কাফনে আহাদনামা ও বরকতময় বস্তু দেয়ার শরয়ী বিধান

কাফনে আহাদনামা ও বরকতময় বস্তু দেয়ার শরয়ী বিধান

মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফুজ্জামান আলকাদেরী

মৃত ব্যক্তির কাফনে দো‘আয়ে আহাদনামা অথবা আল্লাহ্ ওয়ালাগণের বরকতমণ্ডিত বস্তু (তার্রারুকাত) ইত্যাদি কাফনের সাথে একটি কাপড়ে লিখে দেয়া বরকত লাভ ও নাজাতের আশায়। এটি শরীয়ত সম্মত কিনা এ বিষয়ে ইসলামী শরীয়তের আলোকে প্রমাণসহ উপস্থাপনের চেষ্টা করলাম ।
১. হযরত উম্মে আত্বীয়্যাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা) বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা হযরত উম্মে কুলসুম (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা)-এর ওফাত হলো তখন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নির্দেশ দিলেন তাঁকে গোসল দেয়ার জন্য এবং ইরশাদ করলেন যে, “গোসল দেয়া শেষ হলে আমাকে জানাবে”। অতঃপর তাঁকে গোসল দেয়ার পর আমরা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে আরয করলাম যে, ইয়া রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম) গোসলের কাজ সম্পন্ন হলো। তখন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম স্বীয় পবিত্র চাদর দিলেন এবং ইরশাদ করলেন- “নাও! এটি আমার কন্যার শরীরে পরিয়ে দাও”। [যুরকানী শরহে মুওয়াত্ত্বা ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা নং-৪ কৃত : ইমাম মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল বাক্বী (রহ.)]

হযরত উম্মে আত্বীয়্যাহ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা কর্তৃক বর্ণিত হাদীস শরীফ থেকে এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ ওয়ালাগণের ব্যবহার্য বা শরীরে স্পর্শকৃত বস্তু আমাদের জন্য বরকতের কারণ। সুতরাং তাবাররুকের অর্থই হলো এটি। আর বরকত হাসিলের জন্য অত্র হাদীস শরীফটি একটি উজ্জ¦ল দলিল। কেননা যুরকানী গ্রন্থে লেখা আছে যে- هواصل فى التبرك باثارالصالحين অর্থাৎ- সৎ লোকদের তথা আল্লাহ ওয়ালাদের ব্যবহৃত বস্তু, বিষয় ও নিদর্শণাবলী দ্বারা তাবাররুক অর্জনের (বরকত হাসিলের) জন্য এই হাদীসটি মূল তথা আসল।

২. হযরত আমীরে মুয়াবিয়াহ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর ওফাত পূর্ব অসিয়ত সম্পর্কে বর্ণনা –
প্রসিদ্ধ সম্মানিত সাহাবী, কাতিবে ওহী হযরত আমীরে মুয়াবীয়াহ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর নিকট হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র চাদর মোবারক, পবিত্র কামিস (পোষাক) তথা জুব্বা মোবারক, কয়েকটি চুল মোবারক ও পবিত্র নখ মোবারক সংরক্ষিত ছিল। তিনি (অসিয়ত করে) বললেন যে, যখন আমার ওফাত হবে তখন আমাকে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র কামিস তথা জুব্বা মোবারক দ্বারা কাফন পরিধান করাবে এবং হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র চাদর মোবারক দ্বারা আবৃত করবে ”। [শরহে শিফা ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা নং ৪০৪, কৃত : ইমাম আলী ক্বারী (রহ.)]

শরহে শিফায় অপর বর্ণনায় লিপিবদ্ধ রয়েছে যে, তিনি বলেন- وَشَدُّوا مَوَاضِعَ السُّجُود مِنِّى بِشَعْرِه وَاَظْفَارِه অর্থাৎ- আমার সিজদার স্থানগুলিতে (কপালে, নাকে, চোখে) হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র চুল মোবারক ও পবিত্র নখ মোবারক বেঁধে দিও”। [শরহে শিফা ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা নং ৪০৪, কৃত : ইমাম আলী ক্বারী (রহ.) ]

উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা বুঝা গেল যে, হযরত আমীরে মুয়াবিয়াহ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর নিকট হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি অত্যধিক মুহাব্বত ছিল। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর তাবাররুকাত তথা বরকতমন্ডিত পবিত্র বস্তু উনার নিকট সযতনে সংরক্ষিত ছিল এবং ওফাতের পর আপন মাযারেও (কবর শরীফে) তিনি এই তাবাররুকাত সঙ্গে নিয়ে গেলেন, বস্তুত এই জগতেও রহমত তাঁর সাথে ছিল এবং পরজগতেও রহমত তাঁর সাথে রয়েছে। এতে প্রতীয়মান হল যে, বুযর্গগণের পবিত্র পোষাক ও পবিত্র বস্তু দ্বারা তাবাররুক তথা বরকত গ্রহণ এটি সাহাবায়ে কিরামের সুন্নাত। আরো অনুধাবন করতে পারি যে, বরকত হাসিলের নিয়্যতে যদি কাফনের সাথে কালেমা শরীফ, বিছমিল্লাহ শরীফ ইত্যাদি লিখে দেয়া হয় তা জায়েজ ও বরকত মন্ডিত।

৩. জনৈক আরিফ বা তত্ত্বজ্ঞানী
بسم الله الرحمن الرحيم (বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম) লিখলেন এবং ওসিয়ত করলেন: যেন তার কাফনের ভেতর তা রেখে দেয়া হয়। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো: এতে কী আপনার উপকার হবে? তিনি বললেন: আমি কিয়ামতের দিন বলব, হে আল্লাহ! আপনি এমন এক কিতাব নাযিল করেছিলেন এবং তার শিরোনাম দিয়েছিলেন “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম”। সুতরাং আপনার কিতাবের সেই শিরোনাম দেয়া হল আমাকে এর বরকত দ্বারা ধন্য করুন। [তাফসীরে কাবীর মূল গ্রন্থ ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং ৯৩, কৃত : ইমাম ফখরুদ্দীন আর রাযী (রহ.), ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক উক্ত গ্রন্থের বঙ্গানুবাদকৃত গ্রন্থের ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং- ২৫১]

এর দ্বারা বুঝা গেল যে, যারা কাফনে “কালেমা শরীফ, বিসমিল্লাহ শরীফ” ইত্যাদি লিখেন এ জন্য যে, আল্লাহ তা’আলা যেন উক্ত “কালেমা শরীফ, বিসমিল্লাহ শরীফের” বরকতে মায়্যিতের উপর স্বীয় অনুগ্রহ ও দয়া প্রদর্শন করেন। এটা জায়েয ও বরকতময়। আর যারা এ বিষয়কে বিদ্আত বলে থাকে মূলত তারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া চায়না ।

৪. হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর লিখিত কাগজকে হযরত উমর ফারুকে আজম রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর সাথে দাফন করার অসিয়ত –
নওয়াব ছিদ্দিক হাসান ভূফালী (যিনি গাইরে মুকাল্লেদীন ওহাবীদের মুকতাদর ব্যক্তি) স্বীয় রচিত “তাকরীমুল মু’মিনীন” গ্রন্থের ৬৮ ও ৬৯ পৃষ্ঠায় উক্ত অসিয়তের বিষয়টি লিপিবদ্ধ করেছেন যে, সৈয়্যদেনা হযরত উমর ফারুকে আজম রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু যখন খলিফা মনোনীত হলেন, উনার নিকট এক যুদ্ধ হতে গণিমতের সম্পদ আসল, তিঁনি ঐগুলি যখন বন্টন করতে লাগলেন তখন হযরত ইমাম হাসান ও হযরত ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা দ্বারা গণিমতের সম্পদ বন্টন আরম্ভ করলেন। উনার সন্তান হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা আরজ করলেন। আব্বাজান! দানের প্রথম বন্টন নেওয়ার জন্য আমি অধিকতর উপযুক্ত, কেননা আপনি হলেন খলিফা আর আমি হলাম খলিফার সন্তান। তখন তিনি (উমর ফারুকে আজম রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু) স্বীয় সন্তানকে বললেন- هاتِ لَكَ ابًا كَاَبِيهِمَا وجدًّا كجدِّهما حتّى اَقْدَمَكَ بالعطيَّة অর্থাৎ- তুমি উনাদের আব্বার মত একজন বাবা , উনাদের নানাজানের ন্যায় একজন নানাজান নিয়ে আস, তাহলে আমি দানের প্রথম বন্টন তোমাকে দিয়ে শুরু করবো। সৈয়্যদুনা হযরত ইমাম হাসান ও সৈয়্যদুনা হযরত ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা দু’জনই মাওলা আলী শেরে খোদা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু’র নিকট এসে এই ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা শুনালেন, তখন মাওলা আলী শেরে খোদা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু স্বীয় দুই শাহজাদাকে বললেন যে, হযরত উমর ফারুকে আজম রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু’র নিকট গিয়ে উনাকে আনন্দের সুসংবাদ দিয়ে আসুন যে, আমি রাহমাতুল্লিল আলামীন, শাফীয়ুল মোযনেবীন হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি এরশাদ করেছেন – عن جبريلَ عنِ اللهِ عزّوجلّ اَنَّ عُمَرَ سِراجُ اهلِ الجنَّة অর্থাৎ- হযরত জিব্রাইল (আলায়হিস্ সালাম) আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, “নিশ্চয় হযরত উমর (রাদ্বি.) জান্নাতীদের চেরাগ।’’

