কোন খাদ্য গ্রহণ করে তার পূর্বে বিসমিল্লাহ্ পাঠ করো ( )
আর বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম ক্বোরআনুল কারীমেরই একটি আয়াত, তাই খাদ্যদ্রব্যের উপর ক্বোরআন তিলাওয়াত শুধু বৈধ নয় বরং রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশ পালনও।
মুসলিম শরীফে বর্ণিত,
عنْ أَبي هريرة أَوْ أَبي سَعِيدٍ الخُدْرِيِّ رضيَ اللَّهُ عنهما: شَك الرَّاوِي، وَلاَ يَضُرُّ الشَّكُّ في عَينِ الصَّحابي، لأَنهم كُلُّهُمْ عُدُولٌ، قال: لما كان يَوْمُ غَزْوَةِ تَبُوكَ، أَصابَ الناسَ مَجَاعَةٌ، فَقالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْ أَذِنْتَ لَنا فَنَحَرْنَا نَواضِحَنا، فَأَكلْنَا وَادَّهَنَّا؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم:” افْعَلُوا” فَجَاءَ عُمَرُ رضي اللَّهُ عنهُ، فقالَ: يَا رَسولَ اللَّهِ إِنْ فَعَلْتَ قَلَّ الظَّهْرُ، وَلَكِنْ ادْعُهُمْ بفَضْلِ أَزْوَادِهِمْ، ثُمَّ ادْعُ اللَّهِ لَهُمْ عَلَيْهَا بِالبَرَكَةِ لَعَلَّ اللَّه أَنْ يَجْعَلَ في ذلكَ البَرَكَةَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم:”نَعَمْ”فَدَعَا بِنِطْعٍ فَبَسَطهُ، ثُمَّ دَعَا بِفَضْلِ أَزَاوَدِهِمْ، فَجعلَ الرَّجُلُ يجيءُ بِكَفِّ ذُرَةٍ ويجيءُ الآخَرُ بِكَفِّ تَمْرٍ، ويجيءُ الآخَرُ بِكِسرَةٍ حَتى اجْتَمَعَ عَلى النِّطْعِ مِنْ ذَلِكَ شَيءٌ يَسِيرٌ، فَدَعَا رسُولُ اللَّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم عليه بِالبَرَكَةِ، ثُمَّ قالَ “خُذُوا في أَوْعِيَتِكُمْ، فَأَخَذُوا في أَوْعِيَتِهِمْ حَتَّى مَا تركُوا في العَسْكَرِ وِعاء إِلاَّ مَلأوهُ، وأَكَلُوا حَتَّى شَبعُوا وَفَضَلَ فَضْلَةٌ، فقالَ رَسُولُ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم:”أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ لاَ يَلْقَى اللَّه بِهِما عَبْدٌ غَيْرُ شاكٍّ، فَيُحْجبَ عَنِ الجَنَّةِ “( )
হযরত আবূ হুরায়রা এবং আবূ সা‘ঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা থেকে বর্ণিত, তাঁরা বলেন, তবুক যুদ্ধে মুসলমানদের যখন খাদ্যাভাব দেখা দিল তখন লোকেরা বললেন, এয়া রাসূলাল্লাহ্! যদি আপনি আমাদেরকে অনুমতি দিতেন তাহলে আমরা উট জবাই করে খেতাম ও চর্বিগুলোকে তেল হিসেবে ব্যবহার করতাম, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করলেন, ঠিক আছে তাই কর। তখন হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু পরামর্শ দিলেন এয়া রাসূলাল্লাহ্! যদি আপনি এ অনুমতি দেন তাহলে এক পর্যায়ে আমাদের বাহন অনেক কমে যাবে, আমরা বাহন সংকটে পরব। যদি এর পরিবর্তে আপনি তাদেরকে বলতেন, তারা নিজেদের যা আছে তা আপনার সামনে নিয়ে আসবে আর আপনি এতে বরকতের দো‘আ করবেন। হুযূর-ই করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাই করলেন, অতঃপর বললেন, তোমরা তোমাদের থলে বা পাত্রগুলোতে ভরে নাও, তারা প্রত্যেকে নিজেদের সব পাত্রে ভর্তি করে নিলেন এবং পরিতুষ্ঠভাবে খেলেন, এরপরও আরও অনেক অবশিষ্ট রয়ে গেল।( )
সূরা ফাতিহা, সূরা ইখলাস, আয়াতুল কুরসী, সূরা বাক্বারার শেষ আয়াত, সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত ইত্যাদি তেলাওয়াতের বিশেষত্ব হলো, এ সূরা ও আয়াতগুলোর বিশেষ ফযীলত হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে তাই।
যেমন সূরা ফাতিহা হলো ক্বুরআনের আসল, সূরা ইখলাস হলো, ক্বোরআনের এক তৃতীয়াংশ ইত্যাদি। অনুরূপভাবে দো‘আ সর্বাবস্থায় পালনীয় ও করণীয়।
মুসলিম শরীফের আরেকটি হাদীস বর্ণিত
عَنْ أَنَسٍ قَالَ ৃوَوَضَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَهُ عَلَى الطَّعَامِ فَدَعَا فِيهِ وَقَالَ فِيهِ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَقُولَ ( )
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূল-ই করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম খাদ্যের উপর হাত রেখে দো‘আ করলেন এবং এতে আরও বিভিন্ন (সূরা ও দো‘আ) কিছু পাঠ করলেন।( )
উপরোক্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলো উপস্থিত খাদ্য ও পানীয় সামগ্রীর উপর কোরআন তিলাওয়াত ও বিভিন্ন দো‘আ করা মুস্তাহাব ও রসুলের শিক্ষা।

শরীয়তে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা
আলায়হি ওয়াসাল্লামের এখতিয়ার

প্রশ্ন : শরীয়তের হুকুম-আহকাম প্রনয়ণের ক্ষেত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর কোন এখতিয়ার বা ইচ্ছার স্বাধীনতা আছে?
উত্তর: নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে এমন উঁচুস্থান ও মর্যাদা দান করেছেন, যা সৃষ্টির কাউকে দেয়া হয়নি এবং তাঁকে আল্লাহ্ তা‘আলা এমন সব বিশেষত্ব দান করেছেন যার সাথে কারও তুলনা হয় না, আর এ বিশেষত্বের অন্যতম হলো শরীয়তের হুকুম প্রণয়নে রসূলে করমি সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ্ তা‘আলা সম্পূর্ণরূপে এখতিয়ার ও অধিকার দিয়েছেন। তিনি হালাল-হারাম, বৈধ-অবৈধ ও আদেশ-নিষেধের সম্পূর্ণরূপে মালিক ও মুখতার।
১. আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন,
قُلْ أَطِيعُواْ اللَّهَ وَالرَّسُولَ فَإِن تَوَلَّوْا فَإِنَّ اللَّهَ لاَ يُحِبُّ الْكَافِرِينَ তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহ্ ও রসূলের। [আল-ইমরান, আয়াত-৩২] ২. আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন,
إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَن تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلَىٰ أَهْلِهَا وَإِذَا حَكَمْتُم بَيْنَ النَّاسِ أَن تَحْكُمُوا بِالْعَدْلِ ۚ إِنَّ اللَّهَ نِعِمَّا يَعِظُكُم بِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ سَمِيعًا بَصِيرًا
যখন তোমরা মানুষের মধ্যকার বিচার কার্য সম্পাদন করবে, তখন ন্যায়ের সাথে বিচার-ফয়সালা করবে। [সূরা নিসা, আয়াত-৫৮] ৩. আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন,
وَلَوْ أَنَّهُمْ رَضُوا مَا آتَاهُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَقَالُوا حَسْبُنَا اللَّهُ سَيُؤْتِينَا اللَّهُ مِن فَضْلِهِ وَرَسُولُهُ إِنَّا إِلَى اللَّهِ رَاغِبُونَ
খুব শীঘ্রই আল্লাহ্ আমাদেরকে দান করবেন তাঁর বিশেষ অনুগ্রহ এবং তাঁর রসূল। [সূরা তাওবা, আয়াত-৫৯] ৪. আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন,
وَمَا نَقَمُوا إِلَّا أَنْ أَغْنَاهُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ مِن فَضْلِهِ ۚ ধনী করে দিয়েছেন আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল স্বীয় বিশেষ অনুগ্রহ দ্বারা। [সূরা তাওবা, আয়াত-৭৪] ৫. আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন,
وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ ۗ وَمَن يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُّبِينًا
কোন মু’মিন নর-নারীর জন্য উচিত নয় যে, যখন আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল কোন বিষয়ে ফয়সালা দেন তখন সে বিষয়ে তাদের নিজেদের কোন এখতিয়ার থাকা। [সূরা আহযাব, আয়াত-৩৬] ৬. আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন,
وَيُحِلُّ لَهُمُ الطَّيِّبَاتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ الْخَبَائِثَ وَيَضَعُ عَنْهُمْ إِصْرَهُمْ وَالْأَغْلَالَ الَّتِي كَانَتْ عَلَيْهِمْ ۚ
যিনি তাদের জন্য পবিত্র বস্তুগুলোকে হালাল করবেন এবং অপবিত্র বস্তুগুলোকে হারাম করবেন। [সূরা আ’রাফ, আয়াত-১৫৭] ৭. আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন,
قَالَ إِنَّمَا أَنَا رَسُولُ رَبِّكِ لِأَهَبَ لَكِ غُلَامًا زَكِيًّا
আমি আপনার রবের পক্ষ থেকে প্রেরিত হয়েছি, আপনাকে একটি পবিত্র পুত্র-সন্তান দান করার জন্য। [সূরা মারয়াম, আয়াত-১৯]

দ্বিতীয়ত: পবিত্র হাদীসের আলোকে
নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
روى البخاري بإسناده عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ :أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ بُعِثْتُ بِجَوَامِعِ الْكَلِمِ وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ فَبَيْنَا أَنَا نَائِمٌ أُتِيتُ بِمَفَاتِيحِ خَزَائِنِ الْأَرْضِ فَوُضِعَتْ فِي يَدِي قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ وَقَدْ ذَهَبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنْتُمْ تَنْتَثِلُونَهَا( )
আমি প্রেরিত হয়েছি জাওয়ামেয়ুল কালিম (স্বল্প কথায় অধিক অর্থবোধক বাক্য) দ্বারা ও আমি সাহায্যপ্রাপ্ত হয়েছি ভক্তি-প্রযুক্ত ভয় দ্বারা। একদা আমি ঘুমান্তাবস্থায় দেখতে পেলাম যে, পৃথিবীর সকল ধনভান্ডারের চাবিকাটিগুলো আমার হাতে রেখে দেয়া হয়েছে। ( )
২. নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
أُتِيتُ بِمَفَاتِيحِ خَزَائِنِ الْأَرْضِ فَوُضِعَتْ فِي يَدِي
নিশ্চয় আমাকে দেয়া হয়েছে পৃথিবীর গুপ্তধন ভান্ডারসমূহের চাবিগুচ্ছ।( )

৩. নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
فَقُلْتُ : اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِأُمَّتِي ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِأُمَّتِي ، وَأَخَّرْتُ الثَّالِثَةَ لِيَوْمٍ يَرْغَبُ إِلَيَّ الْخَلْقُ كُلُّهُمْ ، حَتَّى إِبْرَاهِيمُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ( )
অতপর আমি বললাম, হে আল্লাহ্! ক্ষমা করে দাও আমার উম্মতকে, হে আল্লাহ্! ক্ষমা করে দাও আমার উম্মতকে, আর তৃতীয় প্রার্থনাটি আমি সঞ্চিত রেখেছি ক্বিয়ামত দিবসের জন্য, যেদিন সকল সৃষ্টি এমনকি ইব্রাহীম আলায়হিস্ সালাম ও আমার দিকে মুহতাজ হবেন। ( )
৪. নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, أَطْعِمْهُ أَهْلَكَ ( ) যাও, এগুলো তোমার পরিবার-পরিজনকে খাওয়া।( )
৫. নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
كَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يُحَدِّثُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهم عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَا نَهَيْتُكُمْ عَنْهُ فَاجْتَنِبُوهُ وَمَا أَمَرْتُكُمْ بِهِ فَافْعَلُوا مِنْهُ مَا اسْتَطَعْتُمْ فَإِنَّمَا أَهْلَكَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ كَثْرَةُ مَسَائِلِهِمْ وَاخْتِلافُهُمْ عَلَى أَنْبِيَائِهِمْ “( )
যখন আমি তোমাদেরকে কোন বিষয়ে নির্দেশ দেব তখন তোমরা তা থেকে তোমাদের যতটুকু সম্ভব পালন করবে, আর আমি যখন কোন বিষয়ে নিষেধ করে তখন তা থেকে তোমরা সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকবে।( )

৬. নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
عنْ أُمِّ عَطِيَّةَ ، قَالَتْ : ” بَايَعْنَا النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَرَأَ عَلَيْنَا : أَنْ لا يُشْرِكْنَ بِاللَّهِ شَيْئًا )سورة الممتحنة آية ১২ ” (، وَنَهَانَا عَنِ النِّيَاحَةِ ، فَقَبَضَتِ امْرَأَةٌ مِنَّا يَدَهَا ، فَقَالَتْ : فُلَانَةُ أَسْعَدَتْنِي ، وَأَنَا أُرِيدُ أَنْ أَجْزِيَهَا ، فَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا ، فَذَهَبَتْ ثُمَّ رَجَعَتْ ، فَمَا وَفَتِ امْرَأَةٌ إِلَّا أُمُّ سُلَيْمٍ ، وَأُمُّ الْعَلَاءِ ، وَابْنَةُ أَبِي سَبْرَةَ امْرَأَةُ مُعَاذٍ ، أَوِ ابْنَةُ أَبِي سَبْرَةَ وَامْرَأَةُ مُعَاذٍ ” . ( )
হযরত উম্মে আত্বীয়্যাহ্ বলেন, যখন এ আয়াত অবতীর্ন হলো, أَنْ لا يُشْرِكْنَ بِاللَّهِ شَيْئًا তখন আমি বললাম, এখান থেকে নিয়াহা (কারও মৃত্যুতে বিলাপ করে কান্না করা)কে বাদ দিন, কেননা অমূক গোত্র আমাকে জাহেলী যুগে নিয়াহা দ্বারা ধন্য করেছিল। তাই তার প্রতিদান স্বরূপ আমাকেও তাই করতে হবে। তখন রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মহিলাটিকে অনুমতি দিয়ে দিলেন।( )

৭. নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন: হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন,
فَقَالَ اللَّهُ : يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ إِلَى مُحَمَّدٍ فَقُلْ : إِنَّا سَنُرْضِيكَ فِي أُمَّتِكَ وَلَا نَسُوءُكَ( )
হে আমার হাবীব! নিশ্চয় আমি আপনাকে আপনার উম্মতের বিষয়ে খুশী করে দেব, আপনার প্রতি মন্দাচরণ করব না।( )
৮. হযরত আয়েশা সিদ্দীক্বা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা বলেন,
্রوَاللهِ، مَا أَرَى رَبَّكَ إِلَّا يُسَارِعُ لَكَ فِي هَوَاكَগ্ধ( )
কসম করে বলছি, ‘‘আমি দেখছি আপনার রব আপনার প্রতিটি আশা খুবই দ্রুত পূরণ করে দেন। ( )

তৃতীয়ত, ওলামায়ে কেরামের অভিমতের আলোকে
১. আল্লামা মানাভী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন:
أو المراد خزائن العالم بأسره ليخرج لهم بقدر ما يستحقون فكلما ظهر في ذلك العالم فإنما يعطيه الذي بيده المفتاح بإذن الفتاح وكما اختص سبحانه بمفاتيح علم الغيب الكلي فلا يعلمها إلا هو خص حبيبه بإعطاء مفاتيح خزائن المواهب فلا يخرج منها شيء إلا على يده
এখানে বিশ্বের ধনভান্ডার চাবিগুচ্ছ দ্বারা সকল ধন ভান্ডারকে বুঝানো হয়েছে। পৃথিবীবাসীর যখন যা প্রয়োজন তখন সে পরিমাণ যেন তিনি উত্তোলন করতে পারেন। অনুরূপভাবে যখনই এ পৃথিবী নুতন কোন ধনভান্ডার প্রকাশ পাবে তারও চাবিকাটি তাঁকে সোপর্দ করা হবে। যেমনিভাবে আল্লাহ্ তা‘আলা তার প্রিয় হাবীবকে অদৃশ্যের চাবিকাটির ধারক বাহক করে দিয়েছেন। সুতরাং একমাত্র তাঁরই হাতে এ ধন ভান্ডার বন্টিত হবে। ( )

২. ইমাম নাওয়াভী রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বলেন,
قَالَ الْقَاضِي عِيَاضٌ : قِيلَ السَّيِّدُ الَّذِي يَفُوقُ قَوْمَهُ وَيُفْزَعُ إِلَيْهِ فِي الشَّدَائِدِ ، وَالنَّبِيُّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – سَيِّدُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ ، وَإِنَّمَا خُصَّ يَوْمُ الْقِيَامَةِ لِارْتِفَاعِ السُّؤْدُدِ فِيهَا ، وَتَسْلِيمُ جَمِيعِهِمْ لَهُ ، وَلِكَوْنِ آدَمَ وَجَمِيعِ أَوْلَادِهِ تَحْتَ لِوَائِهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – ، كَمَا قَالَ اللَّهُ تَعَالَى : لِمَنِ الْمُلْكُ الْيَوْمَ لِلَّهِ الْوَاحِدِ الْقَهَّارِ أَيِ : انْقَطَعَتْ دَعَاوَى الْمُلْكِ فِي ذَلِكَ الْيَوْمِ . ( )

আল্লামা কাজী আয়াদ্ব রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি প্রকৃত মুনিব ও মওলা হলেন তিনিই, যিনি সকলের উপর প্রাধান্য লাভ করবেন এবং দুর্যোগ ও কঠিন সময়ে যার নিকট মানুষ আশ্রয় গ্রহণ করেন। আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হলেন দুনিয়া ও আখিরাতের মুনিব ও মওলা। এখানে ক্বিয়ামত দিবসকে বিশেষভাবে উল্লেখ করার কারণ হলো- কেননা ক্বিয়ামত দিবসে প্রিয়নবীর সরদারীত্ব আরও অধিক উন্নীত ও শক্তিশালী হবে, যা সকলে একবাক্যে মেনে নিতে বাধ্য হবে।( )

টিকা:

– أخرجه أحمد ( رقم ৩৬০০ ) و الطيالسي في “مسنده ” ( ص ২৩ ) و أبو سعيد ابن الأعرابي في ” معجمه ” ( ৮৪ / ২ ) من طريق عاصم عن زر بن حبيش عنه . و هذا إسناد حسن . و روى الحاكم منه الجملة التي أوردنا في الأعلى و زاد في آخره : ” و قد رأى الصحابة جميعا أن يستخلفوا أبا بكر رضي الله عنه ” و قال : ” صحيح الإسناد ” و وافقه الذهبي . و قال الحافظ السخاوي : ” هو موقوف حسن ” قلت: وكذا رواه الخطيب في”الفقيه والمتفقه”১০০ / ২

৪- البخاري, كتاب الرقاق / باب التواضع / حديث رقم ৬৫০২ صحيح البخاري – الديات (৬৫০২) صحيح مسلم – القسامة والمحاربين والقصاص والديات (১৬৬৯) صحيح مسلم – القسامةوالمحاربين والقصاص والديات (১৬৬৯) صحيح مسلم – القسامة والمحاربين والقصاص والديات (১৬৬৯) صحيح مسلم – القسامة والمحاربين والقصاص والديات (১৬৬৯) سنن الترمذي – الديات (১৪২২) سنن النسائي – القسامة (৪৭১৩) سنن النسائي – القسامة (৪৭১৪) سنن النسائي – القسامة (৪৭১৫) سنن النسائي – القسامة (৪৭১৬) سنن أبي داود -الديات (৪৫২০) سنن أبي داود – الديات (৪৫২১) سنن أبي داود – الديات (৪৫২৩)
– বুখারী শরীফ-৬৫০২
– الحديث أخرجه أحمد في ” مسنده ” ( ৪ / ১৩৮ ) ، والبخاري في ” التاريخ الكبير ” ( ৬ / ২১০ ) ، والنسائي في ” عمل اليوم والليلة ” ( ৬৫৯ ) ، والترمذي في ” سننه ” ( ৫ / ৫৬৯ / ৩৫৭৮ ) ، وابن ماجه في ” سننه ” ( ১ / ৪৪১ / ১৩৮৫ ) ، وابن خزيمة في ” صحيحه ” ( ২ / ২২৫ – ২২৬ / ১২১৯ ) ، وعبد بن حميد في ” المنتخب ” ( ১ / ৩৪১ / ৩৭৯ ) ، وابن أبي حاتم في ” العلل ” ( ২ / ১৮৯ – ১৯০ / ২০৬৪ ) ، والطبراني في ” المعجم الكبير ” ( ৯ / ৩১ – ২৩ / ৮৩১১ ) ، و ” الدعاء ” ( ২ / ১২৮৯ – ১২৯০ / ১০৫১ ) ، وأبونعيم في ” معرفة الصحابة ” ( ৪ / ১৯৫৮ / ৪৯২৬ ) ، والحاكم في ” المستدرك ” ( ১ / ৩১৩ ) ، وابن قانع في ” معجم الصحابة ” ( ২ / ২৫৭ – ২৫৮ ) ، والبيهقي في ” دلائل النبوة ” ( ৬ / ১৬৬ ) ، والمزي في ” تهذيب الكمال ” ( ১৯ / ৩৫৯ ) .
– صحيح البخاري গ্ধ كتاب الاستسقاء গ্ধ باب سؤال الناس الإمام الاستسقاء إذا قحطواصحيح مسلم – الجنائز (৯৬৪) صحيح مسلم – الجنائز (৯৬৪) سنن الترمذي – الجنائز (১০৩৫) سنن النسائي – الحيض والاستحاضة (৩৯৩) سنن النسائي – الجنائز (১৯৭৬) سنن النسائي – الجنائز (১৯৭৯) سنن أبي داود – الجنائز (৩১৯৫) مسند أحمد – أول مسند البصريين (৫/১৯)
– الدعاء للطبراني গ্ধ باب : الْقَوْلِ فِي الْمَشْيِ إِلَى الْمَسْجِدِ, رقم الحديث: ৩৮৫قال المنذري في الترغيب والترهيب ج৩ ص১১৯ : رواه ابن ماجه بإسناد فيه مقال ،وحسنه شيخنا الحافظ أبو الحسن . وقال الحافظ ابن حجر في نتائج الأفكار ج১ ص২৭২ : هذا حديث حسن ، أخرجه أحمد وابن خزيمة في كتاب التوحيد ، وأبو نعيم وابن السني . وقال العراقي في تخريج أحاديث الإحياء ج১ ص৩২৩ عن الحديث : بأنه حسن. وقال الحافظ البوصيري في زوائد ابن ماجه المسمى ((بمصباح الزجاجة)) ج১ ص৯৮ : رواه ابن خزيمة في صحيحه . وقال الحافظ شرف الدين الدمياطي في المتجر الرابع ص৪৭১ : إسناده حسن إن شاء الله . وذكر العلامة المحقق المحدث السيد علي بن يحي العلوي في رسالته اللطيفة هداية المتخبطين : أن الحافظ عبد الغني المقدسي حسّن الحديث ، وقبله ابن أبي حاتم، وبهذا يتبين لك أن هذا الحديث صححه وحسنه ثمانية من كبار حفاظ الحديث وأئمته ، وهم : ابن خزيمة والمنذري وشيخه أبو الحسن والعراقي والبوصيري وابن حجر وشرف الدين الدمياطي وعبد الغني المقدسي وابن أبي حاتم
هذا حديث حسن حسَّـنه: أمير المؤمنين في الحديث شيخ الإسلام ابن حجر العسقلاني رضي الله تعالى عنه في كتاب نتائج الأفكار ج১ ص ২৭২ الحافظ الكبير العراقي في المغني عن حمل الأسفار ১/২৮৯ الحافظ الكبير الدمياطي في المتجر الرابح في ثواب العمل الصالح ص ৪৭১/৪৭২ الحافظ الكبير أبو الحسن المقدسي كما في الترغيب والترهيب ২/২৭৩ الحافظ الكبير جلال الدين السيوطي في تحفة الأبرار بنكت الأذكار ص৯
– উপরোক্ত হাদীস শরীফগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আলেমগণ বলেন, এ হাদিসগুলো প্রত্যেক মুমিন বান্দার ওসীলাহ্ নিয়ে দোআ করার স্বপক্ষে সুস্পষ্ট ও অকাট্য প্রমাণ, চাই তারা জীবিত হোক কিংবা মৃত এবং প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীগণকেও এ দো‘আ শিক্ষা দান করেন এবং দো‘আটি করার জন্য নিদের্শও দেন। আর পূর্ব ও পরবর্তী সকলেই নামাজে বের হবার সময় এ দো‘আটি প্রতিনিয়তই করে আসছেন।
– المعجم الأوسط ( ১ / ৬৭ )والمعجم الكبيـر ( ২৪ / ৩৫১ )ورواه عن الطبراني أبونعيم في المعرفة ؛ ولم يذكر لفظ الحديث. معرفة الصحابة ৬ / ৩৪০৮ ) .ورواه – سنداً ومتناً – في الحلية ، وقال :غريبٌ من حديث عاصم والثوري ، لم نكتبه إلا من حديث روح بن صلاح تفرد به ) .حلية الأولياء ( ৩ / ১২১ ) قال الذهبي :روح بن صلاح المصري ، يقال له ابن سيابة .
ضعفه ابن عدي . يكنى أبا الحارث ، وقد ذكره ابن حبان في الثقات وقال الحاكم : ثقة مأمون …) . ميزان الاعتدال ( ৩/ ৮৭ )وقال الهيثمي : رواه الطبراني في الكبير والأوسط ، وفيه روح بن صلاح وثقه ابن حبان والحاكم ، وفيه ضعف ، وبقية رجاله رجال الصحيح ) .المجمع ( ৯ / ২৫৭ ) .

