বিদ’আত

বিদ’আত

বিদ’আত

প্রত্যেক বস্তু তার বিপরীত সত্তার মাধ্যমে চেনা যায়। বলা হয়- تُعْرَفُ الْاَشْیَآءُ بَاَضْدَادِہَا অর্থাৎ বস্তুসমূহ পরিচিত হয় বিপরীত বস্তু দ্বারা। যেমন রাতের অস্তিত্ব থেকে দিনের পরিচয় উপলব্ধিতে আসে। সাদার পরিচয় কালো দ্বারা, আলোর পরিচয় অন্ধকার দ্বারা। বিপরীত সত্তা যেমন বস্তুর পরিচয় নির্ণয়ে সহায়ক তেমনি সুন্নাতকে উপলব্ধি করতে তার বিপরীত বিদজ্ঞআতের পরিচয়ও প্রয়োজন। পক্ষান্তরে, বিদজ্ঞআত দ্বারা সম্যক উপলব্ধি করা যাবে সুন্নাতের পরিচয়।

বিদ’আতের সংজ্ঞা

সাধারণভাবে বিদ’আত কোন নতুন কথা, কোন নতুন প্রবর্তনকেই বলা হয়। দ্বীনের পরিপন্থী কোন কাজকে দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত হিসাবে রেওয়াজ দেওয়াই বিদ’আত।

বিদ’আত (بدعة) আরবী শব্দ بدع ‘বিদউন’ থেকে উদ্ভূত, পূর্ব নমুনা বা নির্দেশনা ছাড়া সম্পূর্ণ নতুন উদ্ভাবনই শাব্দিকভাবে বিদ’আতের অর্থ। যেমন- ক্বোরআনে পাকে উল্লেখ আছে-قُلْ مَاکُنْتُ بِدْعًا مِّنَ الرُّسُلِ তরজমা: আপনি বলুন, ‘আমি কোন নতুন রসূল নই।    [৪৬:৯] بَدِیْعُ السَّمٰوَاتِ وَالْاَرْضِ তরজমা: আল্লাহ, নতুনভাবে (নমুনা ছাড়া) সৃষ্টিকারী আসমানসমূহের ও যমীনের। [২:১১৭] وَرَہْبَانِیَۃَ ابْتَدَعُوْہَا مَا کَتَبْنٰہَا عَلَیْہِمْ তরজমা: এবং বৈরাগী হওয়া- এ বিষয়টা তো তারা ধর্মের মধ্যে নিজেদের নিকট থেকে আবিষ্কার করেছে, আমি তাদের উপর বিধিবদ্ধ করিনি। [৫৭:২৭]

এ প্রসঙ্গে ইমাম নাওয়াভী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি’র বরাতে মোল্লা আলী ক্বারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন- قاَلَ النَّوَوِیُّ اَلْبِدْعَۃُ کُلُّ شَئٍ عُمِلَ عَلٰی غَیْرِ مِثَالٍ سَبَقَ অর্থাৎ পূর্বে অতিক্রান্ত কোন দৃষ্টান্ত ছাড়া কোন কাজ করাকে বিদ’আত বলা হয়।  [মিরক্বাত শরহে মিশকাতঃ ই’তিসাম বিল কিতাবি ওয়াস্‌ সুন্নাহ’ অধ্যায়ঃ কৃত মোল্লা আলী ক্বারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি]

শরীয়তের পরিভাষায় ওই বিশ্বাস বা কাজকে বিদ’আত বলা হয়, যা হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র যাহেরী হায়াতে প্রচলিত ছিলো না, পরে হয়েছে। মোল্লা আলী ক্বারীর মতে-

اِحْدَاثُ مَالَمْ یَکُنْ فِیْ عَہْدِ رَسُوْلِ اللّٰہِ صَلَّی اللّٰہُ عَلَیْہِ وَسَلَّمَ

অর্থাৎ ওই বস্তুর নব-আবিষ্কার করা, যা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে ছিলো না।