হযরত হাসনাইনে কারীমাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর নিকট গিয়ে যখন এই হাদিসে রাসুলে মাকবুল সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম শুনালেন তখন হযরত উমর ফারুকে আজম রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু অত্যন্ত আনন্দিত হলেন এবং এরশাদ করলেন যে, আপনাদের মুহতারাম আব্বাজান আলী মুরতাদা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে এ হাদিস শরীফটি লিখে নিয়ে আসুন। হযরত হাসনাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা হাদিস শরীফটি লিখিয়ে নিয়ে আসলেন। হযরত ফারুকে আজম রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু স্বীয় সাহেবজাদা হযরত আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুকে (অসিয়ত করে) বললেন যে, “যখন আমার ওফাত হয়ে যাবে তখন এ লিখিত কাগজকে আমার কাফনের সাথে দাফন করে দিবে”। তাঁর অসিয়ত মতো এই রকমই করা হয়েছে। [তাকরীমুল মু’মিনীন, পৃষ্ঠা নং ৬৮, ৬৯, কৃত : নওয়াব ছিদ্দিক হাসন ভূফালী]

উক্ত আলোচনা থেকে বুঝতে পারা যায় যে, হযরত ফারুকে আজম রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু’র অন্তরে হযরত আলী মুরতাদা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু’র লিখিত বিষয়ের প্রতি কতই সম্মান বিদ্যমান ছিল। হযরত উমর ফারুকে আজম রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু’র পবিত্র আক্বিদা কতই স্পষ্ট যে, তিনি তাবাররুকাতকে কতই সম্মান জানিয়েছেন। এরশাদ করলেন যে, “আমার কবর শরীফে এই লিখিত হাদিসটিকে রেখে দেয়া হোক”। এই আলোচনা থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি যে, বুযর্গানেদ্বীন ও উলামায়ে হক্কানীর তাবাররুকাতকে সম্মান করা হযরত ফারুকে আজম রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু’র সুন্নাত। এবং বুযর্গানেদ্বীন ও উলামায়ে হক্কানী দ্বারা লিখিত দোয়া দরুদ ইত্যাদি কবরে দেয়া জায়েজ বরং মৃত ব্যক্তির জন্য বরকতমন্ডিত ও নাজাতের মাধ্যম।

৫. ইন্তেকালের পূর্বে এক ব্যক্তির ওসীয়ত
ইন্তেকালের পূর্বে এক ব্যক্তি, অসীয়ত করে গেলেন, যখন আমার ইন্তেকাল হয়ে যাবে তখন আমার সীনা ও কপালের উপর ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ লিখে দিবে, এভাবে করা হলো, অতঃপর কোন ব্যক্তি ওই সৌভাগ্যবান ব্যক্তিকে স্বপ্নে দেখে তাঁর অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে, মৃত ব্যক্তি জবাব দিলেন যখন আমাকে কবরে রাখা হলো, ফিরিশতার আগমন হলো, যখন কপালে ‘বিসমিল্লাহ’ শরীফ লিখা দেখলেন, ফিরিশতারা বললো, তুমি আযাব থেকে রক্ষা পেয়েছো। [দুররে মুখতার, জানাযা শীর্ষক অধ্যায়, খন্ড-৩, পৃ. ১৮৫ (সুত্র : মাসিক ‘তরজুমান’ ৪৩ তম বর্ষ, ২য় সংখ্যা, সফর : ১৪৪৩ হিজরি]