– هذا الأثر رواه ابن أبي شيبة في “مصنفه” (৬/ ৩৫৬) والبخاري في “التاريخ الكبير” (৭/৩০৪) – مختصرا – والبيهقي في “الدلائل” (৭/৪৭) ، وابن عساكر في “تاريخه” (৪৪/৩৪৫)
– رواه مسلم في صحيحه(২৬৯৯).
– رواه أبو داود: سنن أبى داود (৪/ ৪০৪). قال:” يعين ذا الحاجة الملهوف البخاري، الجامع الصحيح المختصر (২/ ৫২৪)، حديث رقم ১৩৭৬.
– صحيح البخاري গ্ধ كتاب الزكاة গ্ধ باب من سأل الناس تكثرا. ج ২ الحديث ( ১৪৭৪) رقم الحديث- ১৪০৫
– هذا الحديث رواه الطبراني في المعجم الكبير (১৭ /১১৭)وللحديث شاهدٌ من حديث ابن مسعود مرفوعاً بلفظ : (إذا انْفَلَتَتْ دَابَّةُ أَحَدِكُمْ بِأَرْضِ فَلاةٍ ، فَلْيُنَادِ : يَا عِبَادَ اللَّهِ ، احْبِسُوا عَلَيَّ ، يَا عِبَادَ اللَّهِ احْبِسُوا عَلَيَّ ، فَإِنَّ لِلَّهِ فِي الأَرْضِ حَاضِرًا سَيَحْبِسُهُ عَلَيْكُمْ) .رواه الطبراني في المعجم الكبير (১০/২১৭) ، وأبو يعلى في ” مسنده ” (৯/১৭৭) ، و “مجمع الزوائد” (১০/১৩২) ، والحافظ ابن حجر في “شرح الأذكار” (৫/১৫০) ، والحافظ السخاوي في “الابتهاج بأذكار المسافر والحاج” ص ৩৯ .
– উপরোক্ত অভিমতটি তাঁর (خلاصة الكلام) (খুলাছাতুল কালাম) নামক গ্রন্থ থেকে সংকলিত।
– أخرج أحمد بن حنبل في مسنده – (ج ২৫ / ص ২৬৮) في مسند أنس بن مالك . صححه الالباني في الصحيحة (২৭৫৮).
حسن لغيره. وأخرجه الطيالسي في مسنده – (ج ৫ / ص ২৫০) عن جابر بن عبد الله ، قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ্র إِنَّ أَعْمَالَكُمْ تُعْرَضُ عَلَى عَشَائِرِكُمْ وَأَقْرِبَائِكُمْ فِي قُبُورِهِمْ ، فِإْن كَانَ خَيْرًا اسْتَبْشَرُوا بِه ، وَإِنْ كَانَ غَيْر ذَلِكَ قَالُوا : اللَّهُمَّ أَلْهِمْهُمْ أَنْ يَعْمَلُوا بِطَاعَتِكَ গ্ধ.حسن لغيره أخرج البخاري في الكنى – (ج ১ / ص ৮) وابن أبي حاتم في الجرح والتعديل – (ج ৯ / ص ৩৩৬) الحاكم في المستدرك – (ج ১৮ / ص ২১৯) والبيهقي في شعب الإيمان – (ج ২১ / ص ১৯৭) وأبو الشيخ في أمثال الحديث – (ج ১ / ص ৪৫৬) والدولابي في الكنى – (ج ২ / ص ৩৯৫) وابن أبي الدنيا في المنامات – (ج ১ / ص ৩) عن النعمان بن بشير ، رضي الله عنهما يقول وهو على المنبر : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : ألا إنَّه لم يبق من الدنيا إلا مثل الذباب تمور في جوها ، فَاللهَ اللهَ فِي إِخْوَانِكِمْ مِنْ أَهْلِ الْقُبُورُ فِإِنَّ أَعْمَالَكُمْ تُعْرَضُ عَلَيْهِمْ.حسن لغيره.
أخرج الطبراني في مسند الشاميين – (ج ৪ / ص ১২৯) و في المعجم الكبير – (ج ৪ / ص ১৭৬) وابن المبارك في الزهد – (ج ১ / ص ৪৬২) وابن أبي الدنيا في ذكر الموت (৫/৪৮১) وابن حبان في الجروحين – (ج ১ / ص ৩৩৯) وابن عدي في الكامل – (ج ৩ / ص ৩০২) وابن الجوزي في العلل المتناهية – (ج ২ / ص ৩০৮) عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الأَنْصَارِيِّ ، أَن ّرَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : إِنَّ نَفْسَ الْمُؤْمِنِ إِذَا قُبِضَتْ تَلَقَّاهَا مِنْ أَهْلِ الرَّحْمَةِ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ كَمَا تَلْقَوْنَ الْبَشِيرَ فِي الدُّنْيَا ، فَيَقُولُونَ : انْظُرُوا صَاحِبَكُمْ يَسْتَرِيحُ ، فَإِنَّهُ قَدْ كَانَ فِي كَرْبٍ شَدِيدٍ ، ثُمَّ يَسْأَلُونَهُ : مَاذَا فَعَلَ فُلانٌ ؟ وَمَا فَعَلَتْ فُلانَةُ ؟ هَلْ تَزَوَّجَتْ ؟ فَإِذَا سَأَلُوهُ عَنِ الرَّجُلِ قَدْ مَاتَ قَبْلَهُ ، فَيَقُولُ : أَيْهَاتَ قَدْ مَاتَ ذَاكَ قَبْلِي ، فَيَقُولُونَ : إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ ، ذُهِبَتْ بِهِ إِلَى أُمِّهِ الْهَاوِيَةِ فَبِئْسَتِ الأُمُّ وَبِئْسَتِ الْمُرَبِّيَةُ ، قَالَ : وَإِنَّ أَعْمَالَكُمْ تُعْرَضُ عَلَى أَقَارِبِكُمْ وَعَشَائِرِكُمْ مِنْ أَهْلِ الآخِرَةِ ، فَإِنْ كَانَ خَيْرًا فَرِحُوا وَاسْتَبْشَرُوا ، وَقَالُوا : اللَّهُمَّ هَذَا فَضْلُكَ وَرَحْمَتُكَ فَأَتْمِمْ نِعْمَتَكَ عَلَيْهِ ، وَأَمِتْهُ عَلَيْهَا وَيُعْرَضُ عَلَيْهِمْ عَمَلُ الْمُسِيءِ ، فَيَقُولُونَ : اللَّهُمَّ أَلْهِمْهُ عَمَلا صَالِحًا تَرْضَى بِهِ عَنْهُ وتُقَرِّبُهُ إِلَيْكَ.
وفي رواية:إِنَّ نَفْسَ الْمُؤْمِنِ إِذَا مَاتَ يَتَلَقَّى أَهْلُ الرَّحْمَةِ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ كَمَا يَتَلَقَّوْنَ الْبَشِيرَ فِي الدُّنْيَا ، فَيَقُولُونَ : انْظُرُوا صَاحِبَكُمْ يَسْتَرِيحُ ، فَإِنَّهُ كَانَ فِي كَرْبٍ شَدِيدٍ ، ثُمَّ يَسْأَلُونَهُ : مَا فَعَلَ فُلانٌ ؟ مَا فَعَلَتْ فُلانَةُ ؟ هَلْ تَزَوَّجَتْ ؟ فَإِذَا سَأَلُوهُ عَنْ أَحَدٍ قَدْ مَاتَ قَبْلَهُ ، قَالَ : هَيْهَاتَ قَدْ مَاتَ ذَاكَ قَبْلِي ، فَيَقُولُونَ : إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ ، ذَهَبَ بِهِ إِلَى أُمِّهِ الْهَاوِيَةِ فَبِئْسَتِ الأُمُّ وَبِئْسَتِ الْمُرَبِّيَةُ.الصحيح أنّه موقوف.
أخرج الطبري في تهذيب الآثار (ج ২ / ص ২২৪) قال: حدثنا محمد بن بشار ، حدثنا عبد الرحمن بن عثمان ، حدثنا عوف الأعرابي ، عن خلاس بن عمرو ، عن أبي هريرة ، قال : ্র إنّ أعمالكم تعرض على أقربائكم من موتاكم ، فإن رأوا خيرا فرحوا به ، وإن رأوا شرا كرهوه ، وإنهم يستخبرون الميت إذا أتاهم ، من مات بعدهم ، حتى إن الرجل يسأل عن امرأته أتزوجت أم لا ؟ وحتى إن الرجل يسأل عن الرجل ، فإذا قيل : قد مات قال : هيهات ، ذهب ذاك ، فإن لم يحسوه عندهم ، قالوا : إنا لله وإنا إليه راجعون ، ذهب به إلى أمه الهاوية ، فبئس المربية গ্ধ
اسناده حسن وهو صحيح لغيره
*أخرج ابن أبي الدنيا في المنامات – (ج ১ / ص ৪) والدارقطني في الأفراد كما في أطراف الغرائب – (ج ২ / ص ১৮৯) و الديلمي في مسند الفردوس – (ج ১ / ص ৪৯৮) من طريق فليح بن إسماعيل ، ثنا محمد بن جعفر بن أبي كثير ، عن زيد بن أسلم ، عن أبي صالح ، والمقبري ، عن أبي هريرة ، قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ্র لَا تَفْضَحُوا مَوْتَاكُمْ بِسَيِّئَاتِ أَعْمَالِكُمْ فَإِنَّهَا تُعْرَضُ عَلَى أَوْلِيَائِكُمْ مِنْ أَهْلِ الْقُبُورِ গ্ধ.اسناده حسن وهو صحيح لغيره
*أخرج ابن المبارك في الزهد – (ج ৪ / ص ৩৫৫) وأبو داود في الزهد – (ج ১ / ص ২২৭) وابن أبي الدنيا في المنامات – (ج ১ / ص ৬) عن أبي الدرداء : ألا إن أعمالكم تعرض على عشائركم ، فَمُسَاؤُون ومسررون ، فأعوذ بالله أن أعمل عملا يخزى به عبد الله بن رواحة . وهو أخوه من أمّه.
اسناده صحيح
*أخرج أحمد بن حنبل في مسنده – (ج ২২ / ص ১১৯) وابن أبي الدنيا في المنامات – (ج ১ / ص ১০) و الطبراني في المعجم الأوسط – (ج ১৬ / ص ২২৭) والرافعي في أخبار قزوين – (ج ১ / ص ৪৩১) و أبو نعيم في تاريخ أصبهان – (ج ১ / ص ১০৮) من طريقين عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ الْمَيِّتَ يَعْرِفُ مَنْ يَحْمِلُهُ وَمَنْ يُغَسِّلُهُ وَمَنْ يُدَلِّيهِ فِي قَبْرِهِ.
حسن لغيره
*أخرج البخاري في صحيحه – (ج ৫ / ص ১১৩) ومسلم في صحيحه – (ج ১৪ / ص ৩১) عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: الْعَبْدُ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ وَتُوُلِّيَ وَذَهَبَ أَصْحَابُهُ حَتَّى إِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ.
*أخرج ابن أبي الدنيا في المنامات – (ج ১ / ص ২৩) عن مجاهد قال : إنَّ الرَّجل ليُبَشَّرُ بصلاح ولده في قبره من بعده لتقرَّ عينُه.
*أخرج ابن المبارك في الزهد – (ج ১ / ص ৪৬৫) عن عثمان بن عبد الله بن أوس ، أن سعيد بن جبير ، قال له : ্র استأذن لي على بنت أخي গ্ধ – وهي زوجة عثمان ، وهي بنت عمرو بن أوس – فاستأذنت له عليها ، فدخل ، فسلم عليها ، ثم قال لها : ্র كيف فعل زوجك بك ؟ গ্ধ قالت : إنه لمحسن فيما استطاع ، ثم التفت إلى عثمان ، وقال : ্র يا عثمان ، أحسن إليها ، فإنك لا تصنع بها شيئا إلا جاء عمرو بن أوس গ্ধ ، قال : وهل يأتي الأموات أخبار الأحياء ؟ قال : ্র نعم ، ما من أحد له حميم إلا يأتيه أخبار أقاربه ، فإن كان خيرا سُرَّ به ، وفرح به ، وهُنِّئ به ، وإن كان شرّا ابتأس بذلك ، وحزن حتى إنهم يسألون عن الرجل قد مات ، فيقال : ألم يأتكم ؟ فيقولون : لقد خولف به إلى أمه الهاوية গ্ধ.
*أخرج أبو نعيم في حلية الأولياء – (ج ৪ / ص ২৫৪) و ابن عساكر في تاريخ دمشق – (ج ৬ / ص ৪৪৬) و ابن أبي الدنيا كما في تفسير بن كثير – (ج ৬ / ص ৩২৬) عن أحمد بن أبي الحواريّ قال: دخل عبّاد الخواص على إبراهيم بن صالح وهو أمير فلسطين فقال: يا شيخ عظني. فقال: بم أعظك أصلحك الله! بلغني أن أعمال الأحياء تعرض على أقاربهم من الموتى، فانظر ماذا يعرض على رسول الله صلى الله عليه وسلم من عملك، قال: فبكى حتى سالت الدموع من لحيته.
*أخرج أبو داود في الزهد – (ج ১ / ص ৪৩৬) عن بعض أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم أنه قال : لأنا مِن أمواتي أشدّ حياءً مني من أحيائي ، يقول : إنّ عملي يُعرض على الأموات .
اسناده ضعيف
– قال الحافظ الهيثمي في مجمع الزوائد ( ৯ / ২৪ ) رجاله رجال الصحيح اه‍ـ رواه البزار في مسنده كما في كشف الأستار عن زوائد البزار ( ১ / ৩৯৭ ) بإسناد رجاله رجال الصحيح .كما قال الحافظ نور الدين الهيثمي في المجمع ( ৯ / ২৪ ) وقال الحافظ السيوطي في الخصائص الكبرى ( ২ / ২৮১ ) سنده صحيح ، وقال الحافظان العراقيان – الزين وابنه ولي الدين – في طرح التثريب ( ৩ / ২৯৭ ) : إسناد جيد ، وطرح الثريب من آخر مؤلفات الحافظ الزين العراقي . وروى الحديث ابن سعد باسناد حسن.

– مسلم في صحيحه (৪/১৮৪৫ح২৩৭৫) ، كتاب الفضائل – باب فضائل موسى .ورواه الإمام أحمد في مسنده (৩/১২০ ، ১৪৮) .
– خرجه البيهقي في حياة الأنبياء في قبورهم [ص /২৩ طبعة مكتبة الإيمان]، من طريق أبي يعلى به….قال الهيثمي في المجمع [৮/ ৩৮৬ ] : ্র رواه أبو يعلى والبزار ورجال أبو يعلى ثقات গ্ধ .وقبله نقل ابن الملقن في البدر المنير [৫/ ২৮৫] عن البيهقي أنه قال بعد أن ساق هذا الطريق : ্র هَذَا إِسْنَاد صَحِيح গ্ধ ثم قال ابن الملقن : ্রوَهُوَ كَمَا قَالَ ؛ لِأَن رِجَاله كلهم ثِقَات গ্ধ .قلتُ : وإسناده قوي مستقيم ، رجاله كلهم ثقات معروفون :الحديث رواه أبو يعلى ( ৬ / ১৪৭ ) وغيره وهو حديث حسن وله شواهد لمعناه صحيحة .
قال ابن حجر : وقد جمع البيهقي كتابا لطيفا في ” حياة الأنبياء في قبورهم ” أورد فيه حديث أنس ” الأنبياء أحياء في قبورهم يصلون ” أخرجه من طريق يحيى بن أبي كثير وهو من رجال الصحيح عن المستلم بن سعيد وقد وثقه أحمد وابن حبان عن الحجاج الأسود وهو ابن أبي زياد البصري وقد وثقه أحمد وابن معين عن ثابت عنه ، وأخرجه أيضا أبو يعلى في مسنده من هذا الوجه ، وأخرجه البزار لكن وقع عنده عن حجاج الصواف وهو وهم والصواب الحجاج الأسود كما وقع التصريح به في رواية البيهقي ، وصححه البيهقي ، وأخرجه أيضا من طريق الحسن بن قتيبة عن المستلم ، وكذلك أخرجه البزار وابن عدي .
وأخرجه البيهقي أيضا من رواية محمد بن عبد الرحمن بن أبي ليلى أحد فقهاء الكوفة عن ثابت بلفظ آخر قال ” أن الأنبياء لا يتركون في قبورهم بعد أربعين ليلة ولكنهم يصلون بين يدي الله حتى ينفخ في الصور ” ومحمد سيئ الحفظ ، وذكر الغزالي ثم الرافعي حديثا مرفوعا ” أنا أكرم على ربي من أن يتركني في قبري بعد ثلاث ولا أصلي له ” إلا إن أخذ من رواية بن أبي ليلى هذه وليس الأخذ بجيد لأن رواية بن أبي ليلى قابلة للتأويل ، قال البيهقي : إن صح فالمراد أنهم لا يتركون يصلون إلا هذا المقدار ثم يكونون مصلين بين يدي الله . قال البيهقي : وشاهد الحديث الأول : ما ثبت في صحيح مسلم من رواية حماد بن سلمة عن ثابت عن أنس رفعه ” مررت بموسى ليلة أسري بي عند الكثيب الأحمر وهو قائم يصلي في قبره ” وأخرجه أيضا من وجه آخر عن أنس .
– مسند أحمد بن حنبل গ্ধ مُسْنَدُ الْعَشَرَةِ الْمُبَشَّرِينَ بِالْجَنَّةِ … গ্ধ سادس عشر الأنصار গ্ধ حَدِيثُ السَّيِّدَةِ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا … رقم الحديث: ২৫০৮৯. المستدرك على الصحيحين للحاكم – (ج ১০ / ص ১৯১). رقم الحديث-৪৩৭৫. الطبقات الكبرى لابن سعد – (ج ৩ / ص ৩৬৪). الطبقات الكبرى لابن سعد – (ج ২ / ص ২৯৪). . فتح الباري لابن حجر – (ج ১০ / ص ৪৯৮). مشكاة المصابيح – (ج ১ / ص ৩৯৮)
– ইমাম আহমদ এ হাদীসটি স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন, হা-২৫০৮৯, হাকেম তাঁর মুসতাদরাক এ, হা-৪৩৭৫।
– صحيح مسلم গ্ধ كتاب الفضائل গ্ধ باب قرب النبي عليه السلام من الناس وتبركهم به, رقم الحديث-৩২২৫, رقم الحديث: ৪২৯৯
– روى الحاكم في “المستدرك” (৫২৯৯) ، والطبراني في “الكبير” (৩৮০৪) ، وأبو يعلى في مسنده (৭১৮৩) من طريق هُشَيْم “وابن كثير في البداية والنهاية” (৭/ ১১৩)و في . الشفا بتعريف حقوق المصطفى গ্ধ القسم الثاني فيما يجب على الأنام من حقوقه صلى الله عليه وسلم গ্ধ الباب الثالث في تعظيم أمره ووجوب توقيره وبره গ্ধ الفصل السابع إعزاز وإكرام من له صلة به صلى الله عليه وسلم: وكانت في قلنسوة خالد بن الوليد شعرات من شعره – صلى الله عليه وسلم – ، فسقطت قلنسوته في بعض حروبه ، فشد عليها شدة أنكر عليه أصحاب النبي – صلى الله عليه وسلم – كثرة من قتل فيها ، فقال : لم أفعلها بسبب القلنسوة ، بل لما تضمنته من شعره – صلى الله عليه وسلم – لئلا أسلب بركتها ، وتقع في أيدي المشركين .
– صحيح البخاري গ্ধ كتاب الصلاة গ্ধ باب الصلاة في الثوب الأحمر. رقم الحديث:৩৬৯

– مسند أحمد بن حنبل গ্ধ مُسْنَدُ الْعَشَرَةِ الْمُبَشَّرِينَ بِالْجَنَّةِ … গ্ধ وَمِنْ مُسْنَدِ بَنِي هَاشِمٍ, رقم الحديث: ২৩০৮
– روى مسلم كتاب اللباس والزينة গ্ধ باب تحريم استعمال إناء الذهب والفضة على الرجال والنساء رقم الحديث(২০৬৯)
– رواه أحمد ( ১৩০৭৫ ) شعب الإيمان للبيهقي গ্ধ الرَّابِعُ وَالسِّتُّونَ مِنْ شُعَبِ الإِيمَانِ وَهُوَ … গ্ধ فَصْلٌ فِي زِيَارَةِ الْقُبُورِ, رقم الحديث: ৮৬৮৫. وصححه الألباني في ” صحيح الجامع ” ( ৪৫৮৪
– أخرجه مسلم، كتاب الجنائز، باب ما يقال عند دخول القبور والدعاء لأهلها، برقم ৯৭৪
– رواه البخاري ১/৪৩০، في باب (زيارة القبور)، حديث ১২২৩، و১/৪৩৮، في باب (الصبر عند الصدمة الأولى)، حديث ১২৪০. ورواه مسلم ২/৬৩৭، في باب (الصبر على المصيبة عند الصدمة الأولى)، حديث ৯২৬. والترمذي ৩/৩১৩-৩১৪. باب (ما جاء أن الصبر عند الصدمة الأولى)، حديث ৯৮৭. والنسائي ৪/২২، باب (الأمر بالاحتساب والصبر عند نزول المصيبة)، حديث ১৮৬৯، وابن ماجه ১/৫০৯، باب (ما جاء في الصبر على المصيبة)، حديث ১৫৯৬. وابن أبي شيبة ৩/৫৯، في الصبر عند الصدمة الأولى، حديث ১২০৮৯. وسنن البيهقي الكبرى ৪/৬৫، باب (الرغبة في أن يتعزى بما أمر الله – تعالى -به من الصبر والاسترجاع)، حديث ৬৯১৯.
– مسلم (২/৬৭১) [برقم (৯৭৫)]، وابن ماجة واللفظ له (১/৪৯৪) [برقم (১৫৪৭)]، عن بريدة ، وما بين المعقوفتين من حديث عائشة’ عند مسلم (২/৬৭১) [برقم (৯৭৪)]. (ق).
– أخرجه الترمذي وحسَّنه ২/৫৩৩ ح১০৭৭ (باب ما جاء في كراهية زيارة القبور للنساء).
– صحيح البخاري গ্ধ كتاب فضل الصلاة في مسجد مكة والمدينة, رقم الحديث-১১৩২
– أخرجه الخطيب وابن عساكر وابن النجار، وسنده جيد كما في كنز العمال. تفسير إبن كثير ج:৩ ص:৪৩৯ .الروح ج:১ ص:৫. لسان الميزان ج:৩ ص:২৯৭. قال الحافظ العراقي في تخريج ‏الإحياء ج৪ ص ৪৯১ ( أخرجه ابن أبي الدنيا في القبور، وفيه عبد الله بن سمعان، ولم أقف ‏على حاله. ورواه ابن عبد البر في التمهيد من حديث ابن عباس نحوه، وصححه عبد الحق ‏الأشبيلي).‏
– أخرجه تمام (১/৬৩ ، رقم ১৩৯) ، والخطيب (৬/১৩৭) ، وابن عساكر (১০/৩৮০) . وأخرجه أيضًا : ابن الجوزى فى العلل المتناهية (২/৯১১ ، رقم ১৫২৩) ما من عبد يمر بقبر رجل كان يعرفه في الدنيا فسلم عليه إلا عرفه ورد عليه السلام ) .أخرجه أبو بكر الشافعي في “مجلسان” (৬/ ১) ، وابن جميع في معجمه (৩৫১) ، وأبو العباس الأصم في “الثاني من حديثه” (ق ১৪৩/ ২ ورقم ৪৩ – منسوختي) ، ومن طريقه الخطيب في “التاريخ” (৬/ ১৩৭) ، وتمام في “الفوائد” (২/ ১৯/ ১) ، وعنه ابن عساكر (৩/ ২০৯/ ২ و ৮/ ৫১৭/ ১) ، والديلمي (৪/ ১১) ، والذهبي في “سير أعلام النبلاء” (১২/ ৫৯০) قال ابن أبي الدنيا في “كتاب القبور” – باب معرفة الموتى بزيارة الأحياء : حدثنا محمد بن قدامة الجوهري : حدثنا معن بن عيسى القزاز : أخبرنا هشام بن سعد :
– صحيح البخاري গ্ধ كتاب الجنائز গ্ধ باب الميت يسمع خفق النعال, رقم الحديث: ১২৭৩
– أخرجه مسلم في صحيحه ، في كتاب الجنة وصفة نعيمها وأهلها ، حديث (২৮৭৫).وقد روى هذا الحديث خمسة من الصحابة غير أنس رضي الله عنه : الأول : حديث أبي طلحة رضي الله عنه : ولفظه :্র وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ مَا أَنْتُمْ بِأَسْمَعَ لِمَا أَقُولُ مِنْهُمْ গ্ধ.أخرجه البخاري في صحيحه ، في كتاب المغازي ، حديث (৩৯৭৬) ، ومسلم في الموضع السابق. الثاني : حديث عمر رضي الله عنه: ولفظه: ্র مَا أَنْتُمْ بِأَسْمَعَ لِمَا أَقُولُ مِنْهُمْ ، غَيْرَ أَنَّهُمْ لَا يَسْتَطِيعُونَ أَنْ يَرُدُّوا عَلَيَّ شَيْئًا গ্ধ.أخرجه مسلم في صحيحه ، في كتاب الجنة وصفة نعيمها وأهلها ، حديث (২৮৭৩) . الثالث : حديث ابن عمر رضي الله عنه: ولفظه: ্র مَا أَنْتُمْ بِأَسْمَعَ مِنْهُمْ وَلَكِنْ لَا يُجِيبُونَ গ্ধ.أخرجه البخاري في صحيحه ، في كتاب الجنائز ، حديث (১৩৭০). الرابع : حديث عبد الله بن مسعود رضي الله عنه : ولفظه : ্র ما أنتم بأسمع لما أقول منهم ، ولكنهم اليوم لا يجيبون গ্ধ.أخرجه الطبراني في المعجم الكبير (১০/১৬০). قال الهيثمي في مجمع الزوائد (৬/৯১) :্র رواه الطبراني ، ورجاله رجال الصحيح গ্ধ. الخامس : حديث عبد الله بن سيدان ، عن أبيه رضي الله عنه : ولفظه : ্র يسمعون كما تسمعون ولكن لا يجيبون গ্ধ.أخرجه الطبراني في المعجم الكبير (৭/১৬৫).قال الهيثمي في مجمع الزوائد (৬/৯১) : ্র رواه الطبراني ، وعبد الله بن سيدان مجهول গ্ধ.
– أخرجه أبو بكر الشافعي في “مجلسان” (৬/ ১) ، وابن جميع في معجمه (৩৫১) ، وأبو العباس الأصم في “الثاني من حديثه” (ق ১৪৩/ ২ ورقم ৪৩ – منسوختي) ، ومن طريقه الخطيب في “التاريخ” (৬/ ১৩৭) ، وتمام في “الفوائد” (২/ ১৯/ ১) ، وعنه ابن عساكر (৩/ ২০৯/ ২ و ৮/ ৫১৭/ ১) ، والديلمي (৪/ ১১) ، والذهبي في “سير أعلام النبلاء” (১২/ ৫৯০)

– أخرجه أحمد ( رقم ৩৬০০ ) و الطيالسي في “مسنده ” ( ص ২৩ ) و أبو سعيد ابن الأعرابي في ” معجمه ” ( ৮৪ / ২ ) من طريق عاصم عن زر بن حبيش عنه . و هذا إسناد حسن . و روى الحاكم منه الجملة التي أوردنا في الأعلى و زاد في آخره : ” و قد رأى الصحابة جميعا أن يستخلفوا أبا بكر رضي الله عنه ” و قال : ” صحيح الإسناد ” و وافقه الذهبي . و قال الحافظ السخاوي : ” هو موقوف حسن ” . قلت : و كذا رواه الخطيب في ” الفقيه و المتفقه ( ১০০ / ২ ) من طريق المسعودي عن عاصم به إلا أنه قال : ” أبي وائل ” بدل “زر بن حبيش
– في كتابه سبيل الأذكار.
– سبيل الأذكار
– روى أحمد (১৯৭৮৯) وأبو داود (৩১২১) أخرجه أبو داود في كتاب الجنائز، باب القراءة عند الموت برقم ৩১২১، وابن ماجه في كتاب ما جاء في الجنائز، باب ما جاء فيما يقال عند المريض إذا حضر برقم ১৪৪৮. وروى أحمد (৪/১০৫) (১৬৫২১) عن صَفْوَان قال : حَدَّثَنِي الْمَشْيَخَةُ أَنَّهُمْ حَضَرُوا غُضَيْفَ بْنَ الْحَارِثِ الثُّمَالِيَّ (صحابي) حِينَ اشْتَدَّ سَوْقُهُ ، فَقَالَ : هَلْ مِنْكُمْ أَحَدٌ يَقْرَأُ يس ؟ قَالَ : فَقَرَأَهَا صَالِحُ بْنُ شُرَيْحٍ السَّكُونِيُّ ، فَلَمَّا بَلَغَ أَرْبَعِينَ مِنْهَا قُبِضَ . قَالَ : فَكَانَ الْمَشْيَخَةُ يَقُولُونَ : إِذَا قُرِئَتْ عِنْدَ الْمَيِّتِ خُفِّفَ عَنْهُ بِهَا . قَالَ صَفْوَانُ : وَقَرَأَهَا عِيسَى بْنُ الْمُعْتَمِرِ عِنْدَ ابْنِ مَعْبَدٍ .قال الحافظ في “الإصابة” (৫/৩২৪) : إسناده حسن .وانظر : “المجموع” (৫/১০৫) ، “شرح منتهى الإرادات” (১/৩৪১) ، “حاشية ابن عابدين” (২/১৯১) .
– شعب الإيمان للبيهقي গ্ধ الرَّابِعُ وَالسِّتُّونَ مِنْ شُعَبِ الإِيمَانِ وَهُوَ … رقم الحديث: ৮৬৮৯ رواه الخلال في القراءة عند القبور (৪) والطبراني (১২/৪৪৪ رقم ১৩৬১৩) والبيهقي في الشعب (৭/১৬ رقم ৯২৯৪) رواه يحيى بن معين في تاريخه (২/৩৪৫ و৩৭৯-৩৮০) –ومن طريقه الخلال في القراءة عند القبور (২) وفي الجامع (كما في كتاب الروح لابن القيم ص১৭ والأربعين المتباينة لابن حجر ص৮৫) واللالكائي (৬/১২২৭) والبيهقي (৪/৫৬) وابن عساكر (৪৭/২৩০) والمزي في تهذيب الكمال (২২/৫৩৮)- عن مبشر بن إسماعيل، عن عبد الرحمن بن العلاء بن اللجلاج، عن أبيه، عن ابن عمر موقوفا عليه. ورواه الطبراني (৯/২২০) من طرق عن مبشر عن عبد الرحمن بن العلاء، عن أبيه، عن جده اللجلاج مرفوعا!ورواه ابن ابن عساكر (৫০/২৯৭) من طريق أبي همام عن مبشر، عن عبد الرحمن بن العلاء، عن أبيه، عن جده، عن ابن عمر موقوفا!!
– صحيح مسلم- ৩৪ المقدمة باب (৫) تحفة الأحوذي كتاب الزكاة عن رسول الله صلى الله عليه وسلم গ্ধ باب ما جاء في الصدقة عن الميت
– صحيح مسلم গ্ধ كتاب الوصية গ্ধ باب ما يلحق الإنسان من الثواب بعد وفاته ص ১২৫৫ – باب ما يلحق الإنسان من الثواب بعد وفاته , رقم الحديث: ১৬৩১ أَخْرَجَهُ مُسْلِمٌ فِي الْوَصَايَا مِنْ صَحِيحِهِ ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَيُّوبَ ، وَقُتَيْبَةَ ، وَعَلِيِّ بْنِ حُجْرٍ . وَأَخْرَجَهُ أَبُو دَاوُدَ ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَيُّوبَ . وَأَخْرَجَهُ التِّرْمِذِيُّ ، وَالنَّسَائِيُّ ، جَمِيعًا ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ حُجْرٍ ، ثَلاثَتُهُمْ ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ ، بِهِ فَوَقَعَ لَنَا مُوَافَقَةً عَالِيَةً لِمُسْلِمٍ فِي أَحَدِ شُيُوخِهِ ، وَلِلتِّرْمِذِيِّ ، وَلِلنَّسَائِيِّ ، وَبَدَلا عَالِيًا لِمُسْلِمٍ فِي شَيْخَيْهِ الآخَرَيْنِ ، وَلأَبِي دَاوُدَ ، وَاللَّهُ الْمُوَفِّقُ ..
– ابن القيم في كتاب (الروح ص১৫৭)
– كتاب الروح (ص/১৭৫
– صحيح مسلم গ্ধ كتاب الحج গ্ধ باب صحة حج الصبي وأجر من حج به, رقم الحديث- ১৩৩৬ وروى مسلم (২৩৭৮)
– رواه البخاري (১৩৮৮) ، ومسلم (১০০৪) .قال النووي رحمه الله : ” وفي هذا الحديث : أن الصدقة عن الميت تنفع الميت ويصله ثوابها , وهو كذلك بإجماع العلماء , وكذا أجمعوا على وصول الدعاء وقضاء الدين بالنصوص الواردة في الجميع ” انتهى من ” شرح مسلم للنووي ” .وقال ابن قدامه رحمه الله : ” وأي قربة فعلها , وجعل ثوابها للميت المسلم , نفعه ذلك , إن شاء الله , أما الدعاء , والاستغفار , والصدقة , وأداء الواجبات , فلا أعلم فيه خلافا , إذا كانت الواجبات ، مما يدخله النيابة ” انتهى من ” المغني ” (২/২২৬) .
– سيرة أعلام النبلاء: ১/৩৫৮، وأسد الغابة: ১/২০৮، شفاء السقام، ص:৩৯. كتاب العلل ومعرفة الرجال للإمام أحمد رحمه الله ২/ ৪৯২ رقم ৩২৪৩ رواية ابنه عبدالله رحمه الله.
وعن أبي الدرداء أن بلالاً رأى النبي (صلى الله عليه وآله) في المنام، فقال له: ما هذه الجفوة يا بلال، أما لك أن تزورني؟! فانتبه حزينا خائفاً، فركب راحلته، وقصد المدينة، فأتى قبر النبي (صلى الله عليه وآله) فجعل يبكي عنده، ويمرّغ وجهه عليه، إلى أن ذكر حضور الحسنين وبكاء أهل المدينة، وأذان بلال، قال: فما رئي أكثر باكياً ولا باكية بعد رسول الله (صلى الله عليه وآله) من ذلك اليوم. وذكر ابن حملة أن (بلالاً) وضع خديه على القبر، وأن ابن عمر كان يضع يده اليمنى عليه.
رُويَ أنَّ (بلالاً رضي الله عنه رأى في منامه النبيَّ صلى الله عليه وسلم وهو يقولُ له: ما هذه الجفوة يا بلال؟ أمَا آنَ لَكَ أن تزورني يا بلال، فانتبه حزيناً وَجِلاً خائفاً، فركبَ راحلَتَهُ وقصَدَ المدينة، فأتى قبرَ النبيِّ صلى الله عليه وسلم فجعلَ يَبكي عنده، ويُمرِّغُ وَجْهَهُ عليه، وأقبلَ الحسن والحسين فجَعَلَ يَضُمُّهما ويُقبِّلُهما، فقالا له: يا بلالُ نشتهي نسمعَ أذانك الذي كُنتَ تُؤذنه لرسول الله صلى الله عليه وسلم في السَّحَر، ففَعَلَ، فَعَلا سطحَ المسجد، فوَقَفَ موقفه الذي كان يقفُ فيه، فلما أن قال: ্রالله أكبر الله أكبرগ্ধ ارتجَّت المدينة، فلما أن قال: ্রأشهد أن لا إله إلا اللهগ্ধ زاد تعاجيجُها، فلمَّا أنْ قال: ্রأشهدُ أن محمداً رسولُ اللهগ্ধ خَرَجَ العواتقُ من خُدورهنَّ فقالوا: أَبُعِثَ رسولُ الله صلى الله عليه وسلم؟ فما رُئيَ يومٌ أكثر باكياً ولا باكيةً بعد رسول الله صلى الله عليه وسلم من ذلك اليوم ( تاريخ مدينة دمشق ৭/ ১৩৭.)
تبرّك أبو أيوب الأنصاري بقبر النبي صلى الله عليه وسلم حيث وضع وجهه على القبر الشريف وقبّله(مستدرك الحاكم: ৪/৫৬০، وفاء الوفا: ৪/১৪০৪، وشرح الشفاء ২/১৯৯.)
تبرك عطاء بن أبي رباح شيخ الإسلام مفتي الحرم: عن ابن الزبير قال: حدثنا مالك قال رأيت عطاء دخل المسجد النبوي وأخذ برمّانة المنبر، ثم استقبل القبلة ثم قبل تراب القبر(سيرة أعلام النبلاء: ৮/৫৪.) تبرك بن عبد الله: كان يضع يده اليمنى على القبر الشريف وأنّ بلالاً وضع خدّه عليه أيضاً(وفاء الوفا: ৪/১৪০৫)،
برك فاطمة (عليها السلام) بتراب قبر النبي صلى الله عليه وسلم: عن علي(عليه السلام): (لما رمُس رسول الله صلى الله عليه وسلم جاءت فاطمة فوقفتْ على قبره (ص) وأخذتْ قبضةً من تراب القبر ووضعت على عينها وبكت وأنشأت تقول৩৪: ماذا على من شمّ تربة أحمدٍ*** أن لا يشُمَّ مدى الزمان غواليا صُبّتْ عليّ مصائب لو أنّها*** صُبت على الأيّام صِرنَ لياليا*** (راجع إرشاد الساري: ৩/৩৫২، وفاء الوفا: ৪/১০৪، والسيرة النبوية: ২/৩৪০، المواهب اللّدنية ৩/৪০০.)و غيرها من الشواهد.
– المقصد الأرشد في ذكر أصحاب الإمام أحمد – الجزء : ( ২ ) – رقم الصفحة : ( ৩৪২ )
– عمدة القاري شرح صحيح البخاري، للعلامه العيني، الجزء التاسع ص ৩৪৬. عمدة القاري ৯/ ২৪১.
وفي كشاف القناع عن متن الإقناع للإمام البهوتي الحنبلي عن عبد الله بن الإمام احمد بن حنبل قال:” سألت أبي عن مس الرجل رمانة المنبر يقصد التبرك وكذلك عن مس القبر” فقال:” لابأس بذلك.” وقال الذهبي في سير أعلام النبلاء :” أين المتنطع المنكر على أحمد وقد ثبت أن عبد الله سأل أباه عمن يلمس رمانة منبر النبي ويمس الحجرة النبوية فقال:” لاأرى بذلك بأسا .” وختم الذهبي كلامه بقوله:” أعاذنا الله وإياكم من رأي الخوارج ومن البدع. ”
وفي خلاصة الوفا مانصه وفي كتاب العلل والسؤالات لعبد الله ابن أحمد ابن حنبل قال :” سألت أبي عن الرجل يمس قبر النبي صلى الله عليه وسلم يتبرك بمسه وتقبيله ويفعل بالمنبر مثل ذلك رجاء ثواب الله تعالى.” فقال:” لابأس به.”
وقال صاحب غاية المنتهى الشيخ مرعي بن يوسف الحنبلي مانصه: “ولابأس بلمس قبر بيد لاسيما من ترجى بركته. ”
وروى ابن عساكر بسند جيد عن أبي الدرداء رضي الله عنه قصة نزول بلال بن رباح بداري بعد فتح عمر رضي الله عنه بيت المقدس قال :” ثم إن بلالا رأى النبي صلى الله عليه وسلم وهو يقول له:” ماهذه الجفوة يابلال ؟ أما آن لك أن تزورني!” فانتبه حزينا خائفا فركب راحلته وقصد المدينة فأتى قبر رسول الله صلى الله عليه وسلم فجعل يبكي عنده ومرغ وجهه عليه. ”
وقال الحافظ تقي الدين السبكي في كتابه شفاء السقام في زيارة خير الأنام:” وممن روي ذلك عنه من الصحابة بلال بن رباح مؤذن رسول الله صلى الله عليه وسلم سافر من الشام إلى المدينة لزيارة قبره صلى الله عليه وسلم روينا ذلك بإسناد جيد إليه .”
وفي تحفة ابن عساكر عن علي رضي الله عنه قال:” لما رمس رسول الله صلى الله عليه وسلم جاءت فاطمة رضي الله عنها فوقفت على قبره وأخذت قبضة من تراب القبر ووضعتها على عينها وبكت وأنشأت تقول :
ماذا على من شم تربة أحمد * أن لايشم مدى الزمان غواليا
صبت علي مصائب لو أنها * صبت على الأيام عدن لياليا . ”
وروى الإمام أحمد في المسند أن مروان أقبل يوما فوجد رجلا واضعا وجهه على القبر فقال:” أتدري ما تصنع؟ ” فأقبل عليه فإذا هو أبو أيوب فقال:” نعم ! جئت رسول الله صلى الله عليه وسلم ولم آت الحجر! سمعت رسول الله يقول:” لا تبكوا على الدين إذا وليه أهله ولكن ابكوا عليه إذا وليه غير أهله.”
وأخرجه من هذا الوجه الحاكم في المستدرك وقال صحيح الإسناد ولم يخرجاه وأقره الذهبي في التلخيص .
– أخرجه أبو داود (৩২০৬) سنن أبي داود গ্ধ كتاب الجنائز গ্ধ باب في جمع الموتى في قبر والقبر يعلم ، ومن طريقه : البيهقي (৩/৪১২) ، وابن شبَّة في ” تاريخ المدينة ” (১/১০২) وثبت في صحيح مسلم (৯৭০)، وجامع الترمذي (১০৫২)، وسنن النسائي (২০২৬)، عن جابر بن عبد الله، رضي الله عنهما، قال: نَهَى النبيُّ صلى الله عليه وسلم أنْ تُجَصَّصَ القُبُورُ، وأَنْ يُكْتَبَ عَلَيْهَا، وأَنْ يُبْنَى عَلَيْهَا، وأنْ تُوطَأَ.
ففي الحديث الأول مشروعية وضع العلامة على القبر ليعرف بها، ويتميز عن غيره، وفيه تحديد موضع العلامة من القبر (عند رأسه)، وكون الحجر كبيرًا لم يستطع الرجل حمله حتى حمله الرسول صلى الله عليه وسلم بيديه الكريمتين، دليل على كبر حجم العلامة على القبر، والحجم يشمل الطول والعرض والارتفاع، وكون العلامة على القبر حجارة- كما في الحديث- لا يعني أنه لا يجوز أن تكون من غيرها؛ ذلك لأنها جاءت وصفًا لبيان الحال والواقع، والقيد أو الوصف إذا جاء لبيان الحال في الواقع فلا مفهوم له عند علماء الأصول، وعليه يجوز أن تكون العلامة على القبر لبنة من طين، أو عود قصب أو خشب، أو طوبة، أو حديدة، أو كسرة رخام أو بلاط، ونحو ذلك، وقد نص الفقهاء، كما في حاشية الشيخ ابن قاسم على الروض المربع: “ولا بأس بتعليم القبر بحجر أو خشب، ونحوهما”. واستدلوا بحديث عثمان بن مظعون، رضي الله عنه، هذا، أما قول جمهور الفقهاء: “ولا يُدخِلُ القبرَ آجُرًّا ولا خشبًا، ولا شيئًا مسته النار”. فيراد به ما يوضع في اللحد داخل القبر، ولا دخل لهذا القول في علامة القبر التي توضع فوقه، وهذا القول من الفقهاء تفاؤل بألَّا تمسه النار، مع أن السلف مختلفون فيما يوضع داخل القبر، فقد روى أحمد (১৭৭৮০)، عن عمرو بن العاص، رضي الله عنه- أنه قال:لا تجعلن في قبري خشبة ولا حجرًا.
أوصى الصحابي عمرو بن شُرَحْبِيلَ، رضي الله عنه: أن اطْرَحُوا عَلَى قَبْرِي طُنًّا من قَصَبٍ؛ فقد رأيتُ المهاجرين يَسْتَحِبُّونَه على ما سِواهُ. والطن يعني الحزمة، والحسن البصري لا يرى بأسًا بالقصب والسَّاجِ في اللحد، والساجُ نوع من الخشب، وبوب البخاري في صحيحه: (باب الإذخر والحشيش في القبر). وساق فيه الحديث الصحيح عن ابن عباس، رضي الله عنهما- (১৩৪৯) عندما قال العباس، رضي الله عنه: إلا الإِذْخِرَ لصاغَتِنا وقبورِنا.
– ইমাম আবূ দাঊদ-৩২০৬ ও ইমাম বায়হাক্বী (৩/৪১২)রহমাতুল্লাহি রহমাতুল্লাহিমা তা‘আলা আলায়হি হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
– أخرجه مسلم (২৮১৩).صحيح مسلم – صفة القيامة والجنة والنار (২৮১২) سنن الترمذي – البر والصلة (১৯৩৭) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (৩/৩১৩) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (৩/৩৫৪) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (৩/৩৬৬) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (৩/৩৮৪)
– এ হাদিসটি ইমাম মুসলিম-২৮১৩, ইমাম তিরমিযী-১৯৩৭ ও ইমাম আহমদ-৩/৩১৩ বর্ণনা করেছেন।
– فِي الفتاوى الكبرى لابن تيمية (৩/ ৩৫৬)
– فِي الفتاوى الكبرى لابن تيمية (৩/ ৩৫৬)
– فِي الفتاوى الكبرى لابن تيمية (৩/ ৩৫৬)
– هذا الحديث رواه الطبراني في “معجمه الكبير”، وقال الحافظ ابن حجر: إسناده صالح، وبعض العلماء يضعف هذا الحديث وبعضهم يبالغ فيجعله موضوعًا. الدعاء للطبراني গ্ধ باب : مَا يُقَالُ عِنْدَ قَبْرِ الْمَيِّتِ بَعْدَمَا … رقم الحديث: ১১১৮ زاد المعاد في هدي خير العباد গ্ধ فصول في هديه صلى الله عليه وسلم في العبادات গ্ধ فصل في حكم الدفن وسنية اللحد
حديث أبي أمامة في التلقين . رواه أبو بكر عبد العزيز في ” الشافي ” ص ১৭৫ . ضعيف . أخرجه الطبراني في ” الكبير ” عن سعيد بن عبد الله الأودي قال : ” شهدت أبا أمامة الباهلي وهو في النزع فقال : إذا أنا مت فاصنعوا بي كما أمر رسول الله ( صلى الله عليه وسلم ) فقال : أذا مات أحد من إخوانكم فسويتم التراب عليه… قال الهيثمي ( ২ / ৩২৪ ) : ” وفيه من لم أعرفه جماعة ” . وأما الحافظ فقال في ” التلخيص “( ১৬৭ ) بعد أن عزاه للطبراني : ” وإسناده صالح وقد قواه الضياء في أحكامه وأخرجه عبد العزيز في ” الشافي ” والراوي عن أبي أمامة سعيد الأزدي بيض له ابن أبي حاتم ولكن له شواهد منها ما رواه سعيد بن منصور من طريق راشد بن سعد وضمرة ابن حبيب وغيرهما قالوا : إذا سوي على الميت قبره وانصرف الناس عنه كانوا يستحبون أن يقال للميت عند قبره : يا فلان قل لا اله إلا الله قل أشهد أن لا إله إلا الله ثلاث مرات قل ربي الله وديني الأسلام ونبيي محمد ثم ينصرف. . . .
– رواه مسلم (১৬৩০)،
– رواه البخاري (১৩৮৮) ، ومسلم (১০০৪) .قال النووي رحمه الله : ” وفي هذا الحديث : أن الصدقة عن الميت تنفع الميت ويصله ثوابها , وهو كذلك بإجماع العلماء , وكذا أجمعوا على وصول الدعاء وقضاء الدين بالنصوص الواردة في الجميع ” انتهى من ” شرح مسلم للنووي ” .وقال ابن قدامه رحمه الله : ” وأي قربة فعلها , وجعل ثوابها للميت المسلم , نفعه ذلك , إن شاء الله , أما الدعاء , والاستغفار , والصدقة , وأداء الواجبات , فلا أعلم فيه خلافا , إذا كانت الواجبات ، مما يدخله النيابة ” انتهى من ” المغني ” (২/২২৬) .
– سنن النسائي – الوصايا (৩৬৬৪) سنن النسائي – الوصايا (৩৬৬৫) سنن النسائي – الوصايا (৩৬৬৬) سنن أبي داود – الزكاة (১৬৮১)
– এ হাদিসটি ইমাম মুসলিম তাঁর ‘সহীহ্ মুসলিম’ এ বর্ণনা করেন। খ-৩, পৃ. ১২৫৪, হাদিস নং-১৬৩০। ইমাম নামাযী তাঁর সুনানে নাসায়ীতে খ-৬,পৃ.২৫২, হাদিস নং-৩৬৫২, ইবনে কুজাইমা তাঁর ‘সহীহ’তে খ-৪, পৃ. ১২৩, পৃ.-২৪৯৮, এবং ইবনু মাজাহ, তার ‘সুনানে ইবনে মাজা, ‘খ-২, পৃ.৯০৬, পৃ.-২৭১৬।)
– سنن الترمذي – النذور والأيمان (১৫৩৫) سنن أبي داود – الأيمان والنذور (৩২৫১) مسند أحمد – مسند المكثرين من الصحابة (২/৩৪) مسند أحمد – مسند المكثرين من الصحابة (২/৬৯) مسند أحمد – مسند المكثرين من الصحابة (২/৮৭) مسند أحمد – مسند المكثرين من الصحابة (২/১২৫) مسند أحمد – مسند المكثرين من الصحابة (২/১৪২) عب) ১৫৯২৯ , (طب) ৮৯০২ , وصححه الألباني في الإرواء: ২৫৬২ , وصحيح الترغيب والترهيب: ২৯৫৩
– أَمْ حَسِبْتَ أَنَّ أَصْحَابَ الْكَهْفِ وَالرَّقِيمِ كَانُوا مِنْ آيَاتِنَا عَجَبًا (৯) إِذْ أَوَى الْفِتْيَةُ إِلَى الْكَهْفِ فَقَالُوا رَبَّنَا آتِنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً وَهَيِّئْ لَنَا مِنْ أَمْرِنَا رَشَدًا (১০) فَضَرَبْنَا عَلَىٰ آذَانِهِمْ فِي الْكَهْفِ سِنِينَ عَدَدًا (১১) ثُمَّ بَعَثْنَاهُمْ لِنَعْلَمَ أَيُّ الْحِزْبَيْنِ أَحْصَىٰ لِمَا لَبِثُوا أَمَدًا (১২) نَّحْنُ نَقُصُّ عَلَيْكَ نَبَأَهُم بِالْحَقِّ ۚ إِنَّهُمْ فِتْيَةٌ آمَنُوا بِرَبِّهِمْ وَزِدْنَاهُمْ هُدًى (১৩) وَرَبَطْنَا عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ إِذْ قَامُوا فَقَالُوا رَبُّنَا رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ لَن نَّدْعُوَ مِن دُونِهِ إِلَٰهًا ۖ لَّقَدْ قُلْنَا إِذًا شَطَطًا (১৪) هَٰؤُلَاءِ قَوْمُنَا اتَّخَذُوا مِن دُونِهِ آلِهَةً ۖ لَّوْلَا يَأْتُونَ عَلَيْهِم بِسُلْطَانٍ بَيِّنٍ ۖ فَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَىٰ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا (১৫) وَإِذِ اعْتَزَلْتُمُوهُمْ وَمَا يَعْبُدُونَ إِلَّا اللَّهَ فَأْوُوا إِلَى الْكَهْفِ يَنشُرْ لَكُمْ رَبُّكُم مِّن رَّحْمَتِهِ وَيُهَيِّئْ لَكُم مِّنْ أَمْرِكُم مِّرْفَقًا (১৬) ۞ وَتَرَى الشَّمْسَ إِذَا طَلَعَت تَّزَاوَرُ عَن كَهْفِهِمْ ذَاتَ الْيَمِينِ وَإِذَا غَرَبَت تَّقْرِضُهُمْ ذَاتَ الشِّمَالِ وَهُمْ فِي فَجْوَةٍ مِّنْهُ ۚ ذَٰلِكَ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ ۗ مَن يَهْدِ اللَّهُ فَهُوَ الْمُهْتَدِ ۖ وَمَن يُضْلِلْ فَلَن تَجِدَ لَهُ وَلِيًّا مُّرْشِدًا (১৭) وَتَحْسَبُهُمْ أَيْقَاظًا وَهُمْ رُقُودٌ ۚ وَنُقَلِّبُهُمْ ذَاتَ الْيَمِينِ وَذَاتَ الشِّمَالِ ۖ وَكَلْبُهُم بَاسِطٌ ذِرَاعَيْهِ بِالْوَصِيدِ ۚ لَوِ اطَّلَعْتَ عَلَيْهِمْ لَوَلَّيْتَ مِنْهُمْ فِرَارًا وَلَمُلِئْتَ مِنْهُمْ رُعْبًا (১৮) وَكَذَٰلِكَ بَعَثْنَاهُمْ لِيَتَسَاءَلُوا بَيْنَهُمْ ۚ قَالَ قَائِلٌ مِّنْهُمْ كَمْ لَبِثْتُمْ ۖ قَالُوا لَبِثْنَا يَوْمًا أَوْ بَعْضَ يَوْمٍ ۚ قَالُوا رَبُّكُمْ أَعْلَمُ بِمَا لَبِثْتُمْ فَابْعَثُوا أَحَدَكُم بِوَرِقِكُمْ هَٰذِهِ إِلَى الْمَدِينَةِ فَلْيَنظُرْ أَيُّهَا أَزْكَىٰ طَعَامًا فَلْيَأْتِكُم بِرِزْقٍ مِّنْهُ وَلْيَتَلَطَّفْ وَلَا يُشْعِرَنَّ بِكُمْ أَحَدًا (১৯) إِنَّهُمْ إِن يَظْهَرُوا عَلَيْكُمْ يَرْجُمُوكُمْ أَوْ يُعِيدُوكُمْ فِي مِلَّتِهِمْ وَلَن تُفْلِحُوا إِذًا أَبَدًاوَكَذَٰلِكَ أَعْثَرْنَا عَلَيْهِمْ لِيَعْلَمُوا أَنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ وَأَنَّ السَّاعَةَ لَا رَيْبَ فِيهَا إِذْ يَتَنَازَعُونَ بَيْنَهُمْ أَمْرَهُمْ ۖ فَقَالُوا ابْنُوا عَلَيْهِم بُنْيَانًا ۖ رَّبُّهُمْ أَعْلَمُ بِهِمْ ۚ قَالَ الَّذِينَ غَلَبُوا عَلَىٰ أَمْرِهِمْ لَنَتَّخِذَنَّ عَلَيْهِم مَّسْجِدًا (২১) سَيَقُولُونَ ثَلَاثَةٌ رَّابِعُهُمْ كَلْبُهُمْ وَيَقُولُونَ خَمْسَةٌ سَادِسُهُمْ كَلْبُهُمْ رَجْمًا بِالْغَيْبِ ۖ وَيَقُولُونَ سَبْعَةٌ وَثَامِنُهُمْ كَلْبُهُمْ ۚ قُل رَّبِّي أَعْلَمُ بِعِدَّتِهِم مَّا يَعْلَمُهُمْ إِلَّا قَلِيلٌ ۗ فَلَا تُمَارِ فِيهِمْ إِلَّا مِرَاءً ظَاهِرًا وَلَا تَسْتَفْتِ فِيهِم مِّنْهُمْ أَحَدًا(২২) وَلَا تَقُولَنَّ لِشَيْءٍ إِنِّي فَاعِلٌ ذَٰلِكَ غَدًا (২৩) إِلَّا أَن يَشَاءَ اللَّهُ ۚ وَاذْكُر رَّبَّكَ إِذَا نَسِيتَ وَقُلْ عَسَىٰ أَن يَهْدِيَنِ رَبِّي لِأَقْرَبَ مِنْ هَٰذَا رَشَدًا(২৪) وَلَبِثُوا فِي كَهْفِهِمْ ثَلَاثَ مِائَةٍ سِنِينَ وَازْدَادُوا تِسْعًا (২৫)
– وَإِذْ قَالَ مُوسَىٰ لِفَتَاهُ لَا أَبْرَحُ حَتَّىٰ أَبْلُغَ مَجْمَعَ الْبَحْرَيْنِ أَوْ أَمْضِيَ حُقُبًا (৬০) فَلَمَّا بَلَغَا مَجْمَعَ بَيْنِهِمَا نَسِيَا حُوتَهُمَا فَاتَّخَذَ سَبِيلَهُ فِي الْبَحْرِ سَرَبًا (৬১) فَلَمَّا جَاوَزَا قَالَ لِفَتَاهُ آتِنَا غَدَاءَنَا لَقَدْ لَقِينَا مِن سَفَرِنَا هَٰذَا نَصَبًا (৬২) قَالَ أَرَأَيْتَ إِذْ أَوَيْنَا إِلَى الصَّخْرَةِ فَإِنِّي نَسِيتُ الْحُوتَ وَمَا أَنسَانِيهُ إِلَّا الشَّيْطَانُ أَنْ أَذْكُرَهُ ۚ وَاتَّخَذَ سَبِيلَهُ فِي الْبَحْرِ عَجَبًا (৬৩) قَالَ ذَٰلِكَ مَا كُنَّا نَبْغِ ۚ فَارْتَدَّا عَلَىٰ آثَارِهِمَا قَصَصًا (৬৪) فَوَجَدَا عَبْدًا مِّنْ عِبَادِنَا آتَيْنَاهُ رَحْمَةً مِّنْ عِندِنَا وَعَلَّمْنَاهُ مِن لَّدُنَّا عِلْمًا (৬৫) قَالَ لَهُ مُوسَىٰ هَلْ أَتَّبِعُكَ عَلَىٰ أَن تُعَلِّمَنِ مِمَّا عُلِّمْتَ رُشْدًا (৬৬) قَالَ إِنَّكَ لَن تَسْتَطِيعَ مَعِيَ صَبْرًا (৬৭) وَكَيْفَ تَصْبِرُ عَلَىٰ مَا لَمْ تُحِطْ بِهِ خُبْرًا (৬৮) قَالَ سَتَجِدُنِي إِن شَاءَ اللَّهُ صَابِرًا وَلَا أَعْصِي لَكَ أَمْرًا (৬৯) قَالَ فَإِنِ اتَّبَعْتَنِي فَلَا تَسْأَلْنِي عَن شَيْءٍ حَتَّىٰ أُحْدِثَ لَكَ مِنْهُ ذِكْرًا (৭০) فَانطَلَقَا حَتَّىٰ إِذَا رَكِبَا فِي السَّفِينَةِ خَرَقَهَا ۖ قَالَ أَخَرَقْتَهَا لِتُغْرِقَ أَهْلَهَا لَقَدْ جِئْتَ شَيْئًا إِمْرًا (৭১) قَالَ أَلَمْ أَقُلْ إِنَّكَ لَن تَسْتَطِيعَ مَعِيَ صَبْرًا (৭২) قَالَ لَا تُؤَاخِذْنِي بِمَا نَسِيتُ وَلَا تُرْهِقْنِي مِنْ أَمْرِي عُسْرًا (৭৩) فَانطَلَقَا حَتَّىٰ إِذَا لَقِيَا غُلَامًا فَقَتَلَهُ قَالَ أَقَتَلْتَ نَفْسًا زَكِيَّةً بِغَيْرِ نَفْسٍ لَّقَدْ جِئْتَ شَيْئًا نُّكْرًا (৭৪) ۞ قَالَ أَلَمْ أَقُل لَّكَ إِنَّكَ لَن تَسْتَطِيعَ مَعِيَ صَبْرًا (৭৫) قَالَ إِن سَأَلْتُكَ عَن شَيْءٍ بَعْدَهَا فَلَا تُصَاحِبْنِي ۖ قَدْ بَلَغْتَ مِن لَّدُنِّي عُذْرًا (৭৬)فَانطَلَقَا حَتَّىٰ إِذَا أَتَيَا أَهْلَ قَرْيَةٍ اسْتَطْعَمَا أَهْلَهَا فَأَبَوْا أَن يُضَيِّفُوهُمَا فَوَجَدَا فِيهَا جِدَارًا يُرِيدُ أَن يَنقَضَّ فَأَقَامَهُ ۖ قَالَ لَوْ شِئْتَ لَاتَّخَذْتَ عَلَيْهِ أَجْرًا (৭৭) قَالَ هَٰذَا فِرَاقُ بَيْنِي وَبَيْنِكَ ۚ سَأُنَبِّئُكَ بِتَأْوِيلِ مَا لَمْ تَسْتَطِع عَّلَيْهِ صَبْرًا (৭৮) أَمَّا السَّفِينَةُ فَكَانَتْ لِمَسَاكِينَ يَعْمَلُونَ فِي الْبَحْرِ فَأَرَدتُّ أَنْ أَعِيبَهَا وَكَانَ وَرَاءَهُم مَّلِكٌ يَأْخُذُ كُلَّ سَفِينَةٍ غَصْبًا (৭৯) وَأَمَّا الْغُلَامُ فَكَانَ أَبَوَاهُ مُؤْمِنَيْنِ فَخَشِينَا أَن يُرْهِقَهُمَا طُغْيَانًا وَكُفْرًا (৮০)فَأَرَدْنَا أَن يُبْدِلَهُمَا رَبُّهُمَا خَيْرًا مِّنْهُ زَكَاةً وَأَقْرَبَ رُحْمًا (৮১) وَأَمَّا الْجِدَارُ فَكَانَ لِغُلَامَيْنِ يَتِيمَيْنِ فِي الْمَدِينَةِ وَكَانَ تَحْتَهُ كَنزٌ لَّهُمَا وَكَانَ أَبُوهُمَا صَالِحًا فَأَرَادَ رَبُّكَ أَن يَبْلُغَا أَشُدَّهُمَا وَيَسْتَخْرِجَا كَنزَهُمَا رَحْمَةً مِّن رَّبِّكَ ۚ وَمَا فَعَلْتُهُ عَنْ أَمْرِي ۚ ذَٰلِكَ تَأْوِيلُ مَا لَمْ تَسْطِع عَّلَيْهِ صَبْرًا (৮২)
– وَيَسْأَلُونَكَ عَن ذِي الْقَرْنَيْنِ ۖ قُلْ سَأَتْلُو عَلَيْكُم مِّنْهُ ذِكْرًا (৮৩) إِنَّا مَكَّنَّا لَهُ فِي الْأَرْضِ وَآتَيْنَاهُ مِن كُلِّ شَيْءٍ سَبَبًا (৮৪) فَأَتْبَعَ سَبَبًا (৮৫) حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ مَغْرِبَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَغْرُبُ فِي عَيْنٍ حَمِئَةٍ وَوَجَدَ عِندَهَا قَوْمًا ۗ قُلْنَا يَا ذَا الْقَرْنَيْنِ إِمَّا أَن تُعَذِّبَ وَإِمَّا أَن تَتَّخِذَ فِيهِمْ حُسْنًا (৮৬) قَالَ أَمَّا مَن ظَلَمَ فَسَوْفَ نُعَذِّبُهُ ثُمَّ يُرَدُّ إِلَىٰ رَبِّهِ فَيُعَذِّبُهُ عَذَابًا نُّكْرًا (৮৭) وَأَمَّا مَنْ آمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَلَهُ جَزَاءً الْحُسْنَىٰ ۖ وَسَنَقُولُ لَهُ مِنْ أَمْرِنَا يُسْرًا (৮৮) ثُمَّ أَتْبَعَ سَبَبًا (৮৯) حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ مَطْلِعَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَطْلُعُ عَلَىٰ قَوْمٍ لَّمْ نَجْعَل لَّهُم مِّن دُونِهَا سِتْرًا (৯০) كَذَٰلِكَ وَقَدْ أَحَطْنَا بِمَا لَدَيْهِ خُبْرًا (৯১) ثُمَّ أَتْبَعَ سَبَبًا (৯২) حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ بَيْنَ السَّدَّيْنِ وَجَدَ مِن دُونِهِمَا قَوْمًا لَّا يَكَادُونَ يَفْقَهُونَ قَوْلًا (৯৩) قَالُوا يَا ذَا الْقَرْنَيْنِ إِنَّ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ فَهَلْ نَجْعَلُ لَكَ خَرْجًا عَلَىٰ أَن تَجْعَلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ سَدًّا (৯৪) قَالَ مَا مَكَّنِّي فِيهِ رَبِّي خَيْرٌ فَأَعِينُونِي بِقُوَّةٍ أَجْعَلْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ رَدْمًا (৯৫) آتُونِي زُبَرَ الْحَدِيدِ ۖ حَتَّىٰ إِذَا سَاوَىٰ بَيْنَ الصَّدَفَيْنِ قَالَ انفُخُوا ۖ حَتَّىٰ إِذَا جَعَلَهُ نَارًا قَالَ آتُونِي أُفْرِغْ عَلَيْهِ قِطْرًا (৯৬) فَمَا اسْطَاعُوا أَن يَظْهَرُوهُ وَمَا اسْتَطَاعُوا لَهُ نَقْبًا (৯৭) قَالَ هَٰذَا رَحْمَةٌ مِّن رَّبِّي ۖ فَإِذَا جَاءَ وَعْدُ رَبِّي جَعَلَهُ دَكَّاءَ ۖ وَكَانَ وَعْدُ رَبِّي حَقًّا (৯৮)
– قَالَ الَّذِي عِندَهُ عِلْمٌ مِّنَ الْكِتَابِ أَنَا آتِيكَ بِهِ قَبْلَ أَن يَرْتَدَّ إِلَيْكَ طَرْفُكَ ۚ فَلَمَّا رَآهُ مُسْتَقِرًّا عِندَهُ قَالَ هَٰذَا مِن فَضْلِ رَبِّي لِيَبْلُوَنِي أَأَشْكُرُ أَمْ أَكْفُرُ ۖ وَمَن شَكَرَ فَإِنَّمَا يَشْكُرُ لِنَفْسِهِ ۖ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ رَبِّي غَنِيٌّ كَرِيمٌ (৪০)
– وروى البخاري (৩০৪৫)
[সহীহ্ বোখারী, খ-৩, পৃ. ১১০৮, হাদীস- ২৮৮০] – (البخاري المصدر:صحيح البخاري الجزء أو الصفحة৪০৮৬ )
[বোখারী শরীফ, খ-৩, পৃ. ১১০৮, হাদীস- ২৮৮০] – صحيح البخاري গ্ধ كتاب مناقب الأنصار গ্ধ باب منقبة أسيد بن حضير وعباد بن بشر رضي الله عنهما, رقم الحديث-৩৫৯৪
– [সহীহ্ ইবনে হিব্বান, ৪/৩৭৭, হাদিস-২০৩০, মুসনাদে আহমদ, ৩/১৩৮, হাদিস-১২৪২৭, ৩/২৭২, হাদিস-১৩৮৯৭, মুসতাদরেক হাকিম, ৩/৩২৭, হাদিস-৫২৬১, মসনদে দ্বায়ালমী, ১/২৭১, হাদিস-২০৩৫, নাসায়ী তাঁর সুনানে কুবরা, ৫/৬৮, হাদিস-৮২৪৫ এবং মুসনাদে আবদ ইবনে হামিদ ১/৩৭৩, হাদিস-১২৪৪] – رواه البخاري (৬৯৯৩)، ومسلم (২২৬৬) ولفظه: ( مَنْ رَآنِي فِي الْمَنَامِ فَسَيَرَانِي فِي الْيَقَظَةِ – أَوْ لَكَأَنَّمَا رَآنِي فِي الْيَقَظَةِ – لَا يَتَمَثَّلُ الشَّيْطَانُ بِي
– [বুখারী-১/৫৩, হাদীস শরীফ–১১০ ও মুসলিম-৪/১৭৭৫, হা-২২৬৬] – الحاوي للفتاوي গ্ধ الفتاوى الصوفية গ্ধ تنوير الحلك في إمكان رؤية النبي والملك
– [আবূ ইয়ালা ও রাজ্জাক মসনদে হাদীসটি বর্ণনা করেন, দেখুন, মাজমায়ুয যাওয়ায়েদ, ৮/২১১] – رواه أبو داود (১০৪৭) وصححه ابن القيم في تعليقه على سنن أبي داود (৪/২৭৩) . وصححه الألباني في صحيح أبي داود (৯২৫) . د وغيرهم وقال السخاوي : وصححه ابن خزيمة وابن حبان والحاكم والنووي وآخرون . اهـ . وصححه النووي والألباني والأرنؤوط .
– [সুনানে নাসায়ী, ৩/৯১, হা-১৩৭৪, সহীহ্ ইবনে হিব্বান, ৩/১৯২, হা-৯১০ এবং সহীহ্ ইবনে খুজায়মা, ৩/১১৮, হা-১৭৩৩, অন্যান্যরাও বর্ণনা করেছেন] – الحاوي للفتاوي গ্ধ الفتاوى الصوفية গ্ধ تنوير الحلك في إمكان رؤية النبي والملك
– تفسير ابن كثير في تفسير قوله تعالى: كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ۗ وَإِنَّمَا تُوَفَّوْنَ أُجُورَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۖ فَمَن زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ ۗ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا مَتَاعُ الْغُرُورِ (سورة آل عمران-১৮৫)
عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ جَدِّهِ ، قال : ” لَمَّا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَاءَتِ التَّعْزِيَةُ سَمِعُوا قَائِلا يَقُولُ :: السلام عليكم أهل البيت ورحمة الله وبركاته، إِنَّ فِي اللَّهِ عَزَاءً مِنْ كُلِّ مُصِيبَةٍ , وَخَلَفًا مِنْ كُلِّ هَالِكٍ , وَدَرَكًا مِنْ كُلِّ مَا فَاتَ فَبِاللَّهِ فَثِقُوا , وَإِيَّاهُ فَارْجُوا فَإِنَّ الْمُصَابَ مَنْ حُرِمَ الثَّوَابَ ”
السنن الكبرى للبيهقي গ্ধ كِتَابُ الْجُمُعَةِ গ্ধ جُمَّاعُ أَبْوَابِ حَمْلِ الْجِنَازَةِ গ্ধ بَابُ النَّصْرَانِيَّةِ تَمُوتُ وَفِي بَطْنِهَا وَلَدٌ … رقم الحديث: ৬৫৫৫
وقال الشافعي في ” مسنده ” : أخبرنا القاسم بن عبد الله بن عمر ، عن جعفر بن محمد ، عن أبيه ، عن جده ، علي بن الحسين ، قال : لما توفي رسول الله صلى الله عليه وسلم ، وجاء التعزية ، سمعوا قائلا يقول : إن في الله عزاء من كل مصيبة ، وخلفا من كل هالك ، ودركا من كل فائت ، فبالله فثقوا ، وإياه فارجوا ، فإن المصاب من حرم الثواب . قال علي بن الحسين أتدرون من هذا؟ هذا الخضر
البداية والنهاية গ্ধ ذكر قصتي الخضر وإلياس عليهما السلام, ذكر قصتي الخضر وإلياس ، عليهما السلام
السلام عليكم أهل البيت ورحمة الله وبركاته ) كل نفس ذائقة الموت وإنما توفون أجوركم يوم القيامة ) إن في الله عزاء من كل مصيبة ، وخلفا من كل هالك ، ودركا من كل فائت ، فبالله فثقوا ، وإياه فارجوا ، فإن المصاب من حرم الثواب ، والسلام عليكم ورحمة الله وبركاته . قال جعفر بن محمد : فأخبرني أبي أن علي بن أبي طالب قال : أتدرون من هذا ؟ هذا الخضر ، عليه السلام .( تفسير ابن كثير في تفسير قوله تعالى: كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ۗ وَإِنَّمَا تُوَفَّوْنَ أُجُورَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۖ فَمَن زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ ۗ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا مَتَاعُ الْغُرُورِ (سورة آل عمران-১৮৫)
– [ইমাম শাফেয়ী তাঁর ‘সুনানে মাসুর’-এ ১/৩৩৪, মা’মর ইবনে রাশেদ তাঁর ‘জামে’তে ১১/৩৯৩ এবং আবদুর রাজ্জাক তাঁর ‘মুসান্নাফ’ এ ৫/১৬৮] – مكارم الاخلاق ص ৪১৮.وأورده الرازي أيظاً في تفسيره[২১/৩৯০] والقاسمي في محاسن التأويل[৬/৪৯৭] وأورده الزمخشري في الكشاف تحت تفسيرهِ لسورة الإسراء.قال صاحب” تخريج أحاديث الكشاف”[২/২৮৮]: رَوَاهُ الثَّعْلَبِيّ أخبرنَا ابْن بَاقِل رَاقِم بن أَحْمد الْقَارِي حَدثنَا أَبُو مُحَمَّد عبد الله بن أَحْمد بن مُحَمَّد بن الْحسن حَدثنَا مُحَمَّد بن أَحْمد بن مدرك البُخَارِيّ حَدثنَا عبيد الله بن وَاصل حَدثنَا مُحَمَّد بن يُوسُف حَدثنَا أَحْمد بن الْحَارِث الغساني حَدثنَا سَاكِنة ابْن الْجَعْد قَالَ
سَمِعت رَجَاء الغنوي يَقُول قَالَ رَسُول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم َ (من لم يسْتَشف بِالْقُرْآنِ فَلَا شفَاه الله)انْتَهَى” استشفوا بما حمد الله به نفسه قبل أن يحمده خلقه، وبما مدح الله به نفسه: {الحمد لله}، و {قل هو الله أحد}، فمن لم يشفه القرآن فلا شفاه الله “.رواه أبو محمد الخلال في ” فضائل قل هو الله أحد ” (১৯৮ / ২) حدثنا أحمد بن عروة الكاتب أنبأنا عبد الله بن محمد بن سعيد الجمال حدثنا يزيد بن عمرو بن البراء أبو سفيان الشوف حدثنا أحمد بن الحارث الغساني حدثنا ساكنة بنت الجعد قالت: سمعت رجاء الغنوي يقول: فذكره، رواه الواحدي في ” تفسيره ” (২ /১৮৫ / ২) من طريق آخر عن أحمد بن الحارث الغساني، مقتصرا على الجملة الأخيرة منه.
وكذا أخرجه الثعلبي كما في ” تخريج أحاديث الكشاف ” للحافظ ابن حجر (ص ১০৩ رقم ৩০৪) .
قلت: وابن الحارث هذا قال ابن أبي حاتم في ” الجرح والتعديل ” (১ / ১ / ৪৭) : سألت أبي عنه فقال: متروك الحديث، وقال النسائي: منكر الحديث، وقال البخاري والدولابي: فيه نظر، وقال العقيلي: له مناكير لا يتابع عليها، قال: ولا يعرف لرجاء الغنوي رواية، ولا صحت له صحبة،
وأورده السيوطي في ” الجامع ” برواية ابن قانع عن رجاء الغنوي، قال المناوي في شرحه: وقد أشار الذهبي في ” تاريخ الصحابة ” إلى عدم صحة هذا الخبر فقال في ترجمة رجاء هذا: له صحبة، نزل البصرة، وله حديث لا يصح في فضل القرآن، انتهى بنصه.
– কান্যুল ওম্মাল, হাদিস নং-২৮১০৬ এবং দারু ক্বুত্বনী হযরত আবু হোরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন
– أخرج مسلم في صحيحه (২২০০)
– [সহীহ্ মুসলিম, ২/৪৬২, হা-২২০০ এবং সহীহ্ ইবনে হিব্বান ১৩/৪৬০, হা-৬০৯২ ও ১৩/৪৬৪, হা-৬০৯৪] – ابن القيم في زاد المعاد ج ৪ ص (২৯১)
– وقال أبو داود: وقد رأيت على ابنٍ لأبي عبد الله وهو صغير تميمة في رقبته في أدم، قال الخلال: قد كتب هو من الحمى بعد نزول البلاء، والكراهة من تعليق ذلك قبل نزول البلاء هو الذي عليه العمل، وَقَالَ أَيْضًا : لَا بَأْسَ بِكَتْبِ قُرْآنٍ أَوْ ذِكْرٍ وَيُسْقَى مِنْهُ مَرِيضٌ أَوْ حَامِلٌ لِعُسْرِ الْوَلَدِ ، نَصَّ عَلَيْهِ فَلَمْ يَحْكِ فِيهِ خِلَافًا “، ونقله ابن مفلح في الآداب الشرعية: ২/৪৬০)،
– زاد المعاد في هدي خير العباد গ্ধ فصل الطب النبوي গ্ধ فصل أنواع علاجه صلى الله عليه وسلم গ্ধ القسم الثاني والثالث هديه صلى الله عليه وسلم في العلاج بالأدوية الروحانية الإلهية المفردة والمركبة منها ومن الأدوية الطبيعية গ্ধ فصل في ذكر شيء من الأدوية والأغذية المفردة التي جاءت على لسانه صلى الله عليه وسلم مرتبة على حروف المعجم গ্ধ حرف الكاف গ্ধ كتاب للحمى
– مجموع الفتاوى ابن تيمية ” (১২/ ৫৯৯-৫৬০) وَهَذَا يَقْتَضِي أَنَّ لِذَلِكَ بَرَكَةً. وَالْمَاءُ الَّذِي تَوَضَّأَ بِهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هُوَ أَيْضًا مَاءٌ مُبَارَكٌ؛ صُبَّ مِنْهُ عَلَى جَابِرٍ وَهُوَ مَرِيضٌ.
– (رواه أحمد -১৬৯৬৯ ) .
– رواه مسلم (১০১৭) جاء في صحيح الإمام مسلم عن جرير بن عبد الله البجلي رضي الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ سَنَّ سُنَّةَ خَيْرٍ فَاتُّبِعَ عَلَيْهَا فَلَهُ أَجْرُهُ وَمِثْلُ أُجُورِ مَنْ اتَّبَعَهُ غَيْرَ مَنْقُوصٍ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَنْ سَنَّ سُنَّةَ شَرٍّ فَاتُّبِعَ عَلَيْهَا كَانَ عَلَيْهِ وِزْرُهُ وَمِثْلُ أَوْزَارِ مَنْ اتَّبَعَهُ غَيْرَ مَنْقُوصٍ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئًا . ” رواه الترمذي رقم ২৬৭৫ وقال هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
– [মুসলিম শরীফ, ২/৭০৬, হা-১০১৭] – عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ فِي خُطْبَتِهِ يَحْمَدُ اللَّهَ، وَيُثْنِي عَلَيْهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ، ثُمَّ يَقُولُ: مَنْ يَهْدِهِ اللَّهُ فَلَا مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْهُ فَلَا هَادِيَ لَهُ إِنَّ أَصْدَقَ الْحَدِيثِ كِتَابُ اللَّهِ وَأَحْسَنَ الْهَدْيِ هَدْيُ مُحَمَّدٍ وَشَرُّ الْأُمُورِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلُّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلُّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ وَكُلُّ ضَلَالَةٍ فِي النَّارِ ثُمَّ يَقُولُ: بُعِثْتُ أَنَا وَالسَّاعَةُ كَهَاتَيْنِ وَكَانَ إِذَا ذَكَرَ السَّاعَةَ احْمَرَّتْ وَجْنَتَاهُ وَعَلَا صَوْتُهُ وَاشْتَدَّ غَضَبُهُ كَأَنَّهُ نَذِيرُ جَيْشٍ يَقُولُ صَبَّحَكُمْ مَسَّاكُمْ ثُمَّ قَالَ: مَنْ تَرَكَ مَالًا فَلِأَهْلِهِ وَمَنْ تَرَكَ دَيْنًا أَوْ ضَيَاعًا فَإِلَيَّ أَوْ عَلَيَّ وَأَنَا أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ))مسلم، أبو داود، النسائي، ابن ماجه، أحمد، الدارمي ] – ” البخاري: صحيح البخاري গ্ধ كتاب الصوم গ্ধ باب صيام يوم عاشوراء رقم الحديث(১৯০০/ ৩১৪৫):” أخرجه البخاري (৭/২১৫ ومسلم (رقم ১১৩০)
– (الحاوي للفتاوى ج১ ص২৯২.)
– .رواه البخاري ( ৩২১৬ ) .
– الحاوي للفتاوى ج১ ص২৯২
– বুখারী ৫/১৯৬১, হাদিস নং ৪৮৬১, ৫/১৯৬৫, হাদিস নং ৪৮১৭ এবং সুনানে নাসায়ী, ৬/৯৪, হাদিস নং ৩২৮৪
– رواه مسلم ( ২৭০০ ) .عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : (… وَمَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ فِى بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللَّهِ يَتْلُونَ كِتَابَ اللَّهِ وَيَتَدَارَسُونَهُ بَيْنَهُمْ إِلاَّ نَزَلَتْ عَلَيْهِمُ السَّكِينَةُ وَغَشِيَتْهُمُ الرَّحْمَةُ وَحَفَّتْهُمُ الْمَلاَئِكَةُ وَذَكَرَهُمُ اللَّهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ) . رواه مسلم ( ২৬৯৯ )
– [মুসলিম ৪/২০৭৪, হা-২৭০০] – رواه مسلم اخرجة الإمام مسلم ৪০॥২৭০১.والترمذي والنسائي.
– (حم) ১২৪৭৬ , (يع) ৪১৪১ , انظر الصحيحة: ২২১০ , صحيح الترغيب والترهيب:১৫০৪ , وقال شعيب الأرناؤوط: إسناده حسن.
– رواه البخاري (৭৪০৫).
– شعب الإيمان للبيهقي গ্ধ الْعَاشِرُ مِنْ شُعَبِ الإِيمَانِ وهو باب في محبة … গ্ধ فَصْلٌ فِي إِدَامَةِ ذِكْرِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ … رقم الحديث: ৫০৬
– رواه الإمام أحمد في ” المسند ” (১৮/১৯৫، ২১২)، وعبد بن حميد في ” المنتخب من المسند ” (১/১০২)، وأبو يعلى في ” المسند ” (২/৫২১)، وابن حبان في ” صحيحه ” (৩/৯৯)، والطبراني في ” الدعاء ” (ص/৫২১)، والحاكم في ” المستدرك ” (১/৬৭৭) ، وعنه البيهقي في ” شعب الإيمان ” (২/৬৪) وفي “الدعوات الكبير ” (১/১৭)، وابن السني في ” عمل اليوم والليلة ” (رقم/৪)، وابن شاهين في ” الترغيب في فضائل الأعمال ” (رقم/১৫৬) ، وابن عساكر في ” تاريخ دمشق ” (১৭/২২০)، والثعلبي في ” الكشف والبيان ” (৮/৫১)، والواحدي في ” الوسيط (৩/২৩০).
– الدُر المنثور: ৭ / ৩৪৮ ، طبعة : محمد أمين / بيروت. نور الأبصار ص১২৩ ـ ১২৪ ـ المعجم الكبير ج৩ ح২৬৪১ ص৪৭ ـ ينابيع المودة ج২ ص৪৫৩ ـ ৪৫৪ ـ فرائد السمطين ج২ ص১৩ ـ مجمع الزوائد ج৯ ـ إحياء الميت بفضائل أهل البيت (ع) الحديث الثاني ص২৫ ـ ২৬ ـ الاتحاف بحبّ الأشراف ص৪৩ ـ الصواعق المحرقة الباب১১ ص১৭০ـ مطالب السؤول ص৫২ ـ كفاية الطالب الباب১১ ص৯১. رواه القرطبي في ” الجامع لأحكام القرآن”২১:৮، الفخر الرازي ” التفسير الكبير”১৬৬:২৭، والطبراني في ” المعجم الكبير” ৪৭:৩(২৬৪১)/৩৫১:১১(১২২৫৯)، وأشار إليه السيوطي في كتابي” الدر المنثور” و” إحياء الميت بفضائل أهل البيت”
– [বুখারী-৩/১২৮৯, হা-৩৩০৬, ৪/১৮২০, হা-৪৫৪১] – رواه الطبري في ” جامع البيان”১৪৪:১১، والمحب الطبري في ” ذخائر العقبى” ص৩৩، وعزاه لابن السري والسيوطي في ” الدر المنثور”৭০৭:৫، انظر ” إحياء الميت بفضائل أهل البيت” للسيوطي رحمه الله
– رواه القرطبي: ” الجامع لأحكام القرآن” ২৪:৮، والسمهودي في ” جواهر العقدين”১৩:২ والدولابي في ” الذرية الطاهرة” ص৭৪، حديث رقم ১২১ من قول الحسن بن علي، والسيوطي في الدر المنثور وإحياء الميت بفضائل أهل البيت
– رواه جماعة من أعلام القوم وأساطين المحدّثين، منهم: ১ ـ الديلمىّ في الفردوس على ما في مناقب عبداللّه الشافعي ।ص ১২।روى بسند يرفعه إلى العبّاس عمّ النبيّ “صلى الله عليه وآله”، قال: قال رسول اللّه “صلى الله عليه وآله”: ما بال أقوام يتحدّثون بينهم، فإذا رأوا الرجل من أهل بيتي قطعوا حديثهم، واللّه لا يدخل قلب الرجل الإيمان حتّى يحبّهم للّه ولقرابتي. ২ ـ المفسّر الكبير ابن كثير في تفسيره عند آية المودّة. ৩ ـ الحبيب علوي بن طاهر الحدّاد في كتابه القول الفصل ।১: ৪৯৭ ط. جاوا।وقال في ذيل ।১: ৬৪।: هذا حديث رواه أبو داود الطيالسي، وسعيد بن منصور، والحاكم، ومحمّد بن نصر المروزي، والنسائي، والطبراني، والخطيب البغدادي، وابن عساكر، وابن النجار، والروياني من طرق متعدّدة، وصحّح الاحتجاج به ابن تيميّة. ৪ ـ ابن حجر في صواعقه ।ص ১৮৫ ط. مصر।.৫ ـ المتقي الهندي في منتخب الكنز هامش مسند الإمام أحمد ।৫: ৯৩ ط. الميمنيّة بمصر।.৬ ـ القندوزي في الينابيع ।ص ২৩১ ط. إسلامبول।.৭ ـ القلندر في الروض الأزهر ।ص ৩৫৭ ط. حيدرآباد।.৮ ـ الصبّان في إسعاف الراغبين هامش نور الأبصار ।ص ১২৩ ط. مصر।.৯ ـ ابن شهاب الدين العلوي في رشفته ।ص ৪৬ ط. القاهرة।.১০ـ النبهاني في الفتح الكبير ।৩: ৮৫ ط. مصر। وفي كتابه الشرف المؤبّد ।ص ১৭৯ ط. الحلبي وأولاده।. ১১ـ إحقاق الحقّ ।৯: ৪৫০ ـ ৪৫১।.
روى العلامة ابن شيرويه الديلمي ، بسند يرفعه إلى العباس عَمّ النبي (صلى الله عليه وآله وسلم) ، قال : قال رسول الله (صلى الله عليه وآله وسلم) : ما بال أقوام يتحدّثون بينهم فإذا رأوا الرجل من أهل بيتي قطعوا حديثهم ، و الله لا يدخل قلب الرجل الإيمان حتّى يحبّهم لله و لقرابتهم منّي. رواه ( أحمد ১/২০৭ رقم ১৭৭৩ شاكر وحسنه مصطفى العد وي في الصحيح المسند من فضائل الصحابة ص ৪৪৫. فردوس الأخبار : ص১২ (مخطوط) . ـ و رواه ابن حجر الهيثمي في ্রالصواعقগ্ধ : (ص১৮৫ ط.مصر) ، عن العباس (رض) . وط : ص২৩০ ـ ২৩১ . ورواه علي المتقي الهندي في ্র منتخب كنز العمال গ্ধ ( المطبوع بهامش المسند ج৫ ص৯৩ ط الميمنية بمصر ) روى الحديث من طريق ابن ماجة و الروياني و ابن عساكر عن محمّد بن كعب القرظي عن العبّاس . و القندوزي في ্রينابيع المودّة গ্ধ ( ص২৩১ ط اسلامبول ) نقلاً عن الفردوس . و البدخشي في ্র مفتاح النجا গ্ধ ( ص১০ على ما في الإحقاق ৯ : ৪৫০ الحديث ৫২ ) روى الحديث نقلاً من طريق الحافظ أبي عبداللّه محمّد بن يزيد بن ماجة الربيعي القزويني و أبي بكر محمّد بن هارون الروياني و الطبراني في الكبير و ابن عساكر عن محمّد بن كعب القرظي عن العبّاس (رض) . و الحضرمي في ্র وسيلة المآل গ্ধ ( ص১৯৮ ). و القلندر في ্রالروض الأزهر গ্ধ ( ص৩৫৭ ط حيدر آباد ) . وفي ্র آل بيت النبي গ্ধ لأبي لف المصري ( ص৯৪ دار التعاون بمصر ) . والنبهاني في ্র الفتح لكبير গ্ধ ( ج৩ ص৮৫ ط مصر ) . واللكهنوتي في ্রمرآة المؤمنينগ্ধ (ص৫ ) . والشيخ محمّد الصبّان المصري في ্র إسعاف الراغبين গ্ধ ( المطبوع بهامش نور الأبصار ص১২৩ ط مصر ) . والسيد أبو بكر الحضرمي في ্র رشفة الصادي গ্ধ ( ص৪৬ ط القاهرة بمصر ) . والنبهاني في ্রالشرف المؤيّد গ্ধ ( ص৭৪ ط مصر ) . والسمهودي في ্র الإشراف على فضل الأشراف গ্ধ ( ص৭৫ ) . والمولى عليّ بن حسام الدين الهندي في ্র كنز العمال গ্ধ ( ص৮৩ ج১৩ ط حيدر آباد دكن ) . و المولوي الشيخ محمّد مبين الهندي الفرنكي المحلي في ্র وسيلة النجاة গ্ধ ( ص৪৬ ط گلشن فيض لكنهو . احياء الميت : ص৯ ح৪ . و نقله السيوطي أيضاً في كتابه الدّر المنثور في ذيل تفسير قوله تعالى : ( قُلْ لاَ أسْأَلُكُمْ عَلَيهِ أجْراً )قال : ্র دخل العباس على رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) فقال : إنّا لنَخرُج فنَرى قريشاً تُحدِّث فإذا رأونا سكتُوا ، فغضب رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) و درَّ عرق بين عينيه ثم قال : و اللّه لا يدخل قلبَ امرىء مسلم ايمان حتّى يحبّكم للّه و لقرابتيগ্ধ.ـ و نقله الطبري في كتابه ্র ذخائر العقبى গ্ধ ( ص৯ ) عن ابن عباس نقل الحديث مثل ما رواه السيوطي الى أن قال : فقال : إنّا لنَخرُج فنَرى قريشاً تُحدِّث فإذا رأونا سكتُوا ، فغضب رسول اللّه (صلى الله عليه وآله) و درَّ عرق بين عينيه ثم قال : و اللّه لا يدخل قلبَ امرىء مسلم ايمان حتّى يحبّكم للّه و لقرابتي গ্ধ . روى العلاّمة الزرندي الحنفي ، قال : عن سلمان رضي اللّه عنه قال : قال رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) : لا يؤمن رجل حتى يحب أهل بيتي لحبّي গ্ধ فقال عمر بن الخطّاب : و ما علامة حبّ أهل بيتك ؟ قال : هذا ، و ضرَبَ بيده على عليّ. (نظم درر السمطين : ২৩৩ ط مطبعة القضاء. ورواه القندوزي في ্রينابيع المودة: ২৭২গ্ধ وابن حجر في الصواعق (ص২২৮ ط.عبداللطيف بمصر) وباكثير الحضرمي في ্রوسيلة المآلগ্ধ ص৬৩.) وروى العلاّمة الشبلنجي قال :و روى أبو الشيخ عن عليّ كرّم اللّه وجهه قال : خرج رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) مُغضباً حتى استوى على المنبر فحمد اللّه و أثنى عليه ثم قال : ما بال رجال يؤذونني في أهل بيتي ، و الذي نفسي بيده لا يؤمن عبدٌ حتى يُحبّني ، و لا يُحبّني حتى يحبّ ذريّتي(نور الأبصار : ص১০৫ ط مصر ). وروى الحافظ جلال الدين السيوطي قال : أخرَجَ أحمد و الترمذي و صحّحهُ و النسائي و الحاكم عن المطلب بن ربيعة قال : قال رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) : ্র و اللّه لا يدخل قلب امرىء مسلم إيمان حتّى يحبّكم للّه و لقرابتي গ্ধ( احياء الميت : ص৯ ح৪. نقله السيوطي أيضاً في كتابه الدّر المنثور في ذيل تفسير قوله تعالى : ( قُلْ لاَ أسْأَلُكُمْ عَلَيهِ أجْراً )قال : ্র دخل العباس على رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) فقال : إنّا لنَخرُج فنَرى قريشاً تُحدِّث فإذا رأونا سكتُوا ، فغضب رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) و درَّ عرق بين عينيه ثم قال : و اللّه لا يدخل قلبَ امرىء مسلم ايمان حتّى يحبّكم للّه و لقرابتيগ্ধ.
ـ و نقله الطبري في كتابه ্র ذخائر العقبى গ্ধ ( ص৯ ) عن ابن عباس نقل الحديث مثل ما رواه السيوطي الى أن قال : فقال : إنّا لنَخرُج فنَرى قريشاً تُحدِّث فإذا رأونا سكتُوا ، فغضب رسول اللّه (صلى الله عليه وآله) و درَّ عرق بين عينيه ثم قال : و اللّه لا يدخل قلبَ امرىء مسلم ايمان حتّى يحبّكم للّه و لقرابتي গ্ধ .
) و روى المولى محمّد صالح الكشفي الحنفي قال : قال النبي(صلى الله عليه وآله وسلم): عاهدني رَبّي أنْ لا يقبل إيمان عبد إلاّ بمحبّة أهل بيتي গ্ধ عن خلاصة الأخبار(المناقب المرتضوية : ص৯৯ ط بمبي .. و روى الحافظ الطبراني في ترجمة عبيد اللّه بن جعفر من المعجم الصغير(ج১ ص২৩৯ .): باسناده عن اسحاق بن واصل الضبّي ، عن أبي جعفر محمّد بن علي (عليه السلام) ، عن عبد اللّه بن جعفر ، قال : أتى العباس بن عبد المطلب رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) فقال : يا رسول اللّه انّي أتَيتُ قوماً يتحدّثون فلمّا رأوني سكتوا و ما ذاك إلاّ أنّهم يستثقلوني ، فقال رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) : قد فعلوها ؟ و الذي نفسي بيده لا يؤمن أحدكم حتّى يحبّكم بحبّي ، أيرجون أن يدخلوا الجنة بشفاعتي و لا يرجوه بنو عبد المطلب(وذيل الكلام رواه الطبراني أيضاً في ترجمة محمّد بن عون السيرافي من ্রالمعجم الصغيرগ্ধ (ج২ ص৯৬.
روى العلاّمة الشيخ محمد بن علي الحنفي المصري في كتابه ্র اتحاف أهل الاسلام গ্ধ( نسخة مكتبة الظاهرية بدمشق ) في حديث جامع لفضائل أهل البيت : قال :
و روى الديلمي و الطبراني و أبو الشيخ و ابن حبّان و البيهقي مرفوعاً انّه(صلى الله عليه وآله وسلم)قال :
لا يُؤمن عَبدٌ إلاّ حينَ أكون أحَبُّ إليهِ من نفسه و تكون عترتي أحَبُّ إليهِ من عترتي ، و أهلي أحَبُّ إليهِ من أهلِهِ ، و ذاتي أحَبُّ إليهِ من ذاتِه(و روى الحافظ ابن حجر الهيثمي في ্র الصواعق المحرقة গ্ধ (ص২৩০ ط২ ) قال : أخرجه البيهقي .
ـ و روى العلاّمة الشبلنجي في ্র نور الأبصار গ্ধ (ص১০৫ ط مصر) قال :
وروى ابن الشيخ عن علي كرّم اللّه وجهه قال :
خرج رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) مُغضباً حتّى استوى على المنبر، فحمد اللّه و أثنى عليه ثم قال : ما بال رجال يؤذونني في أهل بيتي ، و الذي نفسي بيده لا يؤمن عبد حتى يحبني ، و لا يحبني حتّى يحبّ ذريتي .
ـ و رواه العلاّمة الأمَرتسري في ্র أرجح المطالب গ্ধ (ص৩৪২ ط لاهور(
ـ و الشيخ محمد الصبان المالكي في ্র إسعاف الراغبين গ্ধ (ص১২৩ المطبوع بهامش نور الأبصار(.
ـ و رواه العلاّمة الشيخ أحمد با كثير الحضرمي في ্র وسيلة المآل গ্ধ (ص৬১ على ما في الإحقاق ১৮ : ৪৮৫ ح৬২): روى عن عبد الرحمن بن أبي ليلى الأنصاري ، عن أبيه رضي اللّه عنه ، قال : قال رسول اللّه(صلى الله عليه وآله): لا يؤمن عبدٌ حتّى أكون أحبّ إليه من نفسه ، و تكون عترتي أحبّ إليه من عترته ، و يكون أهلي أحبّ إليه من أهله ، و تكون ذاتي أحبّ إليه من ذاته . أخرجه البيهقي في ্র شعب الإيمان গ্ধ و أبو الشيخ في ্র العظمة و الثواب গ্ধ و الديلمي في ্র مسنده গ্ধ .
ـ و العلاّمة محمّد بن محمّد بن سليمان المغربي المالكي في ্র جمع الفوائد من جامع الأصول و مجمع الزوائدগ্ধ (ص১৮ ط المدينة المنورة (.
ـ و السيد عبد اللّه الحسيني الحنفي في ্র الدرّة اليتيمة গ্ধ (على ما نقله الاحقاق ১৮ : ص৪৮৬ ) . عن البيهقي في ্র شعب الإيمان গ্ধ و أبو الشيخ في ্র الثواب গ্ধ و الديلمي في ্র مسنده গ্ধ ـ والعلامة محمد المغربي المالكي في ্রجمع الفوائد من جامع الأصول ومجمع الفوائدগ্ধ (ص১৮ ط المدينة المنورة .)) روى المحدث أحمد بن حجر الهيثمي المكي قال : و صحَّ أنّ العباس قال : يا رسول اللّه إنّ قريشاً إذا لقي بعضهم بعضاً لقوهم ببشر حسن و إذا لقونا لقونا بوجوه لا نعرفها . فغضب (صلى الله عليه وآله وسلم) غضباً شديداً و قال : و الذي نفسي بيده لا يدخل قلب رجل الايمان حتى يحبّهم للّه و لرسوله .
وفي رواية لابن ماجة عن ابن عباس : كنا نلقى قريشاً وهم يتحدثون فيقطعون حديثهم فذكرنا ذلك لرسول الله (صلى الله عليه وآله) فقال : مابال اقوامٌ يتحدثون فاذا رأوا الرجال من اهل بيتي قطعوا حديثهم ، والله لا يدخل قلب رجل الايمان حتى يحبّهم لله ولقرابتهم مني .
و في أخرى عند أحمد و غيره : حتّى يحبّهم للّه و لقرابتي .
و في أخرى للطبراني : جاء العباّس رضي اللّه عنه الى النبي (صلى الله عليه وآله وسلم) فقال : إنّك تركت فينا ضغائن منذ أَن صنعت الذي صنعت – أي بقريش و العرب – فقال (صلى الله عليه وآله وسلم) : لا يبلغ الخير – أو قال الايمان – عبدٌ حتّى يحبّكم للّه و لقرابتي ، أترجو سهلب – أي حي من مراد – شفاعتي و لا يرجوها بنو عبد المطلب .
و في أخرى للطبراني : أنّ العبّاس رضي اللّه عنه أتى النبي (صلى الله عليه وآله وسلم)فقال : يا رسول اللّه انّي انتهيت الى قوم يتحدّثون فلمّا رأوني سكتوا و ما ذاك إلاّ أنّهم يبغضونا ، فقال (صلى الله عليه وآله وسلم) : أو قد فعلوها ! و الذي نفسي بيده لا يؤمن أحدٌ حتّى يُحبّكم لحبّي ، أيرجون أن يدخلوا الجنة بشفاعتي و لا يرجوها بنو عبد المطلب ؟! و في حديث بسند ضعيف : انّه (صلى الله عليه وآله وسلم) خرج مغضباً فرقى المنبر فحمد اللّه و أثنى عليه ثم قال : ما بال رجال يؤذوني في أهل بيتي ، و الذي نفسي بيده لا يؤمن عبدٌ حتّى يحبّني و لا يحبّني حتّى يحبّ ذويّ ! و في رواية للبيهقي و غيره : أنّ نسوة عيّرن بنت أبي لهب بأبيها فغضب (صلى الله عليه وآله وسلم)و اشتدّ غضبه فصعدالمنبر ثم قال :
مالي أوذى في أهلي فو اللّه إنّ شفاعتي لتنال قرابتي . و في رواية : ما بال أقوام يؤذونني في نسبي و ذوي رحمي ، ألا و من آذى نسبي و ذوي رحمي فقد آذاني ، و من آذاني فقد آذى اللّه . و في أخرى : ما بال رجال يؤذوني في قرابتي، ألا مَن آذى قرابتي فقد آذاني ، و من آذاني فقد آذى اللّه تبارك و تعالى .
و روى المحدّث ابن حجر الهيثمي في ্র الصواعق المحرقة গ্ধ( الصواعق المحرقة : ص২৩১ ط২) قال :و روى الطبراني أنّ أمّ هاني أخت علي رضي اللّه عنهما بدا قرطاها ، فقال لها عمر : إنّ محمّداً لا يغني عنك من اللّه شيئاً ، فجاءت إليه و فأخبرته ، فقال (صلى الله عليه وآله وسلم) : تزعمون أنّ شفاعتي لا تنال أهل بيتي ، و انّ شفاعتي تنال صداء و حكما – و هما قبيلتان من عرب اليمن – .
و روى البزار أنّ صفية عمّة رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) توفي لها ابن فصاحت فصبّرها النبي (صلى الله عليه وآله وسلم) فخرجت ساكتة ، فقال لها عمر : صراخك ، إنّ قرابتك من محمّد (صلى الله عليه وآله وسلم) لا تغني عنك من اللّه شيئاً فبكت فسمعها النبي (صلى الله عليه وآله وسلم) و كان يكرمها و يحبّها ، فسألها فأخبرته بما قال عمر فأمر بلالاً فنادى بالصلاة فصعد المنبر ثم قال : ما بال أقوام يزعمون أنّ قرابتي لا تنفع ؟! كلُّ سبب و نسب ينقطع يوم القيامة إلاّ نسبي و سببي فانّها موصولة في الدنيا و الآخرة .. الحديث بطوله !
و صحّ أنّه (صلى الله عليه وآله وسلم) قال على المنبر :
্রما بال رجال يقولون أنّ رحم رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) لا تنفع قومه يوم القيامة ، و اللّه إنّ رحمي موصولة في الدنيا و الآخرة ، و إنّي أيّها النّاس فرطكم على الحوضগ্ধ .
و روى ابن حجر الهيثمي ، قال : و في رواية أخرى : و الذي نفسي بيده لا يؤمن عبدٌ بي حتّى يحبّني و لا يحبّني حتّى يُحبّ ذَويّ গ্ধ فأقامهم مقام نفسه ، و من ثمّ صحّ أنّه (صلى الله عليه وآله وسلم) قال : ্র إنّي تارك فيكم ما إن تمسّكتم به لن تَضلُّوا كتاب اللّه و عترتي ، و أُلحقوا به أيضاً في قصة المباهلة في آية : (قُلْ تَعَالَوا نَدعُ أبْناءَنا وَ أبْناءَكُم) الآية فغدا (صلى الله عليه وآله وسلم) مُحتضناً الحسن آخذاً بيد الحسين و فاطمة تمشي خلفه و علي خلفها ، و هؤلاء هم أهل الكساء ، فهم المراد في آية المباهلة ، كما أنّهم من جملة المراد بآية : (إنّما يُريدُ اللّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أهْلَ البَيْت) فالمراد بأهل البيت فيها و في كلّ ما جاء في فضلهم أو فضل الآل أو ذوي القربى جميع آله (صلى الله عليه وآله وسلم) و هم مؤمنوا بني هاشم و المطلب ، و خبر : آلي كلّ مؤمن تقي ، ضعيف بالمرّة و لو صحّ لتأيّد به ، جمع بعضهم بين الاحاديث بأنّ الآل في الدّعاء لهم في نحو الصّلاة يشمل كلّ مؤمن تقي ، و في حرمة الصدقة عليهم يختصّ بمؤمن بني هاشم و المطّلب ، و أيّد ذلك الشمول بخبر البخاري : ما شبع آل محمّد من خبز مأدوم ثلاثاً ، اللّهم اجعل رزق آل محمّد قوتاً ، و في قول : أنّ الآل هم الأزواج و الذّريّة فقط(الصواعق المحرقة : ص১৪৫ ط২)
أَقول : هذا رأي ابن حجر في ادخال الازواح في الآل والأهل والعترة لتشملهم آية التطهير ، وهو خلاف الحق والواقع. روى العلاّمة الشيخ محمد بن علي الحنفي المصري في كتابه ্র اتحاف أهل الإسلام গ্ধ( نسخة المكتبة الظاهرية بدمشق على ما نقله في احقاق الحق : ج১৮ ص৫৪৪ .) حديثاً جامعاً في فضائل أهل البيت (عليهم السلام) قال فيه :
و صحّ أنّ العباس شكى الى رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) ما تفعل قريش من تعبيسهم في وجوههم و قطعهم حديثهم عند لقائهم ، فغضب (صلى الله عليه وآله وسلم) غضباً شديداً حتّى احمرّ وجهه و دَرّ عِرقٌ بين عينيه و قال : و الذي نفسي بيده لا يدخل قلب رجل الإيمان حتّى يحبّكم للّه و لرسوله .
و في رواية صحيحة أيضاً : ما بال أقوام يتحدّثون فإذا رأوا الرجل من أهل بيتي قَطعوا حديثهم ، و اللّه لا يدخل قلب رجل الإيمان حتّى يحبّهم لقرابتهم منّي .
و في أخرى : و الذي نفسي بيده لا يدخلوا الجنّة حتى يؤمنوا و لا يؤمنوا حتّى يُحبّوكم للّه و لرسوله ، أيرجون شفاعتي و لا ترجوها بنو عبد المطلب.
و روى الديلمي و الطبراني و أبو الشيخ و ابن حبّان و البيهقي مرفوعاً أنّه (صلى الله عليه وآله وسلم) قال: لا يؤمن عبدٌ إلاّ حين أكون أحبّ إليه من نفسه و تكون عترتي أحبّ إليه من عترته ، و أهلي أحبّ إليه من أهله ، و ذاتي أحبّ إليه من ذاته .
و روى أبو الشيخ عن علي كرّم اللّه وجهه قال :
خرج رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) مغضباً حتّى استوى على المنبر فحمد اللّه ثمّ أثنى عليه ثمّ قال : ما بال رجال يؤذونني في أهل بيتي ، و الذي نفسي بيده لا يؤمن عبدٌ حتّى يحبّني و لا يحبّني حتّى يحبّ ذرِّيّتي .
و لذا قال أبو بكر رضى اللّه تعالى عنه : صلة قرابة رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) أحبّ إليّ من صلة قرابتي .
(১৩) و في رواية ابن حجر قال : و صحّ أنّ العبّاس شكا الى رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) ما يلقون من قريش من تعبيسهم في وجوههم و قطعهم حديثهم عند لقائهم ، فغضب(صلى الله عليه وآله وسلم) غضباً شديداً حتّى احمرّ وجهه ودرَّ عرق ما بين عينيه و قال : ্রو الذي نفسي بيده لا يدخل قلب رجل الإيمان حتّى يحبّكم للّه و لرسولهগ্ধ(১৪(
و في رواية صحيحة أيضاً : ্রما بال أقوام يتحدّثون فإذا رأوا الرّجل من أهل بيتي قَطعُوا حَديثهم ، و اللّه لا يدخل قلب رجل الإيمان حتّى يحبّهم للّه و لقرابتهم منّيগ্ধ(১৫(
و في أُخرى : ্রو الذي نفسي بيده لا يدخلون الجنة حتّى يؤمنوا و لا يؤمنوا حتّى يحبّوكم لله و لرسوله ، أترجوا مُراد شفاعتي و لا يرجوها بنو عبد المطلبগ্ধ .
و في أُخرى : ্রلن يبلغوا خيراً حتّى يحبّوكم للّه و لقرابتيগ্ধ
و في أُخرى : ্রو لا يؤمن أحدهم حتّى يُحبّكم لحبّي أترجون أن تدخلوا الجنّة بشفاعتي و لا يرجوها بنو عبد المطلبগ্ধ . و بقي له طرق أُخرى كثيرة .
(১৪) و روى ابن حجر أيضاً في ্র الصواعق المحرقة গ্ধ(১৬) قال :وقدمت بنت أبي لَهَب المدينة مُهاجرةً فقيل لها : لا تُغني عَنكِ هجرتكِ ، أنت بنت حطب النار ! فذكرت ذلك للنبي (صلى الله عليه وآله وسلم) فاشتدَّ غضبُه ، ثمّ قال على منبره : ্রما بال أقوام يؤذوني في نسبي و ذوي رحمي ، ألا و مَن آذى نسبي و ذوي رحمي فقد آذاني ، و مَن آذاني فقد آذى اللّهগ্ধ أخرجه ابن أبي عاصم و الطبراني و ابن مندة و البيهقي بألفاظ متقاربة ، و سمّيت تلك المرأة في رواية : درّة ، و في أُخرى : سبيعة ، فأمّا هما لواحدة اسمان أو لقب و اسم أو لامرأتين و تكون القصة تعدّدت لهما .
(১৫) و روى ابن حجر أيضاً في ্র الصواعق المحرقة গ্ধ(১৭) قال :
و يوضح ذلك أحاديث نذكرها مع ما يَتعَلّق بها تتميماً للفائدة فنقول : صحَّ عنه عليه الصلاة و السلام أنّه قال على المنبر : ما بال أقوام يقولون إنّ رحم رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) لا ينفع قومه يومَ القيامة ، بلى و اللّه إنّ رحمي موصولة في الدنيا و الآخرة ، و إنّي أيّها النّاس فَرطٌ لكم على الحوض .
و في رواية ضعيفة ! و إنْ صحّحها الحاكم أنّه (صلى الله عليه وآله وسلم) بَلَغهُ أنّ قائلاً قال لبريدة : انّ محمّداً لَن يغني عنك من اللّه شيئاً فخطب ثم قال : ما بال أقوام يزعمون أنّ رحمي لا ينفع ، بل حتى ـ جباً و حكم – أي هما قبيلتان من اليمن – ، إنّي لأشفع فأشفع حتّى أنّ مَن أشفع له فيشفع حتّى انّ ابليس ليتطاول طمعاً في الشفاعة .
و أخرج الدارقطني أنّ علياً(عليه السلام) يوم الشورى احتجّ على أهلها فقال لهم : ্রأنشدكم باللّه هل فيكم أحدٌ أقرب الى رسول اللّه (صلى الله عليه وآله وسلم) في الرّحم منّي ؟ ومَن جعله (صلى الله عليه وآله وسلم) نفسه و أبناءه أبناءه و نساءه نساءه غيري ؟ قالوا : اللّهم لاগ্ধ الحديث .
رواه جماعة من أعلام القوم وأساطين المحدّثين، منهم: ১ ـ الديلمىّ في الفردوس على ما في مناقب عبداللّه الشافعي ।ص ১২।روى بسند يرفعه إلى العبّاس عمّ النبيّ “صلى الله عليه وآله”، قال: قال رسول اللّه “صلى الله عليه وآله”: ما بال أقوام يتحدّثون بينهم، فإذا رأوا الرجل من أهل بيتي قطعوا حديثهم، واللّه لا يدخل قلب الرجل الإيمان حتّى يحبّهم للّه ولقرابتي. ২ ـ المفسّر الكبير ابن كثير في تفسيره عند آية المودّة. ৩ ـ الحبيب علوي بن طاهر الحدّاد في كتابه القول الفصل ।১: ৪৯৭ ط. جاوا।وقال في ذيل ।১: ৬৪।: هذا حديث رواه أبو داود الطيالسي، وسعيد بن منصور، والحاكم، ومحمّد بن نصر المروزي، والنسائي، والطبراني، والخطيب البغدادي، وابن عساكر، وابن النجار، والروياني من طرق متعدّدة، وصحّح الاحتجاج به ابن تيميّة. ৪ ـ ابن حجر في صواعقه ।ص ১৮৫ ط. مصر।.৫ ـ المتقي الهندي في منتخب الكنز هامش مسند الإمام أحمد ।৫: ৯৩ ط. الميمنيّة بمصر।.৬ ـ القندوزي في الينابيع ।ص ২৩১ ط. إسلامبول।.৭ ـ القلندر في الروض الأزهر ।ص ৩৫৭ ط. حيدرآباد।.৮ ـ الصبّان في إسعاف الراغبين هامش نور الأبصار ।ص ১২৩ ط. مصر।.৯ ـ ابن شهاب الدين العلوي في رشفته ।ص ৪৬ ط. القاهرة।.১০ـ النبهاني في الفتح الكبير ।৩: ৮৫ ط. مصر। وفي كتابه الشرف المؤبّد ।ص ১৭৯ ط. الحلبي وأولاده।.১১ـ إحقاق الحقّ ।৯: ৪৫০ ـ ৪৫১।.
– [আহমদ-৩/১৮, হা-১১১৫৪, ৩/৩৯ হা-১১৩৬৩, হাকেম, ৪/৮৫, হা-৬৯৫৮] – الصواعق المحرقة على أهل الرفض والضلال والزندقة نور الأبصار: ১০৩.
– (أخرجه الترمذي ৬২২:৫(৩৭৮৯) وقال: حسن غريب، وط المعجم الكبير” للطبراني (২৬৩৮)৪৬ :৩، ورواه: الحاكم في ” المستدرك” ১৬২:৩(৪৭১৬) وقال حديث حسن الاسناد، ولم يخرجاه ووافقه الذهبي، وصححه السيوطي. الآداب للبيهقي গ্ধ الآداب للبيهقي رقم الحديث: ৮৩৯ وياسين، عبد السلام، الاحسان، ج২، الطبعة১، ১৯৯৮م، ص ৪০১. هذا الحديث رواه الترمذي في سننه (৩৭৮৯) والبخاري في التاريخ الكبير (১৮৩/১) وجماعة من طريق هشام بن يوسف ، عن عبد الله بن سليمان النوفلي ، عن محمد بن علي بن عبد الله بن عباس ، عن أبيه ، عن ابن عباس ، قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : (( أحبوا الله لما يغذوكم من نعمه وأحبوني بحب الله وأحبوا أهل بيتي لحبي. فضائل الصحابة للإمام أحمد : ২ / ৯৮৬ ، الدار المنثور : ৭/৩০১ ، تفسير ألسمعاني:৫/৩২، روح المعاني:৫/৩২، كنز العمال:১২/ ৪৪ ، التيسير بشرح الجامع الصغير:১/ ৪১ ، مرقاة المفاتيح: ১১/ ৩২৬ حلية الأولياء:৩ /৪১ ، المعرفة والتاريخ :১/২৬৯، ميزان الاعتدال في نقد الرجال : ৪/ ১১৩ ، تهذيب الكمال: ১৫/ ৬৪ ، المغنى عن حمل الأسفار:২ / ১১৪৫، لعلل المتناهية :১ / ২৬৭ ، ذخيرة الحفاظ:১/ ২৪০، أسنى المطالب :১/ ৩১، مجموع الفتاوى : ১০/ ৬৫ ، شرح كتاب التوحيد :১/ ৪১০ ،تيسير العزيز الحميد :১ /৩৮ ، شعب الإيمان :১ / ৩৬৬ ، الاعتقاد:১/ ৩২৮، الصواعق المحرقة :২ / ৪৯৫ ، منهاج السنة النبوية :৫ /৩৯৬، ذخائر العقب في المناقب ذوي القربى :১৮، تاريخ أربل :১/ ২২৪ ، سير الأعلام النبلاء :৯ / ৫৮২ ، أمراض القلوب :১ /৬৭، الزهد والورع والعبادة : ১/ ৭৭، التحفة العراقية:১ /৬৭ ، طريق الهجرتين : ১ / ৪৬৯، إحياء علوم الدين : ৪/ ২৯৫،)
– [তিরমিযী, ৫/৬৬৪, হা-৩৭৮৯, হাকেম-৩/১৬২, হা-৪৭১৬, ত্বাবরানী তার মুজাম আল কবীর এ ৩/৪৬ হা-২৬৩৯] – (ذكره السيوطي في ্রاحياء الميتগ্ধ (ص৪ ح৪৬) . و ذكره السيوطي أيضاً في الجامع الصغير ( ج১ ص৪২ ) عن طريق أبي نصر و ابن النجار عن علي . و وفي إحقاق الحق ج১৮ : ৭৪ / ৪৯৭ و ج৯ : ص৪৪৫ عن مصادر عديدة للعامة . و ذكره النبهاني في الفتح الكبير ( ج১ ص৫৯ ) ط مصر . و العلاّمة القندوزي في ্র ينابيع المودة গ্ধ ( ص২৭১ ط اسلامبول ) . و الشيخ عبد النبي القدّوسي في ্র سنن الهدى গ্ধ ( ص১৯ ) . و العلاّمة با كثير الحضرمي في ্র وسيلة المآل গ্ধ ( ص৬১ – نسخة المكتبة الظاهرية بالشام গ্ধ . و المولوي الشيخ ولي اللّه اللكنهوتي في ্র مرآة المؤمنين গ্ধ ( ص৪ ) . و العلاّمة محمّد السوسي في ্র الدرة الخريدة গ্ধ ( ج১ ص২১১ ط بيروت ) . و العلاّمة السيّد خير الدين أبو البركات نعمان الآلوسي البغدادي في ্র غالية المواعظ و مصباح المتّعظ و الواعظ গ্ধ ( ج২ ص৯৫ دار الطباعة المحمّدية بالقاهرة ) . و المولوي محمّد مبين الهندي الفرنكي محلي في ্রوسيلة النجاة গ্ধ ( ص৪৭ ط گلشن فيض لكهنو ) . و العلاّمة السيد عبد اللّه ميرغني في ্র الدرّة اليتيمة গ্ধ ( على ما في الإحقاق ج১৮ ص৪৯৭ ) .
و رواه الحمويني في ্র فرائد السمطين গ্ধ ( ج২ ص৩০৪ ح৫৫৯ ط بيروت ) و لفظه : أدِّبوا أولادكم على ثلاث خصال : على حبِّ نبيّكم ، و أهل بيته ، و على قراءة القرآن ، حملة القرآن في ظلِّ اللّه يوم لا ظلّ إلاّ ظلّه مع أنبيائه و أصفيائه .
– و رواه المتّقي الهندي في ্র كنز العمّال গ্ধ ( ج৮ ص২৭৮ ط১ ) و قال أخرجه أبو نصر عبد الكريم الشيرازي فيفوائده و الديلمي في الفردوس و ابن النّجار عن علي (عليه السلام) .
– و رواه في ্র فضائل الخمسة গ্ধ ( ج২ ص৭৮ ) و عن فيض القدير : ( ج১ ص২২৫ ) و عن ابن حجر في الصواعق .
– و رواه ابن حجر في ্র الصواعق المحرقة গ্ধ ( ص১৭২ – المقصد الثاني – ط২ سنة ১২৮৫ ) قال : أخرجه الديلمي . و فيه : و على قراءة القرآن و الحديث .
رواه جماعة من أعلام القوم، منهم: ১ ـ السيوطي في كتابه إحياء الميت المطبوع بهامش الإتحاف للشبراوي ।ص ১১৫ ط. مصطفى الحلبي بمصر। قال: أخرج الديلمي عن علي “رضي الله عنه”، قال: قال رسول اللّه “صلى الله عليه وآله”: أدّبوا أولادكم على ثلاث خصال: حبّ نبيّكم وحبّ أهل بيته، وعلى قراءة القرآن، فإنّ حملة القرآن في ظلّ اللّه يوم لا ظلّ إلاّ ظلّه مع أنبيائه وأصفيائه.
وذكره أيضاً في كتابه الجامع الصغير ।১: ৪২ ط. مصر، وص ১৩ ط دار القلم।.২ ـ القندوزي في كتابه ينابيع المودّة ।ص ২৭১ ط. إسلامبول।.৩ ـ النبهاني في كتابه الفتح الكبير ।১: ৫৯ ط. مصر।.৪ ـ القدوسي الحنفي، وهو العلاّمة الشيخ عبدالنبيّ بن أحمد في كتابه سنن الهدى ।ص ১৯।.৫ ـ العلاّمة باكثير الحضرمي في كتابه وسيلة المآل ।ص ৪১ ط. مكتبة الظاهريّة بالشام। روى من طريق الديلمي، واسمه الشيخ أحمد بن الفضل باكثير الحضرمي. ৬ ـ النبهاني في كتابه الشرف المؤبّد ।ص ৮০ ط. الحلبي وأولاده।.৭ ـ إحقاق الحقّ ।৯: ৪৪৫।.)
– (المعجم الأوسط للطبراني গ্ধ بَابُ الْعَيْنِ গ্ধ مَنِ اسْمُهُ : عَلِيٌّرقم الحديث: ৩৯৮৯. ـرواه السيوطي في احياء الميت نقلا عن الطبراني في الأوسط بسنده عن ابن عمر/ص ২০،كما أخرجه الهيثمي في مجمع الزوائد/ج ৯/ص ১৬৩،كما أورده ابن حجر في الصواعق المحرقة/ص .৯০ الصواعق المحرقة : ১৫০ . والجامع الصغير ১ : ৫০। ৩০২ . ومجمع الزوائد ৯ : ১৬৩ . وينابيع المودة ১ : ১২৬ । ৬২ . رواه جماعة من أعلام القوم، منهم: ১ ـ الهيثمي في كتابه مجمع الزوائد ।৯: ১৪৩ ط. مكتبة القدسي بالقاهرة।روى من طريق الطبراني، عن ابن عمر، قال: آخر ما تكلّم به رسول اللّه “صلى الله عليه وآله”: أخلفوني في أهل بيتي. رواه الطبراني في الأوسط. ২ ـ السيوطي في الجامع الصغير ।১: ৪১।.৩ ـ البدخشي في مفتاح النجا. ৪ ـ القندوزي في الينابيع ।ص ৪১।.৫ ـ الباكثير الحضرمي في وسيلة المآل ।ص ৬০।.৬ ـ النبهاني في الفتح الكبير ।১: ৫৯।.৭ ـ في الشرف المؤبّد ।ص ১৮০ ط. الحلبي وأولاده।.৮ ـ في أرجح المطالب للحنفي ।ص ৪৪৬ ط. لاهور।.৯ ـ إحقاق الحقّ ।৯: ৪৪৭ ـ ৪৪৯।.)
– [তাবরানী-৪/১৫৭, হা-৩৮৬০] – (حديث فيمن حفظ حرمات اللّه الثلاثة ما رواه جماعة من الأعلام والمحدّثين منهم: ১ ـ الطبراني في المعجم الكبير ।ص ১৪৮। مسنداً إلى أبي سعيد الخدريّ رضي اللّه عنه، قال: قال رسول اللّه “صلى الله عليه وآله”: إنّ للّه حرمات ثلاث، من حفظهنّ حفظ اللّه له أمر دينه ودنياه، ومن لم يحفظهنّ لم يحفظ اللّه له شيئاً: حرمة الإسلام، وحرمتي، وحرمة رحمي. ২ ـ الهيثمي في مجمع الزوائد ।১: ৮৮ ط. القدسي: بمصر।.৩ ـ الخوارزمي في مقتل الحسين ।২: ৯৭ ط. الغري।.৪ ـ السيوطي في إحياء الميت هامش الإتحاف ।ص ১১৮।.৫ ـ النقشبندي الكمشخانوي في رموز الأحاديث ।ص ১২৯।.৬ ـ الخركوشي في شرف النبي ।ص ২৯৫।.৭ ـ ابن شهاب الدين العلوي في رشفته ।ص ১১ ط. مصر।.৮ ـ النبهاني في الشرف المؤبّد ।ص ১৮০ ط. الحلبي وأولاده।.৯ ـ الحبيب علوي بن طاهر الحداد في القول الفصل ।২: ২৫ ط. جاوا। وقال: قد أخرجه الطبراني في الكبير والأوسط، والحاكم في تأريخه، والديلمي، وأبو الشيخ. ১০ ـ إحقاق الحقّ ।৯ ـ ৫১১ ـ ৫১৩।.)
– [ত্বাবরানী: আল কাবীর, ৩/১২৬, হা-২৮৮১, এবং আল আওসাত: ১/৮৩, হা-২০৩] – أخرجه البيهقي في ্র شعب الإيمان গ্ধ و أبو الشيخ في ্র العظمة و الثواب গ্ধ و الديلمي في ্র مسنده গ্ধ .و العلاّمة محمّد بن محمّد بن سليمان المغربي المالكي في ্র جمع الفوائد من جامع الأصول و مجمع الزوائدগ্ধ (ص১৮ ط المدينة المنورة ) .و السيد عبد اللّه الحسيني الحنفي في ্র الدرّة اليتيمة গ্ধ (على ما نقله الاحقاق ১৮ : ص৪৮৬ ) . عن البيهقي في ্র شعب الإيمان গ্ধ و أبو الشيخ في ্র الثواب গ্ধ و الديلمي في ্র مسنده গ্ধ ـ والعلامة محمد المغربي المالكي في ্রجمع الفوائد من جامع الأصول ومجمع الفوائدগ্ধ (ص১৮ ط المدينة المنورة .
– [বায়হাক্বীর শুয়াআবুল ঈমান, ৫/১৮৯, দায়লামী, মুসনাদ আল ফেরদৌস ৫/১৪৫] – أخرجه البخاري في صحيحه ص৭১০ (৩৭১৩)، كتاب فضائل الصحابة، باب مناقب قرابة رسول الله صلى الله عليه وسلم، وفي ص৭১৫ (৩৭৫১) كتاب فضائل الصحابة، باب مناقب الحسن والحسين. فتح الباري ৭/৭৯.
– [বুখারী ৩/১৩৬১, হা-৩৫০৯ এবং ৩/১৩৭০, হা-৩৫৪০] – صحيح البخاري – المغازي صحيح مسلم – الجهاد والسير (১৭৫৮) (৩৯৯৮) صحيح مسلم – الجهاد والسير (১৭৫৯) صحيح مسلم – الجهاد والسير (১৭৫৯) سنن النسائي – قسم الفيء (৪১৪১) سنن أبي داود – الخراج والإمارة والفيء (২৯৬৮) مسند أحمد – مسند العشرة المبشرين بالجنة (১/৪), موطأ مالك – الجامع (১৮৭০)
– الشفا بتعريف المصطفى للقاضي عياض: ج২، ص৪৮؛ العجاجة الزرنبية للسيوطي: ص৩৩؛ ينابيع المودة للقندوزي: ج১، ص৭؛ وج২، ص২৫৪.
– أسد الغابة في معرفة الصحابة: أبو الحسن علي بن أبي الكرم محمد بن محمد بن عبد الكريم بن عبد الواحد الشيباني الجزري، عز الدين ابن الأثير (المتوفى: ৬৩০هـ). جـ৭صـ৬৩৪-৬৩৫. كذا أخرجه البيهقي من هذا الوجه بلفظ : فقام رسول الله صلى الله عليه وسلم وهو مغصبٌ شديد الغضب فقال : ما بال أقوامٍ يؤذونني في قرابتي ! ألا من آذى قرابتي ، فقد آذاني ، ومن آذاني فقد آذى الله تبارك وتعالى .وقال ابن منده عقبة رواه محمد بن إسحاق وغيره
– [মিজানুল ইতিদাল: ৭/২৫৫, ইছাবা: ৭/৬৩৪-৬৩৫] – وأخرجه كذلك ابن أبى شيبة (৬/৩৭৮/৩২১৮১) ، وابن ماجه (১৪৫) ، وابن حبان كما فى (( الإحسان ))(৬৯৭৭) ، والطبرانى (( الكبير ))(৩/৪০/২৬১৯و৫/১৮৪/৫০৩০) و(( الأوسط ))(৫/১৮২/৫০১৫) و(( الصغير ))(৭৬৭) ، والحاكم (৩/১৬১) ، والصيداوى (( معجم الشيوخ ))(ص৩৮০) ، وابن عساكر (( تاريخ دمشق ))(১৩/২১৮و১৪/১৫৮) ، والذهبى (( سير الأعلام ))(১০/৪৩২) ، والمزى (( تهذيب الكمال ))(১৩/১১২) من طريقين ـ مالك بن إسماعيل النهدى وعلى بن قادم الخزاعى ـ عن أسباط بن نصر الهمدانى عن إسماعيل بن عبد الرحمن السدى عن صبيح مولى أم سلمة عن زيد بن أرقم به .وقال أَبو عيسى : (( هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ ، وَصُبَيْحٌ مَوْلَى أُمِّ سَلَمَةَ لَيْسَ بِمَعْرُوفٍ .
وأخرجه كذلك ابن أبى شيبة (৬/ ৩৭৮/৩২১৮১)، وابن ماجه (১৪৫)، وابن حبان كما فى ((الإحسان)) (৬৯৭৭)، والطبرانى ((الكبير)) (৩/ ৪০/২৬১৯و৫/ ১৮৪/৫০৩০) و ((الأوسط)) (৫/ ১৮২/৫০১৫) و ((الصغير)) (৭৬৭)، والحاكم(৩/ ১৬১)، والصيداوى ((معجم الشيوخ)) (ص৩৮০)، وابن عساكر ((تاريخ دمشق)) (১৩/ ২১৮و১৪/ ১৫৮)، والذهبى((سير الأعلام)) (১০/ ৪৩২)، والمزى ((تهذيب الكمال)) (১৩/ ১১২) من طريقين ـ مالك بن إسماعيل النهدى وعلى بن قادم الخزاعى ـ عن أسباط بن نصر الهمدانى عن إسماعيل بن عبد الرحمن السدى عن صبيح مولى أم سلمة عن زيد بن أرقم به.وقال أَبو عيسى: ((هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ. إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ، وَصُبَيْحٌ مَوْلَى أُمِّ سَلَمَةَ لَيْسَ بِمَعْرُوفٍ)).قلت: بل له وجوه عدة فى المتابعات والشواهد كما سيأتى بيانه. وهذا الوجه أمثل الوجوه وأصحها، رجاله موثقون كلهم، السدى وأسباط كلاهما صدوقان. وصبيح مولى زيد بن أرقم، ويقال مولى أم سلمة، ذكره ابن حبان فى ((الثقات)) (৪/ ৩৮২/৩৪৬২). وذكره البخارى فى ((التاريخ الكبير)) (৪/ ৩১৭)، وابن أبى حاتم ((الجرح والتعديل))(৪/ ৪৪৯)، فلم يذكرا فيه جرحاً ولا تعديلاً. وقال الحافظ الذهبى ((الكاشف)): ((وُثِّق)).
تاريخ مدينة دمشق ১৪/১৪৩ قال ابن عساكر: أخبرنا أبو الحسن علي بن المسلم وأبو القاسم بن السمرقندي قالا أخبرنا أبو نصر بن طلاب أخبرنا أبو الحسين بن جميع أخبرنا أبو جعفر محمد بن عمار بن محمد بن عاصم بن مطيع العجلي بالكوفة أخبرنا محمد بن عبيد بن أبي هارون المقرئ أخبرنا أبو حفص الأعشى عن إسماعيل بن أبي خالد عن محمد بن سوقة عن من أخبره عن أم سلمة قال كان النبي (صلى الله عليه واله وسلم) عندنا منكسا رأسه فعملت له فاطمة حريرة فجاءت ومعها حسن وحسين فقال لها النبي (صلى الله عليه واله وسلم) : أين زوجك اذهبي فادعيه, فجاءت به فأكلوا فأخذ النبي (صلى الله عليه واله وسلم) كساء فأداره عليهم فأمسك طرفه بيده اليسرى ثم رفع يده اليمنى إلى السماء وقال: (اللهم هؤلاء أهل بيتي وحامتي اللهم أذهب عنهم الرجس وطهرهم تطهيرا أنا حرب لمن حاربتم سلم لمن سالمتم عدو لمن عاداكم).
– [ইবনু হিব্বান: ১৫/৪৩৫, হা-৬৯৭৭, তিরমিজী ৫/৬৯৯, হা-৩৮৭, ইবনু মাজা, ১/৫২, হা-১৪৫, মুসনাদে আহমদ, ২/৪৪২, হা-৯৬৯৬, মুসতাদরাক- ৩/১৬১, হা-৪৭১৩ এবং ৩/১৬২, হা-৪৭১৪] – السيوطي في إحياء الميت هامش الاتحاف ।ص ১১১ ط. مصر। وفي الاكليل ।ص ১৯০ ط. مصر।.৩ ـ القسطلاني في المواهب ।৭: ৯ طبع مع شرحه بمطبعة الأزهريّة بمصر।.৪ ـ المناوي في كنوز الحقائق ।ص ১৪৪ ط. بولاق।.৫ ـ القندوزي في الينابيع ।ص ৩৭ ط. إسلامبول। وفي ।ص ১৮১। روى عن طريق الملاّ. ৬ ـ العلاّمة باكثير في وسيلة المآل ।ص ৬১ ط. الظاهريّة।.৭ ـ الصبّان في إسعاف الراغبين هامش نور الأبصار ।ص ১২৬।.৮ ـ الأمرتسري في أرجح المطالب ।ص ৩৪১ ط. لاهور।.৯ ـ ابن حجر في الصواعق ।ص ২৩০ ط. عبداللطيف بمصر।. ১০ ـ أحمد دحلان في سيرته هامش السيرة الحلبيّة ।৩: ৩৩২ ط. مصر।.১১ ـ الكازروني في شرف النبي، على ما في مناقب الكاشي ।ص ২৯২।.১২ ـ النبهاني في الأنوار المحمّديّة ।ص ৩৪৬ ط. بيروت।.১৩ ـ الحبيب أبو بكر بن شهاب الدين في رشفته ।ص ৪৭।.১৪ ـ الحبيب علوي بن طاهر الحدّاد العلوي الحضرمي في كتابه القول الفصل ।১: ৪৪৮ ط. جاوا।.১৫ ـ إحقاق الحقّ ।৯: ৪৫৫ ـ ৪৫৭।.) وسيلة المآل ১১৭، ورواه السمهودي في جواهر العقدين الذكر العاشر ص২৫২ والسخاوي في الاستجلاب ص৬৭.
– (أخرجه الحاكم في المستدرك ৩/১৬১، ال الحاكم: هذا حديث حسن صحيح على شرط مسلم ولم يخرجاه. ووافقه الذهبي حديث في عدم منفعة العبادة ببغض آل محمّد رواه جماعة من أعلام القوم مسنداً، ينتهي إلى ابن عبّاس، وبعضهم إلى أبي اُمامة الباهلي، من طرق متعدّدة، منهم: ১ ـ الخطيب البغدادي في تأريخ بغداد ।৩: ১২২ ط السعادة بمصر। روى عن ابن عبّاس “رضي الله عنه” قال: قال رسول اللّه “صلى الله عليه وآله”: لو أنّ عبداً عبد اللّه بين الركن والمقام ألف عام وألف عام، حتّى يكون كالشنّ البالي ولقي اللّه مبغضاً لآل محمّد، أكبّه اللّه على منخريه في نار جهنّم. ২ ـ الحاكم في المستدرك ।৩: ১৪৮ ط. حيدرآباد। غير أنـّه أتى بلفظ ‘صفن’ بدل ‘عبد’ وقال: حديث حسن صحيح. ৩ ـ الكنجي الشافعي في كفاية الطالب ।ص ১৭৮ ط. الغري। روى عن أبي أمامة الباهلي. ৪ ـ الكازروني في شرف النبي، على ما في مناقب الكاشي ।ص ২৮৮।.৫ ـ العلاّمة باكثير في وسيلة المآل ।ص ৬১ ط. الظاهريّة دمشق।.৬ ـ البدخشي في مفتاح النجا. ৭ ـ القندوزي في ينابيع المودّة ।ص ১৯২ ط. إسلامبول।.৮ ـ النبهاني في جواهر البحار ।১: ৩৬১ ط. القاهرة।.৯ ـ الأمرتسري في أرجح المطالب. ১০ ـ الطبري في ذخائر العقبى ।ص ১৮ ط. القدسي بمصر।.১১ ـ الهيثمي في مجمع الزوائد ।৯: ১৭১ ط. القدسي بمصر।.১২ ـ السيوطي في احياء الميت هامش الإتحاف ।ص ১১১ ط. الحلبي। وفي الخصائص الكبرى ।২: ২৬৫ ط. حيدرآباد।.১৩ ـ الحبيب أبو بكر بن شهاب الدين العلوي الحضرمي في كتابه رشفة الصادي ।ص ৪৭ ط. مصر।.১৪ ـ إحقاق الحقّ ।৯: ৪৯১ ـ ৪৯৪।.) العلل لابن أبي حاتم গ্ধرقم الحديث-২৬০০. سبل الهدى والرشاد، في سيرة خير العباد، وذكر فضائله وأعلام نبوته وأفعاله وأحواله في المبدأ والمعاد: محمد بن يوسف الصالحي الشامي)
– [মুসতাদরাক: ৩/১৬১, হা-৪৭১২, মুজামুল কবীর, ১১/১৭৭, হা-১১৪২২, ও সগীর-২/২০৫, হা-১০৩৫, দারে ক্বুত্বনী ১/২৩০, হা-২, মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ্ ২/৫৬৬, হা-৪৪৮১] – (حديث في اشتداد غضب اللّه ورسوله على مؤذي العترة رواه جماعة من أعلام القوم، منهم: ১ ـ ابن المغازلي الشافعي، في مناقبه ।ص ২৯২। روى بسند يرفعه إلى أبي سعيد الخدري، قال: قال رسول اللّه “صلى الله عليه وآله”: اشتدّ غضب اللّه على اليهود، واشتدّ غضب اللّه على النصارى، واشتدّ غضب اللّه ورسوله على من آذاني في عترتي. ২ ـ الخوارزمي في مقتل الحسين ।২: ৮৩ ط. النجف الأشرف।.৩ ـ ابن حجر في الصواعق ।ص ১৮৪ ط. عبداللطيف بمصر।.৪ ـ السيوطي في احياء الميت هامش الإتحاف ।ص ১১৫ ط. الحلبي।.৫ ـ البدخشي في مفتاح النجا ।ص ১১।.৬ ـ القندوزي في ينابيع المودّة ।ص ১৮৩ ط. إسلامبول।.৭ ـ الصبان في الإسعاف هامش نور الأبصار ।ص ১২৬ ط. مصر।.৮ ـ المناوي في كنوز الحقائق ।ص ১৭ ط. بولاق بمصر।.৯ ـ النبهاني في الفتح الكبير ।১: ১৮৫ ط. مصر।.১০ ـ القدوسي الحنفي في سنن الهدى ।ص ২৩ و৫৬৪ مخطوط।.১১ ـ العلاّمة السيّد خواجه مير في علم الكتاب ।ص ২৫৪ ط. دهلي।.১২ ـ الأمرتسري الحنفي في أرجح المطالب ।ص ৪৪৬ ط. لاهور।.১৩ ـ إحقاق الحقّ ।৯: ৫১৮ ـ ৫১৯।.)
– [দায়লামী: আল ফিরদাউস, ফায়দুল ক্বাদীর, ১/৫১৫] – [তিরমিযী, ৫/৩৫২, হা-৩২০৫, ৫/৬৬৩, হা-৩৭৮৭, মুসতাদরাক: ৩/১৫৯, হা-৪৭০৫, মুজামুল কাবীর, ৩/৫৩, পা-২৬৬২, বায়হাক্বী ২/১৫০, হা-২৬৮৩] – الطبراني في معجمه الكبير ج ২৩/ ص ৩৩৩ حديث رقم: ৭৬৮, المعجم الأوسط:ج৭/ص৩১৮ ح৭৬১৪ سنن الترمذي:ج৫/ص৩৫১ ح৩২০৫ থ ج৫/ص৬৬৩ ح৩৭৮৭, الطبراني في معجمه الكبير ج ২৩/ ص ৩৩৩ حديث رقم: ৭৬৮, المعجم الأوسط:ج৭/ص৩১৮ ح৭৬১৪ ,
– مسند أحمد بن حنبل গ্ধ مُسْنَدُ الْعَشَرَةِ الْمُبَشَّرِينَ بِالْجَنَّةِ … গ্ধ مسند النساء গ্ধ حَدِيثُ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ … رقم الحديث: ২৬১৩৫ ( ৬ / ৩২৩ ) الطبراني في ” المعجم الكبير ” ( ৩ / ৫৩ ) ح / ২৬৬৪ أبو يعلى الموصلي في ” المسند ” ( ৬ / ২৯২ ) ح / ৬৯৯১ ابن عساكر في ” تاريخه ” ( ১৩ / ২০৩ ) ح / ৩১৮২
– [তিরমিযী, ৫/৩৫২, হা-৩২০৫, মুসতাদরাক ৩/১৫৯, ৩/১৫৯, হা-৪৭০৫, মুজামুল কবীর: ৩/৫৩, হা-২৬৬২, বায়হাক্বী, সুনানে কুবরা ২/১৫০, হা-২৬৮৩, মুজামুল আওসাত, ২/৩১৭] – صحيح مسلم ১৫ / ১৭৫ – ১৭৬ . صحيح الترمذي ২ / ১৬৬ المستدرك للحاكم ১৫০ ৩ . سنن البيهقي ৭ / ৬৩
– الفصول المهمة ২৩৮، والآيتان من سورتي الأنعام ৮৪ وآل عمران ৬১.
– (حديث سلمة بن الأكوع رضي الله تعالى عنه : أخرجه مسدد، وإسحاق بن راهويه، وأبو بكر بن أبي شيبة، في ্রمسانيدهمগ্ধ كما في ্রالمطالب العاليةগ্ধ (১৬/২১৫-২১৭/رقم ৩৯৭২، و১৮/৩৮৬/رقم ৪৪৯৯)، وابن أبي غرزة في ্রمسند عابس الغفاريগ্ধ (رقم ২০)، والفسوي في ্রالمعرفة والتاريخগ্ধ (১/৫৩৮)، والكديمي في ্রجزء من حديثهগ্ধ (مخطوطة الظاهرية : رقم ৪৩)، وأبو يعلى الموصلي في ্রمسندهগ্ধ كما في ্রالمطالب العاليةগ্ধ (১৬/২১৭/رقم ৩৯৭২)، والروياني في ্রمسندهগ্ধ (২/২৫৩/رقم ১১৫২، ২/২৫৮/رقم ১১৬৪، و১১৬৫)، والحكيم الترمذي في ্রنوادر الأصولগ্ধ (২/৮৪০/رقم ১১৩৩)، وأبو أحمد الفرضي في ্রجزء من فوائد منتقاة من روايتهগ্ধ (رقم ৪৩)، وأبو الحسين ابن المهتدي بالله في ্রمشيختهগ্ধ (مخطوطة الظاهرية : رقم ৩০، و৪৬)، وأبو الحسن البغدادي في ্রجزء من حديثهগ্ধ (مخطوطة الظاهرية : رقم ৩৩)، ومحمد بن إبراهيم الجرجاني في ্রأماليهগ্ধ (مخطوطة الظاهرية : رقم ৭৪)، وابن الأعرابي في ্রمعجم شيوخهগ্ধ (৩/৯৭৭/رقم ২০২০)، وابن حبان في ্রالمجروحينগ্ধ (২/২৩৬)، والطبراني في ্রالمعجم الكبيرগ্ধ (৭/২৫/رقم ৬২৬০)، وأبو عبدالله الروذباري في ্রثلاثة مجالس من أماليهগ্ধ (مخطوطة الظاهرية : رقم ৩৩)، ومحمد بن سليمان الكوفي الشيعي في ্রمناقب عليগ্ধ (২/১৩৩/رقم ৬১৮، و২/১৪২/رقم ৬২৩، و২/১৭৪/رقم ৬৫১)، وأبو جعفر محمد بن علي بن الحسين ابن بابويه القمي الشيعي في ্রكمال الدين وتمام النعمةগ্ধ (ص ২০৫/رقم ১৮)، وأبو جعفر الطوسي الشيعي في ্রالأماليগ্ধ (رقم ৪৭০)، والخطيب البغدادي في ্রالسابق واللاحقগ্ধ (ص ৩০৩)، وفي ্রموضح أوهام الجمع والتفريقগ্ধ (২/৪৬২-৪৬৩)، والشجري في ্রالأمالي الخميسيةগ্ধ (১/১৫৫)، وابن عساكر في ্রتاريخ دمشقগ্ধ (৪০/২০)، من طرق عن موسى بن عبيدة الربذي، عن إياس بن سلمة بن الأكوع، عن أبيه مرفوعاً به.
والحديث عزاه الشيخ الألباني رحمه الله تعالى في ্রسلسلة الأحاديث الضعيفةগ্ধ (১০/২৩৪) لابن السماك في ্রجزء من حديثهগ্ধ (৬৭/২).قال الحافظ ابن حجر في ্রالمطالبগ্ধ :
্রهذا إسناد ضعيفগ্ধ.)
– [মুসতাদরাক, ৩/১৬৩, হা-৪৭১৫, মুজামুল কাবীর, ১১/১৯৭, হা-১১৪৭৯, ফাদায়েলুস্ সাহাবা ২/৬৭১, হা-১১৪৫] – أخرجه من هذا الوجه الحاكم في ্রالمستدركগ্ধ (৩/৪৫৭)، قال الحاكم : صحيح الإسناد ولم يخرجاه أخرج حديثه عبدالباقي بن قانع في ্রمعجم الصحابةগ্ধ (৩/১২০)، والطبراني في ্রالمعجم الكبيرগ্ধ (২০/৩৬১/رقم ৮৪৬)، وفي ্রالصغيرগ্ধ (২/১৬৬/رقم ৯৬৭)، ومن طريقه الخطيب في ্রتاريخ بغدادগ্ধ (৪/১১৪) ينابيع المودة ص২০
– (حديث في أنّ اللّه وعد رسوله بأن لا يعذّب أهل بيته رواه جماعة من أعلام القوم، منهم:
১ ـ الحاكم في المستدرك ।৩: ১৫০ ط. حيدرآباد। روى مسنداً إلى أنس بن مالك “رضي الله عنه” قال: قال رسول اللّه “صلى الله عليه وآله”: وعدني ربّي في أهل بيتي من أقرّ منهم بالتوحيد، ولي بالبلاغ أن لا يعذّبهم. ২ ـ الحبيب علوي بن طاهر الحدّاد في القول الفصل ।২: ৪২ ط. جاوا।بلفظ: وعدني ربي في أهل بيتي من أقر منهم بمصر।.৬ ـ البدخشي في مفتاح النجا ।ص ৮।.৭ ـ القندوزي في ينابيع المودّة ।ص ১৯৩ ط. إسلامبول।.৮ ـ الامرتسري في أرجح المطالب ।ص ৩৩৩ ط. لاهور।.
৯ ـ النبهاني في جواهر البحار ।১: ৩৬১ ط. القاهرة।.১০ـ الذهبي في تلخيص المستدرك المطبوع بذيل المستدرك ।৩: ১০৫ بالتوحيد والبلاغ أن لا يعذبّهم. ৩ ـ العلاّمة باكثير في وسيلة المآل ।ص ৬৩ خ. الظاهريّة بدمشق।.৪ ـ السيوطي في إحياء الميت هامش الإتحاف ।ص ১৪৪ ط. الحلبي।.৫ ـ ابن حجر في الصواعق ।ص ১৮৫ عبداللطيف ط. حيدرآباد।১১ـ نوراللّه الحسيني في إحقاق الحقّ ।৯: ৪৭৪ ـ ৪৭৫
– (أخرجه مسلم في صحيحه، كتاب فضائل الصحابة،باب من فضائل علي بن أبي طالب رضي الله عنه،২৪০৮، والامام أحمد في مسنده (৪/৩৬৭) كما عزاه الامام السيوطي في الجامع الصغير للإمام أحمد. رواه الترمذي في ” الجامع الصحيح “، حديث رقم:(৩৭৮৬) قال الترمذي: وفي الباب عن أبي ذر، وأبي سعيد، وزيد بن أرقم، وحذيفة بن أسيد، وهذا حديث حسن غريب من هذا الوجه.. ياسين عبد السلام، تنوير المومنات،ج২،الطبعة১،১৯৯৬م، ص১৫. الدر المنثور في التفسير بالمأثور – حلال الدين السيوطي – في تفسير آل عمران أية ১০৩ ( المصدر سني) وكنز العمال – المتقي الهندي – باب الإعتصام بالكتب والسنة الجزء : ( ১ ) – رقم الصفحة : ( ১৭২ . الدر المنثور في التفسير بالمأثور – حلال الدين السيوطي – في تفسير آل عمران أية ১০৩ )
– [তিরমিযী ৫/৬৬৪, হা-৩৭৮৮, মুসনাদে আহমদ ৩/১৩, হা-১১১১৭] – (حديث أبي ذر الغفاري: رواه الفاكهي في أخبار مكة (৩/رقم১৯০৪)، وأبو يعلى في مسنده الكبير [كما في تفسير ابن كثير৪/১১৫] -وعنه ابن عدي في الكامل في الضعفاء (৬/৪১১)-، والقطيعي في زوائده على فضائل الصحابة (২/৭৮৫/১৪০২)، والحاكم في المستدرك (২/৩৪৩) و(৩/১৫০) [وصحّحه على شرط مسلم!!!] من طرق عن المفضَّل بن صالح، عن أبي إسحاق، عن حنش الكناني، قال: سمعت أبا ذر -رضي الله عنه- يقول، وهو آخذ بباب الكعبة: من عرفني فأنا من عرفني، ومن أنكرني فأنا أبو ذر، سمعت النبي -صلى الله عليه وسلم- يقول: ((ألا إن مثل أهل بيتي فيكم مثل سفينة نوح من قومه، من ركبها نجا ومن تخلف عنها غرق).)
– [মুসতাদরাক ২/৩৭৩, হা-৩৩১২, তবরানী কাবীর ৩/৪৫, হা-২৬৩৬ ও সগীর ১/২৪০, হা-৩৯১, মুসনাদ আশ শিহাব ২/২৭৩, হা-১৩৪, ফাদায়েলুস্ সাহাবা ২/৭৮৬, হা-১৪০২] – (حديث أبي سعيد الخُدري: رواه الطبراني في الأوسط (৫৭৮০) والصغير (৮২৫)، وابن الشجري في الأمالي (১/১৫২ و১৫৩) من طريق عبد العزيز بن محمد بن ربيعة الكلابي الكوفي، حدثنا عبدالرحمن بن أبي حماد المقري، عن أبي سلمة الصائغ، عن عطية، عن أبي سعيد الخدري سمعت رسول الله -صلى الله عليه وسلم وسلم- يقول: ((إنما مثل أهل بيتي فيكم كمثل سفينة نوح، من ركِبها نجا، ومن تخلَّف عنها غرِق، وإنما مثل أهل بيتي فيكم مثل باب حطَّة في بني إسرائيل، من دخله غفر له)).
وله شواهد من حديث: حديث أنس بن مالك: رواه الخطيب في تاريخ بغداد (১২/৯১) من طريق أبي الحسن علي بن محمد بن شداد المطرِّز، حدثنا محمد بن محمد بن سليمان الباغندي، حدثنا أبو سهيل القطيعي، حدثنا حماد ابن زيد بمكة وعيسى بن واقد، عن أبان بن أبي عياش، عن أنس بن مالك، قال: قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم-: ((إنما مثلي، ومثل أهل بيتي كسفينةِ نوح، من ركبها نجا ومن تخلَّف عنها غرق))
حديث أبي الطُّفيل الكناني: رواه الدولابي في الكنى والأسماء (১/৭৬) من طريق يحيى بن سليمان أبي سعيد الجُعفي، قال: ثنا عبد الكريم بن هِلال الجُعفي، أنه سمع أسلم المكّي، قال: أخبرني أبو الطفيل عامر ابن واثلة، قال: سمعت رسول الله –صلى الله عليه وسلم- يقول: ((مثل أهلِ بيتي مثل سفينة نُوح من ركبها نجدا، ومن تركها غرق)
حديث علي بن أبي طالب الموقوف: قال ابن أبي شيبة في المصنف (৬/৩৭২/৩২১১৫): حدثنا معاوية بن هشام، قال: ثنا عمار، عن الأعمش، عن المنهال، عن عبد الله بن الحارث، عن علي، قال: ((إنما مثلنا في هذه الأمة كسفينة نوح، وكتاب حطة في بني إسرائيل. )
– أخرجه الطبراني في الأوسط رقم ( ৭২১ ) ১/২২০ وقال : لم يرو هذا الحديث عن أبي إسحاق إلا عبد الكريم الخراز ، والبيهقي في شعب الإيمان رقم ( ১৫৭৫ ) ২/ ২১৬ ، والديلمي في مسند الفردوس رقم ( ৪৭৫৪ ) ৩/ ২৫৫ ، وذكره الهيثمي في مجمع الزوائد ১০/ ১৬০ وقال : رواه الطبراني في الأوسط ورجاله ثقات ، وصححه الألباني في صحيح الترغيب والترهيب رقم ( ১৬৭৫ ) ، وحنه في السلسلة الصحيحة رقم ( ২০৩৫ ) ৫ / ৫৪ ، وفي صحيح الجامع رقم ( ৪৫৫৩
– [কানযুল উম্মাল: হাদিস নং-৩২১৫] – خرجه الحاكم في” المستدرك” ج৩/ص৮৫/ح৬৯৫৯، الطبراني في “المعجم الكبير” ج১১/ص১৯৭/ح১১৪৮৯، الامام احمد ابن حنبل في ” فضائل الصحابة”، ج৩/ص৬৭১/ح১১৪৫.
– [মুসতাদরাক, ৪/৮৫, হা-৬৯৫৯, মু’জামুল কবির, ১১/১৯৭, হা-১১৪৭৯] – رواه البخاري (২৭৫৩) ومسلم (২০৬)
– [বুখারী, ৩/১০১২, হা-২৬০২, মুসলিম শরীফ, ১/১৯২, হা-২০৪] – [شرح النووي لصحيح مسلم ১/৩৫০ মুসলিম শরীফ] – قال الألباني في ” السلسلة الصحيحة ” ৪ / ৬৫০ :أخرجه أحمد ( ৪ / ৩২৩ ) و من طريقه الحاكم ( ৩ / ১৫৮ ) الصواعق المحرقة : ص১৮৭ ح১৫ ص২ .
– [বুখারী ৩/১৩৬৫, হা-৩৫২৩, মুসলিম শরীফ, ৪/১৯০৩, হা-২৪৪৯] – (حديث في أنّ اللّه وعد رسوله بأن لا يعذّب أهل بيته رواه جماعة من أعلام القوم، منهم:
১ ـ الحاكم في المستدرك ।৩: ১৫০ ط. حيدرآباد। روى مسنداً إلى أنس بن مالك “رضي الله عنه” قال: قال رسول اللّه “صلى الله عليه وآله”: وعدني ربّي في أهل بيتي من أقرّ منهم بالتوحيد، ولي بالبلاغ أن لا يعذّبهم. ২ ـ الحبيب علوي بن طاهر الحدّاد في القول الفصل ।২: ৪২ ط. جاوا।بلفظ: وعدني ربي في أهل بيتي من أقر منهم بمصر।.৬ ـ البدخشي في مفتاح النجا ।ص ৮।.৭ ـ القندوزي في ينابيع المودّة ।ص ১৯৩ ط. إسلامبول।.৮ ـ الامرتسري في أرجح المطالب ।ص ৩৩৩ ط. لاهور।.
৯ ـ النبهاني في جواهر البحار ।১: ৩৬১ ط. القاهرة।.১০ـ الذهبي في تلخيص المستدرك المطبوع بذيل المستدرك ।৩: ১০৫ بالتوحيد والبلاغ أن لا يعذبّهم. ৩ ـ العلاّمة باكثير في وسيلة المآل ।ص ৬৩ خ. الظاهريّة بدمشق।.৪ ـ السيوطي في إحياء الميت هامش الإتحاف ।ص ১৪৪ ط. الحلبي।.৫ ـ ابن حجر في الصواعق ।ص ১৮৫ عبداللطيف ط. حيدرآباد।১১ـ نوراللّه الحسيني في إحقاق الحقّ ।৯: ৪৭৪ ـ ৪৭৫
– [মুসতাদরাক ৩/১৬৩, হা-৪৭১৮]