৬. কবরে আহাদনামা রাখা
আ’লা হযরত রহমতুল্লাহি আলায়হি বর্ণনা করেন, ইমাম ফকিহ ইবনে আজীল রাহমতুল্লাহি আলায়হি দুআয়ে আহাদনামা সম্পর্কে বলেন, যখন এই আহাদনামা লিখে কবরে মৃত ব্যক্তির সাথে রেখে দেয়া হয়, তখন আল্লাহ তা’আলা তাকে মুনকার-নাকীরের সাওয়াল-জাওয়াব সহজকরণ ও কবরের আযাব থেকে নিরাপত্তা দান করেন। [ফতোয়ায়ে রেজভীয়া ৯ম খন্ড, পৃ: ১০৯ কৃত: ইমাম আহমদ রেজা খান ফাজেলে ব্রেলভী (রহ.)]

আমীরুল মুমেনীন হযরত সৈয়্যদুনা আবু বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাযের (অর্থাৎ ফরজ-সুন্নাত ইত্যাদি) পর আহাদনামা পাঠ করে, ফেরেশতারা তা লিখে সীলমোহর মেরে কেয়ামত দিবসের জন্য সংরক্ষণ করেন। যখন আল্লাহ তা‘আলা ঐ বান্দাকে কবর থেকে উত্তোলন করবেন, ফেরেশতারা ওই দলিল (আহাদনামা) সঙ্গে নেবেন এবং আহ্বান করা হবে, আহাদ সম্পন্ন ব্যক্তিরা (আহাদ নামা পাঠকারীরা) কোথায়? তাদেরকে আহাদ নামা দেওয়া হবে। ইমাম তিরমিযি রাহমাতুল্লাহি আলায়হি এটা বর্ণনা করে বলেন, ইমাম তাউস রাহমাতুল্লাহি আলায়হির ওসীয়ত অনুযায়ী এই আহাদনামা তাঁর কাফনে লেখা হয়েছিল। [তাফসীরে দুররে মানসুর, সুরা মরিয়ম, আয়াত ঃ ৮৭ , ৫ম খন্ড, পৃ: ৫৪২ কৃত: ইমাম জালাল উদ্দীন সুয়ুতী (রহ.)]

যে ব্যক্তি নিম্নোক্ত দুআ মৃত ব্যক্তির কাফনে লিখবে, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামত পর্যন্ত তার থেকে কবরের আজাব তুলে নিবেন। [ফতোয়ায়ে রেজভীয়া, ৯ম খন্ড, পৃ: ১০৯ কৃত : ইমাম আহমদ রেজা খান ফাজেলে ব্রেলভী (রহ.)]
اللهم اِنى أسئلك ياعالم السر ياعظيم الخطر ياخالق البشر ياموقع الظفر يامعروف الاثر ياذا الطول والمن ياكاشف الضروالمحن يااله الاولين والاخرين فرج على همومى واكشف على غمومى وصل اللهم على سيدنا محمد وسلم . উপরোক্ত দলিলাদির মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, আমাদের প্রিয় নবীজী হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র চুল শরীফ, লাঠি মোবারক, জুব্বা শরীফ ইত্যাদি বরকতমণ্ডিত বিপদ-আপদ দূরিভূতকারী। সুতরাং নিঃসন্দেহে হুজুর সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাফিউল বালা ওয়াল ওয়াবা তথা বিপদ আপদ ও মুসিবত দূরীভূতকারী। আর এটাও জানা যায় যে, ঈমানদারের কাফনে দাফনে কালেমা শরীফ, বিসমিল্লাহ শরীফ, দরুদ শরীফ, দু‘আয়ে আহাদনামা ও বুযুর্গানেদ্বীন এর বরকতময় বস্তু ইত্যাদি লিখে মৃত ব্যক্তিকে পরানো (যাকে কাফনী বলে থাকে) এটি বরকতের কারণ। আর মৃত ব্যক্তি এর বরকত দ্বারা কবর আজাব থেকে রক্ষা পেয়ে থাকেন।

লেখক: আরবি প্রভাষক, মাদরাসা-এ তৈয়বিয়া অদুদিয়া সুন্নিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) চন্দ্রঘোনা, রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম।

 

Share:

1 Comment

  1. Ismail Hossain

    Says Shaban 05, 1444 at 11:07 am

    আলহামদুলিল্লাহ মাসিক তরজমা পেয়ে আমরা অনেক খুশি হলাম এবং আখেরাতে পুরস্কৃত অনেক কিছু পেলাম ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে

Leave Your Comment