– মুসনাদ আহমদ : ৩৬০০; মুসনাদ বাযযার : ১৮১৬
– ড. মুহাম্মদ আবূ শাহবা, আল-ইসরাঈলিয়্যাত ওয়াল মাওযূআত ফী কুতুবিত তাফসীর, পৃষ্ঠা : ৫২
– مناقب الشافعي للبيهقي ج১ ص ৪৪২ و درء تعارض العقل والنقل لابن تيمية ج৫ ص৭৩ و منهاج السنة النبوية في نقض كلام الشيعة القدرية لابن تيمية ج ৬ ص৮১ و مجموع الفتاوى لابن تيمية ج৪ ص১৫৮ واعلام الموقعين عن رب العالمين لابن القيم ج ১ص৬৩
-[মুকাদ্দাম ইবনু সালাহ, ড. নূরুদ্দীন ‘ঈতর সম্পাদনা, বৈরুত, প্রকাশকাল : ২০০০ ইং, পৃষ্ঠা : ২৯৭
– ،(الأمالي المطلقة لابن حجر গ্ধ طوبى لمن رآني وآمن بي ، وطوبى ثم طوبى ثم طوبى لمن .. رقم الحديث: ৪৩ مسند أحمد وابن حبان والحاكم والبخاري في التاريخ وهو حديث صحيح)
– মুসনাদ আহমাদ : ২২৪৮৯
– তাকিউদ্দীন সুবুকী, কিতাবুল ইবহাজ ফী শারহিল মিনহাজ : ১/১২
– فضائل الصحابة لأحمد بن حنبل গ্ধ فَضَائِلُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ … رقم الحديث: ১৫২৯
– ইবন মাজা : ১৬২; আহমাদ বিন হাম্বল, ফাযাইলুস ছাহাবা : ১৫
– ইবন হাযম, আল-ফাছলু ফিল মিলাল ওয়াল আহওয়া ওয়ান নিহাল : ৩৩/২
– (صحيح البخاري গ্ধ كتاب فضائل الصحابة গ্ধ باب فضائل أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم. رقم الحديث ৩৪৪৯)
– [বুখারী : ৩৬৪৯; মুসনাদ আহমদ : ২৩০১০] – “( صحيح البخاري গ্ধ كتاب فضائل الصحابة গ্ধ باب قول النبي صلى الله عليه وسلم لو كنت متخذا خليلاصحيح البخاري – المناقب (৩৪৭০) صحيح مسلم – فضائل الصحابة (২৫৪১) سنن الترمذي – المناقب (৩৮৬১) سنن أبي داود – السنة (৪৬৫৮) سنن ابن ماجه – المقدمة (১৬১) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (৩/১১) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (৩/৫৫) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (৩/৬৪(
– [বুখারী : ৩৬৭৩; মুসলিম : ৬৬৫১] – روى البخاري (২৬৫২) ، ومسلم (২৫৩৩(
– বুখারী-২৬৫২, মুসলিম-২৫৩৩
– صحيح مسلم গ্ধ كتاب فضائل الصحابة গ্ধ باب بيان أن بقاء النبي صلى الله عليه وسلم أمان لأصحابه وبقاء أصحابه أمان للأمة. رقم الحديث ২৫৩১ أخرجه أحمد (৪/৩৯৮ ، رقم ১৯৫৮৪) ، ومسلم (৪/১৯৬১ ، رقم ২৫৩১) . وأخرجه أيضًا : ا لبزار (৮/১০৪ ، رقم ৩১০২) ، وابن حبان (১৬/২৩৪ ، رقم ৭২৪৯(.
– [মুসলিম : ৬৬২৯; মুসনাদ আহমদ : ১৯৫৬৬] – رواه أبود داوود والترمذي وابن ماجة وأحمد ، وقال الترمذي: حسن صحيح.
– و صحّحه الترمذي، و ابن حبان (১৪।১৪০)، و الحاكم (১।১২৮)، والمنذري، و الشاطبي في الاعتصام (২।১৮৯) و السيوطي في الجامع الصغير (২।২০)، وجوّده الزين العراقي في تخريج أحاديث الإحياء.
-ইবনু হিব্বান-১৪/১৪০,হাকেম-১/১২৮
– [তিরমিযী : ৪২৩৬; সহীহ ইবন হিব্বান : ৭২৫৬] – ইবন আবদিল বার, আল-ইস্তি‘আব ফী মা‘রিতিল আসহাব : ১/১] – الشريعة للآجري ৪/১৬৮৬ ,كذا أخرجه أبو نعيم في الحلية (১/৩০৬،৩০৫
– আবূ নাঈম, হিলইয়াতুল আওলিয়া : ৩০৫/১; . মুহাম্মদ ইবন আবূ শাহবা, আল ইসরাঈলিয়্যাত ওয়াল মাওযূয়াত ফী কুতুবিত তাফসীর]

– روى البخاري (২৬৫২) ، ومسلم (২৫৩৩)
– বুখারী-২৬৫২, ৩৬৫১, ৬৪২৯, ৬৬৫৮ মুসলিম- ৪৪/৫২ হাঃ ২৫৩৩, আহমাদ ৪১৩০। আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৪৬০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৪৭৬
– ইবন আবদিল বার, আল-ইস্তি‘আব ফী মা‘রিতিল আসহাব- ১/১
– খতীব বাগদাদী, আল-কিফায়া ফী ইলমির রিওয়ায়াহ্ ১১৮/১
– আবূ নাঈম, হিলইয়াতুল আওলিয়া : ৩০৫/১; ড.মুহাম্মদ ইবন আবূ শাহবা, আল ইসরাঈলিয়্যাত ওয়াল মাওযূয়াত ফী কুতুবিত তাফসীর
– মুকাদ্দাম ইবনু সালাহ, ড. নূরুদ্দীন ‘ঈতর সম্পাদনা, বৈরুত, প্রকাশকাল : ২০০০ ইং, পৃষ্ঠা- ২৯৭
– বুখারী-৩৬৭৩.মুসলিম ৪৪/৫৪, হাঃ ২৫৪০ আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৩৯৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪০৫
– ইবন মাজা : ১৬২; আহমাদ বিন হাম্বল, ফাযাইলুস ছাহাবা ১৫
– ইবন হাযম, আল-ফাছলু ফিল মিলাল ওয়াল আহওয়া ওয়ান নিহাল ২/৩৩
– أخرجه الترمذي في المناقب، باب فيمن سب أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم، وراوه أيضاْ أحمد في المسند ৪/৮৭.
– তিরমিযী : ৪২৩৬; সহীহ ইবন হিব্বান-৭২৫৬
– حلية الأولياءগ্ধ (৬/ ৩২৭). قال القرطبيُّ ـ رحمه الله ـ مُعلِّقا عليه: ্রقلتُ: لقد أحسنَ مالكٌ في مقالته وأصابَ في تأويله؛ فمن نَقص واحدًا منهم أو طَعن عليه في روايتِه فقد ردَّ على الله رَبِّ العالمين، وأبطل شرائع المسلمينগ্ধ ্রالجامع لأحكام القرآنগ্ধ (১২/ ২৯৭(.
– হিলয়াতুল আওলিয়াল ৬/৩২৭
– رواه البخاري برقم (৩৫০০) ومسلم برقم (১০৯)، وهذا لفظ البخاري
– বুখারী-৩৫০০, মুসলিম-১০৯
– قال عنه الإمام أحمد بن حنبل: ما جاء الجسر أحفظ من أبي زرعة، وقال الإمام أبو حاتم: إن أبا زرعة ما خلف بعده مثله. (العواصم من القواسم، ص৩৪، ط: الرياض ১৪০৪هـ).
– الكفاية للخطيب البغدادي، ص: ৪৯، ط: حيدر آباد الدكن (الهند) ১৩৫৭.
– খতীব বাগদাদী, আল-কিফায়াহ ফী ইলমির রিওয়ায়াহ ১/১১৯
– الجامع لأخلاق الراوي وآداب السامع للخطيب গ্ধ بَابُ : اتِّخَاذِ الْمُسْتَمْلِي গ্ধ إِمْلاءُ فَضَائِلِ الصَّحَابَةِ وَمَنَاقِبِهِمْ ، … رقم الحديث: ১৩৮২
– কানযুল উম্মাল-৩২৪৬৮
– أخرجه الترمذي في المناقب.
– তিরমীযি শরীফ সাহাবীদের অধ্যায়।
– رواه الطبراني (৩ / ১৭৪ / ১) عن الحسن بن قزعة عن عبد الله بن خراش عن العوام بن حوشب عن عبد الله بن أبي الهذيل عن ابن عباس مرفوعا.
– তাবরানী-২১০৮
– আহমাদ বিন হাম্বল, ফাযাইলুস ছাহাবা ১৭৩৩
– رواه الطبراني في “الكبير” (২ / ৯৬)
– رواه الطبراني في “الكبير” (২ / ৯৬)
– ঘটনাটি ওমর বিন আব্দুল আযীয (রহঃ) থেকে বর্ণনা করা হয়। দ্রঃ হিলইয়াতুল আওলিয়া, ৯/১১৪; আল-মুজালাসাহ/১৯৬৫।
– (বাক্বারাহ ১৩৪।[দ্রঃ খাল্লাল, আস-সুন্নাহ, ২/৪৮১।]

– (আল কাফি; খঃ ১, পৃঃ ৪০০।)
– গ্ধأخرجه الطبراني في الكبير (৮৩৩-৮৩৪) وأحمد في المسند (২০৫৯৬) وابن أبي عاصم في السنة (৪১০) والفريابي في القدر (১৭) والآجري في الشريعة (৯৪৩-৯৪৪-৯৪৫ وأخرجه الحاكم في المستدرك (৪২০৯) وقال ((هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ وَلَمْ يُخَرِّجَاهُ وَشَاهِدُهُ حَدِيثُ الْأَوْزَاعِيِّ الَّذِي)) ووافقه الذهبي.والحديث ذكره الهيثمي في مجمع الزوائد (১৩৮৪৮) وقال ((رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالطَّبَرَانِيُّ، وَرِجَالُهُ رِجَالُ الصَّحِيحِ)).عن عبد الله بن شقيق، عن رجلقَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَتَى جُعِلْتَ نَبِيًّا؟ قَالَ: ্রوَآدَمُ بَيْنَ الرُّوحِ وَالْجَسَدِগ্ধأخرجه أحمد في المسند (১৬৬২৩- ২৩২১২) وابن أبي عاصم في الآحاد والمثاني (২৯১৮) وابن أبي شيبة في المصنف (৩৬৫৫৩) وابن بطة في الإبانة (১৮৯৩) وهو أيضا أخرجه الهيثمي (১৩৮৪৯) وقال ((رَوَاهُ أَحْمَدُ، وَرِجَالُهُ رِجَالُ الصَّحِيحِ)) انتهى.
– صحيح البخاري – بدء الوحي (৭)صحيح مسلم – الجهاد والسير (১৭৭৩) سنن الترمذي – الاستئذان والآداب (২৭১৭) سنن أبي داود – الأدب (৫১৩৬
– صحيح البخاري – المناقب (৩৩৬৪) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৩৭৩) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৪১৭)
– (সহীহ আল বুখারীঃ ৪/১৫১)
– .( دلائل النبوة للبيهقي, رقم الحديث১০০تاريخ دمشق لابن عساكر, رقم الحديث-১৪২৯معرفة علوم الحديث للحاكم গ্ধ ذِكْرُ النَّوْعِ التَّاسِعِ وَالثَّلاثِينَ مِنْ مَعْرِفَةِ … رقم الحديث: ৩৬০)
– تحفة الأحوذي (ج ৯ / ص ১৪) (২) (ت) ৩৬০৭ (৩) (ت) ৩৫৩২ (৪) (حم) ১৭৮৮ , (ت) ৩৬০৭ , صحيح الجامع: ১৪৭২ , صحيح السيرة ص১১ , وقال الشيخ شعيب الأرناؤوط: حسن لغيره
– {সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-৩৫৩২, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৭৮৮, আল মু’জামুল কাবীর, হাদীস নং-৬৭৫, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৩২২৯৬}
– ( الأمالي المطلقة لابن حجر গ্ধ قلبت مشارق الأرض ومغاربها فلم أجد رجلا أفضل من محمد …رقم الحديث৬৬, الشفا ১/১৬৬ الشفاء ১ / ১৬৬ . مجمع الزوائد ৭ / ২১৮ ،ينابيع المودة لذوي القربى – القندوزي ج ১ ص ৬১)
– (তাবরানী শরীফ, মাওয়াহিব,দালায়েলে আবু নাঈম)
– صحيح البخاري – المناقب (৩৩৬৪) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৩৭৩) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৪১৭)
– السيوطي – الدر المنثور – الجزء : ( ৫ ) – رقم الصفحة : ( ৯৮ ) أخرجه أبو نعيم ( ১ / ১১ – ১২ )
– ت) ৩৬০৫ , (م) ১ – (২২৭৬) , (حم) ১৭০২৭) أخرجه مسلمٌ ( ২২৭৬ / ১) ، والبخاري في ( التاريخ الكبير ) ( ১/ ১/ ৪) ، والترمذي ( ৩৬০৫ ، ৩৬০৬) ، وأحمد (৪/ ১০৭) ، وابنُ أبي شيبة ( ১১ / ৪৭৮) ، وابن سعد في ( الطبقات ) (১/ ২০) ، والطبراني في ( الكبير ) ( ج২২/ رقم ১৬১ ) ، والبيهقي في ( السنن الكبير) (৭ / ১৩৪) ، وفي ( الدلائل) (১/ ১৬৫) ، والخطيب ( ১৩ / ৬৪) ، واللالكائي في ( شرح الأصول ) (১৪০০) ، والجوزقاني في ( الأباطيل ) (১/ ১৭০) ، والبغوي في ( شرح السنة ) ( ১৩ ، ১৯৪ ) من طريق الأوزاعي ، حدثني أبو عمار شداد ، عن واثلة بن الأسقع مرفوعًا به ، والله أعلم .
– (মুসলিম-২২৭৬, তিরমীজি-৩৬০৬,মুসনাদে আহমাদ-১৬৯৮৬ ও ৮/১০৭, হা/ ১৭১১১,মিশকাত শরীফ*ফাযায়েলে সৈয়্যদিল মুরসালিন অধ্যায়)
– (أخرجه الرامهرمزي في “الفاصل بين الراوي والواعي” ( ص ১৩৬ ) والجرجاني السهمي في ” تاريخ جرجان ” ( ص ৩১৮ – ৩১৯ ) وأبو نعيم في ” اعلام النبوة ” ( ১ / ১১ ) وابن عساكر في ” تاريخ دمشق ” ( ১ / ২৬৭ / ১ – ২ ) كلهم عن العدني به إلا أنه لم يقل ” عن علي ” في رواية عنه . وقد عزاه إلى ” مسند العدني ” السيوطي في ” الدر المنثور ” ( ২ / ২৯৪ ) و ” الجامع الصغير ” وعزاه للطبراني أيضا في ” الأوسط ” تبعا للهيثمي وقال هذا في ” المجمع ” ( ৮ / ২১৪ ))
– (ইরওয়াউল গালীলঃ ১৯৭২, সহীহুল জামিউস্ সাগীরঃ ৩২২৫। তাবারানী, আবু নাঈম, ইবনে আসাকীর; ইমাম হাকেম এটাকে সহিহ বলেছেন।)
– شرح الزرقاني على المواهب اللدنية بالمنح المحمدية. جـ৪ صـ২৩৮ الكتاب: الخصائص الكبرى. المؤلف: عبد الرحمن بن أبي بكر، جلال الدين السيوطي (المتوفى: ৯১১هـ) الناشر: دار الكتب العلمية – بيروت. جـ১ صـ১২-১৩)
– ( জুরকানি শরীফ ২/২৩৮, খাসায়েস আল কুবরা: সুয়ূতী ১/১২-১৩ )।

– (তাফসীরে মাদারিক)
– (খাসায়িসুল ক্বুবরা,তাফসীরে-ই-নঈমী)।
– الشفا بتعريف حقوق المصطفى المؤلف: عياض بن موسى بن عياض بن عمرون اليحصبي السبتي، أبو الفضل (المتوفى: ৫৪৪هـ) ‏الجامع الصغير لجلال الدين السيوطي.” أنا محمد بن عبد الله، بن عبد المطلب، بن هاشم، بن عبد مناف، بن قصي، بن كلاب، بن مرة، بن إلياس، بن كعب، بن لؤي، بن غالب، بن فهر، بن مالك، بن النضر، بن كنانة، بن خزيمة، بن مدركة، بن مضر، بن نزار، بن معد، بن عدنان. وما افترق الناس فرقتين إلا جعلني الله في خيرهما، فأخرجت من بين أبوي فلم يصبني شيء من عهد الجاهلية، وخرجت من نكاح ولم أخرج من سفاح، من لدن آدم حتى انتيهت إلى أبي وأمي. فأنا خيركم نسبا، وخيركم أبا”. أخرجه البيهقي في “سننه”، والطبراني في “معجمه” عن هشيم حدثني المديني عن أبي الحويرث عن ابن عباس قال: قال رسول اللّه صلى اللّه عليه وسلم: “ما ولدني شيء من سفاح الجاهلية وما ولدني إلا نكاح كنكاح الإِسلام”.

– ( খাসাইসুল ক্বুবরা )।
– السيوطي – الدر المنثور – الجزء : ( ৫ ) – رقم الصفحة : ( ৯৮ ) أخرجه أبو نعيم ( ১ / ১১ – ১২ ) دلائل النبوة لأبي نعيم গ্ধ دَلائِلُ النُّبُوَّةِ لأبِي نُعَيْمٍ الأصْبَهَانِي … গ্ধ الفصل الثاني : ذِكْرُ فَضِيلَتِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ … رقم الحديث: ১৫
– (খাসাইসুল ক্বুবরা, দালায়েলুন্ নবুয়্যত)
– (বুখারী শরীফ, সীফাতুন্নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা শীর্ষক অধ্যায়)
– (কিতাবুশ্ শেফা)
– (আর রাহীকুল মাখতুম, ছফীউররাহমান মুবারকপুরী, পৃঃ ৫৩।)
– (নবীয়ে রহমত- সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী- ১১৩)
– (কামেলে ইবনে আসির)
– (কামেলে ইবনে আসির)
– (তারিখে ইয়াকুবি)
– شرح الزرقاني على المواهب اللدنية بالمنح المحمدية ১/১৫৫
– (দেখুন. محمد بن يعقوب الفيروزآبادي: تنوير المقياس. صـ৭২তানভীরুল মিক্ইয়াস) পৃ.৭২] – [তাফসীরে কাবীর, খ-১১, পৃ. ১৮৯] – [জামেউল বয়ান, (ত্বাবারী) খ-৬, পৃ.-৯২] – [তাফসীরে জালালাইন, পৃ. ৯৭] – [তাফসীরে খাযেন, খ-২, পৃ. ২৮] – [মাদারেকুত্ তানযীল, খ-১, পৃ. ২৭৬] – [রূহুল মা‘আনী, খ-৬, পৃ. ৮৭] – [আল হাদীকাহ্ আন্ নাদীয়্যাহ্, খ-২, পৃ. ৩৭৫] – [শরহে যুরক্বানী আলাল মাওয়াহিব, খ-১, পৃ. ৪৬] – [গারায়েবুল ক্বোরআন, খ-৮, পৃ.-৮৮] – الأنوار في مولد النبي محمد صلى الله عليه وسلم, صـ৫
[আল আনওয়ার-৫] – [মাকতুবাত, খ-৯, পৃ. ১৫৩] – [ইয়াক্বীত, খ-২, পৃ.-২০] – صحيح البخاري – بدء الخلق (৩০২০) سنن الترمذي – المناقب (৩৯৫১) مسند أحمد – أول مسند البصريين (৪/৪২৬) مسند أحمد – أول مسند البصريين (৪/৪৩২) مسند أحمد – أول مسند البصريين (৪/৪৩৩) مسند أحمد – أول مسند البصريين (৪/৪৩৬)
– [বুখারী শরীফ, ১/৪৫৩] – مسند أحمد: مسند العشرة المبشرين بالجنة / مسند الخلفاء الراشدين / حديث رقم ১৫
– [মুসনাদ-এ আহমদ, ১/৪] – رواه مسلم ২৮৯২) صحيح مسلم গ্ধ كِتَاب الْفِتَنِ وَأَشْرَاطِ السَّاعَةِ গ্ধ بَاب إِخْبَارِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ … رقم الحديث: ৫১৫৩
– সহীহ্ মুসলিম ২/৩৯০
– وقد أخرجه الترمذي في “سننه” (৩২৩৫) من طريق مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: احْتُبِسَ عَنَّا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ غَدَاةٍ مِنْ صَلاَةِ الصُّبْحِ حَتَّى كِدْنَا نَتَرَاءَى عَيْنَ الشَّمْسِ ، فَخَرَجَ سَرِيعًا فَثُوِّبَ بِالصَّلاَةِ ، فَصَلَّى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَجَوَّزَ فِي صَلاَتِهِ ، فَلَمَّا سَلَّمَ دَعَا بِصَوْتِهِ فَقَالَ لَنَا: عَلَى مَصَافِّكُمْ كَمَا أَنْتُمْ ثُمَّ انْفَتَلَ إِلَيْنَا فَقَالَ: أَمَا إِنِّي سَأُحَدِّثُكُمْ مَا حَبَسَنِي عَنْكُمُ الغَدَاةَ: أَنِّي قُمْتُ مِنَ اللَّيْلِ فَتَوَضَّأْتُ فَصَلَّيْتُ مَا قُدِّرَ لِي فَنَعَسْتُ فِي صَلاَتِي فَاسْتَثْقَلْتُ ، فَإِذَا أَنَا بِرَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالَى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ ، فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ: لَبَّيْكَ رَبِّ ، قَالَ: فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الأَعْلَى؟ قُلْتُ: لاَ أَدْرِي رَبِّ ، قَالَهَا ثَلاَثًا قَالَ: فَرَأَيْتُهُ وَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفَيَّ حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ أَنَامِلِهِ بَيْنَ ثَدْيَيَّ ، فَتَجَلَّى لِي كُلُّ شَيْءٍ وَعَرَفْتُ ، فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ ، قُلْتُ: لَبَّيْكَ رَبِّ ، قَالَ: فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الأَعْلَى؟ قُلْتُ: فِي الكَفَّارَاتِ ، قَالَ: مَا هُنَّ؟ قُلْتُ: مَشْيُ الأَقْدَامِ إِلَى الجَمَاعَاتِ ، وَالجُلُوسُ فِي الْمَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ ، وَإِسْبَاغُ الوُضُوءِ فِي الْمَكْرُوهَاتِ ، قَالَ: ثُمَّ فِيمَ؟ قُلْتُ: إِطْعَامُ الطَّعَامِ ، وَلِينُ الكَلاَمِ ، وَالصَّلاَةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ. قَالَ: سَلْ. قُلْتُ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الخَيْرَاتِ ، وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ ، وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ ، وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي ، وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةً فِي قَوْمٍ فَتَوَفَّنِي غَيْرَ مَفْتُونٍ ، وَأَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ ، وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُ إِلَى حُبِّكَ ، قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّهَا حَقٌّ فَادْرُسُوهَا ثُمَّ تَعَلَّمُوهَا.
وأخرجه الإمام أحمد في “مسنده” (৩৪৮৪) من طريق أبي قلابة عن ابن عباس ، والدارمي في “سننه” (২১৯৫) من طريق عبد الرحمن بن عائش ، والطبراني في “الدعاء” (১৪১৬) من طريق أبي عبيدة بن الجراح ، وابن أبي عاصم في “السنة” (৪৭০) من طريق ثوبان ، والطبراني في “المعجم الكبير” (১/৩১৭) من طريق أبي رافع ، والدارقطني في “الرؤية” (২৫৭) من طريق أبي هريرة ، وابن أبي عاصم في “السنة” (৪৬৫) من طريق جابر بن سمرة ، وأبو بكر النجاد في “الرد على خلق القرآن” (৭৮) و (৭৯) من طريق أبي أمامة وأنس رضي الله عنهم .
– [তিরমিযী, ২/১৫৬, মুসনাদে আহমদ-৫/২৪৩] – عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ – صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: “إِنَّ اللهَ زَوَى لِي الأَرْضَ، فَرَأَيْتُ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَهَا، وَإِنَّ أُمَّتِي سَيَبْلُغُ مُلْكُهَا مَا زُوِيَ لِي مِنْهَا، وَأُعْطِيتُ الْكَنْزَيْنِ الْأَحْمَرَ وَالْأَبْيَضَ، وَإِنِّي سَأَلْتُ رَبِّي لِأُمَّتِي أَنْ لَا يُهْلِكَهَا بِسَنَةٍ عَامَّةٍ، وَأَنْ لَا يُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ سِوَى أَنْفُسِهِمْ، فَيَسْتَبِيحَ بَيْضَتَهُمْ، وَإِنَّ رَبِّي قَالَ: يَا مُحَمَّدُ، إِنِّي إِذَا قَضَيْتُ قَضَاءً فَإِنَّهُ لَا يُرَدُّ، وَإِنِّي أَعْطَيْتُكَ لِأُمَّتِكَ أَنْ لَا أُهْلِكَهُمْ بِسَنَةٍ عَامَّةٍ، وَأَنْ لَا أُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ سِوَى أَنْفُسِهِمْ، يَسْتَبِيحُ بَيْضَتَهُمْ، وَلَوِ اجْتَمَعَ عَلَيْهِمْ مَنْ بِأَقْطَارِهَا – أَوْ قَالَ: مَنْ بَيْنَ أَقْطَارِهَا – حَتَّى يَكُونَ بَعْضُهُمْ يُهْلِكُ بَعْضًا، وَيَسْبِي بَعْضُهُمْ بَعْضًا”.
أخرجه مسلم رقم ( ২৮৮৯ ) ৪ / ২২১৫ ، وأبو داود رقم ( ৪২৫২ ) ৪/৯৭ ، والترمذي رقم ( ২১৭৬ ) ৪ / ৪৭২ ، وأحمد رقم ( ২২৪৪৮ ) ৫/২৭৮ ، ورقم ( ২২৫০৫ ) ৫/ ২৮৪، وابن حبان رقم ( ৬৭১৪ ) ১৫ / ১০৯ ، وابن حبان رقم (৭২৩৮ ) ১৬/২২০ ، وابن أبي شيبة رقم ( ৩১৬৯৪ ) ৬/৩১১ ، والحاكم في المستدرك رقم ( ৮৩৯০ ) ৪/৪৯৬، والبيهقي في السنن الكبرى رقم ( ১৮৩৯৮ ) ৯/১৮১، والطبراني في مسند الشهاب رقم ( ১১১৩ ) ২ / ১৬৬ ، وأخرجه أحمد أيضاً من حديث شداد بن أوس رقم ( ১৭১৫৬ ) ৪ / ১২৩.
– [তাবরানী….মাওয়াহেবুল লাদুনিয়্যাহ্, ৩/৫৫৯] – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ المُهَاجِرِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ مُوَرِّقٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ্রإِنِّي أَرَى مَا لَا تَرَوْنَ، وَأَسْمَعُ مَا لَا تَسْمَعُونَ أَطَّتِ السَّمَاءُ، وَحُقَّ لَهَا أَنْ تَئِطَّ مَا فِيهَا مَوْضِعُ أَرْبَعِ أَصَابِعَ إِلَّا وَمَلَكٌ وَاضِعٌ جَبْهَتَهُ سَاجِدًا لِلَّهِ، وَاللَّهِ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلًا وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا، وَمَا تَلَذَّذْتُمْ بِالنِّسَاءِ عَلَى الفُرُشِ وَلَخَرَجْتُمْ إِلَى الصُّعُدَاتِ تَجْأَرُونَ إِلَى اللَّهِ، لَوَدِدْتُ أَنِّي كُنْتُ شَجَرَةً تُعْضَدُগ্ধ وَفِي البَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَعَائِشَةَ، وَابْنِ عَبَّاسٍ، وَأَنَسٍ. هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ. وَيُرْوَى مِنْ غَيْرِ هَذَا الوَجْهِ أَنَّ أَبَا ذَرٍّ، قَالَ: ্রلَوَدِدْتُ أَنِّي كُنْتُ شَجَرَةً تُعْضَدُগ্ধ، وَيُرْوَى عَنْ أَبِي ذَرٍّ مَوْقُوفًاৃسنن الترمذي – الزهد (২৩১২) مسند أحمد – مسند الأنصار رضي الله عنهم (৫/১৭৩)
– [মুসলিম, ২/২৬৩] – صحيح البخاري – (৭৪১) صحيح مسلم – الصلاة (৪২৪) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/২৩৪) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/২৪৪) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৩০৩) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৩৬৫) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৩৭৫) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৩৭৯) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৪৪৯) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৫০৫)
– বুখারী শরীফ, ১/৫৯
– عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: كُنَّا مَعَ عُمَرَ بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ، فَتَرَاءَيْنَا الْهِلَالَ، وَكُنْتُ رَجُلًا حَدِيدَ الْبَصَرِ، فَرَأَيْتُهُ وَلَيْسَ أَحَدٌ يَزْعُمُ أَنَّهُ رَآهُ غَيْرِي، قَالَ: فَجَعَلْتُ أَقُولُ لِعُمَرَ، أَمَا تَرَاهُ؟ فَجَعَلَ لَا يَرَاهُ، قَالَ: يَقُولُ عُمَرُ: سَأَرَاهُ وَأَنَا مُسْتَلْقٍ عَلَى فِرَاشِي، ثُمَّ أَنْشَأَ يُحَدِّثُنَا عَنْ أَهْلِ بَدْرٍ، فَقَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَانَ يُرِينَا مَصَارِعَ أَهْلِ بَدْرٍ، بِالْأَمْسِ، يَقُولُ: ্রهَذَا مَصْرَعُ فُلَانٍ غَدًا، إِنْ شَاءَ اللهُগ্ধ، قَالَ: فَقَالَ عُمَرُ: فَوَالَّذِي بَعَثَهُ بِالْحَقِّ مَا أَخْطَئُوا الْحُدُودَ الَّتِي حَدَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: فَجُعِلُوا فِي بِئْرٍ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ، فَانْطَلَقَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى انْتَهَى إِلَيْهِمْ، فَقَالَ: ্রيَا فُلَانَ بْنَ فُلَانٍ وَيَا فُلَانَ بْنَ فُلَانٍ هَلْ وَجَدْتُمْ مَا وَعَدَكُمُ اللهُ وَرَسُولُهُ حَقًّا؟ فَإِنِّي قَدْ وَجَدْتُ مَا وَعَدَنِي اللهُ حَقًّاগ্ধ، قَالَ عُمَرُ: يَا رَسُولَ اللهِ كَيْفَ تُكَلِّمُ أَجْسَادًا لَا أَرْوَاحَ فِيهَا؟ قَالَ: ্রمَا أَنْتُمْ بِأَسْمَعَ لِمَا أَقُولُ مِنْهُمْ، غَيْرَ أَنَّهُمْ لَا يَسْتَطِيعُونَ أَنْ يَرُدُّوا عَلَيَّ شَيْئًاগ্ধصحيح مسلم – الجنة وصفة نعيمها وأهلها (২৮৭৩) سنن النسائي – الجنائز (২০৭৪) مسند أحمد – مسند العشرة المبشرين بالجنة (১/২৭)
– মুসলিম শরীফ, ২/১১২
– [রুহুল মাআনী-১৫/১৪২] – يقول الدباغ : الولي داخل في الآية مع الرسول وعن قوله تعالى : ( إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الأَرْحَامِ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَاذَا تَكْسِبُ غَدًا وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ ) يقول الدباغ : كيف يخفى أمر الخمس عليه صلى الله عليه وسلم و الواحد من أهل التصريف من أمته الشريفة لا يمكنه التصرف إلا بمعرفة هذه الخمس .قال تعالى : ( إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ ) ، وقال النبي صلى الله عليه وسلم في الخمس : ( لا يعلمهن إلا الله ) . قال الدباغ : إنَّما قال ذلك النبي صلى الله عليه وسلم لأمر ظهر له في الوقت و إلا فهو صلى الله عليه وسلم لا يخفى عليه وشئ من الخمس المذكورة في الآية الشريفة ، و كيف يخفى عليه ذلك و الأقطاب السبعة من أمته الشريفة يعلمونها و هم دون الغوث فكيف بالغوث فكيف بسيد الأولين و الآخرين الذي هو سبب كل شئ و منه كل شئ ؟
– আল্ ইবরীয়, ২৮৩
– খাসায়েসে কুবরা ২/১৯৫
– ফায়দুল ক্বাদীর, ৩/১৫০
– رواه الترمذي في (্রسننهগ্ধ ৩১২৭)، ورواه أبو حنيفة في (্রمسندগ্ধ ১/১৮৯)، وأبو نعيم في (্রحلية الأولياءগ্ধ، ৪/৯৪)، والطبراني في (্রالمعجم الكبيرগ্ধ، ৮/১২১)، والبغوي في (্রالسنةগ্ধ، ১৪/৩১)، وابن كثير في (্রالتفسيرগ্ধ، ১/৪৭৯ – ৪/৪৬১)، والزَّبِيدِي في (্রإتحاف السادة المتقينগ্ধ، ৬/৫৪৪ – ৭/২৫৯)، ورواه ابن حجر في (্রفتح الباريগ্ধ، ১২/৩৮৮)، والهندي في (্রكنز العمالগ্ধ، ৩০৭৩০)، وابن حجر في (্রلسان الميزانগ্ধ، ৫/১১৫৪).
– নাসীমুর রিয়াদ, ৩/১৫০
– ফাত্হুল কাদীর ৫/৩১২
– وهو يختص بأنواع من الخواص منها أنه يعرف حقاق الأمور المتعلقة بالله وصفاته وملائكته والدار الآخرة لا كما يعلمه غيره بل عنده من كثرة المعلومات وزيادة اليقين والتحقيق ما ليس عند غيره ، وله صفة تتم له بها الأفعال الخارقة للعادات كالصفة التي بها تتم لغيره الحركات الاختيارية ، وله صفة يبصر بها الملائكة ويشاهد بها الملكوت كالصفة التي يفارق بها البصير الأعمى ، وله صفة بها يدرك ما سيكون في الغيب ويطالع بها ما في اللوح المحفوظ كالصفة التي يفارق بها الذكي البليد ، فهذه صفات كمالات ثابتة للنبي يمكن انقسام كل واحد منها إلى أقسام بحيث يمكننا أن نقسمها إلى أربعين وإلى خمسين وإلى أكثر ، وكذا يمكننا أن نقسمها إلى ستة وأربعين جزءا بحيث تقع الرؤيا الصحيحة جزءا من جملتها لكن لا يرجع إلا إلى ظن وتخمين لا أنه الذي أراده النبي – صلى الله عليه وسلم – حقيقة ، انتهى ملخصا .
– [ফতহুল বারী ১৬/২১] – [ইয়াহ্য়ুল উলূম, ৪/১৯৪] – [শেফা শরীফ ১/২৮২] – يقول العلامة الشامي (قدّس سرّه السامي) بعد نقل العبارة السابقة (فى ردّ المحتار، باب الأذان): “و نحوه فى الفتاوى الصوفية” يعنى هكذا ذكره الإمام الفقيه العارف بالله سيدى فضل الله بن محمد بن أيوب السهروردي، (و هو تلميذ الإمام العلامة يوسف بن عمر صاحب جامع المضمرات شرح القدوري ، قدس سرهما) فى الفتاوى الصوفية.
– [রদ্দুল মুহতার, আযান অধ্যায়, খ-১, পৃ. ২৬৭] – الإمام السخاوي فى المقاصد الحسنة فى الأحاديث الدائرة على الألسنة:
– [মাক্বায়েদ আল হাসানাহ্: ইমাম সাখাভী, দায়লামী ৩৮৪, ১০২১] – قال الترمذي : حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وحسنه المنذري في (الترغيب والترهيب) ، وكذا حسنه الحافظ في “الفتح” (১১/১৬৮) ، وأشار البيهقي في “الشعب” (২/২১৫) إلى تقويته ، وصححه الألباني في “صحيح الترغيب” (১৬৭০) وغيره .
– [তিরমিযী, ২/৬৮] – (الطبراني في “المعجم الأوسط” (৮/৩৭২)) (الراوي : أبو هريرة । المحدث : الهيثمي । المصدر : مجمع الزوائد. الصفحة أو الرقم: ২/৭৮ । خلاصة حكم المحدث : فيه عبد الله بن محمد بن المغيرة وهو ضعيف‏ ‏
– তাবরানী: মু’জামুল আওসাত ৮/৩৭২
– مواهب الجليل – الحطاب الرعيني – ج ٢ – الصفحة ٨١
– [রদ্দুল মুহতার, আযান অধ্যায়, পৃ. -২৬১] – مواهب الجليل – الحطاب الرعيني – ج ٢ – الصفحة ٨١
– (মাওয়াহেবুল জলীল: আল হাত্তাব আর রায়ীনি২/৮১)
– [আল কাওলুল বাদী’, পৃ. ১৯/১৯৪] – [আস্ সিরাজ আল ওয়াহ্হাজ আ’লাল মিনহাজ, পৃ. ৩৮] – [আল ফিক্বহ্ আলাল মাযাহিবিল আরবা’.১/২৫৬] – [রুহুল বয়ান ৭/৪০৯২] – صحيح مسلم গ্ধ كتاب الصلاة গ্ধ باب استحباب القول مثل قول المؤذن والصلاة على النبي وسؤال الوسيلة له رواه مسلم (৫৭৭( . أخرجه أبو داود في ” كتاب الصلاة” ” باب ما يقول إذا سمع المؤذن” ” ৫২৩”، وأخرجه الترمذي في ” كتاب المناقب” ” باب فضل النبي صلى الله عليه وسلم ” ” ৩৬১৪”، وأخرجه النسائي في ” كتاب الأذان ” ” باب الصلاة على النبي صلى الله عليه وسلم بعد الأذان” ” ৬৭৭”.
– [মুসলিম, হা-১১, আবু দাঊদ, হা-৫২৩, তিরমিযী, হা-৩৫১৪, নাসাঈ, হা-৬৭৮, মিশকাত, হা-৬৫৭] – مطلب نص العلماء على استحباب الصلاة على النبي صلى الله عليه وسلم في مواضع ( قوله ومستحبة في كل أوقات الإمكان ) أي حيث لا مانع . ونص العلماء على استحبابها في مواضع : يوم الجمعة وليلتها ، وزيد يوم السبت والأحد والخميس ، لما ورد في كل من الثلاثة ، وعند الصباح والمساء ، وعند دخول المسجد والخروج منه ، وعند زيارة قبره الشريف صلى الله عليه وسلم وعند الصفا والمروة ، وفي خطبة الجمعة وغيرها ، وعقب إجابة المؤذن ، وعند الإقامة ، وأول الدعاء وأوسطه وآخره ، وعقب دعاء القنوت ، وعند الفراغ من التلبية ، وعند الاجتماع والافتراق ، وعند الوضوء ، وعند طنين الأذن ، وعند نسيان الشيء ، وعند الوعظ ونشر العلوم ، وعند قراءة الحديث ابتداء وانتهاء ، وعند كتابة السؤال والفتيا ، ولكل مصنف ودارس ومدرس وخطيب وخاطب ومتزوج ومزوج . وفي الرسائل : وبين يدي سائر الأمور المهمة ، وعند ذكر أو سماع اسمه صلى الله عليه وسلم أو كتابته عند من لا يقول بوجوبها ، كذا في شرح الفاسي على دلائل الخيرات ملخصا ، وغالبها منصوص عليه في كتبنا( رد المحتار على الدر المختار গ্ধ كتاب الصلاة গ্ধ فصل في بيان تأليف الصلاة إلى انتهائها গ্ধ فروع قرأ بالفارسية أو التوراة أو الإنجيل)
– [শামী ১/৫৫৮] – مطلب في المواضع التي تكره فيها الصلاة على النبي صلى الله عليه وسلم [ تنبيه ] تكره الصلاة عليه صلى الله عليه وسلم في سبعة مواضع : الجماع ، وحاجة الإنسان ، وشهرة المبيع والعثرة ، والتعجب ، والذبح ، والعطاس على خلاف في الثلاثة الأخيرة شرح الدلائل ، ونص على الثلاثة عندنا [ ص: ৫১৯ ] في الشرعة فقال : ولا يذكره عند العطاس ، ولا عند ذبح الذبيحة ، ولا عند التعجب ( قوله فلذا استثنى في النهر إلخ ) أقول : يستثنى أيضا ما لو ذكره أو سمعه في القراءة أو وقت الخطبة لوجوب الإنصات والاستماع فيهما . وفي كراهية الفتاوى الهندية : ولو سمع اسم النبي صلى الله عليه وسلم وهو يقرأ لا يجب أن يصلي ، وإن فعل ذلك بعد فراغه من القرآن فهو حسن ، كذا في الينابيع ، ولو قرأ القرآن فمر على اسم نبي فقراءة القرآن على تأليفه ونظمه أفضل من الصلاة على النبي صلى الله عليه وسلم في ذلك الوقت ، فإن فرغ ففعل فهو أفضل وإلا فلا شيء عليه كذا في الملتقط . ا هـ . ( رد المحتار على الدر المختار গ্ধ كتاب الصلاة গ্ধ فصل في بيان تأليف الصلاة إلى انتهائها গ্ধ فروع قرأ بالفارسية أو التوراة أو الإنجيل)
– [শামী ১/৫৫৮] – إعانة الطالبين” (১/২৮০) للسيد البكري الدمياطي
– [ইয়ানাতুত্ তালেবীন, ১/৪১২] – [কাযী আয়ায, আশ শিফা-২/৮০] – انتهى. ৪ ১২৮ [ص: ৭৫ ] باب إيذان الإمام بالصلاة . ২৩৮৯
– متون الحديث: مجمع الزاوئد ومنبع الفوائد نور الدين علي بن أبي بكر الهيثمي مكتبة القدسي سنة النشر: ১৪১৪هـ / ১৯৯৪م مجمع الزوائد ومنبع الفوائد গ্ধ كتاب الصلاة গ্ধ باب إيذان الإمام بالصلاة
– حم) ১৮৫২৯ , (س) ৬৪৬ , انظر صحيح الجامع: ১৮৪১ (২) (د) ৫১৫ , (جة) ৭২৪ , (حم) ৭৬০০ , صحيح الجامع: ৬৬৪৪ , صحيح الترغيب والترهيب: ২৩৪ ومدى الشيء: غايته، والمعنى: أن يستكمل مغفرة الله تعالى إذا استوفى وسعه في رفع الصوت, فيبلغ الغاية من المغفرة إذا بلغ الغاية من الصوت. عون المعبود – (ج ২ / ص ৩৭) قال الحافظ رحمه الله: ويشهد لهذا القول رواية من قال: ” يغفر له مد صوته ” , أي: بقدر مده صوته. (৩) (س) ৬৪৫ , (د) ৫১৫ , (حم) ৬২০১ , صحيح الجامع: ৬৬৪৪ (৪) (حم) ৬২০২ , (جة) ৭২৪ , انظر صحيح الترغيب والترهيب: ২৩৩ (৫) (س) ৬৪৬ , (حم) ১৮৫২৯ , انظر صحيح الجامع: ১৮৪১ , صحيح الترغيب والترهيب: ২৩৫
– [মুসনাদ-এ আহমদ, ২/১৩৬] – [রদ্দুল মুহতার, আযান অধ্যায়, খ-১, পৃ. ২০৮] – الطبقات الكبرى لابن سعد গ্ধ طَبَقَاتُ الْبَدْرِيِّينَ مِنَ الأَنْصَارِ الطَّبَقَةُ … গ্ধ سَعْدُ بْنُ مُعَاذِ بْنِ النُّعْمَانِ بْنِ امْرِئِ … رقم الحديث: ৪২৩৬أخرجه النسائي في (( المجتبى )) (رقم :২০৫৫) و في (( الكبرى )) (رقم : ২১৮২) و ابن سعد في (( الطبقات )) (৩/৪৩০ ) أخرجه الإمام أحمد في (( المسند )) (رقم : ২৪৩২৮) و في (( فضائل الصحابة)) (رقم: ১৫০১) و في (( السنة )) لابنه ( ২/২৮৬) ، حدثنا يحيى ؛ و إسحاق بن راهوية في (( مسنده)) (رقم : ১১১৪)
১-عن عائشة رضي الله عنها أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : إِنَّ لِلْقَبْرِ ضَغْطَةً وَلَوْ كَانَ أَحَدٌ نَاجِيًا مِنْهَا نَجَا مِنْهَا سَعْدُ بْنُ مُعَاذٍ )رواه أحمد (৬/৫৫ ،৯৮) ، قال العراقي في ” تخريج الإحياء ” (৫/২৫৯) : إسناده جيد . وقال الذهبي في ” السير ” (১/২৯১) : إسناده قوي . وقال الألباني في ” السلسلة الصحيحة ” (১৬৯৫) : ” وجملة القول أن الحديث بمجموع طرقه وشواهده صحيح بلا ريب ” انتهى. وصححه محققو مسند أحمد في طبعة مؤسسة الرسالة (৪০/৩২৭).
২- عن ابن عمر رضي الله عنهما أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال عن سعد بن معاذ رضي الله عنه حين توفي : هَذَا الَّذِي تَحَرَّكَ لَهُ الْعَرْشُ وَفُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَشَهِدَهُ سَبْعُونَ أَلْفًا مِنْ الْمَلَائِكَةِ لَقَدْ ضُمَّ ضَمَّةً ثُمَّ فُرِّجَ عَنْهُ )رواه النسائي في ” السنن ” (২০৫৫) (৪/১০০) وسكت عنه ، وبوب عليه بقوله : ” ضمة القبر وضغطته “، وصححه الألباني في ” صحيح النسائي “.
৩- عن أبي أيوب رضي الله عنه : أن صبيًا دُفنَ ، فقالَ صلى الله عليه وسلم : لَوْ أَفْلَتَ أَحَدٌ مِنْ ضَمَّةِ القَبْرِ لَأَفْلَتَ هَذَا الصَبِيُّ ).رواه الطبراني ” المعجم الكبير ” (৪/১২১) وصحح الحافظ ابن حجر نحوه في ” المطالب العالية ” (১৩/৪৪)، وصححه الهيثمي في ” مجمع الزوائد ” (৩/৪৭) ، والألباني في ” السلسلة الصحيحة ” (رقم/২১৬৪). وذكر القرطبي في ” التذكرة في أحوال الموتى وأمور الآخرة ” (ص/৩২৩) تحت باب : ” ما جاء في ضغطة القبر على صاحبه وإن كان صالحا ” نصوصا أخرى في الموضوع ، ولكن يغلب عليها الضعف والنكارة . كما أورد ابن الجوزي في “الموضوعات” (৩/২৩১) كثيرا منها تحت باب ضمة القبر ، وفيما ذكرناه من الصحيح كفاية ، إن شاء الله المغـازي للواقـدي গ্ধ باب غزوة بني قريظة গ্ধ ذكر سعد بن معاذإمتاع الأسماع – المقريزي – ج ١ – الصفحة ٢٥٥
– [মুসনাদে আহমদ, ৩/৩৬০, ৩৭৭] – [শরহুত ত্বিবী ১/২৯১] – ابن ماجه في سننه ১৫৫৩. الدعاء للطبراني গ্ধ باب : الْقَوْلِ عِنْدَ تَدْلِيَةِ الْمَيِّتِ فِي قَبْرِهِ … رقم الحديث: ১১১৪
– [সুনানে ইবনে মাজা,১১১৪] – (যেমনটি সহীহ্ বুখারীতে বিদ্যমান ১/১৮৪)
– صحيح البخاري حديث رقم ২১৪
– [মুসলিম ১/১৬৭] – صحيح البخاري – الأذان (৫৮৩) صحيح مسلم – الصلاة (৩৮৯) صحيح مسلم – المساجد ومواضع الصلاة (৩৮৯) صحيح مسلم – الصلاة (৩৮৯) صحيح مسلم – المساجد ومواضع الصلاة (৩৮৯) صحيح مسلم – الصلاة (৩৮৯) صحيح مسلم – المساجد ومواضع الصلاة (৩৮৯) صحيح مسلم – الصلاة (৩৮৯) صحيح مسلم – المساجد ومواضع الصلاة (৩৮৯) صحيح مسلم – الصلاة (৩৮৯) صحيح مسلم – المساجد ومواضع الصلاة (৩৮৯) صحيح مسلم – الصلاة (৩৮৯) صحيح مسلم – المساجد ومواضع الصلاة (৩৮৯) سنن الترمذي – الصلاة (৩৯৭) سنن النسائي – الأذان (৬৭০) سنن النسائي – السهو (১২৫৩) سنن أبي داود – الصلاة (৫১৬) سنن ابن ماجه – إقامة الصلاة والسنة فيها (১২১৬) سنن ابن ماجه – إقامة الصلاة والسنة فيها (১২১৭) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/২৭৩) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/২৮৩) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/২৮৪) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৩১৩) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৩৯৮) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৪১১) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৪৬০) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৪৮৩) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৫০৪) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৫২৩) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৫৩১) موطأ مالك – النداء للصلاة (১৫৪) موطأ مالك – النداء للصلاة (২২৪) سنن الدارمي – الصلاة (১২০৪) سنن الدارمي – الصلاة (১৪৯৪) صحيح مسلم গ্ধ كتاب الصلاة গ্ধ باب فضل الأذان وهرب الشيطان عند سماعه
– [মু’জাযুল কাবীর:ত্বাবরানী ১/২৫৭/৭৪৬] – صحيح مسلم – الإيمان (১২১) مسند أحمد – مسند الشاميين (৪/১৯৯) مسند أحمد – مسند الشاميين (৪/২০৪)
– [মুসলিম ১/৭৬ হা-১২১, আহমদ-৪/১৯৯, ৪/২০৪]

– صحيح مسلم গ্ধ كِتَاب السَّلَامِ গ্ধ بَاب اسْتِحْبَابِ الرُّقْيَةِ مِنَ الْعَيْنِ وَالنَّمْلَةِ … رقم الحديث: ৪০৮৩
– [মুসলিম ২/২২৪] – سنن ابن ماجه গ্ধ كِتَاب مَا جَاءَ فِي الْجَنَائِزِ গ্ধ بَاب مَا جَاءَ فِي الدُّعَاءِ فِي الصَّلَاةِ عَلَى … رقم الحديث: ১৪৮৬ رواه أبو داود (৩১৯৯)
– (আবু দাঊদ, পৃ.-৪৫৬, হা-৩১৯৯] ইবনে মাযা, পৃ. ১০৭, হা-১৪৯৭, ইবনে হিব্বান, ৭/৩৪৬, হা-৩০৭৭, জামে আস সগীর, ১/৫৮, হা-৭২৯, মিশকাত ১/১৪৬, হা-১৬৭৪] – أبو داود : الجنائز (৩২২১). ابن ماجه : الزهد (৪১৯৫).
– [উমদাতুল ক্বারী, ৬/৩০, মিরক্বাত, ৪/৪৬, মাওয়াহিবুল লাদুনিয়্যাহ, ৩/৫৬২, ফতহুল ক্বাদীর, ১/২৫৬, বায়হাক্বী, দালায়েলুন্ নুবুয়্যাহ্, ৪/২৮২, আবূ নুয়াইম, দালায়েলুন্ নুবুয়্যাহ্ ২/১৯২-১৯২, তাবাকুত ইবনে সাদ, ৩/৪৬] – بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع গ্ধ أبو بكر مسعود بن أحمد الكاساني كتاب الصلاة المبسوط গ্ধ كتاب الصلاة গ্ধ باب غسل الميت محمد بن أحمد بن أبي سهل السرخسي
– [আল্লামা সারাখসী: আল মাবসূত ২/৬৭, তারীখে দামেস্ক ৪৪/৪৫৮, হা-৯৮৩৮, ইয়ানাতুত্ তালেবীন, ১/৩৫৩] – بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع গ্ধ كتاب الصلاة গ্ধ فصل بيان فريضة صلاة الجنازة وكيفية فرضيتها
– [ইমাম কাসানী : বাদায়ে সানায়ে’ ৩/৩১১] – بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع গ্ধ كتاب الصلاة গ্ধ فصل بيان فريضة صلاة الجنازة وكيفية فرضيتها
– [ইমাম কাসানী : বাদায়ে সানায়ে’ ৩/৩১১] – [মুসলিম ১/২৯৩] – [নবভী ১/২৯৩] – ابن حبان-৫৭৬৫ إتحاف الخيرة المهرة بزوائد المسانيد العشرة رقم الحديث: ৪৯০৩
– (তিরমিযী ২/৮] – رواهُ مسلم. أخرجه مسلم (১/৪২)، وأبو عوانة (১/৭)، وأبو يعلى في “مسنده ” (২/ ৪১১- ৪১২/১১৯৯)، ومن طريقه: ابن حبان (৮/১৬২/৬৪৯৬)، والبيهقي في “دلائل النبوة” (৫/২২৯- ২৩০)، وأحمد (৩/ ১১)
– [মুসলিম শরীফ, ১/৪২, ৪৩] – عَنْ أَنَسٍ قَالَ لَمَّا تَزَوَّجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَيْنَبَ أَهْدَتْ لَهُ أُمُّ سُلَيْمٍ حَيْسًا فِي تَوْرٍ مِنْ حِجَارَةٍ فَقَالَ أَنَسٌ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اذْهَبْ فَادْعُ لِي مَنْ لَقِيتَ مِنْ الْمُسْلِمِينَ فَدَعَوْتُ لَهُ مَنْ لَقِيتُ فَجَعَلُوا يَدْخُلُونَ عَلَيْهِ فَيَأْكُلُونَ وَيَخْرُجُونَ وَوَضَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَهُ عَلَى الطَّعَامِ فَدَعَا فِيهِ وَقَالَ فِيهِ مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَقُولَ وَلَمْ أَدَعْ أَحَدًا لَقِيتُهُ إِلَّا دَعَوْتُهُ فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا وَخَرَجُوا وَبَقِيَ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ فَأَطَالُوا عَلَيْهِ الْحَدِيثَ فَجَعَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَحْيِي مِنْهُمْ أَنْ يَقُولَ لَهُمْ شَيْئًا فَخَرَجَ وَتَرَكَهُمْ فِي الْبَيْتِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ { يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ إِلَّا أَنْ يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَى طَعَامٍ غَيْرَ نَاظِرِينَ إِنَاهُ }
– [মুসলিম শরীফ, ১/৪৬২]

– متفق عليه (خ ২৯৭৭، م ৫২৩)..”
– [মুসলিম; ১/১৯৯] – [বুখারী শরীফ, ১/১৭৯, ১/৪১৮] – صحيح مسلم كِتَابُ صَلَاةِ الْمُسَافِرِينَ وَقَصْرِهَا بَابُ بَيَانِ أَنَّ الْقُرْآنَ عَلَى سَبْعَةِ أَحْرُفٍ وَبَيَانِ مَعْنَاهُ حديث رقم ১৪১০ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ، قَالَ : حَدَّثَنِي مَالِكٌ ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ ، عَنِ الأَعْرَجِ ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ يَدْعُو بِهَا ، وَأُرِيدُ أَنْ أَخْتَبِئَ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لِأُمَّتِي فِي الآخِرَةِ(صحيح البخاري كتاب الدعوات باب: لكل نبي دعوة مستجابة حديث رقم ৫৯৭০)
– [মুসলিম শরীফ, ১/২৮৩] – فعن أَبَي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْه، قَالَ: ” بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَلَكْتُ، قَالَ: مَا لَكَ؟ قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي وَأَنَا صَائِمٌ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: هَلْ تَجِدُ رَقَبَةً تُعْتِقُهَا؟ قَالَ: لَا، قَالَ: فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ؟ قَالَ: لَا، فَقَالَ: فَهَلْ تَجِدُ إِطْعَامَ سِتِّينَ مِسْكِينًا؟ قَالَ: لَا، قَالَ: فَمَكَثَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَيْنَا نَحْنُ عَلَى ذَلِكَ، أُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَرَقٍ فِيهَا تَمْرٌ، وَالْعَرَقُ: الْمِكْتَلُ (وعاء يشبه القفة)، قَالَ: أَيْنَ السَّائِلُ؟ فَقَالَ: أَنَا، قَالَ: خُذْهَا فَتَصَدَّقْ بِهِ، فَقَالَ الرَّجُلُ: أَعَلَى أَفْقَرَ مِنِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَوَاللَّهِ مَا بَيْنَ لَابَتَيْهَا يُرِيدُ الْحَرَّتَيْنِ (أي ما بين طرفي المدينة) أَهْلُ بَيْتٍ أَفْقَرُ مِنْ أَهْلِ بَيْتِي، فَضَحِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ، ثُمَّ قَالَ: أَطْعِمْهُ أَهْلَكَ ” (رواه البخاري ومسلم).
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ، فَقَالَ: هَلَكْتُ، قَالَ: ্রوَلِمَ؟গ্ধ قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى أَهْلِي فِي رَمَضَانَ، قَالَ: ্রفَأَعْتِقْ رَقَبَةًগ্ধ قَالَ: لَيْسَ عِنْدِي، قَالَ: ্রفَصُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِগ্ধ قَالَ: لاَ أَسْتَطِيعُ، قَالَ: ্রفَأَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًاগ্ধ قَالَ: لاَ أَجِدُ، فَأُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَرَقٍ فِيهِ تَمْرٌ، فَقَالَ: ্রأَيْنَ السَّائِلُ؟গ্ধ قَالَ: هَا أَنَا ذَا، قَالَ: ্রتَصَدَّقْ بِهَذَاগ্ধ قَالَ: عَلَى أَحْوَجَ مِنَّا يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَوَالَّذِي بَعَثَكَ بِالحَقِّ، مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا أَهْلُ بَيْتٍ أَحْوَجُ مِنَّا، فَضَحِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ، قَالَ: ্রفَأَنْتُمْ إِذًاগ্ধ
صحيح البخاري – الطب (৫৩৬৮) صحيح مسلم – السلام (২৮৭) صحيح مسلم – الطهارة (২৮৭) صحيح مسلم – السلام (২৮৭) صحيح مسلم – الطهارة (২৮৭) صحيح مسلم – السلام (২৮৭) صحيح مسلم – الطهارة (২৮৭) صحيح مسلم – السلام (২২১৪) سنن الترمذي – الطهارة (৭১) سنن النسائي – الطهارة (৩০২) سنن أبي داود – الطهارة (৩৭৪) سنن أبي داود – الطب (৩৮৭৭) مسند أحمد – باقي مسند الأنصار (৬/৩৫৫) سنن الدارمي – الطهارة (৭৪১)
– [মুসলিম শরীফ, ১/২৮৩] – رواه البخاري (৪/৪২২) وكذا مسلم (৭/৯১) وأحمد (২/২৫৮) من طريق أبي الزناد عن الأعرج عنه.وله طرق أخرى عن أبي هريرة , فرواه مسلم وابن ماجه (رقم ১ و২) عن أبي صالح عنه.ومسلم عن أبي سلمة بن عبد الرحمن وسعيد بن المسيب كلاهما معا عنه.وهو والنسائي (২/২) وأحمد (২/৪৪৭ ـ ৪৪৮ و৪৬৭) عن محمد بن زياد عنه , وفيه عند النسائي سبب الحديث , قال: ” خطب رسول صلى الله عليه وسلم الناس فقال: إن الله عز وجل فرض عليكم الحج , فقال رجل: في كل عام؟ فسكت عنه , حتى أعاده ثلاثا , فقال: لو قلت: نعم لوجبت ولو وجبت ما قمتم بها , ذروني ما تركتكم الحديث , وهو رواية لمسلم (৪/১০২) وكذا رواه الدارقطني في سننه (ص ২৮১) .ورواه هو وأحمد (২/৩১৩) عن همام بن منبه عنه.
– [মুসলিম শরীফ, ১/৪৩২৬.
– صحيح البخاري গ্ধ كِتَاب الْأَحْكَامِ গ্ধ بَاب بَيْعَةِ النِّسَاءِ رقم الحديث: ৬৭০২
– [মুসলিম শরীফ, ১/৩০৪] – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ رضي الله عنه : أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَلَا قَوْلَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ فِي إِبْرَاهِيمَ ( رَبِّ إِنَّهُنَّ أَضْلَلْنَ كَثِيرًا مِنْ النَّاسِ فَمَنْ تَبِعَنِي فَإِنَّهُ مِنِّي ) الْآيَةَ وَقَالَ عِيسَى عَلَيْهِ السَّلَام : ( إِنْ تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ عِبَادُكَ وَإِنْ تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ ) فَرَفَعَ يَدَيْهِ وَقَالَ : اللَّهُمَّ أُمَّتِي أُمَّتِي . وَبَكَى . فَقَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ : يَا جِبْرِيلُ ! اذْهَبْ إِلَى مُحَمَّدٍ – وَرَبُّكَ أَعْلَمُ – فَسَلْهُ مَا يُبْكِيكَ . فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلَام فَسَأَلَهُ فَأَخْبَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَا قَالَ ، وَهُوَ أَعْلَمُ . فَقَالَ اللَّهُ : يَا جِبْرِيلُ اذْهَبْ إِلَى مُحَمَّدٍ فَقُلْ : إِنَّا سَنُرْضِيكَ فِي أُمَّتِكَ وَلَا نَسُوءُكَ ) رواه مسلم (২০২)
– [মুসলিম শরীফ ১/১১৩] – حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: ” كُنْتُ أَغَارُ عَلَى اللَّاتِي وَهَبْنَ أَنْفُسَهُنَّ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَقُولُ: وَتَهَبُ الْمَرْأَةُ نَفْسَهَا، فَلَمَّا أَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: {تُرْجِي مَنْ تَشَاءُ مِنْهُنَّ وَتُؤْوِي إِلَيْكَ مَنْ تَشَاءُ وَمَنِ ابْتَغَيْتَ مِمَّنْ عَزَلْتَ} [الأحزاب: ৫১] ” قَالَتْ: قُلْتُ: ্রوَاللهِ، مَا أَرَى رَبَّكَ إِلَّا يُسَارِعُ لَكَ فِي هَوَاكَগ্ধ
صحيح البخاري – تفسير القرآن (৪৫১০) صحيح مسلم – الرضاع (১৪৬৪) صحيح مسلم – الرضاع (১৪৬৪) سنن النسائي – النكاح (৩১৯৯) مسند أحمد – باقي مسند الأنصار (৬/১৩৪) مسند أحمد – باقي مسند الأنصار (৬/১৫৮) مسند أحمد – باقي مسند الأنصار (৬/২৬১(
– [মুসলিম শরীফ, ১/৪৭৩] – [ফয়দুল ক্বাদীর, শরহে জামেউস্ সগীর ১/৫৬৪] – قال النووي في شرحه لصحيح مسلم قَوْله صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( أَنَا سَيِّد وَلَد آدَم يَوْم الْقِيَامَة , وَأَوَّل مَنْ يَنْشَقُّ عَنْهُ الْقَبْر , وَأَوَّل شَافِع وَأَوَّل مُشَفَّع ) قَالَ الْهَرَوِيُّ : السَّيِّد هُوَ الَّذِي يَفُوقُ قَوْمه فِي الْخَيْر , وَقَالَ غَيْره : هُوَ الَّذِي يُفْزَعُ إِلَيْهِ فِي النَّوَائِب وَالشَّدَائِد , فَيَقُومُ بِأَمْرِهِمْ , وَيَتَحَمَّلُ عَنْهُمْ مَكَارِههمْ , وَيَدْفَعُهَا عَنْهُمْ . وَأَمَّا قَوْله صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( يَوْم الْقِيَامَة ) مَعَ أَنَّهُ سَيِّدهمْ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَة , فَسَبَبُ التَّقْيِيد أَنَّ فِي يَوْم الْقِيَامَة يَظْهَرُ سُؤْدُده لِكُلِّ أَحَدٍ , وَلا يَبْقَى مُنَازِع , وَلا مُعَانِد , وَنَحْوه , بِخِلافِ الدُّنْيَا فَقَدْ نَازَعَهُ ذَلِكَ فِيهَا مُلُوكُ الْكُفَّار وَزُعَمَاء الْمُشْرِكِينَ
– [নবভী: শরহে মুসলিম, ১/১১১]

প্রশ্নোত্তরে আক্বাইদ ও মাসাইল